নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
এর আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ ভুলো মন.... (১)
আমার এ সিরিজের আগের পর্বটা পড়ে অনেকেই মন্তব্য করেছেন যে বয়স্করা ছাড়াও, অপেক্ষাকৃত কম বয়সের ব্যক্তিরাও ভুলোমনা হতে পারে। হ্যাঁ, তা তো পারেই। ভুলোমনা হওয়া আর মেমোরি ঠিকমত রেসপন্ড না করার মধ্যে একটু পার্থক্য রয়েছে। কোন কারণে আনমনা হয়ে থাকলে মানুষ ক্ষণিকের তরে ভুলোমনা হতে পারে, এজন্য সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে ভুলে যেতে পারে। আর প্রচুর ইচ্ছেশক্তি নিয়েও যখন স্মৃতি হাতড়িয়ে এ যাবত জানা কোন তথ্য স্মরণ করতে পারে না, তখন বলা যায় তার স্মৃতি শক্তি লোপ পাচ্ছে, যদিও এটা অত্যন্ত প্রাথমিক একটা আভাস হতে পারে। খানিক পরেই হয়তো অন্য কোন সংকেতের সূত্র ধরে সেই অন্বেষিত তথ্যটি আপনা আপনিই উদঘাটিত হতে পারে। আমার বাল্যবন্ধু ড. হুমায়ুন কবির আমেরিকার একজন খ্যাতিমান ঘুম বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। বাংলাদেশেও তিনি গুলশানে একটি ‘ঘুম ক্লিনিক’ খুলে গেছেন বছর তিনেক আগে। বাংলাদেশের ঘুম বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাই সেটা স্থানীয়ভাবে দেখাশুনা ও পরিচালনা করেন, বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রয়োজনবোধে টেনিসি থেকে তিনি রোগীদের কেস স্টাডি করে পরামর্শ প্রদান করেন। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন, যেমন প্রতি বছর আসেন। কিন্তু আমার অস্ট্রেলিয়া সফরের কারণে এবারে আমি তার সঙ্গ মিস করেছি। আমাদের হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে জানলাম, তিনি সম্প্রতি বন্ধুদের এক আড্ডায় ডিনার শেষে এক সংক্ষিপ্ত ‘টক’ এ ঘুমের উপর খুব জোর দেন। তিনি বলেছেন, একনাগাড়ে দীর্ঘদিন প্রতি এক ঘণ্টার ঘুম বঞ্চনা মানুষের মর্টালিটি রেট ১২% বৃ্দ্ধির কারণ হতে পারে। অপর্যাপ্ত ঘুম কিংবা অসময়ের ঘুম মানুষের স্মৃতিশক্তিকে দুর্বল করে দেয় এবং তা থেকে নানারকমের স্নায়বিক রোগ দেখা দিতে পারে। আমার ঘুমের কোন সমস্যা নেই। দিনে হোক, রাতে হোক, শোয়া মাত্র ঘুমিয়ে যাই এবং দিনরাত মিলিয়ে কমপক্ষে ছয়-সাত ঘণ্টা ঘুমাতাম ঢাকায় থাকতে। এখন অস্ট্রেলিয়ায় এসে সেটা আট ঘণ্টার ঘুমে পরিণত হয়েছে। তবুও ভুলোমনা হওয়া থেকে আর রেহাই পাচ্ছি কোথায়!
ঘর থেকে বের হতে হলেই, সেটা ৩/৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাসার আশে পাশের এলাকাতে হাঁটার জন্যেই হোক, কিংবা দূরে কোথাও, প্রথম দিন থেকেই আমি চারটে “M” ঠিকমত নিলাম কিনা, বের হবার আগে তা পকেট হাতড়ে, নাকের নীচে হাত দিয়ে যাচাই করে নেই। এই চারটে “M” হলোঃ মাস্ক, মানি ব্যাগ, মোবাইল ফোন এবং “মাইকি কার্ড” (বাসে/ট্রেনে/ট্রামে চড়ার কার্ড)। আর চশমা যেন যত্র তত্র ফেলে না আসি, সে জন্যে ওটাকে খুলতে হলে তা অন্য কোথাও না রেখে থুতনির নীচে ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা আগে থেকেই করে এসেছি। সেদিন আমরা হাঁটার জন্য বাইরে বের হচ্ছি। মাস্ক লাগালে চশমার কাঁচটা ঘোলা হয়ে যায় বলে ওটাকে নীচে ঝুলিয়ে রেখে নিঃশ্বাস বের হবার পথটা ক্লীয়ার রাখলাম। কিছুদূর হাঁটার পর কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস নাক দিয়ে ঢুকে শরীরে কাঁপুনি তুলছিল। আমি গিন্নীকে বললাম,
-একটু থামো, আমি আসছি।
-কেন, হাঁটবা না? কোথায় যাচ্ছো?
-বাসায়।
-কেন?
-নাক দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস ঢুকছে। মাস্কটা নিয়ে আসি।
-থুতনির নীচে ওটা কী ঝুলছে?
হাত দিয়ে পরখ করে একটা নিঃশব্দ হাসি, মাস্কটা ঠিকমত লাগিয়ে আবার পথচলা শুরু!
এখন যদিও বিভিন্ন ট্রেন লাইনের এবং বাসের রুট আমাদের আয়ত্ত্বে এসে গেছে, প্রথম প্রথম একটু অসুবিধে হতো, অযথা কনফিউশনে বিব্রত হ’তাম। তখন একে ওকে জিজ্ঞেস করে কনফিউশন দূর করতাম। এখানকার মানুষগুলো এত, এতই ভালো যে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলে সে প্রথমেই একটা ‘হাই’ বলে মুখে স্মিত হাসি এনে এমনভাবে বুঝিয়ে দেবে যে সন্দেহের আর কোন অবকাশ থাকে না। প্রয়োজন হ’লে আমাদের সাথে দু’কদম হেঁটে এসে পথ দেখিয়ে দেবে। পথচারী, সহযাত্রীদের এসব অসামান্য সৌজন্যমূলক আচরণ নিয়ে আরেকদিন লেখার ইচ্ছে আছে। আমাদের নাতনি’র যখন জন্ম হলো, ছেলে, বৌমা আর নবজাতক ৫/৬ দিন হাসপাতালে ছিল। আমরা দু’জনে বিকেলের ‘ভিজিটিং আওয়ার’ এ ওদেরকে দেখে বাসায় চলে আসতাম। হাসপাতালটি বাসা থেকে বেশ দূরে হওয়াতে বাসে অথবা ট্রেনে যেতে হতো, অথবা উভয়টি মিলিয়ে। তবে কোনটাতেই একবারে যাওয়া যেত না। মাঝখানে পথে Cranbourne এ বাস বা ট্রেন বদল করতে হতোই। তখন রোযার মাস ছিল। গিন্নী দু’জনের জন্য পানির বোতল এবং কিছু ফলসহ অন্যান্য কয়েকটি মেন্যুর একটি হাল্কা ইফতার বক্স ক্যারী করতেন একটা ছোট্ট ব্যাগে, যেন পথিমধ্যে ইফতারের সময় হলে আমরা রোযা ভাঙতে পারি। সেদিন আসার সময় বাসে আমরা গল্প করছিলাম। Cranbourne স্টেশনে বাস এসে পড়লে আমাদের খেয়াল হলো, এখানে নামতে হবে। তড়িঘড়ি করে নেমে এলাম, দু’জনের মাঝখানে রাখা সেই ইফতারের ব্যাগটি নামানোর কথা দু’জনের কারও খেয়াল হলো না। বাসটা ছেড়ে যাবার ঠিক পরে পরেই তা খেয়াল হলো, এবং ইতোমধ্যে পরের রুটের বাস এসে গেছে। ইফতারের তখনো মিনিট দশেক বাকী, কিন্তু এ বাস ছেড়ে দিলে পরের বাস আসতে বেশ দেরি হবে। আমরা তাই বিষণ্ণ মনে বাসে উঠে পড়লাম।
ইফতারের একটু পরেই ছেলে ফোন করে আমাদের অবস্থান জানতে চেয়ে জিজ্ঞস করলো আমরা ইফতার করেছি কিনা। ইফতারের ব্যাগটা হারানোর কথা আমার তাকে জানানোর ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু ছেলে যেহেতু ওর মাকে ফোন করেছে, গিন্নী তাকে সবিস্তারে ঘটনার কথা জানাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে অন্ধকার নেমে এসেছিল, আকাশটাও মেঘলা ছিল। আমরা যে স্টপে নামবো, সেটা এসে গেল এবং আমরা তা খেয়াল করতে করতে চলেও গেল! যে দিনটা খারাপ যাবে, সেটা এভাবেই যাবে, মনকে এভাবে প্রবোধ দিয়ে আমরা পরের স্টপে নেমে অতিরিক্ত প্রায় সাত মিনিটের পথ হেঁটে বাসায় ফিরলাম। ঠিক সে সময়ে ছেলের ফোনঃ
- তোমরা বাসায় পৌঁছেছো?
-(এবারে সে আমাকে ফোন করেছিল, আমি আর তাকে আমাদের বেকুবি’র কথাটা না বলে বললাম) হ্যাঁ, এইমাত্র পৌঁছলাম, কেবল তালা খুলে ঘরে ঢুকছি।
-আচ্ছা শোন, ফ্রীজ থেকে কিছু খাবার বের করে গরম করে খেতে খেতে তোমাদের তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। দশ মিনিটের মধ্যে কেউ একজন বাসায় তোমাদের জন্য খাবার ডেলিভারী দিয়ে যাবে। কলিং বেল এর দিকে খেয়াল রেখো, ওটা শুনতে মিস কোরনা।
-সেটার আর প্রয়োজন হবে না, আমরা তো বাসায় পৌঁছেই গেছি।
-অনলাইনে অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে। ডেলিভারীম্যান পথিমধ্যে, বাসার কাছেই চলে এসেছে। আচ্ছা রাখি!
অগত্যা আমরা হাতমুখ ধুয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম। একটু পরেই কলিং বেল এর আওয়াজ শোনা গেল। আমরা ধীরে সুস্থে বিলম্বিত ইফতার-কাম-ডিনার করে, বিলম্বিত নামায আদায় করে, আল্লাহতা’লার শোকর গুযার করে শয্যাগ্রহণ করলাম।
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
১৮ জুন ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ৮৭৯
২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: 'ভুলোমনা' হলে মাঝে মাঝে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয় বৈকি!
বসের কাজগুলো মন দিয়ে করবেন, কাজ শেষ করে তবেই অন্য কিছুতে মনযোগ দিবেন, তাহলে হয়তো ভালো কাজ দিয়ে আপনিও বসের মন জয় করতে পারবেন।
প্রথম মন্তব্যটিরর জন্য ধন্যবাদ।
২| ২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৪৫
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ভুলো মন একটা স্বাভাবিক বিষয়। নিজে নিজে রান্না করতে গিয়ে কতবার ভাত তরকারি পূড়ে ছাই করছি তার হিসেব নেই।
২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: হ্যাঁ, কখনো কখনো এটা স্বাভাবিক, তবে কম বয়সে খুব বেশি ভুলোমনা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
৩| ২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৪:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: ভুলে যাওয়া একটা রোগ, যা আমার আছে। আমি চিকিৎসক দেখিয়েছি। ক্লোনাট্রিল নামের একটা টেবলেট এডভাইস করেছেন। খাচ্ছি, কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করছিনা।
২৩ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি তো অনেক লেখালেখি করেন। যারা লেখালেখি করেন বা অন্য কোন সৃজনশীল কাজে মন ও মস্তিষ্ককে নিয়োজিত রাখেন, তাদের ভুলোমনা বা স্মৃতিভ্রম হবার সম্ভাবনা খুব কম থাকে বলে শুনেছি।
এসব স্নায়ুজনিত উপসর্গের জন্য ঔষধপত্র যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো, কারণ ঔষধে খুব একটা কাজ দেয় না। শুধোশুধি ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে আমন্ত্রণ জানাতে হয়।
যেসব কাজ করে আপনি আনন্দ পান (যেমন লেখালেখি, ছবি আঁকা, বাগান করা, পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি), সেগুলো বেশি করে করবেন। তাহলে ভালো থাকবেন, শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যে।
৪| ২৩ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪০
ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: পত্রিকায় একবার পড়েছিলাম - অতিরিক্ত অন্যমনস্কতা একটি মানসিক সমস্যা ডিপ্রেশন থেকেও এই সমস্যা হতে পারে।
২৪ শে জুন, ২০২২ সকাল ৭:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: অতিরিক্ত অন্যমনস্কতা একটি মানসিক সমস্যা তো বটেই, এর থেকেই ধীরে ধীরে ডিমেনশিয়া দেখা দেয়। তবে আমার মনে হয়, কোন রকমের ডিপ্রেশন ছাড়াও এ সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। অনেকের অনেক কম বয়স থেকেই এ সমস্যাটি হয়।
৫| ২৩ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এরকম ভুল সব বয়সের মানুষই কম বেশী করে থাকে। আপনার বর্ণিত ঘটনাটা রোগের পর্যায়ে যায়নি মনে হয়। গত দেড় মাসে দুইবার মোবাইল ফোন সাথে নিতে ভুলে গেছি। প্রথমবার অফিস থেকে বাসায় দ্বিতীয় বার (পরশু দিন) বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার সময়। তবে এত ঘনঘন কেন ভুল করছি সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত বটে।
২৪ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: বাসায় কিংবা অফিসে সেলফোন ফেলে গেলে তবুও রক্ষে যে সেটা হারাবে না, যদিও পুনরায় হাতে না আসা পর্যন্ত ভোগান্তির অন্ত থাকে না। কেননা, সেলফোন এখন আমাদেও একটি নিত্য এবং অপরিহার্য অনুসঙ্গ। সেটাকে পথে কিংবা কোন যানবাহনে ফেলে আসলে আমাদের দেশে তা ফিরে পাবার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ। আমার লেখা এই সিরিজের আগের পর্বটি আপনি পড়েন নি, পড়লে জানতে পারতেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রেনে আমরা সেলফোন ফেলে গিয়ে পরের দিনই সেটা কত সুন্দরভাবে ফেরত পেয়েছিলাম!
"তবে এত ঘনঘন কেন ভুল করছি সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত বটে" - এটা নিয়ে ভেবে চিন্তিত হবার কোন প্রয়োজন নেই। আপনাদের বয়স কম, এত কম বয়সে স্মৃতিভ্রষ্ট হবার সম্ভাবনা কম। বেশি বেশি করে ব্রেনওয়ার্ক করুন। ৩ নং প্রতিমন্তব্য থেকে একই কথার পুনরাবৃত্তি করে বলছিঃ
" যেসব কাজ করে আপনি আনন্দ পান (যেমন লেখালেখি, ছবি আঁকা, বাগান করা, পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি), সেগুলো বেশি করে করবেন। তাহলে ভালো থাকবেন, শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যে"।
৬| ২৩ শে জুন, ২০২২ রাত ১০:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে বয়সের সাথে ভুলে যাওয়া বাড়ে কথাটা ঠিক না।
আমি সকালে দাঁত ব্রাশ করতে ভুলে যাই। অথবা মনে করতে পারির না দাঁত ব্রাশ করেছি কিনা। তখন ব্রাশ হাতে নিয়ে দেখতে। ব্রাশ ভেজা কিনা। এমন কি দুপুরে খেয়েছি কিনা মনে করতে পারি না। বাসার লোকজনদের জিজ্ঞেস করতে জেনে নিতে হয়।
দুই পায়ের দুই জুতো পরে বাইরে চলে যাই।
দোকানে কিনতে যাই ডিম নিয়ে আসি আলু।
২৪ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আসলে বয়সের সাথে ভুলে যাওয়া বাড়ে কথাটা ঠিক না" - হতে পারে, সম্ভব!
তবে আপনার কথাগুলো পড়ে মনে হলো যে বয়স অনুযায়ী আপনি হয়তো একটু মাত্রাতিরিক্ত "ভুলোমনা"।
৭| ২৪ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৪৬
মিরোরডডল বলেছেন:
বাবুকে নিয়ে নানুভাইয়ের সময়টা ভালোই যাচ্ছে ।
আচ্ছা নাতনির কি নাম রেখেছে জানতে ইচ্ছে করছে ।
নিশ্চয়ই খুব সুন্দর একটা কাব্যিক নাম হবে ।
এরকম ভুলোমনের ঘটনা আমার যে কতো শতবার হয়েছে ।
প্রথম পর্বে কিছু শেয়ার করেছি । আজ আর একটা বলি ।
শপিং মলে বেইজমেন্টে কারওয়াশে গাড়ী দিয়ে ওপরে গেলাম কেনাকাটা করতে ।
শপিং শেষে ট্রলি নিয়ে নেমে এলাম । কাউন্টারে গিয়ে পে করে গাড়ী নিয়ে চলে এলাম । বাজারসহ ট্রলি ওখানে রেখে । মাঝপথে এসে মনে হলো কি যেন নেই নেই । হঠাৎ মনে পড়লো ব্যাগগুলো গাড়ীতে তোলা হয়নি । ওখানে রেখে চলে এসেছি । তারপর আবার ফিরে গেলাম । যাওয়া মাত্রই ভদ্রলোক ট্রলি নিয়ে আসলো । বললো উনি নোটিস করেছেন যে আমি ওগুলো রেখে চলে গেছি তাই উনি সরিয়ে রেখেছিলেন ।
২৬ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: নানুভাই নয়, দাদাভাই! সময়টা অবশ্যই খুবই ভালো কাটছে। পিচ্চি ঐ একজনই সবাইকে ব্যস্ত রাখার জন্য যথেষ্ট।
ওর নাম আরিশা আহসান।
আপনি এই বয়সেই যদি এতটা ভুলোমনা হন, আরও তো দিন আছে!
আমার তো এখন নিত্য এসব ভুল হয়, এর চেয়ে বিপজ্জনক ভুলও হয়!
একদিন দুপুরে গিন্নীকে নিয়ে একটা কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিকটস্থ একটা শপিং মলে এক মিনিটের কথা বলে একটু নেমেছিলাম। ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিল। আমাকে নামিয়ে দিয়ে সে গাড়িটা পার্কিং লটে রেখেছিল, গিন্নী গাড়িতেই বসা ছিলেন। এক মিনিটের জায়গায় হয়তো আমি পাঁচ মিনিট নিয়েছিলাম, কাজ শেষে বের হয়ে দেখি, আমার গাড়িটা সামনেই আছে, খুঁজতে হলো না। দরজা খুলে আমি বসে পড়লাম এবং গিন্নীকে বললাম, 'চলো এবার বাসা যাই'। কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি, উনি আমার গিন্নী নন, তবে মুখ টিপে হাসছেন। ড্রাইভারের সীটের দিকে তাকিয়ে দেখি সে ড্রাইভারও আমার নয়। বুঝতে পারলাম কি সর্বনাশটাই না করে ফেলেছি। খুবই লজ্জিত হয়ে ভদ্রমহিলার কাছে ক্ষমা চেয়ে ত্বরিত নেমে পড়লাম, তিনি মৃদু হেসে শুধু বললেন, ইটস ওকে! তাকিয়ে দেখি অদূরে আমার গাড়িটা, ড্রাইভার অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। একই মডেল এবং একই রঙের গাড়ি ছিল। ঝটপট এসে এবারে আমার নিজের গাড়িতে বসেই একটা হাঁফ ছেড়ে বাচলাম! গিন্নীকে সবিস্তারে ঘটনাটির কথা বলে উভয়েই হেসে উঠলাম, ডাইভারও কথাটা শুনে মাথা নীচু করে একটু মুচকি হেসে নিল!
৮| ২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ১১:৪৫
ঢুকিচেপা বলেছেন: ভুলো মন পর্বের এঘটনাও খুব মজার।
২৭ শে জুন, ২০২২ সকাল ৭:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত হ'লাম।
৯| ২৬ শে জুন, ২০২২ রাত ২:৩৮
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আপনার ভুলো মন পড়ে আমার নিজেরও ভুলো মন সিরিজ লেখার ইচ্ছে করছে। আমার নিজের অনেক অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। ভালো লাগলো ভুলো মন সিরিজ পড়ে। +++
২৭ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: লিখে ফেলুন আপনিও, নিজের ভুলোমনা জীবনের দৈনন্দিন কথাগুলো!
পোস্ট পাঠ, মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১০| ২৬ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:২৭
মিরোরডডল বলেছেন:
ওহ তাইতো দাদাভাই ।
আরিশা নামটা সুন্দর ।
এবারের অভিজ্ঞতা পড়ে খুবই মজা পেলাম ।
এটা অনেক সুইট ছিলো, মনে হচ্ছিলো কোন রোম্যান্টিক কমেডি মুভি দৃশ্য
আমার বিষয়টা আসলে যে কি ভুলোমনা, অন্যমনস্কতা, নাকি অস্থিরতা আমি ঠিক জানিনা কিন্তু
ভয়াবহ কিছু ঘটনা আমারও ঘটেছে যেটা হয়তো কখনও লিখবো ।
২৭ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:১১
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনারটা হয়তো 'অস্থিরতা'ই হবে।
লিখে ফেলুন তাড়াতাড়ি, ভুলে যাবার আগেই!
১১| ২৬ শে জুন, ২০২২ রাত ১০:৪৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: সবিস্তারে আপনার বর্ণনা ভালোলাগে, নিজের অনেক অভিজ্ঞতার সাথে মিলাতে পারি।
লেখায় ভালোলাগা।
২৮ শে জুন, ২০২২ সকাল ৮:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: মনে হচ্ছে, আজকাল বয়স নির্বিশষে এসব 'অভিজ্ঞতা'গুলো একটা সার্বজনীন রূপ পাচ্ছে!
অনেক ধন্যবাদ, ব্যস্ততার মাঝেও এসে লেখাটি পড়ে যাবার জন্য, মন্তব্য এবং প্লাস রেখে যাবার জন্য।
ভালো থাকুন সুস্বাস্থ্যে, সপরিবারে।
১২| ০৫ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৪৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভুলো মনের জীবনের গল্প ভালো লেগেছে। ইফতারের ব্যাগ হারিয়ে কি করে ইফতার করবেন এই নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলাম, পাঠ শেষে তাই শান্তি পেলাম অবশেষে অনলাইনে অর্ডার দেওয়ায় আপনাদের যে সেদিন যন্ত্রণা পেতে হয়নি এটা বড় আনন্দের।
আপনার নবাগত নাতি সহ পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া রইলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন স্যার।
০৫ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমরা ভাবছিলাম, ফ্রীজে ইফতার উপযোগী যেসব খাবার ছিল, বাসায় ফিরে সেসব থেকে কিছু গরম করে নিয়ে একেবারে ইফতার-কাম-ডিনার সেরে নিব। তবে ক্লান্ত দেহে সেটুকু করতেও একটু 'যন্ত্রণা'ই হবে, সে কথা ভেবে ছেলে তার বিবেচনায় ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছিল।
"আপনার নবাগত নাতি সহ পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া রইলো" - অনেক ধন্যবাদ, তবে নাতি নয়, নাতনি।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৩২
মেহবুবা বলেছেন: ভুলোমনা হবার যন্ত্রণার কথা পড়ে খারাপ লাগছিল, শেষ দিকটায় এসে মনটা ভাল হয়ে গেল। ৩ নম্বর মন্তব্যের জবানটা যথার্থ।
২০ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:২৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রায় দু'মাস আগের একটি পোস্টে আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো। প্রতিমন্তব্যটি সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৩০
সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: ভুলোমনা রোগটা আমাকে অনেক বিরম্বনায় ফেলে। বাবার বকা শুনেছি ছোট বেলায় আর এখন বসের বকা শুনি। কিন্তু এই ভুলোমনা রোগ থেকে রেহাই পাই না।