![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কামরুল হাসান, সাধারন সুখী জীবনের আপাদমস্তক এক বাঙ্গালী, আপাতত প্রবাসী। জীবিকার তাগিদে কাজ করি আর জীবনের তাগিদে ব্লগ লেখি, বইপড়ি, নন টুরিস্টিক ঘোরাঘুরি করি ও মানুষের সাথে মিশি। বাংলাদেশ থেকে গ্রাজুয়েশনের পর ইন্ডিয়া ও জার্মানিতে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করে এখন সুইডেনে বহুজাতিক এক টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি।
এক বুক কষ্ট নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। না, হৃদয়ঘটিত কোনো কষ্ট না, এটা সিজন চেঞ্জের কারনে বুকে কফ জমে যাওয়ার সাধারণ কষ্ট যা গত কয়েকদিন বেশ ভুগাচ্ছিল।
সর্দিকাশির মতো ফালতু রোগের চিকিৎসা এখানে বেশ জটিল। দোকানের সেলফে যে ঔষধগুলো পাওয়া যায় সেগুলো খেয়ে কোনো কাজ হয় না, আর দুই-এক সপ্তাহ পার না হলে ডাক্তারও এর চিকিৎসা করে না। যদিও এই দুই-এক সপ্তাহের ভিতরেই শতকরা একশো ভাগের কাছাকাছি রোগী সেরে ওঠে!
মোদ্দা কথা এই যে এখানে সর্দিকাশি হলে ভুগতে-ভুগতে ভালো হতে হয়, অথবা কেস জটিল বুঝলে হয় ইমার্জেন্সি, না হয় কনফার্মড রিটার্ন টিকেট টু হ্যাভেন অর হেল!
আমার বৃত্তান্ত শুনে ও পরীক্ষা করে ডাক্তার জানান যে সমস্যা জটিল না তবে উনার ধারনা আমি বেশ সেন্সেটিভ। আমিও ডাক্তারের সাথে হাঁ মিলিয়ে বলি যে, আমি আসলেই বেশ সেন্সেটিভ, ইদানীং অনেক কিছুতেই সহজে আমার এলার্জি হয়। এমনকি বিশেষ চরিত্রের কিছু মানুষের কাছাকাছি গেলেও খুব সহজে শরীরের সাথে সাথে মনেও রিয়্যাকশন হয়!
আমার কথা শুনে ডাক্তার বেশ গাম্ভীর্য নিয়েই বলেন যে অন্য কিছু না, উনি আমার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সেন্সেটিভির কথা বলছেন। আমারই ভুল, জেনারেল ফিজিসিয়ানকে ক্ষনিকের জন্য হয়তো অন্য কিছুর ডাক্তার ভেবেছিলাম!
যাহোক, একথা-সেকথার পর ডাক্তার কষ্ট লাঘবের জন্য বিশেষ এক কফ সিরাপ প্রেসক্রাইব করেন, ও সাথে সাবধান বাণী এই যে সিরাপে কিছুটা ঝিমঝিম ও ঢুলুঢুলু ভাব হতে পারে। দিনের বেলায় না খেয়ে রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়াই ভালো।
হায় হায়, ঝিমঝিম ভাব নিয়ে যদি ঘুমাতেই হয় তাহলে আর খেয়ে লাভটা কি? ঝিমঝিম ও ঢুলুঢুলু ভাবের জন্যইতো চারিদিকে ড্রাগ ও নেশার এতো অনাসৃষ্টি!
ডাক্তার সন্দেহের চোখে তাকাতেই আমি চুপ মেরে যাই। ষাটোর্ধ এই বিদেশি ডাক্তারের সাথে মশকরা না করাই ভালো, মশকরার জবাব উনি মশকরাতে দিলে আমার খবর আছে।
ফার্মেসীতে ঔষধ দেয়ার সময় ফার্মাসিস্ট মহিলাও ডোজ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়ে জানান যে এটা খেয়ে গাড়ি চালানো বা জটিল কিছু না করাই ভালো।
ফেরার পথে মনে ভাবি যে বুজদিল না হলে কি আর এরা বাঙালকে কফ সিরাপ দেখায়। ‘আমাগো দ্যাশে’ গেলে দেখাতে পারতাম যে বোতলে-বোতলে কফ সিরাপ খেয়েও লক্ষলক্ষ মানুষ সেখানে কেমন করে উন্নয়নের মহাসড়কে চলে...
©somewhere in net ltd.