![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।
মাঝেমধ্যে খুব বেশি হতাশ হয়ে যাই। বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা, দুশ্চিন্তা, দৌর্মনস্য, উৎকণ্ঠা ও নিরাশা যেন লেগেই থাকে সব সময়। স্বভাবতই এ সময়গুলোতে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। মনের মধ্যে তখন সহস্র প্রশ্ন উত্থিত হয়— আমার এত দুঃখ কেন? আমার এত কষ্ট কেন? আমি এটা পেলাম না কেন? আমি ওটাতে সফল হতে পারলাম না কেন? পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পেলাম না কেন? আবার, অনেক ধরনের হায়হুতাশ— ওই চাকরিটা যদি হত খুব ভালো হত! আহ, জীবনটা বেদনার! স্বপ্নগুলো অপূর্ণই থেকে গেলো! উহ, কচুময় জীবন! তৎক্ষণাৎ মনে পড়ে যায়— 'কষ্টের সঙ্গেই তো স্বস্তি আছে। অবশ্যই কষ্টের সঙ্গেই স্বস্তি আছে।' (সূরা আলাম নাশরাহ, ৫-৬)। তখনই নিজেকে বুঝাই, সান্ত্বনা দেই, স্বীয় আত্মাকে স্মরণ করে দেই— অবশ্যই আল্লাহ তাআলার এ ওয়াদা সর্বকালের জন্য সত্য। তিনি কাউকে নিরাশ করেন না। কারণ, তিনিই তো বলেছেন,—
'তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।' (সূরা আলে ইমরান, ১৩৯)
এসব আয়াতগুলো যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে তখন আরও বেশি ত্বরান্বিত হই। নিজেকে তখন আর খারাপ লাগে না। অনুপ্রেরণা পাই। হতাশা কেটে যায়। কোনো এক অদৃশ্য শক্তির কবলে দুশ্চিন্তা বা দৌর্মনস্যতা অপব্যয়িত হয়ে যায়। তখন নিজেকে একলা মনে হয় না। এই তো, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমার সাথেই আছেন। আমার এত দুঃখ কীসের? লা-তাহযান! লা-তাখাফ!
.
ড. আয়িদ আল-ক্বরনী তার 'লা-তাহযান' (Don't Be Sad) বইয়ে অসাধারণ কিছু উদাহরণ টেনেছেন। নিজেকে খুব বেশি হতাশাগ্রস্থ বা নিরাশাবাদী মনে হলে বইটি সবাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ করব। আর মনুষ্যকুলের সবাই আমরা কমবেশি 'হতাশা' নামক রোগে আক্রান্ত। এজন্য প্রত্যেকরই পড়া উচিত। যদিও সম্পূর্ণ বইটি আমি এখনও পড়ে শেষ করতে পারিনি। তবে যতটুকু পড়েছি, সেগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা নোট করেছি,—
"আহার করার পর পুনরায় ক্ষুধা লাগে, পান করার পর পুনরায় পিপাসা জাগে। অস্থিরতার পর ঘুম আসে। অসুস্থতার পর সুস্থতা আসে, পথ হারার পর পথ খুঁজে পাবে আর রাতের পর দিন আসবে এটাই নিয়ম। অনুরূপভাবে কষ্টের পরও স্বস্তি আসবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।" [১]
"একজন মেধাবী ও দক্ষ ব্যক্তি ক্ষতি (লােকসান)-কে লাভে রূপান্তরিত করে, যেখানে নাকি একজন অদক্ষ লোক প্রায়ই এক মুসিবত থেকে আরেক মুসিবত সৃষ্টি করে নিজের দুর্দশাই কেবল বৃদ্ধি করে। যদি আপনি দুর্ভাগ্যগ্রস্ত হন তবে আলাের দিকে তাকান। কেউ যদি আপনাকে লেবু চিপে এক গ্লাস রস দেয় তাতে আপনি এক মুঠো চিনি মিশিয়ে দিন। আর যদি কেউ আপনাকে একটি সাপ উপহার হিসেবে দেয় তবে আপনি এর দামী চামড়াটাকে রেখে বাকি অংশটুকু ফেলে দিন।" [২]
"ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্স দু’জন মেধাবী কবিকে বন্দি করে : একজন আশাবাদী ও অন্যজন নিরাশাবাদী। তারা উভয়ই জেলখানার জানালার শিকের ফাক দিয়ে তাদের মাথা বের করেছিলেন। আশাবাদী কবি আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে হেসেছিলেন, যখন কি-না নিরাশাবাদী কবি রাস্তার ময়লার দিকে তাকিয়ে কেঁদেছিলেন। বিষাদময় ঘটনার অপর দিকে তাকিয়ে দেখুন যে, নির্ভেজাল মন্দ-পরিবেশ বেশিক্ষণ টিকে থাকে না। এবং সব অবস্থাতেই এক আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণ, লাভ ও পুরস্কার পেতে পারে।" [৩]
পবিত্র কুরআন বলেছে, “আর এটাও হতে পারে যে, যা তােমাদের জন্য কল্যাণকর তাই তােমরা অপছন্দ করছ।" (সূরা বাকারা, ২১৬)
.
—'কাওছার আজাদ'
©somewhere in net ltd.