নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্ন ছড়ানো মাধবী রাতের গান

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭


মাধবী রাত, মায়াবী চাঁদ....
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, রাত দশটা বার।


"তন্দ্রাহারা নয়ন ও আমার...এই মাধবী রাতে...
তারার কুসুম হয়ে চায় স্বপ্ন ছড়াতে...!"
এই গানটা যখন প্রথম শুনি, তখন আমি সম্ভবতঃ নবম কি দশম শ্রেণীর ছাত্র, সেটা ষাটের দশকের শেষের দিকের কথা। গানটা তখন অত্যধিক জনপ্রিয় হয়েছিল এবং বোধকরি সে জন্যেই রেডিওটা 'অন' করলেই কোন না কোন স্টেশন থেকে এ গানটি শোনা যেত। গানটির শিল্পী ছিলেন হাসিনা মমতাজ, গীতিকার মাসুদ করিম এবং সুরকার সমর দাস। তখনকার শিল্পীদের মধ্যে হাসিনা মমতাজ তুলনামূলকভাবে উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোলে উচ্চশিক্ষা অর্জন করছিলেন। গানটি তখন রেডিওতে এতই বাজানো হতো যে শ্রোতাদের অনেকেই হাল্কা রসিকতার সাথে বলাবলি করতো যে শিল্পীর সাথে নিশ্চয়ই রেডিওর লোকজনের ভালো খাতির রয়েছে, নইলে এত ঘন ঘন বাজানো হবে কেন! যারা এসব বলতো, তারাও অবশ্যই জানতো যে মিষ্টি কথা, মন ভোলানো সুর আর শিল্পীর চর্চিত, পরিশীলিত সুকণ্ঠ ও নিখুঁত পরিবেশনার কারণেই গানটি এতটা জনপ্রিয় হয়েছিল।

তৎকালীন রেডিও পাকিস্তান এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ বেতার এর যে কয়টি স্টেশন ছিল, তার প্রত্যেকটির 'অনুরোধের আসরে' এ গানটির জন্য প্রচুর অনুরোধ আসতো এবং তাই এ গানটি বাজানো হতোই। একটানা বহু বছর ধরে এ গানটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। গানটি আমার ভালো লাগতো মূলতঃ এর রোমান্টিক লিরিক্সের জন্য, বিশেষ করে শুরুর এবং শেষের চরণগুলোর জন্যঃ

"তন্দ্রাহারা নয়ন ও আমার...এই মাধবী রাতে...
তারার কুসুম হয়ে চায় স্বপ্ন ছড়াতে...!"

--- এবং

"হৃদয়েরও এই কলতান...নেই কভু এর অবসান...!
বনেরও পাখিরা তাই চায়, ছন্দ ঝরাতে...!"

এই গুণী শিল্পী প্রয়াত হয়েছেন গত ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখে, আজ থেকে মাত্র ছয় দিন আগে, ৭৮ বছর বয়সে। গত কয়দিন ধরে বিভিন্ন লিঙ্ক ধরে তার এই তুমুল জনপ্রিয় গানটি ক্রমাগত শুনছি, আর অতীতের সেই দিনগুলোর কথা ভাবছি। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি পার হয়ে গেছে, এখনও এ গানটি শুনলে মনের মধ্যে কয়েকটি স্মৃতির কথা ভেসে আসেঃ

১। ছাত্র থাকা কালে আমি ৮ ডাউন 'নর্থ বেঙ্গল মেল' ট্রেনে করে রংপুর থেকে ঢাকায় আসতাম। রাত আটটার দিকে ট্রেনটা তিস্তামুখ ঘাটে পৌঁছতো। চরের পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্টীমার থেকে কখনো অর্ধ কিঃমিঃ আবার কখনো এক কিঃমিঃ এর মত দূরে ট্রেনটি থেমে যেত। এই পথটুকু যাত্রীদের গাট্টি-বোঁচকা নিয়ে পায়ে হেঁটে স্টীমারে উঠতে হতো। হাঁটা পথের পাশে গজিয়ে উঠতো বহু খাবারের দোকান, তার মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ছিল 'কলিমুদ্দিনের হোটেল'। এ ছাড়াও থাকতো খাঁটি দুধ দিয়ে বানানো গরম চা, বিস্কুট ইত্যাদির দোকান। আমি সাধারণতঃ স্টীমারেই খেতাম, তাই এসব হোটেলে তেমন খাওয়া হতো না। ব্যাগ নিয়ে তাড়াহুড়ো করে হেঁটে যাবার সময় কোন না কোন দোকান থেকে ভেসে আসতো "তন্দ্রাহারা নয়ন ও আমার...এই মাধবী রাতে..."! এই চলন্ত পদযাত্রায় নিজেকে একজন অভিযাত্রিক মনে হতো, আর রেডিওতে ভেসে আসা ক্রমশঃ স্তিমিত হতে থাকা এই গানটিকে মনে হতো কোন এক দূর দ্বীপবাসিনীর গাওয়া সেরেনাদ (serenade)। স্টীমারে উঠেও শুনি একই গান, এমনকি ওপাড়ে বাহাদুরাবাদ ঘাটে পৌঁছানোর পরে ফিরতি হাঁটা পথে চলার সময়েও সেই একই গান! ওসব ক্ষুদ্র দোকানগুলোতে তখনও কোন ক্যাসেট প্লেয়ার ছিল না। যা শুনতাম, তার সবই ছিল রেডিও থেকে ভেসে আসা গান। জনপ্রিয়তার কারণে একেক সময়ে একেক স্টেশন থেকে গানটি বেজে চলতো।

২। ঢাকা থেকে বাড়ি যাবার সময় যেতাম ১১ আপ 'দ্রুতযান এক্সপ্রেস' ট্রেন যোগে। সাত সকালে রওনা দিয়ে রাত দশটা এগারটার দিকে বাড়ির নিকটস্থ স্টেশনে নামতাম। মফস্বলের ছোট্ট স্টেশন, হাটের দিন ছাড়া অন্যান্যদিন সন্ধ্যার পরে পরেই চারিপাশ নীরব নিস্তব্ধ হয়ে যেত; কিন্তু ট্রেন আসার সময় হলে আবার সরগরম হয়ে উঠতো। চা পিয়াসী যাত্রীদেরকে চা পরিবেশনের জন্য প্লাটফর্মের বাইরের দোকানের চুলোগুলোতে আগুন আবার দাউদাউ করে জ্বলে উঠতো, ক্ষুধার্ত যাত্রীদের ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য ডিম পরাটা ভাজা হতো। তার সাথে যাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য তখনকার দিনের একমাত্র বিনোদন রেডিও 'অন' করা হতো। আর 'অন' করার সাথে সাথে কিংবা কিছুক্ষণের মধ্যেই শোনা যেত সেই গান, "তন্দ্রাহারা নয়ন ও আমার..."! গান শুনতে শুনতে গানের মিষ্টি আমেজ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা ধরতাম, তারার কুসুম হয়ে স্বপ্ন ছড়াতে চাওয়া কোন অদেখা নয়ন যুগলের কথা ভাবতে ভাবতে।

৩। আমাদের বাড়ির পঞ্চাশ গজের মত দক্ষিণ দিয়ে চলে গিয়েছিল তখনকার দিনের 'ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তা'। আর দেড় কিঃমিঃ এর মত উত্তর দিয়ে পূবে-পশ্চিমে চলে গিয়েছিল 'বেঙ্গল-ডুয়ার্স রেলওয়ে'র লাইন, যা দিয়ে চলাচল করতো লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারি পর্যন্ত লোকাল ট্রেন, পরের দিকে মেল ট্রেনও। রাত দশটা এগারটার দিকে একটি ট্রেন সেই পথে লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারি যেত এবং আমিও ঐ ট্রেনটাতে করেই বাড়িতে আসতাম বলে আগেই উল্লেখ করেছি। মফস্বলে দশটা-এগারটা অনেক রাত, আর শীতের রাত হলে তো কথাই নেই। আমি বিছানায় শোয়ার পর সেই ট্রেনটা যেত; আমি বিছানায় শুয়ে শুয়েই ট্রেনের কয়লার ইঞ্জিনের হুইসেল এবং বগীর চাকার ঘরঘর আওয়াজ কান পেতে শুনতাম। পরবর্তীতে অবশ্য ডিজেল ইঞ্জিন যোগ হয়েছিল, যার আওয়াজকে হুইসেল না বলে ভেঁপু বলাই শ্রেয়ঃ। ট্রেন চলে যাবার আধ ঘণ্টা পর সেই 'ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তা'য় শোনা যেত পথচারী যাত্রীদের পায়ের আওয়াজ। কোন কোন সময় তাদের সাথে যোগ হতো সদ্য সমাপ্ত হাট থেকে বাড়ি ফেরা পসারির দল। তাদের কারও কারও হাতে থাকতো 'অন করা' রেডিও, যেটা থেকে কানে ভেসে আসতো সেই একই গান, "তন্দ্রাহারা নয়ন ও আমার..."! কেমন একটা মায়াবী আমেজ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। স্বপ্ন দেখানোয় এ গানের কোন জুড়ি ছিল না।

"বাতাসেরও ফাল্গুনী গান...দেয় মুছে সব অভিমান...
সুরের কাকলি তাই চায়, কন্ঠে জড়াতে..."
.....

"তনু মন এই রাত,কেন যে মুখর এতো জানিনা...
এই গান এই সুর, কেন যে মধুর এতো জানিনা..."

আমারও জানা ছিল না, আমিও জানতাম না। শুধু জানতাম, গানটির কোমল অনুরণন মানসে মননে রেখাপাত করে যেত, যেমন করে বেলাভূমির ভেজা মাটিতে বিচরণ করা পাখিরা তাদের পায়ের রেখাঙ্কিত ছাপ রেখে যায়। পরবর্তী ঢেউ এসে সে ছাপ মুছে না দেয়া পর্যন্ত রয়ে যায়!

লিখতে বসেছিলাম প্রয়াত শিল্পীকে নিয়ে, তার গান নিয়ে। লিখা হয়ে গেল অনেকটা নিজের স্মৃতিকথা! সঙ্গীত ও স্মৃতি গোপনে একের সাথে অপরের গাঁটছড়া বেঁধে নেয়। মানুষ সঙ্গীত ভালোবাসে শুধু কথা ও সুরের জন্যেই নয়, তার সাথে আঁকড়ে থাকা স্মৃতির জন্যেও। সঙ্গীত ভালো লাগলে মানুষ তার সাথে সংশ্লিষ্ট স্মৃতিকে জড়িয়ে রাখে, স্মৃতি ভালো লাগলে মানুষ তাকে সংশ্লিষ্ট সঙ্গীতের আশ্রয়ে রাখে। সদ্য প্রয়াত এই গুণী শিল্পীর মাগফিরাত কামনা করছি। পরপারে তিনি শান্তিতে থাকুন, আর তার গানের মাধ্যমে দীর্ঘকাল তার ভক্তদের হৃদয়ে, স্মরণে ও ভালোবাসায় বেঁচে থাকুন!

ঢাকা
১১ ফাল্গুন ১৪৩০
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
শব্দ সংখ্যাঃ ৯২৯

(গান তো শোনাতে পারবো না, তাই ফাল্গুনের রাতে আমার তোলা পূর্ণিমার মায়াবী চাঁদের কিছু ছবি দিলাম, আর শিল্পীর গানের একটা ভিডিও লিঙ্কঃ
https://www.youtube.com/watch?v=YKHvHqbJtiE)





মাধবী রাত, মায়াবী চাঁদ....
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, রাত দশটা পাঁচ।


মাধবী রাত, মায়াবী চাঁদ....
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, রাত দশটা সাত।


মাধবী রাত, মায়াবী চাঁদ....
২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, রাত আটটা আটাশ।


মাধবী রাত, মায়াবী চাঁদ....
২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, রাত আটটা আটাশ।

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০২

রানার ব্লগ বলেছেন: প্রথম ও দ্বিতীয় ছবি টা আমাকে জোৎস্নার চাদরে ঢেকে দিয়েছে। মন ছুটে গেছে কোন এক জোছনা রাতের নির্জন প্রান্তে।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: বাহ, খুব সুন্দর করে বলে গেলেন কথাটা! অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রথম মন্তব্যটির জন্য। +

২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

নীল-দর্পণ বলেছেন: প্রথম ছবিটা খুব চমতকার। ৩নং ঘটনা পড়ার সময় এই ছবিটার সাথে মিলিয়ে মনে হচ্ছিল আমি সেই সময়টা উপলব্ধি করতে পারছি, দেখতে পারছি। টুকরো টুকরো স্মৃতি খুব ভালো লাগলো।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:২৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: লিখতে বসেছিলাম প্রয়াত শিল্পীকে নিয়ে, তার গান নিয়ে। লিখা হয়ে গেল নিজের স্মৃতিকথা!
মা্নুষ গান ভালোবাসে শুধু কথা ও সুরের জন্যেই নয়, তার সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতির জন্যেও।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮

শায়মা বলেছেন: এই গান মনে হয় আমিও শুনেছি। তবে রংপুরের কথা লিখলে ভাইয়া আমারও মনে পড়ে গেলো রংপুরের স্মৃতি। শৈশব কৈশোর ও বড়বেলাতেও আমি রংপুরে গেছি। কারমাইকেল কলেজ, বেগম রোকেয়ার বাড়ি, জমিদারবাড়ি নিউ মার্কেট সবই আমার চেনা। :)

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "এই গান মনে হয় আমিও শুনেছি" - শুধু 'মনে হয়' কেন? আমি তো ভেবেছি যে এই গানটি আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন। কেননা, আপনার বিভিন্ন পোস্ট এবং মন্তব্য/প্রতিন্তব্য পড়ে আমার ধারণা হয়েছে যে আপনি এ কালের, সে কালের এবং তারও পূর্বকালের গান শুনেন এবং শুনতে পছন্দ করেন।

পোস্টটি আপনাকে রংপুরের স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে জেনে প্রীত হলাম। রংপুরের সে সব স্মৃতি নিয়ে একটা পোস্ট লিখে ফেলেন; আমি মনযোগ সহকারে পড়বো।

৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: গানটা সুন্দর।
রংপুর আর গাইবান্ধা আমি কখনও যাইনি।
শুনেছি রংপুর যেতে নাকি ৮ ঘণ্টা সময় লাগে বাসে।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: কম করে হলেও দশ ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ যখন যমুনা সেতু ছিল না, আরিচা-নগরবাড়ী ফেরিঘাট দিয়ে যাতায়াত করতে হতো, তখনও এর চেয়ে কম সময়ে যেতাম। আজ থেকে ৫০ বছর আগেও ৮/৯ ঘণ্টায় যাওয়া যেত।

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: শুধু একটা মাত্র গান আর তাঁর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে জীবনের কত-শত স্মৃতি!
চমৎকার

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: "শুধু একটা মাত্র গান আর তাঁর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে জীবনের কত-শত স্মৃতি!" - সঙ্গীত ও স্মৃতি গোপনে একের সাথে অপরের গাঁটছড়া বেঁধে নেয়। সঙ্গীত ভালো লাগলে মানুষ তার সাথে সংশ্লিষ্ট স্মৃতিকে জড়িয়ে রাখে, স্মৃতি ভালো লাগলে মানুষ তাকে সংশ্লিষ্ট সঙ্গীতের আশ্রয়ে রাখে।

চমৎকার মন্তব্য ও প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:০২

ঢাবিয়ান বলেছেন: খুব ভাল লাগলো আপনার পুরানো স্মৃতি । রেডিওর কথার মনে পড়ল আশির দশকে স্কুলে পড়তাম। রেডিও সেই সময়েও খুব জনপ্রিয় ছিল। অনুরোধের আসর , ওয়ার্ল্ড মউজিকের নিয়মিত শ্রোতা ছিলাম। প্রিয় কোন গান আশে পাশে কোথাও বাজলে কেমন লাগে , বেশ বুঝতে পারছি।

রেডিওর সাথে কত যে স্মৃতি জড়ানো আমাদের শৈশবের । আপনি / ব্লগার শেরজার প্রতি অনুরোধ থাকল ৭০/৮০ দশকের রেডিও বাংলাদেশ নিয়ে একটা স্মৃতিচারন পোস্ট দিন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্য ও প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

আমি তো আরও আগের মানুষ; আমাকে ষাট কিংবা সত্তর এর দশকের রেডিও বাংলাদেশ নিয়ে স্মৃতিচারণ পোস্ট দিতে বললে যথোপযুক্ত হতো। যাহোক, যে গান শোনে, সে সব সময়ের গানই শোনে। আশি-নব্বই এর দশকেও রেডিওর গান শুনেছি। তাই আপনার অনুরোধটি বিবেচনায় রাখলাম, তবে একটু দেরি হতে পারে। শেরজা তপন হয়তো দ্রুতই একটা পোস্ট দিতে পারবেন এ বিষয়ে।

৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০০

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


স্মৃতিময় একটি পোস্ট।

উনি আমার খুব প্রয় একজন গায়ক ছিলেন।

ছবিগুলো ভালো লেগেছে। চাঁদের ছবি দেখলে বুকে টান লাগে।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "স্মৃতিময় একটি পোস্ট" - জ্বী, প্রয়াত শিল্পীকে নিয়ে, তার গান নিয়ে লিখতে গিয়ে লিখা হয়ে গেল অনেকটাই নিজের স্মৃতিকথা!

"চাঁদের ছবি দেখলে বুকে টান লাগে" - চাঁদের প্রভাবে সমুদ্রে জোয়ার ভাটা হয়। মানুষের বুকে কিছুটা টান লাগাটাই তো স্বাভাবিক।

৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১

আরাফআহনাফ বলেছেন: অসাধারন স্মৃতিচারণ!!
এমন আরো কিছু স্মৃতির ভান্ডার আমাদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন, ব্লগে স্মৃতিচারণ আমি মাঝে মাঝেই করে থাকি। আপনার এই অনুরোধটাকেও আমি মাথায় তুলে রাখলাম। চেষ্টা করবো ইন শা আল্লাহ।
মন্তব্যে স্মৃতিচারণের প্রশংসার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা, ওকে। বেশি কেউ কিছু বলেন নাই অবশ্য।

১০| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:০০

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: গানটা আমিও ইউটিউবে বহুবার শুনেছি। কয়েকটা ভার্সন শুনেছি। হাসিনা মমতাজেরটাসহ। সোনাবীজের ইউটিউব চ্যানেলেও একটা ভার্সন শুনেছিলাম। ভীষণ প্রিয় গান। গান ঘিরে আপনার স্মৃতিচারণ ভালো লাগল।।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: হাসিনা মমতাজ এর এ গানটা ফেরদৌস আরাও খুব সুন্দর গেয়েছেন।
মন্তব্য ও প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৪

মিরোরডডল বলেছেন:




এই গান ছোটবেলায় বাবাকে শুনতে শুনেছিলাম।

বাংলাদেশের কত জায়গায় যে গিয়েছি কিন্তু নর্থ বেঙ্গলের ওদিকটায় কখনও যাওয়া হয়নি।

ট্রেইন জার্নি ভালোই লাগে কিন্তু বহু বছর হয়েছে দূরপাল্লার কোথাও ট্রেইনে করে যাওয়া হয়নি।
তাই কেমন যে লাগে সেটা ভুলেই গেছি।

ব্লগে আগের চেয়ে কম আসা হয়, আবার এলেও কম সময় থাকা হয়।
এদিকে পোষ্ট এখন অনেক বেশি হয়, কোনটা রেখে কোনটা পড়বো, তাই অনেক সময় মিস হয়ে যায়।
সব দেখা হয়না কোথায় কোন পোষ্ট এসে চলে যাচ্ছে।

মায়াবী চাঁদের প্রথম দ্বিতীয় ছবিগুলো সুন্দর।



২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: এই গান ছোটবেলায় বাবাকে শুনতে শুনেছিলাম - জ্বী, এটা ছিল সত্তরের দশকের একটি জনপ্রিয় গান। কিন্তু তখন আমার গানটি তেমন ভালো লাগতো না; অত্যধিক শুনতে শুনতে অনেকটা পঁচে গিয়েছিল বলে হয় তো। তবে আমার ভালো লাগা বা না লাগার উপরে গানটির জনপ্রিয়তার অদম্য ঘোড়াটি কিন্তু থেমে থাকে নি। :)

"ট্রেইন জার্নি ভালোই লাগে কিন্তু বহু বছর হয়েছে দূরপাল্লার কোথাও ট্রেইনে করে যাওয়া হয়নি। তাই কেমন যে লাগে সেটা ভুলেই গেছি" - এর পরের বার যখন দেশে আসবেন, তখন ঢাকা টু কক্সবাজার সরাসরি ট্রেনে চলে যাবেন। সিডনির সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়ানোর পর হয়তো কক্সবাজার বীচ আপনাকে আকর্ষণ করবে না। তবে শুধুমাত্র ট্রেন জার্নিটা উপভোগ করার জন্য ট্রিপ টা নিতে পারেন। আমিও সে কারণেই কাল যাচ্ছি ইন শা আল্লাহ। শুনেছি ট্রেন জার্নিটা সুদীর্ঘ হলেও ক্লান্তিকর লাগে না।

১২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিময় পোষ্ট !!

০৩ রা মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে, পোস্টের প্রশংসা করার জন্য। মন্তব্যে ও প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত।

১৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,





মাধবী রাতের গানের সাথে জোড় মিলিয়ে অনবদ্য মায়াবী চাঁদের ছবি যেন স্বপ্নের স্মৃতি ছড়িয়ে দিয়ে গেছে।

গানটি আমিও ছোট বেলায় রেডিও / ট্রানজিষ্টরে শুনেছি। খুব সুন্দর ও মিষ্টি একটি গান। সেই গানের পাখিটির হারিয় যাওয়ার কথা শুনে খারাপ লাগলো। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আর শেষ প্যারায় গানের প্রতি ভালোবাসার কারন নিয়ে যা বলেছেন , একদম ঠিক বলেছেন।
ছবিগুলো অপূর্ব হয়েছে, বিশেষ করে রাত দশটা পাঁচ ও সাতের ছবি দু'টো।

০৫ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর, প্রেরণাদায়ক মন্তব্য।
গান ও অনবদ্য মায়াবী চাঁদের ছবি, উভয়ে জোড় মিলিয়ে স্বপ্নের স্মৃতি ছড়িয়ে দিয়ে গেছে জেনে অত্যন্ত প্রীত বোধ করছি। বিশেষ করে প্রথম দুটো ছবির প্রশংসায় বাধিত হলাম।
অনেক ধন্যবাদ, চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য।

১৪| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২০

জাহিদ অনিক বলেছেন: আহা দারুণ লেখা স্মৃতিকথা। একটা গান মানুষের মনে গেঁথে থাকে। আপনি যেন পুরো একটা গানের স্মৃতি নিয়ে অনেক বড় একটা টাইমলাইন মুহূর্তের মধ্যে ঘুরে এসে আমাদের সাথে সেসব থেকে কিছু মুহূর্ত শেয়ার করলেন। ভাল লাগলো অনেক বেশি তন্দ্রাহারা
এই মাধবী রাতের পোস্ট।

লেখা আর ছবি সবকিছুতেই ভালোলাগা শ্রদ্ধেয় কবি।

০৫ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "একটা গান মানুষের মনে গেঁথে থাকে। আপনি যেন পুরো একটা গানের স্মৃতি নিয়ে অনেক বড় একটা টাইমলাইন মুহূর্তের মধ্যে ঘুরে এসে আমাদের সাথে সেসব থেকে কিছু মুহূর্ত শেয়ার করলেন। ভাল লাগলো অনেক বেশি তন্দ্রাহারা এই মাধবী রাতের পোস্ট" - অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন, চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য।

১৫| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৯

করুণাধারা বলেছেন: তন্দ্রাহারা নয়ন আমার... গানটা শুনেছি, কিন্তু এমন মনোযোগ দিয়ে নয়। এই গানের সাথে সম্পর্কিত আপনার স্মৃতিগুলো করতে করতে গানটাকে আবার নতুন করে বুঝতে পারলাম।

একটা বিশেষ গান এবং তার সঙ্গে জড়িত পুরনো দিনের স্মৃতি, এই নিয়ে আপনি আগেও পোস্ট দিয়েছেন। অবশ্য এখন আমি "কোরা কাগজ" ছাড়া আপনার আর কোন গান পোস্টের কথা মনে করতে পারছি না!

এই পোস্টগুলো অন্য ধরনের পোস্ট, একই সাথে গান এবং সেই গানের সাথে জড়িয়ে একজন মানুষের আবেগের গল্প! আপনি চাইলে সবগুলো একসাথে রাখতে পারেন লিঙ্ক দিয়ে।

প্রথম তিনটা ছবি বেশি ভালো লেগেছে কারণ সেখানে কেবলই চাঁদের মায়াবী আলো। শেষ দুটো ছবিতে গাছের পাতায় কৃত্রিম আলোর কারণে চাঁদের আলো তেমন মায়াবী বলে মনে হচ্ছে না। অবশ্য এটা কেবল আমার মনে হওয়া।

পোস্টে লাইক।

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "কোরা কাগজ" এর কথা আপনার এখনও মনে আছে দেখে যুগপৎ বিস্মিত ও আনন্দিত হলাম। আমার মনে হয় প্রতিটি মানুষই যারা গান ভালবাসে, তারা গান শুনতে শুনতে গানের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিগুলোকেও স্মরণ করে।

চাইলে তো কত কিছুই করতে পারি, এবং কত কিছু করতেও ইচ্ছে হয়, কিন্তু এ বয়সে চাইলেও অনেক কিছুই করা যায় না। এর একটা বড় কারণ, আপনার মত ততটা না হলেও, আমিও কিছুটা পারফেকশনিস্ট। যার ফলে অনেক কিছুই কিছু কিছু করে শুরু করলেও, ঠিকভাবে আর শেষ করতে পারি না বিধায় পোস্ট করা হয় না।

"অবশ্য এটা কেবল আমার মনে হওয়া" - আপনার মনে হওয়াটা সঠিক, এবং সেটা আমারও মনে হয়। কিন্তু ছবিগুলো যখন তুলেছিই, এবং সেগুলো কষ্ট করে পোস্ট করেছি, শিরোনাম দিয়েছি, তাই সেগুলোকে আর মুছে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে না।

অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন, চমৎকার মন্তব্য এবং পোস্টে 'লাইক' দেয়ার জন্য।

১৬| ১৪ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:১৭

মিরোরডডল বলেছেন:




ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেইন জার্নির পোষ্টের অপেক্ষায় আছি কিন্তু!
ভ্রমণ পোষ্টে বেশি বেশি ছবি চাই।


১৭ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আজকাল কি যে হয়েছে, কেন যেন আর কিছুই লিখতে ইচ্ছে হয় না!

এ ব্লগটা একসময় আমার মনোজগতে দখিনের খোলা জানালা হয়ে আবির্ভূত হয়েছিল; সে জানালা দিয়ে মৃদুমন্দ সুবাতাস বয়ে আসতো। আমি উজ্জীবীত হতাম। উচ্ছ্বাসভরে অনেক কিছুই লিখতামও সে সময়ে। আজও জানালা খোলা রয়েছে, বাতাসও বয়ে আসে; তবে সেটা মৃদুমন্দ সুবাতাস নয়। কখনো দমকা বাতাস, কখনো বুড়িগঙ্গার তীরের মত পূঁতিগন্ধময় বাতাস।

ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেন জার্নিটা আমার তেমন ভালো লাগেনি, আমি হতাশ হয়েছি। তাই ফেরার সময় প্লেনে এসেছি। আমরা ভালো কোনকিছুই বেশিদিন ধরে রাখতে পারি না। ট্রেনের পরিবেশ নোংরা ছিল। ছবি তোলার জন্য জানালা উপরে তুলতে গিয়ে নিজের হাত ময়লা করেছি। অথচ এ ট্রেনের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক বেতনভুক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছে। তারা শুধু কাজীর গরু হিসেবে কাজীর খাতায়ই রয়েছে, গোয়ালে নেই।

ট্রেনের টয়লেট ফ্ল্যাশবাটন কাজ করছিল না। আমার মাথার উপরের পাখাটা কাজ করছিল না। এ্যাটেনড্যান্টকে ডেকে দেখালে সে কিছুটা গা-ছাড়া স্বভাবের প্রচেষ্টার নমুনা প্রদর্শন করে বললো, ফ্যানটা খারাপ হয়ে গেছে। এ ধরনের স্পেশাল ট্রেনে দুই একজন ইলেকট্রিকাল স্টাফ ট্রেনে অন ডিউটি থাকার কথা। তাদেরকে খবর দিলেও হয়তো তারা কেউ এসে ঠিক করে দিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু এ্যাটেনড্যান্টের সে তৎপরতাটুকু দেখানোর সময় ছিল না। সে ছিল আপন স্বার্থসিদ্ধিতে অন্য ধান্দায় ব্যস্ত। অবশ্য এখানে বোধহয় উল্লেখ করা উচিত যে আমি সেদিন কোন এসি কোচ কিংবা প্রথম শ্রেণীতে ভ্রমণ করিনি। আমি গিয়েছিলাম দলে বলে একটা সিনিয়র সিটিজেন গ্রুপের সাথে (কিছু বাচ্চাকাচ্চাও অবশ্য ছিল), আম জনতার শ্রেণীতে। উচ্চতর শ্রেণীগুলোতে হয়তো পরিস্থি্তি এতটা খারাপ হবে না।

অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না বলে কোন ভ্রমণপোস্ট অথবা ছবিব্লগ দেই নি। তার উপর লিখার অনীহা তো রয়েছেই। তবুও, আপনি যখন বলেছেন, অনুরোধটা গোণায় রাখলাম। ছবি অনেক তুলেছি, কিন্তু ছবিগুলোতে মুখের আধিক্য। মুখ কেটেকুটে ছবি দিতে গেলে ছবির আর কিছু থাকে না। তবুও দেখবো।

ফিরে এসে পুনঃমন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১৭| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৬:২৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: পোষ্টটি দেখেছিলাম, পরে পড়ব ভেবে রেখেছিলাম। আজ পড়লাম।

আপনার স্মৃতিচারণ পড়ে আমিও চলে গিয়েছিলাম সেই সময়টাতে, কল্পনায় দেখতে চেষ্টা করলাম আপনাদের বাড়ির নিকটস্থ সেই ছোট্ট স্টেশনটি, পুরনো বাড়ি, স্টেশন আমাকে দারুণভাবে টানে। স্টেশনটি কি এখনো আছে? গানটি আমি ইউটিউবে শুনার চেষ্টা করব। প্রিয় শিল্পিকে নিয়ে লেখা, স্মৃতিচারণ আর সাথে ছবিগুলো দুর্দান্ত লাগল।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৬:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আজ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। জ্বী হ্যাঁ, আমাদের বাড়ির নিকটস্থ সেই ছোট্ট স্টেশনটি আজও চালু অবস্থায় বিদ্যমান। মন্তব্য থেকে বুঝতে পারলাম, আমার বর্ণনাটা আপনার মনে একটা ছবি এঁকে দিয়েছে। প্রীত হলাম। উদার প্রশংসায় প্রাণিত।

১৮| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:৪৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: @ইসিয়াক,
আমি লক্ষ্য করেছি যে যদিও আপনি আমার এ পোস্টে কোন মন্তব্য করেন নাই, তথাপি আপনি পোস্টটি লাইক' করেছেন, এমনকি 'প্রিয়' তেও তুলে রেখেছেন।
যেহেতু আপনি আমার এ পোস্টে কোন মন্তব্য করেন নাই, সেহেতু আমিই একটা নতুন মন্তব্য নিয়ে এলাম, আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানোর জন্য।

১৯| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০

আলামিন১০৪ বলেছেন: পুরনো অনেক লেখায়, ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের কথা জানা যায় যা আপনার লেখাতেও এসেছে, ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড আসলে কোন ডিপার্টমেন্ট ছিল একটু বিস্তারিত বলবেন কি?

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:২৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের ব্যাপারে জানার জন্য একটি পুরনো পোস্টে আপনার আগ্রহ ব্যাক্ত করায় প্রীত হলাম। আমার সাধারণ জ্ঞানমতে উপস্থিত যা জানি, প্রথমে সেটাই জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ দেশের প্রতিটি জেলায় (তখন মোট ১৬টি, পরে টাঙ্গাইল নতুন জেলায় রূপান্তরিত হবার পর ১৭টি জেলা ছিল) জেলা পরিষদ নামে একটি প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান ছিল। প্রতিটি জেলার জনগণের ভোটে এ পরিষদ নির্বচিত হতো। সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বচনটি হয়েছিল ১৯৬৬ সালে। জেলায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা (মূলতঃ ঘনবসতি এলাকায় ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তার পাশে টিউব ওয়েল বসানো) ইত্যাদি অন্যান্য জনহিতকর কাজ সম্পাদন করাই ছিল এ পরিষদের কাজ। এই 'জেলা পরিষদ' কর্তৃক নির্মিত রাস্তাগুলোই জনগণের মুখে মুখে 'ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তা' নামে অভিহিত হতো। রাস্তাগুলো আনকার্পেটেড (পীচ ঢালা নয়) ছিল, মাটি ফেলে পরিপার্শ্ব থেকে বেশ কিছুটা উঁচুতে। তবে সেগুলো খুব চওড়া ছিল, যেন পাশাপাশি দুটো গরুর গাড়ি অনায়াসে ক্রসিং করতে পারে।
আপনার ঔৎসুক্যকে সম্মান জানিয়ে আমি নিজেই গুগল ঘেঁটে (যেটা আপনিও অতি সহজে করতে পারতেন) নিম্নোক্ত তথ্যগুলো উদঘাটন করতে পেরেছি ( তথ্যসূত্রঃ Click This Link)

"জেলা পরিষদ ইতিহাস
১৮১৬ এবং ১৮১৯ সালের স্থানীয়ভাবে ফেরী ব্যবস্থাপনা ও রক্ষনাবেক্ষণ, সড়ক/ সেতু নির্মাণ ও মেরামতের জন্য বৃটিশ সরকার কর্তৃক কর ধার্যের আইন প্রণীত হয়। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর দেশের অর্থনীতি ও আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে বৃটিশ সরকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে এবং ১৮৭০ সালে বেঙ্গল চৌকিদারী আইন প্রণয়ন করে।

১৮৭০ সালে গ্রাম চৌকিদারী আইন পাশের মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে এক স্তর বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়।

১৮১৭ সনে তৎকালীন বৃটিশ লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে জিলা বোর্ড সেস কমিটি বিল উত্থাপিত হয় এবং ঐ বছরেই তা আইনে পরিণত হয়। এ আইনের অধীন প্রতিটি জেলায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলা বোর্ড সেস কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি প্রধান কাজ ছিল করের হার নির্ধারণ, কর আদায় এবং রাস্ত্মাঘাট নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় মেরামত কাজে অর্থ ব্যয় করা। ১৮৭১ সালে দশম বেঙ্গল এ্যাক্ট এর অধীনে একটি রোড কমিটি গঠিত হয়। ১৮৭১ সাল হতে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত্ম এ কমিটির অস্ত্মিত্ত্ব ছিল। স্থানীয় সরকার গঠনের এটিই ছিল প্রাথমিক পদক্ষেপ।

সেস কমিটির অভিজ্ঞতার আলোকে ১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ গভর্ণমেন্ট এ্যাক্ট প্রণীত হয় এবং রোড সেস কমিটির বদলে জেলা বোর্ডের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সরকার গঠনে এ এ্যাক্টই উপমহাদেশে যুগান্তকারী অবদান রাখে।

১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ গভর্নমেন্ট এ্যাক্ট বলে তৎকালীন বাংলায় ১৬টি জেলায় বিভিন্ন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড গঠিত হয়। ঢাকা, চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, যশোর, খুলনা,হুগলী, হাওড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, ফরিদপুর,পাবনা ও পাটনা। ১৮৮৬ সালের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৯২০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত্ম ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট পদাধিকার বলে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হতেন। ১৯৩৬ সনে লোকাল লোকাল সেলফ গভর্নমেন্ট এ্যাক্ট এর সংশোধিত আইনে লোকাল বোর্ডের বিলুপ্তি ঘটে। পরবর্তী পর্যায়ে নির্বচিত চেয়ারম্যান নিযুক্তির মাধ্যমে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড জনপ্রতিনিধিত্বশীল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপলাভ করে এবং এ ধারা ১৯৫৭ সন পর্যন্ত্ম বলবৎ থাকে।

১৯৫৯ সনে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশের অধীন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডকে নতুন আঙ্গিকে পরিণত করে। ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল নামকরন করা হয়। এ ব্যবস্থায় ১৯৬৩ সালে জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন হয়। দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ ১৯৬৬ সনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর স্বাধীনতা পরবর্তী কালে ১৯৭২ সনে নির্বাচিত পরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে জেলা প্রশাসককে এর প্রশাসক করে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের যাবতীয় কার্যাবলী পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা অর্পণ করা হয় এবং ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের স্থলে জেলা বোর্ড নামকরণ করা হয়। ১৯৭৬ সনের স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ জারী করা হয় এবং জেলা বোর্ডের নামকরন করা হয় জেলা পরিষদ স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইন,১৯৮৮ এর ধারা ৪(১) অনুযায়ী প্রতিনিধি সদস্য, মনোনীত সদস্য, মহিলা সদস্য এবং কর্মকর্তা সদস্যগনের সমন্বয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হয়।"

আশাকরি, আপনার ঔৎসুক্য কিছুটা হলেও মেটাতে পেরেছি।

২০| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:১৮

আলামিন১০৪ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য, জানতে পারলাম জেলা বোর্ডের ইতিহাস যা এখন বিবর্তিত হয়ে জেলা পরিষদ হয়েছে। একটা ছোট জিজ্ঞাস্য, আমাদের রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত প্রকৌশল অধিদপ্তর যেমন সড়ক ও জনপথ (যা পুর্বকালে সিএন্ডবি ছিল), এলজিইডি/ডিপিএইচই থাকতে রাস্তাঘাট নির্মাণে কিংবা অন্যান্য প্রকৌশলগত উন্নয়নমূলক কাজে জেলা পরিষদ বা উপজেলা পরিষদকে আলাদাভাবে নিযুক্ত করার কারণ কি হতে পারে বলে আপনার ধারণা?

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: এ ব্যাপারেও কাগজপত্র না ঘাঁটাঘাটি করে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়া সম্ভব নয়।
বোধকরি এলজিইডি/ডিপিএইচই তখন ছিল না, থাকলেও অন্য নামে ছিল; আপনি নিজেই সঠিকভাবে যেমনটি বলেছেন যে রোডস এ্যান্ড হাইওয়েজ পুর্বকালে সিএন্ডবি (কন্সট্রাকশন এ্যান্ড বিল্ডিং) নামে পরিচিত ছিল।
আমার ধারণা মতে, তখনকার ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডগুলো খুব বড় ধরণের কোন প্রকল্প হাতে নিত না। স্থানীয়ভাবে করারোপ করে (যেমন জমির খাজনা, জলমহালের খাজনা ইত্যাদি) ওরা যে অর্থ সঞ্চয় করতো, তার কিছুটা সরকারের রাজস্ব বিভাগে জমা দিয়ে বাকিটা দিয়ে সরকারের অনুমোদনক্রমে ছোট ছোট জনহিতকর প্রকল্প বাস্তবায়ন করতো। কোন এক টার্মে একটি এলাকায় রাস্তা ৩/৪ কিঃমিঃ এর বেশি হতো না। আর রাস্তাগুলো নির্মাণ বা সংস্কার করা হতো গ্রামের বা এলাকার শ্রমিকদের নিয়োগ করে শুধুমাত্র মাটি কেটে ও ফেলে, কোন কার্পেটিং কাজ করে নয়। স্বাধীনতার পর বিশেষ করে এরশাদ সরকারের আমলে এলজিইডি কর্তৃক ব্যাপকভাবে গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাট পাকা করার কাজ শুরু হয় এবং তা পরবর্তী সরকারগুলো কর্তৃক অব্যাহত রাখা হয়।

প্রসঙ্গান্তরে অনেক কথা হলো, এবারে পোস্টের মূল আলোচ্য বিষয় নিয়ে কিছু বলুন। গানটি কি আপনি শুনেছেন? শুনলে প্রথম কোথায়, কখন শুনেছিলেন?

২১| ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:২৬

আলামিন১০৪ বলেছেন: বোধ করি, তখনও এল আর ফান্ড ব্যাপারটা ছিল বার তা দিয়েও এসব জনহিতকর কাজ হতো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সময় নিয়ে আমার কৌতুহল নিবৃত্ত করার জন্য।
আর গান? আপনার কল্যাণেই ইউটিউবে শোনা হলো গানটি, আর মাধবী রাতের অর্থও গুগল করে জানতে পারলাম, বসন্তের রাত। গুগুল মামা ঠিক বলেছে তো নাকি? আরেকটি কথা আপনার দেওযা লিঙ্কটির ক্লিক অপশনটি দেখাচ্ছে না।

২৯ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৪১

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, গুগুল মামা ঠিকই বলেছেন।
"আরেকটি কথা আপনার দেওযা লিঙ্কটির ক্লিক অপশনটি দেখাচ্ছে না" -- তাই তো দেখছি, স্যরি। প্রতিমন্তব্যটি লেখার সময় তো আমি গুগুল দেখে এ নিবন্ধটি ঠিকই দেখতে পেয়েছিলাম।
পুনঃমন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.