নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্ট্রেলিয়ার পথে .... অবশেষে এক মাস বিলম্বে যাত্রা শুরু!

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩০

গত ২২-২৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে অস্ট্রেলীয় শহর সিডনীতে Mirzapur Ex-Cadets’ Association (MECA) এর অস্ট্রেলিয়া চ্যাপ্টার কর্তৃক তিন দিন ব্যাপী একটি ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হয়ে গেল, যার নাম MECA-Australia Global Reunion-2019। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের নানা দেশে অবস্থানরত MCC এর এক্স-ক্যাডেটরা সিডনীতে একত্রিত হয়েছিল এক মহা মিলনমেলায়। আয়োজকদের আমন্ত্রণে আমিও সস্ত্রীক সে মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী ও প্রত্যাশী ছিলাম। আমার অবশ্য আরেকটা অতিরিক্ত কারণ ছিল যে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে আমার ছেলে এবং বৌমাও প্রবাসী। তারা সম্প্রতি সেখানে “স্থায়ী নিবাসী” (পি আর) স্ট্যাটাস পেয়েছে। ওরা আমাদেরকে অনেক আগেই আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছে আমরা যেন একটু সময় করে ওদের ওখান থেকে বেড়িয়ে আসি। সিডনীতে অনুষ্ঠিতব্য “মেকা-অস্ট্রেলিয়া গ্লোবাল রিইউনিয়ন” আমাদের জন্য সে সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছিল। তাই ভেবে খুশী হয়েছিলাম যে রিইউনিয়নে গেলে আমাদের রথ দেখা, কলা বেচা- দুটো কাজই একসাথে হবে।

অস্ট্রেলীয় ভিসার জন্য ওদের ওয়েবসাইট পড়ে দেখলাম যে ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দেবার পর অপেক্ষার স্বাভাবিক মেয়াদ ২০ থেকে ৩০ দিন। এই সময়ের মধ্যেই আবেদনের ফলাফল ওরা ইমেইলের মাধ্যমে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেবে। পুরো সেপ্টেম্বর মাসটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজনে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। অপরিহার্য সে অনুষ্ঠান শেষ করে দু’দিন বিশ্রাম নেয়ার পর অস্ট্রেলীয় ভিসার জন্য কাগজপত্র ঠিকঠাক করতে ব্যস্ত হয়ে উঠলাম। অবশেষে সব কাগজপত্র জোগাড় করে হাতে ৪২ দিনের সময় রেখে গত ০৯ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে ভিসার আবেদনপত্র জমা দিলাম। VFS Global এর Pemium Lounge এ আবেদনপত্র জমা দেয়ার সময় পুনরায় ওদেরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আবেদনের ফলাফল পেতে কতদিন সময় লাগতে পারে। ওরাও একই কথা বললো- স্বাভাবিক অবস্থায় ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে। আমি একটু সন্দেহের মধ্যেই ছিলাম, কারণ কিছু কিছু এক্স-ক্যাডেট আমাকে জানিয়েছিল, ওদের কেউ কেউ ৪ সপ্তাহেই ভিসা পেয়ে গেছে, কেউ কেউ পেয়েছে ছয় থেকে আট সপ্তাহেও। আবার একজন মোটেই পায়নি। আমি প্রায় ১৮ বছর আগে আরেকবার অস্ট্রেলিয়া সফরে এসেছিলাম। সেবারে সিডনী, ক্যানবেরা এবং পার্থ সফর করে গিয়েছিলাম। তাই আমার মনে মনে একটু আশা উঁকি দিয়ে যাচ্ছিল যে আগেও একবার অস্ট্রেলিয়া আসার কারণে হয়তো এবারে আমার ভিসা পেতে অসুবিধে হবেনা। কিন্তু আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে সেটা ছিল ১৮+ বছর আগের কথা। তখনো তাদের ইমিগ্রেশণ বিভাগ পুরোপুরি ডিজিটালাইজড হয়নি, তাই আমার সেই রেকর্ডও তাদের ক্লিকাগ্রে থাকার কথা নয়।

যাহোক, অস্ট্রেলীয় ভিসার জন্য আবেদনপত্র জমা দেয়ার পরে ৩০ দিন পর্যন্ত আর কিছু করণীয় ছিলনা, শুধু ২০ দিন পর থেকে দৈনিক অন্ততঃ একবার করে মেইলবক্স চেক করা ছাড়া। “সময়মত” ভিসা পাওয়ার ব্যাপারে আমার আশাটা বোধহয় একটু বেশীই ছিল। তাই আমি ১৫ অক্টোবরেই আমার অনুজপ্রতিম এমসিসি এলামনাস, বিজনেস ট্রাভেল সার্ভিসেস এর মালিক সাঈদ হাসানের অফিসে গিয়ে ২০ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে ঢাকা-সিডনী যাত্রা শুরু করে, দু’মাস পরে ফেরার মেলবোর্ন-ঢাকা টিকেট কিনে ফেললাম। এর পর নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হলো প্রথমে দৈনিক কয়েকবার করে, পরে প্রায় ঘন্টায় ঘন্টায় মেইলবক্স চেক করার পালা। কিন্তু দিনের পর দিন ধরে চলছিল একই অবস্থা- All Quiet on the Eastern Front!

এদিকে, আমাদের অস্ট্রেলিয়া যাবার কথা শুনে দীর্ঘদিন ধরে নিউজীল্যান্ড প্রবাসী আমার বাল্যবন্ধু হাসান তওফিক চৌধুরী (এর পর থেকে শুধু তওফিক) ফোন করে অনুরোধ করতে শুরু করলো আমরা যেন এ যাত্রায় ওদের ওখান থেকেও বেড়িয়ে আসি। তওফিক আমার ক্যাডেট কলেজ জীবনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ওর অনুরোধে এতটা আন্তরিকতা ছিল যে তা অমান্য করতে কষ্ট হচ্ছিল। ওকে বললাম, অস্ট্রেলীয় ভিসা পেতে পেতে আমার অনেক দেরী হয়ে যাবে, তখন আর নিউজীল্যান্ডের ভিসার জন্য আবেদন করার সময় থাকবেনা। একথা শুনে ও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বললো, সে নিউজীল্যান্ডের নাগরিক। আমি যদি ওর চাহিদামত আমাদের পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রের স্ক্যানড কপি ওর কাছে পাঠিয়ে দেই, তাহলে সে-ই আমাদের হয়ে (ওর অতিথি হিসেবে) আমাদের ভিসার জন্য আবেদনপত্র নিউজীল্যান্ড ইমিগ্রেশনে জমা দেবে। আমি ওর চাহিদামত কাগজপত্র পাঠাতে শুরু করলাম।

ধাপে ধাপে কাগজপত্র পাঠাচ্ছি, আর নিউজীল্যান্ড ভিসা সংক্রান্ত নানা নীতিমালার কথা অবগত হচ্ছি। এক পর্যায়ে জানতে পারলাম, ভিসা পেতে হলে আমাদেরকে আমাদের মূল পাসপোর্টগুলো নিউজীল্যান্ডের দিল্লীস্থ হাই কমিশনে পাঠানোর জন্য ভারতের যেকোন ভিসা সেন্টারে জমা দিতে হবে। সেটা সশরীরে সেখানে গিয়েই হোক, কিংবা আন্তর্জাতিক ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেই হোক। নতুন এক উৎকন্ঠার সম্মুখীন হ’লাম- অস্ট্রেলীয় ভিসা হয়ে গেলেও, যদি এর মধ্যে পাসপোর্টগুলো ভারত থেকে ফিরে না আসে! এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের অস্ট্রেলীয় ভিসাও ঢাকায় নয়, বরং তাদের ভারতীয় হাই কমিশনে প্রক্রিয়া করা হয়ে থাকে। কিন্তু এজন্য আমাদেরকে পাসপোর্টগুলো ভারতে পাঠাতে হয়না, এখানকার ভিসা সেন্টারই পরীক্ষা করে আমাদের হাতে সেগুলো নগদ নগদ ফেরত দিয়ে দেয়। যাইহোক, ভিসার আবেদন যখন করতে যাচ্ছি, তখন আর এত কিছু ভেবে লাভ নেই। তাই তওফিক ২৫ অক্টোবর তারিখে আমাদের নিউজীল্যান্ডের ভিসার জন্য আবেদনপত্র জমা দিল, আর আমি ২৯ অক্টোবর তারিখে বনানীর ডিএইচএল অফিসে গিয়ে আমাদের পাসপোর্টগুলো তাদের হাতে তুলে দিয়ে কম্পমান হৃদয়ে বাসায় ফিরে এলাম।

ডিএইচএল এর ট্র্যাকিং নাম্বার অনুসরণ করে আমাদের পাসপোর্টগুলোর গতিবিধির উপরে তীক্ষ্ণ নজর রাখছিলাম। ০১ নভেম্বরে সেগুলো ডেলিভারী দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন শুক্রবার জুম্মার নামায পড়ে ফিরে এসে ডিএইচএল এর ট্র্যাকিং পেইজ খুলতেই আমার চক্ষু চড়কগাছ! দেখি সেখানে লেখা, প্রাপক আমাদের পাসপোর্টগুলো গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কোনমতে লাঞ্চ করে ছুটলাম বনানীর ডিএইচএল অফিসে। ওরা আমাকে আশ্বস্ত করতে চাইলো এই বলে যে এরকম মাঝে মাঝে হয়েই থাকে, এতে ঘাবড়াবার কিছু নেই। পরের দুই দিন ছিল শনি ও রবিবার, ভারতে সরকারী অফিসগুলোর ছুটির দিন। সোমবারে ডিএইচএল পুনরায় আরেকবার ডেলিভারীর উদ্যোগ নেবে, তাতে সফল না হলে প্রেরকের খরচে পাসপোর্টগুলো প্রেরকের নিকট পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু আমি ওদের কথায় মোটেই আশ্বস্ত হ’লাম না। ওখানে বসেই ভিসা সেন্টারের ঠিকানাটা ওয়েবসাইট থেকে চেক করে নিয়ে দেখলাম, আমি সঠিক ঠিকানাই লিখেছি। তাই ওয়েবসাইট থেকেই ভিসা সেন্টারের একটা ল্যান্ডফোন নাম্বার পেয়ে সেখানে ফোন করলাম। যিনি ফোন ধরলেন, তিনি জানালেন যে আমি যে দেশের ভিসার জন্য পাসপোর্টগুলো পাঠিয়েছি, খামের উপরে ঠিকানায় সে দেশের নামটি ব্রাকেটে উল্লেখ করেছি কিনা। আমি বললাম, আপনাদের ওয়েবসাইটে সেটা উল্লেখ করার কথা লেখা নেই। ওয়েবসাইটে যেভাবে ঠিকানা দেয়া আছে, আমি সেভাবেই ঠিকানাটা লিখেছি। আর খামটা খুললেই তো মূল চিঠি পড়ে বোঝা যাবে, আমরা কোন দেশের ভিসা চাচ্ছি। উনি বললেন, না ব্রাকেটে সে দেশের নাম উল্লেখ করতে হবে। অগত্যা, ডিএইচএল এর সেই তরুণ অফিসিয়ালকে অনুরোধ করলাম, ঠিকানায় ব্রাকেটে “নিউজীল্যান্ড ভিসা” উল্লেখ করে ভারতের সংশ্লিষ্ট ডিএইচএল অফিসে একটি সংশোধনী মেইল পাঠাতে। উনি যথেষ্ট তৎপরতার সাথে কাজটি করে দিলেন। আমি সন্তুষ্ট হয়ে বাড়ী ফিরে এলাম।

অস্ট্রেলীয় ভিসা আবেদনের ফলাফল জানার প্রত্যাশিত দিনটি পার হয়ে গেল ০৮ নভেম্বর তারিখে। এর পরে কিছুতেই ওদের কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না, না ঢাকার ভিএফএস গ্লোবাল এর সাথে, না তাদের ভারতের অফিসের সাথে। ওরা টেলিফোনও ধরেনা, আবার ওদের কাছে মেইল পাঠাবারও কোন উপায় রাখেনি। অস্ট্রেলীয় ওয়েবসাইটে একটি ঘোষণায় জানানো হচ্ছিল যে কিছু কারিগরি ত্রুটিজনিত কারণে অস্ট্রেলীয় ভিসা আবেদনকারীদের তাদের ফলাফল জানতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে। এজন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তাদের দুঃখ প্রকাশে তো আর আমার উৎকন্ঠা দূর হবার নয়। এদিকে ১৪ নভেম্বর তারিখের সন্ধ্যায় নিউজীল্যান্ডের একজন ইমিগ্রেশন অফিসার আমাকে ইমেইলে জানালেন, পরবর্তী ৫ দিনের মধ্যে আমাদের অস্ট্রেলীয় ভিসা আবেদনের ফলাফল তাদের ওয়েবসাইটে “আপলোড” করে দিতে হবে। এটার কারণ, আমাদের আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল যে আমরা অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজীল্যান্ড বেড়াতে যাব। বুঝলাম, ওদের ভিসা পাওয়াটা নির্ভর করছে আমাদের অস্ট্রেলীয় ভিসা পাবার উপর। ৫ দিন শেষ হবার কথা ছিল ১৯ তারিখে। আমি ভেবেছিলাম, পঞ্চম দিনের অফিস টাইম পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, তার পরেও না পেলে বিকেলের দিকে মেইল করে দেব। কিন্তু ১৯ তারিখ সকাল ১১টায় নাতাশা নামের সেই ইমিগেশন অফিসার আমাকে সরাসরি ফোন করে জানতে চাইলেন, আমি আস্ট্রেলীয় ভিসার ফলাফল আপলোড করছিনা কেন। আমি বললাম, ফলাফল পাইনি, তাই আপলোডও করিনি, আর তাছাড়া আপলোডের সময়সীমা তখনো অতিক্রান্ত হয়নি। ৫ দিনের সময়সীমা শেষ হবার আগেই (সেইদিন সন্ধ্যায়) আমি একটা কিছু অবশ্যই জানাতাম। আমি সে সময় একটি সেমিনারে উপস্থিত ছিলাম। টেলিফোনে তার সাথে বেশী কথা বলা সম্ভব হচ্ছিল না। তাকে কোনরকমে বুঝিয়ে বললাম যে তাদের ওয়েবসাইট ততটা ইউজার-ফ্রেন্ডলী নয়, যোগাযোগ করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। উনি যদি আমাকে অন্য একটি ইমেইল ঠিকানা দেন, তবে সন্ধ্যায় আমি বাড়ী ফিরে তাকে সবিস্তারে জানাবো। উনি প্রথমে একটু নিমরাজী থাকলেও, আধা ঘন্টার মধ্যেই দেখলাম আমাকে টেলিফোন আলোচনার সূত্র ধরে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং আলোচনার একই কথার পুনরুল্লেখ করে একটি মেইল পাঠিয়েছেন। সাথে তিনি এটাও জানিয়েছেন যে সেটা তার ব্যক্তিগত ইমেইল ঠিকানা হলেও আমি তাদের ওয়েবসাইটে "আপলোড" সংক্রান্ত যেকোন সমস্যার কথা সে ঠিকানায় জানাতে পারি। আমি ত্বরিত তার এই গুড জেশ্চার একনলেজ করে তার মেইল এর প্রাপ্তিস্বীকার করলাম।

১৯ নভেম্বর তারিখে ভগ্ন হৃদয়ে আমার ট্রাভেল এজেন্টের অফিসে গিয়ে আগের করা টিকেটটা ক্যান্সেল করতে বললাম। ট্রাভেল এজেন্টের মালিক সাঈদ হাসান স্বয়ং তখন রিইউনিয়নে যোগদানের জন্য সস্ত্রীক এবং সবান্ধব সিডনীতে উপস্থিত। তাকে আর এ নিয়ে বেশী বিরক্ত করলাম না, তার স্টাফকে অনুরোধ করেই টিকেট বাতিল করলাম। পরেরদিন ২০ তারিখে অনেক কয়েকবার প্রচেষ্টার পর আমি অস্ট্রেলীয় ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে ঢুকতে পেরে আমাদের ভিসা আবেদনের ফলাফল জানতে চেয়ে একটা আনুষ্ঠানিক “ইনকোয়ারী” জমা দিতে সক্ষম হ’লাম। ২১ তারিখে জবাব পেলাম, সেটা তখনও তাদের সক্রিয় বিবেচনাধীন আছে এবং আমি ই-ভিসার আবেদন না করে পেপার আবেদন পাঠিয়েছি বলে সময় কিছুটা বেশী লাগছে। ওরা এটাও উপদেশ দিয়ে রাখলো যে ভবিষ্যতে যেন ভিসার আবেদনপত্র পেপারে না করে ই-ভিসার আবেদন করি। এই উপদেশে ইঙ্গিত পেলাম যে ভিসা মঞ্জুর হবার সম্ভাবনা আছে, নইলে ভবিষ্যতে আবেদনের কথাটা ওরা বলতো না। ২৭ তারিখ দুপুরে অস্ট্রেলীয় ইমিগ্রেশন অফিসারের মেইল পেলাম, তিন মাসের মাল্টিপল এন্ট্রীসহ ভিসা মঞ্জুর হয়েছে, যা এক বছরের মধ্যে এভেইল করতে হবে। বিকেলে এ ফলাফলটা নিউজীল্যান্ড ইমিগ্রেশন এর ওয়েবসাইটে “আপলোড” করলাম। এক ঘন্টার মধ্যে নিউজীল্যান্ড ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছ থেকেও মেইল পেলাম, মাল্টিপল এন্ট্রীসহ এক মাসের ভিসা মঞ্জুর হয়েছে। এবারে শুরু হলো নতুন করে টিকেট করা ও ট্যুর প্ল্যান প্রস্তুত করার পালা........


মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১১

বাকপ্রবাস বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম, এমন পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিতে হয় এটা পড়ে অভিজ্ঞতা হলো যদিও অমন দেশে যাবার সম্ভবনা নাই তবুও অভিজ্ঞতা কাজে লাগে ছোট বড় সব বিষয়ে।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার অস্ট্রেলিয়া-নিউজীল্যান্ড ভ্রমণের উপর একটা সিরিজ আকারে দিনলিপি লেখার ইচ্ছে আছে। প্রথম লেখাটাতেই আপনি প্রথম পাঠক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন দেখে প্রীত হ'লাম। পোস্টে প্রথম প্লাসটাও আপনিই দিয়ে গেলেন, এমনকি কিছু না বলে পোস্টটিকে নীরবে আপনার "প্রিয়" তালিকাতেও স্থান দিলেন- এমন অনুপ্রেরণার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: এরপরে অবশ্যই ছবি দিবেন।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা দেখবো, কোন কোন ছবি এখানে পোস্ট করা যায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এবং নতুন বছরের (২০২০) শুভকামনা...

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯

সোহানী বলেছেন: আমাদের দেশে কি অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের ভিসা অফিস নেই? তবে অনলাইনে অপশন থাকলে আপনি কেন হার্ড কপিতে গেলেন?

যাহোক, ট্যুর ও বন্ধুদের মিলনমেলা আনন্দ নিয়েই শেষ করেছেন আশা করি..........। নিশ্চয়ই বিশাল ছবিপোস্ট পাবো ;)

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের দেশে যদিও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশন রয়েছে, কিন্তু তারা অন্যায়ভাবে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রসেসিং এখানে না করে দিল্লীতে পাঠিয়ে দেয়। ঠিক একইভাবে কানাডাও ঢাকায় তাদের হাইকমিশন থাকা সত্ত্বেও আমাদের নাগরিকদের ভিসার আবেদনপত্রগুলো সিঙ্গাপুরে পাঠিয়ে দেয়। এটা রীতিমত অন্যায়। দুটো দেশ যখন দু'দেশের রাজধানীতে দূতাবাস খুলতে সম্মত হয়, তখন তা দু'দেশের নাগরিকদের এবং উভয় সরকারের সুবিধার্থেই করে থাকে। দুদেশেই তাদের নিজ নিজ দেশের সুনাগরিকদের অবাধ যাতায়াত করতে পারাটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অধিকার। অপরাধীদের ব্যাপারটা আলাদা।
তবে অনলাইনে অপশন থাকলে আপনি কেন হার্ড কপিতে গেলেন? - অনলাইনে সঠিকভাবে সব কাগজপত্রের স্ক্যান্ড কপি আপলোড করতে পারবো কিনা, সে ব্যাপারে সন্দিহান ছিলাম। আর অনলাইনে আবেদন না করে পেপারে আবেদন করলে ভিসা মঞ্জুর কিংবা প্রত্যাখানের জন্য সময় দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ লাগবে, এটা একটা খোঁড়া যুক্তি।
যাহোক, ট্যুর ও বন্ধুদের মিলনমেলা আনন্দ নিয়েই শেষ করেছেন আশা করি - ভিসা দেরীতে পাবার কারণে রিইউনিয়নটা মিস করেছি। বাকী কর্মসূচীগুলো রিশিডিউল করেছি।
পোস্টে আপনার কাছ থেকে প্রথম প্লাসটি পেয়ে প্রাণিত হয়েছি। লেখাটা পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন সপরিবারে, হ্যাপী নিউ ইয়ার!

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০১

সুপারডুপার বলেছেন: বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে ট্যুর প্ল্যান করলে এই ধরনের অনেক সমস্যায় হয়।

মেলবোর্নে আপনার সুন্দর সময় কাটুক ! অনেক অনেক শুভ কামনা !

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: বাংলাদেশী পাসপোর্ট ছাড়া আবার কোন দেশের পাসপোর্ট নিয়ে ট্যুর প্ল্যান করতে পারি, বলুন। দেশটা যেমনই হোক, এটাই তো আমার দেশ, বিদেশে এ দেশটাই আমার পরিচয়। অন্য দেশের নাগরিক হতে চাই না, কারণ-
"পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।''

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনায় প্রীত হ'লাম।
ভাল থাকুন, ইংরেজী নতুন বছরের (২০২০) জন্য শুভকামনা... হ্যাপী নিউ ইয়ার!

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৩

সাইন বোর্ড বলেছেন: জেনে ভাল লাগল, আপনার অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ আনন্দময় হোক...

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:০৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ে শুভকামনা জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে।
ভাল থাকুন নতুন বছরে, গোটা বছর জুড়ে!

৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৮

রানা আমান বলেছেন: বিশাল ঝামেলা গেল , আমি হলে হয়তো আশা ছেড়েই দিতাম । আপনার ভ্রমন নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হোক । ভালো থাকবেন ।

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: বিশাল ঝামেলা গেল - জ্বী। তবে ঝামেলা শেষে ঝামেলামুক্ত হবার আনন্দটাও কিন্তু কম নয়!!! :)
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ ও ইংরেজী নতুন বছরের শুভেচ্ছা!

৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: কোথাও বেড়াতে গেলেও অনেক পেরেশানি আছে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক পেরেশানি তো আছেই, মাঝে মাঝে অনেক সময় কিছু অভূতপূর্ব বিপদও এসে যায়।

৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪২

ঢাকার লোক বলেছেন: যাক, বাঁচা গেল, ভিসা হলো শেষ পর্যন্ত ! আমারত দম বন্ধ হয়ে আসছিল !
মেলবোর্নে আপনার সুন্দর সময় কাটুক ! অনেক অনেক শুভ কামনা।

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, ভিসা শেষ পর্যন্ত হয়েছে ঠিকই, তবে একটি সপ্তাহ আগে হলে আমার মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী সফর সম্পন্ন করা যেত। সেটা কোন ব্যাপার নয়, নিশ্চয়ই আল্লাহতা'লা তার বান্দার জন্য যেটাতে সর্বোত্তম কল্যাণ নিহিত থাকে, সেটাই মঞ্জুর করে থাকেন।
পোস্ট পাঠ শেষে একটি আন্তরিক মন্তব্য রেখে যাবার জন্য আমার তরফ থেকেও হার্দিক শুভেচ্ছা ও অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে।

৯| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৩২

অন্তরন্তর বলেছেন: অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড যাত্রা সুখকর হউক এই কামনা। হ্যাপি নিউ ইয়ার।

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আন্তরিক মন্তব্য, শুভকামনা এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে। প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ভাল থাকুন নতুন বছরে, গোটা বছর জুড়ে!

১০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:২৯

মিরোরডডল বলেছেন: শুনে খুবই খারাপ লাগলো যে আপনাকে এতো ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে ।

It shouldn’t be like this. Things could be completely different if your son apply from here as family sponsor. Instead visit visa category it could be family sponsorship visit visa as they are resident here.

আমি আমার মাকে যখন আনি অনলাইন অ্যাপ্লাই করি সিডনি ইমিগ্রেশান থেকে ফ্যামিলী স্পনসর ভিসা। অনলি ওয়ান ডকুমেন্ট আমি এনেছি মায়ের পাসপোর্ট । বাকি সব আমার পেপারস । অস্ট্রেলিয়াতে সিটিজেন অথবা রেসিডেন্ট তাঁর ফ্যামিলি বিশেষ করে বাবা মার জন্য স্পনসর ভিসা অ্যাপ্লাই করলে খুবই তারাতারি হয়ে যায় । যদিও বলে ৩০-৪০ দিন কিন্তু সেটার দরকার হয়না । লাস্ট ইয়ার মাকে যখন আনি ১০ দিনে ভিসা হয়েছে । এই নভেম্বারে যখন আনলাম it took just 7 days including weekend to get the visa.

আপনার ছেলে যখন এখানে আছে ভবিষ্যতে আবারো আসবেন । Next time try not to apply from BD to avoid all hassles. Anyway, congratulations finally all sorted and you are here. Enjoy your trip & have a blast!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৫:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য।
আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন এর অপার করুণায় এ জীবনে পৃথিবীর অনেক দেশে ঘুড়ে বেড়িয়েছি। এই অস্ট্রেলিয়াতেও একবার এসেছিলাম প্রায় ১৮ বছরেরও কিছু আগে। নিজের ভিসার আবেদন সবসময় নিজেই করেছি, কোন ট্যুর এজেন্টকে দেইনি, ছেলেদেরকেও না। কখনোই কোন অসুবিধে হয়নি। একটা দেশ ও জাতি হিসেবে পৃথিবীর অন্যান্য কিছু দেশ আমাদেরকে খুব একটা সম্মানের চোখে দেখে না, তা আমাদের নিজেদেরই আচরণগত দোষের কারণেই। এক সময় গলাকাটা পাসপোর্ট ব্যবহারের জন্য আমরা কুখ্যাত ছিলাম। এখন মেশিন রীডেবল পাসপোর্ট ব্যবহারের কারণে সে অপবাদ অনেকটা ঘুচেছে। কিন্তু তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে অন্য রকমের কিছু জালিয়াতি বা মিথ্যাচার ধরা পড়ায় ওরা আমাদেরকে বিশ্বাস করতে চায় না।
আর তা ছাড়া এ সময়টাতে বিশ্বের সকল দেশ থেকে, বিশেষ করে শীতের দেশগুলো থেকে বহু লোক অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমায় নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করার জন্য, কারণ এখানে তখন সামার থাকে। পর্যটকদের এ ভীড়ের কারণেও এ সময়টাতে ভিসা প্রসেসিং এ অন্য সময়ের চাইতে বেশী সময় নেয়া হয়ে থাকে।
বড় দিনের রাতে এদের আলোকসজ্জা এবং উৎসবমুখরতা দেখতে বের হয়েছিলাম। থারটি ফার্স্ট রাতেও এদের ফায়ার ওয়ার্কস দেখেছি। ভাল লেগেছে, তবে এসব এখন আমাদের দেশেও হয়।

১১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৪

করুণাধারা বলেছেন: বন্ধুদের মিলন মেলায় উপস্থিত থাকতে পারেননি জেনে দুঃখ পেলাম। বাকি ভ্রমণ যেন আনন্দময় হয়, শুভকামনা রইল।

ভালো করেছেন বিস্তারিতভাবে সবকিছু তুলে ধরে, অস্ট্রেলিয়াতে ভিসা প্রত্যাশী কাউকে পেলে এই ঘটনাটা বলতে পারব, যাতে তারা অনেক সময় হাতে নিয়ে ভিসার আবেদন করতে পারেন। আমার এক প্রতিবেশী সিডনীতে তার মেয়ের গ্র্যাজুয়েশনের সময়ের উপস্থিত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন আগে ভিসার আবেদন করার পরও সময় মতো যেতে পারেননি। এতদিন জানতাম বিদেশীরা সময় মত সব কাজ করে, কথাটা ঠিক নয় দেখছি...

নতুন বছর ভালো কাটুক, ব্লগে নিয়মিত থাকুন, শুভকামনায়।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: পেপার এ্যাপ্লিকেশন করলে অন্ততঃ দু'মাস সময় হাতে নিয়ে করা উচিত। আমার লেগেছে ৪৯ দিন। অনলাইনে করলে এক মাসই যথেষ্ট হতো বলে মনে হয়।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত। নতুন বছরের জন্য রইলো শুভকামনা---

১২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৪৪

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: কঠিন অবস্থা ! যাক অবশেষে ভিসা হলো | যাত্রা শুভ হোক নতুন বছরে |

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: নতুন বছরের আগমনের আট দিন আগেই যাত্রা শুরু হয়ে গেছে এবং এ যাবত শুভই রয়েছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। নতুন বছরের (২০২০) শুভেচ্ছা----

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.