নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাহাসান

আমি কামরুল হাসান, সাধারন সুখী জীবনের আপাদমস্তক এক বাঙ্গালী, আপাতত প্রবাসী। জীবিকার তাগিদে কাজ করি আর জীবনের তাগিদে ব্লগ লেখি, বইপড়ি, নন টুরিস্টিক ঘোরাঘুরি করি ও মানুষের সাথে মিশি। বাংলাদেশ থেকে গ্রাজুয়েশনের পর ইন্ডিয়া ও জার্মানিতে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করে এখন সুইডেনে বহুজাতিক এক টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি।

কাহাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অল্প দামে ভালো খেতে দোষ কি?

০৫ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৭



একথা মোটামুটি বাজি রেখে বলতে পারি যে ‘নির্দিষ্ট এক সময়কালে’ আমার মতো এতো বেশি মুরগির মাংস খাওয়া মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। দিনের পর দিন, সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, মুরগির মাংসই ছিলো একসময় আমার প্রধান ও একমাত্র খাদ্য!

আমার মুরগি খাওয়ার বহর দেখে সেসময় ইউনিভার্সিটি ডরমিটরির এক বন্ধুর মূল্যায়ন ছিলো এই যে, আমি মুরগি খাওয়া না ছাড়লে নাকি নিরীহ প্রাণীটা অচিরেই দুনিয়া থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে! অন্যজনের ফতোয়া ছিলো এই যে, আমার সারা জীবনের জন্য বরাদ্দ মুরগির কোটা শেষ, এখন এটা খাওয়া মানেই অন্য কারো ভাগ কেড়ে নিয়ে তার প্রতি অবিচার করা!

পোপ জন পল ২য়-এর শহরের লোকের ফতোয়া বলেই কিনা জানিনা, তবে একান্ত বাধ্য না হলে এখন আমি আর মুরগি খাই না। এনাফ চিকেন ইন ওয়ান লাইফ, নো মোর চিকেন ‘ভাজা ফ্রাই’, ‘সেদ্ধ কারি’ ও ‘পোড়া বারবিকিউ।’

তবে হাঁ, সে এক সময় ছিল বটে, যাকে বলে ‘নিজ রান্নার স্বর্ণযুগ।’ পানি ছাড়া শুধু পেঁয়াজে রান্না মুরগি ভুনা, ডাল ছাড়া খিচুড়ি, আর সাথে পছন্দসই পানীয়। আমার কাছে এগুলোই ছিলো মিসেলিন স্টার শেফের মাল্টি কোর্স ফাইন-ডাইনেরও চেয়ে উত্তম। দুঃখ এই যে, সে সময় আর কখনো ফিরে আসে নাই, আসবেও না!

মাথা পিছু হিসাবে জার্মানীর এক শহরের গ্রোসারি চেইন থেকে মুরগি কেনার জন্য যদি পুরস্কার দেয়া হতো তবে সেটার হকদার সেসময় আমিই ছিলাম! এখনো বুঝিনা যে ঐ দেশে ঐ দামে এতো ভালো মুরগি উৎপাদন ও বিক্রি কি করে সম্ভব? শুনেছি ঐ গ্রোসারি চেইন শপের মালিক ভাতৃদ্বয় নাকি তখন জার্মানীর প্রথম ২০ জন ধনী ব্যক্তির তালিকায় ছিলো। তাহলে কি মানুষকে কম দামে ভালো জিনিষ দিয়েও ধনীর-ধনী মহাধনী হওয়া যায়?

একবার আমারও সন্দেহ হয়েছিলো যে মুরগিগুলো রানীক্ষেত, বসন্ত বা কলেরা আক্রান্ত কিনা, বা ভাগাড় থেকে এনেছে কিনা? দুই-একজনের কাছে জিজ্ঞাসাও করেছিলাম যার মধ্যে ‘উন্নত নাসিকার খাঁটি বাভারিয়ান জার্মান’ এক বন্ধু ছিলো যে কিনা নিজে ঐ দোকানে যায় না ‘আম জনতার’ ভিড় থাকে বলে! ওদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর থেকেই এরপর শুধু কেনা, রান্না, খাওয়া, আর ছাড়ার কথাটা না বললেও হয়, কেননা সেটা সবার জন্যই এক।

যাইহোক, এতোদিন পর সেই পুরনো সেই কাসুন্দি ঘাঁটার কারন এই যে, সেদিন এক শহরে গিয়েছিলাম হালকা কাজ ও ভারী ঘোরাঘুরি করার জন্য। ঘুরতে-ঘুরতে এক জার্মান গ্রোসারি চেইনে ঢুকে অতি অল্প দামে চিকন, ছোট ও পুরনো বাসমতী চাল বিক্রি হতে দেখে আমার সেই মুরগি খাওয়া দিনগুলোর কথা মনে পড়লো। মূল্যহ্রাসে হলেও এই দেশে দূরে থাক, এই দামে এই চাল ভূ-ভারতেও মিলবে না (চালগুলো ওদিক থেকেই এসেছে কিনা!) তবে এবারো একটু সন্দেহ হয়েছে, এতো সস্তায় এতো ভালো জিনিষ কি করে সম্ভব?

অনেক আগে থেকেই আমার এক অভ্যাস (সু বা কু যাই বলি না কেন) যে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় ব্যাগে কিছু খাবার নিয়ে যাই, আর ফেরার সময় স্থানীয় হাটবাজার থেকে ‘কলাডা-মুলাডা’ কিনে আনি। পুরনো অভ্যাস মতো তাই এবারো খালি হাতে না ফিরে কেজি পাঁচেক চাল নিয়ে ফিরলাম। পাঁচ না হয়ে অবশ্য পাঁচশো কেজি হলেই ভালো হতো, আগামী বছর পাঁচেক অন্তত চালের চিন্তা করতে হতো না। খেতেই যখন হবে, অল্প দামে ভালো খেতে দোষ কি?

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:১৭

কাহাসান বলেছেন: কামরুল হাসান, স্টকহোম সুইডেন থেকে ৪ঠা মে, ২০১৮।

২| ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:২৮

কাহাসান বলেছেন: ছবিতে আমি চাল হাতে ট্রেন থেকে নামার পর :-)

৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাহা!! মুরগির উপরে বেশ সুন্দর করে লিখলেন। আমি যদিও তেমন পছন্দ করিনা, আপনি পারলে আমার কোটার বাকিটা খেতে পারেন। হি হি হি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.