![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।
কলেজ ছুটি হয়েছে। আমি হোস্টেলের কক্ষে ফিরতেছি। কিন্তু হঠাৎ একটা মেয়ে পিছুডাক দিল। তাকিয়ে দেখি নীলিমা আপু। সে আমার থেকে এক বছরের সিনিয়র হবে। আমি BSc Honors (Chemistry)-এর ২য় বর্ষের ছাত্র এবং সে ৩য় বর্ষ ফিজিক্সের ছাত্রী। তাই সিনিয়র সম্মানার্থে তাকে আপু বলেই ডাকি। আমি তাকে বললাম, 'জি আপু কিছু বলবেন?'
নীলিমা আপু আমাকে বলল, 'I love you?'
- 'What? You love, that good things. তবে এটা আমাকে বলতেছেন কেন?'
- 'বিকজ, আমি তোমাকে ভালবাসি।'
- 'ও তাই নাকি? So listen to me, My heart only for Allah. So, I love Allah and you are my big sister.' (হুজুর ফ্যাক্ট)
- 'Sorry Brother...' (Feeling cray)
.
আমি কোনো কথা না বলে চলে গেলাম। যত্তসব অভাগার দল। দু’দিন পর কলেজের উঠানে নীলিমা আপু বলল, 'এই তাহসিন তুমি কই যাও?'
- 'অধ্যক্ষ রুমে যাচ্ছি। ৬ দিনের ছুটি নিতে হবে। আম্মু বাসায় ডেকেছে।'
- 'আচ্ছা কাউকে ভালবাসা কি পাপ? কি অপরাধ করেছি যে, আমাকে ফিরে দিলে?'
- 'আসলে আপনি হচ্ছেন আমার থেকে এক বছরের সিনিয়র। আপনার সাথে আমার প্রেম করা কি শোভা পায়?'
- 'ধুর মিয়া। আজ বিয়ে হলে কালকেই বাচ্চার বাপ হয়ে যাবি, আবার কি না...'
- 'তাই নাকি! তো প্রেম না বিয়ে করেন।'
- 'আসলেই তুমি একটা পাগল। বিয়ে করার জন্যেই তো প্রেম করতে এসেছি।'
- 'ইই, শখ কত! ইনকাম করি না এক পঁয়সা আর আপনাকে করমু বিয়ে? যান যান গো-ভাগারে গিয়ে মরেণ।'
- 'আমি মরলে তুমি ঠিক থাকতে পারবে তো?'
- 'ধেৎ, আপনি এখান থেকে যাবেন! বলছি না সোজা পথ দেখেন। গায়ে কথা লাগে না বুঝি? যত্তসব!'
- 'ও আচ্ছা; ইহ, রাগ কত?'
.
জানিনা, 'আমাকে রাগালে নীলিমা এত বেশি আনন্দ পায় কেন! কিন্তু আজকের রাগটা সিরিয়াসলি অন্য ব্যাপারে।' এসব ভাবতে ভাবতে আমি বাসায় ফিরলাম। কিন্তু বাড়িতে এসে আম্মুর মুখে হঠাৎ বিয়ের কথা শুনে আমি অবাক!
আম্মুকে বললাম, 'আম্মু, আমি লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পর বিয়ে করব। এখন কিসের বিয়ে? বউকে খাওয়াব কি? স্নো, পাইডার, ময়দা ও ভূষি কে এনে দিবে?'
- 'চুপ কর হারামজাদা! বিয়ে করে বাড়িতে রাক্ষুসী নয় বউমা আসবে।'
- 'কিন্তু আম্মু, আমার কি এখন বিয়ের বয়স হয়েছে?'
- 'এ বেটা কয় কি রে? আর দুই বছর পর অনার্স পাস করবি। এখনো নাকি বিয়েরই বয়স হয়নি! দেখ বাবা, আমাকে বাড়িতে একাকীত্ব ভাল লাগে না। এবার যদি একটু অনুগ্রহ করতিস।'
- 'হুম, বুঝেছি...'
- 'সব পরিকল্পনা মাফিক চক্রান্ত!'
- 'তুই কচু বুঝেছিস!'
- 'তাহলে আর কি করার! তুমি যেটা ভাল মনে করো। তবে একাকীত্ব দূর করতে যেয়ে বাংলা সিনেমার শাশুরী-বউয়ের ঝগড়ার মতো যেন হয়।'
- 'তুই বেটা আসলেই একটা উজবুক। তোর মা ঐরকম একটা ঝগড়াটে মেয়ে বাড়িতে আনবে; তুই কিভাবে ভাবতে পারিস? সে কত সুন্দর একটা শান্ত/নম্র মেয়ে।'
- 'কত সুন্দর শান্ত মেয়ে মানে? কি সব বলতেছ আম্মু?'
- 'কথা কম বল! যা তাড়াতাড়ি গোসল করে তৈরি হয়ে নে। মেয়ে দেখতে যেতে হবে।'
- 'কী, আমি কেন যাব? তোমাদের পছন্দ হলেই যথেষ্ট। ফোনে বলে দাও যে, কালকেই বিয়ে হতে যাচ্ছে।'
.
অতঃপর বিয়ে ও বিয়ের ১ম রাত্রির অধ্যায়ে প্রদার্পন করলাম। আজ আমি সত্যি স্বীয় রুমে ঢুকতেও বেশ ভয় পাচ্ছি। একটা অপরিচিতা অচেনা মেয়েকে কীভাবে আপন করে নিব? তার সাথে কীভাবে কথা বলব? এ রকম চিন্তা করতে করতে রুমে প্রবেশ করলাম। মেয়েটা একটা বড় মাপের পট্টি দিয়ে আপাদমস্তক পর্যন্ত আবদ্ধ করে খাটে বসে আছে। দেখেই তো মনে হচ্ছে- অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী স্বর্গের ললিতার মতো।
.
আমি সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করলাম। সে সালামের উত্তর দেওয়াতে কণ্ঠটা বেশ পরিচিত লাগছে। আমি আস্তে করে তার কাছে গিয়ে কাপড়টি মুখ থেকে সরিয়েই অবাক হলাম! নীলিমা এখানে কেন? তার থেকে মুখ ফিরিয়ে ঘর থেকে বের হতে যাব, ঠিক ঐ সময়ে নীলিমা আমার হাতটা শক্ত করে ধরেই বলতেছে, 'কোথায় যাবে? এই ছুরিটা দেখেছ নিশ্চয়ই? একেবারে খুন করে ফেলবো।'
- 'আপনার সামনেই তো আছি। খুন করুন আমাকে। কচুময় জীবন! বিয়ে করেও শান্তি নাই।'
- 'তোমাকে খুন করব কেন?'
কথাটা বলেই ছুরিটা সে তার নিজের গলায় ধরেছে। আমি তার হাত থেকে ছুরিটা কেরে নিয়ে বললাম, 'বিয়ে যখন করেই ফেলছি তাহলে আর কি করার আছে! এখন আমি ঘুমালাম। প্রয়োজনবোধ মনে করলে ঘুমান। আর নাহলে ওখানেই বসে থাকুন। শুভ রাত্রি।'
- 'আজকে কিসের ঘুম? কোন প্রকার ঘুম চলবে না। সারা রাত শুধু গল্পই চলবে।'
- 'ঠিক আছে। আপনি গল্প করুন আমি ঘুমাই, কেমন?'
- 'এই তুমি এরকম কর কেন? আমি কি দেখতে অসুন্দর-খারাপ?'
- 'আচ্ছা, বলুন তো এই নাটকটা কে সাজিয়েছে?'
- 'কোন নাটক?'
- 'ভার্সিটিতে আপনি আমার সাথে প্রেম করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন। এখন আবার বধু সেজেছেন। কি হচ্ছে এসব!'
- 'আমি কি করব বল? সবই তো তোমার আম্মুই করেছে। আমাকে যা বলেছে, আমি তাই করেছি। বিশ্বাস করো, তোমার ভালবাসা পাওয়ার জন্যই এসব করেছি।'
.
আমি মনে মনে বললাম, 'রাগ কাকে বলে? যাহ শালার সবই ধান্দাবাজ।' নিশ্চুপ হয়ে ঘুমানোর ভান করে শুয়ে থাকলাম। কিন্তু কখন যে ঘুম ধরেছে নিজেও জানি না। হঠাৎ ঘুম ভাঙলো কান্নার আওয়াজ শুনে। জেগে দেখি নীলিমা অঝোর নয়নে অভিরাম কাঁদছে। ঘড়িতে তাকিয় দেখি রাত ৩টা বেজে ৪০ মিনিট। আমি নীলিমাকে বললাম, 'বিধি তুমি কাঁদছো কেন? ঘুমাওনি কেন?'
.
কোনো প্রত্যুত্তর নেই। একদম নিশ্চুপ! তার চোখ দিয়ে এখনও অশ্রু ঝরছে। আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে ক্ষীণ কণ্ঠে বললাম, 'প্লিজ নীলিমা কান্না বন্ধ করো। আমার ভুল হয়েছে। ম্যায় তুমছে পেয়ার করতাহুঁ। '
- 'ম্যায় তুমছে বহুত পেয়ার করতেহুঁ। Give me a kiss on my forehead.'
- 'তুমি অনেক সুন্দর!'
-'হিহিহি, আমি শুধু তোমার জন্য।'
আমার মুখে 'তুমি' শব্দটি শুনে তার স্বস্তি ফিরেছে। এবার আমি তার কপালে মিষ্টি একটা চুমু একেঁ দিয়ে বললাম, 'চলো অযু করে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ি...'
নীলিমা মিষ্টি মৃদ্যু হাসি দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতেছে, 'হে বিধাতা! তুমি আমার স্বপ্নকে পূরণ করেছ। লক্ষ-কোটি শুকরিয়া বিশ্ব প্রভুর নিকট।'
.
মনে মনে ভাবতে লাগলাম, 'যে মেয়েটা আমাকে এত ভালবাসে! আমার জন্য সারাটা রাত জেগে জেগে কান্না করতে পারে। আমার মুখের মুচকি হাসি দেখে সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে পারে। তাহলে তাকে কেন অবহেলা করব! তার স্থান তো আমার হৃদয়ের মধ্যখানে থাকার কথা। আমি যাকে ভালোবাসব সেটা তো নয়; বরং আমাকে যে মেয়ে ভালোবাসবে সেটাই প্রকৃত ভালোবাসা।'
.
আমার বক্ষের ভিতর দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ আজকে সত্যি আমি নীলিমার প্রেমে অদৃশ্য মায়ার ইন্দ্রজালে বশিভূত হয়েছি। আমার নেত্রপল্লব থেকে মনের অজান্তেই নীলিমার কাঁধে অপ্লাবিত অশ্রু ঝরছে। এটা কোনো দুঃখের অশ্রু নয়, আনন্দের অশ্রু।
.
"কাওছার আজাদ"
২| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:০৮
কাওছার আজাদ বলেছেন: [ভাই কি ইহা স্বপনে দেখেছেন??? নাকি ইহা মনের গুপ্ত খায়েস???
@"স্নো, পাইডার, ময়দা ও ভূষি"
-- এখনকার তরুণীরা ওসব পেলেই খুশি।...]
.
ভাই, ইহা স্বপন ও গুপ্ত খায়েসের মধ্যবতী কাহিনী। ময়দা ও ভূষির দাম এত বৃদ্ধি হওয়ার কারণই মেয়েরা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ভাই কি ইহা স্বপনে দেখেছেন???



নাকি ইহা মনের গুপ্ত খায়েস???
@"স্নো, পাইডার, ময়দা ও ভূষি"
-- এখনকার তরুণীরা ওসব পেলেই খুশি।।