নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন শিক্ষকের কথাঃ আমাদের দোহা স্যার

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

আজ সকাল থেকে ল্যাপটপে কাজ করছিলাম। নিবিষ্ট মনে কাজ করার সময় আমি সাধারণতঃ সেলফোনটাকে দূরে রাখি, কাছে রাখলেও শব্দহীন করে রাখি। আজ কাজ করতে করতে হঠাৎ লক্ষ্য করলাম, একটা নাম্বার থেকে কল আসছে। সাধারণতঃ লেখার সময় আমি ফোনের দিকে তাকাই না। আর তাকালেও, নামের বদলে নাম্বার ভেসে উঠলে তো ধরিই না। কিন্তু আজ ধরলাম। ও প্রান্ত থেকে একজন ভারী গলায় জিজ্ঞেস করলেন, “হ্যালো, খায়রুল আহসান বলছো?” আমি একটু অবাকই হ’লাম, কারণ এ রকম নাম ধরে ডাকার মত লোক তো দিনে দিনে এখন অনেক কমে গেছে এবং যাচ্ছে। হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়ে ওনার পরিচয় জানতে চাইলাম। উনি বললেন, “আমি এম এস দোহা বলছি, তোমাদের দোহা স্যার, কলেজে ইতিহাস পড়াতাম”!

চমকে উঠলাম। কারণ, কোন সূত্র ছাড়াই গত দু’সপ্তাহে উনি কয়েকবার আমার মনে উদিত হয়েছিলেন। আমিও সেই ‘কয়েকবার’ই উদ্যত হয়েছিলাম ওনার টেলিফোন নাম্বারটি খুঁজে বের করে ওনার সাথে কথা বলতে। ওনার নাম্বারটি আমার সেলফোনে সেভ করা ছিল বলে মনে হচ্ছিল, কিন্তু খুঁজে দেখলাম, তা নেই। আর তা থাকবেই বা কী করে, ওনার সাথে গত চার যুগে কথা হয়েছিল একবারই মাত্র, তাও সাক্ষাতে, সম্ভবতঃ ৫/৬ বছর আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে। যদিও তার সাথে আগে কখনো সেলফোনে কথা হয়নি, তবুও মনে হচ্ছিল যে ওনার নাম্বারটি আমার সংগ্রহে আছে, একবার ওনার অসুস্থতার খবর পেয়ে কথা বলার জন্য সেটা জোগাড় করেছিলাম। ক’দিন আগে নাম্বারটি খুঁজে না পেলেও আমি জানতাম যে সেটা বের করা অসম্ভব ছিল না, কিন্তু কী উপায়ে তা করা যায়, সেই অপশনগুলি নিয়ে ভাবতে ভাবতে চিন্তার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়, আমার ভাবনা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তবু, বিষয়টি আমার খেয়ালে ছিল, শীঘ্রই আবার ওনার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতাম। আজ আকস্মিকভাবে ওনার ফোন পেয়ে ওনার উচ্ছ্বাসভরা কন্ঠে আমি শুধু শুনেই যাচ্ছিলাম ওনার কথা, আর মনে মনে ভাবছিলাম, আমি যা চাচ্ছিলাম তাই তো হলো, একেই কি বলে ‘টেলিপ্যাথী’?

এই দোহা স্যার আমার একজন অত্যন্ত সম্মানীয় শিক্ষক। ক্যাডেট কলেজে যাবার পর আমি প্রথম ‘হাউস টিউটর’ হিসেবে পেয়েছিলাম জনাব মোহাম্মদ শামসুদ্দোহাকে। লম্বা, ফর্সা, সৌম্যকান্তি এই শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আমাকে খুব স্নেহ করতেন। একবার কলেজে এক প্রকারের ‘ফ্লু’ মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ে অনেকটা প্যান্ডেমিক আকার ধারণ করে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী আদেশে আকস্মিকভাবে কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়। সবাই যার যার বাড়ী চলে যায়, শুধু আমি এবং আমার মত আক্রান্ত আরো কয়েকজন অভাগা ক্যাডেট ছাড়া। আমরা যখন জ্বরে কাতর হয়ে হাউসে একা পড়ে রয়েছিলাম, দোহা স্যার তখন আমাদের পাশে এসে সান্তনা দিতেন, সাহস যোগাতেন। তিনি আমাদের ইতিহাস পড়াতেন, মাঝে মাঝে ইংরেজী শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে ইংরেজীও পড়াতেন। পরে শুনেছি, ওনার নিয়োগটা ওভাবেই হয়েছিল, অর্থাৎ উনি ছিলেন “Lecturer in History/English”। আমার মনে পড়ে, তাঁর খুব পছন্দের বিষয় ছিলো ঐতিহাসিক Stanly Lane Pool এর কোটেশন। ইতিহাসের খাতায় তার প্রচুর কোটেশন ঐ ছোট ক্লাসেও (৭ম-৮ম) মুখস্থ লিখে আমি ওনার কাছ থেকে খুব ভালো নম্বর পেতাম। এত যুগ পরে সেদিন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে দোহা স্যারের সাথে আমার সাক্ষাত হয়। তিনি আমার এসব স্মৃতির কথা স্পষ্ট মনে রেখেছেন এবং আমার স্ত্রীকেও এর কিছু কিছু বলেছেন। তিনি আমার মা এবং মরহুম পিতা সম্পর্কেও অনেক কথা জিজ্ঞাসা করে তাঁদের কুশল জেনে নিয়েছিলেন।

আমার আত্মজৈবনিক স্মৃতিকথার বই “জীবনের জার্নাল” এ আমি দোহা স্যার সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করেছিলাম মাত্র একটি অনুচ্ছেদে। সেই বইটির একটি কপি আমি আমাদের সে সময়ের ‘হাউস বেয়ারার’ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ ভাইকে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে দিয়েছিলাম, কারণ বইটির একটি অধ্যায়ে আমি তার সম্বন্ধেও আলোচনা করেছিলাম এবং কোন এক পুনর্মিলনি অনুষ্ঠানে তার সাথে আমার তোলা আমাদের উভয়ের বৃ্দ্ধ বয়সের (৬০+) একটি ছবি সংযোজন করেছিলাম। রউফ ভাই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সে বইটি পড়েছিলেন, এবং দোহা স্যারকে এক সময় সাক্ষাতে জানিয়েছিলেন যে আমি ওনার সম্বন্ধেও বইটিতে কিছু কথা লিখেছি। দোহা স্যার তার কাছ থেকে বইটি চেয়ে নেন, সে প্রায় চার পাঁচ বছর আগের কথা। আজ দুপুরে স্যার আমাকে ফোন করে বইটিতে লেখা আমার সেই একটি অনুচ্ছেদের জন্যই অকাতরে প্রশংসা করে যাচ্ছিলেন এবং আমি যে তাঁকে এমন নিবিড়ভাবে এখনো স্মরণে রেখেছি, সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন। আমি যা কিছু লিখেছি, তার সবকিছুই তিনি মুখস্থের মত বলে গেলেন। একটি কথা তিনি বারবার বলে যাচ্ছিলেন, “তোমাদের ‘ভালবাসা’ পেয়ে আমি ধন্য”। কথাটা আমার কানে আটকে র’লো। আমি তাঁর কথা শুনছিলাম এবং নিজেকেই মনে মনে প্রশ্ন করছিলাম, ‘কোনটা বড়, ভালবাসা না সম্মান’? জবাব পেলাম, ভালবাসা না থাকলে সম্মান করা যায় না। কোন কোন সময় ভালবাসা সম্মানের চেয়েও ওজনে ভারী হতে পারে।

স্যার এক নাগাড়ে ৪৫ মিনিট+ কথা বলেছেন। প্রসঙ্গ থেকে প্রসঙ্গান্তরে গিয়েছেন, নিজের জীবনের অনেক কথা শেয়ার করেছেন এবং মাঝে মাঝেই ফিরে এসে বলেছেন যে আমাকে ধন্যবাদ জানাতেই তিনি ফোন করেছেন, তাঁর নিজের কথা বলার জন্য নয়, এবং তিনি মনে করেন যে তাঁর আরো আগে ফোন করা উচিত ছিল। আমার ফোন নাম্বারটি সংগ্রহ করতেই তাঁর এতটা সময় লেগেছে। তাঁর শরীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানালেন, তাঁকে দৈনিক ১৪টা করে ঔষধ খেতে হয়। আমারই ব্যাচমেট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডাক্তার) মোঃ ফজলুল হক (বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ‘চীফ ফিজিশিয়ান) এর ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি জানালেন যে ফজলু তাকে অনেক যত্ন করে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে এবং তার চিকিৎসায় তিনি খুবই সন্তুষ্ট। কয়েক বছর আগে তার হার্টেও স্টেন্টিং করতে হয়েছে, তবে তিনি সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন তার আরথ্রাইটিস (বাত) রোগের কারণে। তার আংগুলে এবং শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে ভীষণ ব্যথা হয়। অনেক ক’টা আংগুল বাঁকা হয়ে গেছে। ভারতে গিয়েও তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন, কিন্তু দেশের এবং ভারতের উভয় চিকিৎসকগণ তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন যে এ জীবনে তিনি এ বেদনার পুরোপুরি উপশম আর কখনোই পাবেন না। খুব বেশি কষ্ট হলে হাই ডোজের ব্যথানাশক ঔষধ খেতে হবে, যা আবার কিডনীর জন্য ভয়ানক বিপজ্জনক। ফজলু তাকে বলেছে, ‘স্যার, খুব সাবধানে চলাফেরা করবেন। একবার পড়ে গেলে কিন্তু আপনি আর উঠতে পারবেন না, কারণ আপনার হাড্ডিগুলো ভঙ্গুর হয়ে গেছে। সামান্য আঘাতেই ওগুলো গুড়ো গুড়ো হয়ে যাবে’।

দোহা স্যার অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। সেই আমলে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বোর্ডে (তখন সমগ্র ঈস্ট পাকিস্তান মিলে একটাই শিক্ষা বোর্ড ছিল) মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন। এমসিসি তে আসার আগে তিনি দুটো সরকারী কলেজে অধ্যাপনা করেছেন, প্রথমে খুলনার বিএল কলেজ এবং পরে আরেকটা সরকারী কলেজে, যার নামটা এখন আর স্মরণ করতে পারছি না। ১৯৬৬ সালে তিনি এমসিসি তে ইতিহাস/ইংরেজীর প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তার উচ্চমানের একাডেমিক রেজাল্ট দেখে ইন্টারভিউ এর সময় এমসিসি’র প্রথম অধ্যক্ষ মাইকেল উইলিয়াম পিট (ব্রিটিশ কাউন্সিলের তৎকালীন একটা শিক্ষা কর্মসূচীর অধীনে আগত) তাঁকে বারে বারে প্রশ্ন করে নিশ্চিত হতে চেয়েছিলেন যে নিয়োগ পেলে তিনি প্রভাষক হিসেবে চাকুরী অব্যাহত রাখবেন, নাকি ক্যাডার সার্ভিসে সুযোগ পেলে সেখানে চলে যাবেন। তিনি তাকে কথা দিয়েছিলেন যে তিনি থাকবেন। পরে অবশ্য তিনি ঠিকই ইপিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, কিন্তু অঙ্গীকার অনুযায়ী তিনি ক্যাডেট কলেজেই রয়ে যান। তবে ইংরেজী ভাষার উপর তার দখলের প্রমাণ পেয়ে ব্রিটিশ প্রিন্সিপাল তাকে উভয় বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন এবং তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হয়। তিনি একটানা ১৫ বছর এমসিসি তে চাকুরী করে এসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে বদলী হন। সেখান থেকে ভাইস প্রিন্সিপাল পদে পদোন্নতি পেয়ে বরিশাল ক্যাডেট কলেজে নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ সালে তিনি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন এবং সেখান থেকেই ১৯৯৭ সালে অবসরে চলে যান। ক্যাডেট কলেজের চাকুরী শেষে তিনি কিছুকাল বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট মিলেনিয়াম ইংলিশ ভার্সন স্কুলের প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অবসরে যাবার সময় তিনি মাসিক পেনশন পেতেন মাত্র ছয় হাজার টাকা। তিনি জানালেন, গত ২৪ বছরে সেটা ‘বাড়তে বাড়তে অনেক বেড়েছে’, কিন্তু এখনো সেটা বিশ হাজারের নীচে রয়ে গেছে।

কথা প্রসঙ্গে স্যার আমাকে জানালেন যে তিনি একটি আত্মজীবনী লিখছেন। তার এ কথা শুনে আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে বইটি কোথায় পাওয়া যাবে তা জিজ্ঞেস করলাম। উনি জানালেন যে বইটি এখনো ছাপানো হয় নাই। পান্ডুলিপি সম্পাদনা চলছে। কলেবরে ১০০ পৃষ্ঠার কিছু কম হবে, ইংরেজীতে লিখা। আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওনার বই এর প্রুফ-রীডিং করে দিতে চাইলাম। এ জন্যে (তার যদি আপত্তি না থাকে) পান্ডুলিপির একটি সফট কপি আমাকে ইমেইল করে পাঠাতে বললাম। উনি জানালেন যে উনি কম্পিউটার লিটারেট নন। তাই বাঁকা হয়ে যাওয়া আংগুল দিয়ে তিনি কষ্ট করে হাতেই লিখে চলেছেন। এমনকি তার কোন ইমেইল ঠিকানাও নেই। অন-পেমেন্টে কাউকে দিয়ে উনি পান্ডুলিপি কম্পিউটারে প্রিন্ট করে নিয়ে এক কপি আমাকে পাঠাবেন বলে জানালেন। উনি একটানা কথা বলে যাচ্ছিলেন, আমি ন্যূনতম ইন্টেরাপশন করে মন দিয়ে তার কথা শুনে যাচ্ছিলাম। আমি ইতোমধ্যে বেশ ভাল করেই বুঝে গেছি, একটা বয়সে এসে মানুষ অনেক কথা বলতে চায়, স্মৃতিকথা লিখতে ও বলতে চায়, নিজ জীবনের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করতে চায়, কিন্তু ততদিনে সে শ্রোতাশূণ্য হয়ে যায়। তার কথা শোনার মত কেউ কাছে থাকে না। আমি ওনার সব কথা শুনতে আগ্রহী। কারণ, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, অনেক ক্ষেত্রে পরিণত বয়সে মানুষের হঠাৎ করে কথা বলার এ অদম্য ইচ্ছেটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে তার কথা ফুরিয়ে আসার আগাম সংকেত হিসেবে। আস্তে আস্তে তাকে ডিমেনশিয়া ধরে ফেলে, তার সারা জীবনের স্বগতোক্তিমূলক কথাগুলোর অনেক কাটাকুটি করা রাফ খাতাটা এক সময় হঠাৎ করে ‘সাদা কাগজ’ এ পরিণত হয়ে যায়। তখন আর তার বলার কিছু থাকে না, তার সব কথা স্মৃতিভ্রমের নিকষ কালো অতল গহ্বরে চাপা পড়ে যায়। এ জন্যেই আমি স্যারকে খুব তাগিদ দিলাম, তিনি যেন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তাঁর এই বই লেখার কাজটি শেষ করেন। গত কয়েকমাসে আমরা ইয়াকুব স্যারকে হারিয়েছি, তাঁর স্ত্রীকে হারিয়েছি এবং নূরুল ইসলাম স্যারকে হারিয়েছি। তার আগে হারিয়েছি মহসীন স্যারকে, আব্দুল্লাহ–আল-আমীন স্যারকে, নাজমুল হক স্যারকে, তারও আগে সাদেক স্যারকে। তাদের কোন কথা তারা আমাকে বলে যান নি। ইনি বলেছেন, আরো বলতে চেয়েছেন। তাই তাঁর কথা আমাকে শুনতেই হবে, সম্ভব হলে শোনাতেও হবে।


আমাদের দোহা স্যার, ছবিটা ষাটের দশকের শেষের দিকে তোলা।


ঢাকা
১২ এপিল ২০২১
শব্দ সংখ্যাঃ ১৪৫০

মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫৬

জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার উপস্থাপন!

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, প্রশংসায় প্রাণিত।

২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:০৮

শায়মা বলেছেন: দোহা স্যারের কথা জেনে ভালো লাগলো।
যদিও জীবনের এই প্রান্তে এসে উনি হয়ত অনেক ভালো নেই তবে তার সারাজীবনের অর্জন ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা এটাও কম না.....

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "তবে তার সারাজীবনের অর্জন ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা এটাও কম না....." - জ্বী, বরং বলা যায় এটাই তার আসল ঐশ্বর্য। মানুষের ভালবাসা আর শ্রদ্ধা অর্জনের চেয়ে আর কোন বড় সফলতা মানুষের জীবনে হতে পারে না।

সুন্দর মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৩৪

মা.হাসান বলেছেন: ‘কোনটা বড়, ভালবাসা না সম্মান’? জবাব পেলাম, ভালবাসা না থাকলে সম্মান করা যায় না। কোন কোন সময় ভালবাসা সম্মানের চেয়েও ওজনে ভারী হতে পারে।

ভালোবাসা পাওয়া এবং দিতে জানা, দুটোর জন্যই যোগ্যতা দরকার হয়।
Lecturer in History/English - অফিসিয়ালি এরকম অ্যাপয়েন্ট পাওয়া খুব রেয়ার ঘটনা বলে মনে হয়। অন্ততঃ আমি এরকম আর শুনি নি। উনি দুর্দান্ত মেধাবি না হলে এরকমটা হতো না বলে মনে করি।

আপনার অন্য কোনো লেখায় সম্ভবত পড়েছিলাম (কোথায় এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না) আপনি ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে একজন নেটিভ স্পিকারকে পেয়েছিলেন।

আপনার শিক্ষকভাগ্যের উপর আমার ঈর্ষা হয়।

কখন একজন শিক্ষক নিজেকে সার্থক মনে করেন? একজন পুরাতন ছাত্র তাকে দেখে হাতের সিগারেট ফেলে দাড়িয়ে সালাম দিলে? সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলে ? আমার যেনো মনে হয় একজন শিক্ষকের শিক্ষক জীবন সার্থক হয় যখন তিনি মানবিক অনুভুতি সম্পন্ন একজন ছাত্র রেখে যেতে পারেন।

আপনার শিক্ষকরা শিক্ষক হিসেবে খুব সফল ছিলেন বলে মনে করি। যারা বেঁচে আছেন ওনাদের হায়াতুন তৈয়্যেবার জন্য দোয়া করি। যারা চলে গেছেন তাদের জন্য মাগফেরাতের দোয়া এবং আশা করি।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: "Lecturer in History/English - অফিসিয়ালি এরকম অ্যাপয়েন্ট পাওয়া খুব রেয়ার ঘটনা বলে মনে হয়। অন্ততঃ আমি এরকম আর শুনি নি। উনি দুর্দান্ত মেধাবি না হলে এরকমটা হতো না বলে মনে করি।" - সাধারণ প্রক্রিয়ায় অবশ্যই এরকমটা হবার কথা নয়, তবে আপনি ঠিকই অনুমান করেছেন যে অসাধারণ মেধাবী না হলে তার এমন নিয়োগ পাবার কথা ছিল না। ঊনি ছিলেন ইতিহাসে অনার্স মাস্টার্স করা, কিন্তু ওনার ইন্টারভিউ নেয়ার সময় মিস্টার পিট ওনার ইংরেজীতে অসাধারণ দখল থাকার বিষয়টি লক্ষ্য করেন। ইংরেজীতে দু'জন শিক্ষক নেয়ার কথা ছিল, তার মধ্যে একজন এসেছিলেন সুদূর ইংল্যান্ড থেকে। তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন, অক্সফোর্ড গ্রাজুয়েট। বাংলাদেশে আসার আগে উনি ইংল্যান্ডের সেকন্ডারী স্কুলে কিছুকাল শিক্ষকতা করেছিলেন। ইংরেজী শিক্ষক হিসেবে আবেদনকারী কাউকে যোগ্য না পেয়ে প্রিন্সিপাল অগত্যা দোহা স্যারকেই ইতিহাস ও ইংরেজী, উভয় বিষয়ের জন্য নিয়োগ দিয়েছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে। এ বিবেচনার পেছনে আরেকটা কারণ থাকতে পারে। সে আমলে ৯০% ছাত্র বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চাইতো। প্রতি ক্লাসে ৫৫ জন ছাত্রের মধ্যে মাত্র দু'চারজন মানবিক বিভাগে পড়তো। এতে মানবিক বিভাগের শিক্ষকগণ আন্ডার ইউটিলাজড থাকতেন। মানবিক বিভাগের একজন শিক্ষককে ইংরেজী শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে যোগ্য পাওয়া যাওয়ায় ওনরারা হয়তো বাজেটেরও কিছু সাশ্রয় করেছিলেন। এটা নিছক আমার ধারণা। :)

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার অন্য কোনো লেখায় সম্ভবত পড়েছিলাম (কোথায় এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না) আপনি ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে একজন নেটিভ স্পিকারকে পেয়েছিলেন। - জ্বী, আপনি সেটা দেখেছিলেন এখানে আমার কথা -২৪ এবং এখানেঃ আমার কথা -২৫

"যারা বেঁচে আছেন ওনাদের হায়াতুন তৈয়্যেবার জন্য দোয়া করি। যারা চলে গেছেন তাদের জন্য মাগফেরাতের দোয়া এবং আশা করি" - অনেক ধন্যবাদ, আপনার দোয়া এবং শুভকামনার জন্য।

২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার এ পোস্টটাকে নীরবে "প্রিয়"তে তুলে নেয়ায় অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা!

৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: দোহা স্যারের জন্য শ্রদ্ধা। তাঁর আত্মজীবনী আপনি ব্লগে ধারাবাহিকভাবে দিলে আমাদের ভালো লাগতো।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: "তাঁর আত্মজীবনী আপনি ব্লগে ধারাবাহিকভাবে দিলে আমাদের ভালো লাগতো" - এতে তাঁর অনুমতি লাগবে। আপনি যেহেতু আগ্রহ দেখালেন, আমি চেষ্টা করবো তাঁর অনুমতি নিয়ে রাখতে। অনুমতি পাওয়া গেলে আমি চেষ্টা করে দেখবো।

মন্তব্য এবং আগ্রহ প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০৬

শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার- আপনার প্রতি ভালবাসা বেড়ে গেল আরো খানিকটা।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: এমন একটি মনছোঁয়া মন্তব্যের জন্য কী বলে যে ধন্যবাদ দেই!
অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম, অশেষ ধন্যবাদ।

৬| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:২৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


রাজীব নুর বলেছেন: দোহা স্যারের জন্য শ্রদ্ধা। তাঁর আত্মজীবনী আপনি ব্লগে ধারাবাহিকভাবে দিলে আমাদের ভালো লাগতো।

This is my request to you Sir.

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৪৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা দেখি, কী করা যায় এ ব্যাপারে। ৪ নং প্রতিমন্তব্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছি।
আগ্রহ প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আপনি কোন ক্যাডেট কলেজে পড়তেন?
এমএমসি মানে কি ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজ?
সেটাই বা হয় কি করে?
ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজ তো মেয়েদের জন্য।
নাকি মির্জাপুর ( টাঙ্গাইল) ক্যাডেট কলেজ?
এটাই হবে। এখান থেকে এক সময় বোর্ডের সেরা ছাত্ররা বের হতো।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: "এমএমসি মানে কি ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজ?" - আমি তো পোস্টের কোথাও 'এমএমসি' লিখেছি বলে চোখে পড়লো না। আমি লিখেছি 'এমসিসি', যা আমাদের সময় ছিল 'মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ'। ১৯৭৪-৭৫ এর দিকে কলেজটির নাম পরিবর্তন করে করা হয় 'মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ', কিন্তু নামের আদ্যোক্ষরগুলো বোধগম্য কারণে একই রয়ে যায়।

৮| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:১৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার দোহা স্যারের কথা পড়ে আমার স্যারদের কথা মনে পড়ে গেলো। আমার মাধ্যমিক পর্যায়ের বায়োলজি পড়াতেন আসাদ স্যার, এই স্যারকে নিয়ে আমার অনেক কথা রয়েছে। একবার ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে পাশের মাঠে চলতে থাকা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে আম্পায়ার হলাম আমি আর আবু সাইদ। পরদিন আসাদ স্যার ক্লাশে ঢুকেই বললেন- আম্পায়ার সাহেবরা কান ধরে দাঁড়ান....

অনেকদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। হঠাৎ একদিন একটা চিঠি আসলো, খুলে দেখি সম্বোধনে লেখা- আম্পায়ার সাহেব...
আসাদ স্যার কিভাবে কিভাবে যেনো আমার ঠিকানা যোগাড় করে চিঠি পাঠিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন।

জীবনে চলার পথে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে যাত্রাপথকে মসৃণ করেছেন। আমরা সেই মসৃণ পথ ধরে এগিয়ে যাই এবং সে পথ পার হয়ে গেলে সেই মানুষটাকে ভুলে যাই...। অনেকবার মনে হয়েছে এবার যশোর গেলে সব শিক্ষকদের সাথে দেখা করে আসবো.... হলো আর কই!!

২০০৬ এর দিকে আমি অ্যাসোসিয়েশন অব কুমিল্লা ওল্ড ক্যাডেটস এর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের স্মরণিকা প্রস্তুতের কাজের সাথে জড়িত হয়েছিলাম বাই দ্য বাই। সেখানে কুমিল্লা ক্যাডেটের একজন টিচারের কথা অনেকেই লিখেছিলেন (আমার নাম মনে পড়ছে না), যিনি পরবর্তীতে রংপুর ক্যাডেট কলেজে বদলী হয়েছিলেন। ওই লেখাগুলো এবং আপনার আত্মজীবনীতে যে ধরনের অ্যাপ্রিসিয়েশন উঠে এসেছে, সেটাই শিক্ষকের জন্য সবচে বড় পাওয়া বলেই আমার মনে হয়। তখনই সার্থকতা আসে।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: 'আসাদ স্যার' এর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা! আপন গুণে তিনি আপনার হৃদয়ে ভাস্বর হয়ে আছেন।

"জীবনে চলার পথে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে যাত্রাপথকে মসৃণ করেছেন। আমরা সেই মসৃণ পথ ধরে এগিয়ে যাই এবং সে পথ পার হয়ে গেলে সেই মানুষটাকে ভুলে যাই..." - সত্যিই, আমাদের আজীবন সাফল্যের পেছনে কত জনের অকাতর অবদান রয়ে গেছে! আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন সকলের মঙ্গল করুন!

"ওই লেখাগুলো এবং আপনার আত্মজীবনীতে যে ধরনের অ্যাপ্রিসিয়েশন উঠে এসেছে, সেটাই শিক্ষকের জন্য সবচে বড় পাওয়া বলেই আমার মনে হয়। তখনই সার্থকতা আসে" - অনেক ধন্যবাদ, এ উদার মূল্যায়নের জন্য।

মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা---

৯| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অসাধারণ । স্যারের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা ।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, লেখার প্রশংসা করার জন্য এবং আমার সম্মানীয় শিক্ষকের প্রতি আপনার 'শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা' জানানোর জন্য।

১০| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আজকাল কেউ কারো কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে চায় না। আপনি শুনেছেন জেনে ভালো লাগলো। আগেকার শিক্ষকবৃন্দ নিজেরা যেমন জ্ঞানী ছিলেন, তেমনি জ্ঞানের কদর করাও জানতেন। উনাদের শিক্ষকতার উদ্দেশ্য ছিল আন্তরিকতা আর ডেডিকেশানের সাথে বিশুদ্ধ শিক্ষাদান। কোন দেনা-পাওনার লেশমাত্র থাকতো না এর মধ্যে।

তবে যুগ পাল্টাচ্ছে খায়রুল ভাই। এখনকার শিক্ষকতা পেশায় জড়িতদের বেশীরভাগই যেমন অতি-পেশাদারী মনোভাবাপন্ন, তেমনি অনেকেই আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে গালাগালি করে, নিজেকে বিশাল আকারের মানুষ হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা চালায়। এই বিবর্তনে আরো সামনে কি হতে পারে বলে আপনার মনে হয়? একটা কিউ দিই..........গুন্ডা দিয়ে ধরে এনে হয়তো জোর করে পায়ে ধরে সালাম করাবে!! কারন, এমনিতে কেউ এই প্রজাতিটাকে খুব একটা সন্মান দেখাবে না অদূঢ় ভবিষ্যতে তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে!

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আসল কথা হচ্ছে নীতি নৈতিকতা। এটা গুরু শিষ্য উভয়ের প্রতি প্রযোজ্য। যে বিবর্তনে নীতি নৈতিকতার অবক্ষয় হবে, তা সমাজের জন্য শুভ হতে পারে না।

১১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের সুন্দর উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, পুনঃমন্তব্যের জন্য।

১২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৪:০৭

সোহানী বলেছেন: দোহা স্যারের কথা আপনার লিখায় পড়েছিলাম, আমার মনে আছে। আজ অনেকদিন পর নিজের প্রিয় কোন শিক্ষকের সাথে কথা বলার সুযোগ অনেক কিছু। কিন্তু তারপরও মা হাসান ভাইয়ের মতো বলি, শ্রদ্ধা দুপক্ষ থেকেই হয়। একজন যেমন তার প্রিয় ছাত্রকে মনে রাখে তেমনি ছাত্রটিও সে বৃদ্ধ শিক্ষকের কথাগুলো শোনা ও তার জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করে। তাই উনার সাথে আপনাকেও ধন্যবাদ দিবো।

আমি হয়তো বলেছিলাম, আমার এক শিক্ষক আমার বাবারও শিক্ষক ছিলেন। ক্লাসে শুধু বাবার নাম বলার সাথে সাথে বাবার পুরো ইতিহাস বলে উঠলেন।্এবং তার পরদিনই আমাদের বাসায় চলে আসলেন। বাবা উনার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতেই উনি জড়িয়ে ধরলেন। আমি খুব ছোট ছিলাম কিন্তু খুব অবাক হয়ে বাবার শিশুসুলভ আচরন দেখছিলাম স্যারের সাথে।

অনেক ভালো লাগলো। আপনার লিখা আমাকে অনেক কিছু স্মরণ করিয়ে দেয়।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: এত সুন্দর একটা মন্তব্য রেখে গেলেন, পদ্ম পুকুর এর মত আমিও মুগ্ধ!
অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা---

১৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৬:২৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:




এমন স্যারদের জন্য গভীর শ্রদ্ধা।
আপনার জন্য শুভ কামনা। ভালো থাকুন।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আপনার জন্যেও শুভকামনা----

১৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৩১

পদ্মপুকুর বলেছেন: সোহানী আপার মন্তব্যে ভালোলাগা।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: "সোহানী আপার মন্তব্যে ভালোলাগা" - আমারও।

১৫| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৩

ওমেরা বলেছেন: আপনার শিক্ষকের কথা শুনে খুব ভালো লাগলো ।

২০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ ভাল লাগার কথাটি জেনেও আমার খুব ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ।

১৬| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৫০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আপনার সাথে স্যারের যোগাযোগ ভাললাগলো।

২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, লেখাটা পড়ার জন্য। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।

১৭| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২৩

আখেনাটেন বলেছেন: আপনার এ ধরনের লেখাগুলো ব্লগের সম্পদ। মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা বাড়িয়ে তোলে। নিজেও একইভাবে নিজের চারপাশের মানুষদের নিয়ে ভাবতে উৎসাহ যোগায়।

স্যারদের কথা, আচরণ, ব্যবহার, সর্বোপরি উনাদের ভালোত্বটুকু এবং শিষ্যদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতায় ছাত্রদের আজীবন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করে রাখে। বাবা-মার পরেই শিক্ষকরাই মনে হয় সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী একজন মানুষের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে। কিন্তু এখনকার এই মহান পেশার বেশিরভাগ শিক্ষকের আচরণ ও কর্মকে পর্যালোচনা করলে ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক দিকই বেশি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। ফলেই সমাজের সকল সেক্টরেই 'সু' কে প্রতিস্থাপিত করে 'কু' এর প্রাদুর্ভাব যাচ্ছে তাই ভাবে বেড়ে চলেছে। সরকারের উচিত এটলিস্ট শিক্ষাখাতকে সকল প্রকার রাহুমুক্ত করা।

দোহা স্যারের মতো স্যারেরা এখন বিরল হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। স্কুলে পড়তে আমার এক স্যার ছিল 'রাজ্জাক স্যার'। এর আগে ছিলেন 'ফজল স্যার'। কত ছাত্রদের প্রকৃত গুরু, তার ইয়াত্তা নেই। নিজেরা খেয়ে না খেয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন কিংবা ভাঙাচুরা স্কুলকে নামি স্কুলে পরিণত করেছেন। কথা, কাজের মাধ্যমে এলাকায় কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন।

দেশ বিদেশ থেকে দেশের বাড়িতে বেড়াতে গেলে স্যারদের সাথে সাক্ষাৎ না করলে অপূর্ণতা থেকে যায় উনাদের ছাত্রদের।



২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার এ ধরনের লেখাগুলো ব্লগের সম্পদ" - অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা এমন উদার মূল্যায়নের জন্য।
সরকারের উচিত এটলিস্ট শিক্ষাখাতকে সকল প্রকার রাহুমুক্ত করা। - আমি সম্পূর্ণ একমত আপনার এ কথাটার সাথে।
আপনার শিক্ষক 'রাজ্জাক স্যার' এবং 'ফজল স্যার' এর স্মৃতিচারণের জন্য ধন্যবাদ।

১৮| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৫৬

করুণাধারা বলেছেন: দোহা স্যারদের মতো শিক্ষক আজকের দিনে দেখা যায় না, তারা কেবল শিক্ষকতার মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। এমন একজন মানুষের চিন্তা চেতনার সাথে পরিচিত হবার ইচ্ছা রইল।

শুধু একটা সমস্যা, যে দেশে স্পোকেন ইংলিশের বই বেস্ট সেলার হয়, সেখানে এই বইটির প্রকৃত কদর কজন করতে পারবে! :(

শুভকামনা রইল দোহা স্যারের জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে, একজন শ্রদ্ধেয় মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য।

২১ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৩৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: "তারা কেবল শিক্ষকতার মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন" - জ্বী, উনি ঠিক এ ধরনেরই একজন মানুষ ছিলেন। ওনার মত আমাদের আরেকজন তৎকালীন শিক্ষক জনাব ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী জনপ্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেছিলেন এবং মাননীয় সচিব হিসেবে অবসর নিয়ে পরে আবার সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) এর কর্ণধার হয়েছিলেন। দোহা স্যার নির্বাচিত হয়েও যোগদান করেন নি, কারণ শিক্ষকতাকেই তিনি পছন্দনীয় পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন এবং সেটাকেই শেষ পর্যন্ত আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন।

বরাবরের মত আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্লাসে অনুপ্রাণিত।

১৯| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৩২

মোঃমোজাম হক বলেছেন: স্যার তার প্রিয় ছাত্রকে কিভাবে খুঁজে পেল!
উনার বই কি প্রকাশিত হয়েছে? আমাদের জন্য বাংলা ধারাবাহিক দিলে সামুর ব্লগাররা উপকৃত হবে।

২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের এসোসিয়েশনের ডাইরেক্টরি থেকে উনি আমার টেলিফোন নাম্বারটা সংগ্রহ করে আমাকে ফোন দিয়েছিলেন।
ওনার বই এখনো প্রকাশিত হয়নি, তবে এ বছরেই প্রকাশিত হবে বলে আশা করা যায়। প্রকাশিত হলে, চেষ্টা করবো বঙ্গানুবাদ করতে, নইলে অন্ততঃ একটা রিভিউ লিখতে।
অনেক দিন পরে আমার কোন পোস্টে এলেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২০| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৩৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। একজন শিক্ষকই পারেন শিক্ষার্থীর জীবনে বাবা-মায়ের মতো শ্রদ্ধার স্থানে আসীন হতে। আপনি জানেন জেনেও বলছি, আমাদের সবারই মধ্যে একটা মানবিক সত্তা আছে যেটা কারো কারো ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় বটে। পারিবারিক পরিবেশেও তার বিকাশ না ঘটলে একজন শিক্ষকই ছাত্রের এই মূল্যবান মানবিক সত্তার বিকাশে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন।আর তখনই ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক শুধুমাত্র শ্রেণিকক্ষের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ না সুখস্মৃতি হয়ে বয়ে যায় আজীবন। আপনার ক্ষেত্রে তাই বহু শিক্ষকের মধ্যেও দোহা স্যাররা আজো সেরকমই শ্রদ্ধার আসনে আছেন।
জীবন সায়াহ্নে এসে শিশুসুলভ বিহ্বলতায় তাই দোহা স্যার সামান্য ধন্যবাদ দিতেই পঁয়তাল্লিশ মিনিট পার করেও এতটুকু ক্লান্ত হননা। সত্যিই তো সমাজে যে ওনাদের কথাবলার মানুষের সংখ্যা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে।

মানবিক একটি পোস্টে একদিকে ছাত্র-শিক্ষকের আবেগাপ্লুত অভিব্যক্তি ও অন্যদিকে বরিষ্ঠ মানুষের জগৎটা ছোট হতে হতে অতিক্ষুদ্রে পরিনত হবার এক কঠিন বাস্তবতার পরিচয় পেলাম।বয়স বাড়ার সাথে সাথে চেনাজানার জগতের সম্পর্ক বোধহয় ব্যস্তানুপাতিক।
সুস্থ্য ও সবল মনে দোহা স্যার আত্মজীবনী সম্পূর্ণ করুন- কামনা করি।
শুভেচ্ছা স্যার আপনাকেও।


২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "জীবন সায়াহ্নে এসে শিশুসুলভ বিহ্বলতায় তাই দোহা স্যার সামান্য ধন্যবাদ দিতেই পঁয়তাল্লিশ মিনিট পার করেও এতটুকু ক্লান্ত হননা। সত্যিই তো সমাজে যে ওনাদের কথাবলার মানুষের সংখ্যা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে" - আপনার এ মর্মস্পর্শী পর্যবেক্ষণ আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়ে গেল। কথাটা সর্বাংশে সত্য বলেছেন; এরকমই হয়েছে, হচ্ছে।

চমৎকার, অন্তর্ভেদী পর্যবেক্ষণ এবং সুবিবেচিত মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। প্লাসে অনুপ্রাণিত।

২১| ১৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৩২

অদ্ভুত_আমি বলেছেন: দোহা স্যার এবং তার ছাত্র দুই জনের জন্য অসীম শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর দোয়া। যদিও তার মতো আন্তরিক ও সু-শিক্ষক পাওয়া এখন ভাগ্যের বিষয় । তাই মা. হাসান ভাইয়ের মতো বলি আপনার শিক্ষকভাগ্যের উপর আমারও অনেক ঈর্ষা হয়। আপনার এবং আপনার সকল শিক্ষকদের আল্লাহতায়ালা নেক হায়াত ও সুস্বাস্থ্য দান করুক – এই কামনা করছি ।

আপনার ব্লগের সাথে আমার ভালো লাগা শুরু হয় আপনার “আমার কথা” সিরিজ দিয়ে। আপনার এই সিরিজটিকে আমি এখনো অনেক মিস করি, যা বেশ অনেক দিন পূর্বে কোন এক মন্তব্যে জানিয়েছিলাম। এই ব্লগগুলি পড়ে অপরিচিত আপনিও হয়ে উঠেছেন আমাদের অতি পরিচিত, অতি শ্রদ্ধার এক আপনজন। আপনার আত্মজৈবনিক এই লেখাগুলি আসলেই এই ব্লগের অমূল্য সম্পদ।

আপনার “জীবনের জার্নাল” কিভাবে সংগ্রহ করা যাবে ?

ঈদ মোবারক ।

১৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: সদয় মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আপনার প্রশংসা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে গেল!

আপনি যদি দেশে থাকেন, তবে আপনার ঠিকানা জানালে আমি বইটা আপনাকে কুরিয়ারে পাঠাতে পারব। বইটির কোন কপি এখন প্রকাশকের হাতে থাকার কথা নয়।

২২| ১৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮

অদ্ভুত_আমি বলেছেন: আপনার প্রতি-মন্তব্য দেখে অনেক ভালো লাগলো, আপনি আমার জন্য এই কষ্টটুকু করবেন জেনে অনেক প্রীত হলাম, এ্টাই আমার এবারের ঈদের উপহার । আমার ই-মেইল আইডি [email protected] । আপনার ই-মেইল আইডি পেলে আমি যোগাযোগ করতাম। ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।

১৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৩০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে ঐ ঠিকানায় মেইল করেছি। সময় করে দেখে নেবেন।

২৩| ১৯ শে জুন, ২০২১ রাত ১২:৩২

ঢুকিচেপা বলেছেন: “কারণ, কোন সূত্র ছাড়াই গত দু’সপ্তাহে উনি কয়েকবার আমার মনে উদিত হয়েছিলেন।”
হাজার হাজার ছাত্রের মধ্যে উনি হয়তো আলাদাভাবে আপনাকে মনে রেখেছেন এবং শেষ পর্যন্ত টেলিপ্যাথীর মাধ্যমে আপনাদের যোগাযোগ হয়ে গেল।
বইটা হয়ে গেলে যদি পোস্ট করেন তাহলে পড়া যাবে।

১৯ শে জুন, ২০২১ সকাল ৯:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "বইটা হয়ে গেলে যদি পোস্ট করেন তাহলে পড়া যাবে" - আচ্ছা, অবশ্যই। তবে সম্প্রতি উনি পড়ে গিয়ে বেশ খারাপভাবে আহত হয়েছেন। কাজেই বই এর কাজ আপাততঃ বন্ধ রয়েছে। অনুমান করি, বই প্রকাশে সময় লাগবে।

অনেক ধন্যবাদ, বেশ একটু আগের লেখা পড়ে মন্তব্য এবং প্লাস দিয়ে যাবার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.