নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দর্শনঃ জীবন চক্র

১০ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৫৮

জগতের সকল প্রজাতির শিশুদের মধ্যে জন্মের পর পরই একমাত্র মানবশিশুই বোধকরি কান্নার মাধ্যমে তার আগমনী বার্তা ঘোষণা করে। এ ধরাধামে তার কন্ঠে প্রথম উচ্চারিত ধ্বনিটিই হয় কান্নার, যা সারাটা জীবন ধরে তার কাছে স্বল্প-দীর্ঘ বিরতিসহ ফিরে ফিরে আসে, তবে সবসময় কন্ঠে নয়; কখনো শুধু চোখে কান্নার ঢেউ নিঃশব্দে স্ফীত হতে থাকে, কখনো নির্বাক মনের গহীনে গুমরে ওঠে। শিশু যত বড় হতে থাকে, কান্না ততই তার কন্ঠ থেকে বিদায় নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় খুঁজতে থাকে। সশব্দ থেকে নিঃশব্দ হতে থাকে।

ক্রমান্বয়ে মা বাবা, ভাই বোন, পরিবারের অন্যান্যদের সাথে শিশুটির সখ্য গড়ে ওঠে। সে নির্ভয়ে তাদেরকে বিশ্বাস করতে শেখে, তাদের কোলে লাফ দিয়ে চড়ে স্বস্তি ও আশ্রয় খুঁজে পায়, তাদেরকে তার নিজের ভাষায় এটা ওটা বলে তৃপ্তি পায়। পাড়ার আশে পাশের সমবয়স্কদের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়, সে খেলাধুলা করতে শেখে। সে ভাব আদান প্রদান করতে শেখে, সেই সাথে শেয়ারিং কেয়ারিং করতেও শেখে, প্রথমে পরিবার থেকে, পরে বন্ধুবলয় থেকে। সে ধীরে ধীরে জগত সংসারের মায়ার বাঁধনে আটকা পড়তে থাকে।

এরপর সে জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসেবে নানা রকমের দুঃখ-ব্যথা, ঘাত-প্রতিঘাতের সাথে পরিচিত হতে শুরু করে। এসব কখনো তাকে ভাবায়, কখনো কাঁদায়, কখনো একটি গোপন বেষ্টনীর ভেতর নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করে সেখানে তার ব্যথা বেদনাগুলোকে লুকিয়ে রাখতে শেখায়। তাকে এক সময় শিক্ষা অথবা কর্মোপলক্ষে পরিবার ত্যাগ করে ঘরের বাইরে যেতে হয়। সে ঘরের বাইরে অন্য কোন এক ঘরের সাথে পরিচিত হয়, ঘর সামলানোর নানামুখি চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবগত হয়, বিশ্ব ধীরে ধীরে তার সামনে অবারিত হতে থাকে। এ ছাড়া কন্যা শিশুদেরকে এক সময় বড় হয়ে বিবাহোত্তর দায়িত্ব পালনের জন্য স্বামীর ঘরে গিয়ে নতুন এক ঘর সামলাতে হয়।

শিক্ষার জন্য ঘর ছাড়ার পর সে বন্ধুত্বের ভালমন্দ চিনতে শেখে, কখনো আপনা আপনিই, আবার কখনো হিসেব করে তা নির্ণয় করতে শেখে। একটা সময় আসে, যখন সব বন্ধুদেরকে তার কাছে ভাল লাগে না, তাদের সবার সঙ্গ কাম্য হয় না। সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শেখে অনেকের থেকে অল্পের মাঝে। তার গোপন অনুভবের কথাগুলো কারো সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য সে উন্মাতাল হতে থাকে, সে একজন সোলমেট (soulmate) খুঁজতে থাকে। ভাগ্যবান হলে পায়, তা না হলে নয়। না পেলে সে শান্ত সরোবরে ভাসমান কাগজের নৌকোর মত এক সময় ডুবে যায়, নয়তো চারটি তীরের যে কোন একটিতে এসে, কিংবা সরোবারটি বৃত্তাকার হলে যে কোন একটি স্থানে এসে সেখানে জমে থাকা ঘাস, ঝরাপাতা ইত্যাদির সাথে আটকে থাকে।

ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখতে দেখতে সে একসময় যুগলবন্দী হয়। আবারো ভাগ্যবান হলে এ বাঁধন আজীবন টিকে যায়, কিন্তু কোনক্রমেই ঝড় ঝন্ঝা ব্যতীত নয়। জীবন সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে এ বাঁধন কখনো কখনো ছিন্ন হবার উপক্রম হলেও হতে পারে, কিন্তু উভয়ের মাঝে ভাল বোঝাপড়া এবং সহানুভূতি থাকলে তা টিকে যায়, তরঙ্গায়িত হতে হতে এক সময় থীতু হয়। আর ভাগ্য ভাল না হলে ব্রেকাপের (ছাড়াছাড়ি) অভিশপ্ত বিষবাষ্প তার জীবনকে তমসাচ্ছন্ন করে রাখে, দুর্ভাগ্যক্রমে কারো ক্ষেত্রে হয়তো বা একাধিক! একেবারে নিস্তরঙ্গ, শুধু প্রেমময় যাপিত জীবন বিরল কয়েকজন মহাভাগ্যবানের জীবনে ঘটে থাকে।

যে সকল সৌভাগ্যবান ব্যক্তি একটা পরিণত, পূর্ণ জীবনের অধিকারী হন, তাদের জীবন তরীটিকে ইপ্সিত তীরে ভেড়াতে পারেন, তারা নমস্য, তারা অনুকরণীয়, তারা অনুসরণীয়। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলো ছড়াতে থাকেন। তাঁরা তাদের উত্তরসূরীদের আঁকড়ে ধরে থাকতে চান, আবার জীবন পাঠের অমূল্য দীক্ষা থেকে তারা এটাও বেশ ভাল করেই জানেন, জীবনের কোন অর্জন বা কোন সঞ্চয়ই তাদের নিজস্ব নয়, শুধু অপত্য স্নেহ ও ভালবাসার অনুভূতিটুকু ছাড়া। কোন শক্ত বদ্ধমুষ্টিই একটি কোমল হাতের একটি চিকণ অঙ্গুলিকেও চিরদিন ধরে রাখতে সক্ষম নয়। এক সময় না এক সময় তা ছেড়ে দিতেই হয়! তাই তারা সেই স্নেহ ও ভালবাসার অনুভূতিটুকুকে বুকে জড়িয়ে ধরে এক সময় ঘুমিয়ে পড়েন, শাব্দিক এবং আত্মিক, উভয় অর্থেই।

শিশুরা যেমন কথা বলা শেখার পর একসাথে অনেক কিছু বলতে চায়, বয়স্ক ব্যক্তিদেরও মাঝে মাঝে সেরকম হয়। শিশুদের সে কথা শোনার জন্য আর কেউ না থাকলেও তাদের মা থাকে (বিরল ব্যতিক্রম ব্যতীত), বয়স্ক ব্যক্তিদের কেউই থাকে না (বিরল ব্যতিক্রম ব্যতীত)। শিশুরা যত বড় হতে থাকে, পরিবারের সদস্যদের সাথে তাদের কথা তত কমতে থাকে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে বাড়তে থাকে। বয়স্করা একসময় বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে ফেলতে শুরু করেন, পরিবারের সদস্যদেরকে আঁকড়ে ধরতে চান। পুত্র কন্যাদের চেয়ে নাতি নাতনিদের প্রতি তারা বেশি আকর্ষণ বোধ করেন, তাদের সাথেই বেশি সখ্য গড়ে ওঠে। কিন্তু একসময় তাদেরকেও হারাতে হয়, যেমন এক সময় তারা নিজেরাই তাদের ভাই বোন, মা বাবা, দাদা দাদী, নানা নানীকে ফেলে এসেছিলেন। ঘরের বাইরে বের হওয়া তাদের কমে যায়, সেলফোনে কথা বলার লোক ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এক সময় কারো সাথে কথা বলার জন্য মনটা আঁকুপাকু করতে থাকলেও, তারা খুঁজেই পান না কার সাথে বলবেন! ঘরের বাইরে বের না হলেও কিছুকাল তারা নিজ বাড়ীর পুরোটা এলাকায় পদচারণা করেন, বয়স্কা মহিলারা মাঝে মাঝে রসুইঘরেও ঢোকেন বা ঢুকতে বাধ্য হন, কিন্তু এক সময় সেটাও ধীরে ধীরে সীমিত হয়ে যায়। তাদের চলাফেরা নিজ শয়নকক্ষে আর ওয়াশরুমে সীমিত হয়ে যায়, সেটাও যারা নিজ পদযুগলের ওপর ভর করে করতে সক্ষম হন, তারা ভাগ্যবান। কম ভাগ্যবানরা নিজ শয্যা থেকে ওয়াশরুম পর্যন্ত হুইলচেয়ারে করে অন্যের সাহায্যনির্ভর হয়ে যাওয়া আসা করেন। তারও পরে সেটাও সম্ভব হয় না। জন্মের পর পর শিশু যেমন মায়ের কোলে অথবা শয্যায় মলমূত্র ত্যাগ করে, তারাও তেমনি। শিশুরা যেমন জন্মের পর কয়েক সপ্তাহ কাউকে দেখেও চেনে না, কেবল মাকে চেনে ঘ্রাণশক্তি দিয়ে, ওনারাও তেমনি। উভয়ের প্রক্রিয়াটা অনেকটা একই রকম, পার্থক্য কেবল শিশুরা আসে, থেকে যায়; ওনারা এভাবে থাকতে থাকতে একসময় চলে যান। বিন্দুটা এক সময় স্ফীত হতে হতে বৃত্তে পরিণত হয়, আবার বৃত্তটা এক সময় চুপসে যেতে যেতে বিন্দুতে পরিণত হয়। এটাই জীবন চক্র।

ঢাকা
১০ জুন ২০২১
শব্দ সংখ্যাঃ ৮৫৪



মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:৩৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আহা জীবন কেমন করে করে গড়িয়ে গড়িয়ে বেলাশেষের রথে উঠে যায় । :)

ভালো লাগলো লেখা

১০ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আহা জীবন কেমন করে করে গড়িয়ে গড়িয়ে বেলাশেষের রথে উঠে যায়" - মূল পোস্টের মর্মের সাথে আপনার এ চমৎকার মন্তব্যটা একেবারে সম্পূর্ণভাবে মিলে গেছে।

লেখাটা আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগলো। প্রথম মন্তব্যে এবং প্রথম প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

২| ১০ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:৪৮

জুন বলেছেন: আমাদের কথা শোনার কেউ থাকবে না ভাবতেই দম বন্ধ হয়ে আসে খায়রুল আহসান।
অত্যন্ত গভীরভাবপুর্ন লেখাটি পড়ে মনটা উদাস হয়ে গেল।
+

১০ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের কথা শোনার কেউ থাকবে না ভাবতেই দম বন্ধ হয়ে আসে - আমিও এ কথাটি ভাবতে গিয়ে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ি এবং সে ভার লাঘবের লক্ষ্যে হয় কিছু একটা লিখতে বসে যাই, নয়তো শুয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ি। এ লেখাটাও সেরকম একটা ভার লাঘবের প্রয়াসেই লেখা হয়েছে।

মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!!

৩| ১০ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:১০

হাবিব বলেছেন: আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি কারো বোঝা হওয়ার আগেই যেন আমাকে দুনিয়া থেকে ঈমানের হালতে উঠিয়ে নেয়।

১০ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: এটা প্রায় সবাই আশা করে, এর জন্য প্রার্থনাও করে। কিন্তু সবার ভাগ্যে তা জোটে না। আপনার প্রার্থনা আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন কবুল করুন, এ দোয়া করছি।

৪| ১০ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪৮

আখেনাটেন বলেছেন: না পেলে সে শান্ত সরোবরে ভাসমান কাগজের নৌকোর মত এক সময় ডুবে যায়, নয়তো চারটি তীরের যে কোন একটিতে এসে, কিংবা সরোবার বৃত্তাকার হলে যে কোন একটি স্থানে এসে সেখানে জমে থাকা ঘাস, ঝরাপাতা ইত্যাদির সাথে আটকে থাকে। -- অসাধারণ একটি কথা লিখেছেন।

নোবেল বিজয়ী ওরহান পামুকের কোনো একটি বইয়ে পড়েছিলাম, মানুষের জীবনটা এক টুকরো তুষারের (স্নোফ্লেক) মতো, ড্রিফটিং করতে করতে কোথায় গিয়ে তার স্থান হবে সে নিজেও জানে না। শুন্যে ভাসমান তুষার কণা, একসময় বিগলিত হয়ে চলমান পানির স্রোতের অংশ হয়ে মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া।

পাশাপাশি, জুনাপা বলেছেন: আমাদের কথা শোনার কেউ থাকবে না ভাবতেই দম বন্ধ হয়ে আসে-- কথাটা নাড়িয়ে দিয়ে গেল।

চমৎকার এই জীবনবোধ সমৃদ্ধ দার্শনিকতাপূর্ণ লেখাটি ভীঁষণ ভালো লাগল।

১০ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:৪৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট থেকে উদ্ধৃতির জন্য অনেক ধন্যবাদ। সপ্রশংস উদ্ধৃতিতে অনুপ্রাণিত হ'লাম।

ওরহান পামুকের চমৎকার ভাবনাটা শেয়ার করার জন্যেও ধন্যবাদ। কথাটা মনকে উদাস করে দেয়।

চমৎকার এই জীবনবোধ সমৃদ্ধ দার্শনিকতাপূর্ণ লেখাটি ভীঁষণ ভালো লাগল - অভিভূত হ'লাম আপনার এই তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ আর উদার মূল্যায়নে। অনেক, অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

১২ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "চমৎকার এই জীবনবোধ সমৃদ্ধ দার্শনিকতাপূর্ণ লেখাটি ভীঁষণ ভালো লাগল" - এ লেখাটি যে জীবনবোধ সম্পর্কিত, জীবন দর্শন নিয়ে ভাবনার ফসল, এ কথাটি উপলব্ধি করার জন্য এবং তা মন্তব্যে প্রকাশ করার জন্য আমি জুন এবং আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।

আমার এ লেখাটা এ ব্লগ ছাড়াও আরো কয়েকটি গ্রুপে আমি পোস্ট করেছিলাম। সেখানে একজন পাঠক, যিনি একজন কবিও বটে, মন্তব্য করেছেন, "এখানে যেন আমাকেই লিখলেন! কাগজের নৌকোর মত ডুবতে ডুবতে কিংবা ঝরাপাতার সাথে আটকে থেকে কেবল কবিতায় নিজের আশ্রয় খুঁজে নিই! মানবাশ্রয় যার কপালে নেই"। লেখকের লেখা পূর্ণতা পায়, সার্থক হয়, যখন তা একজন হলেও কোন পাঠকের নিবিড় মনযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।

আপনার মনযোগের জন্য ধন্যবাদ। +

৫| ১০ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়লাম। আমার কন্যা ফারাজার কথা মনে পড়লো। একদম বাস্তব লিখেছেন। মানব জীবন চক্র এই রকমই।

১০ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: মানব জীবন চক্র এই রকমই - অনেক ধন্যবাদ, আপনার এ উপলব্ধি শেয়ার করার জন্য।

৬| ১২ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:৪০

ঢুকিচেপা বলেছেন: এই লেখা পড়ে প্রথমে যেটা মনে হয়েছে তা হলো, নাতীদের সাথে সময় কাটানোর ফল।

লেখার মাঝখানে খুবই বাস্তব একটা কথা
“না পেলে সে শান্ত সরোবরে ভাসমান কাগজের নৌকোর মত এক সময় ডুবে যায়, নয়তো চারটি তীরের যে কোন একটিতে এসে, কিংবা সরোবারটি বৃত্তাকার হলে যে কোন একটি স্থানে এসে সেখানে জমে থাকা ঘাস, ঝরাপাতা ইত্যাদির সাথে আটকে থাকে।”

১৩ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: না, এটা নাতি-নাতনিদের সাথে সময় কাটানোর ফল নয়। ওরা কাছে থাকলে এসব ভাবার সময় পাই না। ওরা একটু দূরে চলে গেলেই এসব ভাবনা মাথায় আসে। ওরা কিছুদিনের জন্য বেড়াতে গেছে, এখন ঘর ফাঁকা। তাই এখন এসব ভাবার সময় পাচ্ছি।

পোস্ট থেকে উদ্ধৃতির জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি।

৭| ১৩ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:৩১

সোহানী বলেছেন: চমৎকার মানব জীবন চক্রের বর্ননা। এরকম একটি লিখা পড়েছিলাম সুনীলের। গল্পের নাম ভুলে গেছি। ঠিক ক'দিন ধরে আমার মাথায় জীবনের সাফল্য বা এ ধরনের কিছু ভাবনা কাজ করছে। লিখার সময় করে উঠতে পারছি না।

শেষ লাইনাটা মনে হয় আপনার সে শিক্ষকের কথা মনে করে লিখেছেন। তবে এটা খুবই সত্য। শিশু আর বুড়োদেরই যে অনেক কিছু বলার থাকে। শিশু তার কৈাতুহলে বলে আর বুড়োরা অভিজ্ঞতায় বলে। কিন্তু দুপক্ষেরই মনে হয় বেশী কেউ নেই শোনার।

১৩ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: "ঠিক ক'দিন ধরে আমার মাথায় জীবনের সাফল্য বা এ ধরনের কিছু ভাবনা কাজ করছে। লিখার সময় করে উঠতে পারছি না" - একটু গুছিয়ে উঠে লেখা শুরু করে দিন! জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মৌলিক লেখার আবেদনই অন্যরকম।

"কিন্তু দুপক্ষেরই মনে হয় বেশী কেউ নেই শোনার" - আসলেই তাই।

মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!!

৮| ১৩ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:০৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


নীজের পোষ্টের একটি লেখায় দিন কতেক ব্যস্ত থাকায় লেখাটি দেখতে বিলম্ব হলো ।

লেখাটি পাঠে বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী এরিকসনের মানব জীবন বিকাশের তত্ত্বগুলি মনে পড়ে যায় ।
এরিকসন একজন ব্যক্তির জীবন জুড়ে সামাজিক অভিজ্ঞতার প্রভাব যাচাই করেছিলেন এবং তাত্ত্বিকভাবে
বলেছেন যে আটটি অনুক্রমিক পর্যায়ে মনোসামাজিক বিকাশ ঘটে। এরিকসনের মানব বিকাশের মডেলটির মধ্যে রয়েছে:
পর্যায় -১ শৈশবকাল: গ্রহণ এবং বিনিময়ে । ভরসা পরস্পররিক ভরসা হতে হয় ।
পর্যায় -২ টাডলারহুড: ধরে রাখ 'বা' যেতে দাও '।
পর্যায় -৩ প্রাক বিদ্যালয় বছর: নীজের কিংবা অন্যটি দেখে জিনিস তৈরি এবং সম্পূর্ণ করা এবং একসাথে তা তৈরি করা।
পর্যায় -৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বছর: পছন্দময় /বিষয সৃজন করা করা এবং একসাথে জিনিস তৈরি করা।
পর্যায় -৫ কৈশোর: নিজের মধ্যে সমাহিত হওয়া (বা না হওয়া) '' নিজেকে ভাগ করে নেওয়া।
পর্যায় -৬ পুর্ণ বয়স্ক: অন্য ব্যক্তির জন্য এবং তার সাথে পরস্পর ভালবাসা।
পর্যায় -৭ মধ্য পুর্ণ বয়স্ক : অন্যের শর্তহীন, অ-প্রত্যক্ষ যত্ন
পর্যায় -৮ দেরীতে প্রাপ্ত বয়স্ক: নিজের জীবন এবং প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণ ও সন্তুষ্ট থাকা,
এবং জীবনের শেষ বেলায় উপনিত হওয়ার বিষয়টি গ্রহণ করা ।
এরিকসনের মতে, মানুষের বিকাশের মানসিক বৈশিষ্ট্য তার মানব বিকাশের গঠনের জন্য জিনগতভাবে অনিবার্য।
দুয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া সমস্ত লোকের মধ্যেই তা ঘটে। তাই মনোবিজ্ঞানীদের চিন্তা চেতনার র সাথে আমাদের
ব্লগের গুণী একজন ব্লগারের চিন্তার সামঞ্জস্য তো থাকবেই । ভাল লাগল জী্বন চক্র নিয়ে আপনার মুল্যবান
আলোচনাটি ।
অমার সাম্প্রতিক পোষ্টে ভ্রমনের আমন্ত্রন রইল ।

শুভেচ্ছা রইল ।

১৪ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্যে বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী এরিকসনের মানব জীবন বিকাশের তত্ত্বগুলি উল্লেখ করে যাওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আমার সাম্প্রতিক কিছু চিন্তা নিয়ে লিখিত এ পোস্টের উপর এত সুন্দর একটা মন্তব্য করে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করলেন।

"অমার সাম্প্রতিক পোষ্টে ভ্রমনের আমন্ত্রন রইল" - এইমাত্র পড়ে এলাম আপনার সেই চমৎকার পোস্টটি। উৎসর্গের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

২০ শে জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি পুনর্বার পাঠ করলাম। মনোবিজ্ঞানী এরিকসনের মানব জীবন বিকাশের তত্ত্বগুলির মধ্যে সবচেয়ে শেষেরটি, অর্থাৎ ৮ম পর্যায়টির কথাটা আমার কাছে (এবং আমার জন্য তো বটেই,) সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্যঃ
"নিজের জীবন এবং প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণ ও সন্তুষ্ট থাকা এবং জীবনের শেষ বেলায় উপনিত হওয়ার বিষয়টি গ্রহণ করা"

এত চমৎকার একটি মন্তব্যের জন্য পুনরায় ধন্যবাদ।

৯| ১৫ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:০০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মানব শিশুর জীবন শুরু হয় কান্না দিয়ে আবার শেষও হয় কান্না দিয়ে। মাঝের সময়টা অনেকের আনন্দে কাটে অনেকের তাও কাটে না। আপনার লেখাটা ভালো লেগেছে।

১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: "মানব শিশুর জীবন শুরু হয় কান্না দিয়ে আবার শেষও হয় কান্না দিয়ে" - জ্বী, প্রথম কান্নাটা হয় নিজের, ফুসফুসে অক্সিজেন সঞ্চালন করে ফুসফুসকে সক্রিয় করার জন্য। আর পরের কান্নাটা হয় অপরাপরের, নিজের ফুসফুস একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবার পর।

লেখাটা আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.