নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
প্রেম, প্রকৃতি আর প্রার্থনা- আমার চিরদিনের প্রিয় বিষয়, ছোটবেলা থেকেই। প্রশ্ন আসতে পারে, ছোটবেলায় আবার প্রেমের কী বুঝতাম? তখন প্রেম বলতে বুঝতাম স্নেহ, আদর, ভালবাসা। মা যখন শীত আসার আগেই উলের বল আর উল বুননের কাঁটা যোগাড় করে রাখতেন, আর তাঁর স্বল্প অবসরে দিনের পর দিন ধরে উল বুনে আমাদের জন্য সোয়েটার, মাফলার ইত্যাদি বানিয়ে দিতেন, বুঝতাম সেটা ভালবাসা। গোসলের পর মাথা না আঁচড়িয়ে থাকতাম। বড়বোন যখন ডেকে জোর করে মাথা আঁচড়িয়ে দিতেন, বুঝতাম সেটা আদর। পোষা মুরগীটা যখন প্রথম মা হলো, তার তুলতুলে বাচ্চা ধরতে গিয়ে হাতে আঁচড় খেয়েছিলাম। কিছুটা রাগ হলেও বুঝেছিলাম, এটাই মাতৃ্ত্ব, মাতৃস্নেহ। সন্তানের জীবন রক্ষার্থে সে নিজের জীবন বিপন্ন করতে পিছপা হবে না। অন্যদিন হলে সে আমাকে দেখে ভয়ে দৌড়াতো, আজ আমাকে দেখে ধেয়ে এলো।
বয়ঃসন্ধিকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত “পোস্টমাস্টার” গল্পটা পড়ে আমি খুবই অভিভূত হয়েছিলাম। পড়তে পড়তে প্রায় মুখস্থের মতই হয়ে গিয়েছিলো। আজও পড়ি, এটা আজও আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প। সেটা পড়ে বুঝেছিলাম স্নেহ কি, মায়া কি, ভালবাসা কি, বিরহ কি, বিচ্ছেদ কি। “কিন্তু তখন পালে বাতাস পাইয়াছে...” – এই বাক্যাংশটুকু এবং সেই সাথে পোস্টমাস্টারের হৃদয় মথিত স্বগতোক্তি ও লেখকের দার্শনিক ভাবনার ক্রমবিন্যাস এখনো আমার মনে ঝড় তোলে আর যখনি সে ঝড় ওঠে তখনই মনটা শন শন বাতাসের মতই হু হু করে ওঠে।
আমার কাছে স্নেহ মায়ার আরেক নাম প্রকৃতি। ঢাকা শহরে মানুষ হলেও বৎসরান্তে গ্রামের বাড়ীতে যেতাম। সেখানে উন্মুক্ত প্রকৃতির সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো। কাজিনদের সাথে দিনমন ঘুরে বেড়াতাম আর কিছুকাল শৃঙ্খলিত শহুরে জীবন ছেড়ে শাসনহীন বাউন্ডুলে জীবন উপভোগ করতাম। রাখালের সাথে গরু চড়াতে যেতাম, বাবুই পাখির বাসা দেখে বিস্মিত হ’তাম, কৃষাণ কৃষাণীর সাথে গান গেয়ে মরিচ ক্ষেত থেকে মরিচ তুলতাম, কাঁচা কুঁয়ো থেকে পানি তুলে পরমানন্দে তামাক ক্ষেত সিঞ্চন করতাম। খেঁক শেয়ালের গর্ত খুঁজতাম, গুলতি দিয়ে পাখি মারার চেষ্টা করতাম। প্রকৃতির পশু পাখিদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখে অবাক হতাম। খুব ভোরে অন্ধকার বিছানায় শুয়ে পাশের ঘর থেকে আমার বড় নানার দরাজ কন্ঠে ভেসে আসা ফজরের নামাজের সুরা ক্বিরাত শুনতে শুনতে আবার ঘুমিয়ে পড়তাম। রসিক নানা আমার সুন্দর করে সুরা ক্বিরাত পাঠ করতেন, আবার পরে যখন আমাদের সাথে গল্প করতেন, তখন কোমড় দুলিয়ে নজরুলের “চমকে চমকে ধীর ভীরু পায় পল্লীবালিকা বনপথে যায়” গানটি নৃত্য সহকারে গেয়ে শোনাতেন। ধর্ম ও সংস্কৃতি, দুটোকেই তিনি নিষ্ঠার সাথে ধারণ করতেন। নানাবাড়িতে সারাদিন আমি মনের আনন্দে গ্রামের মাঠে ঘাটে তরুতলে ঘুরে বেড়াতাম আর এ কবিতার কথাগুলোর কথা মনে করতামঃ “আমাদের গ্রামখানি ছবির মতন, মাটির তলায় এর ছড়ানো রতন। মাঠ ভরা ধান চাল, জল ভরা দীঘি, চাঁদের কিরণ লাগে করে ঝিকিমিকি”।
আমার আবেগ অনুভূতি আমাকে খুব আন্দোলিত করে যখন আমি প্রার্থনায় মনোনিবেশ করি। আমি অন্তর থেকে অনুভব করি আমার স্রষ্টা আমাকে খুব ভালবাসেন। এমন অনেকদিন গেছে যখন স্রষ্টার এ অপার ভালবাসার কথা ভেবে অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে জায়নামাযে, রাতে বালিশে। আমার মতে প্রার্থনাও ভালবাসারই রূপান্তর। স্রষ্টাকে ভালবেসে যখন প্রার্থনা করতে পারি, তার পর থেকে অনেকদিন পর্যন্ত নিজেকে অনেক পরিশুদ্ধ মনে হয়। প্রার্থনায় নিজের কথা আসে, ভালবাসার মানুষের কথা আসে, রক্তের বাঁধনে বাঁধা মানুষের কথা আসে, এমনকি কখনো কখনো কোন বাঁধন নেই- এমন মানুষের কথাও আসে। প্রার্থনার সাথে আমি প্রেম খুঁজে পাই। প্রেমের মাঝেও প্রার্থনা উহ্য থাকে।
প্রেম, প্রকৃতি আর প্রার্থনার আমার এ ভাবনাগুলো, অনুভূতিগুলো, বিশ্বাসগুলো সম্পূর্ণই আমার। তবু এগুলো পড়ে যদি কোন পাঠক তার নিজের ভাবনার সাথে কিছু মিল খুঁজে পান, তাহলে ভাববো, লেখকের আর পাঠকের মাঝে এক অদৃশ্য যোগসূত্র তো থাকতেই পারে।
ঢাকা
২৯ জানুয়ারী ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: উদ্ধৃতি এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০২
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: প্রেম, প্রকৃতি আর প্রার্থনার আমার এ ভাবনাগুলো, অনুভূতিগুলো, বিশ্বাসগুলো সম্পূর্ণই আমার। তবু এগুলো পড়ে যদি কোন পাঠক তার নিজের ভাবনার সাথে কিছু মিল খুঁজে পান, তাহলে ভাববো, হৃদয়ে হৃদয়ে এক অদৃশ্য যোগসূত্র তো থাকতেই পারে। ঃ ঠিক বলেছেন।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: উদ্ধৃতি এবং মন্তব্যে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৪
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন:
পোষ্টের জন্য ফুলের শুভেচ্ছা।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: ফুলেল শুভেচ্ছার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। প্রীত হ'লাম।
৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২০
পুলহ বলেছেন: বয়সে আমি আপনার অনেক ছোট হলেও এই লেখাটা পড়ে মনে হলো- আছে ! যোগসূত্রটুকু আছে।
আনন্দের কথা হলো- সে যোগসূত্র স্থাপন করেছে প্রেম, প্রকৃতি আর প্রার্থনার মত মহৎ কিছু বিষয় ...
শুভকামনা শ্রদ্ধেয়। লেখার বেশিরভাগ অংশই সুপাঠ্য, সুন্দর এবং উন্নত মানসিকতার পরিচয় বহনকারী।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রেম, প্রকৃতি আর প্রার্থনার মত মহৎ কিছু বিষয়ে মনটাই মুখ্য, বয়স সেখানে একটা সংখ্যা মাত্র। প্রকৃতির বিধান মত কেউ আগে এসেছে, কেউ পরে। সে হিসেবটাই সংখ্যায় লেখা থাকে। কেউ আগে যাবে, কেউ পরে। কে কখন, তা কেউ জানে না।
মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও আন্তরিক শুভেচ্ছা!
৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৫
রানা আমান বলেছেন: খুবই ভালো লাগলো লেখাটুকু পড়ে ।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, রানা আমান। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। পাঠকের ভাল লাগা লেখকের প্রেরণা।
৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
হারানো দিনের অনেক স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন।
ভাল থাকবেন।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
শুভেচ্ছা রইলো...
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৩৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনারও হারানো দিনের কিছু স্মৃতি নিয়ে পোস্ট লিখতে পারেন।
৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫
গেম চেঞ্জার বলেছেন: য়ঃসন্ধিকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত “পোস্টমাস্টার” গল্পটা পড়ে আমি খুবই অভিভূত হয়েছিলাম। পড়তে পড়তে প্রায় মুখস্থের মতই হয়ে গিয়েছিলো। আজও পড়ি, এটা আজও আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প। সেটা পড়ে বুঝেছিলাম স্নেহ কি, মায়া কি, ভালবাসা কি, বিরহ কি, বিচ্ছেদ কি।
আমার কাছে ইব্রাহিম খাঁ-র একটা গল্প আজও মনে দাগ কাটে! নামটা ঠিক কি ছিল মনে করতে পারছি না। তবে জন্তুর প্রতি যে একটা মায়া জন্মে, ভালবাসা জন্মে সেটা সেই শৈশবেই দাগ কেটেছিল মনে!
এরপর ফটিক! রবিঠাকুরেরই লেখা! সেটা পড়ে চোখে পানি এসে গিয়েছিল! মায়ের প্রতি ছেলের অন্তর্নিহীত ভালবাসার সংজ্ঞা সেটা থেকেই বুঝেছিলাম!!
প্রেম!! সে তো অসীম শক্তিশালী রশ্মি! যে যত দৃঢ়ভাবে এটা ধারণ করে সেই সেটার প্রাবল্য বুঝতে পারবে!!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: সব শেষে দারুণ একটা কথা বলে গেলেন। প্রেম!! সে তো অসীম শক্তিশালী রশ্মি! যে যত দৃঢ়ভাবে এটা ধারণ করে সেই সেটার প্রাবল্য বুঝতে পারবে!!- অতি চমৎকার কথা!
রবীন্দ্রনাথের "ছুটি" গল্পটিও মনে রেখাপাত করে গিয়েছিল। গল্পের নায়কের যে বয়স, আমিও গল্পটি পড়েছিলাম সে বয়সেই। তাই গল্পের সাথে সম্পূর্ণ আত্মস্থ হতে পেরেছিলাম। তবে পোস্টমাস্টার এ প্রেমের যে আধ্যাত্মিক রূপ চিত্রিত হয়েছে, তা অনবদ্য, কালজয়ী।
সময় করে আমার এ লেখাটা পড়ে যাবার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত।
শুভেচ্ছা...
৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪০
সুমন কর বলেছেন: আপনার লিখাটি চমৎকার লাগল। +।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত।
শুভেচ্ছা জানবেন।
৯| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২২
রাতুল_শাহ বলেছেন: ১ম প্যারা পড়ার পর, মনের টাইম মেশিনে ছোট বেলায় ঘুরতে গেছিলাম।
মায়ের হাতে ভাত খাইয়ে নেওয়া, বাবার সাথে দৌড়ের প্রতিযোগিতা, বাবার ঘাড়ে চড়ে বাজার থেকে আসা। বাবা আমাদের জ্বালাতন করতো, আমরা মায়ের কাছে গিয়ে নালিশ করতাম। এইগুলো প্রায় মনে পড়ে।
আমার মা যখন ছোট বোনকে ভাত খাওয়ায় তখন বড় ভাই মায়ের হাতে ভাত খাওয়ার জন্য বসে যায়। মা বড় ভাইকে বকা দিতে দিতে ভাত খাওয়ায়।
পরিবারের ভালোবাসাটা আসলেই অন্যরকম- অতুলনীয়।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ে এমন সুন্দর একটা মন্তব্য রেখে যাবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ, রাতুল_শাহ। আপনার পরিবারের একটা সুন্দর, মায়ামাখা চিত্র ভেসে উঠলো আপনার মন্তব্যে।
বাবা আমাদের জ্বালাতন করতো, আমরা মায়ের কাছে গিয়ে নালিশ করতাম - আদর, ভালবাসা, শ্রদ্ধাভরা একটা মন্তব্য, স্পর্শ করে গেল। বেশীরভাগ লোক ভালবাসা বলতে সর্বপ্রথমে এবং অনেক সময় কেবলমাত্র মায়ের ভালবাসার কথা স্মরণ করে। বাবার ভালবাসা অনেক সময় অপ্রকাশ্য, অনুচ্চারিত রয়ে যায়, তাই unackonowledged ও বটে। আপনার লেখায় বাবার ভালবাসার কথা এসেছে দেখে একজন বাবা হিসেবে গর্বিত বোধ করছি।
পরিবারের ভালোবাসাটা আসলেই অন্যরকম- অতুলনীয় - ঠিকই, এবং আপনি সেটা উপলব্ধি করেছেন বলে প্রীত হ'লাম। আমি এরমএরই একটা অনুভূতির কথা ভাবতে ভাবতে ফেইসবুকে সবেমাত্র একটা স্ট্যাটাস দিয়ে এলামঃ Family bondage is a great strength. He who contributes to strengthen it, strengthens himself.
১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:২৪
জুন বলেছেন: লেখার প্রথম কটি চরণ এ আপনার উপলব্ধির সাথে একই অনুভূতি বোধ হলো খায়রুল আহসান। মা অসুস্থ থাকায় বাবার আদর পেয়েছিলাম বেশি। কারো একটু বকাতেই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল ভাত না খাওয়া। মনে পড়ে রাতে না খেয়ে শুয়ে থাকলে আব্বা ভাত মেখে মশারীর ভেতর ঢুকে খাইয়ে দিতো। কই হারিয়ে গেলো সেই সব দিন।
পোষ্টমাষ্টারের সেই রতনের কথা মনে পড়লে বুকের ভেতর মুচড়ে উঠেছে কতদিন। খালি মনে হতো উনি আর কেন একবার ও আসলো না।
আর প্রকৃতির অমোঘ আকর্ষন আজও আমি এড়াতে পারি না। বুনো গাছ আমাকে চুম্বকের মত টানে। তাই টবের মাঝে একট এলোমেলো সবুজ।
আমার টিয়া বুলবুলি পাখিরা যেন ফিরে না যায় খাবার না পেয়ে। তার জন্য ভোর সকালে এ বারান্দা ও বারান্দায় দৌড়ে খাবার দেয়া। আপনার লেখার ভেতর এ লেখাটি মনকে ছুয়ে গেল গভীর আবেগে।
+
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ, জুন। আপনার লেখার মধ্য দিয়ে আপনার একটা ছবি ভেসে ওঠে। তা থেকে জেনেছি আপনি কত বড় একজন প্রকৃতি প্রেমিক। এ ছাড়া প্রকৃ্তির যে উদারতা, তারও প্রতিচ্ছবি আপনার লেখায়, মন্তব্যে প্রকাশ পায়।
মা অসুস্থ থাকায় বাবার আদর পেয়েছিলাম বেশি। কারো একটু বকাতেই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল ভাত না খাওয়া। মনে পড়ে রাতে না খেয়ে শুয়ে থাকলে আব্বা ভাত মেখে মশারীর ভেতর ঢুকে খাইয়ে দিতো। - স্পর্শ করে গেল!
আমি চাই আমার ছেলেরা আমার চেয়ে ওদের মাকে অনেক, অনেক বেশী ভালবাসুক। কারণ ওরা ভাগ্যবান, ওরা পৃথিবীর একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়েছে। ওরা যত বড় হয়েছে, আমার সাথে ওদের কথাবার্তা তত কমে গেছে, মায়ের সাথে ততটাই বেড়েছে। কিন্তু আমি ঠিক ঠাক আছি কিনা, সে ব্যাপারে ওরা তীক্ষ্ণ নজর রাখে এবং সময়ানুযায়ী প্রয়োজনীয় যা করার তা করে। ওরা আমাকে ফ্রী রেখেছে বলেই তো আমি ব্লগে, লেখালেখিতে এতটা সময় দিতে পারছি। ভালবাসার অভিব্যক্তির নানা রূপ!
খালি মনে হতো উনি আর কেন একবার ও আসলো না। - লেখাটা পড়ার সময় আমারও তাই মনে হয়েছিলো। আবার এটাও মনে হয়েছিলো, রতন কেন আরেকটু কান্নাকাটি করে দাদাবাবুকে রাজী করালোনা তাকে নিয়ে যাবার জন্য! বড় হয়ে বুঝেছি, তাহলে এটা আর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প হতো না।
মন্তব্যটি খুব ভাল লেগেছে।
১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০০
রাতুল_শাহ বলেছেন: জুন বলেছেন: কারো একটু বকাতেই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল ভাত না খাওয়।
হা হা হা......... আমার সাথে মিল আছে। এই সুযোগ বাসায় ভালো রান্না হত। কিন্তু রাগ কমতো না, খাওয়া হত না, সব মজা করে খেত বড় ভাই। পরে রাতে রান্নাঘরে ঘরে নিজে গিয়ে দেখতাম মজার মজার রান্না অর্ধেক শেষ। পরে আস্তে আস্তে বুঝছি- রাগ করে থাকলে নিজেরই ক্ষতি।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার সংসারে আমার স্ত্রীর একটা কড়া নির্দেশ আজ অবধি কঠোরভাবে পালিত হয়ঃ কেউ ভাত না খেয়ে রাতে ঘুমাতে পারবে না, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লেও না। সেটা আজ অবধি সবাই অনুগতভাবে পালন করে। উনিও কখনো শত অভিমানেও রাত্রে উপবাস করেন নি। তাই ভাত না খেয়ে ঘুমানোর এবং সকালে নাস্তা না খেয়ে ঘর হতে বের হবার কালচারটা আমার পরিবারে নেই। কারো খুব অসুবিধে থাকলে কিংবা তাড়াহুড়ো থাকলে উনি মুখে তুলে খাইয়ে দিবেন, কিন্তু no disrespect to food!
১২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: প্রেম, প্রকৃতি বিবেচনায় নিজস্ব জগত থেকে সুন্দর আর কিছুই নেই, তাই তার প্রতি ভালোবাসা থাকে অপুরাণ, হৃদয়ের শৃঙ্খলিত বসবাস । তাই কখনো সম্পর্কের হয়না টানাপড়েন ।
প্রার্থনা একটি চমৎকার আত্মনুভূতি । এর মাধ্যমে মানুষ নিজেকে শতভাগ আবিষ্কার করতে পারে।
লেখাটুকু বেশ ভাল লেগেছে ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য।
প্রার্থনা একটি চমৎকার আত্মনুভূতি - যদি সেটা কেবলমাত্র দায়সারা ritual না হয়।
মন্তব্যে প্রীত হ'লাম। প্লাসে অনুপ্রাণিত।
১৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মনে হলো এ লেখাটা আমার, আমি লিখেছি, আমার মনের আবেগ ঢেলে দিয়ে লিখেছি। আপনার শৈশব, শৈশবের দুরন্তপনা, সবই যেন আমার। অনেক অনেক ভালো লাগলো লেখাটা।
খুব ভালো থাকুন। শুভ কামনা।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব ভাল লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। লেখক পাঠকের মনের যোগসূত্র স্থাপিত হলে তা লেখককে খুবই প্রেরণা দিয়ে যায়।
আশাকরি ভাল আছেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা...
১৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮
জুন বলেছেন: খায়রুল আহসান রাতুলকে দেয়া আপনার মন্তব্যের সুত্র ধরে আরেকবার আসতেই হলো। আমি কিন্ত বলেছি আমার কিশোরী বেলার কথা । আপনার স্ত্রীর মতই স্কুল টিচার মা এর কথা হলো ' না খেয়ে কতদিন থাকবে' ? খিদে পেলে নিজেই খাবে '। একথা শুনলে প্রবল অভিমানে মনে হতো জীবনেও আর কোনদিন ভাত খাবো না । কিন্ত গোয়েন্দা বিভাগের দুধর্ষ সুপারেন্টেন্ড বাবার মন ছিল অস্বাভাবিক নরম । আব্বার জন্য জীবনেও প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পারিনি পরবর্তী জীবনে এই এক্সপেরিমেন্ট আর করতে যাইনি ।
আমার ছেলে আবার তার বাবার মতই প্র্যকটিক্যাল । আমার মত গোস্বা কারবারে নেই। আমার সাথে রাগ হলে না খাওয়া তো দুরের কথা , পুরো মুলগীর (মাছ হলে না) হাড়িটাই পাতে ঢেলে নিলো
মন্তব্যের উত্তরের জন্য ধন্যবাদ ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আরেকবার আসতেই হলো - শুধু আরেকবার কেন, আরো বহুবার আসুন!
রাগ, অভিমান, এগুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল অনুভূতি। কখন কার উপর চেপে বসে তা অনুমান করারও উপায় নেই। স্থান কাল পাত্র অনুযায়ী এগুলোকে সঠিক মাত্রায় ব্যক্ত করার কৌশলটা রপ্ত করতে পারলে জীবনে আর সমস্যা হয় না। তবে এটা শিখতে এক জীবন সময়ের প্রয়োজন!
অভিমানে মন ভারী হলে চোখে শুধু শ্রাবনের আকাশ দেখা যায়। সে সময় আপনার স্নেহশীল বাবার মত কেউ এগিয়ে এলে আকাশটা মুহূর্তের মধ্যে শরতের আকাশ হয়ে যায়।
১৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৭
অরুনি মায়া অনু বলেছেন: আপনার ভাবনার সাথে কোথায় যেন আমার ভাবনারও একটা মিল খুঁজে পাচ্ছি। আমিও প্রকৃতি ভালবাসি। আমার মাঝেও রয়েছে প্রেমের নানান রূপ। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে অস্থিরতায় আমিও জায়নামাজে বসে প্রার্থনায় শান্তি খুঁজি। এই তিনটি বিষয় ছাড়া হয়ত জীবনটাই অসম্পূর্ণ।
সুন্দর গুছানো একটি লেখা। খুব ভাল লেগেছে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার এ মন্তব্য পড়ে।
এই তিনটি বিষয় ছাড়া হয়ত জীবনটাই অসম্পূর্ণ -- বোধ হয়, ঠিক বলেছেন!
মন্তব্যে প্রীত, প্লাসে প্রাণিত হ'লাম।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি কোথায় হারিয়ে গেলেন? ব্লগে ফিরে আসুন!
১৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩৮
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
শৈশব নিয়ে সাবলীল সরল প্রকাশ। হৃদয়ে দাগকাটার মতই লেখা!
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এ উদার মন্তব্যের জন্য। প্লাসে প্রাণিত হ'লাম।
১৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪২
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
প্রার্থনার সাথে আমি সচরাচর প্রেম খুঁজে পাই। প্রেমের প্রত্যাশায়ও প্রার্থনা চলে আসে। সত্যবচন! প্রার্থনারত মনের থেকে পবিত্র মন নেই! এখানেই মানুষের সকল ভারমুক্তি!
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রার্থনারত মনের থেকে পবিত্র মন নেই!- ঠিক বলেছেন। দুটো মন্তব্যেই অনুপ্রাণিত হ'লাম।
১৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৩৯
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রেমের এবং প্রকৃতিকে ভাল লাগার অনুভূতি আমার থাকলেও প্রার্থনা তেমন নেই।। তবে কৃতজ্ঞতা বোধুটুকু আছে।। অথচ বলা যায়, এই তিনটি অনুভূতিরই জঠরভূমি প্রেম।।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: অথচ বলা যায়, এই তিনটি অনুভূতিরই জঠরভূমি প্রেম - খুব সুন্দর বলেছেন।
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। "লাইক" করেছেন, অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা রইলো....
১৯| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হৃদয়ে হৃদয়ে এক অদৃশ্য যোগসূত্র তো থাকতেই হবে।
একই মাটির আর মায়ের মাতৃত্বে ভিন্নতা হবেইবা কেনো!!! হয়তো আঙ্গিকে রুপকে একটু উনিশ-বিশ এইতো
অসাধারন লাগল। ডুব দিয়ে তুলে আনা মুক্তো মানিক যেন
++++++++++++
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: একই মাটির আর মায়ের মাতৃত্বে ভিন্নতা হবেইবা কেনো!!! - চমৎকার এ উপলব্ধি আপনার। খুব ভাল লাগলো কথাটা।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনেক, অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভকামনা...
২০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৩
ধ্রুবক আলো বলেছেন: প্রেম, প্রকৃতি আর প্রার্থনা- আমারও চিরদিনের প্রিয় বিষয়, লেখা, আর ভাবনার সাথে অনেক মিল রয়েছে,
সে এক দারুন অনুভূতি, খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো উপস্থাপন, একদম অসাধারন....!!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, শুভ কামনা রইলো, ভালো থাকবেন...
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখা আর ভাবনার সাথে অনেক মিল রয়েছে - এ কথা জেনে খুশী হ'লাম। লেখার প্রশংসায় আর প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০০
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমার আবেগ অনুভূতি আমাকে খুব আন্দোলিত করে যখন আমি প্রার্থনায় মনোনিবেশ করি। আমি অন্তর থেকে অনুভব করি আমার স্রষ্টা আমাকে খুব ভালবাসেন। এমন অনেকদিন গেছে যখন স্রষ্টার এ অপার ভালবাসার কথা ভেবে অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে জায়নামাযে, রাতে বালিশে। আমার মতে প্রার্থনাও ভালবাসারই রূপান্তর। স্রষ্টাকে ভালবেসে যখন প্রার্থনা করতে পারি, তার পর থেকে অনেকদিন পর্যন্ত নিজেকে অনেক পরিশুদ্ধ মনে হয়। প্রার্থনায় নিজের কথা আসে, ভালবাসার মানুষের কথা আসে, এমনকি কখনো কখনো কল্পিত ভালবাসার মানুষেরও। প্রার্থনার সাথে আমি সচরাচর প্রেম খুঁজে পাই। প্রেমের প্রত্যাশায়ও প্রার্থনা চলে আসে। ঃ যথেষ্ট প্রেরণা দায়ক।