![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যথাসময় পর্যন্তই খেলে যাবার পাতানো খেলা
===========================
বর্তমানে চলমান দলাদলি কোন্দল দলোগণের স্বার্থের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, -কোনোভাবেই তা’ জনসাধারণের মধ্যে ছড়াবে কিম্বা আগামীতে এখানে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে এমন কোনো পূর্বলক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখানে দলোগণের আচরণে বিরক্ত জনগণ দলে দলে বিভক্ত নয়, সমন্বিতও নয়, বরং বহুধাবিভক্ত। এখানে জনগণের প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র, এমনকী পরিবারগুলোতেও প্রত্যেকেই একা একা নিজের মতো। এখানে দলোগণের মতো দলবদ্ধ নয় জন্যেই, জনসাধারণের মধ্যে গৃহযুদ্ধময় পরিবেশ গড়ে ওঠা বা গড়ে তোলা অসম্ভব।
অসমোঝতার পূর্বপরিকল্পনায় সাজানো দলোগণের সংঘর্ষে অভিনেতা দলগুলো ধ্বংস হ’লেও হ’তে পারে, তবে তাদেরকে থামানোর ব্যর্থচেষ্টায় জনসাধারণের মধ্য থেকে কেউ গিয়ে আত্মহত্যার ঝুঁকি নেবে না। বরং আঁচ করা যাচ্ছে, দু’হাজার পনেরোর মধ্যে কোনো প্রাকৃতিক সর্বনাশক দুর্যোগ না-এলে, যারা দলের ছত্রচ্ছায়ায় রাষ্ট্রের সম্পদ লুটে নিয়েছে তারা ঐ সম্পদ সহ নিরাপদে এ-দেশ থেকে পালানোর আগে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার আগে এবং গণতন্ত্রের মলাটে পরিবারতন্ত্র বা দলোতন্ত্রের প্রচলন বন্ধ হওয়ার আগে দলোগণের মধ্যেকার পাতানো খেলা এখানে বন্ধ হবে না।
রাষ্ট্রীয় নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে জেদাজেদির লোকদেখানো খেলাটি এমন নতুন কিছু নয় যে, ঐ ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে শুনিয়ে জনগণকে আগের মতো ঘুমের ঘোরে রাখা যাবে কিম্বা জনগণের সাথে আগের মতোই ছেলেখেলা চালিয়ে যাওয়া যাবে। জনসাধারণ এখন যথেষ্ট সচেতন।
জনগণ এখানে উগ্র প্রকৃতির নয়। এখানে সহ্যের সীমা পর্যন্তই ধৈর্যধারী জনসাধারণ কেবল নীরবে দেখে দেখে যায়, হৈহুল্লোড় লুটপাট কামড়াকামড়ির মচ্ছব থেকে তারা নিজেদেরকে নিরাপদ দূরত্বে রাখে। সভ্যসাধারণেরা কখনোই দলাদলি কোন্দলের ধারেকাছেও ঘেঁষে না। সীমাহীন অসহনীয় বিরক্তির প্রকাশে নিরস্ত্র জনসাধারণ গণপিটুনি ছাড়া বেশি কিছু দিতে পারে না।
কেবল দলোগণের মধ্যেকার কিছু লুটেরা যেন আত্মগোপন করতে পারে, তাদের আত্মরক্ষার লক্ষ্যে এবং জনসাধারণের দৃষ্টির আড়ালে যেন তারা পালাতে পারে, তেমনটাই যেখানে একমাত্র উদ্দেশ্য, শান্ত পরিবেশকে গোলোযোগপূর্ণ ঘোলাটে বানানোর লক্ষ্যেই বহুবিধ কৌশলের মতোই, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবির বাহানায় দলীয় কোন্দলের পাতানো খেলাটা দলোগণ আগেও এখানে খেলে এসেছে। কোনো নির্বাচনের ফলাফলকে খেলুড়ে প্রতিপক্ষরা শ্রদ্ধা জানিয়ে সমভাবে মেনে নিয়েছে, এমনটা কখনোই জনগণ এখানে দেখেনি। বরং পরবর্তী নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে দলাদলি কোন্দল ছাড়া যেন আর কোনো দায়িত্বই এখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে দেওয়া হয়নি, এমনটাই দেখেছে জনসাধারণ প্রায়শ্চিত্তের ঘানি টানতে টানতে।
দেখে যেতে যেতে ক্লান্ত জনসাধারণ এখানে কেবল একটাই দৃশ্য দেখেছে, নির্বাচনের পর আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে শুরু হয় দলীয় স্বার্থে জনপ্রতিনিধিদের সংসদ বর্জনের পূর্বপরিকল্পিত নাটক। দেখতে দেখতে জনগণের চোখস্ত হয়েছে, -যেকোনো ভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, দলোগণের ‘নির্বাচন জুয়া’-তে যারা জেতে তাদের ভাষায় নির্বাচনটি ‘শান্তিপূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন’-এর মর্যাদা পায় আর যারা হেরে যায় তাদের দৃষ্টিতে নির্বাচনটি ‘সূক্ষ্ম কারচুপিপূর্ণ নির্বাচন’ হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
এবারে সর্বদলীয় সমঝোতাপূর্ণ ভদ্র সুশীল শান্তিপূর্ণ সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হ’লেও দলোগণকে তাদের নিজেদের স্বার্থেই সংঘর্ষের পাতানো খেলাটি যথাসময় পর্যন্তই খেলে যেতে হবে। (এখানে ‘যথাসময়’ শব্দটি অনির্দিষ্ট কোনো সময় বা ক্ষণ বা কাল নয়, বরং লুটের মাল সহ লুটেরাদের নিরাপদে পালিয়ে বাঁচার সময়টাকেই নির্দেশ করা হয়েছে।)
যতটুকু আশ্রয় এখনো পাচ্ছে, দু’হাজার পনেরোর পর বিরক্ত জনগণের কাছে দলোগণ এই আশ্রয়টুকুও পাবে কি-না, যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সৈন্যরা যথেষ্ট সুনাম এবং মর্যাদা পাচ্ছে। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী এখন যথেষ্ট সচেতন এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। এমনকী, সংসদে কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না-থাকলেও, সেনাবাহিনী কখনোই আর এখানে সামরিক আইন নিয়ে নেমে আসবে না। সাময়িক প্রয়োজনে তাদেরকে ডেকে আনলেও তারা বাড়াবাড়ি করার চেষ্টা চালাবে না কিম্বা নিজেদের সুনাম হারানোর মতো আত্মঘাতী পদক্ষেপ ফেলবে না। সকলকে নিয়েই রাষ্ট্র তার আপন গতিতে চলতে থাকবে। ততদিনে যাদের পূর্বপ্রস্তুতি আছে তারা চাইলে গণপিটুনি এড়িয়ে পালিয়ে বাঁচতে পারবে।
‘লুটপাট করা যাচ্ছে না, অতএব এ দেশটি ঠিকমতো চলছে না,’-এমন ধারণা আমরা যারা ধারণ কোরবো, এই আমাদের কাছে মনে হবে, দেশটা রসাতলে ডুবে গ্যালো আর আমরা তখন আজকের টিভিচ্যানেলের টক্শোর অনুকরণে ‘গ্যালোরে গ্যালো, জিডিপি কমে গ্যালো, দেশের কিছু রইলো না রে, রইলো না,’ ব’লে ব’লে বকবকানি আর হৈহুল্লোড় চিৎকার চেঁচামেচি চালিয়ে প্রচার মাধ্যমগুলোকে আবারো খেকিকুকুরের খোলা ডাস্টবিন বানাবো। আর জনসাধারণের মধ্য থেকে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে ‘কী গ্যালো গো? কোথায় গ্যালো? লুটেরাগুলোর নাম-কি তবে জিডিপি ছিল? সবই তো দেখ্ছি ঠিকই আছে, -জিডিপি, এইচওএইচ, কেজিবি, জেডারকে, পিছিআরটি, -আপনারা যে বলেন আর আমরাও টক্শোতে দেখি, এসবের মানে কী?’ --লে ঠ্যালা! ল্যাঠা সামলাবো কিভাবে? আমরা কি-ছাই ওগুলোর অর্থ জেনে বলি, কিম্বা ওগুলোর সাথে জনসাধারণের সচ্ছলতার কোনো সম্পর্ক আছে-কি-নেই তা’ জেনে নিয়ে ওগুলো বলি? -নিশ্চয়ই না। কিন্তু তাই ব’লে সকলের সামনে নিজেদের অজ্ঞতা মেলে ধরবো!! অবশ্যই তা’ বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বাধ্য হ’য়েই তখনও হয়তোবা আমরা বলবো,‘এসব খুবই জটিল সাবজেক্ট। তোমাদেরকে বুঝিয়ে দিলেও তোমরা কখনো বুঝবে না। তাই, ওগুলো নিয়ে আমি তোমাদের সাথে কোনো আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না।’
গণকরণিক : আখতার২৩৯ বাংলাদেশ : ১১/১২/১৩
স্বকপোলকল্পিতের গৃহযুদ্ধ
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪১
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: ভাবনা সঠিক।