নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাল্পনিক আমিত

ছোট ছোট ভাল কাজ দিয়ে নিজেকে বড় মাপের মানুষ করা যায়। তবে তুমি শুধুমাত্র বড় মানুষ হবার জন্য ভাল কাজ করও না ।

কাল্পনিক অমিত

আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ । আমি বলি অতি সাধারণ কথা । কারো মনে আঘাত দিতে চাইনা। সত্য কথা বলতে ভালবাসি। পরে সময় হলে আরও কিছু জানবো।

কাল্পনিক অমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজের চোখে পুলিশকে ঘুষ নিতে দেখলাম আর বুঝলাম সোনার বাংলাদেশের ধনী মানুষরা কিভাবে আরও ধনী হচ্ছে এবং গরিব মানুষেরা আরও গরিব হচ্ছে?

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৩০

আমি জানুয়ারী মাসে একটা কাজে ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর উপজেলাতে গেছিলাম। আমি একটা কোম্পানিতে ছোট একটা জব করি। মূলত জবের কারণেই মহেশপুর উপজেলাতে গেছিলাম। আমি আমার সহকর্মীর সাথে বাজারের ভিতর দাঁড়িয়ে কাজের কথা বলছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার থেকে কিছুটা দূরে একজন সাদা পোশাকের পুলিশ একজন করিমন চালককে (স্যালো মেশিন দিয়ে তৈরি ভ্যান গাড়ি) ধরেছেন। যাকে ধরেছেন সে আমার পূর্ব পরিচিত ছিলেন, তার নাম রাজু এবং তার করিমনটি একটি কোম্পানির গাড়ি ছিল। তিনি একটি কোম্পানিতে মাল সরবারাহের কাজ করেন। আমি সেখানে গিয়ে পুলিশের সাথে কথা বলি এবং তার অপরাধ জানতে চাই।

পুলিশ লোকটি বলেন, সে শহরের ভিতরে তার করিমন গাড়ি প্রবেশ করিয়েছে, শহরের ভিতরে করিমন চালানো নিষেধ।

আমি বলি, আচ্ছা এখন আমাদের কি করতে হবে বলুন?

পুলিশ লোকটি বলে, শহরের ভিতরে করিমন চালাতে পারবে কিন্তু আমাকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা দিতে হবে।

আমি বলি, করিমনে মানুষ পরিবহণ করা অপরাধ এটা জানি কিন্তু মাল পরিবহন করা অপরাধ এটা মানতে পারছি না। আর শহরে ভিতরে করিমন চালানো নোটিশ তো কোথাও লেখা নেই। লেখা থাকলে বা আইন থাকলে তাকে থানাতে নিয়ে যান রাস্তার মাঝে ঝামেলা করছেন কেন?

পুলিশ লোকটি বলেন, আর এ ভাই ১০০ টাকা দিলেই তো সমস্যা সব মিটে যায়!

আমি বলি, ১০০ টাকা আমরা দিতে পারবো না আপনি চলেন থানাতে যাবো আমরা।

পুলিশ লোকটি বলেন, ভাই এই শহরে সব করিমন চালোক টাকা দেয় আপনারাও দিন, ঝামেলাতে আরও ঝামেলা বাড়বে।



আমি ততক্ষনে বুঝে গেছি তার উদ্দেশ্য টা কি! ঠিক সেই সময় অন্য একজন করিমন চালোক এলেন আমাদের মাঝে।

তিনি বললেন, ভাই আমরা সব করিমন চালোক এনাকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে দিয়ে তারপর করিমন চালাই। আপনারাও ১০০ টাকা দিয়ে দিন।



আমি লোকটির কথা শুনে অবাক হলাম, লোকটি যেচে পুলিশকে ঘুষ দিতে উৎসাহ দিচ্ছে! আমি কিছু বলার আগেই রাজু তার পকেট থেকে ১০০ টাকার একটা নোট বের করে পুলিশটিকে দিয়ে দিলেন। পুলিশ স্যার টাকাটা নিয়ে হনহন করে হাটে চলে গেলেন। আমার চোখের সামনে এই প্রথম কাউকে ঘুষ দিতে এবং নিতে দেখলাম। চোখের সামনে অপরাধ করল কিন্তু আমি কিছুই করতে বা বলতে পারলাম না। আমি ভাবছি, ঐ পুলিশের ইনকাম মাসে সরকারি টাকাতো আছেই এবং মহেশপুর বাজারে ৫০০ জন করিমন থাকে তাহলে ঐ ৫০০ জন করিমন চালক মাসে ১০০ টাকা দিলে মোট ৫০,০০০/- টাকা তার হাতে আসে। সেই ৫০,০০০/- টাকার মধ্যে সব বাদ দিয়ে ঐ পুলিশের হাতে সর্বনিম্ন ২০,০০০/- টাকা অবশিষ্ট অবশ্যই থাকবে। তার মানে মাসে ঐ পুলিশ মামু মাসে তার সরকারি ইনকামের পাশাপাশি ২০,০০০/- কালো টাকা আয় করে। আর পুলিশ যদি কালো টাকা ইনকাম করা সাধারণ মানুষকে শিখিয়ে দেয় তাহলে সাধারণ মানুষ কালো টাকা ইনকাম করলে দোষের কি?



এখন আমার প্রশ্ন, যদি সামান্য একজন পুলিশ মাসে ২০,০০০/- কালো টাকা আয় করে তাহলে এই পর্যায়ের সকল পুলিশ কর্মকর্তারা যদি ঘুষ খায় (আমি স্বীকার করি সব পুলিশ ঘুষ খায় না) তবে প্রতিমাসে-প্রতিবছরে কত হাজার হাজার কোটি টাকা আমাদের মূল অর্থনীতি থেকে হারিয়ে যায়? আমাদের দেশের পুলিশ যদি এমন ভাবে ঘুষ নিতে থাকে আর আমরা সাধারণ মানুষ এভাবে ঘুষ দিতে থাকি তাহলে একদিন পুলিশের নেশা বা পেশা বা অভ্যাস ঘুষে পরিণত হয়ে যাবে। যদি আমরা সবাই আইনের প্রতি সন্মান করতাম তাহলে আজ আমাদের দেশের মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান হতো না। এই কালো টাকার জন্যই আমাদের সোনার বাংলাদেশের ধনী মানুষরা আরও ধনী হচ্ছে এবং গরিব মানুষেরা আরও গরিব হয়ে যাচ্ছে। আসুন সবাই মিলে ঘুষ কে না বলি।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.