নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেলবোর্নের দিনলিপিঃ ঘরে ফেরা, অনিশ্চিত পথে....(১)

৩১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০৮

(কৈফিয়ৎঃ ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ, তাই একটু বেশী ডিটেইলসে লেখা, শব্দসংখ্যাঃ ১৬৯৭। ব্যস্ত পাঠকের কাছে অনেক কথা অপ্রাসঙ্গিক, এবং লেখাটা অতি দীর্ঘ মনে হতে পারে।)

দেখতে দেখতে আমাদের অস্ট্রেলিয়া-নিউজীল্যান্ড সফরের সময়সীমা প্রায় শেষ হয়ে এলো। দুটো দেশেরই মালটিপল এন্ট্রী ভিসা ছিল, অস্ট্রেলিয়ারটার একসাথে তিন মাস করে এক বছরের মেয়াদে, নিউজীল্যান্ড এর টার এক মাস করে চার মাসের মেয়াদে। এসব দেশের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিবারের এন্ট্রীর দিন থেকে নতুন করে তিনমাস/ একমাসের হিসেব শুরু হয়। আমি যেহেতু নিউজীল্যান্ড সফর শেষে ১৪ ফেব্রুয়ারীতে পুনরায় অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করেছিলাম, সেই হিসেবে আমি ১৩ মে পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যেতে পারতাম। কিন্তু তাতে বাধ সাধছিল দুটো ভীতি। এক, তিন মাস থাকবো হিসেব করে আমরা আমাদের নিত্যসেব্য কিছু ঔষধপত্র ১০০ দিনের জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। ঔষধ শেষ হয়ে গেলে প্রথমে সেখানে ডাক্তার দেখাতে হতো, পরে তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ কিনতে হতো। আমরা সে ঝামেলায় যেতে চাইনি। দুই, প্রথমদিকে ধীর গতিতে প্রসারমান হলেও, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় করোনার বিস্তার মারাত্মক দ্রুত গতিতে বেড়ে চলছিল। ‘লকডাউন’ এবং ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ইত্যাদি শুরু হয়ে যাওয়ায় আর থাকতে মন চাইছিল না।

এ সিরিজের তৃতীয় পর্বে উল্লেখ করেছিলাম, আমরা এসেছিলাম চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন যোগে। তখন সপ্তাহের প্রতিদিনই ঢাকায় এবং মেলবোর্নে এদের ফ্লাইট যাতায়াত করতো। আমাদের দেশে ফেরার টিকেট করা ছিল ১৯ মার্চ। কিন্তু করোনার কারণে যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়াতে ওরা সপ্তাহে ফ্লাইটের সংখ্যা তিনটিতে কমিয়ে আনে। এ কারণে সপ্তাহের যেদিনে ১৯ তারিখ পড়ে, নতুন সময়সূচী অনুযায়ী সে দিনে ফ্লাইটটি ছিল না। এয়ারলাইন থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারীতে আমার ট্রাভেল এজেন্ট এর মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয়, ফ্লাইটটি মার্চের ২৩ তারিখে পরিবর্তন করলে আমি সেটা মেনে নেব কিনা। তখনো করোনা পরিস্থিতি তেমন বিপজ্জনক ছিলনা। তাই আমি আরও অতিরিক্ত চার দিন থাকতে পারবো বলে সানন্দে রাজী হয়েছিলাম। এখন বুঝতে পারি, যদিও করোনার উদ্ভবের জন্য সবাই চীনকে দায়ী করছে, কেবলমাত্র চীনের এয়ারলাইনের টিকেট করেছিলাম বলেই আমরা সেদিন দেশে ফিরে আসতে পেরেছিলাম। কেননা আমরা রওনা হবার দুই দিন আগেই অস্ট্রেলিয়া লকডাউনে চলে যায়। অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির প্রাণভোমরা চীনের হাতে থাকায় ওরা চীনের ফ্লাইটকে ব্যান করতে পারেনি। ঠিক একই কারণে বাংলাদেশও তা পারেনি। এবং এ কারণেই আমরা সেদিন যাত্রা সম্পন্ন করতে পেরেছিলাম, যদিও বিচিত্র কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে! আল্লাহ রাব্বুল ‘আ-লামীন অন্তর্যামী, ভূত ভবিষ্যৎ সবই তার জানা, এবং তিনি তার বান্দাদের প্রতি করুণাময়, দয়ালু! পেছনের দিকের কথাগুলো স্মরণ করলে এখন এ কথাগুলোই আমার মনে বাজতে থাকে।

আসার আগের কয়েকটা দিন আমাদের বৌমা খুব চাপের মধ্যে ছিল। তার কলেজের টার্ম এন্ড পরীক্ষার খাতা দেখে শেষ করা, রেজাল্ট কম্পাইল করা, ল্যাপটপে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ এর এ্যাপস ডাউনলোড করে নিয়ে দূরশিক্ষণ পদ্ধতি প্র্যাকটিস করা, তদুপরি করোনা ভীতির কারণে এখানে সেখানে ছুটোছুটি করে নিত্য প্রয়োজনীয় এটা ওটা জোগাড় করে রাখা ইত্যাদি চাপের কারণে বেচারী হিমসিম খাচ্ছিল। এতদিন একসাথে থেকেছি, ঘোরাফেরা করেছি বলে আমাদের উপর ওর খুব মায়াও জন্মেছিল। তাই আমাদের আসার দিন যত ঘনিয়ে আসছিল, ওর অস্থিরতা ততই বাড়ছিল, আমাদের জন্য সে আর কী কী করতে পারে তা ভেবে ভেবে। ছেলেরও খারাপ লাগছিল, তবে তা সে চেপে রাখতে পারঙ্গম ছিল। আমাদের যেসব খাবার প্রিয়, বৌমা একটা একটা করে সেসব খাবারই প্রস্তুত করছিল আমাদের আসার কয়েকদিন আগে থেকে, তার শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও। তাকে আগেই বলে রেখেছিলাম, আসার আগের রাতে যেন খুব সিম্পল মেন্যু রাখে। সে তাই করেছিল।

রাতে ডিনারের পর ছেলে, বৌমা আর আমি মিলে আমাদের বড় চেক-ইন লাগেজগুলো ওজন করে, তালা লাগিয়ে নীচে নামিয়ে আনলাম। আমাদের বিল্ডিং এর সামনে একটা পার্কিং খালি পেয়ে ছেলে আগেই ওর গাড়ীটা সেখানে পার্ক করে রেখেছিল, যেন সাত সকালে উঠে গাড়ী পার্কিং এবং লাগেজ টানাটানির ঝামেলা না করতে হয়। গাড়ীটা লাগেজসহ সারারাত রাস্তার ওপরেই পার্ক করা ছিল, যা আমাদের দেশে চুরির ভয়ে কল্পনাই করা যায় না। ঘরে ফিরে বৌমা আমাদের দু’জনকে দুটো মাস্ক আর কয়েক জোড়া হ্যান্ড গ্লোভস দিল, পরের দিন যাত্রাপথে ব্যবহারের জন্য। এগুলো হঠাৎ করে বাজার থেকে উধাও হয়ে যাবার কারণে সে দূর দূরান্তের স্টোর থেকে বহু কষ্ট করে সেগুলো সংগ্রহ করে এনেছিল। সকালে সাড়ে সাতটার সময় রওনা হবো, এটা সাব্যস্ত করে সবাই ঘুমাতে গেলাম।

২৩ মার্চে সকালে ফজরের নামায পড়ে ধীরে সুস্থে তৈরী হওয়া শুরু করলাম। একসাথে বসে সবাই নাশতা করলাম। টেবিলে বসে একটু হাল্কা আলাপচারিতা শুরু হলে সবার অলক্ষ্যেই সময় গড়িয়ে গেল। সাড়ে সাতটায় রওনা হবার কথা ছিল, কিন্তু আমাদের নাশতার টেবিলে বসে থাকতেই সাড়ে সাতটা বেজে গেল। সেদিনটা ছিল বৌমার সশরীরে কলেজে উপস্থিত হবার শেষ দিন, তার পরের দিন থেকেই তার ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ শুরু হবার কথা। ছেলের শুরু হয়েছিল এর আগের সপ্তাহ থেকেই। আমাদেরকে বিমানবন্দরে গিয়ে বিদায় জানাতে না পারার জন্য বৌমার আফসোসের সীমা ছিল না। সকাল সাতটা ছাপ্পান্ন মিনিটে আমরা সবাই একসাথে রওনা হ’লাম। বাসা থেকে বৌমার কলেজ- ম্যাকিনন সেকন্ডারী কলেজ, দশ মিনিটের পথ। গাড়ীতে ওঠার পর থেকে বৌমা গিন্নীর একটা হাত নিজের হাতে চেপে ধরে বসে থাকলো। নামার সময় ছলছল চোখে একটা ঢোক গিলে কোনমতে বিদায় নিল। আমি কষ্টে ওর দিকে তাকাতে পারছিলাম না। চলে আসার সময় গিন্নী বললো, ও বারবার ফিরে ফিরে তাকাচ্ছিল। আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আমাদের বাসায় কয়েকদিন থেকে যখন কোন আত্মীয় স্বজন বিদায় নিয়ে চলে যেত, আমি এক দৃষ্টিতে তাদের যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকতাম। আবার আমি যখন কোন প্রিয়জনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসতাম, আসার পথে আমি বারবার পেছন ফিরে তাকাতাম। কি অদ্ভূত এক মায়ার জাল স্রষ্টা এ জগতে ছড়িয়ে রেখেছেন, মানুষের মনে মনে!

বৌমা গাড়ী থেকে নেমে যাবার পর থেকে দেখলাম, ছেলে ভারী মনে গাড়ী চালাচ্ছে, প্রায় নিশ্চুপ থেকে। ওর জন্যেও খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমাদেরকে এয়ারপোর্টে বিদায় জানিয়ে ওকে এতটা পথ (৫৫ কিমি) একা একা গাড়ী চালিয়ে ফিরতে হবে। বৌমা সাথে থাকলে তাও দু’জনে মিলে টুকটাক কথা বলতে বলতে ফিরে আসতে পারতো। ও জানে রবীন্দ্র সঙ্গীত আমার কতটা প্রিয়। অন্যদিন আমি ওর পাশে বসলে ও গাড়ীতে রবীন্দ্রসঙ্গীত ছেড়ে দিয়ে গাড়ী চালাতো। আমি একটা স্বর্গীয় অনুভূতি নিয়ে আনমনে তা শুনতাম, আর মাঝে মাঝে আমার মাথাটা স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতায় এমনিতেই নুয়ে আসতো। কিন্তু সেদিন সে রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়লো না, ছাড়লো এফ এম ব্যান্ড রেডিও। সেখানে থেমে থেমে দিনের খবরের শিরোনামগুলো শোনানো হচ্ছিল। আমি শুনলাম, চীনে সেদিনই আবার নতুন করে তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। খবরটাকে আমার কাছে অশনি সংকেত বলে মনে হলো, বুকটা সম্ভাব্য বিপদের আশঙ্কায় কেঁপে উঠলো। বে সাইড বীচ এর সমান্তরাল পথে ছেলে গাড়ী চালাচ্ছিল। আমার বাঁ দিকে পথের সমান্তরালে ছিল বিস্তীর্ণ সৈকত। আমি সেটা খেয়াল করিনি। ছেলে জানে, আমি সাগরের জলরাশি দেখতে ভালবাসি। সে আমাকে বাঁয়ে ইশারা করে বললো, “বাবা, বীচ দেখো”। আমি ঘাড় ঘুরালাম, দেখি অত্যন্ত চমৎকার, সফেন ঢেউ খেলানো সৈকত। গাড়ির সাথে সাথে বীচও এগোচ্ছিল। কেন জানি আমার বুকটা খুব ভারী ভারী মনে হচ্ছিল। আমি ঘাড় ফিরিয়ে নিলাম। একটু দেরী হয়ে গেছে বলে ছেলে গাড়ীর গতিসীমা একটু বাড়াতে চাচ্ছিল। একটু অস্থিরতায় ভুগছিল। আমি তাকে সাবধান করে দিয়ে বললাম, হাতে প্রচুর সময় আছে, গতিসীমা অতিক্রমের প্রয়োজন নেই।

এয়ারপোর্টের কাছাকাছি আসতেই ছেলে আমাদেরকে গাড়ীতে বসেই হ্যান্ড গ্লোভস আর ফেইসমাস্ক পরিয়ে নিয়েছিলো। নয়টা দশ মিনিটে আমরা গাড়ী থেকে নামলাম। ট্রলী টেনে বের করতে গিয়ে দেখি, পয়সা ছাড়া (চার ডলার) সেটা নড়বে না। এর আগে একই বিমানবন্দর থেকে নিউজীল্যান্ড যাবার সময় ট্রলীর জন্য কোন পয়সা দিতে হয়নি, তাই এবারে একটু অবাক হ’লাম। ছেলে পকেট থেকে ওর কার্ড বের করে যথাস্থানে ছুঁইয়ে দিয়ে একটা শেকলবন্দী ট্রলীকে অবমুক্ত করলো। লাগেজগুলো সে একাই টানাটানি করে ট্রলীতে উঠিয়ে দিয়ে বললো, “বাবা, এখানে এক মিনিটের বেশী গাড়ী রাখা যায় না। আমি গাড়ীটাকে একটা পার্কিং এ রেখে পুনরায় এখানে হেঁটে আসবো, এতে বিশ মিনিটের মত লাগবে। হাতে যেহেতু সময় বেশী নেই, তোমরা ইতোমধ্যে একা একাই চেক-ইন এর কাজে অগ্রসর হও”। আমি তাই করলাম। কাউন্টারে অল্প ভিড় ছিল, তাই ছেলে আসার আগেই আমি লাগেজগুলো চেক-ইনে দিয়ে, ট্যাগসহ বোর্ডিং পাস ও পাসপোর্ট হাতে ফিরে পেয়ে একটা খালি আসনে বসার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলাম। এমন সময় ছেলেও ফিরে আসলো। আমরা সবাই একত্রে বসলাম। ততক্ষণে মনিটরে দেখাচ্ছে আমাদের প্লেন এক ঘন্টা বিলম্বে ছাড়বে। মূল সময়সূচী অনুযায়ী গুয়াংঝুতে আমাদের মাত্র তিন ঘন্টার বিরতি ছিল। সেটা থেকে আরো এক ঘন্টা কমে যাওয়াতে মনে মনে সন্দেহ হতে থাকলো, গুয়াংঝুতে আমাদের দৌড়োদৌড়ি পড়ে যাবে।

প্লেন বিলম্বে ছাড়বে, এটা জানার পরেও আমাদের সবার মনে একটা অস্থিরতা বিরাজ করছিল। ফলে, একসাথে যে সবাই বসে খানিকক্ষণ গল্প সল্প করবো, সেটা না আমার, না ছেলের, কারোই ভাল লাগছিল না। একসময় সে বললো, “তোমরা অগ্রসর হও”। হাঁটতে হাঁটতে সেই স্থানটিতে এলাম, যেখান থেকে দর্শনার্থীরা আর এগোতে পারেনা। মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে শারিরীক আলিঙ্গণের মাধ্যমে যাত্রীদেরকে তাদের থেকে বিদায় নিতে হয়। ছেলে পা ছুঁয়ে সালাম করলো। আমি বুকে টেনে নিলাম। ওর মাকে সালাম করে যখন ও উঠে দাঁড়ালো, তখন ও মুছে ফেলার আগেই আমি ওর চোখে অশ্রুর ফোঁটা দেখে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলাম। ওরা বড় হবার পর কোনদিন আমি ওদেরকে কাঁদতে দেখিনি। শুধু বড় ছেলেকে দেখেছিলাম একদিন, ইউনাইটেড হাসপাতালের প্রসূতি কক্ষে ওর কন্যা সন্তানের জন্মের ক্ষণে, তবে সেটা ছিল আনন্দাশ্রু! আর সেদিন দেখলাম মেজ ছেলেকে।

বিদায় নিয়ে আমরা আর্চওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে ইমিগ্রেশনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। আবার সেই স্বভাবসুলভ পিছু ফিরে তাকানো। দেখি ছেলে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। একটু অগ্রসর হতেই এক ইউনিফর্মধারী মহিলা আমাদেরকে একটা কোণায় ডেকে নিয়ে সেখানে রাখা একটা বেঞ্চির উপর আমাদের ক্যারী অন লাগেজগুলো রাখতে বললেন এবং আমাদেরকে পরস্পর থেকে একটু দূরত্বে থাকতে বললেন। একটাতে তালা লাগানো ছিল, সেটার চাবি চাইলেন। চাবি গিন্নীর কাছে ছিল, তিনি এগিয়ে এসে চাবিটা দিয়ে নির্দেশানুযায়ী আবার দূরত্বে চলে গেলেন। মহিলা নিজ হাতে চাবি খুলে সেখানে হাতে রাখা একটা বোতল জাতীয় পাত্র থেকে কিছু স্প্রে করলেন। দেখলাম, উপরের কিছু কাপড় ভেজা ভেজা হয়ে গেল। আমার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগটাতেও (গত বছরে কাশ্মীর ভ্রমণে যাবার সময় দিল্লি বিমান বন্দরে হারিয়ে যাওয়া এবং ফিরে পাওয়া সেই কালো ব্যাগটা!) স্প্রে করে আমাদেরকে সবকিছু গুটিয়ে নিয়ে ইমিগ্রেশনের দিকে অগ্রসর হতে ইশারা করলেন। আমরা ইমিগ্রেশনে যাবার পথে পুনরায় পিছু ফিরে তাকালাম। দেখি, ছেলে তখনো সেখানে দাঁড়িয়ে। অনেকক্ষণ ধরে আমরা দু’জনে হাত নাড়ালাম। আমি চশমার কাঁচ মুছে নিয়ে বাঁয়ে মোড় নিলাম।

ছেলে বলেছিল, আমরা বোর্ডিং গেইটে না পৌঁছা পর্যন্ত সে এয়ারপোর্টেই অপেক্ষা করবে। প্রতিটি স্টেজে আমরা যেন সেলফোনে তাকে আমাদের অগ্রগতি জানাই। এজন্য সে তার মায়ের সেলফোনে অস্ট্রেলিয়ান সিম টা রেখে দিয়েছিলো। আমারটাতে সে গ্রামীণফোনের সিমটা ঢুকিয়ে দিয়েছিল, যেন আমি ঢাকায় নেমে সহজেই ছোট ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। কঠোর ইমিগ্রেশন ও সিকিউরিটি চেকিং এর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। সে তুলনায় বেশ সহজেই সে বৈতরণী পার হয়ে এলাম বলে মনে হলো, শুধুমাত্র সবকিছু খুলে ট্রে/বক্স এ রেখে স্ক্রীনিং এর পর আবার সবকিছু সংগ্রহ করে পরে নেওয়ার ঝামেলাটুকু ছাড়া। আমরা ফোন করার আগেই ছেলে ফোন করে অগ্রগতি জানতে চাইলো। আমরা তখন বোর্ডিং গেইটের পথে অগ্রসরমান। ওকে তাই বললাম। বোর্ডিং এরিয়ায় আসন গ্রহণ করার পর চায়না সাউদার্ন এর কাউন্টার থেকে ঘোষনা শুনতে পেলাম, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন এর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী গুয়াংঝুর বাইয়ুন বিমান বন্দরে কিছু “কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়া চলছে”। এ কারণে প্লেন এক ঘন্টা দেরীতে ছাড়বে। ঘোষণাটি শুনে বুঝতে পারলাম, কপালে ভোগান্তি আছে। ছেলেকেও ঘোষণাটির কথা জানালাম। তার কন্ঠস্বর শুনে বুঝতে পারলাম, সেও শঙ্কিত। তাকে বাড়ী ফিরে যেতে বললাম। আর মনে মনে সাহস সঞ্চয় করে নিজেকে বলতে থাকলাম, “carpe diem”, “carpe diem”!

ঢাকা
৩১ মার্চ ২০২০
শব্দসংখ্যাঃ ১৬৯৭




আমার রাতের আকাশ দেখার জায়গা। ছবি তোলার জন্য আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিল। আলো নেভানো থাকলে আকাশ দেখার জন্য খুব সুন্দর জায়গা।

প্রিয় জায়গা
আমার লেখার টেবিল

বৌমার কলেজ

নিবিষ্ট মনে...

মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:২২

জুন বলেছেন: সব বিদায়ই বড় কষ্টকর খায়রুল আহসান। দীর্ঘ হলেও পড়তে গিয়ে মনে হলো না আপনার উল্লিখিত শব্দ সংখ্যার কথা। সন্তানের প্রতি অত্যন্ত মায়াময় এক দরদী লেখা।
ভালো লাগা রইলো।
+

৩১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রথম মন্তব্য এবং প্রথম প্লাসটির জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
এ সিরিজের এর আগের একটি লেখায় একটু বেশী ডিটেইলস থাকার কারণে কেউ একজন তা অনাবশ্যক জ্ঞান করেছিলেন। এবারে তাই সূচনাতেই একটা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাখলাম। কারো কাছে তেমনটি মনে হলে যেন তিনি নিঃসংকোচে পোস্ট থেকে যে কোন সময়ে প্রস্থান করতে পারেন।

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২০

মা.হাসান বলেছেন: আপনি কবি মানুষ তাই ১৫০০ শব্দ বেশি মনে হচ্ছে।
আমার যেন শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেলো মনে হলো।

অস্ট্রেলিয়ার টিকেট সৌভাগ্যক্রমে খুব এক্সপেন্সিভ না। সব ঠিক থাকলে সামনের বছর আবার যেতে পারবেন। ভিসার জন্য যে রকম ঝামেলা পোয়াতে হয় তাতে অবশ্য খারাপই লাগে, কিন্তু কি করার আছে।

জনাব চাঁদগাজী, করুনাধারা আপা সহ আরো অনেকজনই ব্লগে আছে প্রয়োজনের তাগিদে যাদের সন্তান দূরে থাকে। সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যায় না। তবে তাদের জীবন সঙ্গি আদর্শ হলে দুশ্চিন্তা কিছুটা কমে। আপনি এদিক থেকে ভাগ্যবান বলে আপনার পোস্ট থেকে অনুমান করি।

অশেষ শুভকামনা।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: কয়েক জায়গায় কিছু সম্পাদনার পর শব্দসংখ্যাটা এখন ১৬৯৭ এ দাঁড়িয়েছে। আপনি পড়ুয়া লোক, আপনার কাছে সেজন্যেই শব্দের এ আধিক্যকে বাহুল্য মনে হয় নি। যাক, মনযোগ দিয়ে আমার এ আখ্যানটি পড়ার জন্য অশেষধন্যবাদ। পড়ার পর, ভাল লাগার প্রতীক হিসেবে + রেখে যাওয়াতে অনুপ্রাণিত হয়েছি।
ভিসার জন্য আমাদের যে ভোগান্তি, তা স্বোপার্জিত। এজন্য আমি ওদেরকে দোষ দিতে পারি না।

৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২১

রাজীব নুর বলেছেন: ভ্রমন কাহিনী আমার ভীষন প্রিয়।
বিয়ে না করলে আমি বাকিটা জীবন দেশ বিদেশ ঘুরে কাটিয়ে দিতাম।

আপনার সৃতি শক্তি বেশ ভালো। অতি তুচ্ছ ঘটনাও বাদ দেন নি। ভেরি গুড।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: অতি তুচ্ছ ঘটনাও বাদ দেন নি। ভেরি গুড - অনেক কথাই তুচ্ছ মনে হলেও তা তুচ্ছ নয়। সেজন্যেই ছোট ছোট কথা/ ঘটনাগুলোও আমার নজর এড়ায় না।
ভ্রমন কাহিনী আমার ভীষন প্রিয় - মানুষ ভ্রমণ থেকে অনেক শিক্ষা লাভ করতে পারে, সেটা দেশেই হোক, আর বিদেশেই হোক। আবার অন্যের ভ্রমণ কাহিনী পড়েও অনেক শিক্ষা লাভ করা যায়। যেমন, সৈয়দ মুজতবা আলীর ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে লেখা বইগুলো থেকে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালোবাসা মিশ্রিত ভ্রমন কাহিনী ভালোই লেগেছে পড়তে

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালোবাসা মিশ্রিত ভ্রমন কাহিনী ভালোই লেগেছে পড়তে - খুশী হ'লাম তা জেনে। আশাকরি, পরের পর্বগুলোও পড়বেন।

৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:১৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার ঘরে ফেরার পোষ্টগুলির জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। অনেক ডিটেইলস দিয়েছেন, ভালো লাগলো।

প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিদায় নেয়া কিংবা দেয়া, দু'টাই খুব বেদনার। কম-বেশী আমাদের সবাইকে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কি আর করবেন, পার্ট অফ লাইফ!

আপনার আকাশ দেখার জায়গাটা আমার পছন্দ হয়েছে। নীচে ছোট ছোট টবগুলিও। আমাদের কিচেনে আমি এমন ছোট ছোট টবে বেশকিছু ইনডোর প্ল্যান্ট রেখেছি। দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। :)

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ডিটেইলস দিয়েছেন, ভালো লাগলো - অনেক ধন্যবাদ, প্রীত হ'লাম।
জ্বী, পার্ট অফ লাইফ হিসেবেই মেনে নেই এসব সাময়িক বিচ্ছেদগুলোকে। মানুষের মন প্রকৃতির মত সর্বংসহা, কিছুদিনের মধ্যেই এইসব বিরহ বিচ্ছেদগুলো মনে সয়ে যায়।
প্ল্যান্টস এ্যান্ড ফ্লাওয়ার্স দেখলে আমারও মন ভাল হয়ে যায়। বিশেষ করে ফুলগুলোকে তো মনে হয় মানুষের সাথে কথা বলতে জানে!
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত।

৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৯

সোহানী বলেছেন: পড়তে পড়তে লিখাটা একটু বড় মনে হয়নি, কখন যে শেষ হলো টের পাইনি।

যেকোন বিদায় কষ্টকর সেটা স্বল্প বা দীর্ঘ। আর যদি সে বিদায় প্রিয়জন থেকে হয় তাহলে সে কষ্টটা আরো অনেক বেশী। আপনি যেমন সন্তানকে সাময়িক বিদায় নিয়ে এসে আপনার যেমন কষ্ট হয়েছে তেমনি আপনার সন্তানদেরও কষ্ট হচ্ছে। ক'দিন আগেই আমি দেশে যেয়ে এরকমভাবে প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলাম। সে কষ্ট আমি জানি ও বুঝি।

এরকম লকডাউনে ট্রাভেল এক্সপেরিয়েন্স শুনতে চাই। কিভাবে পৈাছালেন অবশেষে।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: পড়তে পড়তে লিখাটা একটু বড় মনে হয়নি - যাক, কথাটা শুনে বড় আশ্বস্ত বোধ করছি।
হ্যাঁ, আমি জানি যে ওদেরও বেশ কষ্ট হচ্ছে। এটাই মায়া, এটাই মানবিক অনুভূতি।
কিভাবে পৈাছালেন অবশেষে - ফিরে আসার গোটা কাহিনীটা এত বড় যে পুরোটা শেষ করতে হয়তো তিনটে পর্ব লাগবে। যদি এক কথায় শুনতে চান, তাহলে বলি যে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে নিরাপদে বাড়ী ফিরে এসেছি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, প্লাসে অনুপ্রাণিত।

৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৫

শাহিন বিন রফিক বলেছেন:




গতকাল এই পর্বটি পড়েছিলাম। প্রথম কয়েক লাইন পড়ে বুঝলাম।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: গতকাল এই পর্বটি পড়েছিলাম। প্রথম কয়েক লাইন পড়ে বুঝলাম - পড়ে কেমন লেগেছে?
পড়ার ও প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৩৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



দির্ঘ দিন ধরে সারা দুনিয়ায় যখন চলছিল অস্থিরতা, তখন পৃথিবীর শান্তিপূর্ণ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। সমৃদ্ধ অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসম্মত আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা সব মিলিয়ে ভ্রমন ও বসবসের জন্য চমৎকার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। তবে সাম্প্রতিক করোনার প্রভাবে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ হয়তবা পরিপুর্ণ আনন্দের হতে পারেনি। আমাদের জন্যও আপনার দীর্ঘ অস্ট্রেলিয়া ভ্রমন নিয়ে কিছুটা দু:স্চিন্তা ছিল কেননা যদি ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়
তাহলে আপনার দেশে ফেরাটা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। যাহোক এখন দেশে ফেরার কথা শুনে নিশ্চিন্ত
হলাম ।

দীর্ঘ ভ্রমন শেষে ঘরে ফেরার কাহিনী মাত্র ১৬৯৭ শব্দের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে দেখে প্রথমে মনটা কিছুটা বিষন্ন হয়ে
পড়েছিল। শিরোনামটি দেখে ভেবেছিলাম কৌতুহলি বিষয়াদির বিষদ বিবরণ চুটিয়ে পাঠ করব । কিন্তু চোখের পলকেই
দেখা গেল পাঠ শেষ, কিছুটা অতৃপ্তি থাকলেও ফিরতি ভ্রমনের টুকিটাকি সাথে পরিবারের প্রিয়জনদের ছেড়ে আসার ও
নীজের কাছের লোকজনদের বিদায় বেলার প্রস্তুতি ও বিদায় পর্বের বিষাদের দৃশ্যপটগুলি সুন্দরভাবেই কথাচ্ছলে
লেখাটিতে ফুটে উঠেছে দেখে ভাল লাগল ।

লেখার ভিতরে থাকা কথাগুলির মধ্যে থাকা আপনার বৌমার ব্যস্ততার মাঝেও তাঁর কর্মস্থলের কথামালায় পরিষ্ফুট কর্ম
ও সাফল্যের কথা শুনে বুঝতে পেরেছি যে, বাঙালিরা বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রবাসী বন্ধুরা মেলবোর্নে তথা সমগ্র
অস্ট্রেলিয়াতেই বেশ সম্মানের সঙ্গে বসবাস করছেন এবং নিজ দেশকে, দেশের ভাষা এবং সংস্কৃতিকে নিয়ে গর্বিত
জীবনযাপন করছেন।

দোয়া করি দেশে ফিরে সুস্থ থাকুন, হয়তবা বিদেশ ফেরত যাত্রী হিসাবে দিন কতক সেল্ফ আইসোলেসনে থাকতে হতে
পারে । যাহোক পরিবারের সকলের সাথে এই চরম বিপর্যয়ের দিনগুলি নিরাপদ ও আনন্দে কাটুক এ কামনাই রইল ।

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত ও প্রাজ্ঞ মন্তব্য পেয়ে আমার এ পোস্টটা সমৃদ্ধ হলো, ডঃ এম এ আলী ভাই।
সমৃদ্ধ অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসম্মত আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা সব মিলিয়ে ভ্রমন ও বসবসের জন্য চমৎকার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড - জ্বী, আপনার পর্যবেক্ষণ একেবারে সঠিক। তবে, এবারে দুটো দেশই ঘুরে আসার পরে আমি নিউযীল্যান্ডকে অস্ট্রেলিয়ার ওপরে স্থান দিব। দুটোই শান্তিপ্রিয় দেশ, দুটোরই দেশ পরিচালনার জন্য গণমুখী পদ্ধতি ও পরিকল্পনা রয়েছে, যদিও দুটিই এক সময় বেনিয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্য দ্বারা শাসিত ছিল, এখনও শাসনতান্ত্রিকভাবে নামে মাত্র আছে।
আমি যখন অস্ট্রেলিয়া ভ্রমনের জন্য বের হই (২২ ডিসেম্বর ২০১৯), তখন করোনা চীনে আত্মপ্রকাশ করলেও, বিশ্ববাসী তা জানতো না। এমনকি গোটা জানুয়ারী মাসেও অস্ট্রেলিয়ায় তার কোন প্রভাব পড়েনি, যদিও ততদিনে বিশ্ব এর ভয়াবহতার কথা একটু একটু করে জানতে পারছিল। ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম দু'সপ্তাহ জুড়ে আমি নিউযীল্যান্ড সফর করেছি। কেবল তখনই তাদের নিউজ মিডিয়ায় করোনার দৈনিক ফিরিস্তি দেয়া শুরু হয়, তাও শুধু চীন দেশের। দু'সপ্তাহ পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এসে দেখি, ওরাও একটু একটু করে সাবধানতা অবলম্বন করছে এবং দৈনিক পরিসংখ্যান দিচ্ছে।
যাহোক এখন দেশে ফেরার কথা শুনে নিশ্চিন্ত হলাম - ধন্যবাদ আলী ভাই, আমার জন্য আপনার এ উদ্বেগটুকুর জন্য।

হয়তবা বিদেশ ফেরত যাত্রী হিসাবে দিন কতক সেল্ফ আইসোলেসনে থাকতে হতে পারে - আমি দেশে ফেরার আগেই নিজের কাছে নিজে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আল্লাহ'র রহমতে সুস্থভাবে দেশে ফিরতে পারলে কেউ কিছু বলুক বা না বলুক, আমি অন্ততঃ ১৪ দিন কোন প্রয়োজনেই ঘর থেকে বের হবো না। ফেরার দিন ঢাকা বিমান বন্দরে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন হাতে একটি লীফলেট ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, "এখন আপনাকে কী কী করতে হবে না করতে হবে, তার সব কিছুই এর মধ্যে লিখা আছে। বাসায় গিয়ে মন দিয়ে পড়ে নেবেন"। ওনারা কোন মৌখিক ব্রীফিং দেন নাই। তখন ছিল মধ্যরাত। হয়তো সারাদিনে ব্রীফিং দিতে দিতে মহিলা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। হাতের মধ্যে কি যেন একটা সীলও দিয়ে দিয়েছিল, ভেবেছিলাম বাসায় এসে পড়ে দেখবো। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার যে বাসায় পৌঁছার আগেই সে সীলটা উঠে গিয়েছিল। ভোটের সময় আঙুলে যে কালি লেপন করে দেয়া হয় (যেটাকে আমি আমাদের কালিমাযুক্ত চরিত্রের সনদ বলে মনে করি), তেম করে আমাদের বুড়ো আঙুলে কালি লাগিয়ে দিয়েছিল, সেটাও বাসায় পৌঁছার আগেই উঠে গিয়েছিল। :)

তবে সুখের কথা, দু'দিন পর থানা থেকে একজন দারোগা বাসায় এসে চেক করে গেছেন, আমি সত্যি সত্যি হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি কি না!

৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:১৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার আত্মিক সম্পর্কের মন ছোঁয়া বর্ণনা ! আমার কাছে তো ছোট লেখা ই মনে হল।
দারুণ একটা সিরিজ আশা করছি।

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার কাছে তো ছোট লেখা ই মনে হল - এ কথাটা জেনে আশ্বস্ত বোধ করছি, ধন্যবাদ।
ফিরে আসার কাহিনীটা মোট তিনটে পর্বে শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপাণিত।
শুভকামনা----

১০| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:১৭

মিরোরডডল বলেছেন: বিদায় মানেইতো কষ্ট । প্রিয়জনের জন্য কষ্ট পাওয়ার মাঝেও একটা ভালো লাগা আছে । সম্পর্কের বন্ধনটা আরও বেশী হয় ।
চলে যাওয়া মানেই আবার ফিরে আসার একটা স্বপ্ন দেখা । এখন ঘরে ফেরার আনন্দটা উপভোগ করুন ।

আমি ওয়েট করছি আপনার আগামি লেখায় চায়না আর ঢাকা এয়ারপোর্টের অভিজ্ঞতা শুনবো বলে । নিশ্চয়ই এবারের অভিজ্ঞতা ভিন্ন রকমের ছিল ! ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ।

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: চলে যাওয়া মানেই আবার ফিরে আসার একটা স্বপ্ন দেখা - চমৎকার একটা কথা বলেছেন। খুব ভাল লাগলো কথাটা।
আমি ওয়েট করছি আপনার আগামি লেখায় চায়না আর ঢাকা এয়ারপোর্টের অভিজ্ঞতা শুনবো বলে । নিশ্চয়ই এবারের অভিজ্ঞতা ভিন্ন রকমের ছিল - ভিন্ন রকমের তো ছিলই, অনেক শিক্ষণীয়ও ছিল। ডিটেইলসেই লিখবো বলে আশা রাখছি, সেই সাথে আশা করছি ঐ সব ছোট খাট ডিটেইলসগুলো পাঠকের ভাল লাগবে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপাণিত। শুভকামনা----

১১| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

মুক্তা নীল বলেছেন:
বিদায় সে- তো বরাবরই কষ্টের , সন্তানের সাথে বাবা মা এর করুন বিদায় কাহিনী পড়ে কষ্ট লাগছে। এতো বিদায় নয় যেন শরীরের একটা অংশ রেখে এসেছেন। লেখাটা পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হয়ে গেল টেরই পেলাম না । আমি আগেও বলেছি আপনার এই পারিবারিক লেখাগুলো আমাকে ভীষণ টানে । যাইহোক, আল্লাহর রহমতে সুস্থভাবে এসেছেন এবং ভাবী সহ সবাই ভাল আছেন জেনে ভালো লাগলো।
আপনার প্রিয় জায়গা চেয়ারে দুটো ছবি দেখেছিলাম চা অথবা কফি পানের কোন এক ব্লগে আপনাদের দু'জনের । সেই ছবিটা ছিল অসাধারণ ও অনিন্দ্যসুন্দর ।

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হয়ে গেল টেরই পেলাম না - ধন্যবাদ, আপনার এ কথাতে আশ্বস্ত হ'লাম যে একটু দীর্ঘ হলেও লেখাটা অপাঠযোগ্য হয় নি।
হয়তো এ ছবিটা আপনি দেখেছিলেনঃ


মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপাণিত। শুভকামনা----

১২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১২

মোঃমোজাম হক বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। ডাবল প্লাস।
ছেলের বৌকে কি মিস্টি করে ডাকেন,এটা শিক্ষনীয়।
মোবাইলে মন্তব্য করছি বলে বেশী লিখতে পারছিনা।
আশা করছি হোম কোরাইনটাইনে থেকে বড় বড় পোস্ট দেবেন।
ধন্যবাদ।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১১

খায়রুল আহসান বলেছেন: ডাবল প্লাস এর জন্য ধন্যবাদ, অনুপ্রাণিত।
আশা করছি হোম কোরাইনটাইনে থেকে বড় বড় পোস্ট দেবেন - আজ একটা এর চেয়েও বড় পোস্ট দিয়েছি। আশাকরি, পড়ে দেখবেন।

১৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:০৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
পোস্টটি আগেই পড়ে লাইক প্রদান করে নিজের আগমন সুনিশ্চিত করেছিলাম।

আপনি একজন বিরল প্রতিভার অধিকারী স্যার।
ব্লগে আপনার পোস্ট ও কমেন্ট আমাদের মত অগণিত ব্লগারের অনুকরণীয়।‌ এক অর্থে সফলতম ব্লগার।
সংসার জীবনেও আপনি একজন সফল পিতা, শশুর মহাশয়ও বটে। আজকের দিনে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে যে ধরনের সংকীর্ণতা পরিবারগুলোকে স্বার্থপরতা বা কূপমন্ডুকে বেঁধে ফেলেছে। সেখানে আপনার পারিবারিক বন্ধন; পারিবারিক একাত্মবোধ- সংহতি প্রকাশের উজ্জ্বল নিদর্শন। এমন অনুভূতি বয়ে চলুক আজীবন।

শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা নিয়েন স্যার।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, আপনার দেয়া 'লাইক'টি আমি যথাসময়ে লক্ষ্য করেছিলাম এবং জানতাম, আপনি আবার আসবেন।
ব্লগে আপনার পোস্ট ও কমেন্ট আমাদের মত অগণিত ব্লগারের অনুকরণীয় - আপনার এ উদার মূল্যায়ন আমার ব্লগিং কে সার্থক ও আনন্দদায়ক করে তুলেছে। অনেক ধন্যবাদ, এ উচ্চ মূল্যায়নের জন্য।
পারিবারিক বন্ধন কে আমি সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে থাকি। একটি পরিবারে সবাই সমান হয় না এবং সবার অবদানও এক রকম হয় না। একেকজন একেকরকমভাবে পরিবারের প্রতি অবদান রাখতে পারে। আমি সবার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি এবং সেটাকে যথাযথ মূল্যায়ন করি।

১৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৩৫

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ অপরাহ্ন,
১৫০০ শব্দ মোটেও বেশি মনে হচ্ছে না। আমার যেকোন প্রবন্ধ লিখলেই সেটা ২০০০ এর কাছাকাছি চলে যায়। আপনি অনেক কেটে ছেটে লিখেছেন। লেখার সময় আবেগের রাশ টেনে ধরে রেখেছেন।

এই সিরিজের মাঝখানের অনেকগুলি পর্ব আমার পড়া থেকে বাদ পড়ে গেছে মনে হল। বিশেষ করে তৃতীয় পর্ব বলে আপনি কোনটা বুঝিয়েছেন আমি ঠিক ধরতে পারি নি। ফেসবুকের গ্রুপেও দেখিছিলাম কিন্তু মোবাইলে আমি বেশিক্ষণ পড়তে পারি না।

যদি হাতে সময় থেকে তাহলে এই ২টা দেশের ভ্রমণ কাহিনী ১টা সিরিজ হিসেবে নামকরণ/পর্ব করে দেবেন তাহলে নতুন যে কারো পড়তে সুবিধা হবে।

ভালো করেছেন সেই সময়ে দেশে ফিরে। নাহলে বেশ দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকা পরতেন সেখানে।
সামান্য কিছু ছবি দিয়েছেন। আরও কিছু ছবি দিতে পারতেন।

সময় নিয়ে ধীরে ধীরে বাকি পর্বগুলি পড়তে হবে।
ধন্যবাদ।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখার সময় আবেগের রাশ টেনে ধরে রেখেছেন - ব্যাপারটা অনুধাবন করার জন্য ধন্যবাদ।
আমি আমার মেলবোর্ন সফর নিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম গত বছরের সেই ডিসেম্বর মাসে। সফরে ব্যস্ত থাকায় এবং কোথাও কোথাও ল্যাপটপ ব্যবহারের সুযোগ না থাকায় মোটেই নিয়মিতভাবে লিখতে পারিনি। মাত্র নয়টি পর্ব লিখার পর দেশে ফিরে এসেছি। ঐ নয়টি পর্বের মধ্যে যেটি তৃতীয় ছিল, সেটিকেই তৃতীয় পর্ব বলে এ পোস্টে উল্লেখ করেছি। আপনি সেটি দেখতে পাবেন এখানেঃ
অস্ট্রেলিয়ার পথে (৩) .... অবশেষে মেলবোর্নের মাটিতে!!!
আরও কিছু ছবি দিতে পারতেন - জ্বী, তা পারতাম। যেসব ছবিতে মানুষের মুখ থাকে, সেসব ছবি তাদের অনুমতি ছাড়া দেয়া যায় না, তাই ছবে বেছে বের করতে একটু ঝামেলা লাগে।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন সপরিবারে, শুভকামনা---

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আরেকটু কথা বাকী রয়ে গেছে। উপরের প্রতিমন্তব্যটি দ্রষ্টব্যঃ "মাত্র নয়টি পর্ব লিখার পর দেশে ফিরে এসেছি" - এখানে একটি কৈফিয়ৎ দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি। ঐ নয়টির পর হঠাৎ কেন শেষের (দেশে ফেরার) ঘটনাগুলো লেখা শুরু করলাম? এর উত্তর হচ্ছে- ঐ নয়টি পর্বের পর বাকী পর্বগুলো ক্রমানুযায়ী লেখার মত কিছু নোটস টুকে রেখেছিলাম এবং কিছু ছবি তুলে রেখেছিলাম। সেগুলো দেখে দেখে অনেক ঘটনাবলী পরে হয়তো স্মৃতি থেকে স্মরণ করে লেখা যাবে। কিন্তু দেশে ফেরার ঘটনাসমূহ ছিল বিচিত্র ধরণের। সেগুলোর কোন নোটস নেই। যতদিন স্মৃতি তরতাজা থাকে, ততদিনই লেখা যাবে, এর পরে নয়। এ জন্যেই আবার শেষ থেকে লেখা শুরু করা।
আমার এ স্মৃতিচারণমূলক পোস্টগুলো পড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করায় অনুপ্রাণিত হ'লাম।

১৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৩৬

নীল-দর্পণ বলেছেন: ফেসবুকের কল্যাণে আপনার এই সিরিজটি আরো আগে সেখানে দেখলেও আজই ব্লগে এসে পড়া শুরু করলাম। ৫নং পর্ব পড়ার পরে ১নং থেকে শুরু করলাম। ভ্রমন বা দৈনন্দিন ব্লগ পড়তে খুব ভালো লাগে। বিদায়ের পর্ব পড়তে গিয়ে বারবার চোখ ভিজে যাচ্ছিল এবং আপনার ছেলে তার মা'কে সালাম করে ওঠার সময়ে তার চোখের জল...বিষয়টি পড়ার সময় টপটপ করে আমার চোখ থেকে জল গড়াচ্ছিল।
আমি আনুষ্ঠানিক ভাবে কারো কাছ থেকে বিদায় নিতে পারি না, প্রচন্ড কষ্ট হয়। বাসায় এলে কর্মস্থলে ফিরে যাবার সময়ে আমি বা আম্মা আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায় নিতে পারি না কেউ। আমার বর এটা লক্ষ্য করে একদিন আম্মাকে অবাক হয়ে বলেছিলেন যে "আপনারা মা-মেয়ে কেউ কারো থেকে বিদায় নেন না!"

সাবধানে থাকবেন যেখানেই থাকবেন। আল্লাহ সবাইকে সুস্থ রাখুন, নিরাপদে রাখুন।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

খায়রুল আহসান বলেছেন: ৫নং পর্ব পড়ার পরে ১নং থেকে শুরু করলাম - অনেক ধন্যবাদ, প্রথম পর্ব থেকে সিরিজটা পড়া শুরু করার জন্য। আশাকরি, সুবিধেজনক সময়ে বাকী পর্বগুলোও এসে পড়ে যাবেন।
বিদায় নেয়াটা আসলেই বড় কষ্টের। এ পৃথিবী এক মায়ার বাঁধন। সময় সব কিছু ঠিক করে দেয়, কিন্তু তবুও, মায়াজাল ছিন্ন করে বের হয়ে আসাটা কষ্টদায়ক বটে।
আল্লাহ সবাইকে সুস্থ রাখুন, নিরাপদে রাখুন - আপনার এবং আপনাদের জন্যেও একই দোয়া রইলো। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন সপরিবারে!!
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,





অনিশ্চয়তা নিয়ে আমিও পড়তে শুরু করলুম, কখন পর্বগুলো একটা একটা করে পড়ে মন্তব্য করার সময় এ সুযোগ পাবো এমন অনিশ্চয়তা।
বাবা-মা'য়ের জন্যে সন্তানদের উৎকন্ঠা থাকেই। সন্তানের প্রতি আপনার স্নেহ আর উৎকন্ঠাও কিন্তু লুকোনো থাকেনি।
ক্যানভাসে সুন্দর একটি পারিবারিক ছবি।

নিরাপদে থাকুন আর থাকুন সুস্থ্য।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: সব পর্বগুলো পড়তেই হবে, এমন কোন কথা নেই। এটা পড়ে এখানে মন্তব্য করে গেলেন, এতেই আমি বড্ডো খুশী হলুম।
স্নেহ, মায়া মমতা মানুষের সহজাত গুণ। একটু লালন করতে শিখলে মানুষের এসব গুণ শতদলে বিকশিত হয়।
ক্যানভাসে সুন্দর একটি পারিবারিক ছবি - অনেক ধন্যবাদ। আপনি যেমন একজন কথা শিল্পী, তেমনি চিত্রশিল্পীও বটে। গল্পের ক্যানভাসে আপনার চোখে একটা সুন্দর পারিবারিক ছবি ভেসে উঠেছে জেনে প্রীত হ'লাম।
আপনিও সুস্বাস্থ্যে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।
শুভকামনা---

১৭| ১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:





বলতে দ্বিধা নেই, লেখার অধিকাংশ বিষয়ে বেশি মজা পাই নি, যত মজা পেয়েছি ছবিগুলো দেখে। আপনার লেখার টেবিল ও তার সম্মুখভাগ দেখে খুব আকৃষ্ট হলাম। এরকম খোলা আকাশ দেখলে তো মেঘনাথবধও দু'একটা লেখে ফেলা যায়! পেলাম আপনার ছবিও।

চীন শুধু অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি নয়, শুধু বাংলাদেশ নয় - মায়ানমার তাদের সেমি-কোলনি। কূটনৈতিক পরিবেশে হয়তো এভাবে কথাগুলো বলা যেতো না। কিন্তু তাদের সখ্যতার কারণে বাংলাদেশ বঞ্চিত হয়েছে রোহিঙ্গা ক্রাইসিসের সুবিচার থেকে।

লেখকের জন্য অনেক শুভেচ্ছা :)

১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখায় না হলেও ছবিগুলো দেখে আপনি মজা পেয়েছেন, এইটুকু স্বীকৃতি পেয়েও আমি আনন্দিত। লেখার টেবিল থেকে রৌদ্র করোজ্জ্বল দিনে যেসব নীল-শুভ্র মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াতো, তেমন নয়ন জুড়ানো একটি ছবিও এখন আর খুঁজে পেলাম না। বাস্তবে লেখার টেবিল থেকে সম্মুখের যে সুন্দর আকাশ দেখা যেত, এখানে দেয়া ছবিগুলো তার মাত্র সিকিভাগ সুন্দর বলা যেতে পারে।

কিন্তু তাদের সখ্যতার কারণে বাংলাদেশ বঞ্চিত হয়েছে রোহিঙ্গা ক্রাইসিসের সুবিচার থেকে - এ কথা সত্য। তবে এটাও
সত্য যে যতটা আঁটঘাট বেধে আমাদের এ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রস্তুতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রচারণা চালানো উচিত ছিল, আমরা বোধ হয় তা করতে পারি নি।

মন্তব্য এবং শুভেচ্ছার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। নিরাপদে থাকুন সপরিবারে, এ ক্রান্তিকালে এটাই কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.