নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য ও সুন্দরের পক্ষে.........

খুর্শিদ রাজীব

নিজের সম্পর্কে কিছু বলা ধৃষ্টতা হবে বলে মনে করি। পথ চলাতেই আমাদের পরিচয় হবে...

খুর্শিদ রাজীব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাইথোলজি পর্ব ০১: ধর্ম, মাইথোলজি ও মানবসমাজের বিবর্তন

২১ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৩৭



সনাতন ধর্মে পুরাণে উল্লিখিত ৩৩ কোটি দেবতার মানে কি ৩৩,০০,০০,০০০ জন দেবতা?

কোটি শব্দের একটি বিশেষ অর্থ হইলো উচ্চ শ্রেণি। সে হিসাবে ৩৩ কোটি দেবতা বলতে বোঝাচ্ছে ৩৩ জন উচ্চ শ্রেণির দেবতা। সংস্কৃত ভাষায় ত্রয়োত্রিংশ কোটি বলতে "তেত্রিশ গুণ সম্পন্ন বা তেত্রিশ প্রকার"-কে বোঝাচ্ছে। সম্প্রতি একটা লেখায় কিঞ্চিত আভাস পেয়ে গুগলের সহায়ে কিছুটা ঘাঁটাঘাঁটি করে এটা জানতে পারলাম।

এই ৩৩ প্রকার বা ৩৩ জন দেবতার হলেন-
ক. অষ্ট বসু বা ৮ জন বসু (ধরা, অপ, অনল, অনিল, প্রত্যুষ, প্রভাস, সোম ও ধ্রুব)
খ. বারো আদিত্য বা ১২ জন আদিত্য (বিষ্ণু, বরুণ, মিত্র, ইন্দ্র, অংশুমান প্রমূখ)
গ. এগারো রুদ্র বা ১১ জন মরুত (মনু, মহীন, হর, শম্ভু, কাল, বামদেব প্রমূখ)
ঘ. দুই অশ্বিন (নসত ও দস্র)

[বিঃদ্রঃ ত্রুটি মার্জনীয়, ভুল সংশোধনীয়]

এই যে ৩৩ কোটি দেবতা, এগুলা কিন্তু মিথিক্যাল চরিত্র একেকটা। সনাতনী পুরাণগুলোর একেকটায় তাদের নামেরও ভিন্নতা আছে বটে।
মাইথোলজি একটা বেশ আগ্রহ জাগানিয়া বিষয়। মাইথোলজি খালি অতিপ্রাকৃত অস্তিত্বের কথা কয় না, মানবসভ্যতার সামাজিক বিবর্তনের আখ্যানটাও ব্যাখ্যা করে। মাইথোলজিস্ট জোসেফ ক্যাম্পবেলের এক আলাপচারিতা পড়ে চমকে উঠেছিলাম এটা জেনে যে প্রত্যেকটা মিথের পেছনে মানুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ভোগলিক-অর্থনৈতিক কার্যকারণ বিদ্যমান।

এই যে মিথ বা মিথিক্যাল চরিত্রগুলা অতিপ্রাকৃত অনেকাংশে। যদিও রাহুল সংকৃতায়ন মনে করেছেন, এসব চরিত্র আদতে কোনো রক্ত মাংসের মানুষ যারা কালক্রমে বিবর্তিত ও অতিরঞ্জিত হয়ে উত্তরসূরী মানুষের শ্রদ্ধা-কল্পনায় অতিপ্রাকৃত রূপ ধারণ করে মিথে পরিণত হয়েছে।

অনেকাংশে একেকটা চরিত্রের আরও কয়েকটা রূপ-নাম-ডাকও আছে। কালক্রমে বিবর্তিত হইতে হইতে একেকটা রূপভেদও আবার একেকটা স্বতন্ত্র চরিত্রে পরিণত হয়ে গেছে।

আরও অবাক হতে হয় যে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই মিথ বা মিথিক্যাল চরিত্রগুলায় অদ্ভুত মিল। অঞ্চলভেদে এসব চরিত্র বা মিথকে ভিন্ন নামে বা সংশ্রয়ে ডাকা হইলেও তাদের গড়ে ওঠা ও কার্যকলাপেও ব্যাপক মিল পাওয়া যায়।

এই ধরেন, পারস্য বা প্রাচীন ইরানীয় ধর্ম জরথ্রুস্টবাদে দেয়া একেশ্বরবাদী স্রষ্টা সম্পর্কিত মৌলিক ধারণার সাথে কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের তিন প্রধান ধর্মের (ইহুদীবাদ, খ্রিষ্টান ও ইসলাম) ব্যাপক মিল পাওয়া যায়।

আবার ভারতীয় সনাতনী ধর্মের মাইথোলজির সাথে গ্রীক মাইথোলজির অনেক মিল পাওয়া যায়। যেমন- গ্রীক দেবতা জিউস ও ভারতীয় দেবতা ইন্দ্রের ঐশ্বরিক শক্তি ও নারী আসক্তিতে মিল। কিউপিড/ইরোস আর কামদেব দুজনেই শারীরিক প্রেমের দেবতা। তেমনি আফরোদিতি আর রতি দুজনেই প্রেম, কাম ও ভালোবাসার দেবী। গ্রীক পাতাললোকের শাসক হেডিসের ভারতীয় রূপ যমদেব। ট্রয় নগরী ধ্বংসলীলায় পরম বীর একিলিস যেন মহাভারতের বীর কর্ণেরই পশ্চিমা রূপ!

প্রশ্ন জাগে, পৃথিবীজুড়ে নানা প্রান্তে মিথোলজির এমন অদ্ভুত মিল কেন? উত্তরখানা জটিল নয় বোধ হয়। বলাবাহুল্য বর্তমান বিশ্বে যাবতীয় মিথোলজির মূলে আছে আর্যরা আর তাদের ক্রিয়াধারা। এই আর্যদের একটা অংশ যারা ভারতে এসেছে, তাদের হাত ধরে সৃষ্টি হয়েছে ভারতীয় মাইথোলজি। তেমনি আর্যদের যারা মধ্যপ্রাচ্যের মরূ অঞ্চলে থেকেছে তারা জরথ্রুস্টবাদী মিথোলজি সৃষ্টি করেছে। আবার আর্যদের যে অংশটা তুরষ্কের পথ দিয়ে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বসবাস শুরু করে তারা গ্রীক মাইথোলজির স্রষ্টা।

জেবস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের ছবি যেমন মহাবিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উদঘাটনে এক অন্যন্য পদক্ষেপ, তেমনি পৃথিবীতে সামাজিক বিবর্তন, জ্ঞানীয় সভ্যতার উন্নয়ন, ধর্মের উৎপত্তি ও বিবর্তন- মোদ্দাকথা মানবসভ্যতার বিবর্তনের ব্যাখ্যার সহায়হ একটা ব্যাপার স্যাপার হতে পারে মাইথোলজিগুলো। জোসেফ ক্যাম্পবেলের মত মাইথোলজিস্টরা সেই ব্যাপারটাই তুলে ধরেছেন তার দীর্ঘ গবেষক-জীবনে।

মাইথোলজি, ধর্ম, সমাজ আর মানুষের সভ্যতার বিবর্তনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক-কার্যকারণ আরও ভালো করে বোঝার জন্যে আমিনুল ইসলাম ভুইয়া অনূদিত 'মিথের পথ' বইটা পড়তে পারেন। পাশাপাশি সহজ করে গল্পোচ্ছলে মানবসভ্যতা, সমাজ ও ধর্মের বিবর্তন বোঝার জন্যে রাহুল সংকৃত্যায়নের 'ভোলগা থেকে গঙ্গা' পড়ে নিতে পারেন।


খুর্শিদ রাজীব
২১ জুলাই ২০২২

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১:০২

সাসুম বলেছেন: পৃথিবীজুড়ে নানা প্রান্তে মিথোলজির এমন অদ্ভুত মিল কেন? উত্তরখানা জটিল নয় বোধ হয়।

না, উত্তর খানা জটিল, আপনি যে সারাংশ টেনেছেন তা খুব জেনেরিক। আরিয়ান রা ইন্ডীয়াতে বা তুরস্ক হয়ে গ্রিস কিংবা ইরানের মরু অঞ্চলে যাওয়ার কারনে সেইম ধরনের মিল ওয়ালা রিলিজিওন উদ্ভব হয়েছে এমন চিন্তা আসলে সঠিক নয় বলে মনে করি।

সণাতন ধর্মের যে পলিএথিস্টিক ধর্মের রুপ সেটার সাথে অগ্নি উপাসক জরুস্ট্রার দের মনোএথিস্টিক এপ্রোচ এক না। আর সণাতন ধর্মের ক্যারেক্টার দের সাথে গ্রিক মিথোলজির মিল টা কাকতালীয় বলে মনে করি। যদি এমন হত- তাহলে নর্স মিথোলজির সাথে আবার কারো মিল্লো না কেন যদি সবাই আরিয়ান দের থেকেই উদ্ভুত হত?

যাই হোক- রাহুল সংকৃত্যায়নের 'ভোলগা থেকে গঙ্গা' একটা চমৎকার বই।


বিঃদ্রঃ গত বেশ কয়েক মাসের সামুতে পড়া সবচেয়ে সুন্দর পোস্ট গুলোর একটি আপনার এই পোস্ট। এমন দুর্দিনে এমন ইনফরমেটিভ এবং সুন্দর পোস্ট দেয়ার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। অনেক নতুন কিছু জানার এবং শিখার আছে।

আপনার জন্য শুভকামনা রইল খুর্শিদ রাজিব

২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:২৭

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: আমার জানাশোনার গণ্ডী ভারত, গ্রীস আর মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত, তা-ও কিঞ্চিৎ। এখনও অনেক জানা বাকি। সারাংশটা অনুমান মাত্র। আরও অনেক জানার আছে। মিশরীয় ও মায়ান মাইথোলজি নিয়ে এখনও পড়া হয়নি। এখনও আমার কাছে পাজলের অনেক পিস মিসিং। সেগুলো এখন খুঁজে দেখার পালা। যা জানতে পারবো, চেষ্টা করব তা আপনাদের সঙ্গে বিনিময় করার।

ততক্ষণ পর্যন্ত সঙ্গে থাকুন।

ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন।

২| ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১:১৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার পোস্ট! ৩৩ কোটি বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা পড়ে অনেক কিছু বুঝতে পারলাম।
সম সাময়িক সময়ে ব্লগে এই ধরনের পোস্ট খুব কমই আসে। আশা করি আপনি নিয়মিত লিখবেন।

তবে, সারা বিশ্বে মিথিকাল চরিত্রের মিলের ব্যাপারটি অনেক ভাবনার খোরাক যোগায়!

২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:৩০

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: আসলেই, এই মিথিক্যাল ঘটনা ও চরিত্রগুলোর সাদৃশ্য সত্যই ভাবনার খোরাক যোগায়। আরও অনেক জানার বাকি আছে। আরও অনেক পড়তে হবে।

আমি নিয়মিত এক বিষয়ের লেখক নই।প্রায় দু বছর পর সামুতে লিখলাম। এখন থেকে চেষ্টা করব নিয়মিত লেখার। একেক সময় একেকটা বিষয় মাথায় ভনভন করে। বিক্ষিপ্তভাবে অনেক ভাবনাই আপনাদের সঙ্গে বিনিময় করব। সঙ্গে থাকবেন।

লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালোবাসা জানবেন।

৩| ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১:৩৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: কিছু জায়গায় দ্বিমত থাকলেও পোষ্টটি ভাল লেগেছে এবং তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্ট। মিথোলজির ব্যাপারে আমার আগ্রহ আছে, আপনি শেষে এই বই উল্লেখ্য করেছে যদি অনলাইনে পাই তাহলে পড়ব!

২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:৩২

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: দয়া করে কাগজের বই কিনে পড়ুন। এমনিতে বই কিনতে চায় না এখনকার মানুষ। কাগজের বই কিনলে লেখকের উপকার হয়। কি কষ্ট হয় একটা লেখা লিখতে! আমরা যদি কাগজের আসল বইটা কিনি তাহলে লেখকের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।

ভালোবাসা জানবেন।

৪| ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:১২

কামাল৮০ বলেছেন: হারারি বলছেন অন্য কথা।প্রাচীন মানুষ গল্প করতে ও গল্প শুনতে ভালবাসতো।অনেক কিছুই গল্প করতে করতে সৃষ্টি।যার কোনটারই কোন বাস্তব অস্তিত্ব নাই।ধর্মগুলোও গল্প করতে করতে সৃষ্টি।পরবর্তিতে একটা নিয়ম নীতিতে পরিনত হয়।

২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:৩৬

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: “রাহুল সংকৃতায়ন মনে করেছেন, এসব চরিত্র আদতে কোনো রক্ত মাংসের মানুষ যারা কালক্রমে বিবর্তিত ও অতিরঞ্জিত হয়ে উত্তরসূরী মানুষের শ্রদ্ধা-কল্পনায় অতিপ্রাকৃত রূপ ধারণ করে মিথে পরিণত হয়েছে। অনেকাংশে একেকটা চরিত্রের আরও কয়েকটা রূপ-নাম-ডাকও আছে। কালক্রমে বিবর্তিত হইতে হইতে একেকটা রূপভেদও আবার একেকটা স্বতন্ত্র চরিত্রে পরিণত হয়ে গেছে।”

খেয়াল করে দেখুন, হারিরি আর সংকৃত্যায়নের সুরেও কিন্তু একটা মিল আছে। হারিরি যা বলেছেন, তার কিছুটা সংকৃত্যায়নেও মিলে। এসব মিথ ও মিথিক্যাল চরিত্রের সৃষ্টি তো মানুষের মুখে, গল্পে ও অতিরঞ্জনে।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

৫| ২২ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৪:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: এসব বিষয়ে আমার পড়াশোনা একেবারে নেই বললেই চলে। আপনাকে আহত বা নিরাশ করার আশঙ্কা নিয়েই বলছি, এসব বিষয়ে আমার জানার আগ্রহও খুব কম। তবু কেন যেন আপনার এ লেখাটি পড়তে খুব ভালো লাগলো। ব্লগের দুঃসময়ে একটি পরিচ্ছন্ন, ভাবনা উদ্রেককারী পোস্ট লিখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আমার ব্লগপাতায় সর্বশেষ ভিজিটর হিসেবে আপনার নাম দেখে আপনার ব্লগপাতা ঘুরে গেলাম এবং এ পোস্টটি পড়ে মন্তব্য হিসেবে কিছু কথা রেখে গেলাম। আশাকরি, আমার পোস্টগুলোর বিষয়বস্তুর প্রতি আপনার আগ্রহ না থাকলেও, দুই একটা পোস্ট পড়ে দেখবেন।

২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:০৬

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: নিশ্চই পড়ব। ধন্যবাদ।

৬| ২২ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৪:৫১

কাছের-মানুষ বলেছেন: দয়া করে কাগজের বই কিনে পড়ুন।

এমন জায়গায় থাকি ইচ্ছে করলেও কাগজের বই কিনতে পারব না! অনলাইনই ভরসা! কাগজের বই কিনলে লেখকের উপকার হয় অবশ্যই সেটা বুঝি যেহেতু নিজের বই বেরিয়েছে। আমিও চাই বই কিনে পড়তে!

২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১৫

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: তাহলে অনলাইনই সই। তবুও পড়ুন।

৭| ২২ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৭:১৫

ঈশ্বরকণা বলেছেন: খুর্শিদ রাজীব,
হিন্দু ধর্মে ৩৩জন দেবতা না ৩৩ কোটি দেবতা সেটা নিয়ে কিন্তু ভিন্ন মত আছে । আপনি যেমন বলেছেন ৩৩ জন দেবতার কথা বলা হয়েছে তেমন অনেক ইন্টারপ্রিটেশন আছে যেখানে বলা হয়েছে ৩৩ নয় ৩৩ কোটি দেব দেবীর কথাই বলা হচ্ছে হিন্দু স্ক্রিপচারে । তার কারণগুলোও অনেক কনভিন্সিং । তবে এইসব ভিন্ন মত নিয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আপনি সংস্কৃত ভাষায় 'কোটি' বলতে 'টাইপ' বা শ্রেণী বোঝায় যেটা বলেছেন সেটা কিন্তু খুবই সরলীকরণ কর হয়ে গেলো ! কারণ প্রাচীন হিন্দু স্ক্রিপচারগুলো কিন্তু সাধারণ সংকৃত ভাষায় লেখা না ওগুলো লেখা বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় । সাধারণ সংস্কৃত আর বৈদিক সংষ্কৃতের মধ্যে অনেকখানি পার্থক্য আছে ধাতুগত, টেন্স, প্রিপোজিশন, ইনফিনিটিভস আর আরো কিছু বিষয়ের ব্যবহারে । তাছাড়া প্রায় তিনহাজার বছর আগে বেদ মুখে মুখেই প্রচলিত ছিল সেটা লিখিত অবস্থায় আসে প্রায় দুই হাজার বছর পরে যখন লিখিত ভাষার প্রচলন হয় ।তাই অনেক শব্দের অর্থ পরিবর্তনের সুযোগ কিন্তু ছিলই। যাহোক যেটা বলতে চাইলাম সেটা হলো দেব দেবীর সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে বেদ স্কলারদের মধ্যেই । সেটা নিয়ে একেবারে সুনিশ্চিত কোনো সংখ্যার ব্যাপারে বেদ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এখনো একমত নন ।

২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১২

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: মতভেদ আছে বটে। ৩৩জন দেবতার নামেও মতভেদ আছে। কোনো কিছুই সুনির্দিষ্ট নয়।

তবে সংস্কৃত ভাষা বলতে বৈদিক সংস্কৃতই বোঝানো হচ্ছে। আর্যভট্ট, পাণিনি, ভাস, কালিদাস, অশ্বঘোষের সংস্কৃত। আর সেসময় অন্য যেসব ভাষা ছিল সেগুলো প্রাকৃত ভাষা। পবিত্র ভাষা হওয়ায় রাজানুকূল্যে বৈদিক সংস্কৃততেই যতসব সাহিত্য, ব্যাকরণ, ধর্মগ্রন্থ রচিত হতো। প্রাকৃত ভাষাগুলো বরাবরই উপেক্ষিত হতো।

কোটি শব্দের অনেক অর্থের একটি হলো শ্রেণি। সে মতে ৩৩ জন দেবতার ব্যাখ্যাটিও অনেক ভিন্নমতের একটি

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

৮| ২২ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:০৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো আপনার এই পোস্টটি পড়ে। ৩৩ কোটি দেবতার ব্যাপারে যে নতুন ধরনের ব্যাখ্যা আপনি দিয়েছেন তাও বেশ ভাল লাগলো, যদিও হয়ত অন্য ব্যাখ্যাও প্রসঙ্গিক হবে বলে মনে করি।

সব চেয়ে ভাল লাগলো আপানর লেখায় জোসেফ ক্যাম্পবেলের কথা পড়ে। আপনি সম্ভবত জোসেফ ক্যাম্পবেলের বাংলায় অনুদিত মিথের শক্তি বইটার কথা উল্লেখ করেছেন যেটা প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ছোট ভাই খালিকুজ্জামান ইলিয়াস অনুবাদ করেছেন।

জোসেফ ক্যাম্পবেল একসময় আমাকে মুগ্ধ করে রেখেছিল। একসময় জোসেফ ক্যাম্পবেলের লেখালেখি বিষয়ক একটা ইয়াহু গ্রুপেরও সদস্য হয়েছিলাম তার বিষয়ে জানতে। জোসেফ ক্যাম্পবেলের নামের সাথে বিল ময়ার্স এবং তার সাথে সাথে কারেন আর্মস্ট্রং এর নাম চলে আসে। হয়ত কারেন আর্মস্ট্রং লেখা যেমন "এ হিস্টরি অব গড" আপনি পড়ে থাকবেন, আপনার মিথলজি সম্পর্কে পাঠের আগ্রহকে এগিয়ে নিতেই। যেমন আদিম মুর সমাজে নাচের অনুষ্ঠানে কোন কোন নাচিয়ের মধ্যে এলা বা এক বিশেষ শক্তি ভর করে বলে মানুষ বিশ্বাস করে বলে আর্মস্ট্রং লিখেছেন।

শুভকামনা রইলো।

২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১৮

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: নিশ্চই, সামাজিক কার্যকারণে কোনো ব্যাখ্যাই তো অ্যাবসোলিউট নয়। তাই ভিন্নমত খুবই স্বাভাবিক।

আমি এখানে জোসেফ ক্যাম্পবেলের আলাপচারিতা বিষয়ক ‘মিথের পথ’ বইটির কথা বলেছি যেটা আমিনুল ইসলাম ভুইয়া অনুবাদ করেছেন। তবে খালিকুজ্জামান ইলিয়াসের অনুবাদটি পড়া হয় নি। আপনি আরও কয়েকজন ব্যক্তি ও কয়েকটি বইয়ের নাম উল্লেখ করেছেন। সেগুলো পাঠ্যতালিকায় থাকলো।

ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন।

৯| ২২ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:২৫

শেরজা তপন বলেছেন: যদিও ভিন্নমত্ আছে তবু চমৎকার এমন আর্টিকেলের জন্য ধন্যবাদ।
এমন লেখা ব্লগকে সমৃদ্ধ করে।

২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১৪

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: নিউটনের তিনটি নীতি বাদে কোনো কিছুই অ্যাবসোলিউট নয়। আর ভিন্নমত আছে বলেই আমরা মানুষ। নানামতে একটি সাধারণ ঐকমত্যে পৌঁছানোর পথে আছি।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

১০| ২২ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:৩৭

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


কল্পনা থেকে দেবতা/ধর্ম/মিথলজি,তবে বর্তমান সভ্যতায় মানুষের কল্পনা কি দিচ্ছে বা ভবিষ্যৎ'এ কি দিবে তা দেখার বিষয়।

২২ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:০৭

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: অতীত না চিনে কি ভবিষ্যতে আগানো যায়! মৃত অতীত আমাদের ভবিষ্যতের পথপদর্শক।

১১| ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৯:২২

তানভির জুমার বলেছেন: যা কেউ কোনদিন, দেখেনি, শুনেনি, অনুভব করেনি, এরকম কোন কিছু কি কল্পনায় আসা সম্ভব?

২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:০৫

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: অসম্ভব কি? সাহিত্যিকরা তো এই কাজ অহরহ করেন। এই মিথগুলোও তেমন সাহিত্যিকদেরই মহান সৃষ্টি। রামায়ন, মহাভারত, ইলিয়াড, ওডেসি- চার মহাকাব্য তার প্রমাণ।

১২| ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:২৭

তানভির জুমার বলেছেন: সাহিত্যিকদের এরকম কিছু লেখা বা বই কি সাজেস্ট করবেন?

২৩ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৫৫

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: বেদব্যাসের মহাভারত, বাল্মিকীর রামায়ন, হোমারের ইলিয়াড ও ওডেসি, জে আর আর টোলকেইনের দ্য হবিট সিরিজ ও দ্য লর্ড অব দ্য রিংস সিরিজ, জে আর আর মার্টিনের আ সং অব আইস এন্ড ফায়ার, ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা ইত্যাদি ইত্যাদি।

এসকল মিথিক্যাল অখ্যানে কেবল কাল্পনিক কিছু প্রাকৃত ও অতিপ্রাকৃত চরিত্র আর কাহিনীই পাবেন না, সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম, নৈতিকতা প্রভৃতি বিষয়-আশয়ও পেয়ে যাবেন। এগুলো সকলই মনুষ্য সৃষ্টি।

১৩| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১:৫৬

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: Focusing too much on the Aryan mythology, you have forgot to address much older mythologies and civilizations, such as the Sumerian/Egyptian/African and Sino-Tibetan civilizations. Aryan mythology is not all; not even the majority.

২৩ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৫৯

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: সঠিক ধরেছেন। এখানে মূলত গ্রীক ও ভারতীয় মাইথোলজিরই সাদৃশ্য টেনেছি। যদিও তা একেবারেই সারফেস লেভেলের ধারণা। এটাও অবশ্য দাবি করি নাই যে গ্রীক বা ভারতীয় মাইথোলজিই প্রধান। কেবল কিছু সাদৃশ্য তুলে ধরেছি মাত্র। গ্রীক ও ভারতীয় মাইথোলজি নিয়ে এখনও বিস্তারিত জানা বাকি। তারপর তো আরবীয়, মিশরীয়, মায়ান মাইথোলজির মত বৃহৎ মাইথোলজি গুলো আছেই।

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

১৪| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:১৪

সাসুম বলেছেন:
আপনি পুরো দুনিয়ার কম্পারেটিভ মিথোলজি নিয়ে আলোচনার সময় জর্জ কক্স কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছেন।

এই ভদ্রলোক সেই ১৮৮০ থেকেই মোটামুটি এই থিউরি নিয়ে ন্যারেটিভ দাড় করিয়েছেন যে, আমাদের পুরো সভ্যতা আরিয়ান দের থেকে উদ্ভব হয়েছে এবং এরাই সব কিছুর জন্য দায়ী।

তার কম্পারেটিভ মিথোলজি ও ফোক্লোর বইতে সে আরিয়ান দের ন্যারেটিভ সেট করেছে ।



এছাড়াও তার একটা আলাদা বই ই আছে আরিয়ান মিথোলজির উপর।



মোট কথা, আমরা যদি আমাদের দেখার চোখ খালি একটা স্পেসিফিক পয়েন্ট এর দিকে রাখি তাহলে আরো অনেক পয়েন্ট এরিয়ে যাব।

এই কারনে, আমি আরিয়ান দের এই থিউরির পক্ষপাতী না। বরং জোসেফ ক্যাম্পবেল এর নীচের বইগুলো অনেক ইনফরমেটীভ এবং সেখানে এভাবে আরিয়ান কেন্দ্রিক আলোচনা করা হয়নাই।


The Masks of God, Volume 1: Primitive Mythology
The Masks of God, Volume 2: Oriental Mythology
The Masks of God, Volume 3: Occidental Mythology
The Masks of God, Volume 4: Creative Mythology

২৩ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০২

খুর্শিদ রাজীব বলেছেন: আসলে আমি জর্জ কক্সের কাজ সম্পর্কে খুব বেশি ওয়াকিবহাল নই। আমি এখানে যে ন্যারেটিভ দেবার চেষ্টা করেছি তা মূলত রাহুল সংকৃত্যায়ন আর জোসেফ ক্যাম্পবেলের ন্যারেটিভের আদলে তৈরি। এটাই যে চূড়ান্ত তা দাবি করি না। অনুমান করি কেবল।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতোগুলো রত্নের সন্ধান দেবার জন্য। নিশ্চই এসব বই আমাকে আরও অনেক জানতে সহযোগিতা করবে।

শুভেচ্ছা জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.