নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১)
সত্তর- আশির দশকেও ঢাকায় অনেক চাইনিজ দেখা যেত; চাইনিজ মানে চাইনিজ রেস্তোরাঁ না, আমি চীন দেশের মানুষকে চাইনিজ বলছি। তখন রাস্তায় বেরোলে প্রায়ই দেখা যেত কোন চাইনিজ হেঁটে বা রিকশায় করে কোথাও যাচ্ছেন, কখনো বা দেখা যেত পুরো পরিবারকে, বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো পর্যন্ত সবাই একসাথে। এদেশে প্রথম চাইনিজ রেস্তোরাঁ চালু করেন এরাই। এই রেস্তোরাঁগুলোতে ক্যাশে দেখা যেত কোন চাইনিজ বসে আছেন, সেখানে বাবুর্চিও হতেন চাইনিজ। ঢাকার প্রায় সবগুলো বিউটি পার্লার চালাতেন চাইনিজ মহিলারা। আজিমপুরে চায়না বিল্ডিঙ নামে একটা চারতালা বাড়ি ছিল, তার ভিতরে ছোট ছোট অনেক ফ্ল্যাট- সেগুলোতে থাকতেন অনেক চাইনিজ পরিবার। চায়না বিল্ডিঙের গলি তে গেলেই নানা বয়সী চাইনিজদের কিচিরমিচির করতে দেখা যেতো।
এই চাইনিজরা কবে, কেন, কিভাবে এসে আমাদের দেশে বসবাস শুরু করেছিলেন জানা ছিল না, কিন্তু আমার জানার আগ্রহ ছিল প্রবল। কোন ছুতা ধরে চাইনিজদের সাথে আলাপের সুযোগ খুঁজতাম, কিন্তু তারা মোটেও আলাপী ছিল না। রাস্তাঘাটে কোন চাইনিজ যেচে কথা বলতেন না। রেস্তোরাঁতে যতটুকু দরকার ততটুকুই কথা বলতেন, পার্লারেও তাই- বড়জোর জিজ্ঞেস করতেন, "আপনি কিভাবে চুল কাটতে চান?" জেনে নিয়ে চুপচাপ কাজ করে যেতেন। জানিনা বাঙালিদের সাথে না মিশে কিভাবে এরা বাংলা বলা শিখেছিলেন, কিন্তু তাদের পার্লার বা রেস্টুরেন্টের নাম তারা চীনা ভাষাতেই রাখতেন। তারা থাকতেন একেবারে তাদের নিজেদের সমস্ত বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে- পোশাক-আশাক, খাওয়া-দাওয়া, উৎসব-পার্বণ কোন কিছুতেই এদেশের মানুষের সাথে তারা মিলতেন না। হাঁস যেমন সারাদিন পুকুরের পানিতে কাটিয়ে সন্ধ্যাবেলায় শরীর থেকে পানি ঝাড়া দিয়ে ফেলে দেয় নাই, চাইনিজরা তেমনি এদেশে থাকতেন- চলতেন- ফিরতেন, কিন্তু এদেশের কোন কিছুতেই প্রভাবিত হতেন না। পরিবারে একসাথে তিন প্রজন্মের সদস্য দেখা যেত, বিয়ে-শাদী করতেন তারা নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যেই। শুধু একবার, ঐ একবারই এক ছোট চায়নিজ ছেলেকে দেখেছিলাম বাংলাদেশকে তার নিজের দেশ বলে দাবি করছে। নব্বইয়ের দশকে নিউমার্কেটের এক খাতা পেন্সিল এর দোকানে গেছি, দেখি এক বছর দশেকের চাইনিজ ছেলে বাবার সাথে এসে পেনসিল বক্স কিনছে। দোকানি তাকে জিজ্ঞেস করল, "বাবু, তোমার নাম কি?" ছেলেটা কিছু একটা উত্তর দিল। এবার দোকানি তাকে জিজ্ঞেস করল, "তোমার দেশ কোথায় বাবু?" এবার দেখি ছেলেটা হাতের পেনসিল বক্স দোকানের কাউন্টারে ঠুকতে ঠুকতে তাল দিয়ে স্পষ্ট উচ্চারণে দোকানীকে বলছে, 'এই দেশ, আমার দেশ, বাংলাদেশ।"
তাহলে কি চাইনিজদের নতুন প্রজন্ম এ দেশটাকে নিজেদের দেশ বলে ভাবতে শুরু করেছিল? অভিবাসী দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের মানুষেরা কি তারা যে দেশে বসবাস করে, সেই দেশটার সাথে ভালবাসার বাঁধনে জড়িয়ে যায়, পূর্বপুরুষের ফেলে আসা দেশকে তারা কি পুরোপুরি ভুলে যায়? ইদানিং এই প্রশ্ন বারবার মনে আসছে।
সেই চাইনিজদের আর দেখি না। এদেশ ছেড়ে তারা কোথাও চলে গেছেন! কোথায় গেছে জানিনা! তারা কি নিজেদের দেশ চীনে ফিরে গেছেন, নাকি ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া কিম্বা কানাডায় গিয়ে নতুন করে বসত গেড়েছে! সেই নতুন দেশেও কি তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে গুটলী পাকিয়ে থাকছেন, নাকি সে দেশের মানুষের সাথে মিশে গেছেন! শুনেছি বিলাত- আমেরিকায় থাকা চাইনিজরা এখন পাশ্চাত্যের ধ্যান ধারণা, আচার আচরণ, সবকিছু আত্মস্থ করে নিয়েই থাকছেন। সন্তানদের চাইনিজ নামের পাশাপাশি তারা স্কুল কলেজের জন্য একটা ইংরেজি নামও রাখছেন। চাইনিজরা এখন প্রচুর ভিনদেশী বিয়ে করছেন, এমনকি বিদেশে থাকা বাংলাদেশীদেরও। অনেক বাংলাদেশিদের দেখেছি চাইনিজ বিয়ে করেছেন এবং পরস্পরের সংস্কৃতি যোজন- বিয়োজন করে সুখে-শান্তিতে ঘরকন্যা করছেন। তার মানে এখনকার চাইনিজরা জীবনে নানা রকম অভিযোজন করে অবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলা শিখেছেন।
অবশ্য এখনো বাংলাদেশে অনেক চাইনিজ দেখা যায়। এরা পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বড় পুকুরিয়া ধরনের বড় প্রজেক্টের কাজ নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। এদের চেহারা ঝকঝকে, তার চাইতে ঝকঝকে গাড়িতে চড়ে এরা ছুটে চলেন নিজেদের কাজ করত। এদের দেখে মনে পড়ে যায় মলিন চেহারার, বিষন্ন মুখের সেই নাপিতের কাজ করা, বাবুর্চির কাজ করা চাইনিজদের। কি দুঃখ ছিল তাদের! নিজ দেশ ছেড়ে কেন তারা আমাদের দেশে থাকতেন! তারপর কোথায় চলে গেলেন তারা! কেন মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যায়, তারপর সেখানেই থাকতে শুরু করে !
জানা হলো না। হায়!
২)
আমাদের দেশের অনেক মানুষও এখন বিদেশে অভিবাসী হচ্ছেন, অনেকগুলো অদৃশ্য সুতোর বাঁধন ছিঁড়ে একদিন তারা উড়ে চলে যান বহু দূরের দেশে। আবার শীতকালে অতিথি পাখির মতো ঝাঁকে ঝাঁকে ফিরে আসেন, একটু উষ্ণতা আহরণের জন্য। এদের বেশিরভাগই প্রথমে লেখা পড়ার জন্য বিদেশে যান। তারপর তারা সেখানেই থেকে যান অভিবাসী হয়ে। এই অভিবাসী জীবন বেছে নেবার কারণ যতটা প্রাচুর্যময় জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষায়, তারচেয়ে বেশি উন্নত দেশে নিয়ম নিষ্ঠা, মেধার মূল্যায়ন, আইনের শাসন এইসবের উপস্থিতির কারণে। আমি এমন অনেক মানুষকে অভিবাসী হতে দেখেছি, বিদেশের চাইতে নিজের দেশে যাদের জীবন অধিকতর আরামদায়ক ছিল, ছিল প্রাচুর্য এবং পারিবারিক সম্মান- প্রতিপত্তি, দেশের জন্য ছিল বুক ভরা ভালোবাসা। তবু তারা প্রবাস জীবন বেছে নিয়েছেন, অধিকাংশের ক্ষেত্রেই প্রথমত উপরে উল্লেখিত কারণে এবং দ্বিতীয়ত, পরবর্তীতে সে দেশে জন্ম নেয়া সন্তানের কথা ভেবে।
উন্নত দেশে চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান- সবই আমাদের দেশের তুলনায় অনেক ভালো। তাই প্রবাসীদের সন্তান বড় হবার আগে পর্যন্ত দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা কিছুটা থাকলেও যখন তাদের সন্তানেরা, বিদেশের শিক্ষা ও জীবনধারায় অভ্যস্ত হয়ে যায়, সেই দেশকেই নিজের দেশ মনে করে ভালবাসে, তখন অনিয়ম আর অনিশ্চয়তায় ভরা দেশের জীবনে ফিরে আসাটা কষ্টকর হয়ে যায়। সমান কষ্টকর হয় ফেলে আসা দেশকে ভুলে যাওয়া। হঠাৎ কখনো মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে আর ঘুম আসে না। কখনো খাবার টেবিলে নানা সুখাদ্যের ভীড়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকেন, কুঁচো চিংড়ি দিয়ে রাঁধা কলমি শাকের চচ্চড়ির জন্য মন কাঁদতে থাকে। এই মন কাঁদার কথা বলা আছে ঝুম্পা লাহিড়ির বইতে:
".....একটা বাটিতে রাইস ক্রিস্পি, প্ল্যান্টার্স বাদাম আর কুচোনো লাল পেয়াজ একসঙ্গে মাখছিল। তাতে নুন, লেবুর রস আর মিহি করে কাটা কাঁচালঙ্কা মেশাতেই একটু সরষের তেলের জন্য তার মনটা হাহাকার করে উঠল।"( সমনামী; ঝুম্পা লাহিড়ি)
এই অভিবাসীরা যখন দেশে বেড়াতে আসেন, কয়েকদিন পুরনো স্মৃতিকে হাতড়াতে থাকেন। অবশেষে একগাদা বাংলা বই, নাটক- সিনেমা- গান, শাড়ি- পাঞ্জাবি আর যাতে যাতে দেশের গন্ধ পাওয়া যায়, তার সবকিছু দিয়ে সুটকেস বোঝাই করে নিয়ে তারা ফিরতি প্লেনে চাপেন। দেশের মাটি, আত্মীয়- বন্ধু সবকিছুর জন্য মন উচাটন ভাবটা রয়েই যায়।
দেশের জন্য মন উচাটন এই ভাবটা প্রবাসী দ্বিতীয় প্রজন্মের হয় না, বিশেষত তারা যদি সেই দেশেই জন্মে। তখন সে দেশটাই হয় তাদের জন্মভূমি। এমনকি বাংলাদেশে জন্মেছে, কিন্তু ছোটবেলায় মা বাবার সাথে বিদেশে অভিবাসী হয়েছে, এমন সন্তানদেরও দেশ দেশ বলে খুব একটা উতলা হতে দেখিনি। হবার কথাও না, আমাদের দেশেই কি শহরে বড় হওয়া সন্তানেরা কখনো বাবার ফেলে আসা গ্রামে থাকার জন্য ফিরে যেতে চায়!!!
প্রবাসী দ্বিতীয় প্রজন্ম কখনো কখনো আত্মপরিচয় সংকটে (Identity crisis) ভোগে, ঝুম্পা লাহিড়ির Namesake এর গোগোলের মত। আমার আত্মীয়- বন্ধু অনেকের সন্তানদের মধ্যেও আমি গোগোলের ছায়া দেখতে পাই। এটা হয়, কারণ বাবা মা চান চেষ্টা করেন নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সন্তানদের শেখাতে, মা বাবা চান সন্তানেরা উৎসব-পার্বণে দেশি পোশাক পড়ে, দেশি খাবার খেয়ে, নিজস্ব শেকড় চিনে রাখুক। সন্তানেরা কিছুদিন পর্যন্ত এই চাওয়া পূর্ণ করলেও সময়ের সাথে সাথে তারা অভিযোজিত হতে থাকে, যে পছন্দ- অপছন্দ, সংস্কার, সংস্কৃতি তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে তার সাথে তাদের বাবা-মায়ের তেমন সখ্যতা হয় না। এই দ্বিমুখী টানাপোড়েনে দ্বিতীয় প্রজন্ম কিছুকাল ভুগলেও, একসময় আত্মপরিচয় সংকট কেটে যায়। দেশের শেকড়ের যেটুকু ছায়া রয়ে গিয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠে, অভিযোজন ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। দেখা যায়, জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী নির্বাচনে দ্বিতীয় প্রজন্মর কাছে মুখ্য হয়ে ওঠে মনের মিল- দেশ, সংস্কৃতি, ধর্ম বা গায়ের চামড়া নয়!
বাঙালি চেহারা ছাড়া (যদি বাবা মা দুজনেই বাঙালি হয়ে থাকেন, তবেই) তৃতীয় প্রজন্মের মাঝে বাঙালিয়ানার তেমন কিছু আর অবশিষ্ট থাকে না।
এটা একান্তই আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ। তিন প্রজন্ম ধরে বিলাত এবং উত্তর আমেরিকায় অভিবাসী হয়ে আছেন, এমন কিছু কাছের মানুষদের নিয়েই আমার পর্যবেক্ষণ। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও আছে- এমন ও পরিবার দেখেছি যারা তিন পুরুষ ধরে প্রবাসী, কিন্তু তিন প্রজন্মই ভাষা, খাদ্যাভাস, সংস্কৃতিতে বাঙালিয়ানা ধরে রাখার পাশাপাশি যে দেশে রয়েছেন সে দেশের আচার ব্যবহারের সাথেও পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়েছেন। সংখ্যায় অল্প হলেও এমন প্রবাসী ও দেখা যায়। এদের দেখলে আমার মনে পড়ে যায় এদেশে থাকা চাইনিজদের কথা, যারা পরদেশের ছোট্ট একটা গলিকে নিজের দেশ ভেবে থাকতো।
৩)
বিকেল গড়ানোর সাথে সাথে গাছের ছায়াগুলো লম্বা হতে থাকে, অন্ধকার ঘনায়। রাত্রি নামার প্রতীক্ষার বসে থাকা সেই আঁধার আঁধার বিকেলে মন চায় প্রিয় মুখগুলো দেখতে। দেখা না মিললে শুরু হয় মনের সাথে বোঝাপড়া। কোনটা ভালো- কাছে থাকা, নাকি দূরে যাওয়া; নিজ দেশ, নাকি পরবাস! নিজ দেশের নাগরিক হয়ে যদি থাকতে হয় হরেক রকম অন্যায়ের সাথে আপোষ করে, অনিরাপত্তার মাঝে, প্রবলের চাপে নিষ্পেষিত হয়ে, অধিকারবিহীনভাবে- তাকে কি তখন আর প্রথম শ্রেণীর নাগরিক বলা যায়!!
কতকাল আগে ঈশ্বর পাটনী তার সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন, "আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।" এই যুগের মায়েরা এখন প্রার্থনা করেন, "আমার সন্তান যেন ফিরে আসে ঘরে।" কেউ কেউ ফিরে আসে, কেউ আর কখনোই আসে না.......
সুবোধ তবে পালিয়েই যাক! নিজ দেশে পরবাসী হয়ে থাকার চেয়ে সেই ভালো।
এলোমেলো ভাবনার এই লেখাটা শেষ করি জীবনানন্দের কবিতা দিয়ে।
...............
এখানে তোমরা তবু থাকিবে না? যাবে চলে তবে কোন পথে?
সেই পথে আরও শান্তি- আরও বুঝি সাধ?
আরো বুঝি জীবনের গভীর আস্বাদ?
তোমরা সেখানে গিয়ে তাই বুঝি বেঁধে রবে আকাঙ্ক্ষার ঘর!........
যেখানেই যাও চলে, হয় নাকো জীবনের কোনো রূপান্তর;
এক ক্ষুধা এক স্বপ্ন এক ব্যথা বিচ্ছেদের কাহিনী ধূসর
ম্লান চুলে দেখা দেবে যেখানেই যাও বাঁধো আকাঙ্ক্ষার ঘর!
(বলিল অশ্বত্থ সেই: জীবনানন্দ দাশগুপ্ত)
ছবি: অন্তর্জাল থেকে নেয়া।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:২৭
করুণাধারা বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রাজীব নুর।
যাক, আপনার জন্মের আগের সময়ের একটা গল্প শোনাতে পারলাম। হ্যাঁ, এক সময় ঢাকায় অনেক চাইনিজ দেখা যেত, আর দেখা যেত অ্যাংলো ইন্ডিয়ান। আজকাল এদের কাউকেই দেখা যায় না।
২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৪৮
আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: এই যুগে চাইনীজ মানে শুধুই খাবার। আর সুবোধ তো পালাবেই। আজকে কত বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার ভালো কিছু আবিস্কার করে। ছাত্র তাই কেউ দাম দেয় না। তাই সুবোধ রা পালায়। নিজ দেশ হতে পালায়।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৩৪
করুণাধারা বলেছেন: আমার ব্লগে স্বাগতম আব্দুল্লাহ্ আল মামুন। প্রথমবারের মতো আপনাকে পেয়ে খুব ভালো লাগলো।
আজকে কত বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার ভালো কিছু আবিস্কার করে। ছাত্র তাই কেউ দাম দেয় না। তাই সুবোধ রা পালায়। নিজ দেশ হতে পালায়।
আমি ঠিক এই কথাটিই বলতে চাচ্ছিলাম। মেধার মূল্যায়ন নেই, জীবনের নিরাপত্তা নেই, সততার দাম নেই- চলে গিয়ে যদি এসব পাওয়া যায় তবে চলে যাওয়াই ভালো.....
৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:২৫
পদ্মপুকুর বলেছেন: বেশ গোছানো লেখা। লেখা এবং ভাবনাগুলো ভালো লাগলো। রাজীব নুর যেমনটা বলেছেন যে ৭০ বা ৮০ তে আমার জন্ম হয়নি। সেসময়ের কথা জানি না। আপনার কাছ থেকেই জানলাম সেসময় অনেক চায়নিজ ছিল। আমারও একই কথা, কিন্তু এখন কেনো নেই, সেটা একটা গবেষণার টপিক হতে পারে। শুধু চাইনিজরা কেনো, কোন বিদেশিকেই এখন আর ঢাকার রাস্তায় দেখা যায় না সচারচর, যেটা এমনকি কলকাতার রাস্তায়ও হরহামেশাই দেখা যায়।
শেষের প্যারাতে এসে দেশের জন্য যে আকুলতা ঝরে পড়েছে, সেটুকু খুবই হৃদয়গ্রাহী। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৬
করুণাধারা বলেছেন: আমার ব্লগে আপনাকে প্রথমবারের মতো পেয়ে খুবই ভালো লাগলো, পদ্ম পুকুর। আপনার মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হলাম, আশা করি ভবিষ্যতেও পাশে থাকবেন।
একসময় চীন ছিল খুবই দরিদ্র দেশ। তখন জীবিকার অন্বেষণে চীনারা ঢাকা ও কলকাতায় বসতি গড়েছিল, আমরা ছিলাম তাদের তুলনায় সমৃদ্ধ। অথচ আজ চীনের সাথে আমাদের কতটা ফারাক!
আপনি ঠিকই বলেছেন, ঢাকায় এক সময় আর্মেনীয়, পর্তুগিজ এমন নানা জাতির বসবাস ছিল। তাদের আমি দেখি নি কিন্তু তাদের সময় কালে তাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল জানার খুব আগ্রহ আমার।
শেষ প্যারাতে আমি সন্তানের জন্য আকুলতা বোঝাতে চেয়েছিলাম। আমার, এবং আমার মতো অনেকের সন্তানেরাই দেশান্তরী হচ্ছে।তাদের জন্যই প্রধানত এই লেখা। আমি আপনার আগের প্রজন্ম।
আপনিও ভালো থাকুন, শুভকামনা রইল।
৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৩৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব ই চমৎকার করে তুলে এনেছেন প্রবাসের বাস্তবতা।
সময়ের সাথে সাথে আসলে সত্যি ই একটা প্রজন্ম গড়ে উঠছে যাদের কোন দেশ নেই।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৭
করুণাধারা বলেছেন: সময়ের সাথে সাথে আসলে সত্যি ই একটা প্রজন্ম গড়ে উঠছে যাদের কোন দেশ নেই।
একদম ঠিক কথা মনিরা, কিন্তু এটা ঠেকাবার কোন উপায় নেই। সন্তানের দেশান্তরী হওয়াতে আমার দুঃখ নেই, কিন্তু বস্তুতান্ত্রিক সমাজে গিয়ে যেভাবে তারা পৃথিবীর জীবনটাকেই সবকিছু ভেবে নেয়, সেটাতে আমার দুঃখ আছে। দুঃখ আর অসহায়ত্বকে মেনে নিয়ে বেঁচে থাকা।
মন্তব্য আর প্লাসের জন্য ধন্যবাদ মনিরা, শুভকামনা রইল।
৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
যদি ব্লগারেরা জানতে পারেন যে, আপনি আমার মন্তব্য মুছে দিচ্ছেন, অনেক ব্লগার আপনার পোষ্ট নিয়ে হতাশ হয়ে যাবেন। মন্তব্য মুছলে এডমিন আপনাকে পছন্দ করবেন না।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১৪
করুণাধারা বলেছেন: ????
৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
স্যরি, ৫নং কমেন্টটা ভুলে এখানে এসে গেছে।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১২
করুণাধারা বলেছেন: ভাগ্যিস, ব্যাখ্যা দিলেন। আমি কারো মন্তব্য মুছি না, আপনার মন্তব্য কে মুছেছে, সেটা আমি দেখেছি। এভাবে মন্তব্য মোছাকে আমার মনে হয় এটা অভদ্রতা এবং আত্মম্ভরিতার চূড়ান্ত প্রকাশ।
এসেই যখন পড়লেন আমার ব্লগে, একটা মন্তব্য করা উচিত ছিল নাকি? দয়া করে পড়ে পর মন্তব্য করবেন।
৭| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১৮
শায়মা বলেছেন: আমারও দেশেরও মাটির গন্ধে ভরে আছে সারা মন
শ্যামল কোমল পরশ ছেড়া যে নেই কিছু প্রয়োজন!
পুরা লেখাটা পড়লাম আপুনি! তারপর এই গান এসে গেলো ....
সবচেয়ে মজার পার্ট চাইনিজ পার্ট!
আমার স্কুলেও চাইনিজ বেবিরা সব সময় দেখেছি একা একা থাকে। মুখ গোমড়া এবং কারো সাথে কথা বলতেই চায় না।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৫০
করুণাধারা বলেছেন: আমি যদি গান গাইতে জানতাম, তাহলে তোমার সাথে এই গানে গলা মেলাতাম.....
আমি কখনোই অন্য দেশে স্থায়ী হতে চাই নি, ভবিষ্যতেও হবার কোনো ইচ্ছে নেই। কিন্তু যারা চলে যায়, তাদের কি বলে যেতে বাধা দেই!!!!!
চাইনিজরা খুবই মজার, আমি সুযোগ পেলেই খোঁচাতাম, নানা কিছু জানতে চেয়ে। কিন্তু তারা উত্তর না দিয়ে চুপচাপ থাকতো! তোমার স্কুলে তাহলে চাইনিজ বাচ্চারা পড়ে!! আগের চাইনিজ বাচ্চারা কোন স্কুলে যেত বলে জানিনা। এরা মনে হয় ঘরেই পড়তো।
মন্তব্য আর প্লাস পেয়ে খুশি হলাম শায়মা। ভালো থেকো সদাই।
৮| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ লেখাটা একেবারে হৃদয়মূলে নাড়া দিয়ে গেল। আমার প্রবাসী ছেলেদের এবং তাদের সন্তানদের কথা ভেবে বুকটা কেঁপে ওঠে। আমার একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডাক্তার, গত প্রায় ৩২ বছর ধরে আমেরিকা প্রবাসী। তারা স্বামী স্ত্রী উভয়ে সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে থাকা মানুষ। প্রতিবছরই দেশে আসে, তবুও তাদের তিন ছেলের কেউই পরিষ্কার বাংলা বলতে পারেনা। এদেশ নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই, থাকার কথাও নয়। একদিন আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মও আমার সংস্কৃতিকে এলিয়েন না ভাবলেও ফরেন ভাববে, এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা।
চায়না বিল্ডিং এর কথা মনে আছে এবং সেটা সম্ভবতঃ এখনো আছে এবং একই নামে পরিচিত। তখনকার দিনে চীনাদের আরেকটা ব্যবসা ছিল ড্রাই ক্লীনিং এবং দামী কাপড়ে রিপু করা ইত্যদি। গাউছিয়া মার্কেটের দিকে লীফা নামে একটি এরকমের দোকান ছিল। চৈনিক মূলের কিছু সিঙ্গাপুর-হংকংবাসীকেও দেখেছিলাম। জুতোর দোকানেও চীনারা ছিল, আবার জুতা মেরামতকারী (কবলার) হিসেবেও ছিল।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৪
করুণাধারা বলেছেন: আপনার এ লেখাটা একেবারে হৃদয়মূলে নাড়া দিয়ে গেল।
ধন্যবাদ জানাই। আসলে লেখাটা আমিও লিখেছিলাম হৃদয়ের রক্তক্ষরণ থেকে, তাই হয়তো শেষ দিকে এসে যা বলতে চাচ্ছিলাম তা আর গুছিয়ে বলতে পারলাম না। জীবনের বিকেলবেলায় যখন অখন্ড অবসর থাকে, তখন যদি প্রিয় মুখগুলো কাছে না থাকে তখন কষ্ট হয়। নানা ধরনের ভাবনা চিন্তা মনে আসে।
আপনার যে বন্ধুর কথা বললেন, প্রবাসে থাকা অধিকাংশ বাঙালিরই সেই অবস্থা, বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রজন্মর। Namesake বইটা জনপ্রিয় হবার পর সিনেমাটাও জনপ্রিয় হয়েছিল, তার অর্থ এর কাহিনী প্রবাসী বাঙ্গালীদের ঠিকভাবে চিত্রায়ন করতে পেরেছিল। একদিন আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মও আমার সংস্কৃতিকে এলিয়েন না ভাবলেও ফরেন ভাববে, এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা। সময়ই এক সময় বলে দেবে কি হবে!! এমনও হতে পারে, পরিবারের একজনের আরেকজনের প্রতি যে ভালোবাসা, যা একান্ত বাঙ্গালী বৈশিষ্ট্য, তা দেখে তারা মুগ্ধ হবে এবং তাদের শেকড়ের কাছে ফিরে আসতে চাইবে। যে যতই বিদেশি সংস্কৃতিতে দীক্ষিত হোক না কেন, আজও বাঙালি পরিবারের সদস্যরা ভালোবাসার বন্ধনে বাঁধা থাকেই, এই সংস্কৃতি একেবারেই আমাদের নিজস্ব।
চীনের কথা উল্লেখ করার কারণ, আমার মনে গভীরে একটা আশা আছে, একদিন আমাদের দেশও চীনের মতো সমৃদ্ধ হবে, এদেশে থাকা এবং বিদেশি থাকা সমস্ত বাংলাদেশিরা তখন এ দেশের উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করবেন। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তখন মাথা উঁচু করে বলবে "বাংলাদেশ, আমার দেশ।"
লীফাতে আমি বহুবার গেছি। জানিনা কি করে ভুলে গেলাম, এদেশে চাইনিজরা লন্ড্রির ব্যবসাও করতেন! মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু চাইনিজদের কেউ কেউ যে জুতা মেরামতকারী ছিলেন, এটা জানতাম না। তাহলে ধরেই নেয়া যায়, সে সময় চীন দেশে অবস্থানকারী বেশিরভাগ চাইনিজরা আরো বেশি অর্থনৈতিক দুরবস্থায় ছিলেন। আজ তারা কোথায়! এসব ভাবলে মন খারাপ হয়ে যায়। আসলে এই পুরো পোস্টটাই একটা মনখারাপের পোস্ট। তাতে আপনার মন্তব্য এবং প্লাস পেয়ে ভালো লাগলো।
ভালো থাকুন।
৯| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:৫৬
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমি আসলে স্থায়ী ভাবে বিদেশ থাকাকে পছন্দ করি না। যদিও প্রতিটা দেশেরই একটা অংশ এভাবে দেশান্তরি হয়ে নিজস্ব সংস্কৃতি ভুলে অন্য দেশের সংস্কৃতিকে আয়ত্ত করে নেয়...
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৭
করুণাধারা বলেছেন: স্থায়ী ভাবে বিদেশ থাকাকে অনেকেই অপছন্দ করেন, তবু কখনো কখনো তাদের আর কোন উপায় থাকে না। মধ্যপ্রাচ্যে চাকুরীরত আমার পরিচিত এক ভদ্রলোকের পরিকল্পনা ছিল চাকরি শেষে দেশে স্থায়ী হবার। পরিকল্পনামত বড় দুটি কন্যা যথাক্রমে এ লেভেল, ও লেভেল করার পর ভদ্রলোক স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে দেশে পাঠিয়ে দিলেন, তারা দেশে লেখাপড়া করবে আর তিনি কয়েক বছর পর অবসর নিয়ে দেশে ফিরবেন। মেয়ে দুটি যথাক্রমে বুয়েট ও ভিকারুননিসা কলেজে ভর্তি হলেও প্রায় পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে বিপত্তি বাঁধল, এদেশে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তিন বছর বয়সের মধ্যে ভর্তি করতে হয় এটা তার জানা ছিল না। অনেক চেষ্টার পরেও কোথাও ভর্তি করতে পারলেন না। মধ্যপ্রাচ্যে ফিরে গেলে ছেলেটা ভর্তি হতে পারত, কিন্তু তাতে মেয়েদের নিয়ে সমস্যা। অবশেষে কানাডায় ইমিগ্রেশন নিয়ে সমস্যা সমাধান করলেন, বাধ্য হলেন অবসরের পর সেদেশে স্থায়ী হতে!
এত বড় গল্প এই কারনে শোনালাম যে, অনেকে বাধ্য হয়েই বিদেশে স্থায়ী হন!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বিচার মানি তালগাছ আমার। শুভকামনা রইলো।
১০| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৭:১০
সোহানী বলেছেন: আমি জানি না আমার পুরো চিন্তা ভাবনা কিভাবে আপনি লিখায় রুপ দিলেন!!!!!!!! পূর্ব জন্মে আপনার সাথে মনে হয় খুব বন্ধুত্ব ছিল!!!
চীনাদের প্রসঙ্গে বললেন: তখনকার চীন আর এখনকার চীন... আকাশের চাঁদ আর মাটির ধুলো। এ নিয়ে অনেক লিখা আছে। তারপরও সংক্ষেপ হলো, আমরা এখন যেমন দলে দলে ভাগ্যান্নষনে দেশ ছেড়ে পালাই ঠিক তেমনি ২য় মহাযুদ্ধের পর মাওসেতুং এর আজকের চীনের আগে তেমনি ওরা দলে দলে ভারতবর্ষে আসতো বিশেষ করে মুচি, দাঁতের হাতুড়ি ডাক্তার বা ক্লিনিং কাজে। যা খায়রুল ভাই বলেছেন। এখনো গাওছিয়ায় লিফা মূল চীনারা ব্যবসা পরিচালনা করে। কিন্তু মাওসেতুং এর আধুনিক চীনা পুরো পৃথিবীকে পাল্টে দেয়। পুরো পৃথিবীর এখন বিলিয়নরা এখন চীনারা। আপনি জানেন, কানাডার সকল রাজকীয় বাড়ি, গাড়ি বা ব্যাবসার মালিক চীনারা। তেমনি আমেরিকা বা ইউরোপে। কানাডার রোম মিউজিয়ামে বিলিয়ন ডলার দান করেছেন একজন চাইনীজ ব্যবসায়ী। আর বিয়ে বা কালচার ওরা এখন সহজেই বিশ্বায়নরে পথে। আমার খুব ক্লোজ বান্ধবী এখানের চাইনীজ মিলিয়নিয়াল এর মেয়ে। ওদের বাসায় দেখি ইউনিভার্সাল কালচার।
বাকি বিষয় নিয়ে আসছি আবার.............
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৫
করুণাধারা বলেছেন: আমি জানি না আমার পুরো চিন্তা ভাবনা কিভাবে আপনি লিখায় রুপ দিলেন!!!!!!!! পূর্ব জন্মে আপনার সাথে মনে হয় খুব বন্ধুত্ব ছিল!!! কথাটা খুব ভালো লাগলো সোহানী ।
আমি আজকাল চীনদেশ নিয়ে খুব ভাবি। কোন যাদুমন্ত্র ওদের এমন বদলে দিল! একসময় আমরা শিখেছিলাম, "চীনের দুঃখ কি? হোয়াঙহো!" সেই দুঃখকে কিভাবে জয় করল, সর্বনাশা নদীকে বশীভূত করল! (নদী ভাঙ্গনে আমাদের শরীয়তপুরের গ্রামের পর গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, আমরা চেয়ে দেখছি, শুধুই দেখছি নদী কিভাবে সব ভেঙে নেয়!) আজ জ্ঞান- গরিমা- সম্পদে চীন কোথায় উঠেছে! অথচ এক সময় চীনারা আমাদের মত অথবা আমাদের চাইতেও দুরবস্থায় ছিল। আজ তাদের এই উন্নতির মূল কারণ শিক্ষা নিয়ে তাদের দূরদর্শিতা, মেধার মূল্যায়ন, এবং অবশ্যই আইনের শাসন। সেই যে মাও সেতুং এর সময় তাদের দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক বছরের জন্য বন্ধ করে দিয়ে কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছিল, তার পরেই কয়েক বছর পর দেখা গেল ঘরে ঘরে ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এক সময় "ঠুনকো" কথাটার প্রতিশব্দ ছিল চাইনিজ। কিন্তু এখন চীনারা কি না উৎপাদন করছে! একই সাথে তারা জ্ঞান চর্চাতেও এগিয়ে গেছে!!
আমার আশা (হয়তো দুরাশা) ঠিকমতো রাষ্ট্রনায়ক পেলে আমাদের দেশও একদিন উন্নতির দিকনির্দেশনা পাবে। এই যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, যা এমন শিক্ষিত তৈরি করে যে নিজের শিক্ষা কে কোন কাজে লাগাতে পারে না, দেশের উন্নতিতে কাজে লাগানো দূরে থাক, নিজের বেকারত্ব দূর করতে পারে না- একদিন নিশ্চয়ই এই শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হবে। আমাদের দেশে এমন সব মানুষ হবে, যারা নানা বিষয়ে শিক্ষিত হয়ে পৃথিবীর দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়বে, হতে পারে সেই শিক্ষা plumbing থেকে শুরু করে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যন্ত। আমার বিশ্বাস আমরা বাংলাদেশীরা খুবই মেধাসম্পন্ন, শুধু এই মেধা কাজে লাগাবার মত শিক্ষা এবং দিকনির্দেশনা পাই না বলেই আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না। আরও অনেক কথা বলতে পারি, কিন্তু কথা শেষ হবে না.......
আমি দুই নাম্বারে আরো কিছু লিখেছি, সে সম্পর্কে আপনার মতামত চাই। কারণ আপনি অনেক জানেন এবং দেখেছেন এ ব্যাপারে। তিন নাম্বার সম্পর্কে কোন মতামত চাইছি না। মনে হয় আপনারা যারা চলে গেছেন, তারাই ঠিক কাজ করেছেন, কারণ জীবনের বিকেলে এসে সন্তানদের দূরে চলে যেতে দেবার কষ্ট পেতে হবে না আপনাদের.....
মন্তব্য এবং প্লাস দিয়ে অনুপ্রাণিত করলেন সোহানী।
ভালো থাকুন, শুভকামনা।
১১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:০০
ঢাবিয়ান বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর একটা লেখা। চায়না বিল্ডিং এর কথা শুনেছি, কখনও দেখা হয়নি। নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে মাইগ্রেশনটা মনে হয় সবচেয়ে বেশি হয়েছে চায়না থেকে। চাইনিজরা কথা বলে কম, কাজ করে বেশি। এ কারনেই তারা আজ অতি উন্নত এক জাতি। বাংলাদেশে চাইনিজরা থেকে গেলে আমাদের জন্য ভাল হত। তার যে দেশেই থেকে গেছে সেই দেশকে উন্নতির শিখরে উঠতে সাহায্য করেছে। মালয়েসিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান এর উৎকৃষ্ট উদাহরন। এই সবগুলো দেশ আগে একসময় অত্যন্ত দরিদ্র দেশ ছিল।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্পর্কে যে কথাগুলো লিখেছেন তা শতভাগ সত্য।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫
করুণাধারা বলেছেন: আপনি আমার ব্লগে আবার ফিরে এসেছেন, আমি তাতে খুবই খুশি হলাম ঢাবিয়ান।
চাইনিজরা কথা বলে কম, কাজ করে বেশি। এ কারনেই তারা আজ অতি উন্নত এক জাতি। দারুন মূল্যায়ন। তবে আমার মনে হয়, সুযোগ পেলে আমরাও কাজ করতে পারতাম, যদি কেউ ঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারত। আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদেশে গবেষণায় ভালো করে। বলা হয়, কোন কাজ করার জন্য মেধা এবং পরিশ্রম করার ক্ষমতা দুটোই তাদের আছে। কিভাবে মেধার অপচয় করার ফলে আমাদের জাতীয় ক্রমাবনতি হচ্ছে এসব ভাবলে খুব হতাশ লাগে........
আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা রইল।
১২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৩০
হাবিব বলেছেন: আপনার চাইনিজ নিয়ে লেখা খুবই ভালো লাগলো। ঈশ্বরী পাটনী আর এযুগের মা সবারই কথা কবুল হোক। সুবোধ আবার ফিরে আসবেই। আমি আশাবাদী।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩
করুণাধারা বলেছেন: সুবোধ আবার ফিরে আসবেই। আমি আশাবাদী।
আপনার সাথে আমিও আশাবাদী হলাম, হাবিব স্যার। চলে যাওয়া ভালো কিছু নয়। একদিন আমাদের দেশ উন্নত হবে, সবাই দেশের জন্য কাজ করবে, যারা বিদেশে থাকবে তারা দেশ নিয়ে গর্বিত হবে- দেখা যাক এ স্বপ্ন পূরণ হয় কিনা!!
প্রথমবার আমার ব্লগে এসেছেন বলে খুব খুশি হলাম হাবিব স্যার, আশা করি ভবিষ্যতেও আপনাকে পাব। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
১৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৭
জগতারন বলেছেন:
আমি আজ ৩৭ বছর যাবত অ্যামেরিকা যুক্ত রাষ্ট্র প্রবাসী,
পড়াশুনা করেছি অ্যাভেয়েশন ইঞ্জীনিয়ারিং টেকনোলজি নিয়ে।
আশা ছিল দেশে যেয়ে বাংলাদেশ বিমানে কর্মে যোগ দেবো।
কিন্তু তা আর আমার হয়ে উঠে নি।
তার কি কি কারন ?
অত কথা আর আমার বলতে ভালো লাগে না।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৫
করুণাধারা বলেছেন:
আশা ছিল দেশে যেয়ে বাংলাদেশ বিমানে কর্মে যোগ দেবো।
কিন্তু তা আর আমার হয়ে উঠে নি।
তার কি কি কারন ?
অত কথা আর আমার বলতে ভালো লাগে না।
বলার কোন প্রয়োজন নেই, না ফিরতে পারার পেছনে কি কি কারণ থাকতে পারে তা অনুমান করতে পারি। দেশের যে কয়টি সংস্থা নানারকম গোঁজামিল দিয়ে চলছে, বাংলাদেশ বিমান তার অন্যতম। এই সংস্থায় কাজ করে দেশসেবা করার আপনার স্বপ্ন ভূলুণ্ঠিত হতে সময় লাগত না। তাই আসা হয়ে ওঠে নি, ভালোই হয়েছে।
আমার ব্লগে আপনাকে এই প্রথমবার পেলাম জগতারন, অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকুন সতত।
১৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আসলেই সময় সব কিছু বদলে দেয়।
পড়ে দারুন লাগলো।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৭
করুণাধারা বলেছেন: পড়ে দারুন লাগলো।
দারুন মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
১৫| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৮
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন আপু।কিছু দিন প্রবাস জীবন কাটানোর আমার খুব ইচ্ছে।একবার প্রবাসী হয়ে প্রবাসীদের মনের অবস্থাটা বুঝতে ইচ্ছে করে।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:০১
করুণাধারা বলেছেন: প্রবাস জীবন অনেকটা দিল্লিকা লাড্ডুর মত। তবে আমার মনে হয় প্রবাসের অভিজ্ঞতা থাকা ভালো, চিরকাল প্রবাসে থাকা ভালো নয়। দোয়া করি, কিছুদিন প্রবাসে কাটানোর আপনার ইচ্ছা যেন পূরণ হয়।
প্রায় প্রতিটা পোস্টেই আপনার মন্তব্য এবং প্লাস পাচ্ছি, এটা আমার জন্য অনেক অনুপ্রেরণার। অসংখ্য ধন্যবাদ মোস্তফা সোহেল। আপনি ভালো থাকুন।
১৬| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১
টিয়া রহমান বলেছেন: আপু একদম ঠিক মেধার মুল্যায়ন না থাকাই মেধাবীরা পাড়ি জমান বিদেশে
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
করুণাধারা বলেছেন: শুধু যে মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে না তা না, মেধাবীদের এদেশে কাজ করাটাকে কঠিন করে তোলা হচ্ছে। তারা কোন ভরসায় ফিরে আসবে?
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ টিয়া রহমান। অনেক শুভ কামনা রইল।
১৭| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫
নীল আকাশ বলেছেন: এলোমেলো ভাবনা কেন বলেছেন? এটা যথেষ্ঠ গুছানো লেখা। তবে এই ধরনের স্মৃতি চারন মুলক লেখা খুব কম দেখা যায়। কতটা লেখার হাত ভালো হলে এই ধরনের লেখা যায় সেটা পড়লেই বুঝা যাচ্ছে। চাইনিজদের নিয়ে দারুন বলেছেন, ছোট বেলায় এইসব চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খেতে ভালই লাগতো, কেন জানি এখনকার চাইনিজ রেস্টুরেন্টের খাবার গুলি খেতে সেই রকম ভালোলাগে না।প্রবাসীদের প্রথম প্রজন্ম শুধু দোটানার মধ্যে কাটাতে কাটাতে জীবন টা শেষ করে ফেলে তবে এদের জীবন যাত্রা ওখানে যেয়ে ওনেক বদলে ফেলতে হয়। আর শেষটার ব্যাপারে বলতে হয়, দেশ টা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে আপু, মাঝে মাঝে মনে হয় কেন এই দেশ কে ভালোবেশে থেকে গেলাম, আমি তো চলে যাব কিন্তু পরের প্রজন্ম কি করবে এই নষ্ট হয়ে যাওয়া দেশে? সামান্য বাক স্বাধিনতা নেই, এমনকি আপনার নিজের ভোটাধিকার দেবার অধিকারও নেই। নিজেকে মানুষ মনে হয় না মাঝে মাঝে।
ভালো থাকুন আর মাঝে মাঝে এই রকম দারুন দারুন লেখা দিবেন।
শুভ কামনা রইল!
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১
করুণাধারা বলেছেন: দিন হয়ে এল গত
শুনিতেছি বসে নীরব আঁধারে,
ভিড় করে আসে হৃদয় দুয়ারে,
দূর প্রভাতের ঘরে ফিরে আসা
পথিক দুরাশা যত।
স্মৃতিচারণ করতে ভালোই লাগে। ভাবছিলাম আমার ভালো লাগা কারো বিরক্তির কারণ হয় কিনা! আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো নীলআকা৩৯।
স্মৃতিচারণের সাথে সাথে দেশ ছেড়ে যাওয়া মানুষদের কথা ও মনে পড়ে। প্রবাসীরা কেন ফিরবে দেশে! অভাব অনটনের মধ্যে থাকা যায়, যদি শান্তি থাকে। এখন শান্তি কোথায়! ঘর থেকে বেরোতে ভয়, কথা বলতে ভয়, অসম্মানিত হবার ভয়- ভয় নিয়ে মাথা নিচু করে থাকার চাইতে চলে যাওয়াই ভালো.........
পোস্ট ভালো লেগেছে- এই মন্তব্য ও প্লাস পেয়ে আনন্দিত হলাম নীলআকা৩৯। ভালো থাকুন। আপনার জন্যও শুভকামনা রইল।
১৮| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:১২
আখেনাটেন বলেছেন: ঢাকার চাইনিজদের কিছু ইতিহাস জেনে অবাক হলাম। তারমানে জীবিকার সন্ধানে আমরা যেমন যে কোনো অড জব করার জন্য প্রস্তুত থাকি বিদেশে, চীনারাও তেমন একসময় গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল মনে হয়। ব্লগার খাইরুল আহসানের মন্তব্য থেকে জানতে পারলাম চীনারা মুচির কাজও করত বাংলাদেশে। ভাবা যায়। আজ তারা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে নিজেদেরকে।
করুণাধারা'পা এটি একটি ক্লাসিক লেখা হয়েছে। আমরা যারা মিলেনিয়াল বা জেনারেশন ওয়াইের সদস্য তাদের কাছে এগুলো অবিশ্বাস্য মনে হওয়ার কথা।
চীনাদের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৯
করুণাধারা বলেছেন: এটি একটি ক্লাসিক লেখা হয়েছে। আমার লেখার মান নিয়ে আমি সব সময় সন্দিহান থাকি, তাই লিখতে আগ্রহ হয় না। এমন প্রশংসা বাক্যে আমি ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ,আখেনাটেন।
চীনারা আমার কাছে মস্ত বড় বিস্ময়। তারা যেসব কাজ করতো এদেশে, তাতে বাংলা ভাষায় বললে বলতে হয়, তারা ছিল ধোপা, মুচি, নাপিত, ও পাচক। তাদের অবস্থার বিস্ময়কর পরিবর্তনের কারণ তাদের কর্মমুখী শিক্ষা, যা তাদের উৎপাদন সক্ষম করে তুলতে সহায়তা করেছে। আমার ভেবে অবাক লাগে, বছর বিশেক আগেও দেখতাম সস্তা প্লাস্টিকের লাটিম, ইয়ো ইয়ো এইসব চাইনিজ পণ্য দিয়ে বাজার ভরে গিয়েছিল। আজকাল সেসব দেখি না। আজকাল তারা আইফোন বানায়!! কি দারুণ উত্তরণ!!!
তাদের চাইতে আমাদের মেধা কোনমতেই কম নেই। তবু আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হয় না......
প্রেরণাদায়ক মন্তব্য ও প্লাসের জন্য আরেকবার ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।
১৯| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: লেখাটা গভীরভাবে মন ছুঁয়ে গেল, বিশেষ করে চায়নিজদের অংশটা। শাহ্ আবদুল করিমের এই গানটা মনে করিয়ে দিলোঃ
"কোন মেস্তরি নাও বানাইলো এমন দেখা যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।
চন্দ্র-সূর্য বান্ধা আছে নাওয়েরই আগায়
দূরবীনে দেখিয়া পথ মাঝি-মাল্লায় বায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।
রঙ-বেরঙের যতো নৌকা ভবের তলায় আয়
রঙ-বেরঙের সারি গাইয়া ভাটি বাইয়া যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।
জারি গায়ে ভাটি বায়ে করতাল বাজায়
মদন মাঝি বড়ই পাজি কতো নাও ডুবায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।
হারা-জিতা-ছুবের বেলা কার পানে কে চায়
পাছের মাঝি হাল ধরিয়ো ঈমানের বৈঠায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।
বাউল আব্দুল করিম বলে বুঝে উঠা দায়
কোথা হইতে আসে নৌকা কোথায় চলে যায়
ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নায় ।।"
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৫
করুণাধারা বলেছেন: এই চমৎকার গানটা আমার জানা ছিল না রূপক বিধৌত সাধু। ঝিলমিল ঝিলমিল নায়েক কে কোথায় ভেসে চলেছি, কে জানে। এমন চমৎকার গান উপহার দেয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাই। কথাগুলো খুবই ভালো লাগলো- বার বার পড়লাম, আবারো পড়বো।
আপনাকে আমার ব্লগে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। আশা করি ভবিষ্যতেও পাব।
আপনার জন্য আমার আন্তরিক শুভকামনা, সব সময়।
২০| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অসাধারণ লাগলো আপু আপনার আজকের এই স্মৃতিচারণ টি । ১ - আপনি যেমন ছোটবেলার চীনাদের দেখেছেন আমরা ও ঠিক তেমনি ছোটবেলায় পাঞ্জাবি ড্রাইভার দের দেখতাম। ড্রাইভিং টি তখন থেকে জানতাম যে পাঞ্জাবীদের মজ্জাগত । কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী র হত্যার পর পরিস্থিতি আমূল বদলে গেল । ভারতবর্ষে বিভিন্ন প্রান্তে জাতি দাঙ্গা শুরু হলো । দলে দলে শিখেরা বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করতে লাগলো । আমরা এখন বড় হলাম তখন শিখ ড্রাইভার দের আর খুঁজেই পাওয়া গেল না বা দেখা যেত না । আজ অবশ্য দেশের সর্বত্র সব ধরনের ড্রাইভিং এ বাঙালিরা অভ্যস্ত হয়ে গেছে । পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন রকম সড়ক দুর্ঘটনা । ছোট থেকে শুনতাম ওদেরকে বাঁধাকপি বললে খুব রেগে যেত ।
চীনারা অত্যন্ত আত্মকেন্দ্রিক একটি জাতি । আমি কলকাতাতে অনেক চীনা রেস্তোরাঁতে দেখেছি ওরা ওই ব্যবসার বাইরে আর কিছু চেনে না । এখানকার চীনারা অবশ্য ওদের ভাষাতেই কথা বলে । তারা না বলে ইংরেজি না বলে বাংলা অথচ তাদের ভাষাতেই দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে । ভাষাগত সমস্যার জন্য হোক বা সম্পূর্ণ আত্মকেন্দ্রিক হওয়ার জন্যই হোক যে কারণেই হোক 3 রা কিন্তু আজও কোনোভাবেই বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মেশে নি । ফলে আপনার আমার মত ওরা পাশে থেকেও আজও সেই ভিনগ্রহের জীব হয়েই রইল।
২ ও ৩ সম্পর্কে বলবো অভিবাসী জীবন বড় বেদনার। যৌবনের প্রারম্ভে নতুন শিক্ষা ও কর্ম জীবনের জন্য হয়তো বিদেশি জীবন বা প্রবাসী জীবন আমাদেরকে প্রলুব্ধ করে । কিন্তু বার্ধক্যে প্রারম্ভে আমরা আমাদের সেই অতীত জীবনের ধারণা থেকে বেশিরভাগই বেরিয়ে আসি । জীবনের অপরাহ্ণে তাই পারিবারিক কবরস্থান ছোটবেলাকার গাছ বাতাস পুকুর ডাংগুলি খেলার জায়গা সবই যেন আমাদেরকে আবার হাতছানি দেয় । তাই প্রবাসী জীবনের কর্মব্যস্ততার মধ্যেও সময় পেলে আমরা ছুটে যাই আমাদের সেই ছোটবেলাকার দুরন্ত শৈশবের স্থানগুলিতে । কিছুটা মেলে কিন্তু কিছুটা মেলে না । যেটা মেলে সেইটাই আমাদের বাকি জীবনকে ভরিয়ে দেয় এক অনাবিল আনন্দে । আমরা আবার স্বপ্ন দেখতে থাকি তেপান্তরের দেশ ছেড়ে স্বদেশ ভূমিতে ছোট্ট একটি কুটিরের । ছোটবেলাকার সেই হাবিল কাবিল দের সঙ্গে 5 মিনিট কথা বলার মজাই যে আলাদা । কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে যায় । কারণ ওই দেশেই আমাদের শিকড় বাকর অনেক গভীরে চলে গেছে । আমরা ওসব ফেলে চলে আসব বললেই চলে আসতে পারি না। শুরু হয় মনের মধ্যে দোলাচল । বাস্তবে তখন আমরা হয়ে উঠি খাঁচা বন্দি পাখির মতন । সকাল বিকাল দুবেলা খুব সুন্দর খাওয়া পরা থাকলেও মনটা পড়ে থাকে স্বদেশভূমি র প্রতি । তাই জীবনের অপরাহ্ণে গিয়ে সব পাওয়ার মধ্যেই যেন না পাওয়াটাই আমাদের বড় হয়ে দেখা দেয় ।
শুভকামনা ও বিনম্র শ্রদ্ধা আপুকে ।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬
করুণাধারা বলেছেন: আমার পোষ্টের শেষভাগে আমি যা লিখতে না পেরে এলোমেলো, জোড়াতালি দিয়ে শেষ করলাম সেই জিনিসটা আপনি চমৎকার ভাবে লিখে দিয়েছেন, এই কথাগুলোই আমি বলতে চাচ্ছিলাম, গুছিয়ে বলতে পারিনি।
আসলে শেকড়ের টান উপড়ানো কষ্টকর, কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সেই কষ্টকর কাজটি করতে হয়, তাতে কষ্ট বহুগুণ বেড়ে যায়। এ এক ভীষণ দোলাচল প্রবাসীদের।
কলকাতায় চিনা বাজারের কথা শুনেছি, কিন্তু চীনারা যে এখনো কলকাতায় আছে এটা জানতাম না। আমার ধারণা ছিল, তারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে নিজেদের দেশে ফিরে গেছে। খুবই আশ্চর্য হলাম শুনে, ওরা কলকাতাতেও আত্মকেন্দ্রিক ও অমিশুক জাতি হিসেবে পরিচিত। এভাবে ওরা অন্য দেশে কি করে থাকে কে জানে! আর কোন জাতি হয়তো এরকম ভাবে থাকতে পারত না।
শিখদের ব্যাপারেও নতুন কিছু জানা হলো। ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যার পর তারা যে এভাবে গা ঢাকা দিয়ে চলে গিয়েছিল- এর কিছুই জানা ছিল না। জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ, পদাতিক চৌধুরী। আর ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্য আর প্লাস দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করায়। ভালো থাকুন।
২১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: প্রজন্মান্তরের অভিযোজনে স্বকীয়তা ভুলো যাবার যাতনা, রক্তক্ষরন কত তীব্র! লেখাটার পরতে পরতে ফুটে আছে।
যদিও অভিবাসী হতে পারিনি কিন্তু গাঁয়ের থেকে দূরে শহরে থেকেই গ্রাম হারানো যাতনার অনুভবকে যেন উস্কে দিল লেখা।
বুকের কোনে কোথায যেন হা হা করে উঠল অজানিতেই।
সেই ধুপ জ্বালা সন্ধ্যারা, সন্ধ্যামালথীর মৌতাতে মাখা হায়! আর কোনদিনই বুঝি ফিরবেনা।
মাটির জন্য যে টান! জল হাওয়ার সোদা গন্ধে মনের যে আকুলতা নতুন শহুরে প্রজন্ম কল্পনাই করতে পারবে না!
হাই ডুডে ডুবে গেছে তাদের সকল অনুভব, প্রাণময়তা। একোরিয়ামের কৃত্রিম শেকড়ে জন্মানো পরজীবি উদ্ভিদের মতো সেই সত্য।
পোষ্টে অনেক অনেক ভাল লাগা রইল
++++
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮
করুণাধারা বলেছেন: সেই ধুপ জ্বালা সন্ধ্যারা, সন্ধ্যামালথীর মৌতাতে মাখা হায়! আর কোনদিনই বুঝি ফিরবেনা।
মাটির জন্য যে টান! জল হাওয়ার সোদা গন্ধে মনের যে আকুলতা নতুন শহুরে প্রজন্ম কল্পনাই করতে পারবে না!
হাই ডুডে ডুবে গেছে তাদের সকল অনুভব, প্রাণময়তা। একোরিয়ামের কৃত্রিম শেকড়ে জন্মানো পরজীবি উদ্ভিদের মতো সেই সত্য।
এত চমৎকার কথামালা একটা ছবি এঁকে দিলো, সেই ছবি মনের জ্বালায় কেমন শান্তি প্রলেপ বুলিয়ে দিল!
মানুষ অভিবাসিত হয়। কিন্তু শেকড় উপড়ে ফেলার যাতনা, রক্তক্ষরণ, কোনদিন কি বন্ধ হয়!! হয় না। সুবোধরা পালিয়ে যায়। আমরা অসহায় হয়ে তাদের পালাতে দেখতে থাকি, কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন করতে পারি না....
মন্তব্য ও প্লাস দিয়ে অনুপ্রাণিত করায় ধন্যবাদ ভৃগু। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
২২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০
জাহিদ অনিক বলেছেন:
আমি কি কি যেন বলতে এসে দেখলাম- সোহানী আপু, খায়রুল আহসান সাহবে, আখেনাটেন কিছু কিছুটা বলে গেছেন আমার ভাবনার কথাগুলো।
আপনার এই লেখাটি অবশ্যই একটি বেশ সুবিন্যস্ত ও সুচিন্তিত লেখা।
আমি কখনো প্রবাসী হইনি, তাই জানি না চীনা সেইসব নাপিত বা মুচিদের কেমন কষ্ট ছিল-
এটাও জানি না, এখনকার প্রবাসীরা কেমন কষ্টে প্রবাসে দিন কাটায়।
তবে---------
আপনি যেটা বলতে চেয়েছেন, নিজদেশে পরবাসী হয়ে কেমন আছি সেটা নিশ্চয়ই জানি।
সেটা জানি- সেটা জানি- সেটা জানি।
তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশে কিভাবে পরাধীন হয়ে মানিয়ে গুছিয়ে নিয়ে বেঁচে আছি আমরা সেটা আমাদের থেকে ভালো আর কে জানবে।
শুভেচ্ছান্তে-
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৪৫
করুণাধারা বলেছেন: তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশে কিভাবে পরাধীন হয়ে মানিয়ে গুছিয়ে নিয়ে বেঁচে আছি আমরা সেটা আমাদের থেকে ভালো আর কে জানবে।
মানিয়ে গুছিয়ে নিয়ে থাকতে পারলে কোন অসুবিধা নেই। অসুবিধা হয় থাকতে না পারলে। থাকতে না পারার উদাহরণ হচ্ছে, যেমন কেউ হঠাৎ হারিয়ে গেল, আর কোনো খোঁজ পাওয়া গেল না। কিংবা একটা ছেলে বাসে উঠতে গিয়ে পড়ে গেল, আর বাস ড্রাইভার ছেলেটির মুখ থেতলে দিয়ে ছেলেটিকে নদীতে ফেলে দিল, যেন সে আর ঘরে না ফিরতে পারে........
নিজ দেশে পরবাসী হয়ে এটুকু নিরাপত্তার আশ্বাসও পাওয়া যায় না, পরদেশে যারা পরবাসী হয় তারা কিন্তু এটুকু নিরাপত্তা পায়। তাই হয়তো পরবাসী হবার এই আকাঙ্ক্ষা!
আপনার এই লেখাটি অবশ্যই একটি বেশ সুবিন্যস্ত ও সুচিন্তিত লেখা। এলোমেলো লেখা নয় বলছেন! এমন প্রশংসা বাক্য ও প্লাস পেয়ে আনন্দিত হলাম।
শুভকামনা রইল জাহিদ অনিক।
২৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: লিখাটি চমৎকার। কয়েকটি পয়েন্ট এতা নিপুন ভাবে তুলে ধরেছেন। কিন্তু কি আর করার। ভাগ্যেহতদের শেষ আহাজারি ছাড়া কি আর করার থাকে! আমরা সবার খুজি কেউ আমাদের পথ দেখিয়ে যেন দেয় কেউ পথের খুজ করি না।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৭
করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্যের শেষ ভাগে কি কোনো হতাশা প্রকাশ পেল! আমি কিন্তু আশাবাদী মাহমুদুর রহমান সুজন, কোনদিন এদেশে পরিবর্তন আসবে, আমাদের বিপুল জনসংখ্যা রূপান্তরিত হবে জনশক্তিতে, সম্পদের সুষম বন্টন হবে, সমাজে বিরাজ করবে শান্তি। আসলে আমাদের চাহিদা তো খুবই অল্প দুবেলা পেট পুরে দুমুঠো খাওয়া আর শান্তিতে ঘুমানো। নিশ্চয়ই সেটা এদেশে আসবে।
আপনার প্রশংসা বাক্যে আনন্দিত হলাম।
শুভকামনা রইল।
২৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১০
সুমন কর বলেছেন: মুগ্ধ হলাম, ভালো লিখেছেন। +।
প্রবাসী'রাই বুঝে দেশে না থাকার কষ্ট।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০২
করুণাধারা বলেছেন: প্রশংসায় আপ্লুত হলাম সুমন কর। অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য ও প্লাস এর জন্য।
প্রবাসীরা ছেড়ে যাওয়া দেশের জন্য কষ্ট পান, আবার তাদের বৃদ্ধ মা-বাবা কষ্ট পান শেষ বয়সে সন্তান কাছে না থাকায়......
শুভকামনা, সুমন কর।
২৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৪:১০
মলাসইলমুইনা বলেছেন: করুনাধারা,
এই লেখার মধ্যে দেশের জন্য আপনার অনেক করুনার ধারা বইয়ে গেছে ভালোবাসার আর তাতে দেশ নিয়ে লেখাটা ভাবনা ধারায় হয়েছে । সবাই যে মুগ্ধতা নিয়ে আপনার লেখা পড়েছে আর সে সম্পর্কে বলেছে আমিও আর তার বাইরে না । আরেক প্রিয় ব্লগার সোহানী যা বলেছেন তার সবটুকুই বলতে ইচ্ছে করছে (রিপিট করলাম না আর )।
আমি কলেজ আর ইউনিভার্সিটির একটা বড় সময় কেটেছে বাংলাদেশের একটা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়াবো সেই স্বপ্নে । মাস্টার্স এর রেজাল্টের আগেই সরকারি চাকুরে হয়ে গেলাম। টাই পরে অফিস করতে হয় । পান খেয়ে গল্পগুজবের কোনো সুযোগ নেই সেই অফিসে । আমরা জয়েন করেছি সব ঢাকা ইউনিভার্সিটি, আইবিএ আর বুয়েটের কিছু বন্ধু একসাথে । বিদেশিদের সাথে নিয়মিত কন্ট্যাক্ট করতে হয় ।ইংরেজিতে কথা বলতে হয় ।খুবই ছিমছাম অফিস আমাদের । চারমাস পরে ইউনিভার্সিটির জব পেয়ে গেলাম। বাংলাদেশের একটা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়াবার স্বপ্ন পূরণ যেন স্বর্গ হাতে পাবার স্বপ্ন পূরণ ! পাগলের মত খাটলাম আমাদের নতুন ডিপার্টমেন্টে যোগ দেওয়া কিছু ইয়াং টিচার । তিন বছরে অনার্স পাশ করলো আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রথম ব্যাচ। ইত্তেফাকসহ আরো কতগুলো পেপার সে নিয়ে সম্পাদকীয় লিখলো আমরা পারলে অন্যের কেন পারছে না তিন বছরে অনার্স সাহস করতে ! কিন্তু সেই ইউনিভার্সিটিতে কি যে নৈরাজ্য !
এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হতে গেলে অন্তত একটা পাবলিকেশনের বার দেবার কথা বললাম ডিনের অফিসে ফ্যাকাল্টি মিটিঙে । এসোসিয়েট প্রফেসর হতে গেলে যেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাবলিকেশন থাকে, এসোসিয়েট প্রফেসরের উপরে পিএইচডি ছাড়া যেন প্রমোশন না হয় সেই দাবিও থাকলো।কে শোনে কার কথা !সেই দাবিগুলো ফ্যাকাল্টি মিটিংয়ের প্রসিডিং থেকেও বাদ গেলো । পড়াশোনার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই কারো । কিভাবে রাজনীতি হবে, দলীয় নিয়োগ হবে , ভিসি, প্রোভিসি হওয়া যায় এসব নিয়েই সবাই ব্যস্ত।
সেই স্বপ্নের শিক্ষকতা ছেড়ে আমিও একদিন পিএইচডি করার জন্য আমেরিকা চলে এলাম । এখানে ইউনিভার্সিটিগুলো কিভাবে চলে দেখলাম ।জানলাম ।নিজে পড়ালাম আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে । যেই এনভায়রনমেন্ট দেশের ইউনিভার্সিটিতে কখনো পাইনি সেটা পেয়ে গেলাম । টিচাররা সবাই লেখা রিসার্চে ব্যস্ত । কেউ কাউকে কিছু বলছে না ।সবাই জানে তার কি করতে হবে ।নিজেরাই রিসার্চের ফান্ড জোগাড় করছে। আমার একাডেমিক আইকন নোবেল লরিয়েট প্রফেসর সাইমনকে খুব কাছে থেকে দেখলাম । কি বিনয় ! কি পড়ার নেশা ! কি ডেডিকেশন পড়াশোনা রপেছনে ! তার রুমে একদিন একটা ঘন্টা কথা বলে মনে হলো ঈশ্বর যেন স্বয়ং আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন ! এই অনুভূতি আমার দেশে কলেজ ইউনিভার্সিটি-র কোনো প্রফেসরের সাথে কথা বলে হয়নি। কি ভাবে বোঝাই আমার অনুভূতি ! একসময় আমার দেশে ইউনিভার্সিটি-র স্বপ্নের চাকুরীটাও হাসিমুখে ছেড়ে দিলাম । আমার আর ফিরে যাওয়া হলো না দেশে ।
এই আমি ছিলাম সবচেয়ে ঘর কুনো । বেড়াতেও যেতে চাইতাম না ঢাকার বাইরে কখনো । সেই আমি কত বছর দেশের বাইরে ! সবই যে সুখ শান্তি আর টাকার জন্য তা কিন্তু কখনো নয় । স্বস্থির জন্য অনেকটাই । দেশে সরকারি আর ইউনিভার্সিটির জবের আমার অভিজ্ঞতা আছে । সিস্টেমগুলোই আমরা তৈরী করেছি যেন ফেল করবার জন্য । সেটা চেঞ্জ করার কোনো উদ্যগ নেই ।সব কিছুতেই রাজনীতি ! রাজনীতির পাল্লা দিয়ে কি ইউনিভার্সিটি চালান যায় ভালো করে ? শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক রাখা যায় ? যায়না ।কখনোই যায় না ।এই কষ্টটা আজ এতো দিনেও গেলোনা এ ঝলমল আলোর দেশে থেকেও। আমার সাথে এমবিএ, পিএইচডি বেশ করে যখনি ইউরোপিয়ান, জাপানি, চাইনিজ, মিডিল ইস্টার্ন, ফার ইস্টার্ন ছেলেমেয়েরা দেশে ফিরে গেছে সব সময়ই মনের ভেতর একটা চিনচিনে ব্যাথা কোথায় যেন বেজে উঠেছে ।কিন্তু দেশে সব সময়ের জন্য ফিরে যাবার ইচ্ছেটা জোরালো হয়ে উঠেনি কেন যেন ।জানিনা আমার দোষ তাতে কতটুকু । সত্যি জানিনা ।
মহাকাব্যিক লেখায় মহাকাব্যিক মন্তব্য হয়ে গেলো মনে হয় - মলার জীবনীই বলে ফেললাম অনেকটুকু ।আপনার লেখাটা নিয়ে কি বলবো ? খুবই সুচিন্তিত । খুবই ভালোলাগার । আপনার কাছ থেকে যেমন আশাকরি লেখা তেমনি ।অনেক দিনের মধ্যে এটা ব্লগের একটা মাস্টারপিস ! মলার (ডট ডটসহ) ভালোলাগা রইলো লেখায় আর আপনাকে শুভেচ্ছা ।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:১১
করুণাধারা বলেছেন: মলা...........,
এটা মহাকাব্যিক মন্তব্যই হয়েছে! এই মন্তব্য থেকে আমার এক মহা প্রাপ্তি হয়েছে, জানতে পারলাম আমার প্রিয় ব্লগার মলা....র পোস্ট পড়ে কেন কেবল মনে হতো, অনেক পড়াশোনা করা কারো লেখা পোস্ট এটা!! আমার ধারণা পুরোপুরি ঠিক জানতে পেরে খুব আনন্দিত হলাম।
এই মন্তব্যটা আরেকটু বিস্তারিত করে যদি লেখেন, তবে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তফাৎ বোঝা যাবে। আমার এক বান্ধবী ছিল, সেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিল। কখনোই বিদেশে থেকে যাওয়ার টাইপ ছিল না।লেখাপড়া ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান, ফলে বৈষয়িক আরাম-আয়েশ বিত্ত-বৈভবে তার আগ্রহ ছিল না। সেও আমেরিকায় পড়তে গিয়ে আর ফিরে এল না। আমি জানি সেটা উন্নত দেশের আরাম আয়েশের লোভে নয়। সে যখন তুলনা করে দেখেছে এ দেশে কাজ করতে গেলে হাত বাঁধা থাকবে, মুখ বন্ধ করে থাকতে হবে, আর সেই দেশে সে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে পারবে, তখন সে নিজ দেশে আর ফিরে আসেনি।
অনেকেই বলে থাকেন বিদেশে কর্মরত মেধাবী বাংলাদেশিরা ফিরে আসলে দেশের উন্নতি হতো। কেন যে তার ফিরে আসেন না, সেটা নিয়ে কেউ কখনো গবেষনা করে না...
এই বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মলা.......
কিন্তু এরপর আশা করে থাকবো আর একটু বিস্তারিত করে লেখা একটা পোস্ট পাবার।
অনেক শুভকামনা রইল।
২৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
আপা চমৎকার একটি পোস্ট লিখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। বাংলায় ৭০-৮০ এর দশকে ঢাকায় চীনাদের আগমনের বিষয়টি জানা ছিল না। বিষয়টি জেনে ভাল লগলো। এখন কোথায় চীন আর কোথায় আমরা!! তবে, চীনের সঙ্গে প্রাচীন বাংলার সম্পর্ক হাজার বছরেরও অধিককাল পেরিয়ে গেছে। ইতিহাসের বিভিন্ন সূত্রে এর প্রমাণ মেলে। বৌদ্ধশাস্ত্র অধ্যয়ন, গৌতমবুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র স্থানগুলো দর্শন, বৌদ্ধশাস্ত্রের প্রাচীন গ্রন্থ চীনা ভাষায় অনুবাদকরণ, তীর্থ ভ্রমণ, বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত, সিদ্ধাচার্যদের সঙ্গে ভাব বিনিময়, উপমহাদেশখ্যাত বৌদ্ধ বিহারগুলো দর্শন, চীনের সঙ্গে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য খ্রিপূর্ব কাল থেকেই চলে আসছিল। সপ্তম শতাব্দীতে চীনের বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত হিউয়েন সাং এসেছিলেন বাংলায়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বুদ্ধের পবিত্র স্মৃতিগুলো দর্শন, বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিতদের সঙ্গে বৌদ্ধশাস্ত্রের নিগূঢ় তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা, উপমহাদেশখ্যাত বৌদ্ধ বিহারগুলো পরিদর্শন, অধ্যয়ন, চীনা ভাষায় গ্রন্থ অনুবাদের মাধ্যমে হিউয়েন সাং বাংলা ও চীনের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের এক নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন।
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩
করুণাধারা বলেছেন: এই মন্তব্যর মাধ্যমে চীনাদের সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা হলো। আসলে আপনার প্রতিটা পোস্ট পড়েই নতুন অনেক কিছু জানা যায়, এমন কি মন্তব্য পড়েও জানতে পারি। নানা কারণে এখন তেমন পড়াশোনা করতে পারি না, তাই আপনার পোস্টগুলো পড়ে খুবই উপকৃত হই।
বেশ কিছুদিন থেকে কোন পোস্ট দিচ্ছেন না। অপেক্ষায় থাকলাম, শিগগিরই আপনার নিজস্ব ব্র্যান্ড- তথ্যপূর্ণ, সুখপাঠ্য নতুন পোস্ট দেবেন।
এই চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাস দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, কাওসার চৌধুরী। ভালো থাকুন, সব সময়।
২৭| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:৩৬
সোহানী বলেছেন: একবার এক প্রোগ্রামে এক ডাক সাইটে প্রবাসী ইন্জিনিয়ারের সাথে আড্ডায় বলছিলাম কে কি করবে রিটায়মেন্টের পর। আমরা এটা সেটা বলছিলাম। উনি গম্ভীর হয়ে বললেন, আমি রিটায়মেন্টের এর পর সম্পূর্ণ কর্পদশূণ্য অবস্থায় দেশে ফিরে যাবো, ঠিক যেমন অবস্থায় এখানে এসেছিলাম। আমরা অবাক হয়ে জানতে চাইলাম কেন? উনি বললেন তাহলে সেই আগের ভালোবাসা পাবো যেখানে থাকবে না কোন দেনা পাওনার হিসেব। বিলের মাছ ধরে আনবো তারপর পুঁই শাকের ডাটা দিয়ে ঝোল রাধতে বলবো মাকে, পাশের বাসার বরই লিচু আম চুরি করে পুকুর ধারে বসে খাবো আর সারা দুপুর বিলের পানিতে দৈাড়ঝাপঁ মেষে মায়ের বকুনিতে বাড়ি ফিরবো।
আমার ক'জন কানাডিয়ান কলিগ প্রশ্ন করলো, তোমাদেরতো শুনেছি কোন সরকারী হেলথ কার্ড নেই, বেকার ভাতা নেই, সরকারী পেনশান নেই। তাহলে চলবে কিভাবে?
শুনে উনি এক গাল হেসে বললো, আমাদের হেলথ কার্ড প্রয়োজন নেই। কারন মা বাবার ভালোবাসা আমাদেরকে জমের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে, আমাদের বেকার ভাতা নেই দরকার নেই কারন বরই লিচু আম মাছ সবকিছুর সাথে বাবা মায়ের হোটেল ফ্রি, এমনিতেই চলতে পারি।
....................
আপু সেই কারনেই রাইস ক্রিস্পির সাথে রুচি চানাচুর আর সরিষার তেলের খোজেঁ সকাল বিকেল বাংলা দোকানে হানা দেই। যে দোকানে ঢুকলে বমি আসে, মেয়াদ উর্তিন্ন জিনিস বিক্রি হয়। তারপরও কেউই কখনই কম্লেইন করে না। কারন যাইহোক দেশের ছোঁয়াতো পাওয়া যায় এখানে। কম্লেইন করলেতো দোকানই বন্ধ হয়ে যাবে।
অনেক কিছুই বলতে ইচ্ছে করে কিন্তু এতোটা সময় দিতেই পারি না। আবার হয়তো আসবো এ বিষয় নিয়ে।
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১
করুণাধারা বলেছেন: আমাদের হেলথ কার্ড প্রয়োজন নেই। কারন মা বাবার ভালোবাসা আমাদেরকে জমের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে, আমাদের বেকার ভাতা নেই দরকার নেই কারন বরই লিচু আম মাছ সবকিছুর সাথে বাবা মায়ের হোটেল ফ্রি, এমনিতেই চলতে পারি।
ভদ্রলোকের দেশের প্রতি টান দেখে মুগ্ধ হলাম। কিন্তু এটাও সত্যি সোহানী, দূর থেকে দেখছেন বলেই অনেক মলিনতা চোখে পড়ছে না, কিন্তু স্বপ্নের সাথে বাস্তবতার অনেক ফারাক। মা- বাবা, ভাই- বোন, বন্ধু- বান্ধবের ভালোবাসা ছাড়া দেশে আর কিছুই এখন বিনে পয়সায় মেলে না। এ নিয়ে অনেক কথা বলতে পারি পরে কখনো হয়তো সুযোগ পেলে বলবো.......
অনেকেই তো দেশে ফিরে আসেন, স্বপ্ন দেখেন দেশের জন্য কিছু করার; অনেক পরিশ্রম আর আত্ম ত্যাগ করেন তারা স্বপ্ন বাস্তবায়নে। অথচ বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকেই ফল- চোর, মাছ- চোর বলে অপমানিত হতে হয়, যেমন এখন হচ্ছে! এসব দেখার পর কি কারো দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকতে পারে?
মাইগ্রেশন একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, মানুষ যদি একই জায়গায় বসে থাকতো তাহলে পৃথিবীটা আর কিছুই বদলাতে না। তাই মাইগ্রেশনের ভালো দিকটাই দেখা উচিত। গ্রামের ছেলে যখন অনেক লেখাপড়া শেষ করে, তখন গ্রামে ফিরে গেলে তার জ্ঞান প্রয়োগের এমন সুযোগ থাকে না বলে সে শহরবাসী হয় এবং জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগ করতে পারে। যার সুফল কেবল তার পরিবার ভোগ করে না, বরং পুরো একটা জনগোষ্ঠীই ভোগ করে। আমি শহরবাসী অনেক প্রবীনদের দুঃখ করতে দেখেছি ফেলে আসা গ্রামের জন্য, কিন্তু নানা কারণে তারা আর গ্রামে ফিরে যেতে পারেননি। তাই বিশ্বায়নের এই সময়ে, যারা দেশান্তরী হয়েছেন, তারা একেবারে সঠিক কাজ করেছেন। ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকলে কোন কিছুই কি আগায়!! আবেগকে চাপা দিয়ে বাস্তবতা বিচার করতে হবে। তিনটি কারণে আমার মনে হয় এখন দেশে থাকার চাইতে বাইরে যাওয়া ভালো- উন্নত শিক্ষার জন্য, ভালো চিকিৎসা পাবার জন্য এবং নিরাপত্তার জন্য, শেষটির ব্যাখ্যা আশা করি করতে হবে না।
অবশ্য আমার মন খারাপ হয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, তারা যে এক প্রজন্ম পরেই শেকড় ছাড়া হয়ে যাচ্ছে!100 বছর পর তাদের কেউ হয়তো পূর্বপুরুষের দেশে ফিরে আসবে শেকড় খুঁজতে! অ্যালেক্স হ্যালির রুটস খুঁজে বের করার গল্পের কথা খুব মনে হয়।
চাইনিজদের প্রসঙ্গ এই কারণে এনেছিলাম, আমাদেরও মেধা আছে উন্নত দেশ হবার মত। যদি কখনো আমরাও চাইনিজ এর মত হতে পারি! আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তখন হয়তো শেকড় খুঁজতে দেশে এসে দেশকে ভালোবেসে থেকেও যাবে। এই হানাহানি ময় দেশে বসে এই স্বপ্ন দেখে কেবলই দীর্ঘশ্বাস ফেলি।
এত ব্যস্ততার মাঝেও আপনি মন্তব্য করতে দুবার এসেছেন, অশেষ কৃতজ্ঞতা আমার। ভালো থাকুন সব সময়।
২৮| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
ওমেরা বলেছেন: হৃদয়ের গভীর আবেগ দিয়ে লিখায় সবাই যার যার অবস্থান থেকে যার যার আবেগ প্রকাশ করেছেন আমি আর কি বলব ! আমার তো কোন দেশ ই নেই। ছোট বেলায় এদেশে আসলেও এদেশে যেমন আপন মনে হয় না আবার আমার শিকর বাংলাদেশে থাকলেও তাকেও আমার দেশ বলতে পারি না। তবু হৃদয়ের গহীনে বাংলাদেশের জন্য ভালবাসা থেকেই যায়। কিন্ত দেশের যা অবস্থা হতাশা ছারা আর কিছুই পাই না।
অনেক ধন্যবাদ আপু।
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২
করুণাধারা বলেছেন: আমি আগেই বলেছি ওমেরা, আসলে আমি মনের যে অবস্থাটা প্রকাশ করতে চেয়েছি তা প্রকাশ করতে পারিনি। এই লেখাটা আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে লেখা, যারা দেশকে সেভাবে অনুভব করে না। যারা দেশ থেকে গেছে, যাদের মনে দেশের স্মৃতি সজীব আর দেশ- ভাষা সবকিছুর জন্য ভালোবাসা আছে, (যেমন তুমি) তাদের মনের মাঝে নিজের দেশ অনেকখানি জুড়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ যাদের কাছে শুধুই পূর্বপুরুষের দেশ, কয়েক প্রজন্ম পরে তাদের হঠাৎ শেকড়ের কাছে যেতে ইচ্ছে করবে। এ্যালেক্স আলীর রুটস উপন্যাসে আছে কিভাবে কত কষ্টে তিনি শেকড়ের কাছে পৌঁছে ছিলেন।
তাই মনে হয় যদি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পুরোপুরি শেকড় ছাড়া না হয়ে যেত......
চমৎকার মন্তব্য আর প্লাস এর জন্য ধন্যবাদ ওমেরা। শুভ কামনায়...
২৯| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৩১
নজসু বলেছেন: অনেক বিদেশীদের মুখে শোনা যায় বাংলাদেশের মতো অতিথি পরায়ন দেশ তারা আগে দেখেননি ।
তাই হয়তো বিদেশীরাও এদেশটাকে ভালোবেসে ফেলেন।
আমাদের দেশের যারা প্রবাসে থাকেন তাদের প্রত্যেকের কিছু না কিছু স্বপ্ন আছে।
আর সেই স্বপ্নের ওপর ভর করে পাড়ি জমান কষ্টের প্রবাসে শ্রমের দামে সুখ কিনতে।
প্রবাসীরা কতটুকু সুখে আছেন?
মা-বাবা, ভাইবোন, স্ত্রী-সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, তাদের সুখ দেখার জন্য
তারা কি বাংলাদেশের মতো অতিথিপরায়ন দেশ পায়?
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
করুণাধারা বলেছেন: আমার দুঃখ এটাই, যারা মা-বাবা, ভাই- বোন, স্ত্রী- সন্তানের সুখের জন্য নিজের জীবনের সুখ বিসর্জন দেন, পরবাসে পড়ে থাকেন তারা সেই পরবাসে কোন রকম অতিথিপরায়ণতা পান না। এক সময় তারা নিজ দেশে ফেরত আসেন, তখনও কি দেশ তাদের অবদান স্বীকার করে তাদের কোনরকম স্বীকৃতি বা প্রতিদান দেয়? দেয় না, বরং দেশে প্রতি পদে পদে তারা হেনস্তার শিকার হতে থাকেন। একেই আমি বলেছি নিজ দেশে পরবাসী হয়ে থাকা।
এদের তুলনায় অভিবাসীরা ভালো থাকেন, সমস্যা হচ্ছে তাদের সন্তানেরা দেশের প্রতি তেমন টান অনুভব করে না....
আমার ব্লগে আগমন এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ নজসু।
ভালো থাকুন, সবসময়।
৩০| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২০
রাকু হাসান বলেছেন:
প্রথম অন্তর থেকে একটি অভিনন্দন করুণাধারা আপু । আমি লেখাটি যখন প্রথম দেখলাম ,অনুমান করতে পারছিলাম অতি মূল্যবান লেখা হবে ;তাই লাইক দিয়ে সময় খুঁজছিলাম কখন পড়বো । ধীরে ধীরে মনোযোগের সাথে পুরো লেখা ও মন্তব্যগুলো পড়লাম । পদ্ম পুকুর,খায়রুল আহসান ,সোহানী,পদাতিক,কাওসার,মলাসইলমুইনা প্রমুখ গুণী ব্লগারদের মন্তব্য ভীষণ ভালোলাাগ দিলো ।
আপনার পর্যবেক্ষণ ,বিশ্লেষণে মুগ্ধ না হয়ে কোনো উপায় আমার নেই । পোস্টের বিষয়বস্তুর আলোকে তেমন কিছু বলার নেই আমার । কেননা জানি এসব বিষয়ে । সুযোগ,সময় হয়নি । আশির দশকের বাংলাদেশ কে খুব জানি আমি । তবে আপনার মহামূল্যবান পোস্ট ও মন্ত্যে পড়ে বেশ কিছু জানলাম । ভালো লাগছে । খুব অবাক হলাম চীনরা যে মুচির কাজ করতেও ঢাকায় আসতো জেনে । আপনার উল্লিখিত বিষয়গুলো জেনে শুধু অবাক হলাম । না জানলে যা হয় আর কি ।
চাঁদগাজী স্যারের মন্তব্যটা ভুলক্রমে চলে আসছে । আপনি বলেছেন কে মন্তব্য মুছে দিয়েছে ,তা দেখেছেন । আমি দেখেছিলাম কে মুছে দিয়েছে । সেই ব্লগারদের ব্যবহার আমাকে মর্মাহত করেছে খুব । একজন গুণী,সবার শ্রদ্ধার পাত্র ব্লগারের সাথে এমন ব্যহার করে কিভাবে ! তার উপর , উনার অর্জন বা সময়ের খাতাটা খুব ছোট ।কিছু বলতে চাচ্ছিলাম এ নিয়ে ,কেন জানি চুপ থেকে ছিলাম । আপনার কি মনে হয় ,এমন কিছু বিষয়ে আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত না ? কথাগুলো মনে ঘরপাক খাচ্ছিলো । সুযোগ আপনার পোস্টে বললাম । কিছু মনে করবেন না যদি পোস্ট বর্হিভূত ।
একটা জিনিস খুব লক্ষ্য করলাম ।সেটা আপনার উপস্থাপন । আরও লক্ষ্য করলাম আপনি একটি বানান ভুল করেননি পুরো লেখায় । আমার জানা-শোনার মাঝে । আমার জানার পরিধি কম । জানেন এ নিয়ে বিরাট সমস্যায় আমি আছি ,তাই মাঝে মাঝে চেষ্টা করি সহব্লগারদের কাছ থেকে জানার । কিছু কমন বানান খুব গুণী ,প্রতিষ্ঠিত ব্লগারও গুলিয়ে ফেলে অথচ আপনি সেখানে খুব দক্ষ । বিষয়টা যথেষ্ট ভালো লাগলো । বানান সমস্যাটা গুছে গেলে কিছুটা হলেও শান্তি পেতাম । দোয়া রাখবেন ।
শেষ অংশে বলবো পোস্টটি ছিলো আমার জন্য জানার ,জ্ঞান লাভের । এ বিষয়ে আমার আরও জানতে আগ্রহী তৈরী হলো । পোস্ট কম দেন কিন্তু যা দেন তা যেন মণি-মুক্তা । অনেক ধন্যবাদ এমন পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য । খুব বেশি ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন । থাক প্রিয়তে পোস্টটি ।
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০১
করুণাধারা বলেছেন: রাকু হাসান, এই লেখা নিয়ে যতটা প্রশংসা করেছেন তা তটতা প্রশংসার যোগ্য কিনা সন্দেহ আছে, কিন্তু অবশ্যই প্রশংসা পেয়ে আনন্দিত হলাম। আমার বানানের প্রশংসা করছেন! তার কৃতিত্ব পুরোটা এই পোষ্টের! এটা বুকমার্ক করা আছে, যখনই দরকার হয় আমি দেখে নিচ্ছি আর সঠিক বানান লিখছি। লিংকটা আপনার জন্য দিয়ে দিলাম। শুদ্ধ বাংলা বানান শিখুন পোস্টটা প্রিয়তে নেয়ায় আরেকবার ধন্যবাদ।
উন্নত দেশে অভিবাসনে স্বস্তির সাথে অনেক যন্ত্রণাও মিশে থাকে, থাকে পরবর্তী প্রজন্মের শেকড় ছাড়া হয়ে যাওয়ার কষ্ট! আমি এই জিনিসটা বুঝতে চাচ্ছিলাম, আর আমাদের মত মা-বাবাদের, যাদের সন্তানেরা বিদেশে অভিবাসী হয়ে যাচ্ছে, কিংবা যারা অভিবাসী হয়ে আছেন, তাদের দোলাচল বোঝাতে চাচ্ছিলাম। নিজ দেশে পরবাসীর মত অধিকারহীন হয়ে বাঁচায় স্বস্তি, নাকি পরদেশে নিরাপত্তার মধ্যে বাঁচায় স্বস্তি!!!!
এবার আসি চাঁদগাজী মন্তব্য মোছা প্রসঙ্গে। এটা একটা ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন সেই ব্লগার। চাঁদগাজী এর মন্তব্য ছিল, সেই ব্লগার এমন পোস্ট দিয়েছেন, যার ছবি গুলো একটানা প্রথম পাতার অর্ধেকটা জুড়ে রেখেছে, যাতে অন্যরা প্রথম পাতা থেকে খুব তাড়াতাড়ি সরে গিয়েছেন। চাঁদগাজী শুধু এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। সেই ব্লগার মন্তব্য মুছে দিলে চাঁদগাজী ভুল করে আমার ব্লগে মন্তব্য করে আবার সেই ব্লগারের ব্লগে মন্তব্য করেছেন জানতে চেয়েছেন তার মন্তব্য মোছার কারন। চাঁদগাজী আবারো মুছে দেওয়া মন্তব্যটি পোস্ট করেছেন। সেই ব্লগার এখন চাঁদগাজীর সবগুলো মন্তব্য মুছে দিয়েছেন!!!
একজন ব্লগার কোন পোস্ট দিলে তাতে সকলেরই মন্তব্য করার অধিকার থাকে, যদি না তা ব্লগের নিয়মবহির্ভূত হয়। চাঁদগাজীর মন্তব্য খুবই নিরীহ ছিল, এটা মোছার মতো কিছু ছিল না। এই মন্তব্য মোছা নিয়ে প্রতিবাদ করা যায়, কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না। আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি দেখে যে, এভাবে মন্তব্য মোছার পরও, এভাবে প্রথম পাতা জুড়ে থাকার পরও এই পোস্টটা নির্বাচিত পোস্ট হয়েছে!!!! সাধারণত ছবিব্লগ যেগুলো নির্বাচিত পোস্ট হয়, সেগুলো ব্লগারদের নিজস্ব তোলা ছবি। এভাবে ইন্টারনেট থেকে কাটপেস্ট করা ছবি দিয়ে করা পোস্ট, ছবিদাতার দুর্বিনীত মন্তব্য করা সত্ত্বেও এটা নির্বাচিত পাতায় যাওয়ায় আমার মনে হয়েছে, তিনি একজন বিশেষ ব্লগার। অতএব প্রতিবাদ না করাই শ্রেয়!!!!
ভালো থাকুন রাকু হাসান, শুভকামনা রইল।
৩১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭
রাকু হাসান বলেছেন:
করুণাধারা আপু ।
মন্তব্যে আবার আসলাম । মন্তব্যে আপনি বলেছেন আমাকে একটি লিংক দিয়েছেন কিন্তু কোথায় !কোনো লিংক তো পেলাম না ।
লিংকটা আমাকে দিন তাত্তারি
চাঁদগাজী স্যারের মন্তব্যের ব্যাপারটা।তাহলে আপনি যে মন্তব্য মোছার কথা বলেছেন সেটা না । আমি যেটা দেখেছিলাম এবং যে মুছে দিলো সে নতুন ব্লগার । খুব কড়া ভাষায় কিছু কথা বলেছিলো যা আমাকে খারাপ লাগা দিয়েছিল । অথচ সেখানে চাঁদগাজী স্যারের নিরীহ দেখলাম খুব । তিনি আবার মন্তব্য করেছেন স্বাভাবিকভাবে । এখানে যে কথাটা ভুলক্রমে বলেছিল সেখানেও এই মন্তব্যটা বলেছিলো । আবার দেখলাম তিনি মন্তব্য মুছে দিয়েছে । যাক এইসব যেন না হয় ,সবাই মিলে এক সাথে শান্তিতে থাকি সেই কামনা করি সব সময় ।
বুঝা যাচ্ছে আপনি আদিম যুগের মানুষ
০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৬
করুণাধারা বলেছেন: প্রতিমন্তব্য করার পর কিছু ভুল ছিল, সেটা সংশোধন করার জন্য পুরোটা কপি করেছিলাম। আর তখনই লিংকটা চলে গেল! যাই হোক, এবার দিচ্ছি ঠিক করে।বানান শেখার দারুণ উপকারী পোস্ট!
আমার মনে হয় আমরা একই ব্লগারের কথা বলছি। ইনি নতুনই, মাত্র ৮ মাস ৩ দিন। আমার পোস্টের ঠিক আগের পোস্ট ছিল তার। তাই আমি সব কমেন্টগুলোই পড়ছিলাম...........এঁকে ইগনোর করাই ভালো।
আরেকবার ফিরে আসায় আনন্দিত হলাম রাকু হাসান। শুভেচ্ছা রইল- বরাবরের মত।
৩২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৮
রাকু হাসান বলেছেন:
হাহহাহাহা । আমি বুঝতেই পারে নি । ভেবেছিলাম বিশেষ কোন পোস্ট বা লিংক পেয়েছেন । বললে আমার এই পোস্টে আমি এড করে দিব । ক্লিক করার বাকীটা ইতিহাস । আবার চলে আসলাম মূলত ফানি বিষয়টা শেয়ার করার জন্যই ।
অবশ্যই সেটাই করা বেটার । না আপু একই হবে না । ওঁর বয়স ৮ মাস দূরের কথা ১ মাস ও হয় নি ।
অনেক শুভকামনা শুভরাত্রি ।
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২১
করুণাধারা বলেছেন: আচ্ছা, ধন্যবাদ আবার আসায়।
বানানের পোস্টটা আমার সত্যিই খুব কাজে আসে। এই বেলায় আরেকবার ধন্যবাদ দিলাম পোষ্টটার জন্য।
শুভকামনা আপনার জন্যও।
৩৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩০
জুন বলেছেন: করুনাধারা চৈনিক জাতিকে নিয়ে ইতিহাস নির্ভর লেখাটি আমি বেশ কদিন হলো পড়েছি । কিন্ত নানা ঝঞ্ঝাটে মন্তব্য করা হয়নি ।
চীনারা ধর্মপ্রচার ও পর্যটক হিসেবে সেই ফাহিয়েনের আমল থেকে আসা শুরু হলেও উল্লেখযোগ্য হারে পাক ভারত উপমহাদেশে বসতি স্থাপন করে মুলত ১৮০০ শতকে । বিশেষ করে কলকাতা ও মাদ্রাজের বন্দরের শ্রমিক হিসেবে। আমার মনে হয় সেখান থেকেই তারা আমাদের দেশে এসেছিল যখন অভিভক্ত ছিল গোটা উপমহাদেশ।
আমিও নিজ চোখে চাইনীজ রেস্তোরা, বিউটি পার্লারে চীনাদের সর্বশেষ অস্তিত্বটুকু দেখেছি । তবে বড় হয়ে কাজিনদের মুখে গল্প শুনতাম তারা বাংলাদেশের প্রথম চীনা পার্লার ধানমন্ডির মে ফেয়ারে চাইনীজ মেয়েদের হাতে চাইনিজ স্টাইলে (সামনে কপালের উপর তিন আঙ্গুল ঝুল ) চুল কাটতো । আর লিফাতে তো সেদিনও ছিল চাইনীজ মালিক। অনেক দিন যাই না, এখন দক্ষ হাতে রিফু করে যে যুবক সে আছে কি না জানি না । কলকাতায় দেখেছিলাম জুতো বানাচ্ছে চীনারা তাদের চাইনীজ পট্টিতে । তারা পৃথিবীর অনেক দেশেই ছড়িয়ে আছে আর সব দেশেই একটা চায়না টাউন আছে। সে সব যায়গায় ঘুরতে মজাই লাগে ।
মালয়েশিয়াতে ৩৩৩ একর জায়গা নিয়ে বিশাল এক চীনা কবরস্থান আছে যাতে বহু নামকরা চৈনিকদের কবর রয়েছে ।
থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া সহ আরো অনেক দেশের উন্নয়নে চীনাদের ব্যপক অবদান রয়েছে ।
আমেরিকার পুর্ব থেকে পশ্চিমে বিস্তৃত রেলপথ তৈরীর জন্য প্রচুর চীনা শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছিল যারা পরবর্তীতে সে দেশের নাগরিকত্ব লাভ করে ।
মোদ্দা কথা আপনি যেমন বলেছেন তারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধরে আছে বলেই আজও টিকে আছে । আর বড় কথা হলো তারা আমাদের মত আজাইরা ফালতু কথা বলে না যা আমি চীন ভ্রমনে গিয়ে দেখেছি।
অনেক ভালোলাগা রইলো লেখায় সাথে আমিও আমার জাতিয় ঐতিহ্য অনুযায়ী অনেক আজাইরা কথা বললাম করুনাধারা
শুভেচ্ছা রাত্রির
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৪
করুণাধারা বলেছেন: আমার লেখাটা শুরু করেছিলাম অভিবাসী আত্মীয়-বন্ধুদের ভাবনা মনে নিয়ে। ইদানিং দেখছি, অভিবাসী দ্বিতীয় প্রজন্মের সাথে ভাব বিনিময়ে অসুবিধা হচ্ছে। তাদের অধিকাংশই বাংলায় কথা বলতে পারে না, আমি পারিনা তাদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে; সব সময় ভয় হয়, বাক্য বা উচ্চারণ কিছু ভুল করছি কিনা! এইসব ভাবতে ভাবতেই চীনাদের কথা মনে হল; দুই তিন প্রজন্ম ধরে প্রবাসী হলেও তারা মাতৃভাষা ভুলে যায় না! ঢাকায় বসবাসকারী চীনাদের কথা ভেবে লিখেছিলাম; তারা কিভাবে, কেন, কবে এসেছিল এদেশে; আমার জিজ্ঞাসার উত্তর পাবো বলে আশা করিনি। তাই আপনি যখন আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিলেন, এই প্রাপ্তি ছিল একেবারেই আশাতীত! খুবই ভালো লাগলো জুন, এত সব জানতে পেরে।
আপনার জ্ঞানের ব্যাপ্তি অবাক করে দিল আমাকে! চীনারা আমেরিকায় রেলপথ গড়েছে- এটা জানা ছিল না! এরা তাহলে কেবল এশিয়ায় নয়, অনেকদিন আগে থেকেই সুদূর আমেরিকা পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে!
এত অজানা অনেক তথ্য দিয়ে আমার জানার পরিধি অনেক বাড়িয়ে দিলেন। অসংখ্য ধন্যবাদ, জুন। ভালো থাকুন সব সময়, শুভেচ্ছা রইল।
৩৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: @রূপক বিধৌত সাধু,
ইউ টিউব থেকে এখন আমি আপনার উল্লেখিত গানটি শুনছি। এ গানের ভাবসাগরে ডুবে এর অতল তল থেকে অনেক মনি মানিক্য কুড়োচ্ছি!
চমৎকার এ গানটির উল্লেখ করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৭
করুণাধারা বলেছেন: আপনার সাথে আমিও রূপক বিধৌত সাধুকে ধন্যবাদ জানাই, এই চমৎকার গানটির জন্য।
৩৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: @জাহিদ অনিক, নিজদেশে পরবাসী হয়ে কেমন আছি সেটা নিশ্চয়ই জানি - খুবই কষ্টের কথা, ব্যথার কথা।
পূর্বসূরী হিসেবে অনেক সময় ব্যথিত বোধ করি, আমরা আপনাদের জন্য ভাল একটা সিস্টেম গড়ে দিয়ে যেতে পারিনি।
@মলাসইলমুইনা, মলার জীবনী যতটুকুই এখানে শেয়ার করেছেন, ততটুকুই মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে গেলাম। ধন্যবাদ এ চমৎকার জীবনের জীবনী কিছুটা শেয়ার করার জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত আপনি যেটা করেছেন, সেটাই ভাল করেছেন বা ভাল হয়েছে বলে আমার মনে হয়। নিজেকে আগে সমৃদ্ধ করুন, পরেও দেশ সেবার সুযোগ পাবেন।
@কাওসার চৌধুরী, চীনা পর্যটক ফা-হিয়েন এর নামটাও আপনার তালিকায় যোগ করতে পারেন।
@সোহানী, "মা বাবার ভালোবাসা আমাদেরকে জমের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে" - কথাটা অবৈজ্ঞানিক হলেও, আমি কিন্তু এতে বিশ্বাস করি!
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২০
করুণাধারা বলেছেন: আপনি আবারো এসে, মন্তব্য পড়ে মন্তব্যকারীদের সাথে আপনার ভাবনা শেয়ার করেছেন- খুব ভালো লাগলো। জাহিদ হাসান, মলাসইলমুইনা, কাওসার চৌধুরী ও সোহানী- নিশ্চিত জানি এই চারজনই আপনার ভাবনা জানতে পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ ফের ফিরে আসায়। শুভকামনা রইল।
৩৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: @ওমেরা, আমার তো কোন দেশ ই নেই। ছোট বেলায় এদেশে আসলেও এদেশে যেমন আপন মনে হয় না আবার আমার শিকর বাংলাদেশে থাকলেও তাকেও আমার দেশ বলতে পারি না। তবু হৃদয়ের গহীনে বাংলাদেশের জন্য ভালবাসা থেকেই যায়। কিন্ত দেশের যা অবস্থা হতাশা ছারা আর কিছুই পাই না - হতাশ হবার মত যেমন অনেক কিছুই আছে, তেমন আশায় বুক বাঁধার মতও অনেক কিছু মাঝে মাঝে দেখতে পাই। দেশকে উন্নত করতে হলে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আর প্রাজ্ঞ রাজনৈ্তিক নেতৃত্ব। আর জনগণকে কিছুটা শান্তিতে রাখতে হলে প্রয়োজন আইনের শাসন এবং সুবিচার, সুশাসন। এগুলো হলেই চলবে। সুশিক্ষা আর অন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু এর পিছু পিছু চলে আসবে।
@জুন, ফাহিয়েন এর কথাটা উল্লেখ করায় প্রীত হ'লাম, কারণ আমার এক ঘনিষ্ঠ স্কুলফ্রেন্ড এর বাবা ওর নামটি রেখেছিলেন আবুল হাসনাত ফাহিয়েন, সেই চীনা পর্যটক এর নামানুসারে। আমার "আমার কথা" স্মৃতিকথা সিরিজের একটা পর্বে হয়তো আপনি সেটা পড়েছেনও।
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৬
করুণাধারা বলেছেন: আপনার এই মন্তব্য থেকে নতুন ভাবনা মনে এল, এতোকাল আগে আপনার বন্ধুর বাবা ছেলের নাম ফা-হিয়েন রেখেছিলেন! সেই সময় এই চৈনিক নাম নিশ্চয়ই একেবারেই অপরিচিত ছিল; বাবা-ছেলেকে নিশ্চয়ই অনেককেই বোঝাতে হত ফা-হিয়েন অর্থ কি! সম্ভবত ভদ্রলোক জুনের মত খুব ইতিহাস প্রিয় ছিলেন, তাই ছেলের নামকরণ একেবারে ইতিহাস থেকে প্রিয় পর্যটক এর নাম নিয়ে করলেন!
চমৎকার একটা জিনিস জানানোয় অনেক ধন্যবাদ।
৩৭| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২০
জুন বলেছেন: অত্যন্ত আন্তরিক একটি প্রতি মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ করুনাধারা । আসলে আপনার লেখার মূল সুর আমি ঠিকই ধরতে পেরেছিলাম কিন্ত লেখায় উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম । নিজেদের স্বাতন্ত্র্য ধরে রাখার জন্য আপনি আমাদের দেশের ৭০/৮০ দশক এর চাইনীজদের উদাহরন দিয়েছেন। আমার মনে হয় চাইনীজরা আজো তেমনি আছে, নিজেদের ভাষা আর সংস্কৃতি নিয়ে।
আর ট্রান্সকন্টিনেন্টাল রেলপথ নির্মানে সাদা শ্রমিকরা যখন ক্লান্ত হয়ে এই কাজ ছেড়ে দিচ্ছিল তখন রেল কোম্পানী প্রথম ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ৫০ পরে আরো ৫০ চীনা নাগরিককে নিয়োগ দেয় । তাদের অবস্থা একই রকম হলে কোম্পানী চীন থেকে সরাসরি শ্রমিক নিয়ে আসতে থাকে। তবে চীনারা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও ন্যায্য মজুরী পায়নি । দেড়শ বছর আগে সেই চীনা রেল শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরীর দাবীতে তাদের শাবল কোদাল নামিয়ে রেখেছিল। আটদিনের সেই ধর্মঘট শেষ হয়েছিল পাহাড়ের উপরে বরফের মাঝে রেল রোড ক্যাম্পে থাকা শত শত শ্রমিকের খাবার- দাবার, যাতায়ত সব কিছুর দুয়ার বন্ধ করে দিয়ে। তাদের নাগরিকত্ব ও দেয়নি, যারা স্ত্রী পুত্র পরিজন রেখে আমেরিকা এসেছিল তাদের অনেকেই আর তাদের পরিবারের মুখ দেখেনি। যতদুর মনে পরে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় আমেরিকা সেখানে বসবাস করা চীনাদের প্রতি কিছুটা সদয় হয়। সে এক বিশাল ইতিহাস পড়ে দেখতে পারেন । আমি প্রথম এ বিষয়টি দেখেছিলাম একটি ম্যুভিতে ।
প্রিয় বিষয়তো তাই সুযোগ পেয়ে অনেক কিছু বলে ফেললাম । আশাকরি কিছু মনে করবেন না
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০
করুণাধারা বলেছেন: জুন, আপনার মন্তব্য পড়ে এ বিষয়ে জানার আগ্রহ বেড়েই যাচ্ছে......... আপনি চীনাদের সম্পর্কে এত কিছু জানেন! আমেরিকার সেই চীনারা নিশ্চয়ই পরবর্তীতে আর দেশে ফিরে আসেনি। আজ আমেরিকায় যে এত শিক্ষিত চীনারা, এরা কোত্থেকে এলো, সেই চীনাদেরই কি বংশধর এরা! এই যে চীনাদের সম্পর্কে এত অজানা তথ্য, আমার পোস্টে আপনার মন্তব্য থেকে আমি জানতে পারছি, কিন্তু অন্যেরা তো এখন আমার পোস্টে আর আসছেন না, তারা এই জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন!
আপনার ভ্রমণ কাহিনী গুলো স্বকীয়তায় অনন্য- একেবারে আপনার নিজস্ব ব্র্যান্ড। তাই আপনার ভ্রমণ কাহিনী গুলো পড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, শুধু চীনাদের সম্পর্কেই আপনি এত জানেন যে, আমার মন্তব্য গুলোর সাথে আরো কিছু তথ্য যোগ করেই একটা চমৎকার পোস্ট দিতে পারেন। তাতে আমার পোস্টে করা মন্তব্য গুলো যারা পড়তে পারেন নি, তারাও এই তথ্য গুলো জানতে পারবেন।
সেই পোষ্টের অপেক্ষায় থাকলাম, জুন।
শুভেচ্ছান্তে-
৩৮| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা ,
আপনার ভাবনার মূল সুর একটাই ---- ইনহাস্ত ওয়াতানাম ! যে অনুভূতিটা আমাদের মাঝে নেই । অনুভূতির সে শেকড় আমাদের মাঝে গেড়ে বসেনি তেমন করে । হয়তো শত শত বছর পরের গোলামী করতে করতে শেকড়টাই মরে গেছে ! কিন্তু তাও বা কেন হবে ? আপনার চীনারাতো ( যারা একসময় আফিমে বুঁদ হয়ে থাকতো আর গোলামী তারাও করেছে ) দেখিয়ে দিয়েছে প্রতিকূল মাটিতেও কি করে ছড়াতে হয় শেকড় ।
জীবনানন্দের মতো আপনার ভাবনাও অমূলক নয় , নয় এলোমেলো । দেশের জন্যে গভীর মমতাবোধ থেকেই এমন লেখার জন্ম হয় ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩০
করুণাধারা বলেছেন: আপনার থেকে এমন মন্তব্য পেয়ে আপ্লুত হলাম, আহমেদ জী এস!
পোস্টটা মনে কষ্ট নিয়েই লিখেছিলাম; একে একে সকলেই চলে যাচ্ছে, ফেরার ইচ্ছা থাকলেও কেউ ফিরতে পারছে না নানা কারণে। আমার প্রার্থনা, যারা যাচ্ছেন তারা যেন শিকড় ভুলে না যান এবং আমাদের দেশ যেন এমন দেশ হয়ে ওঠে, যেন যারা যাচ্ছেন তারা মাথা উঁচু করে আবার ফিরে আসতে পারেন। চীন যদি পারে, আমরা কেন পারব না!!!!
ভালো থাকুন, শুভকামনা রইল।
৩৯| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: সম্ভবত ভদ্রলোক জুনের মত খুব ইতিহাস প্রিয় ছিলেন, তাই ছেলের নামকরণ একেবারে ইতিহাস থেকে প্রিয় পর্যটক এর নাম নিয়ে করলেন - তিনি তিনি PTI এর সুপারিন্টেন্ডেন্ট ছিলেন।, তাই তিনি শুধু ছাত্রদেরকেই নয়, তাদের শিক্ষকদেরকেও জ্ঞান দান করতেন। আর আমাদের (ফাহিয়ানের বন্ধু) কাউকে কাছে পেলেই পড়াতে বসাতেন, তার ছেলে বাসায় থাকুক বা না থাকুক।
ফাহিয়ানকে নিয়ে লেখা আমার এই পোস্টটা
আবার পড়ে এলাম এবং নিশ্চিত হলাম যে আপনিও সেটা আগে একবার পড়েছিলেন। তবে জুন সেটা পড়েন নি।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭
করুণাধারা বলেছেন: আরেকবার পড়লাম সেই পোস্টটা, আবারো পড়ে মুগ্ধ হলাম।
ফাহিয়ানের বাবার মত মানুষ আজকালকার যুগে আর দেখা যায় না। আমাদের সন্তানেরা হয়তো বিশ্বাসই করতে চাইবে না নিঃস্বার্থভাবে, এবং বিনা পয়সায় এভাবে কেউ মানুষকে জ্ঞান দান করতে পারেন! এমন মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতেই হয়।
আপনার এই পোস্টটা পড়েছিলাম, কিন্তু মনে ছিল না। ভালো লাগলো আরেকবার পড়ে। আমার পোস্টে আপনি আবার ফিরে এসেছেন, অসংখ্য ধন্যবাদ।
৪০| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫০
কাতিআশা বলেছেন: খুবই সুন্দর লেখা আপনার!..পড়তে পড়তে মনটা ভিজে উঠেছে..২২ বছর ধরে আমেরিকায় আছি, আর ভালো লাগেনা!..আমার মেয়েটা অবশ্য পাগলের মত দেশ ভালবাসে, ছেলেটা টিপিকাল প্রবাসীদের সন্তানদের মত!,--ও ইউনিভারসিটিতে চলে গেলেই ফিরে আসার ইচ্ছে দেশে, দেখা যাক আল্লাহতায়ালার যা ইচ্ছা!..এমন টানাপোড়েন খুব খারাপ একটা জিনিস, তবে আমিও ছলেবলে কৌশলে বোনদের ছেলেমেয়েদের এদেশে নিয়ে এসেছি, ওরা সবাই উচ্চশিক্ষা নিয়ে পরছে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ছুটিতে আমার কাছে ছুটে আসে---ঘর ভরে যায়! কি যে আনন্দ তখন, আপারাও চলে আসে বছরে দুবার! এই থ্যাংকসগিভিং এর উইককেন্ডে মেয়ে, সবগুলো ভাগনা-ভাগনি, আপা-দুলাভাই (দেশ থেকে) আসছে আমার এখানে,---সাথে বড় ভাগনির দুটো পিচ্চি!..১২/১৩ বছরের প্রতিক্ষার পর এই আনন্দ কি যে লোভনীয়, আমি ছাড়া কেউ বোঝেনা!..লেখায় অনেক ভালো লাগা!
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৪
করুণাধারা বলেছেন: প্রথমবারের মতো আপনাকে আমার ব্লগে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো কাতিআশা। আশাকরি ভবিষ্যতেও এভাবে পাব আপনাকে। আর আপনার প্রশংসা বাক্যে আমি সত্যি আপ্লুত হলাম।
লেখাটা লিখেছিলাম আমার সন্তানদের ভেবে, যারা একে একে আমেরিকায় চলে গেছে এবং যাচ্ছে। এইসব ভাবতে ভাবতেই অভিবাসীদের জীবনের নানা চাওয়া পাওয়া ভাবতে বসলাম। একমাত্র যে জিনিসটা আমার খারাপ লাগে, সেটা হচ্ছে বাচ্চারা বাংলা একেবারেই বলতে পারে না; অথচ এটাও বুঝি, করে চারপাশে সব সময় তারা একটা ভাষা শুনছে আর মাত্র দুজন মানুষের সাথে দৈনিক ২/১ ঘণ্টা কথা বলে সেই ভাষাটা শিখতে পারার কথাও না। তবে আমি যেমন ইংরেজিতে কথা বলে তাদের সাথে ভাব বিনিময় করতে পারিনা, তেমনি মনে হয় তারা বাংলা জানলে হয়তো দেশটাকে বুঝতে পারত.........
তবে আপনি যেমন বলেছেন আত্মীয় স্বজনদের বিশাল একটা গ্রুপ আছে আপনাদের, সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার সন্তানরা নিজেদের কালচার, আত্মীয়তার বন্ধন অনেকটাই জানতে পারবে। আমার নিজের, এবং আমার স্বামীর ভাই- বোন সকলেই আমেরিকায় ইমিগ্রান্ট। তাই আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব ভাবি। আমি নিজে এই বয়সে কখনোই ইমিগ্র্যান্ট হয়ে যাব না, কিন্তু আমার মনে হয় যারা এখন সে দেশে আছেন, তাদের যতই দেশের জন্য মন পুড়ুক না কেন, তাদের জন্য দেশে ফেরার অনুকূল অবস্থা এখন নেই।
ভালো থাকুন কাতিআশা। শুভ কামনা রইলো, সব সময়।
৪১| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৬
শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: গ্রাম থেকে পড়ালেখার জন্য শহরে আসি ,তখন গ্রামকে খুব মিস করি ।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯
করুণাধারা বলেছেন: গ্রামে আছে খাঁটি, আর শহরে মেকী জিনিস।
আবার শহরে:
"ইটের পরে ইট, মাঝে মানুষ কীট
নেইকো ভালোবাসা, হেথায় নেইকো কোন ছায়া
গ্রাম থেকে শহরে এসে ভালো লাগবার তো কথা নয়,শাহারিয়ার ইমন। তবু দোয়া করি, ভাল থাকুন সবসময়।
আমার ব্লগে এই প্রথম এলেন, স্বাগতম!
৪২| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ২:১৫
শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই লেখাটি খুবই ভালো লাগলো, করুণাধারা আপু।
২০০৭-০৮ সালের কোনো এক সময়ে, তখন দেশেই কিছু কাল আগে চাকরিতে ঢুকেছি। আমার বিদেশি ম্যানেজার টিম লাঞ্চের জন্য গুলশানের একটা থাই রেস্টুরেন্টে দাওয়াত দিলেন। কথায় কথায় জানালেন যে সেই রেস্টুরেন্টের কুক একজন থাই, তিনি নাকি তিরিশ বছর ধরে ঢাকাতেই আছেন। সে কথা শুনে বুকের ভেতরে কেমন টনটন করে উঠেছিল। আজ আপনার সেই আজিমপুরের চায়না বিল্ডিংয়ের কথা পড়ে, সেই দশ বছর বয়সী চীনা ছেলেটা যে বাংলাদেশকেই তার দেশ বলেছিল, তাদের কথা শুনে মনে তেমনি এক অনুভূতি হলো।
ঝুম্পা লাহিড়ির 'নেমসেক'-এ "লেবুর রস আর মিহি করে কাটা কাঁচা লঙ্কার সাথে মেশাতেই একটু সরষের তেলের জন্য তার মনটা হাহাকার করে উঠলো" এটা পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম।
তবে মনে হলো বোস্টনে তো সরষের তেল বেশ পাওয়া যাওয়ার কথা, লেখিকা কি "সরষের তেল" নাকি আস্ত "সরষে" বোঝাতে চেয়েছেন? হা হা এখন ভারতীয় স্টোরগুলোতে সরষেও পাওয়া যায়, যেটা হয়তো বিশ-ত্রিশ বছর আগে দুর্লভ ছিল। সরষের তেলও খুব সম্ভব তখন পাওয়া যেত না, কারন বিদেশিরা মনে করে সরষের তেল খাওয়ার জিনিস নয়, গায়ে মাখার জিনিস বড়জোড়।
১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২০
করুণাধারা বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রাবণধারা এমন চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
আমার মনে হয় আমাদের জিনে যাযাবর হবার মত কিছু আছে, তাই মানুষের মনে সবসময় বাজতে থাকে, "হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনো খানে"। গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে অন্য শহরে, তারপর অন্য দেশে মানুষ ছুটে যায়। নতুন পরিবেশের সাথে অভিযোজন হয়। কিন্তু মনের সুদূর কোনে কি ফেলে আসা দেশের জন্য কোনো ব্যথার সুর বেজে ওঠে...
আমি এটাই বুঝতে চেষ্টা করে যাই...
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: ৭০ বা ৮০ তে আমার জন্ম হয়নি। সেসময়ের কথা জানি না। আপনার কাছ থেকেই জানলাম সেসমত অনেক চায়নিজ ছিল।