![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।
[১]
অন্যসব কবিদের মতো কবিতার বিসয়বস্তু খোঁজার লক্ষ্যে রোমাঞ্চকর অনুভূতি নিয়ে প্রকৃতির অপরূপা বৈচিত্র্যময় দৃশ্য দেখে বেড়াচ্ছি। ঠিক সেই মুহূর্তে হুট করে একটা ষাড় বা বলদ তেড়ে এসে আমাকে শিং দিয় গুঁতো মারলো। অবুঝ প্রাণী! তাকে তো আর কিছু বলা যায় না, তাই ব্যাথাতুর শরীর নিয়ে আমার বউ সখিনার সামনে এসে একখান কবিতা জাহির করলাম,-
“আমার প্রিয়তমা সখিনাকে দেয়ার জন্য,
হস্তদ্বয়ে হলুদ-সাদা রঙের পদ্মফুল নিয়ে,
মাঠঘাট ধানক্ষেত আর মেঠো পথ ধরে,
আনমনে হাঁটছি আমি সন্তপর্ণ লগ্ন পায়ে।
প্রকৃতির অপরূপা বৈচিত্র্যময় দৃশ্য দেখে,
কবিতা আবৃতি করছি আমি মনের সুখে।
পথের ধাঁরে ঘাস খাচ্ছে এক পাগলা ষাঁড়,
কী ভেবে যেন সে আসলো এদিকে তেড়ে,
শিংবাগিয়ে গুঁতোয় নড়ে দেয় মোর ঘাড়।
ধানক্ষেতে পড়ে গিয়ে হলাম কর্দামবৃতি,
ষাড় বেচারা তখন করছে কবিতাবৃতি।”
.
আমার এই কবিতা শুনে বউ ব্যথার্ত স্থানে তেল-মলম মালিশ না করে অট্টহাসি দিয়ে গড়াগড়ি করতে লাগলো। কী এক্টাবস্থা! আমি তাকে ঝাড়ি দিয়ে বলতে লাগলাম, “আমি ব্যথায় কাঁতড় (!) আর তুমি হাসছো? খুব ভালো। কিচ্ছু বলার নাই। তোমরা নারী জাতিরা আসলে এরকমই।”
– “তা তুমি বলতে পার। তবে বাড়িতে এসে ষাড়ের নামে এরকম কবিতা আওড়ানোর চেয়ে ষাড়ের গালে পাল্টা দুটো কষিয়ে থাপ্পড় দিলেই তো পারতে।”
– “তোমার মাথা খারাপ নাকি! ষাড়ের কাজ ষাড় করেছে, আমার কাজ আমি! তোমার তাতে কি?”
– “সত্যি বলতে, তোমার মতো কবি ও সাহিত্যিকরা এরকমই। সামান্য একটু ইস্যু পেলেই বানিয়ে বানিয়ে মহাভারত রচনা করে ফেলো। রাস্তা দিয়ে একটা কালো কিংবা সাদা মেয়ে হাঁটলেও তাকে নিয়ে কবিতা লিখো। এই যে, আজকে একটা ষাড় শিং দিয়ে তোমাকে গুঁতো মেরেছে, সেটাও কবিতায় স্থান পেলো। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, কবি ও সাহিত্যিকরা নিশ্চয়ই বিপজ্জনক।”
বউয়ের কথা ফেলে দেওয়ার মতো নয়। সে ঠিকই বলেছে। চোখের সামনে যা কিছু ঘটে বা দেখি, তা অতিরঞ্জিত করে শিল্প-সাহিত্য কিংবা কাব্যরস মিশিয়ে যত্রতত্র লিখে পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করি। ভিতরে কোনো কথা ধরে রাখতে পারি না। কি-বোর্ড টিপে ফেসবুক বা নোটপ্যাডে হোক কিংবা ডাইরীতে হোক, লিখতে পারলেই শান্তি লাগে।
.
[২]
আর সাংবাদিক ও ক্যামেরা ম্যানের কথা কী বলব? সাংবাদিকরা তো তিলকে তাল বানিয়ে মিডিয়াতে খবর প্রচার করে। সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত খবর প্রকাশ করা এদের নিত্যনৈমিত্তিক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আপনি যদি আলোচনায় আসতে চান, তবে এদের থেকে সাবধান থাকা নয়; বরং এদের নজরে থাকুন। তবে ইউটিউবার বা ক্যামেরা ম্যানদের থেকে অবশ্যই দূরে থাকবেন। কারণ, চলতে ফিরতে আপনার দ্বারা যদি প্রীতিকর বা অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটে, তবে এরা আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল করে দিবে। এদের উদ্দেশ্য আপনাকে ভাইরাল করে নিজেরা সেলিব্রেটি বনে যাওয়া।
.
– “কাওছার আজাদ” (কচুবিদ বা কচুস্টাইন)
©somewhere in net ltd.