![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন উন্নয়ন কর্মী। জীবনের খসড়া পৃষ্ঠাগুলি থেকে মূল্যবান বিষয়গুলি আলাদা করে পাকা একটি খাতা তৈরী করার আপ্রাণ চেষ্ঠা থাকবে।
ইতপূর্বে ভাগ-১, ভাগ-২ ও ভাগ-৩ এ সবে বরাত বা ভাগ্য রজনী, লাইলাতুল বারা’আত বা বিমুক্তির রজনী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অদ্য হাদীসের ভাষায় লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান সম্পর্কে আলোচনা করবো।
লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান সংক্রান্ত যতগুলি হাদিস রয়েছে সেগুলোর মধ্য থেকে হাদীস বিশারদগণ যে হাদিসটিকে বিশুদ্ধ হিসাবে অভিমত দিয়েছেন তা ৮ জন সাহাবী সূত্রে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে, তা হলো- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- “আল্লাহ তা’য়ালা মধ্য শা’বানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দৃকপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন”। লাইলাতুল বরা’আত বিষয়ে এটিই একমাত্র সহীহ হাদীস। এ হাদীস থেকে প্রমাণিত যে, এ রাতটি ফযীলতময় এবং এ রাতে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন। আর ক্ষমা লাভের শর্ত হলো শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হওয়া। এ দুটি বিষয় হতে যে ব্যক্তি মুক্ত থেকে জীবন যাপন করেন তিনি কোনরূপ অতিরিক্ত আমল ছাড়াই এ রাতের বরকত ও ক্ষমা লাভ করবেন।
দুঃখজনক হলো, আমরা শা’বান মাসের মধ্য রজনিতে অনেক ইবাদতই করি, তবে সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত এ দুটি শর্ত পূরণের চেষ্টা খুব কম মানুষই করে থাকি।
সবে বরাত বা ভাগ্য রজনী, লাইলাতুল বারা’আত বা বিমুক্তির রজনী উৎযাপনে আমাদের সমাজের চিত্র খবই ভয়াবহ। আমাদের সমাজে একশ্রেণীর লোক রয়েছে যারা সারা বৎসর কোন ইবাদত করেন না কিন্তু লাইলাতুল বরা’আতের রাত্রিতে মসজিদ ঘরকে আলোকসজ্জা করেন, মসজিদসয় মোমবাতি প্রজ্জলন করেন এবং কিছু ইবাদত করেন দেখে মনে হবে আল্লাহকে খুশি করা নয় বরং আগুণের ইবাদত করা। যার মাধ্যে অগ্নি পূজকদের অনেকখানি মিল পাওয়া যায়। আবার মনে হবে মুসলিদের দিপাবলী (প্রদীপ প্রজ্জলন) যাতীয় কোন ইবাদত হচ্ছে (নায়ুজুবিল্লাহ্), যা অন্য ধর্মের রীতি। এভাবে শা’বান মাসের মধ্য রজনীতে আমরা বিভিন্নভাবে ইবাদত করি এবং আল্লাহর দরবারে দুআ করি বা আমাদের প্রয়োজনের বিষয়গুলি উল্লেখ করে আবেদন করি। সারা বৎসর ইবাদত করলাম না দুআ করলাম না একটি রাত্রিতে সারারাত ইবাদত করলাম দুআ করলাম; কিভাবে তার ফল আমরা আশা করি? সারারাত ইবাদত করা, দুআ করা দেখে মনে হবে ফল প্রকাশের রাত্রিতে আশানুরূপ ফল প্রাপ্তির আপ্রাণ চেষ্টা। আমাদের অবস্থা ঐ ছাত্রের মত যে সারা বৎসর লেখাপড়া করল না কিন্তু ফল প্রকাশের রাত্রিতে সারা রাত জেগে লেখাপড়া করল। সম্মানিত পাঠক, বলুনতো ফলাফলে কতটুকু কাংখিত ফল পাওয়া যাবে? শা’বান মাসের মধ্য রজনীতে যদি আমরা নিজেকে মুক্তি প্রাপ্তদের দলভুক্ত মনে না করি তাহলে প্রতিজ্ঞা করবো শিরক ও বিদ্বেষ মুক্ত হৃদয়ে দৈনিক ভিত্তিতে আল্লাহর ইবাদতের পাশাপাশি সকল প্রয়োজনে আল্লাহর নিকট দুআ করবো, আগামী ফলপ্রকাশের রাত্রিতে মুক্তি প্রাপ্তদের দলভুক্ত মনে করে উক্ত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সংকল্পের মাধ্যমে লাইলাতুল বরা’আত উৎযাব করবো। আমার শেষ কথা হলো, আসুন আমরা ফল প্রকাশের রাত্রিতে কঠোর পরিশ্রম না করে ফল প্রকাশের মেয়াদে কঠোর পরিশ্রম করি।
©somewhere in net ltd.