নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Don\'t be afraid to tell the truth. Because the victory of truth is inevitable.

কাওছার আজাদ

সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।

কাওছার আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতা মানে কি?

১২ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:১৩

আমাদের বাড়িতে কিছু মুরগির মধ্যে অন্যতম একটি বুড়ানি মুরগি আছে। এখন আছে বললে ভুল হবে। কারণ, কালকে রাত ১২ টার কিছুক্ষণ আগে সেই মুরগিটাকে বনবিড়াল (উত্তরবঙ্গে এই প্রাণিটি গাড়োয়া বা বাগাশাইল্লা হিসেবে পরিচিত) ধরে নিয়ে গেছে। এতে অবশ্য আমাদের কোনো দোষ নাই। কেননা, ওই মুরগিটা আমাদের অবাধ্য। সন্ধা লাগলে বাড়ির অন্যান্য মুরগিগুলো খোয়াড়া বা খাঁচায় গিয়ে ওঠে। কিন্তু এই কমবক্তি মুরগি গাছে-ছাদে ও শিমের জাঙলাতে থাকে। কমবক্তি মানে অভাগিনী মুরগি।
.
এই কমবক্তি মুরগিকে প্রতিদিন ধরে ধরে খোয়াড়ায় ঢুকাই! কিন্তু উহুঁ, তার অভ্যাসের কোনো পরিবর্তন হয় না। সে স্বাধীনতা চায়। খাঁচায় বন্ধি হয়ে অন্ধকার কক্ষে তার ঘুম ধরে না। তাছাড়াও খাঁচায় আরো অন্যসব মুরগি থাকে। সেসব মুরগি হাগা-হাগি করে- গন্ধের ব্যাপার আছে না? তাই জন্য খাঁচা তার পছন্দ নয়। বলতে গেলে অন্যরকম রোমান্টিক ধাঁচের মুরগি। রাতের অন্ধকারে গাছের ডালে বসে চন্দ্রের তীব্র আবছা আলোতে জোছনা না দেখলে তার ঘুমই ধরে না। মাঝে মধ্যে ঝির-ঝির হালকা হাওয়া এবং প্রস্ফুটিত কেতকী কাননে নবকুসুমিতা ও বকুলের সুগন্ধি ব্যতীত তার ভালোই লাগে না। আহা, এক অন্যরকম কল্পনাবিলাসী মুরগি।
.
ওই মুরগিটাকে কেন কমবক্তি বা অভাগিনী বললাম, জানেন? কিছুদিন আগে সে মাত্র হাতেগণা কিছু ডিম পেরেছে। এবং সেই ডিমগুলো নিয়েই উষুমে বসলো। নির্দিষ্ট সময় পার হবার পর বাচ্চা ফুটলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই বাচ্চাগুলোকেও ওঁন্দা বিলাই খেয়ে ফেললো। বাচ্চাগুলো বিড়ালের পেটে যাবার পর আবার পূর্বের অভ্যাসে সে ফিরে গেলো। ওই যে বললাম-না, গাছের ডালে অথবা শিমের জাঙালাতে না থাকলে তার ঘুমেই ধরে না। কিন্তু কে জানতো? তার এই স্বাধীনতা ও অতিরিক্ত বিলাসিতাই আজ মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে! তাকে জীবন্ত অবস্থায় এক বন্য বিড়াল ধরে নিয়ে যেয়ে তার গোস্ত-কলিজা ছিড়ে ছিড়ে খাবে!
.
বিশ্বাস করুন ভাই-বোনেরা, এই কমবক্তি অবাধ্য মুরগির জন্য আমি একটুও আপসোস করিনি। তবে আমার ছেলে একটু আপসোস করেছে। কারণ, দেশি মুরগির গোস্ত তার খুব প্রিয়। মুরগিটা বাগাশাইল্লা বা বনবিড়ালের পেটে যাবে, এটা সে মেনেই নিতে পারছে না।
.
এটা নিছক কোনো গল্প নয়; বরং আমাদের বাড়ির মুরগিটির জীবনী। এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। মালিকের অবাধ্য হবার কারণে মুরগির জীবনে নেমে আসলো দূর্বিসহ! তাকে বাগাশাইল্লা খেয়ে ফেললো। কিন্তু কেন? সে তো স্বাধীন জীবন চেয়েছিল। এটাই কি তার অপরাধ? হ্যাঁ, অপরাধ! কারণ, সে মালিকের অবাধ্য।
আমরা আল্লাহর জমিনে চলাফেরা করি, অথচ তার অবাধ্য হয়ে চলি! তিনি আমাদেরকে যেসব বিধান দিয়েছে, তা অবজ্ঞা করে চলি। আল্লাহ বললেন, তোমরা (নারীরা) পর্দায় আবৃত থেকে চলাফেরা করো- এতেই তোমরা হিফাজত থাকতে পারবা। কিন্তু আমরা এটা চাই না। আমরা স্বাধীনভাবে চলতে চাই- ঠিক আমাদের বাসার ওই কমবক্তি মুরগিটির মতো।
.
"অবাধ্য মুরগি, অবাধ্য মানুষ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.