![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার সব কাজ সারা কোন একটা যেন বাকি রয়ে গেছে ......
১
আরণ্যক কবিতা লিখবে । তারপর তা ছিড়ে ফেলবে। দীর্ঘদিন থেকে ও যেন কি একটা ভাবছে। আরণ্যকের ঈশ্বর বিশ্বাস আছে। সে বিশ্বাস কি সবার মত? গ্রন্থের ঈশ্বর নাকি ভাবনার ঈশ্বর? আরণ্যকের ঈশ্বর বলেছে লিখবেতো ভালোকিছু লিখবে। অথবা লেখার দরকার নেই। আরণ্যক চরম ঈশ্বর বিশ্বাসী। ঈশ্বরকি নাকি তাকে লেখার পরিসীমা বলে দিয়েছে। তাই আরণ্যকের প্রতিটি কবিতা ঈশ্বরের সীমা অতিক্রম করে বলে আরণ্যক কবিতা ছিড়ে ফেলে দেয়। কারণ আরণ্যক ঈশ্বরকে চায়। সে চায় অসীম ঈশ্বর তার কাছে ধরা দিক। তাকে ভালোবাসুক।
আরণ্যক হাটছে।ঈশ্বরকে ডাকছে।তাকে কি যেন পেতে হবে। আরণ্যক ঈশ্বরকে ভালোবেসে আত্মনিয়ন্ত্রণের জায়গা খোঁজে।কিন্তু বারবার সে জায়গা খুঁজে বের করতে সে ব্যর্থ হয়। আর দশটা ছেলের মত আরণ্যকের মনে প্রিয়সীর প্রেমে হাবুডুবু খেতে। কিন্তু বিবাহ বহিভূর্ত প্রেম ঈশ্বর নিষেধ করেছে।
আজ আরণ্যকের আঠাশ বছর পূর্ণ হল । জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সে ঈশ্বরকে ডাকার চেষ্টা করছে। সে নিজের মাঝে নিজের লুকিয়ে থাকা গন্ধ শুকে আনন্দ পায় আর ভাবে সে একটা কিছু হতে চলেছে।সে এখন মাস্টার্স শেষ করেছে। তার আশার জায়গাটা অনেক বড়। ঈশ্বর তাকে ছাড়লে সে ঈশ্বরকে ছাড়ে না, সে ঈশ্বরকে ছাড়লে ঈশ্বর তার কাছে আসে।
এভাবে সে কবিতা লেখার অনুমোদন পেল।
সাহিত্য তাকে লিখতেই হবে । সাহিত্য মানব মনের অপ্রকাশিত কথার প্রকাশভঙ্গি। আসলে আরণ্যকের কাছে মাঝে সাহিত্য ও ধর্ম আলাদা ও বিপরিত পথ হিসেবে ধরা দিয়েছিল। এখন সে সাহিত্য লেকার অনুমোদন পেল।
২
আজ শুক্রবার ।আরণ্যক ছাদে যাবে । প্রার্থনায় ভুবন কাপাবে । মহানবীর বাণী ঘেটে ঘেটে সে পেয়েছে যে শুক্রবারের আসরের নামাজের পর প্রার্থনা কবুল হয়। সুতরাং জুম্মার দিনে আরণ্যক পাহাড়ের মত করে দাড়াবে । তাকে অনেক উচু মনে হবে। সে চাইবে আরো বড় হবার জন্য ঈশ্বরের সাহায্য।
৩
আরণ্যকের যখন এগারো বছর বয়স তখন তার মা মারা যায়। বাবা মারা যায় তার কলেজ লাইফের ফার্স্টটিয়ারে।আরণ্যকের হিমা আরণ্যককে তাড়া করে। আচ্ছা আরণ্যক তুমি হিমাকে ভালোবেসেছিল কেন? এটা কি তোমার ঈশ্বর অনুমতি দিয়েছিল। হে আরণ্যক বলল যে অনুমতি দেয়নি ঠিকই। কিন্তু একটি মেয়েকে একটি ছেলের ভালো লাগতে পারে । এটা স্বাভাবিক ব্যপার।
আরণ্যক তার নিজেকে অনুধাবন ও আবিষ্কার করার চেষ্টা করত। ঈশ্বরকে আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছিল। সেজন্যে সে ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সপে দিয়েছিল।আর মাঝে একটু বিশ্রাম পেলে হিমার প্রেমে হারিয়ে যাবে। হিমা এখন অন্যের হয়ে গেছে। তবুও সে
ভাবতে পারে না যে হিমা অন্যেরে।
তবে আমি আরণ্যকের মাঝে অন্যকিছু আবিষ্কার করেছেলাম। সে ছিল কিছুটা অটিস্টিক।একথা সেও জানত। কারণ সে নিজেকে অনধ্যান করত। প্রশ্ন করত। তবে আরণ্যকের মানসিক প্রতিবন্ধকতাও অটিজম খুব বেশী বোঝা যেত না। কায়দা করে লুকিয়ে রাখত।
হিমাকে সে ভুলতে পারত না। মানব মনের মাঝে কত কিযে হয়। মনের ফাঁকি কি যে বড় ফাঁকি।আজও আরণ্যক সেভাবেই কি ঈশ্বরকে ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে? নাকি হিমাকে ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে।
৪
তবে আর্যণক সবার চেয়ে নিজেকে খারাপ ও নীচ মনে করে। সকল দোষ অকাতরে স্বীকার করে।হাজার হাজার পূণ্য করে সে আবার দুএকটি পাপের দিকে ঝুকে যায়। হিমা তাকে ভালোকাজে অনুপ্রেরণা দেয়। আরণ্যককে হিমা বলে তুমি এগিয়ে যাও । আমাকে পাবে।কিন্তু হিমাকে তার পাওয়া আর হল না। তাহলে কবে পাবে।
তাহলে আরণ্যকের ঈশ্বর বিশ্বাস কেমন ঈশ্বর বিশ্বাস। যে বিশ্বাস তাকে পরনারী থেকে বাঁচাতে পারে না। না আরণ্যক মাথা নীচ করে সব দোষ স্বীকার করে নিল। তর্ক করল না। তর্ক করল না আরণ্যক।
©somewhere in net ltd.