![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
বালকটি একা একাই খেলতো। একদিন একটা সাইকেলের চাকার রিমের পেছনে এক টুকরো লাঠি দিয়ে ঠেলে ঠেলে মনের আনন্দে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের কাঁচা রাস্তা ধরে সে দৌড়ে বেড়াচ্ছিল। দৌড়াতে দৌড়াতে মফস্বলের রেল স্টেশনে পৌঁছে দেখে, একটা লম্বা ট্রেন প্রথম লাইনটাতে দাঁড়িয়ে আছে। তার অগ্রভাগে একটা কালো ইঞ্জিন মাঝে মাঝে ভোঁস ভোঁস করে তার চাকার কাছ দিয়ে সাদা ধোঁয়া (বাষ্প) আর মাথার উপর দিয়ে গাঢ় ধূসর রঙের ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। ভোঁস ভোঁস শব্দটা শুনে ইঞ্জিনটাকে তার কাছে খুব রাগী মনে হলো। ছেলেটা এক দৃষ্টিতে ট্রেনের বগিগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল, আর জানালা দিয়ে যতদূর দেখা যায়, মানুষগুলোকে দেখছিল। মুহূর্তেই কুউউ... শব্দ করে ইঞ্জিনটা এবারে গাঢ় কালো রঙের ধোঁয়ার একটা কুণ্ডলী আকাশে ছড়িয়ে দিয়ে চলা শুরু করলো। ছেলেটা সাত পাঁচ না ভেবেই হঠাৎ করে দৌড়াতে দৌড়াতে হ্যান্ডেল ধরে ট্রেনে উঠে পড়লো। তার সাথে আর কিছু ছিল না, শুধু সেই সাইকেলের চাকার রিম আর এক টুকরো লাঠি ছাড়া।
সেই থেকে ট্রেনটা চলছে তো চলছেই! সেটার গন্তব্য ঠিক কোথায়, ছেলেটা তা জানে না। কোথাও স্বল্প, কোথাও দীর্ঘ বিরতি নিয়ে ট্রেনটা ক্রমাগত ছুটে চলেছে। বিরতির সময় কোথাও কোথাও যাত্রীরা নেমে যাচ্ছে, আবার কোথাও নতুন যাত্রী উঠছে। তাদের সবার হাতে ধরা গাট্টি বোঁচকা, তাদের সবার চেহারায় উৎকণ্ঠা। ছেলেটার কাছে কিছু নেই, শুধু ঐ দুটো জিনিস ছাড়া। তার চেহারা নির্বিকার, নির্ভার। ছেলেটা আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলো, এ ট্রেনে দৃশ্যতঃ কোন টিকেট চেকার নেই, যে কেউ যেখানে খুশি উঠতে পারে, নামতেও পারে। তবে এ ট্রেনে কোন কুলি ওঠে না, যার যার বোঝা তাকেই নামাতে হয়। এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে ছেলেটা একসময় ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুমের মধ্যেও সে স্বপ্ন দেখছিল, সে চলছে তো চলছেই। চলতে চলতে এক সময় ট্রেনটা প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছে গেছে। এবারে সে তার খেলার জিনিস দুটো নিয়ে নামতে চাইলো।
ছেলেটা যখন নামতে চাইলো, তখন সে দেখলো যে সে চলৎশক্তিহীন। ইতোমধ্যে ট্রেনে একজন টিকেট চেকার এসে গেছেন। তার কাছে কোন টিকেট নেই, এ কথা ভেবে সে ভয় পেয়ে গেল। সে অনুনয় বিনয় করে বলতে চেয়েছিল কিভাবে সে ট্রেনে উঠেছিল। কিন্তু তার মুখ দিয়ে কোন স্বরই উচ্চারিত হচ্ছিল না। তবে টিকেট চেকার সাহেব যেন কিভাবে তার মনের কথাটা বুঝতে পেরে নিজ থেকেই জানালেন, এ ট্রেনে কেউ টিকেট কেটে ওঠে না। তবে নামার সময়ে ওনারা একটা খতিয়ান নেন, এতক্ষণ ট্রেনে বসে কে কী করলো, সেটা জানতে। ঘুম ভাঙার পর ছেলেটা দেখলো, সে আর ছেলে নেই, বুড়ো হয়ে গেছে। তার সম্পত্তি বলতে কিছু নেই। ছিল শুধু সেই সাইকেলের চাকার রিম আর এক টুকরো লাঠিটা, সেগুলোও কে যেন নামিয়ে নিয়ে গেছে।
এক সময় কিছু লোক এসে ধরাধরি করে তাকে ট্রেন থেকে নীচে নামালো। নির্জন প্লাটফর্মের পাশেই একটি খোলা মাঠে তাকে শুইয়ে দিল। সে মাঠে ছিল কয়েকটা বড় শিমুল পলাশের গাছ, আর কিছু ঝোপঝাড়। রাতে সেখানে জোনাক জ্বলতো, দিনে শিমুল পলাশের মাথায় আগুন জ্বলতো। ওরা যাবার আগে তাকে সালাম জানিয়ে বলে গেল, "আবার দেখা হবে"। কিন্তু কবে, কোথায়, কখন দেখা হবে- সেটা ওরা বললো না, কারণ সেটা ওরাও জানে না। বুড়োটা গতি ভালোবাসতো। তার জীবনে যা কিছু গতি সে পেয়েছে, তার সবটাই যুগিয়েছিল সেই সাইকেলের চাকার রিমটা। সেটাকে হারিয়ে অন্তর্মুখী বালকটির ন্যায় তার বুকে চাপা কান্না ডুকরে কেঁদে উঠতে চাইলো। কিন্তু তার চোখ দুটো তখন অশ্রুহীন হয়ে গেছে। তার বুক শূন্য ও অসাড়। তবে তার মন তখনও স্বপ্ন খোঁজে। তাই স্বপ্নপ্রিয় বুড়োটা আবার আপন মনে অন্তর্লীন হলো। আবার চোখ বুঁজলো, স্বপ্নলোকে ঘুরে ঘরে স্বপ্ন দেখার লোভে।
ঢাকা
১২ এপ্রিল ২০২৪
শব্দ সংখ্যাঃ ৫২৫
১২ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: হুম!
২| ১২ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৩২
ইসিয়াক বলেছেন: শূন্য এ বুকে পাখি মোর তুই ফিরে আয় ফিরে আয়....
আহারে মানব জীবন। চলতে চলতে শেষ। শূন্য হতে আসা শূন্যে মিলিয়ে যাওয়া তবু কত আস্ফালন।
এক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সোনার তরী" কবিতাটি মনে পড়ে গেল।এক জীবনে মানুষের কীর্তি ছাড়া আর কিছুই থাকে না।
পোস্ট ভালো লাগলো।
ঈদের / ইদের শুভেচ্ছা রইলো।
১২ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: ”দিনযাপনের সরল অংক মেলানো সহজ নয়,
ব্যাপক কাটাকুটির পর তা শুন্যতেই শেষ হয়” --- (জীবনের সরল অংক)
শূন্য হতে শুরু, শূন্যতে শেষ।
”মানুষের কীর্তি ছাড়া আর কিছুই থাকে না” - সঠিক।
এ লেখাটি আমার কিছু পরাবাস্তব ভাবনাকে শব্দরূপ দেয়ার একটি প্রাথমিক প্রচেষ্টা। লেখাটি পড়া এবং পড়ার পর আপন ভাবনাপ্রসূত মন্তব্যের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার জন্যেও রইলো পবিত্র ঈদুল ফিতর এর শুভেচ্ছা - ঈদ মোবারক!
৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৫৮
গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘ এবং বরকতময় আয়ু দান করুন আমীন।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৭:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমীন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১২
কাছের-মানুষ বলেছেন: পড়তে পড়তে যেন থমকে গেলাম মাঝে এসে। শব্দ চয়ন, বাক্য গঠন সব মিলিয়ে নিজের অনুভূতি সাবলীলভাবে লিখেছেন। আমার ভাল লাগা রইল।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে প্রীত হলাম। সদয় মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৫| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩০
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা স্যার আপনাকে।
জীবনের শাশ্বত নিয়মকে সুন্দর উপমাকারে গল্পের ন্যায় পরিবেশন করেছেন। চমৎকার গল্পে ভালোলাগা রইলো।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১১
খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। বরাবরের মত পোস্টে লাইক দিয়ে অনুপ্রাণিত করে গেলেন।
৬| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪১
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: সুন্দর লাগলো।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রীত হলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১
গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: এটা যে ৭০০ তম পোস্ট আগে লক্ষ্য করিনি।
৭০০তম পোস্টের জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: "এটা যে ৭০০ তম পোস্ট আগে লক্ষ্য করিনি" - এটা লক্ষ্য না করার কারণ রয়েছে। কারণটা হলো, আপনি যখন পোস্ট পড়েছিলেন এবং মন্তব্য করেছিলেন, তখন বিষয়টা শিরোনামে উল্লেখ করা ছিল না। সেটারও একটা কারণ আছে। আর সেটা হলো, সে তথ্যটা তখন আমার নিজেরই খেয়ালে ছিল না। পরে যখন সেটা খেয়াল করলাম, তখনই শিরোনামে ব্রাকেটে উল্লেখ করে দিলাম।
পুনঃ মন্তব্য এবং পুনঃ শুভেচ্ছা জানানোরর জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১২:০২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
প্রকান্ড ইতিহাস । আপনার পোষ্টের বিকাশ সাত শতে গিয়ে ঠেকেছে,
তুলনামুলকভাবে এই স্বল্প ব্লগ জীবনের মাঝেই । এ যে আমার কাছে
একেবারেই অকল্পনীয় । কিন্তু আপনিতো আমার কল্পনাকেও ছাড়িয়ে
গেছেন । টুপি খোলা কুর্নিশ রইল তব প্রতি । অভিনন্দন সেতো আছেই।
বালকটি একা একাই খেলতো। এতটুকু পাঠেই আমাকে নিয়ে গেল সেই বাল্য
স্মৃতিতে । এ তো কোন স্বপ্ন নয় এ যে একেবারে বাস্তব । মনে পড়ে বাঁশের চিকন
চটিকে মিহি করে ভাল করে চেছে ছুলে গোলাকার করে সুতা দিয়ে ভাল করে বেঁধে
সাইকেলের চাকার মত রিং তৈরী করে তারপরে ছোট একটি কাঠি হাতে নিয়ে তা দিয়ে
মাঝে মাঝে ঠেলা দিয়ে দৌঁড়াতাম রাস্তা ধরে । ঠিক নীচে দেখানো ছবিটির মতই ।
রাস্তা ধরে ছুটতে ছুটতে থামতাম গিয়ে রেল লাইনের ধারে । দেখতাম রেল লাইনের উপর কাল কুচকুচে
কয়লার ইঞ্জিন তার পেটে পানি ঢুকাচ্ছে বিশেষ প্রকারে । কাছের সুতিয়া নদী হতে পাম্প দিয়ে পাইপে
করে পানি নেয়া হত বড় একটি অভারহেড ট্যাঙকে , সেখান হতে বিশেষ পদ্ধতিতে পানি ডালা হত
কয়লার ইঞ্জিনের পেটে ।
পানি নেয়া শেষ হলে ভোস ভোস শব্দ করে ইঞ্জিন পুণরায় গিয়ে জোড়া লাগত ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা
বগীগুলির সাথে । অনেক দিনই সাহস করে ট্রেনের বগীতে চেপে কিছুদুর গিয়ে ধীরগতিতে চলা চলন্ত
ট্রেন হতে নেমে যেতাম । গতি বেশি হয়ে গেলে উপায়ান্তর না পেয়ে ইতিহাসের সাক্ষি কয়লার ইঞ্জিনের
কাল ধোয়া চোখে মুখে মেখে বাহিরের দৃশ্য দেখে দেখে আনন্দিত মনে চলতাম সামনের পানে।
পরের স্টপেজে গিয়ে নেমে পড়তাম। পরে ফিরতি কোন ট্রেনে কিংবা পায়ে হেটে ফিরে আসতাম বাড়ীতে ।
বিনা টিকেটে চলার জন্য অবশ্য মাঝে মাঝে টিকেট চেকারের ধমক খেতাম । পরের স্টপেজে নেমে পড়ার
কথা বললে সে নামিয়ে দিত যত্ন করে, সাথে আর এরকমভাবে ট্রেনে না চাপার জন্য উপদেশ দিত বেশ
শক্ত করে । যাহোক, হ্যাঁ সেই সাইকেলের চাকাটি নিতে ভুলতামনা কিছুতেই । তাই বলছি এ স্পপ্ন নয় এযে
খাটি বাস্তব একটি কাহিণীর স্বপ্নিল সুন্দর বর্ণনা মাত্র । বালকটির জবানীতে নীজ জীবনে সেইযে ট্রেনে চলার শুরু
ও পরবর্তীতে জীবন চলার পথে নিয়মিত চলমান ঘটনা হয়ে থাকার বিবরণ সুন্দরভাবে মুর্ত হয়ে উঠেছে আপনার
সাত শততম বছরের স্বারক চিহ্ন হিসাবে প্রকাশিত লেখাটিতে ।
পোষ্টটি প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
বাংলা নব বর্ষের শুভেচ্চা রইল
১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার পোষ্টের বিকাশ সাত শতে গিয়ে ঠেকেছে, তুলনামুলকভাবে এই স্বল্প ব্লগ জীবনের মাঝেই -- জ্বী, এ মাইলফলকে পৌঁছতে তাও সাড়ে আট বছর লেগে গেছে।
আপনার পোস্টকৃত ছবিগুলো দেখে এবং তার বিবরণ পড়ে পুনরায় আমার মনে শৈশবের স্মৃতি জাগ্রত হলো।
অতি চমৎকার মন্তব্য, লাইক এবং পোস্টটি "প্রিয়"তে নেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
অসাধারণ লেখনী।
আপনার কূটনীতিক জীবন নিয়ে পোস্ট দিলে আমরা অনেক কিছু জানতে পারবো।
১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক আগের কথা। স্মৃতি রোমন্থন করে লিখতে হবে। আবার সব কথা লিখাও যাবে না। তবুও ভেবে দেখবো।
১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮
করুণাধারা বলেছেন: তার জীবনে যা কিছু গতি সে পেয়েছে, তাই সবটাই যুগিয়েছিল সেই সাইকেলের চাকার রিমটা..
আপনার উল্লেখিত বালকের মতো, আমাদের সবার জীবনেই এমন একটা সাইকেলের চাকার রীম থাকে, তা আমাদের জীবনকে গতি দেয়, ছুটে চলার প্রেরণা যোগায়। তারপর একসময় সেই রীমটা হারিয়ে যায় আমাদের থেকে, জীবনে ছুটে চলার অনুপ্রেরণার সমাপ্তি ঘটিয়ে...
জীবনের নানা পর্যায়ে পোঁছে দেয়া রেলগাড়ি তখন আমাদের শেষ স্টেশনে পৌঁছে দেয়, ট্রেনে উঠে পড়ে নতুন কোন যাত্রী।
রূপকের মাধ্যমে আমাদের জীবনের ছবি চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। পড়তে পড়তে মনে হয়, আমিই সেই বালক!!
রেলগাড়ি, স্টেশন এইসব আপনার ভাবনার জগতে নানাভাবে আসে। এই নিয়ে আপনি নানা ধরণের লেখা লিখেছেন। এই লেখা একদম অন্যরকম, প্লাস।
সাতশো পোস্ট লেখার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। এটা বেশ কঠিন কাজ, আমার জন্য দুঃসাধ্য।
১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট থেকে উদ্ধৃতির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। সমনযোগ পোস্ট পাঠ ব্যতীত এতটা নিখুঁত এবং ডিটেইলস নিয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। একজন পাঠকের মনযোগ লেখকের জন্য প্রেরণা।
"রূপকের মাধ্যমে আমাদের জীবনের ছবি চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। পড়তে পড়তে মনে হয়, আমিই সেই বালক"!! -- আপনার এ পর্যবেক্ষণ এবং অনুধাবনে প্রাণিত হ’লাম। মূল পোস্টে কোন পাদটীকা দিতে চাইনি; রূপকের কথা যখন বললেনই, তখন মনে হলো অমনযোগী (আপনার তুলনায়) পাঠকদের জন্য বোধহয় রূপকের এ ব্যাখ্যাগুলো পাদটীকা হিসেবে উল্লেখ করলে মন্দ হতো নাঃ
পাদটীকাঃ
সাইকেলের চাকার রিম<<< গতির উৎস, এগিয়ে যাবার প্রেরণা, সুখের প্রতীক।
লাঠির টুকরা<<< গতির সমন্বয়ক।
ট্রেন ভ্রমণ<<< জীবন পরিক্রমণ।
ভোঁস ভোঁস করা কালো ইঞ্জিন<<< জীবন পথের প্রধান পরিচালক, মা অথবা বাবা, যারা সংসারটাকে টেনে নিয়ে যান এবং যারা সাধারণতঃ রাগী হয়ে থাকেন।
প্রথম প্ল্যাটফরম<<< বয়ঃসন্ধিকালের একটা স্তর, যখন মানুষ একটু একটু করে জীবন সম্পর্কে ভাবতে শুরু করে, আবার কোন কিছু না ভেবেই একটা কিছু করে ফেলে (যেমন হঠাৎ করে ট্রেনে উঠে পড়া)।
শেষ প্ল্যাটফরম<<< জীবনাবসানের পরের স্তর।
টিকেট চেকার<<< মৃত্যুর ফেরেস্তা আযরাঈল (আঃ)।
প্লাটফর্মের পাশের খোলা মাঠ<<< ক্ববরস্থান। আগেকার স্টেশনগুলোর পাশেই একটি করে ছোট ক্ববরস্থান থাকতো, কারণ স্টেশনগুলোর অবস্থান সাধারণতঃ উঁচু জায়গায় হতো, যেন বৃষ্টি বা বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
"রেলগাড়ি, স্টেশন এইসব আপনার ভাবনার জগতে নানাভাবে আসে। এই নিয়ে আপনি নানা ধরণের লেখা লিখেছেন" - আপনার এ পর্যবেক্ষণটি সঠিক। অভিনন্দন এর জন্য ধন্যবাদ।
১১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৮
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: অভিনন্দন প্রিয় ব্লগার। ৭০০ টি পোস্টের মধ্যে ৭০০ টিই অত্যন্ত ক্লাসি পোস্ট। এটা সহজ কাজ নয়। শুধু শুভেচ্ছা জানালে কম হবে।
ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা।
১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকেও জানাচ্ছি পবিত্র ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের শুভেচ্ছা।
অভিনন্দন এবং পোস্টের প্রশংসায় অত্যন্ত প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
১২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:০৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আমারএকটি বেশ পুরানো পোষ্ট পদ্মা নদীতে গিয়ে কবি গোলাম মোস্তফার লিখিত প্রবন্ধ পদ্মা নিয়ে
আপনার আগ্রহের কথা বলে সম্ভব হলে আপনাকে লিংক দিতে বলেছিলেন। ৬০/৭০ বছর আগের লেখা
প্রবন্ধটিতে পদ্মা নদীর বিবরণ খুব সুন্দরভাবে লেখক তুলে ধরেছিলেন । লিংকটি খুঁজে পাইনি এখনো।
পেলে দিব আপনাকে ।
তবে নীজ সংগ্রহ থেকে প্রায় ৩ পৃষ্ঠার পুরো প্রবন্ধটি সেখানে তুলে দেয়া হয়েছে। একটু কষ্ট করে গিয়ে দেখে
আসতে পারেন । বই হতে ছবি তুলে নেয়ায় এম এস ওয়ার্ডে দেয়া গেলনা , ইমেজ আকারে দিতে
হয়েছে । পাঠে আসুবিধা হলে জানাবেন ।
শুভেচ্ছা রইল
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে, আমার জন্য এতটা কষ্ট করে ৬০/৭০ বছর আগের লেখা প্রবন্ধটি সংগ্রহ করে তা ইমেজ আকারে আপনার পোস্টের প্রতিমন্তব্যের ঘরে পোস্ট করার জন্য। প্রবন্ধটি আমার জন্য এতই সুখপাঠ্য ছিল যে পাঠ্য পুস্তক পাঠ কালে পড়তে পড়তে সেটা প্রায় মুখস্থই করে ফেলেছিলাম।
১৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০২
করুণাধারা বলেছেন: পাঠকদের জন্য বোধহয় রূপকের এ ব্যাখ্যাগুলো পাদটীকা হিসেবে উল্লেখ করলে মন্দ হতো নাঃ
আপনার এই ব্যাখ্যা খুব ভালো ভাবে রূপকগুলোর অর্থ পরিস্ফুট করে তুলেছে। আশাকরি এটা পোস্টের সাথে শেষে সংযোজন করে দেবেন।
অনেক ধন্যবাদ চমৎকার প্রতিমন্তব্যর জন্য।
১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৭:৫৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আশাকরি এটা পোস্টের সাথে শেষে সংযোজন করে দেবেন" -- দিয়েছি। সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ।
১৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: পাদটীকা দেখার আগেই লিখাটির সুগভীর আধ্যাতিকতার সুরটি ধরতে পেরেছিলাম। ভাল থাকবেন।
২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্টে লাইক এবং মন্তব্যের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পাদটীকা প্রথমে ছিল না। পরে দিয়েছি।
১৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৭:১৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,
শুরুতেই ৭০০তম পোন্টের জন্যে অভিনন্দন জানিয়ে রাখি।
একটি অসাধারণ আর ফিলোসফিক্যাল লেখা, পড়তে পড়তে তাই-ই মনে হচ্ছিলো। আর মনে মনে মন্তব্যের জন্যে এই রকম কথাগুলো গুছিয়ে রাখছিলুম - চলতির নামই জীবন। জীবন চলছে চক্রাকারে শেষ গন্তব্যের দিকে । চেকার বিহীন জীবনের ট্রেনটাও একদিন পৌঁছে যাবে এক ছোট্ট মাটির ষ্টেশনে । তারপরে অনন্তকাল থাকতে হবে আসল চেকার আসার অপেক্ষায়............... এরকমই অনেক কিছু।
কিন্তু লেখার শেষে এসে দেখলুম, এরকম কথাই আপনি "পাদটীকা"য় ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। অবশ্য তা করেছেন করুণাধারার মন্তব্যের সূত্র ধরে। এটা করতে গিয়ে আমার মনে হয়, আপনি একটি অনবদ্য-অসাধারণ-অনন্য-অন্যরকম লেখা নিয়ে পাঠককে লেখার গভীরতম মর্মবস্তু নিয়ে ভাবার পথটাকে অনেকটাই অগভীর করে দিয়েছেন! এটা না থাকলে মনে হয়, পাঠকের চিন্তার জগতে ভিন্ন ভিন্ন আলোড়নের ঝড় উঠতো।
আবারো বলছি, এটা আপনার মাষ্টারপীস একটি লেখা। গভীর ভাবনার সুতো দিয়ে বুনেছেন।
চমৎকার এই পোস্টে লাইক +++++++++++++
২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: অভিনন্দন, পোস্টে লাইক এবং চমৎকার এই মন্তব্যের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পোস্ট পড়তে পড়তে আপনার মনে উদিত হওয়া এবং মন্তব্যের জন্যে গুছিয়ে রাখা কথাগুলোই এই পোস্টের যথার্থ মূল্যায়ন। আর আপনার পরের কথাগুলোর সাথেও দ্বিমত করছি না।
সাতশততম আমার এই পোস্টটিকে মাষ্টারপীস একটি লেখা হিসেবে অভিহিত করায় বাধিত ও প্রাণিত হলাম।
১৬| ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১২:২৫
আরইউ বলেছেন:
সুন্দর লিখেছেন, খায়রুল, শব্দে-রূপকে-সাইকেলের চাকায়-ট্রেনে-খোলা মাঠে জীবনের সারাংশ চমৎকার উঠে এসেছে । বেলা যায়... বেলা বয়ে যায়।
আমি হলে লেখাটায় সম্ভবত পাদটীকা যোগ করতামনা। পাঠকের হাতে ছেড়ে দিতাম লেখার ব্যাখ্যা।
৭০০ পোস্ট হাজার হোক, দশ হাজার হোক... ...
শুভকামনা সবসময়।
০৪ ঠা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: "বেলা যায়... বেলা বয়ে যায়" - সঠিক উপলব্ধি। এই বয়ে যাওয়া প্রকৃতির ক্ষেত্রে নিরন্তর, নশ্বর মানুষের ক্ষেত্রে অনিত্য, মানুষকে তার প্রান্তিক গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েও বেলা বয়েই যেতে থাকে।
"আমি হলে লেখাটায় সম্ভবত পাদটীকা যোগ করতামনা। পাঠকের হাতে ছেড়ে দিতাম লেখার ব্যাখ্যা" - ব্যাপারটা নিয়ে আমিও দোটানায় ছিলাম, এখনও আছি। মূল পোস্টে সেটা ছিল না, পরে যোগ করেছি। এখন দেখছি যে ১০ নং প্রতিমন্তব্যের নীচেও সেটার উল্লেখ রয়েছে। তাই মূল পোস্ট থেকে 'পাদটীকা' সরিয়ে ফেললাম।
পোস্ট পাঠ এবং অকপট মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। বরাবরের মত পোস্টে লাইক দিয়ে অনুপ্রাণিত করে গেলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০
নাহল তরকারি বলেছেন: ভালো।