![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।
বউ ঝগড়া করে বাপের বাড়িতে চলে গেছে। তা যাক, এটা ফ্যাক্ট নয়। কিন্তু সমস্যা বাজলো রান্না নিয়ে। রান্না করতে গেলে মন মেজাজ তেরো-চৌদ্দতে উঠে যায়। তাই বাধ্য হয়ে বৌকে ফোন দিলাম। দিয়েই বলতে লাগলাম,
.
'রান্না করতে জীবন যাচ্ছে,
হাড্ডি হচ্ছে পানি।
ওই হারামি দ্রুত চলে এসো বাড়ি,
বউ তেড়ে হয়ে আমাকে দিল ঝাড়ি।
কহিলো মোরে,
কি? আমি হারামি!
তোমার মাথার তার ছিড়ে গেছে,
তাইতো আমার লাগছো পিছে।
আবোল-তাবোল বকছো তুমি,
কথা শুনে আসছে বমি।
আমি যদি হই হারামি,
আমার চেয়েও তুমি বড় হারামি।
.
কহিলাম আমি,
ঝগড়া করো তুমি দিবা-শর্বরী,
কথায় কথায় এই ভাব এই আড়ি,
চলে যাও তুমি বাপের বাড়ী!
স্বামীর দুঃখ বুঝো না তুমি,
এ কেমন নারী!
সূর্য ওঠার আর কত দেরি?
তুমি বিনে একাকি থাকতে পারি?
ওই হারামি দ্রুত চলে এসো বাড়ি।
.
কি? আবার আমি হারামি!
এসব বলে রাগাও আমাকে,
এ কেমন স্বামী তুমি?
কেটে দিলাম তবে ফোন,
এখনো যদি করো এমন।
তবে শুনে রাখো পতী,
আমি থাকলেই তো ক্ষতি।
সভয়ে সূর্য গিয়েছে অস্ত,
আর কিছুক্ষন করো কষ্ট।
ঝগড়ার আগে যদি ভাবতে এত,
তবে হতে না আমার কাছে নত।
আসবে যদি তুমি আমাকে নিতে,
তবে তোমার সনে যাবো বাড়িতে।
.
ওই হারামি রাখো তুমি ফোন,
শুনতে চাই না আমি এসব কথন।
ঠিক দুপুরে যাবো তোমাকে আনতে,
রাঁধুনী হয়ে আসবে তখন বাড়িতে।
অবশেষে গেলাম আমি শ্বশুর বাড়ী,
শাশুড়ীর অনুরোধে দিলাম রাতটি পারি।
সূর্যি মামা জেগে ওঠে দিলো দুয়ারে উঁকি,
মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম তাকে ডাকি।
ওই বউ হারামি ওঠো তাড়াতাড়ি,
সকাল হয়েছে তবে যেতে হবে বাড়ী।
বউ তেড়ে হয়ে আবার দিল ঝাড়ি!
কহিলো মোরে মুখের জোরে,
থাকা যায় না আর কটা দিন ধরে?
কেন নয়?
হ্যাঁ থাকো তুমি জনম ধরে।
কিন্তু নয় কোনো নয় আড়ি,
এক বস্তা দুঃখ আর দুই বস্তা রাগ নিয়ে,
প্রস্থান করলাম তবে শ্বশুর বাড়ী।
.
হতচ্ছাড়া, লও বুঝো মজা! আমি আর কখনো তোমাকে আনতে যাবো না। বিয়ে করছি অবধি শুধু ঝগড়া আর ঝগড়া। বাপের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যেয়েও ছাড় দিলা না! তাই রাগে, দুঃখে ও অভিমান করে বাড়িতে আসলাম। ওহ্ হ্যা, অনেকদিন পর শ্বশুর বাড়িতে যাওয়াতে শাশুমা এই বড় একটা মোরগ জবো করেছিল। সাথে পোলাও-বিরিয়ানি তো ছিলই। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আমি না খেয়েই চলে এসেছি। নিশ্চয়ই শাশুমা এই রাগ তার মেয়ের উপরই প্রয়োগ করবে- 'হারামজাদি, কত দিন পর জামাইটা এসেছে! আর তুই তাকে না খাইয়েই বিদায় করে দিলি! সে কী আর জীবনে এই বাড়িতে আসবে! একমাত্র তোর জন্যই এত কিছু।'
.
এদিকে আমি বাড়িতে এসে কোনো রকম ভাত রান্না করে ফ্রিজে রাখা কচুশাক দিয়ে ম্রে দিলাম দু'প্লেট। অতঃপর স্বস্তির ঢেকুর দিয়ে বলতে লাগলাম- 'তোমাদের মেয়ে, পোলাও, বিরানি, গোস্ত ও মাস্ত কিছুরই আমার দরকার নাই। আমার জন্য কচুশাকই যথেষ্ট। এ জন্য বাড়ির পাশে কচুবাগান তো আছেই।'
.
'কাওছার আজাদ'
©somewhere in net ltd.