নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Don\'t be afraid to tell the truth. Because the victory of truth is inevitable.

কাওছার আজাদ

সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।

কাওছার আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

“পৃথীবীতে এতো মহামারি গজব কেন?”

২১ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫২

[১]
সাইয়্যিদিনা মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আল্লাহকে বললেন, “হে আমার প্রতিপালক! আপনি পৃথিবীতে যখন গজব দেন তখন খারাপ মানুষদের পাশাপাশি ভালো তথা ঈমানদার মানুষদেরকেও কেন সেই গজবের মধ্যে সামিল করেন? আপনি চাইলে তো বেছে-বেছে শুধু বেঈমান মানুষগুলোকেই সেই বিপর্যয়ে পরিবেষ্টিত করতে পারতেন। কিন্তু সবাইকে কেন?”
আল্লাহ বললেন, “ওহে মূসা! অপেক্ষা করো সময় মতো তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবা।”
মূসা বললেন, “ঠিক আছে।”
.
একদিন মূসা (আ.) নিজ এলাকা থেকে অন্য এলাকায় দাওয়াতি কাজে বের হলেন। পথচলতে গিয়ে এক পর্যায়ে তিনি ক্লান্ত হয়ে একটা গাছের তলায় বসে বিশ্রাম নিতে লাগলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার তন্দ্রা এসে গেলো। সেই গাছের তলায় ছিল লাল পিঁপড়ার বাসা। দু’একটা পিঁপড়া মূসা (আ.)-এর পায়ের উপর উঠে কুট্টুস-কুট্টুস করে দিছে কামড় বসিয়ে। মূসা (আ.) লাফ দিয়া উঠলেন। রেগেমেগে তো এক্কেবারে আগুন! তিনি পিপিলিকাগুলিকে পদতলে পিষ্ট করতে লাগলেন। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তায়ালা বলতে লাগলেন, “মূসা! কামড় দিয়েছে কয়টা পিঁপড়া? অর্থাৎ পিঁপড়াদের মধ্যে তোমার কাছে অপরাধী কয়জন?”
– “দুই-একটা...”
– “তাহলে সব পিঁপড়াদেরকেই কেন শাস্তি দিচ্ছো?”
মূসা (আ.) নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আল্লাহ তায়ালা আবার বলতে লাগলেন, “মূসা! এখনো কি তোমার সেদিনের প্রশ্নের উত্তর পাওনি? কোনো জাতির মধ্যে যখন আমার অবাধ্যতা বেড়ে যায়, অবাধে সবাই পাপাচারে লিপ্ত হয়ে যায়, তখন আমিও সেই জাতিকে নানানভাবে শাস্তি বা গজব দেই। আমি রহিম-রহমান এবং আমি আল-কাহার বা মহাপরাক্রান্তশালী। আমার রাগ আছে। এই রাগের অনলে শুধু অপরাধীরাই দগ্ধ হয় না, পাশাপাশি সাধুবেশী ভালো মানুষগুলোও...”
.
[২]
যখন কোনো জাতির ওপর আজাব আসে, তখন শুধু পাপীরাই এতে আক্রান্ত হয় না। বরং মহামারি শুরু হলে নেক বান্দারাও আক্রান্ত হয়। দ্বীনি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা, নেক কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে বাঁধা প্রদান করা ছেড়ে দেয়ার কারণে এই আজাব আসে। যেমন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,-
‘অতএব, তোমাদের পূর্বের প্রজন্মসমূহের মধ্যে এমন প্রজ্ঞাবান কেন হয়নি, যারা জমিনে ফাসাদ করা থেকে নিষেধ করত? এমন লোক কমই ছিল, তাদের আমি বাঁচিয়ে নিয়েছিলাম। জালিমরা বিলাসিতার পেছনে পড়ে ছিল এবং তারা ছিল অপরাধী।’ (সূরা-হুদ/১১:১১৬)।
.
বর্তমানে মানব সভ্যতা পাপ ও পতনের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সৃষ্টিকর্তা আর কত সহ্য করবে এসব অবাধ অন্যায়? এজন্য প্রতি মুহূর্তে নানান বিপর্যয়ের মুখোমুখী হতে হচ্ছ মানব জাতিকে। প্লেগ, কলেরা, এইডস, ডেঙ্গু, ইবোলা, নিপা, জিকা—কত নাম-জাতের রোগেই না আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ! এখন আবার বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্কের নাম নোভেল করোনা ভাইরাস! এসব আমাদের হাতের কামাই। আল্লাহ তায়ালা এমনি এমনি কোনো জাতির উপর মহামারি বা গজব নাজিল করেন না—আমরা আল্লাহর অবাধ্য হয়ে চলি, গজবের কাজ করি, গজবকে হাতছানি দিয়ে ডাকি জন্যি গজব আমাদের মাঝে আসে। যেমন, বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,-
‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ বা অনুরূপ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। (ইবনে মাজাহ, ৪০১৯)।
এই হাদিসের ব্যাখ্যা আর কি করব? এখানে স্পষ্টই লেখা যে, ‘এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।’ সত্যিই তো! যুগ যুগ ধরে মানব সভ্যতা যেসব ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে, তা ইতঃপূর্বে অজানা অচেনা ছিল! ১৮১৭ সাল থেকে ১৮২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কলেরা রোগের রাজত্ব ছিল। যেটাকে এর আগে কেউ চিনতোই না। ১৮২০ সালে কলেরা প্রকট আকার ধারণ করে। এখন আবার ২০০ বছর পর ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস মহামারিতে রূপ ধারণ করেছে। অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রকৃতি এত পাপ সহ্য করে না। যেসব জাতি প্রকৃতিতে পাপে পরিপূর্ণ করে রাখে, এসব পাপগুলিকে বিবর্তিত করে প্রকৃতিও সময়ে অসময়ে তাদের জন্য একটা করে চমক নিয়ে হাজির হয়।
.
[৩]
কিচ্ছু করার নেই। আমরা নিরুপায় হয়ে ভিক্ষুক কাঙালের ন্যায় আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি,– “ইয়া আল্লাহ! আমাদের দেশের মানুষকে করোনার বিষাক্ত ছোবল থেকে রক্ষা করুন। আপনার ভালোবাসার আলোকে আমাদের দেশকে আলোকিত করুন। ইয়া আল্লাহ! আমাদেরকে শান্তি দিন। পতন থেকে আমাদের রক্ষা করুন। সমগ্র বিশ্বের মুসলিম জাতিকে হেফাজত করুন। এবং বিধর্মী ভাইদেরকে হেদায়ত দিন।”
আমরা আরও প্রার্থনা করছি,– “আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’য়ুজুবিকা মিনাল বারাছ, ওয়াল জুনুন, ওয়াল জুযাম, ওয়া মিন সায়্যিইল আসক্বাম।”
.
– “কাওছার আজাদ”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.