নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাহাসান

আমি কামরুল হাসান, সাধারন সুখী জীবনের আপাদমস্তক এক বাঙ্গালী, আপাতত প্রবাসী। জীবিকার তাগিদে কাজ করি আর জীবনের তাগিদে ব্লগ লেখি, বইপড়ি, নন টুরিস্টিক ঘোরাঘুরি করি ও মানুষের সাথে মিশি। বাংলাদেশ থেকে গ্রাজুয়েশনের পর ইন্ডিয়া ও জার্মানিতে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করে এখন সুইডেনে বহুজাতিক এক টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি।

কাহাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফলের রাজা আম, আমের রাজা কে?

১২ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮


কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল হলেও দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই আম ফলের রাজা হিসাবে মান্যতা পায়। ব্যালান্স করার জন্যই কিনা জানিনা তবে আম গাছকে কিন্তু ঠিকই বাংলাদেশের জাতীয় গাছের প্রতীক হিসেবে নেয়া হয়েছে।

পৃথিবীতে প্রায় ডজন তিনেক প্রজাতির আম পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, আম্রপালি, কাঁচামিঠা এই নামের আমগুলোই বেশি প্রচলিত। উত্তরবঙ্গের চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত হলেও আম গাছ দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। চাঁপাই-এর ‘কানসাট আম বাজার’ শুধু বাংলাদেশেই না এশিয়ার সবচেয়ে বড় আম বাজার হিসেবে পরিচিত।

যাহোক, আমের রচনা না লিখে বরং এক ‘আম নামা’ পেশ করা যাক;

আমাদের কোম্পানির আঞ্চলিক হেডঅফিসে সাউথ-ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কোন দেশের আম সেরা এই নিয়ে এক প্রতিযোগিতা হয় কেননা অনেক দেশই নিজেদের আম সেরা বলে দাবী করে থাকে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান কি ছিলো মনে নাই তবে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন ছিলো প্রতিযোগিতার হট ফেভারিট দেশ। ভারত ও পাকিস্থান এই আঞ্চলিক অফিসের অধীনে না থাকায় ওরা বাদ।

বিচারকের (এক্ষত্রে আম খাদকের) রায়ে সেদিন ফিলিপাইনের আম সবাইকে টপকে সেরার আসন পায়। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকার পরও ইন্দোনেশিয়ার প্রতিযোগীরা সবচেয়ে দুঃখ পেয়েছিলো ফিলিপাইনের কাছে ‘আম ইজ্জৎ’ হারানোর জন্য। এদিকে ফিলিপিনোরাও পারলে গ্লোবাল কনফারেন্স করে আনন্দের খবরটা সবাইকে জানায় আর কি!

সুইডেনে আম জন্মে না ঠিকই তবে ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, স্পেন, মেক্সিকো, ব্রাজিল সহ অনেক দেশ থেকেই এখানে আম আমদানি করা হয়।

প্রতি সামারে এখানে থাকা এক ভারতীয় কলিগের সাথে কি আম এসেছে, কিনেছি, খেয়েছি ইত্যাদি নিয়ে আলাপ হয়। আম ওর পছন্দের ফল ও আম তার কাছেও ফলের রাজা। তবে ওর ভাষায় ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে আসা ‘আলফানসো’ হলো রাজার-রাজা অর্থাৎ আমের মহারাজা! যাহোক, পর-পর দুই বছর অপেক্ষার পর এবারই সেই তথাকথিত মহারাজার সন্ধান পেলাম। ফিলিংস? অবশেষে ইহাকে আমি পাইলাম!

ছবির এই আলফানসো আমগুলো খালি হাতে, ছুরিকাঁটা দিয়ে, শুধু-শুধু, দুধে-ভাতে সব ভাবেই খেয়ে দেখলাম, আর আমার বিবেচনায় এটা স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয় আম। কাছাকাছির মধ্যে ভালো মানের ল্যাংড়া আমের সাথেই এর তুলনা করা যেতে পারে। তবে আকারে ও রূপে এটা অন্য অনেক আমের চেয়ে নম্বর কিছুটা কমই পাবে।

আম ও আম খাওয়া নিয়ে অনেকের মতো আমারও এক বিশেষ শৈশব স্মৃতি আছে;

আমাদের নানার সিরাজগঞ্জ শহরের বাসায় এক আমগাছ ছিলো যেটাতে কাঁচা থাকতে মিষ্টি, আর পাকলে অতি মিষ্টি আম হতো। নানার বাড়িতে গেলে দুপুরে খাওয়ার পর উনি ঘুমিয়ে পড়লে আমি রান্নাঘর বা মাচালঘরের ওপর দিয়ে ঘরের টিনের চাল উঠতাম আম পারার জন্য। তবে ঐ অবস্থায় কেউ দেখে ফেললে কে, কি, কেন এইসব নিয়ে হৈচৈ শুরু হতো যা ফলে নানা ঘুম থেকে উঠে কলেজে পড়া কাজিনকে বলতো আমাকে ‘কানের লতি’ ধরে উনার কাছে হাজির করতে। কাজিনও আমাকে ক্ষেপানোর জন্যই জবাব দিত যে “ওরতো কানের লতি নাই, ওকে লতি ধরে আনবো কি করে!” ইত্যাদি।

যাহোক, ভরদুপুরে টিনের চালে উঠে চুরি করে (!) গাছ পাকা আম খাওয়ার সেই স্বাদ আর কখনো পাই নাই, পাবোও না। আর তাই সেই গাছের সেই আমই আমার কাছে আমের মহারাজা, বাকি সব ভালো, মোটামুটি, অথবা মন্দ ক্যাটাগরির রাজা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: আম আমার প্রিয় ফল।
এবং আমের মধ্যে সেরা হচ্ছে হিমসাগর।

২| ১০ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:২৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হ্যাঁ, মহারাস্ট্রের আলফানসো, দক্ষিণ বঙ্গের হিমসাগর, মালদহের ফজলি, উত্তরপ্রদেশের চৌষা হল উৎকৃষ্ট মানের আম। এছাড়া আম্রপালি, ল্যাংড়াও খুব সুস্বাদু আম। আপনার নানার বাড়িতে চুরি করে আম খাওয়ার স্বাদ অবশ্য সবার সেরা।

প্রতিমন্তব্য করতে ডানদিকে সবুজ বাটনে চাপ দিন, একটি নুতন স্পেস আসবে, তার মধ্যে উত্তর লিখে জমা করলে আমাদের নোটিফিকেশনে দেখাবে। অন্যথায় তা দেখাবেনা।

শুভকামনা জানবেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.