![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।
[ক]
‘হেফাজত-জামাত প্রচুর মানি লন্ডারিং করেছে।’ বলে মন্তব্য করেছেন, গণকমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। এছাড়াও জঙ্গি অর্থায়ন ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কাজ করছে এমন ১১৬ জন ওয়ায়েজিনের (ধর্মীয় বক্তা) একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত ‘গণকমিশন’ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
এই ১১৬ জনের মধ্যে মিজানুর রহমান আজহারী, আব্দুল্লাহ আল আমিন, রেজাউল করিম, তারিক মুনাওয়ার, আবুল কালাম আজাদ বাশার, এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, আব্দুল খালেক শরিয়তপুরী, আমির হামজা, আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া, মতিউর রহমান মাদানী, কবি মুহিব খান, গিয়াসউদ্দিন তাহেরীসহ আরও যারা বিভিন্ন মানহাজের খ্যাতিমান ধর্মীয় বক্তা রয়েছে, কাউকেই বাদ রাখেনি। এসব তালিকাভুক্ত বক্তারা নাকি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, জঙ্গি অর্থায়ন, মানি লন্ডারিং ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কাজ করছে। ভাবা যায় এগ্লা? ছিঁচকে সেলুকাসগুলো দেখি এতদিনে ভালোই সাহস সঞ্চয় করেছে! নিজেদের পশ্চাৎদেশে বিষ্ঠা নিবদ্ধ রেখে ধর্মীয় বক্তাদের পশ্চাদংশের বিষ্ঠার ঘ্রাণ আস্বাদনে ভালোই তৎপর হয়ে উঠেছে দেখি! ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই, ফঁসি চাই...’ স্লোগানে শাহাবাগের অঙ্গন যারা মুখরিত করে রেখেছিল, সেসব উলুম্বুস গবেটগুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সহস্রাধিক আলেমদের রক্ত শোষণ করেও, নির্যাতনের কষাঘাতে নিষ্পেষিত করে বন্দিশালায় বন্দি করে রেখেও এবং নিরপরাধ আলেমদের ফাঁসি দরিতে ঝুলিয়েও যারা এখনও ক্ষান্ত হয়নি, বুঝতে হবে– এদের মিশন অনেক বড়, এরা মূলত ইসলামকেই এদেশ থেকে উৎখাত করতে চায়। কিন্তু এরা জানে না ইসলামের বার্তিকা কার হাতে! তিনি চাইলে এদেরকে ময়লার স্তূপের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে পারেন। সেই দিনটির অপেক্ষায়...।
[খ]
এখন আসি গণকমিশন এবং এই ভুঁইফোড় সংগঠনের চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের দিকে।
শাহবাগী এই সংগঠন প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই নানাভাবে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাঁয়তারা চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ তারা দেশবরেণ্য ওলামা-মাশায়েখ এবং ইসলামী আলোচকগণের এ তালিকা প্রকাশ করে চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। উপরন্তু, তথাকথিত ভুঁইফোড় সংগঠন গণকমিশনের দায়িত্বশীলদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে আমার জানা নেই।
স্বাধীনতার পর দেশের বিচার বিভাগে মানিকের মতো এমন দুর্নীতিবাজ বিচারপতি আর কখনো আসেনি। দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে বিদেশেও মামলা হয়েছে। তিনি দুর্নীতি ও প্রতারণা করে লন্ডনে বাড়ি করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও প্রতারণার ২৯টি সুনির্দিষ্ট প্রমান দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতির কাছেও দেয়া হয়েছিল। তারা তখন কোনো এক অজানা কারণে তার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি।
তারপর, ২০১২ সালের ২৫ জুন জিসান নাসিম নামে এক ব্যক্তি লন্ডনের আদালতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। জিসান নাসিম পাকিস্তানি নাগরিক। দায়ের করা মামলার দাবি অনুযায়ী ওই ব্যক্তির কাছে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী নিজেকে ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজার হিসেবে পরিচয় দেন। ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি ওই ব্যক্তিকে লন্ডন ওয়েস্টমিনস্টার কলেজে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন, এই কলেজের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজারের পাশাপাশি নিজেকে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের একজন বিচারপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে কলেজটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এতে জিসান নাসিম আশ্বস্ত হয়ে বিচারপতি মানিকের পরামর্শে সেই কলেজে ভর্তি হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এজন্য লন্ডনের স্থানীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেন তিনি।
এভাবেই বিচারপতি থাকাকালীন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক দুর্নীতি-প্রতারণা ও সংসদকে নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করে পদে পদে সংবিধান ও শপথ লঙ্ঘন করেছেন। তিনি তার পুরোটা সময় বিচারক সেজে রাজনৈতিক রায় দিয়ে গেছেন হাইকোর্টে। তার কারণে সুপ্রিম কোর্টের এম ইউ আহমেদ নামে একজন আইনজীবী নিহত হয়েছেন। ‘উচ্চ আদালতের বিচারকের গাড়িতে সালাম না দেওয়ার কারণে ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের আদালতে কান ধরে বসে থাকতে বাধ্য করেছিলেন।’ জানেন সেই ব্যক্তির নাম কি? শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক! এরকম নানাবিধ দুর্নীতি-প্রতারণার কারণে তার অবসরের সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে তাঁকে বিদায়ী সংবর্ধনা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ভাবা যায় এগ্লা?
তিনি বিচারক থাকাকালীন সময়ে সংসদেই অনেক সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান তার সমালোচনা করেছেন এবং আওয়ামীলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ তাকে স্যাডিস্ট বলে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ অন্যকে হেয় করে সে ভালোই মজা পেত। শুধু তাই নয়, অবসর গ্রহণের পরেও মামলায় রায় দেওয়া নিয়ে তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিচারকের আসনে বসে কত রকমের দুর্নীতি করেছেন এই মানিক, তা লিখে শেষ করা যাবে না।
সে যেসব আলেমদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এর অভিযোগ এনেছে, তারা কিন্তু দ্বৈত দেশের নাগরিক নয়। বিদেশে তাদের বাড়ি নাই। বিদেশে তাদের সম্পদ নাই। অথচ আপনি মানিক বৃটেনের নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানে বসতবাড়ি পর্যন্ত করেছেন।একজন বিচারপতি হয়ে দ্বৈত দেশের নাগরিক হওয়া কতটুকু সংবিধান সমর্থিত, সেটাও কিন্তু ভাবার বিষয়। আর সে-ই দুর্নীতিবাজ প্রতারক প্রাক্তন বিচারপতি কি-না আলেমদের বিরুদ্ধে আঙুল তোলে, তাদের নাম কালো তালিকাভুক্ত করে দুদকের কাছে জমা দেয়! ভাবা যায় এগ্লা?
অপরদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা সমূহের সরকার পক্ষের আইনজীবী তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার এক আসামির সঙ্গে তুরিন আফরোজ গোপনে বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কথিত গণকমিশন সংগঠনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ক্ষমতার দাপটে বিধবা মা ও ভাইকে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানি করে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিল। তার নিজের গর্ভধারিণী মা সংবাদ সম্মেলন করে হুমকি-ধামকি, সম্পদ কুক্ষিগত করা ও রাত-বিরাতে অপরিচিত লোকদের বাসায় গমনকারীদের বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেন। সেই তুরিন আফরোজ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে এবং দেশি-বিদেশি প্রভুদের খুশি করতে এই কাজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করছি– সরকারের সাথে আলেমদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করার জন্য এই তুহিন আফরোজ কাদের হয়ে কাজ করছে, সেটাও পর্যেষণা করে দেখা উচিত। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দুর্নীতিবাজরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনৈতিকে হুমকির সম্মুখীন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে আলেম-ওলামাদের হয়রানি করা, তাদের নামে মিথ্যা মামলা করা এবং
সহস্রাধিক দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।
.
–'কাওছার হাবীব'
©somewhere in net ltd.