নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একাকিত্বের কথন

কাওছার০

নীরব কথক

কাওছার০ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আঁতিল+আঁতেল(রম্য গল্প)-সেকেন্ড ভার্শন :D :D

১২ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫

(১)

-মামা, তোমার তো হইয়া গেছে গা। এখন আমাগো লাইগা ব্যাবস্থা কর। /:)



চেহারায় করুণ চাহনি ফুটিয়ে কথাটা বলল আমাদের “পঞ্চভূজ” গ্রুপের অন্যতম ব্যাক্তি জনাব জামিল ওরফে জামাই। আমি ওর চেহারার দিকে তাকাইলাম। ওর মুখভঙ্গি দেইখা আমি হাসুম না কান্দুম বুঝতাছি না। বউ মারা গেলেও কারো অবস্থা এমন হয় নাকি আল্লায় জানে! বন্ধু বইলা কথা,তাই আশার বাণী দিতে লাগলাম।



-এতো চিন্তা করবার লাগছস ক্যালা? হইবো হইবো, তোরও হইবো। ;)

-কবে? আমার মরার পরে? X(

-কি সব কথা কছ না কছ!! আরে তোর নাম কি আর সাধে জামাই দিছি! তোর যদি না হয় তাইলে তো জামাই নামের সার্থকতা রইলো না। :D

-শালা আতিল! এক বছর হইয়া গেছে গা জামাই নামডা দিছোস। অথচ আমি এখনো আমার বউ খুইজ্জা পাই নাইক্কা। নামের সার্থকতা তো ধূলায় মিশা যাইতেছে। X(

-আব্বে হালা!! এতো কথা না কইয়া ক কাউরে পছন্দ টছন্দ হইছে নাকি?

-(দাঁত সব বাইর কইরা) তা তো মামা কবেই হইছে! ;)

-আব্বে শালা, গান্ডু!! তুমি তলে তলে সাবমেরিন চালানোও শুরু কইরা দিছোস! :-*

-ছিহ! অরিত্র মামু। এভাবে বলে না। আমি তো এখনো সাইকেলটাই ঠিকমতো চালাইতে পারি না। ;)

-তুমি সাইকেল চালাইতে পারো না, না!!তুমি যে তলে তলে লাল পানি খাও না এইটারই তো কোনো গ্যারান্টি নাইক্কা।

-মামু,এইসব বেহুদা আলাপ বাদ দিয়া আমার লাইনটা জোড়া লাগাইয়া দে। :|

-এতো উতলা হইছস ক্যালা? মাইয়াডা কেডা?

-ফার্স্ট ইয়ারের।

-ঐত্তেরি!! :-*

-কি হইছে?

-কিছু হয় নাইক্কা। মাইয়ার ব্যাপারে সব জানছস?

-অল ক্লিয়ার বস। মাগার কথা কওয়ার চান্স পাইতাছি না। মাইয়া তার গ্যাং মেম্বার লইয়া ঘুরে।

-গ্যাং মেম্বার?? :-*

-হ মামু। পাচ বান্ধবী এক লগে ঘুরে।

-আহা!! তুই এইটা কি শুনাইলি। এতোদিন কছ নাই ক্যান? X((

-কি কই নাই?

-আইচ্ছা আগে ক, ঐ পাচ মাইয়ার চেহারা সুরুত কেমন?

-মাশাআল্লাহ। :)

-আহা!! শুনিয়া বড়ই পুলকিত বোধ করিতেছি। (কলার চাইপ্পা ধইরা) এই কথা আগে কছ নাই ক্যান? X(

-কোন কথা মামু?

-এই যে, তোর ভবিষ্যৎ বউ এর গ্যাং এর কথা?

-কইলে কি হইতো? আমি তো প্রেম করুম একটার লগে।

-তুই শালা বড়ই পাষাণ! আমি, মশা,সাগরিকা,আনিকা এরা কি বইয়া বইয়া আঙ্গুল চুষুম? X(

-তোর তো একটা আছেই। আবার কি?

-আব্বে হালা বেশি কথা কছ ক্যান? আমরাও পাচ জন, ওরাও পাচ জন। কত ভালা হইতো।

-মামু,এইসব কিন্তু একদম ভালো না। মৌমাছি যদি জানতে পারে না তাইলে তোমারে হূল ফুটাইয়া মাইরালাইবো।

-তা অবশ্য ঠিকই কইছস। যাউজ্ঞা,বাকি ৩ টারে ফোন লাগা। মিটিং করুম আইজকা।

-টেকা নাইক্কা।

-শালা,এখনই টেকা নাই কওয়া শুরু করছ,বউ হওয়ার পর কি ঘাস কাইট্টা টেকা কামাই করবা?

-মামু, এমনে কয় না!

-আইচ্ছা যা। মাফ কইরা দিলাম।



পকেট থেকে আমার মোবাইলটা বের করে দিলাম। দিয়ে বললাম,



-কল দে বাকি তিনডারে।

-উখে মামা।



ফোন করা শেষ কইরা জামাই আমারে ডাক দিলো।



-মামু, আইতাছে ওরা।

-এহন এক কাম কর। আমার ঠ্যাং ডা টিপা দে। ব্যাথা হইয়া রইছে।

-আমি তোর ঠ্যাং টিপ্পা দিমু!!

-না দিলে আমি তোরে হেল্প করুম না।

-এইভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারলি?

-এখনো তো কিছুই করি নাই। বাকি ৩ জন তো এখনো বাকি আছে। ওরা কি করবো আল্লায় জানে।

-মামু, তোরা যা কইবি সবই করুম। তারপরও আমার ওই মাইয়ারে চাই।

-আগে ঠ্যাং টিপ। ওই মাইয়ারে তোর লাইগা সেটেল কইরা দিমু নে। ভালা কইরা টিপ।



জামাই বাধ্য পোলার মত আমার পা টিপতে লাগলো। ওর চেহারার দিকে তাকাইয়া দেখি ব্যাটা রাগে কিরমিড় করতেছে। দেইখা আমার ব্যাপুক হাসি পাইলো। চিন্তা করতেছি “পঞ্চভূজ” গ্রুপের বাকি ৩টা আইলে আবার কি না কি করতে দেয়!!



(২)

-কি ব্যাপার অরিত্র মামু,এতো জরুরি তলব?



মাঠে ব্যাগ ফেলে বসতে বসতে জিজ্ঞেশ করলো মশা ওরফে মুসা, সাগরিকা ওরফে সাগর। কিছুক্ষণ পর আমাদের আনিকা ওরফে অনিক সুন্দরীও হাজির হইলো।

-কি ব্যাপার!! জামাই তোর ঠ্যাং টিপতেছে?

অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে অনিক। আমি ওর দিকে হাইসা কইলাম,

-কাহিনী শুনলে তোরা ওরে দিয়া বাথরুমও পরিষ্কার করাইতে পারোছ।

-তাই নাকি মামু! কাহিনী কি হইছে ক তো।

আমি জামাইয়ের দিকে তাকাইলাম। দেখলাম বেচারা মুখ কাল কইরা আছে। তা দেইখা হাসি আটকাইয়া রাখতে আমার কষ্ট হইতেছে।

-আমাগো জামাই বাবাজী প্রেমে পড়ছে।

বাকি ৩ডা এক লগে চিল্লাইয়া কইলো।

-কি কইলি? জামাই প্রেমে পড়ছে?

-হুম। তোগোরে সব খুইলা কইতাছি।



এরপর ওদেরকে সব বলতে লাগলাম। কথার মাঝকানে বাকিগুলা জামাইয়ের দিকে তাকাইতেছে আর ঠোট কামড়াইতেছে। আমার তো হাসতে হাসতে অবস্থা শেষ। বহু কষ্টে হাসি আটকাইয়া রাখলাম। আমার কথা শেষ হইতে দেরি মুসা,অনিক,সাগর তিনজনে জামিলের কলার ধইরা মাটিতে শোয়াইয়া দিলো। জামাই হটাত বইলা উঠে,

-আই কিচ্চি!! তোরা আরে মারোছ কিয়ের লাই?

-শালা গান্ডু! তুমি একলাই সাবমেরিন চালাইবা আর আমরা কি বইয়া বইয়া স্কুটার চালামু?

-মামা, এখোনো তো লাইনই কিলিয়ার হইলো না।

-আব্বে হুমুন্দীর নাতী। মুখ বন্ধ রাখ। তুমি শালা ডুইবা ডুইবা লাল পানি খাইবা আর আমাগোরে কইবা না এইটাতো চলবে না।

-মামু, তোগো পায়ে ধরি। আর জীবনেও ভুল করুম না।

-আব্বে শালা কয় কি!! ঐ তুই কি আরো প্রেম করার ইচ্ছা করতেছস নাকি!!

-না মামু, তা ক্যান হইবো।



তিনজনে জামাইরে কলার ধরে বসালো। মুসা জিজ্ঞেস করলো,

-তোর লগে পরে কাহিনী করুম। এখন কথা হইলো ঐ মাইয়ার লগে যে বান্ধবী গুলা আছে ঐ গুলা দেখতে কেমন?

-মামা,সত্য কথা কইলে মারবি না তো?

-আইচ্ছা আগে ক।

-আমারটা বাদে বাকি ৪ টার মধ্যে তিনটা মৌমাছি ভাবীর লাহান। খালি একটা তোর সাইজের।

এই কথা শুনার সাথে সাথে জামাইয়ের পেটের মধ্যে মুসার রাম ঘুষি পড়লো।

-(ইয়া ঢিশুমাইক) তুই আমার শরীর নিয়া কথা কইলি ক্যান?

-মামু, ভুল হইয়া গেছে গা। আই এম চু চু চরি।

-যাহ! তোরে মাফ কইরা দিলাম।



এর মধ্যে ঘন্টা বাজলো। ব্যাগ নিয়া ক্লাসের দিকে রওনা দিলাম আমরা পাচজন।



(৩)

ক্লাসে ঢুকার সাথে সাথেই মৌমিতা সামনে এসে দাড়ালো। কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতে পারলাম উনি খেপে ব্যোম হয়ে আছেন। আমি চিন্তা করতে লাগলাম কি হইতে পারে যার জন্য আমার মৌমাছি রাইগা আছে।



-কি ব্যাপার জানু!

-খবরদার জানু বলবানা।

-এইটা কি বললা? তোমারে জানু না ডাকলে আমি কারে জানু ডাকুমজ!

-তোমার সাথে আমার কালকে কি কথা হয়েছিলো?

-কোন ব্যাপারে?

-এখন তো সব ভুলেই যাবে।

-সত্যি জানু আমি মনে করতে পারতেছি না।

-তা মনে থাকবে কেনো? আমি কি তোমার কিছু হই নাকি?

-প্লিজ জানু, রাগ করে না।

-তোমার থেকে একটা গরুও ভালো।



এইবার মেজাজ গেলো খারাপ হইয়া। আমারে গরু কইছে! অপমান!! মুখে সিরিয়াস ভাব আইনা কইলাম,

-ওকে ফাইন,আমার থেকে যেহেতু একটা গরু ভাল সেহেতো তুমি গরুর কাছেই যাও। আমার কাছে থাকা লাগবে না।

কথাটা বলেই ওর সামনে থেকে চলে এসে বেঞ্চে বসে পরলাম। আড় চোখে তাকাইয়া দেখতে পেলাম মৌমিতা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন আচরণ মনে হয় আশা করে নাই আমার কাছ থেকে।



সারা ক্লাস এমনকি টিফিন টাইমেও ওর সাথে কথা বললাম না।মাইয়া খালি কথায় কথায় আমারে গরু কয়! মান ইজ্জতের চাক্কা এক্কেবারে ফুটা কইরা দেয় সবার সামনে। এ দুক্কু আমি কোথায় রাখি!!

লাস্ট ক্লাসের একেবারে শেষ টাইমে হটাত মুসা খোচা দিলো। ওর দিকে তাকাইতেই ও আমারে মৌমিতার দিকে তাকানোর জন্য ইশারা করলো। তাকাইয়া দেখি মাইয়া কাদতেছে। যাতে কেঊ না দেখে সে জন্য সবার পিছনের বেঞ্চে বসছে। হাত দিয়া বারবার চোখ মুছতেছে। দেইখা আমার হাসিও পিলো আবার দুঃখও লাগলো। ঠিক করলাম ক্লাস শেষে কথা কমু। এ মাইয়া আবার কখন কি কইরা বসে ঠিক নাই!





বেল বাজার পর ক্লাসের বাইরে যেয়ে দাড়াইলাম মৌমিতার জন্য।কিছুক্ষণ পর দেখলাম বাহির হইতেছে।ডাক দিলাম।ওরে দাড়াইতে দেখে মনটা খুশি হইয়া গেলো।

-জানু,এখনো রাগ করে আছো?



মৌমিতা কোন কথা বলছেনা।চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি।রাগ এখনো কমে নাই বোঝা যাচ্ছে।আদুরে গলায় ডাক দিলাম,



-জানু,আর রাগ কইরা থাইকো না।প্লিজ একটু কথা বলো।তুমি এভাবে চুপ কইরা থাকলে কিন্তু আমারও খারাপ লাগে।তোমারে সাথে ঐভাবে কথা বলার পর আমার নিজেরই খারাপ লাগছে।আর যখন তোমাকে কাঁদতে দেখলাম তখন নিজের কাছে কত খারাপ লাগছে তা তোমায় বলে বুঝাইতে পারবো না।



কথাটা শোনার সাথেই সাথেই সে মাথা তুলে আমার দিকে তাকালো।ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমি চমকে উঠলাম।কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল করে ফেলছে।আবার বললাম,



-আমি সত্যিই স্যরি।আর কখনো করবো না।এই যে কানে ধরলাম।



কথাটা বলে সত্যি সত্যিই কানে ধরলাম।মৌমিতা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়েই হটাত্‍ জড়াইয়া ধরলো।আমি পুরা বেক্কল হইয়া গেছি গা।চারিদিকে তাকাইতে লাগলাম।কেউ দেইখা ফেললে ইজ্জ্বতের ফালুদা হইয়া যাইব গা।ছুটি হওয়াতে কেউ নাই এখন।আমি ওর মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বললাম,



-জানু,কেউ দেখে ফেললে তো পরে সমস্যা হবে।



কথাটা শুনেই সেআমাকে ছেড়ে দিলো।তাকাইয়া দেখলাম ওর চেহারায় একটা লজ্জ্বা লজ্জ্বা ভাব কাজ করতেছে।



-এভাবে চুপ করে না থেকে একটু কথা বলো।তুমি কথা না বললে তো আমার ভালো লাগে না।



আমার কথাটা শেষ হইতে দেরি মৌমিতা আমার কান ধরে টানতে টানতে সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগলো।আর বলতে লাগলো,



-আর কোনদিন এমন করবা তো সোজা খুন কইরা ফেলবো।

-জো হুকুম।



মৌমিতা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে কান ছেড়ে দিলো।এরপর আমার হাতটা ধরলো।হাত ধরা ধরি করেই ক্যাম্পাস থেকে বের হলাম।ক্যাম্পাসের গেট পার হওয়ার সাথে সাথেই হাত ছেড়ে দিলাম।এরপর ওকে রিক্সা ঠিক করে দিয়ে আমি বাসার দিকে রওনা দিলাম।মনের ভিতরে বিরাট একটা শান্তি কাজ করতেছে।



(৪)

টানা সাত দিন আমাদের পঞ্চভূজ গ্রুপের বাকি চার সদস্যের কোন খোঁজ খবর নাই।পুরা লাপাত্তা হয়ে গেছে।ফোন অফ করে রেখেছে।মেজাজ পুরাই গরম হয়ে আছে।ওদের প্রত্যেকটার বাসায় গেলাম।যাইয়া আমি যা শুনলাম তাতে আমি পুরা টাস্কি খাইছি।ওরা নাকি কক্সবাজার ঘুরতে গেছে।আমি যাই না শুনে আংকেল আন্টিরা অবাক হইলেন।বহুত চিন্তা করতে লাগলাম।কিন্তু কোন কারণই খুইজ্জা পাইলাম না।



রাতে পড়তে বসছি।এমন সময় মৌমিতার ফোন।চিন্তা করলাম মজা করুম ওর লগে।চেতাইয়া দিমু।ফোন রিসিভ করে কানে লাগালাম।



-কি করো?

-গাভীর সাথে কথা বলি।

-কি বললা!!

-শুনতে পাও না? আমি বলেছি আমি একটা গাভীর সাথে কথা বলতেছি।

-তুমি কি ফাইজলামি করতেছ আমার সাথে?

-ছিহ!! আমি কি তোমার সাথে ফাজলামি করতে পারি?

-তাহলে গাভীর সাথে কথা বলতেছ এই কথার মানে কি?

-এই কথার মানে বুঝো নাই?

-না বুঝি নাই।

-বুঝাইয়া বলা লাগবে?

-অবশ্যই।

-না মানে তুমি মাঝে মাঝে আমারে গরু কও তো...

-ঠিকই তো বলি। তুমি তো একটা গরুই।

-আরে কোথা শেষ করতে দিবা তো।

-আচ্ছা বলো।

-আমি যদি গরু হই, তাইলে বাংলা ব্যাকরণের লিঙ্গান্তরের নিয়ম অনুযায়ী তুমি গাভী।

-কি বললা!! তুমি আমারে কি বললা???

-শুনতে পাও নাই? আমি তোমারে গাভীবলছি। আমি গরু হইলে তুমি তো গাভীই।

- তুমি আর আমার সাথে কন্টাক্ট করবা না। আজকে থেকে তোমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ।

-জো হুকুম!! আমি আপনার আদেশ মানিয়া লইলাম।

-তুমি একটা.........

-আমি একটা গরু আর তুমি একটা গাভী।



ফোনের লাইন কাইটা গেলো। বহুদিন পর মাইয়ার রাগ উঠাইয়া দিলাম। আই এম চো মাচ পুলুকিত।কাইলক কলেজে গেলেযে কি হইবো আল্লায় জানে!কিন্তু এখন আমার টেনশন বেশি হইতেছে আমার বাকি ৪ জান কা জিগরী দোস্তগো লইয়া।কি এমন কাহিনী হইছে যে আমারে না কইয়াই শালারা কক্সবাজার চম্পট মারলো!এসব কথা ভাবতেছি।হটাত্‍ ফোন বাইজা উঠলো।মনে করছিলাম মৌমিতার ফোন।তাকাইয়াদেখি আননোন নাম্বার।রিসিভ করলাম।



-আসসালামুআলাইকুম।কে বলছিলেন।

-আপনি কি অরিত্র বলছিলেন?

-জি বলছি।আপনি কে বলছিলেন?

-ভাইয়া আমি আইরিন বলছিলাম।



নাম শুইনা আমি পুরাটাস্কি খাইলাম।এই মাইয়ারেই তো জামাই পছন্দ করছিলো।এ মাইয়া আমারে ফোন দিলো ক্যান?



-ও তুমি।ফোন কেনো করেছো?

-ভাইয়া,আপনার বন্ধু জামিলের কোন খবর জানেন?



কি ব্যাপার!এই মাইয়া জামাইয়ের কথা জিগায় ক্যান?



-না।গত সাতদিন যাবত্‍ কোন কন্টাক্ট নাই আমার ৪ বন্ধুর সাথে।হটাত্‍ জামিলের কথা জিঙ্গেস করছো কেনো?

-এমনিই ভাইয়া।আচ্ছা আমি রাখি।ভালো থাকবেন।



আমারে কোন কথা বলারসুযোগ না দিয়েই ফোনটা কেটে দিলো।কিছুটা ইঙ্গিত পাইছি।এখন ৪ হালায় কোনদিন আসে সে অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নাই।লাইট নিভাইয়া শুইয়া পড়লাম।



(৫)

পরেরদিন কলেজে যাইয়া দেখি মাঠে আমরা ৫ জন যে জায়গায় বসি সেখানে ছোট খাটো একটা জটলা।কি হইছে দেখার জন্য পা বাড়াইলাম সেদিকে।যাইয়া দেখি আমার ৪ জান কা জিগরী দোস্ত গালে হাত দিয়া মাথা নিচু কইরা বইসা আছে।দেইখাই আমার মেজাজ গরম হইয়া গেলো।সবগুলার পিঠে একটা কইরা লাথি মারলাম।দেখি শালারা তাও নড়েনা।কি যে হইছে আল্লাহ মালুম।আমি পোলাপাইন যা ছিলো সবগুলারে যাইতে বইলা ওগো সামনে বসলাম।৪ শালার একটাও মাথা উঁচা করে না।আমি সিরিয়াল বাই সিরিয়াল একটার মুখের দিকে তাইতেছি।কিছুক্ষণ পর জিঙ্গেস করলাম,



-কিরে,তোগো কি হইছে?এই সাতদিন আছিলি কই?কথা কছ না ক্যান?



শালারা একটাও কথার জবাব দেয় না।মেজাজ গরম হইয়া পদ্মাসনে বসার প্রস্তুতি নিতেছিলো।মুসার গাল সই কইরাযেই হাত তুলছি সাথে সাথেই মুসা মুখ খুললো,



-আমরা এক লগে ৪ জন ছ্যাক খাইছি।

-ঐত্তেরি!প্রেম না করতেই ছ্যাক!কাহিনী কি হইছে খুইল্লা ক,নাইলে কইলাম তোগো বেকটিরে কলেজের ড্রেনে চুবামু।

-মামু,আমরা প্রেম নিবেদন করতে যাইয়া ছ্যাক খাইছি।

-আরি শালায় কয় কি!তোরা তো আমারে কিছুই কছ নাই।তোরা না কইয়াই কক্সবাজার চম্পট মারলি ক্যান?

-শরমে।

-কি!!কিয়ের শরম?তোরা কি বিয়ার স্টেজের মাইয়া নাকি?

-মামু,তোমারে না জানাইয়া আমরা ৪ জনে প্রোপোজ করছিলাম।মগর একসেপ্ট তোকরেই নাই উল্টা থাপ্পড় বসাইয়া দিছে।

-কি!থাপ্পড় মারছে?তোমরা কি বইয়া বইয়া গরুর ঘাস কাটতাছিলা?তোরাও দিতি।

-কি যে কও না মামু!যারে ভালোবাসি তারে কেমনে থাপ্পড় দিই।

-তাইলে তোরা পালাইছস ক্যান?

-মামু ডরে আছিলাম।যদি সবাই জাইনা যায়।ইজ্জ্বতের চাক্কা এক্কেবারে বাস্ট হইয়া যাইত তাইলে।

-তোগো ইজ্জ্বতের চাকা আমিই বাস্ট করুম।সারা কলেজ জানাইয়া দিমু।

-মামু,তূই যা কইবি তাইখাওয়ামু। তাও এই অকামডা করিস না।

-উহু,তা হবে না। তুমি আমারে ঘুষ দিবা তা তো হবে না।

-মামু,তুমি যা কইবা তাই আমরা ৪ জনে হুনুম।তাও এই কাজটা করিস না।

-আইচ্ছা যা। মাফ কইরা দিলাম। এখন তোরা যদি এমনে গোমড়া মুখে বইসা থাকস তাইলে তোআমার ভালো লাগবো না। আরে এইটা হয় নাই তো মকি হইছে। মাইয়ার কি অভাব আছে নি দুনিয়ায়।



কথাটা শেষ কইরা মাথাটা মাত্র তুইলা সামনে তাকাইছি।এরপর যা দেখলাম তা দেখার সাথে সাথে আমার বুকে বুকে ধুকধুকানি শুরু হইয়া গেছে গা।মৌমিতা আসতেছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হইলো লগে আরো ৪ টা মেয়ে আছে। আর এই ৪ মাইয়া আর কেঊ না। আমার ৪ দোস্ত যে ৪ টা মাইয়ারে প্রপোজ করতে যাইয়া গালে পাচ আঙ্গুলের ছাপ বসাইয়া আসছে তারাও আসতেছে। গ্যাংমেম্বার!!



-মামু,আমার মৌমাছি তো তার দল বল লইয়া হূল ফুটাইতে আসতেছে।



কথাটা শুনার সাথে সাথে মুসা,সাগর,অনিক,জামিল এক সাথে মুখ তুইলা তাকাইলো। আর দেখার সাথে সাথেই তারা ব্যাগ লইয়া পালাইতে চাইলো। আমি জোর কইরা বসাইয়া কইলাম,



-মামুরা। এখন এইখান থেকে যাওয়া মানে লাইফের অবস্থা তেজপাতা হইয়া যাওয়া।

-কিন্তু মামু...

-রাখ তোর কিন্তু। এমন ভাব কর যেনো দেখিই নাই তাদের।



এরই মধ্যে মৌমাছি আইসা হাজির। আইসা দাড়াইয়াই রলো। আমরা তাকাইলামও না ওইদিকে।মৌমিতা মনে হয় আগে থেকেই রাইগা আছিলো।বলা নাই কওয়া নাই আমার কান ধইরা মুচড়ানি দিতে লাগলো।ব্যাথায় আমার অবস্থা তখন কাহিল!!অনেক কষ্টে মুখন খুললাম।



-কি ব্যাপার কান টানতেছো কেনো?

-তোমারে খুন কইরা ফেলবো।

-ঐত্তেরি!আমি আবার কি করলাম?

-তুমি কি করছ সেটা পরে আলাপ করতেছি।এখন এদের আলাপটা সাইরা নি।

-এদের আবার কি হইলো?



মৌমিতা তার সাথে আসা ৪ জনের দিকে ইঙ্গিত করে বললো,

-কি হইছে এবার বল।



মৌমিতার কথা শেষ হওয়ার পর আইরিন বলা শুরু করলো,



-গত সপ্তাহে আপনার এই ৪ বন্ধু আমাদের ৪ জনকে প্রপোজ করছে।

-হুম জানি। আর তোমরা তাদের গালে থাপ্পর মাইরা গালের দাড়ির পরিমাণটা বাড়াইয় দিছো।



এই কথা শুনার সাথে সাথেই মৌমিতা আমার কানে চিমটি দিলো জোড়ে কইরা। ব্যাথায় আমার কানগরম হইয়া গেলো।



-কি ব্যাপার! কানে চিমটি দেও ক্যান?

-একটা কথাও বলবা না। ওরা যা বলে তা শুনো।



আইরিন আবার বলা শুরু করলো।



-তারা কিভাবে প্রপোজ করছে জানেন আপনি? তারা প্রপোজ করছে নাকি ফাইজলামি করছে তাতারাই ভালো জানে।প্রপোজে কোনো রোমান্টিকতা নাই।তারা ৪ জনেই প্লাস্টিক ফুল নিয়া আইসাপ্রপোজ করছে।



এই কথা শুইনা আমি আমার ৪মহান দোস্তের দিকে তাকাইলাম। দেখি ব্যাটারা মাথা নিচু কইরা আছে।



-ওই হারামীর দল! তোরা তো “পঞ্চভূজ” গ্রুপের মান ইজ্জত পুরা খাইয়া দিলি!এমনে কেঊ প্রপোজ করে। আমারে কইলেই তো আমিই করা দিতাম।



এই কথা শুইনাই মৌমিতা চিল্লাইয়া কইলো,



-তুমি কি বললা? তুমি প্রপোজ করতা?

-আরে কি কও না কও! আমি প্রপোজ করতে যামু ক্যান? আমি প্রপোজ করার ইস্টাইল শিখাইয়া দিতাম আরকি!

-তোমারে এক্কেবারে মাইরা ফালামু।



মর জালা!কিছু কলেই দেহি ঝাড়ি মারে!কিয়ের লাইগা যে এই মাইয়ার লগে পিরিত করবার গেছিলাম!!



-হালারপোরা!১ এমনে প্রপোজ করতে গেছস?

-মামু আগে আকতা ট্রায়াল দিতে চাইছিলাম।

-হালা!তাই বইলা এমনে ট্রায়াল দিবি? পাখি তো উরাল দিয়া দিছে।এখন বইয়া বইয়া ললিপপ খাও।



আমার কথা শেষ হইতে দেরি।আইরিন কথা বলা শুরু করলো,



-চড়টা দিয়েছিলাম যাতে ঠিল মত প্রপোজ করে। কিন্তু এরা প্রপোজ তো করলই না উল্টা পালাইছে।



আমি এই কথা শুনে হাসুম না কান্দুম বুঝতাছু না। আমার ৪ দোস্তের দিকে তাকাইলাম। দেখি বেচারারা এখনো চুপ কইরা আছে।

মৌমিতা আবারো আমার কান ধইরা মুচড়ানি দিয়া বললো,



-এই উঠো।তোমার সাথে বোঝাপোড়া আছে।



আমি ভালো কইরাই জানি কিসের বোঝাপোড়া।তাই আর কোনো কথা কইলাম না।উইঠা পড়লাম।

আমার ঊঠার সাথে সাথে আমার ৪ জান কা জিগরি দোস্ত একসাথে কইয়া উঠলো।



-মামু আমাগোরে থুইয়া কইযাও?

-আমার এইলহানে থাকার আর দরকার নাই। এইবার তোরা নিজেগো গদি সামলা। তোমাগো মামিরলগে আমার আবার বোঝাপোড়া আছে।

-কিয়ের বোঝাপোড়া?

-গরু-গাভী সংক্রান্ত।

-এইটা আবার কি?



মৌমিতা আমার হাতে চিমটি দিয়া টানতে লাগলো।আমি গলা বাড়াইয়া কইলাম,



-পরে কমু নে। আগে বোঝাপোড়াটা সাইরা আসি।তোরা তোগো টিয়া পাখি লইয়া থাক।



মৌমিতা একের পর এক চিমটি মারতেই মাছে। চিন্তা করতেছি আজকের গরু-গাভী সংক্রান্ত বোঝাপোড়াটা কেমন হবে????



(সমাপ্ত)



প্রথম ভার্শন-

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.