নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের কাশ্মীর ভ্রমণ- ৬; ক্ষণিকের দেখা, তবু মনে গাঁথা

২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:০৫

সেদিন (০২ মে ২০১৯) সন্ধ্যার সময় মানযুর হোটেলে এসে আমাদের সাথে দেখা করলো। আমি প্রথম সাক্ষাতেই আগের রাতে আমাদের জন্য দিল্লী-শ্রীনগর এয়ার টিকেট করে দেয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সবার আগে তার সমুদয় পাওনা পরিশোধ করলাম। তারপরে আগামী কয়েকদিনের প্রোগ্রাম নিয়ে আলাপ আলোচনা হলো। আমরা কাশ্মীরে আমাদের অবস্থানের সময়সীমা আরেকটা দিন বাড়াতে সম্মত হ’লাম এবং তাকে অনুরোধ করলাম একটা রাত প্যাহেলগামে রাখার জন্য। সে জানালো, শ্রীনগরের যে হোটেলটিতে আমরা উঠেছি, সেই হোটেলটিতে সে আমাদের জন্য তিনটি রাতের জন্য বুকিং দিয়ে রেখেছিল। আমাদের অনুরোধ অনুযায়ী নতুন প্রোগ্রাম করতে গেলে তাকে এখন একদিনের বুকিং ক্যান্সেল করতে হবে। তবুও সে আমাদের অনুরোধ রক্ষা করার প্রতি আগ্রহ দেখালো। আমাদের সামনেই সে হোটেলের জেনারেল ম্যানেজারের সাথে কথা বলে বিনা মাশুলে একটি রাত কমিয়ে আনলো এবং প্যাহেলগামের একটি হোটেলে নতুন বুকিং দিল। সাব্যস্ত হলো, ০৫ই মে তারিখে আমরা প্যাহেলগাম যাব এবং একটি রাত থেকে পরেরদিন সকালে সরাসরি সেখান থেকে শ্রীনগর এয়ারপোর্টে যাব।

০৩ মে সকাল দশটার দিকে আমরা সোনামার্গ এর উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। শ্রীনগর শহর থেকে বের হবার পর থেকেই একটু ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভব করছিলাম এবং যতই সোনামার্গের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম, ততই ঠান্ডাটা একটু একটু করে বাড়ছিল। পথে কোথাও কোথাও সুন্দর দৃশ্যাবলী দেখে ছবি তুলতে ইচ্ছে হচ্ছিল, কিন্তু সব জায়গায় তো আর গাড়ী থামানো যায় না! সাড়ে এগারটার দিকে শাফি একটি জায়গায় গাড়ী থামিয়ে বললো, এখান থেকে চা/কফি খেয়ে নিতে পারেন। চা/কফি পানের চেয়ে আমরা চারিদিকের দৃশ্য দেখে নয়ন জুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, আর সাথে কিছু ছবি তোলা তো আছেই। প্রস্থানের আগে আমি শীত কাটাতে তড়িঘড়ি করে এক কাপ গরম ‘মাসালা চা’ পান করে নিলাম। বাকী দু’জন ইচ্ছুক ছিলনা। এলাকাটি ছিল সিন্ধু নদীর তীরে। এমনিতেই কনকনে ঠান্ডা বাতাস মৃদু লয়ে বইছিল, তার উপর নদী তীর বলে কথা! নদীর জল কতটা ঠান্ডা ছিল তা স্পর্শ না করলে কল্পনাও করা যায় না। নদীর অপর পারে দেখলাম, কয়েকজন লোক, খুব সম্ভবতঃ সৈনিক কিংবা আইন শৃঙ্খ্লা রক্ষাকারী বাহিনীর নওজোয়ান, সেই ঠান্ডা জলেই অবগাহন করে তীরে উঠে উর্দি পরে প্রস্থান করলো। ওদেরকে দেখে যেন আমাদের কাঁপুনিটা আরেকটু বেড়ে গেল!

পাথর, গাছপালা, বরফাবৃত বনভূমি, বরফ গলা নদী- এসবের প্রত্যেকটাই আমার মনে আলাদা আলাদা ইফেক্ট তৈরী করে। আর এর সবগুলোর সংমিশ্রন একসাথে দেখে মনে খুবই প্রফুল্ল বোধ করছিলাম। এমন পরিবেশে একটু দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে স্রষ্টার অপার সৌন্দর্য দু’চোখ ভরে দেখে নিতে ইচ্ছে হয়, মনের ভাবনাগুলোকে মেলে দিতে ইচ্ছে করে যেন ওরা যেদিকে খুশী সেদিকে বিচরণ করতে পারে; কিন্তু সময় বড় বালাই। পথে আরো দুই এক জায়গায় থেমেছিলাম, সবখানেই আরো কিছুক্ষণ থেকে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল, কিন্তু শাফি’র তাড়ায় তা সম্ভব হয়নি। গাড়ীতে ওঠার সাথে সাথেই তার নিত্য প্রশ্ন, “স্যার, কাশ্মীর আপকো পাস ক্যায়সা লাগতা হায়”? আমারও গৎবাঁধা জবাব- “বহুত আচ্ছা”! “স্যার, সবকুছ ঠিক হ্যায়”? হুঁ। “ম্যায় ঠিক হুঁ”? হুঁ, হুঁ, বিলকুল ঠিক! পথ চলতে চলতে একসময় একটা সাইনবোর্ডে দেখলাম, ‘সোনামার্গ ০৯ কিঃমিঃ’। তার ঠিক ২০ মিনিট পর বেলা একটায় একটা বেইলী ব্রীজের সন্নিকটে এসে পৌঁছলাম, যেটার উপরে সোনামার্গ ডেভেলপমেন্ট অথরিটীর স্বাগতবাণী উৎকীর্ণ ছিল- “WELCOME TO SONAMARG”।

পথে আসতে আসতে শাফি আমাদেরকে ব্রীফিং দিয়ে চলছিল, স্যার এ এলাকার মানুষ অত্যন্ত গরীব। মজদুর শ্রেণীর। এদের আয় রোজগার বলতে কিছুই নেই। মাত্র ছয় মাসে আপনারা (পর্যটকরা) যা দিয়ে যান, তা দিয়েই ওদের সারাটা বছর চালাতে হয়। কারণ বছরের ছয়টি মাস এ এলাকা কখনো কখনো বিশ ফুট বরফের নীচেও থাকে। এইতো মাত্র গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সড়কটি পর্যটকদের যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। আবার বন্ধ করে দেয়া হবে অক্টোবরের শেষের দিকে। তখন ঐ যে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে যেসব ঘরবাড়ী দেখছেন, সেসব ফেলে রেখে ওরা ভিন্ন জায়গায় চলে যাবে। আর খাবে আপনাদের দেয়া টাকা পয়সা ভাঙ্গিয়ে। ওর মুখে এ কথা শুনে মনটা দয়ার্দ্র হয়ে উঠলো। তবে এ কথাও সে বললো, ওরা কিন্তু আপনার কাছে পনি রাইডের জন্য, স্লেজিং এর জন্য অনেক বেশী রুপী চাইবে। আপনি কিন্তু অতটা দেবেন না। ট্যুরিস্ট হিসেবে আপনাদের স্বার্থও আমাদের দেখা প্রয়োজন। আপনারা না আসলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। কত দিতে হবে, সে সম্পর্কে শাফি আমাদেরকে একটা ধারণা আগে ভাগেই দিয়ে রাখলো।

ঘোড়ায় আমি আগেও চড়েছিলাম। কিন্তু আমার স্ত্রী ও ছেলের জন্য সেই ‘পনি রাইড’ একটি অপ্রত্যাশিত রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ছিল। দেখলাম, ছেলের ও সহিসের সাহায্য নিয়ে আমার স্ত্রী একটি পনি’র পিঠে চেপে বসলো, আমি সত্যিই সেটা দেখে খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম ও উঠতে হয়তো ভয় পাবে কিংবা কোন অসুবিধে হবে। ওর স্বতঃস্ফূর্ত ঘোড়ায় ওঠা দেখে আমরা দুজনাও উঠলাম। শুরু হলো পাকা রাস্তা দিয়ে ‘পনি যাত্রা’। কিন্তু একটু পরেই যখন পনি পাকা রাস্তা ছেড়ে পাহাড়ের পাদদেশ বেয়ে উঁচু নীচু পায়ে-চলা পথ ধরে এগোতে শুরু করলো, তখন স্ত্রীর জন্য একটু শঙ্কা বোধ করতে শুরু করলাম। সবচেয়ে ভয় লাগছিল ঘোড়া যখন বরফ গলে যাওয়া পাথর ছড়ানো কর্দমাক্ত পথ ধরে উঁচুতে উঠছিল কিংবা নীচুতে নামছিল। আমি সহিসকে বললাম, ওর ঘোড়াটা যেন কিছুতেই না দৌড়ায়, কিংবা না পিছলায় সেটা খেয়াল রাখতে। আমাদের তিন জনের তিনটি পনি’র জন্য দুইজন সহিস হেঁটে হেঁটে আসছিল। প্রাপ্য বখশিস যেন কম ভাগাভাগি হয়, সেজন্যেই একজন সহিসকে কম আনার এ ব্যবস্থা। সহিস অভয় দিয়ে বললো, “স্যার, ঘাবরাইয়ে মাত। ইয়ে গোড়া (ঘোড়া) সব ট্রেইন্ড হ্যায়। হার দিন ট্যুরিস্টকো সাথ চালতা হ্যায় না!” সহিস আমার স্ত্রীকে বললো, ঘোড়া যখন উঁচু থেকে নীচু পথে নামবে, তখন যেন সে একটু সামনে ঝুঁকে থাকে। আবার যখন নীচু থেকে ওপরে উঠবে, তখন যেন একটু পেছনের দিকে ঝুঁকে থাকে। আমি পাশ থেকে লক্ষ্য করছিলাম, সহিসের কথা সে অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে। তা দেখে আমি মুগ্ধ হ’লাম। আমার ছেলে বেশীরভাগ সময় সহিসের সাহায্য ছাড়াই সামনে থেকে একা একাই পথ পাড়ি দিয়েছে। এ রকম অভিজ্ঞতা ওদের জীবনে এই প্রথম।

অবশেষে একটা জায়গায় এসে ঘোড়া থেমে গেল। সহিস আমাদেরকে ঘোড়া থেকে নামতে বললো। প্রথম অভিজ্ঞতা হিসেবে ঘোড়ায় চড়াটা যতটা ঝুঁকিপূর্ণ, নামাটা তার চেয়ে বেশী। দেখলাম, আমার স্ত্রী বেশ দক্ষতার সাথে সে বৈতরণীও পার হলো। সাফল্যের সাথে নেমে এক গাল হাসি! স্লেজিং তেমন কিছু নয়, চাকা লাগানো গাড়ীতে (গাড়ী মানে চাকার উপর কাঠের তক্তা বসানো, ঢাকার রাস্তায় কিছু কিছু ফকির যেগুলোতে চলে ফিরে) আমরা বসে থাকবো, আর সহিসেরা দড়ি টেনে সে গাড়ীকে বরফের উপর দিয়ে চালিয়ে নিয়ে যাবে। এটারই গালভরা ইংরেজী নাম স্লেজিং! তবে ঢালু থাকার কারণে এবং বরফের উপরিভাগ পিচ্ছিল থাকায় গাড়ী যত নীচে নামে, গতি তত তীব্র হয়। কম বয়স্করা তাতে বেশ আনন্দ উপভোগ করে। স্লেজিং শেষে আমার স্ত্রী ও ছেলে বেশ কিছুক্ষণ বরফের উপরে হাঁটাহাটি করেছিল, এমন কি কিছুক্ষণ শুয়েও ছিল। আমি একটা পাথরের উপর বসে বরফ গলা জলের গতিধারা দেখছিলাম। আর দড়িটানা ক্লান্ত সহিসেরা অল্পক্ষণের জন্যে হলেও হাঁপাচ্ছিল। রিযকের জন্য ওদেরকে এতটা কষ্ট করতে দেখে মায়া হচ্ছিল। স্লেজিং এর সময় পাশাপাশি অন্য একটি দলের কিছু লোকজন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ওয়েভ করছিল। আমিও তাদের দিকে তাকিয়ে ওয়েভের মত করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা বোধহয় স্বভাবসুলভ ‘স্যালুট’ এর মত কিছু একটা হয়ে গিয়েছিল। সেটা দেখে আমাদের একজন সহিস বলে উঠলো, “স্যারজী, আপকা স্যালুট বহুত আচ্ছা হ্যায়। ওয়াপস জানে কো ওয়াক্ত ঘোড়াকো উপরমে ব্যঠ কার ঠিক এ্যায়সা এক স্যালুট দেগা, হাম ফটো খিচেঙ্গে!”

চলবে....

ঢাকা
১৫ মে ২০১৯


সোনামার্গের প্রবেশ পথে একটি বেইলী ব্রীজের শীর্ষে উৎকীর্ণ সোনামার্গ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বাগতবাণী
Welcome post at the entrance, posted by Sonamarg Development Authority


সিন্ধু নদীর তীরে খাদ্যান্বেষণে ভেড়ার পাল
Sheep grazing beside River Sind


ব্লগার চাঁদগাজী এর জিজ্ঞাসার উত্তরে, ঘাস খেয়ে চলে যাচ্ছে এমন আরও একটি ভেড়ার পালের ছবি দিতে হলো।


সিন্ধু নদীর বাঁকে......
The River Sind took a bend there


বরফ গলা সিন্ধু নদী, ওপাড়ে কয়েকজন ফৌজি নওজোয়ান এই হিমশীতল জলেই গোসল সেরে পাড়ে ঊঠে উর্দি পরে নিল।
The water of the River Sind was ice-cold, yet some soldiers were seen bathing in this ice cold water on the other side.


এরকম বরফ নিঃসৃত বহু নদী যুগ যুগ ধরে সভ্যতাকে লালন করে আসছে, ধারণ করে আসছে। ওরা স্বাধীনভাবে প্রবাহিত হয়, কোন ভৌগলিক সীমারেখা না মেনেই। বরং ওদের গতিপথ অনুযায়ীই ভৌগলিক সীমারেখা নির্ধারিত হয়ে থাকে।
The running water has been sustaining civilisations through the ages. Rivers do not bend according as the borders, but borders are usually marked according as the Rivers flow.


আরোহীরা স্লেজিং এর জন্য নেমে যাবার পর ঘোড়াগুলো এখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়।
The resting ponies after the riders dismounted from them.


বহমান শীতল জলপ্রবাহের পাশে রৌদ্রোষ্ণ পাথরে বসে কাঠিন্য ও তারল্য, শৈত্য ও উষ্ণতার বৈপরীত্য নিয়ে ভাবছিলাম
Enjoying the scenery sitting on a boulder beside the running stream, thinking about the contrast between the coexisting nature


সবাইকে অভিবাদন!

মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৪০

মা.হাসান বলেছেন: অসাধারণ বর্ননা। অাসলে জীবন বাংলাদেশে যত সহজ, বাইরে মনে হয় এর চেয়ে অনেক কঠিন। পাথরের উপরে বসে যে পোষাকে ছবি তুলেছেন তার সাথে শীতের যে বর্ণনা দিয়েছেন তার মিল কম পেলাম। ঐখানে হয়তো শীত কম ছিল। প্রকৃতি অামাদের দেশের মতো সবুজ মনে হলো না, যেন একটু ধূসর । সেনাপতির স্যালুটের ছবি দিলে অারো একটু বেশি আনন্দ পেতাম ।

২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ২:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রথম মন্তব্য এবং প্রথম প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।
৩ নম্বর ছবিটা মুছে দিয়েছি। ওটা আসলে গুলমার্গের ছবি, ভুলক্রমে এখানে পোস্ট হয়ে গেছে।
পাথরের উপরে বসে যে পোষাকে ছবি তুলেছেন তার সাথে শীতের যে বর্ণনা দিয়েছেন তার মিল কম পেলাম - আপনি ঠিকই ধরেছেন। রাস্তার এ পাশটা (যে পাশে বসেছিলাম) একটু উঁচু ছিল, তখন কিছুটা রোদও উঠেছিল, তাই পাথর উষ্ণ হয়ে উঠেছিল। রাস্তার ওপাশটা ছিল নীচু ও ঢালু, পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল একটি বরফ গলা স্রোতস্বিনী। সেখানে শীতল হাওয়া বইছিল। আর আমি এমনিতেও খুব একটা জ্যাকেট ইত্যাদি পরিধান করি না, নেহায়েৎ শীতে কাবু না হলে। তবে আমার গলায় চট করে ঠান্ডা লেগে যায়, তাই হাতের কাছে একটা মাফলার রাখি। সেটা গলায় পেঁচিয়ে নিলে নিরাপদ বোধ করি, অন্যাঙ্গে শীত বোধ হলেও।
বাংলাদেশের প্রতি প্রকৃতিমাতা অবশ্যই উদার। আমরা মায়ের রুদ্রমূর্তি খুব কমই দেখতে পাই।
সেনাপতির স্যালুটের ছবি দিলে অারো একটু বেশি আনন্দ পেতাম - আচ্ছা, দিয়ে দিলাম!!

২| ২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৪২

মা.হাসান বলেছেন: ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে কত দুটি পর্ব পড়লেও মন্তব্য করার সুযোগ পাই নি যা মার্জনা করার অনুরোধ রইলো ।

২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: মার্জনা করার প্রশ্ন অবান্তর।
তবে, আপনি একজন মেধাবী এবং মনযোগী পাঠক, তাই আপনার মন্তব্য আমার কাছে সদা সর্বদা প্রত্যাশিত। সব লেখকই তাদের লেখায় আপনার মত মনযোগী পাঠকের উপস্থিতি কামনা করেন, আমিও করি। ভাল মন্দ যা কিছুই লিখেন না কেন, তা আমার দ্বারা প্রত্যাশিত ও সমাদৃত হবে, কেননা আমি লক্ষ্য করেছি যে আপনি কখনো কোন অন্যায্য কথা বলেন না। আবার বলার স্টাইলও ভাল।
তাই মার্জনা নয়, বরং অনুরোধ থাকবে, যদি সময় অনুমতি দেয়, তাহলেই কেবল দুটো কথা বলে আসতে পারেন।

৩| ২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২

সোনারবাংলা২০১৯ বলেছেন: সুন্দর লেগেছে।

২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রশংসা এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

৪| ২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: মনে হলো যেন আমিই কাশ্মীর থেকে ঘুরে এলাম।
সহজ সরল ভাষায় সুন্দর লিখেছেন।

২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, এমন প্রেরণাদায়ক একটি মন্তব্যের জন্য।

৫| ২৩ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ২:২৭

ওমেরা বলেছেন: অল্প দেখা মনে গাঁথা , ছবি , বর্ণনা সবই ভালো লাগল।
ভাবীর প্রতি আপনার দায়িত্বশীলতা দেখে একটা শুনা কথা খুব মনে পরল , বিয়ের প্রথম দিকে থাকে স্বামী,স্রীর ভালোবাসায় আবেক থাকে আর শেষদিকে থাকে দায়িত্বশীলতার ভালোবাসা , দুটোই দরকার মানুষের জীবনে ।

অনেক ধন্যবাদ।

২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ছবি , বর্ণনা সবই ভালো লাগল - অনেক ধন্যবাদ। বাকী কথাগুলোও সুন্দর বলেছেন।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

৬| ২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আজ সকালেই আপনার ব্লগ ঘুরে এসেছি এই পর্ব লিখেছেন কি না তা দেখার জন্য। অনেক সুন্দর। প্রাণবন্ত এবং হৃদয়াগ্রহী ভ্রমন বৃত্তান্ত। শুভকামনা এবং ধন্যবাদসহ এই পর্বটিতেও +++

২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রশংসায় এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

৭| ২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:২০

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:
খয়রুল ভাই,
মহতরামা ভাবী সাহেবা আসলেই বড্ড সাহসী এবং সফলও বটে, তবে আপনাকে সাহসী করতে না পারায় কিছুটা ব্যর্থতাও রয়েছে ;)
সেগুলো লুকিয়ে রাখতেই হাসিটি দিয়েছিলেন হয়ত =p~


মুক্তি পাওয়া শেষ ছবিটি অসাধারণ হয়েছে
♥♥♥

২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ১০:২৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, অনেকদিন পরে পোস্টে আসার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য।

৮| ২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



হজের সফরে মিনায় তাবুতে অবস্থানস্থলের নিকটেই এক ভদ্রলোককে দেখেছি, হাজি সাহেবদের তিনি উটের পিঠে চড়ান। কয়েক মিনিট উটের পিঠে ঘুরানোর বিনিময়ে দশ রিয়াল করে নিতেন। আমাদের কেউ কেউ উটের পিঠে সওয়ার হয়েছিলেন। আপনাকে ঘোড়ায় আরোহনরত দেখে সে দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল।

২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ১১:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট পড়ে আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণের জন্য ধন্যবাদ। পুনঃমন্তব্যে প্রীত হ'লাম।

৯| ২৩ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


সোনামার্গে স্হানীর মানষজন দেখলেন? খুবই সামান্য কয়টি ভেঁড়া দেখলাম ছবিতে, ভেড়ার বড় পাল ছোখে পড়েছিলো? স্হানীয় ছেলেমেয়েদের দেখেছেন?

২৪ শে জুন, ২০১৯ সকাল ১০:১২

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্হানীয় মানুষজনের সাহচর্যে আসার সুযোগ খুব কমই হয়েছে, শুধু কয়েকজন সহিস, পর্যটন শ্রমিক আর দোকান কর্মচারী ছাড়া। লক্ষ্য করেছি, ওরা মানুষ জনের সাথে খুব আদবের সাথে কথা বলে।
খুবই সামান্য কয়টি ভেঁড়া দেখলাম ছবিতে, ভেড়ার বড় পাল ছোখে পড়েছিলো? - আপনার এ জিজ্ঞাসার উত্তরে আরেকটি ছবি সংযোজন করে দিলাম, যেখানে দেখা যাচ্ছে ঘাস খেয়ে আরেকটা বড় ভেড়ার পাল সেখান থেকে চলে যাচ্ছে।
স্হানীয় ছেলেমেয়েদের দেখেছেন? - না, তেমন একটা চোখে পড়েনি।

১০| ২৩ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: রেস্পেক্টেড স্যার,

আজ আপনার সঙ্গে আমরা সোনামার্গ যাত্রার সাথী হলাম। আপনার পোস্টে উঠে এসেছে প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহের জন্য কাশ্মীরের একাধিক স্থানে বছরে প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকে। সোনামার্গের অধিবাসীদের হতশ্রী আর্থ-সামাজিকতার কথা জেনে বিষন্ন হলাম। তবে উপত্যাকার অধিবাসীদের সার্বিক সততার নজির আছে। এমন ঘটনার সাক্ষী আমিও হয়েছি। দার্জিলিংয়ের জনকোলাহলে বিরক্ত হয়ে গত গ্রীষ্মাবকাশে আমরা বেশ কয়েক দিনের জন্য একটু দূরবর্তী রিমোট এলাকা লেপচাজগৎ, কালিম্পংএর বাগৌড়ি, ও দুর্গম সান্দাকফুর শ্রীখোলাতে গেছিলাম। লেপচাজগৎ ও বাগৌড়িতে স্থানীয় ভুটানি লেপচাদের হোমস্টেতে আতিথিয়েতা গ্রহণ করে অসম্ভব তৃপ্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু শ্রীখোলাতে এক বাঙালি মেজরের হোটেলের অভিজ্ঞতা আমার আজও ভোলার নয়। এত নিকৃষ্ট পরিষেবা আমি আমার টোটাল ভ্রমণ জীবনে পাইনি। অথচ ঝাঁ-চকচকে হোটেল। গুগল সার্চ করলেই প্রথমেই হোটেলটির নাম চলে আসবে।
হিমাচল প্রদেশ ভ্রমণ করতে গিয়ে দেখেছিলাম এক একটা পাহাড়ে কোন জনবসতি নেই। কিন্তু দেড়শ-দুইশো মেষ নিয়ে মেষপালক নির্জন স্থানে মেষ চড়াতে চলেছেন। ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে জেনেছিলাম, ওরা এরকম বহুদিন দিনের খাবার দাবার নিয়ে মেষ চরাতে বার হন এবং অনেকদিন পরে দূরে কোন পাহাড়ে আবার মেষ নিয়ে বাড়ি ফেরেন। ফলে বিশুদ্ধ পশুপালন যে এখনো মানুষের জীবিকা হতে পারে তা ওখানে গিয়ে বুঝেছিলাম।

আপনার বর্ণনায় স্লেজ গাড়ির সঙ্গে সিমলাতে দেখা স্লেজ গাড়ির ঠিক মিল পেলাম না। সিমলাতে বেড়াতে গিয়ে রোটাংএ আমরা বরফ পেয়েছিলাম আর পেয়েছিলাম পেট্রোলের স্লেজগাড়ি। একে তো প্রচন্ড অক্সিজেনের অভাব, তার ওপর স্লেজ গাড়ির ধোয়া রোটাং এ আমাদেরকে ভয়ঙ্কর শ্বাস কষ্টের মধ্যে ফেলেছিল।
এখনো পর্যন্ত বর্ণনায় আপনার ভেড়ার মাংস খাওয়ার পরিচয় পায়নি। জানিনা আগামীতে পাবো কিনা। তবে খচ্চর বা ঘোড়ার পিঠে চড়ার অনুভূতিটি বেশ উপভোগ্য। সিমলাতে আমরা মুহুর্মুহু মেঘ পেতাম; এই বৃষ্টি এই রোদ। সে দিক দিয়ে ভূ-স্বর্গের আবহাওয়াটি বেশ মেঘমুক্ত বলা যেতে পারে।
সবমিলিয়ে দারুন উপভোগ্য আপনার কাশ্মীর ভ্রমণ। আমরা আপনার যাত্রী পথের সাথী হয়ে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভকামনা জানবেন।


২৪ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট পড়ে আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা এখানে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
"এক বাঙালি মেজরের হোটেলের অভিজ্ঞতা আমার আজও ভোলার নয়। এত নিকৃষ্ট পরিষেবা আমি আমার টোটাল ভ্রমণ জীবনে পাইনি" - একজন মানুষ কিভাবে তার আচরণের দ্বারা অন্য মানুষের কাছে তার নিজেকে, দেশকে এবং জাতিকে তুলে ধরেন, সেটা এ উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যায়। কেউ স্মরিত হন সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে, কেউ নিন্দা ও ঘৃণার সাথে।
অতিরিক্ত চর্বির কারণে ভেড়ার মাংস সর্বত্র পরিহার করেছি, কারণ শ্রীনগরের একটি মুঘল রেস্টুরেন্টে প্রথম দিনের লাঞ্চেই বুঝেছিলাম, ভেড়ার মাংস কতটা গুরুপাক। মাছ ও মুরগীই আমাদের পছন্দ ছিল, কারণ এখন ভোজন বিলাসের বয়স নেই। :(
এই বৃষ্টি এই রোদ পরিস্থিতি আমরাও বেশ কয়েকবার পেয়েছি। প্রথমদিনেই সাক্ষাৎ পরিচয়ের পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাদের সবজান্তা দার্শনিক গাড়ীচালক আমাদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, "কাশ্মীরি নারী আর কাশ্মীরি আকাশের বিচিত্র খেয়াল আর ভাবগতিক বোঝা বড় দায়"! পরে কয়েকজন সহিসের মুখেও আমি একই কথার পুনরাবৃত্তি শুনেছি।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

১১| ২৩ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হ্যাটম অফ অভিবাদন প্রিয় সিনিয়র :)

অবশেষে সেই বিখ্যাত স্যালুটেশনের ছবি পেলাম! :)
আসলেই দারুন . . .

অভিবাদন জানায় অনেকে, কিন্তু হৃদয়ের আন্তরিকতা মিশে গেলেই তা বোধকরি ভিন্নমার্গ লাভ করে।
যা সহজেই অনুভব করেছিল আপনার গাইড ক্ষনিকের দেখায় :)

হৃদয়ের স্বচ্ছতা আর আন্তরিকতায় আজীবন এমনই থাকুন হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত, সকলের প্রিয় হয়ে।

+++++++++

২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: একজন আপাদমস্তক প্রাণবন্ত ব্যক্তির কাছ থেকে এমনই প্রাণবন্ত মন্তব্য আসবে, এটাই স্বাভাবিক!
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

১২| ২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:২৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: টাইপো সংশোধনী
হ্যাটম = হ্যাটস :P

২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: হ্যাটম = হ্যাটস - সেটা সহজেই বুঝে গেছি এবং অন্য পাঠকেরাও সহজেই বুঝবেন বলে আশা করি।
ধন্যবাদ।

১৩| ২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


ধন্যবাদ, সাদারণ মানুষের অবস্হা বুঝার জন্য ভেঁড়া, গরু, ছাগল, কলকারখানার পরিমাণ দেখতে আগ্রহী আমি

২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুবই ভাল কথা। আমি সেটা জানি।

১৪| ২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ১১:৫৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: কাস্মীরের এই পানিতে নেমে একটা ডুব দিতে পারলে মনে হয় শান্তি পেতাম, আমাদের দেশের নদীর পানিতে ৭০ ধরনের কেমিক্যাল পাওয়া গেছে আর ওয়াসার পানিতে নর্দমা।

২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: নদীটির হিমশীতল স্বচ্ছ জল দেহ মনে এক পবিত্রতা এনে দেবে, এমনটা আমারও মনে হয়েছিল।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

১৫| ২৪ শে জুন, ২০১৯ ভোর ৬:২৬

বলেছেন: নদীগুলো সভ্যতাকে লালান ও ধারন করে আসছে --- অসাধারণ লেখা।




মুগ্ধ হলাম।।

২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

১৬| ২৪ শে জুন, ২০১৯ সকাল ৮:৪৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: কাশ্মীর সম্পর্কিত কোন লেখা দেখলে তা আমার মনযোগ আকর্ষণ করে বিবিধ কারণে । কেননা জম্মু ও আজাদ কাশ্মীর দক্ষিণ এশিয়ার একটি বিতর্কিত অঞ্চল। এই অঞ্চলের অধিকার নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। এই অঞ্চলের অধিকার নিয়ে ১৯৪৭ সালের পর হতে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দফা যুদ্ব সংঘটিত হয়েছ, এখনো সামিরক খোটাখুটি, স্থলে ও অন্তরিক্ষে হামলা পাল্টা হামলা চলছে । তা্‌ই কাশ্মীর নিয়ে আমাদের ব্লগের একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন গুণী লেখকের পোষ্ট মনযোগ আকর্ষন করে আরো প্রবলভাবে ।

লেখাটির এ পর্বে প্যাহেলগামের বিষয়ে ভ্রমন কাহিনীটি পাঠে মনের মনিকোঠায় আরো অনেক স্মৃতি কথা ভেসে উঠে। এশিয়ার সুইজারল্যন্ড খ্যাত প্যাহেলগামে বরফ মোড়ানো পর্বতশৃঙ্গগুলির অববাহিকায় পাইন গাছের সবুজ বেষ্টনী ঘেরা মনোরম ভ্যলিগুলোতে থাকা পাথরের উপর দিয়ে গড়িয়ে পড়া শীতল পানিতে ভরা নদীর মনোরম দৃশ্য চোখ ও মন দুটিই ভরিয়ে দেয়। মনে পরে গাইডের আর তেমন দরকার কি! প্যাহেলগ্রাম যাওয়ার জন্য সেখানকার লিডার নদীই হতে পরে ভাল সফরসঙ্গি।
ছবি- লিডার নদী

যাহোক, ঘোড়ায় চড়ে সেখানকার মনোরম পাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন ও উপভোগের কথা শুনে ভাল লাগল । মোহতারেমা ভাবী সাহেবা শুধু সাহসীনীই নন সফলও বটে , উনার জন্য রইল অভিনন্দন। তবে ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে আপনার দেয়া ভুবন জয়ী স্যলুেটটিতো আমাদের হৃদয়কে জয় করেই নিয়েছে ।

কাশ্মীর ঘুরতে গিয়ে পদচিহ্ন ছাড়া কিছু ফেলে আসেননি বরং ছবি আর স্মৃতি নিয়ে এসেছেন আমাদের জন্য । এখন পেলাম মনোরম একটি ভ্রমন হাহিনী , এর উপরে হয়তবা অচিরেই পাব মনোমগ্ধকর কবিতা । শুনেছি গ্রীষ্মকালে দিল্লী যখন গরমের লু-হাওয়ায় তপ্ত হত, তখন মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর অবকাশ যাপনে যেতেন কাশ্মীরে। তৈরী করেন সেখানে প্রমোদ বাগান (মুঘল গার্ডেন)। কাশ্মীরের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে এর নাম দেন ভূ-স্বর্গ। কাশ্মীরকে ভাল লাগায় মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ফার্সী ভাষায় লিখেছিলেন কবিতা-
আগার ফেরদৌস বে-রোহী যামীন আস্ত্। হামীন আস্ত্, হামীন আস্ত্, হামীন আস্ত্ ।
অর্থাৎ পৃথিবীতে যদি কোন স্বর্গ থেকে থাকে –তবে সেটা এখানে, এখানে, এখানে।

শুধু কি মুঘল সম্রাট! বাঙালির কবিগুরু রবি ঠাকুরও শ্রীনগরে সিন্ধু নদের শাখা ঝিলাম নদী তীরে বসে বলাকা কাব্যগ্রন্থে থাকা কবিতায় লিখেছেন-
হে বিরাট নদী,
অদৃশ্য নিঃশব্দ তব জল
অবিচ্ছিন্ন অবিরল
চলে নিরবধি।
স্পন্দনে শিহরে শূন্য তব রুদ্র কায়াহীন বেগে;
বস্ত্তহীন প্রবাহের প্রচন্ড আঘাত লেগে
পুঞ্জ পুঞ্জ বস্ত্তফেনা উঠে জেগে;
আলোকের তীব্রচ্ছটা বিচ্ছুরিয়া উঠে বর্ণস্রোতে
ধাবমান অন্ধকার হতে;
ঘূর্ণাচক্রে ঘুরে ঘুরে মরে
স্তরে স্তরে
সূর্যচন্দ্রতারা যত
বুদবুদের মতো।


সৌন্দর্যসত্তা ও গতি চেতনা ছাড়াও এ কবিতায় যেমনি আছে শিল্পদর্শন, তেমনি বিচিত্র পঙক্তির সমন্বয়ে রচিত কবিতায় থাকা পঙক্তিগুলি সীমার বন্ধন ছিন্ন করে সব রকমের স্থিরতাকে আঘাত করে গতির আনন্দে কখনো দীর্ঘ ধারায় হয়েছে প্রবাহিত, কখনো সংযুক্ত চরণ থেকে সরে গিয়ে করেছে স্বাধীন, কোথাও বেগের আবেগে পরবর্তী চরণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে করেছে সৃষ্টি ছন্দ-হিল্লোল । কোনে কোনো চরণ মুক্তির আনন্দে নিজে কেটে গিয়ে দ্বিধাবিভক্ত, আবার একটি বিশেষ আবেগ দুটিমাত্র শব্দে একটি নতুন চরণের করেছে সৃষ্টি। এরকম অসম মাত্রিক ছন্দই কাব্যের বৈশিষ্ট্যকে দিয়েছে অপুর্ব বৈচিত্রতা । এ যেন উপলখন্ডের পাশ ঘেসে প্রবাহমান ঝিলামেরই প্রতিকৃতি।

এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে ,শুধু সৌন্দর্যের জন্যই নয় আপেল ও জাফরানের জন্যও কাশ্মীরের এ অঞ্চলের যথেষ্ঠ সুনাম আছে। প্যাহেলগ্রামের রাস্তার দুধারে রংগীন জাফরানের বাগান ও চাষাবাদ উল্লেখ করার মত । বিরিয়ানিতে ও জর্দায় জাফরানের রংএর বহুল ব্যবহার রয়েছে আমাদের দেশে । আমরা সকলেই জানি খাবারের রং , ঘ্রান ও স্বাদ বাড়াতে জাফরানের জুড়ি মেলা ভার । জাফরান ফুলের পাপড়ি বেগুণী রঙের, এর ভিতরে থাকে লম্বা পরাগ দন্ড। এ দন্ডের রঙ হলুদ এবং কমলা মিশ্রনে জাফরানি বর্ণের । পরিণত ফুল শুকালেই এর দন্ড মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।ফুলের গর্ভদন্ড থেকে উৎপাদন করা হয় জাফরান। ১ পাউন্ড বা ৪৫০ গ্রাম শুকনো জাফরানের জন্য ৫০ থেকে ৭৫ হাজার ফুলের দরকার হয়, এক কিলোর জন্য একলক্ষ দশ থেকে একলক্ষ ৭০ হাজার ফুল তুলতে হয় ।
ছবি- জাফরান চাষ

বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের দেশেও এর চাষাবাদ সম্ভব । অপরিদেক অতি সহজেই আমাদের দেশে এই গাছটির চাষাবাদ সম্ভব হলেও এর কোন পরিকল্পনা বা বাণিজ্যিক উৎপাদন নেই। প্রায় এক যুগ আগে দেশের ৯টি বিএডিসি উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে জাফরানের চাষ শুরু হয়েছিল বলে জানা যায় । তারপর সঠিক পৃষ্টপোষকতা ও ভারতীয় মসলা আমদানীকারকদের কাল হাতের ছোয়ায় দেশের জাফরান চাষ কর্মসুচীটির অকাল মৃত্যু ঘটে বলেও জানা যায় ।
প্রতি কেজি জাফরান' এর এখনকার বাজার মূল্য প্রায় চার থেকে পাচ লাখ টাকা। ভারতের কাশ্মীর থেকে এটি বৈধ অবৈধ বিবিধভাবে এনে বাজারে বিক্রি করা হয় । তাই আমদানী বিকল্প হিসাবে দেশে এর চাষাবাদ করা গেলে গরীব কৃষককুল ও দেশ লাভবান হতো । দেশের আগ্রহী ও সংষ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে এই মুল্যবান পন্যটিকে দেশেই চাষাবাদের বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য আপনার পোষ্টের সুবাদে এই মন্তব্যের ঘরে মিনতী রেখে গেলাম ।

ইংরেজীতে লিখা একটি ব্লগে দেখেছি কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বান্ডিপুরা জেলার আনুসা তহশিলে একটি গ্রামের নাম বাংলাদেশ। এশিয়ার সর্ব বৃহত মিঠা পানির সরোবর উলার হৃদের (Wular Lake) তীরে ভাসমান এ গ্রামটি। মাছ ধরে ও পানি বাদাম ( পানিফল ) সংগ্রহ করে এ গ্রামাবাসীগন জীবিকা নির্বাহ করে।
ছবি- উলার লেকে পানিফল সংগ্রহ

১৯৭১ সালে আগুন লেগে গ্রামটির ৫-৬ টি বাড়ী পুড়ে যায়। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তরা পার্শ্ববর্তী ফাঁকা জায়গায় ঘর তোলে। একই সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলে তারাও তাদের নতুন গ্রামের নাম রাখেন বাংলাদেশ। সেই ৫-৬টি ঘর আজ নাকি ৫০টি ঘর এবং ৩৫০ জন মানুষে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আপনার গাইড ঠিকই বলেছে। কাশ্মীরের এ এলাকার বাসিন্দাগন দারিদ্রতার নির্মম কশাঘাতে জর্জিরিত , প্রায় শতাব্দিকাল ধরে অশান্তি, যুদ্ধাবস্থা ও নীজেদের স্বাধিনতা হীনতাই এর জন্য বহুলভাবে দায়ী ।

তথ্য সমৃদ্ধ ভ্রমন কাহিনীটির মাধ্যমে কাশ্মীর বিষয়াবলীর উপর যৎসামান্য আলোচনার সুযোগ দানের জন্য ধন্যবাদ ।

শুভেচ্ছা রইল ।

২৫ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: একজন বিদগ্ধ পাঠকের সুচিন্তিত এবং সুবিবেচিত মন্তব্য একজন লেখকের লেখাকে কি পরিমাণ সমৃদ্ধ করে যেতে পারে, আপনার এ মন্তব্যটা তার প্রমাণ। আর ঠিক এ কারণেই ইতোমধ্যে ৫ জন পাঠক আপনার মন্তব্যটাকে 'লাইক' করে গেছেন। অনেক, অনেক ধন্যবাদ এমন বিচক্ষণ মন্তব্য আমার এ পোস্টে রেখে যাবার জন্য।
প্যাহেলগামে আমরাও গিয়েছিলাম। আরো কয়েকটা পর্ব পরে প্যাহেলগামের প্রসঙ্গ আসবে, আশাকরি সেটাও পড়ে মন্তব্য করবেন, ইন শা আল্লাহ!
মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর কর্তৃক ফার্সী ভাষায় লিখিত কবিতার দুটো চরণ উদ্ধৃত করার জন্য ধন্যবাদ। কবিগুরু শ্রীনগরের সিন্ধু নদের শাখা ঝিলাম নদী তীরে বসে যে কবিতাটি লিখেছিলেন, সেটার উদ্ধৃতিও আমার এ পোস্টকে ঔজ্জ্বল্য দান করবে। বিশেষ করে কবিতাটির এ চরণগুলি ঝিলাম নদী অতিক্রম করার সময় আমিও উপলব্ধি করেছিলামঃ
"আলোকের তীব্রচ্ছটা বিচ্ছুরিয়া উঠে বর্ণস্রোতে
ধাবমান অন্ধকার হতে;
ঘূর্ণাচক্রে ঘুরে ঘুরে মরে
স্তরে স্তরে
সূর্যচন্দ্রতারা যত
বুদবুদের মতো।"


আপেল ও জাফরান এর উল্লেখও আপনি আমার এ সিরিজের কোন একটি পরের পর্বে পাবেন। আমাদের দেশের মটিতে জাফরান চাষের সম্ভাব্যতা জরিপের জন্য আপনার মত আমিও দেশের উদ্যানতত্ত্ববিদ ও কৃষিবিদদের প্রতি আবেদন জানিয়ে গেলাম।

কাশ্মীরের গ্রাম "বাংলাদেশ" এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। এসব চমকপ্রদ তথ্য আমার এতকাল অজানা ছিল, এমন কি কাশ্মীর ভ্রমণ করে আসার পরেও। আমার লেখার সূত্র ধরে বিবিধ বিষয়ে আপনি যে মূল্যবান তথ্য এখানে রেখে গেলেন, তার জন্য বোধকরি কোন ধন্যবাদই যথেষ্ট নয়।

১৭| ২৪ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১:৩৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: মনোমুগ্ধকর বর্ণনা !!
আপনার ভ্রমণে'র ও সাথে আমরা ও উপভোগ করলাম।
ছবি গুলো ও চমৎকার।

২৫ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ২:১৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: মনোমুগ্ধকর বর্ণনা !! - অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

১৮| ২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:০১

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় লেখক সোনমার্গ সম্পর্কে জানার ইচ্ছে ছিলো জানলাম,ঘোড়ার পিঠে অারোহনকৃত অবস্হায় অভিনন্দন ছবিটা বেশ ভালো হয়েছে। পরের পর্বের অপেক্ষায়।

২৫ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: সোনমার্গ সম্পর্কে জানার ইচ্ছে ছিলো জানলাম - কাশ্মীরের আরও কিছু দর্শনীয় স্থান নিয়ে আগামী পর্বগুলোতে লিখার আশা আছে। সাথে থাকলে জানতে পারবেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।

১৯| ২৪ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:২৯

করুণাধারা বলেছেন: দেরি করে আসার একটা সুবিধা, চমৎকার পোস্টকে সমৃদ্ধ করা কিছু মন্তব্য এবং প্রতি মন্তব্য পাওয়া যায়, এখন যেমন পাচ্ছি!!

 ভ্রমণের স্থানের বর্ণনার সাথে সাথে আপনাদের নিজেদের আর যান্ত্রিক- অযান্ত্রিক বাহনের চালকদের সম্পর্কেও অল্প কথায় খুব চমৎকারভাবে লিখেছেন... ছবিগুলো চমৎকার। নদীর মাঝে পাথরের সারি কি প্রাকৃতিক, নাকি মানুষ‍্য- নির্মিত?

আপনি তো উপমহাদেশের অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছেন, আপনার কি মনে হয়েছে আপনার ড্রাইভার শাফি আপনার থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন?(যেমনটা আমাদের দেশে সুযোগ পেলেই করা হয়) তিনি আপনাকে সাবধান করে দিয়েছিলেন, সোনমার্গে ঘোড়া আর স্লেজের চালকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব‍্যাপারে। অথচ আমাদের প্রধান পর্যটনস্থল কক্সবাজারে প্রতি পদে পদে যেন সকলে মুখিয়ে থাকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের জন্য। এমন করে পর্যটন স্থল হিসাবে কক্সবাজারের আকর্ষণ দিন দিন কমতে থাকবে বলে মনে হয়।

 চমৎকার ভ্রমন কাহিনী উপহার দিয়েছেন, ধন্যবাদ অসংখ্য। ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলীকেও; এই ভ্রমণ পোস্ট এর সূত্র ধরে তিনি কাশ্মীর সম্পর্কে কত অজানা তথ্য জানালেন!!

২৫ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: নদীর মাঝে পাথরের সারি কি প্রাকৃতিক, নাকি মানুষ‍্য- নির্মিত? - আমার মনে হয় ওগুলো প্রাকৃতিকই, তবে ২ ও ৪ নং ছবির পাথরগুলো মানুষ কর্তৃক বাঁধাই করা বলে মনে হয়।
আপনার ড্রাইভার শাফি আপনার থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন? - জ্বী না, আমার মোটেই তেমন মনে হয় নি।
ডঃ এম এ আলী এর সুবিবেচিত ও বিচক্ষণ মন্তব্য পোস্টকে অনেক সমৃদ্ধ করেছে, এ কথাটা আমি ১৬ নং প্রতিমন্তব্যেও বলেছি। আপনার কথার সাথেও কোন দ্বিমত নেই।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

২০| ২৫ শে জুন, ২০১৯ সকাল ৮:৫০

সোহানী বলেছেন: আপনার লিখা পড়ে নীচে নামতে নামতে আলী ভাইয়ের মন্তব্য পড়ে যা ভেবেছি সব ভুলে গেছি। অসাধারন লিখার সাথে অসাধারন মন্তব্য সাথে আপনার ছবিগুলো বাড়তি আকর্ষন যোগ করেছে।

শেষ লিখা থেকে শুরু করলাম। তবে ব্লগার বোকা মানুষ বলতে চায় অনেকগুলো সিরিজ লিখেছিল জম্মু কাশ্মীর ভ্রমণ নিয়ে। তখন থেকেবি আগ্রহ নিয়ে আছি কখন যাবো সেখানে। এখন আপনার লিখা দেশে আগ্রহ আরো বাড়লো। যাহোক, আমার খুব ক্লোজ একজন বান্ধবী কাশ্মীরের। ওর সাথে যেকোন সময় আমি ও হয়তো চলে যাবো।

বাই দা ওয়ে আপনার ছবিগুলো ভাল হয়েছে কিন্তু! ছবি ক্রেডিট কি ভাবী?

২৬ শে জুন, ২০১৯ সকাল ৭:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আলী ভাইয়ের মন্তব্য টা সত্যিই অসাধারণ হয়েছে।
আপনার মন্তব্য পড়ে ব্লগার বোকা মানুষ বলতে চায় কর্তৃক জম্মু কাশ্মীর ভ্রমণ নিয়ে রচিত সিরিজটি পড়ার আগ্রহ জন্মালো। আশাকরি, শীঘ্রই ওনার সিরিজটা পড়ে দেখতে পারবো।
যে ছবিগুলোতে আমি আছি, সেগুলো সাধারণতঃ আমার স্ত্রীই তুলে থাকেন, অন্যান্যগুলো আমি স্বয়ং। আর ঘোড়ায় চড়া ছবিগুলো তুলে দিয়েছিল 'সহিস'।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

২১| ২৬ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,



৫ নং ও এই পর্বে উৎকন্ঠা ছিলোনা। কেবল বরফগলা জলের নদীর তীরে তীরে হাযার মাইল দূরের এক ভ্রমনপিপাসু পরিবারের ঘুরে বেড়ানোর ঈর্ষা জাগানো কথকতা ছিলো। তবে মিসেস আহসান যে ফুটন্ত টিউলিপ দেখার অনন্য শিহরণ থেকে বঞ্চিত হলেন তাতে তাঁর সাথে সাথে আমিও আহত।
আর ঘোড়ায় চড়ার কারিশমা একজন সৈনিকের থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে সে সৈনিকের সহধর্মিনীও যে সে ধর্মে পারঙ্গম তা জেনে বেশ ভালো তো লাগলোই , মজাও।
এই লেখাতে স্বভাব মতো আপনি কাশ্মীরের হালহকিকত ড্রাইভারের বয়ানে তুলে আনতেও ভোলেননি। এ‌ই ভূস্বর্গের মানুষগুলোর আর্থিক দুরবস্থার বোধহয় খুব একটা রকমফের হয়নি বহুকাল থেকে!
নদীর যেমন সীমানা নেই , নেই দেশ তেমনি মানবতারও। দেশ-সীমানার সীমানা ডিঙিয়ে তাই নিপীড়িত কাশ্মীরবাসির প্রতি জানাই সমবেদনা।

২৭ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ মজার মন্তব্যটা বেশ উপভোগ করলাম। সিরিজটা পড়ে যাচ্ছেন, মন্তব্য করে যাচ্ছেন, এতে দারুণ অনুপ্রাণিত হচ্ছি।
এ‌ই ভূস্বর্গের মানুষগুলোর আর্থিক দুরবস্থার বোধহয় খুব একটা রকমফের হয়নি বহুকাল থেকে! - ঠিক তাই। তারা স্বদেশের দ্বারা নিপীড়িত ও বঞ্চিত।
নদীর যেমন সীমানা নেই , নেই দেশ তেমনি মানবতারও। দেশ-সীমানার সীমানা ডিঙিয়ে তাই নিপীড়িত কাশ্মীরবাসির প্রতি জানাই সমবেদনা - চমৎকার একটি উদার মনোবৃত্তি প্রকাশ পেয়েছে আপনার এ কথাগুলোয়। অনেক ধন্যবাদ। +

২২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৫৪

মা.হাসান বলেছেন: আগের বার জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেছি, গাড়িতে নয় কিলোমিটার যেতে কুড়ি মিনিট লাগার কারন কি খারাপ রাস্তা? সৈনিক জীবনে নিশ্চয়ই আপনাকে পনি নয়, উচু ঘোড়ার পিঠেই চড়তে হয়েছে।
দ্বিতীয় বার পড়ে আগের চেয়ে বেশি আনন্দ পেলাম।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: গাড়িতে নয় কিলোমিটার যেতে কুড়ি মিনিট লাগার কারন কি খারাপ রাস্তা? - না, রাস্তাটা মোটেই খারাপ ছিল না। গাড়ী থামিয়ে থামিয়ে ছবি তোলার ইচ্ছের কারণেই যা দেরী হয়েছিল।
সৈনিক জীবনে নিশ্চয়ই আপনাকে পনি নয়, উচু ঘোড়ার পিঠেই চড়তে হয়েছে - আমরা যখন সেনাবাহিনীতে যোগদান করি, দেশটা তখনও ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত। আমাদের সময়ে বিএমএ তে ঘোড়া ছিল না, ঘোড়া এসেছে আমাদের পরের বছর থেকে। তবে আমি দশজন সতীর্থসহ ১৯৭৮ সালে সরদহ (এটাই প্রকৃত নাম। রেলওয়ে স্টেশনটি এখনও এই নামেই পরিচিত, তবে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত নাম "সারদা" পুলিশ একাডেমী থেকে অশ্বারোহণ কোর্স করি। আপনি হয়তো জানেন যে এই একাডেমীটি ব্রিটিশ আমলে ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল এবং আসাম প্রদেশের পুলিশ বাহিনীর অফিসারদের জন্য। তখন থেকে খুবই নাম করা ছিল এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের প্রথম দশ জন প্রিন্সিপাল ছিলেন বিটিশ কর্মকর্তা। এখান থেকে বহু ভারতীয়, পাকিস্তানী এবং ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার প্রশিক্ষণ নিয়ে গেছেন। রাজশাহীর চারঘাট এলাকায় ২৪২.৬৬ একর জায়গা নিয়ে একাডেমীটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকাটি তখন মেদিনীপুর জমিদারী এস্টেটের কাচারী হিসেবে ব্যবহৃত হতো, যা মাত্র ২৫ হাজার রুপীতে ক্রয় করা হয়েছিল। একটা গর্ব করার মত প্রতিষ্ঠান ছিল এটি, কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় যে দেশের আরও অনেক নামী দামী প্রতিষ্ঠানের মত এ প্রতিষ্ঠানটিকেও আমরা ধরে রাখতে পারিনি। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে এই একাডেমীর প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পেতেন সব চৌকষ অফিসার, এখন যারা এখানে আসেন, তারা আসেন পানিশমেন্ট পোস্টিং হিসেবে। তারা কোনরকমে সময় কাটিয়ে যান, সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, হয়তো বা। কোর্স চলাকালীন আমি আমার অবসর সময়ে অফিসার্স মেসে রক্ষিত ভিজিটর্স বুকে ছয় দশক আগে থেকে লেখা সেখানে আগত আমার মত প্রশিক্ষণার্থীদের মন্তব্য পড়ে দেখতাম। আশ্চর্য হয়ে যেতাম ব্রিটিশ এবং অবাঙালী ভারতীয় ও পাকিস্তানী অফিসারদের মনেও যে বাংলা মায়ের প্রাকৃতিক রূপশোভা কতটা প্রভাব ফেলতো, তাদের মন্তব্যের মধ্যে সেসব কথা পড়ে।
এ পোস্টের প্রথম ও শেষ মন্তব্য (এখন পর্যন্ত) দুটোই আপনার। পুনর্বার পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.