নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন সুন্দর করে সাজাও । আমি নারী তাই কথাও বলি নারীদের নিয়ে।

কামরুননাহার কলি

আমার নাম কামরুননাহার কলি, আমি একজন ভার্সিটির ছাত্রী। আমার সখ লেখালেখি আর বই পড়া। আমি দেশকে ভালোবাসি, ভালোবাসি দেশের মানুষদের।

কামরুননাহার কলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

“একটি ভয়ংকর আত্মা”

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫২



কাহিনীটি সত্যি না কল্পনাও না, এটি একটি স্বপ্ন। এটা আমার দেখা একটি সত্যিকারি স্বপ্ন।অনেকে হয়তো বিশ্বাসই করবেন না, বলবেন এতো বড় স্বপ্ন কি মানুষ দেখে কখনো। সত্যিই এই সব আজগুবি কথাবর্তা বিশ্বাস হওয়ার মতোই না। তবু বলছি এটাই সত্যি আমার নিজের দেখা একটি স্বপ্ন, তাও ভুতের স্বপ্ন। কি করে যে আমি সেই রাতে এতো বড় স্বপ্ন আর এতো ভয়ংকার স্বপ্ন দেখলাম আমি নিজেই তা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তাহলে বলা যাক সেই দিনের কাহীনিটি-
আমরা ভার্সিটির পরিচিত সব বন্ধুরা এক সাথে ডাক্তারি পড়ছি। একদিন এক স্যার আমাদের সবাই কে একটি নতুন ক্যাম্পাসে নিয়ে গেলেন। ক্যাম্পাসটি ছিলো অনেক সুন্দার আর মনোরম। কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসটি সাধারণ ক্যাম্পাস নয় এটি ছিলো একটি পুরোনো বাংলো, আর বিশাল এরিয়া নিয়ে। তবে জানিনা এটা কোন স্থানে ছিলো, আর মনেও পড়ছেনা এটা কোথায় অবস্থাতি। প্রথম দিন আমরা সব বন্ধুরা মিলে সেই বাংলোর ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে যাই। বন্ধুরা সবাই ক্যাম্পাস দেখেতো মহাখুশি। ওদের কাছের বাংলোর এই ক্যাম্পাসটি খুব ভালোলেগেছে। কিন্তু আমার খুব ভয় করতে লাগলো কারণ যখনি আমি এই বাংলোর এরিয়ার মধ্যে পা রাখলাম তখন আমাকে খুব ভয়ংকর সুরে কে যেনো ডাকতেছ, একজন ছেলে কণ্ঠে। আর সেই ডাক শুধু মাত্র আমি একা শুনতে পাই, আর কেউ শুনেনা। এই ডাকের সুর ছিলো একটি আত্মার ডাকের সুর। আত্মা আমাকে ডাকছে, এসো, এসো, ভিতরে এসো। এই ভাবে কয়েকবার শুনার পর আমি পিছন থেকে চলে যেতে চাইলাম। এদিকে অনেক বন্ধুরা বাংলোর মধ্যে ডুকে পড়লো। ওরা তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছে, এতো সুন্দর ছিলো এই বাংলোর ক্যাম্পাসটি। আমি যখন পিছনের দিকে ফিরে আসতে চাইলাম তখন হঠাৎ করে পিছন থেকে আমার এক বন্ধু ইসিতা কাধে হাত দিলো- কিরে নবিতা কোথায় যাচ্ছিস, ক্লাসে যাবি না? আমি চমকে গিয়ে বললাম যাবো না, ইসিতা বলল কেনো? দেখ নবিতা কি সুন্দর আমাদের বাংলোর ক্যাম্পাস, এর আগে এরকম কখনো দেখেছিস। কি সুন্দর বাংলো, বাহিরে কি সুন্দর সবুজ ঘাস, গাছ-পালা আর প্রকৃতির বাতাস। এগুলোর মধ্যে তোর ভালোলাগেনা কেনো? ইসিতা আমাকে জোর করে টেনে নিয়ে গেলো বাংলোর ভিতরে। যখন আমি বাংলোর ভিতরে ডুকলাম তখন দেখলামা আরো ভয়ংকর। বাংলোর মধ্যে কেনম জানি বিদগুটে অন্ধকার আর কুয়াশাচ্ছন্ন। কিন্তু এগুলো বন্ধুরা সবাই দেখতে পেয়েছে। ওরা প্রথম প্রথম ভয়ে পেয়ে গেছে তারপর সবাই বলল, নাহ এটা হয়তো এমন সিস্টেম করেই তৈরি করেছে ডিজাইনাররা। তবে আমার মনের মধ্যে ডুবে থাকা ভয়টা কমছে না। কারণ গেটের মধ্যে ডুকতে আমাকে কোন এক আত্মা ডাকতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু ঐ ডাক কেউ শুনেনি এই জন্য আমার আরো বেশি ভয় করতে লাগলো।

বাংলোর ভিতরের আরো কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। বাংলোটি বিশাল সুদির্ঘী, ভিতরে অন্ধকার, নীল আলো, মাঝে মাঝে ধোয়াশে। ক্লাস হয় শুধুমাত্র নীচতালায়, দোতালার অবস্থা আরো ভয়নাক। নিচতালা থেকে কিছুই দেখা যায়না, আর এটার কোন বড় ধরনের সিড়িও নাই। এতো বড় একটি বাংলো অথচয় দোতালায় উঠার জন্য একটি মইয়ের সিড়ি দেওয়া, সবাই তো অবাক। ওরা আবারও বলল হয়তো এমনি সিস্টেম, ডিজাইনাররা এমন করে ডিজাইন করেছেন। তাই বলে এই রকম, মই বেয়ে বেয়ে একজন করে মানুষ উঠতে পারে দু’জনের বেশি নয়! ছোট্ট একটি ফাঁকা মইয়ের উপর দিয়ে! সেখানে রাখা হয় সমস্ত মৃত্যু মানুষের লাসগুলো, যাকে বলা হয় মর্গের রাখা লাশ। সাদা কাপুরে ডাকা ঐ লাশগুলো। আমাদের এক স্যার বলেছিলেন ওগুলো আমাদের ল্যাবে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করার জন্য দরকার পড়বে। কিন্তু ঐ স্যারকে আমি কখনোই দেখিনি এই স্যারও আমার পরিচিত না। এমন পরিবেশ যখন আমি বাংলোর মধ্যে দেখি তখন আমি আরো বেশি ঘাবরে যাই। আমার চোখে যেনো এটা একটি মৃত্যুপুরীর আস্থানা। এখানেই মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে তা না হলে কি এখানে কেউ আসে। আমি যখন পুরো বাংলোটি ঘুড়ে ঘুড়ে দেখছি হঠাৎ আবার কে যেনো ডাকাতে লাগলো- এসো, এসো, এসো নবিতা, এসো, খুব ভয়ংকর শুনাচ্ছে ঐ ডাক। এই ডাক কেউ নিজের কানে না শুনলে বুজতেই পারবেনা এটা কতটা ভয়ংকর ডাক হতে পারে। ঐ আত্মাটি আমাকে খুব বিকট শব্দ করে ডাকছে, এই ডাক সারাশরীর শিওরে উঠার মতো। বন্ধুরা কেউ শুনছে না এই ডাক, আমি কাউকে বলতেও পারছিনা। কেউ আমার কথা বিশ্বাস করবেনা সেই জন্য। ওদের কে বললে তখন ওরা আমাকে সবাই পাগল বলবে। সেই ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলছিনা। তারপরও ইসিতাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি কারো ডাকা শুনতে পাও। ও বলল না তো, কে ডাকবে আবার আমাদের, এই কথা বলে ইসিতা হেসে দিলো। আমি কি করবো কিছুই বুজতে পারছিনা।
এরপর যখন আমরা সবাই একসাথে ক্লাস করতেছি, ঠিক সেই সময়ই আমাকে আবারও ঐ আত্মাটি ডাকছে- এসো, এসো, এসো নবিতা, এসো বলছি, এই দিকে এসো। এই ডাক ধিরে ধিরে আরো ভয়ংকর হচ্ছে। আমি তখন ঐ ডাকের সুরের মধ্যে মিশে গেছি। অচেতন হয়ে গেছি, এক পা দু পা করে এগিয়ে যাচ্ছি ঐ ডাকের সাথে সাথে। ক্লাস থেকে আমি বের হচ্ছি তখন স্যার আর বন্ধুরা সবাই আমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি ওসব খেয়ালই করছি না। আমি আস্তে আস্তে হাটছি তো হাটছি দুনিয়ার আর কোন হুশ নেই আমার। ঘুমন্ত ব্যক্তি যে ভাবে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে হাটে ঠিক সেই ভাবেই আমি হাটছি। শুধু মাত্র ঐ ডাকের সুর আমার কানে বাজতেছে। আমি যখন ক্লাস থেকে বেরিয়ে দোতালার মই বেয়ে দু’তিন ধাপ উপরে উঠে গেলাম তখনই আমার বন্ধরা দৌড়িয়ে আসলো ওরাও তখন ঐ আত্মার ডাক শুনতে পেলো। ওরা তখন বুঝতে পারলো এই বাংলোতে কোন ভুত বা আত্মা আছে, ওরাও খুব ভয় পেয়ে গেলো।
আমি যখন মই বেয়ে দোতালায় উঠতেছি তথন আমার সব বন্ধুরা চিৎকার করে বলল নেমে এসো নবিতা, নেমে এসো, উপরে যেওনা, নবিতা আর উপরে যেওনা। ওদিকে আত্মাও আমাকে বলতে লাগলো এসো, এসো, নবিতা উপরে এসো, তোমাকে আসতে বলছি এসো বলছি। কিছুক্ষণ পর আমার যখন হুশ ফিরে এলো তখন আমি দেখলাম একদিকে আত্মা ডাকছে অন্য দিকে বন্ধুরা আমাকে নামানোর চেষ্টা করছে। যখনি আমি দোতালায় উঠার জন্য আর মাত্র 2টি সিড়ি বাকি আছে তখন সব বন্ধুরা আমাকে চিৎকার করে বলছে নেমে এসো নবিতা আর উঠোনা ওখানে যেওনা, ওখানে আত্মারা আছে, নবিতা নেমে এসো। একদিকে আত্মা ডাকছে এসো, এসো, উপরে এসো। কিন্তু আমাকে যে ডাকছে আমি এখন তাকে দেখে ফেলেছি। দেখলাম আমার বন্ধুদের মধ্যে একটি ছেলে ওরা নাম রবিন ও আমার ক্লাসমেন্ট। ওর ভিতরে তখন আত্মা জেগে গেছে বাংলোর মেঝেতে সব বন্ধুরা যখন আমাকে নামানের চেষ্টা করছে তথন ওদের সবার মাঝখানে দেখলাম রবিন আমার দিকে তাকিয়ে আছে চোখ দু’টি লাল টুকটুকে, চেহেরাটা একেবারে বিবর্ণ। রবিন আমাকে উপরের উঠার জন্য বলছে, যাও, যাও নবিতা উপরে যাও, যাও বলছি নেমেনা তোমার ক্ষতি হবে, যাও উপরে যাও। যখনই আমি সিড়ির এক ধাপ নিচের দিকে নামলাম তখন যা দেখলাম তা কেউ যদি নিজের চোখে না দেখতো তাহলে বুজতেই পারবে না আমি কতটা ভয়ংকার দৃশ্য দেখিছি। দেখলাম ওর মাথার সামনের অংশ পিছনে চলে গেছে আর পিছনের অংশ সামনে চলে আসছে ওটা দেখিয়ে আমাকে বার বার ও ভয় দেখাচ্ছে। তারপরও সাহস করে আমি নামলাম আর এক বন্ধুর হাত ধরে। তারাতারি করে নিচে নেমে সবাইকে দেখিয়ে দিলাম রবিনকে। ওকে দেখে আমরা সবাই দৌড়িয়ে ক্লাসের ম্যধে ডুকে যাই। কিন্তু রবিন অন্য বন্ধুদের কাউকেই কিছু বলছে না ওর টার্গেট শুধু আমি। আমার বন্ধুরা সবাই আমাকে ক্লাসে নিয়ে একটি বক্সসের পাশে লুকিয়ে রাখলো আর গেট বন্ধ করে দিলো। কিন্তু রবিনের আত্মা আমাকে কিছুতে ছাড়ছে না বার বার আমাকে ডাকছে আর রুমের চারদিকে ঘুড়ে ঘুড়ে দেখছে কোথায় আমি লুকিয়েছি। রুমের চারপাশে আয়না দিয়ে বেড়া দেওয়া। সেই আয়নার উপর দিয়ে উকি মেরে মেরে দেখছে আমি কোথায় লুকিয়ে আছি। সেই দিন আমাকে আমার বন্ধুরা লুকিয়ে না রাখলে হয়তো আমি দোতালার সেই লাশের পাশে যেয়ে মরে থাকতাম।
এটাই ছিলো আমার জীবনের একটি ভয়ংকার স্বপ্ন। জানিনা এই রকম স্বপ্ন জীবনে আর কেউ দেখছে কিনা। অনেকে হয়তো আমাকে অবিশ্বাস করে কিছু কথা শুনাবেন, কিন্তু এটা তাদের ভুল আমার না, আমি এটা সত্যিই দেখেছি, আর ঠিক এটাই।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩

আটলান্টিক বলেছেন: এতো বড় পোষ্ট???

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৬

কামরুননাহার কলি বলেছেন: পড়ে দেখেন খুব ভয় পাবেন, হুমম

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আসলেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হুম , হেব্বি ভয়ংকর ভাইয়া

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শুভ কামনা

৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫৬

প্রামানিক বলেছেন: ভয়ংকর কাহিনী।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:০৫

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হুম খুব ভয়ংকর।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য ভাইয়া।

৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০০

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: আমি মাঝেমধ্যে মাঝ রাতে,গ্রামের পুরনো গাছ অথবা ঘন জঙ্গল এ একাএকা চলে যেতাম! ইচ্ছে ছিলো নানা দাদার মুখে পরীর প্রেমের গল্প অনুযায়ী যদি সাক্ষাত.....

আপনার স্বপ্নটিতে আমি বেশ রোমাঞ্চিত!!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৪

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হাহাহাহা আপনার কাছে রোমাঞ্চিত!!! আর আমি তো ভয়ে শেষ।

৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার ভৌতিক আবহে লিখিত আপনার কল্প কাহিনী দারুন উপভোগ করলাম।
চমৎকার কথার বুনুনিতে নানার চরাই উৎরাই পারকরে একটি সুন্দর সমাপ্তি একেছেন।
ভালো লাগা জানবেন। শুভকামনা আপনা্র আগামীর জন্য।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭

কামরুননাহার কলি বলেছেন: আমার পেজে বেড়াতে এসেছে এই জন্য আমি ধন্য ।
এবং কষ্ট করে এই ছাইপাস লেখকের লেখা পড়েছেন এই জন্য আরো বেশি ধন্য।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আর আমার লেখা পড়ে সময় নষ্ট করেছেন এই জন্য আরো একবার ধন্যবাদ যদিও ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না আপনাকে।

৭| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৯

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: নিজেই ভুত হয়ে যান,দেখবেন সব ভুত মানুষ হয়ে গেছে B-)

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:০৯

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হুম ভাবছি তাই করতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.