নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রিক্ত হয়েছি, সিক্ত করেছি, ধরেছি ধ্বংসের গতি আমি আপন হস্তেই করিয়াছি বিনাশ, নিজের সর্বস্তুতি।
প্রথম নীলকান্ত (রূপবনিতা মিতু)
বাবার মৃত্যুর পর চাচারা সম্পত্তি থেকে বেদখল করে দেয় মিতুদের। মা আর ছোট বোনের দায়িত্ব নিতে গিয়ে ১৪ বছরের মিতু এখন রূপবনিতা। পাঁচশো থেকে হাজার টাকায়, ঘন্টা কিংবা রাত্রি কাটায়, মিতু এখন শয্যাবিলাশিদের শোভা বাড়ায়।
দ্বিতীয় নীলকান্ত (পুতুলের সামনে)
সুপার মার্কেটের বারান্দায় রাখা পুতুলের সামনে হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছেন বৃদ্ধা। বুঝাই যাচ্ছে বার্ধক্য তাঁর চোখের জ্যোতি কেরে নিলেও, ক্ষুধার যন্ত্রণা ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছে।
তৃতীয় নীলকান্ত (রূপবতী জলি)
অজোপাড়া গায়ের সদ্য কলেজ পড়ুয়া রূপবতী জলি, তার নিজ স্বপ্নপুরুষের অদিম পশুত্বখেলার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে, এখন সন্তান হারানোর যন্ত্রণায় অর্ধালোঙ্গ হয়ে পৌরভাগারের পাশে স্তব্ধ ভঙ্গিতে বসে থাকে। এ যেন দুঃস্বপ্নের বাস্তবতা।
চতুর্থ নীলকান্ত (মেধাবী সাগর)
এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার বোর্ড টপার সাগর একসময় সিগারেটের গন্ধে বমি করতো, অথচ এখন গাজার নেশায়মত্ত হয়ে বটতলায় উল্টে পড়ে সেক্সপিয়র আওড়ায়।
পঞ্চম নীলকান্ত (তপতী শ্রীকান্ত)
চেয়ারম্যান কন্যা তপতী ভট্টাচার্য, এক কাপড়ে শ্রীকান্ত বৈদ্যের হাত ধরে চলে আসে ভালোবাসার টানে। তৃতীয় দিন উধাও হয় শ্রীকান্ত, তপতী ৮ বছর ধরে একটা স্কুলে মাসি হিসেবে কাজ করে। আজ শ্রীকান্ত নিজের সহধর্মিনীসহ নিজ কন্যাকে ভর্তি করাতে সে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সামনে বসা আর তপতী চায়ের কাপ হাতে তার পাশে দাঁড়িয়ে।
ষষ্ঠ নীলকান্ত (কুলি মহসিন)
দুই ডাক্তার ও এক এসিল্যান্ডের জন্মদাতা মহসিন, বৃদ্ধাশ্রম থেকে পালিয়ে এসে আখাওড়া জংশনে কুলির কাজে আত্মতৃপ্তি খোঁজে নিয়েছেন।
সপ্তম নীলকান্ত (ভটবাড়ি)
মধ্যদুপুর, ভটবাড়ির তালগাছের সাথে এক কিশোর তৃষ্ণায় কাতরাচ্ছে। সে কিশোর বড্ড পাপিষ্ঠ, গত সন্ধ্যায় ভটবাড়ির ঠাকুর ঘর থেকে সন্দেশ, বাতাসা, কলা আর ৩ চিলতে বাতাবিলেবু চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়েছে। একেতো অচ্ছুত যুবকের দেবালয়ে প্রবেশ তার উপর দেবভোগের অসম্মান? ভট্টাচার্য মশাই যদিও দু'ঘা দিয়ে ছেড়ে দিতে বললেন, কিন্তু গিন্নমার যে বড্ড সর্বনাশ হয়ে গেছে, কি করে অল্পে ক্ষান্ত হবেন তিনি? এ যে তার আজন্ম পাপ।
মুঈনুদ্দীন আহমাদ
©somewhere in net ltd.