নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক:
সন্ধ্যাবেলা মানিক স্নিগ্ধাকে অনেক লোকের সামনে গালাগালি করল, খুব তুচ্ছ কারণে।হোটেল থেকে বেরিয়ে ওরা চারজন মাত্র লাবনী বিচে এসেছে, ঝিনুকের দোকানিরা ডাকাডাকি করছে; এক দোকানি মানিককে 'স্যার, একবার আমার দোকানে আসেন, স্যার' বলতেই মানিক সেই দোকানে গেল। তারপর দোকানি যাই দেখায়- ঝিনুকের মালা-পর্দা-বাটি-পুতুল, একের পর এক সব কিনতেই থাকলো। "কি করছো? এসব কেন কিনছো? "আমার ইচ্ছে, আমি কিনছি, চুপ থাকো।" শক্ত মুখ করে উত্তর দিল মানিক। "কিন্তু এসব দিয়ে কি হবে? কে ব্যবহার করবে এগুলো?" "যাকে খুশি বিলিয়ে দিও, এখন চুপ থাকো" "এসব হাবিজাবি জিনিস আবার কাকে দেব?'" "হাবিজাবি জিনিস! নিজেকে কি মনে কর? কোন নবাবজাদী তুমি!! আমার টাকায় আমি যা খুশি তাই কিনব। একদম চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো, না হয় কোথাও চলে যাও; আমার সামনে থাকবে না।"
এমনিতেই সন্ধ্যাবেলায় সৈকতে ভিড়, তারপর মানিকের উঁচু গলা শুনে আশপাশে কিছু লোক জমে গেছে, দোকানী তো আছেই। প্রাণপণে চোখের পানি আটকাতে চাইল স্নিগ্ধা, কিন্তু টের পেল উষ্ণ ধারা গাল বেয়ে নামছে । ঘুরে হোটেলের দিকে হাঁটা দিল। পেছনে না তাকিয়েও বুঝতে পারছিল অনেকগুলো চোখ তাকে অনুসরণ করছে, বুঝতে পারছিল ৫ আর ৭ বছরের ছেলে দুটো ভয়ার্ত, কাঁদো কাঁদো, মুখে তার দিকে চেয়ে আছে কিন্তু বাবার ভয়ে ছূটে এসে হাত ধরতে পারছে না। সৈকতের একেবারে কাছেই হোটেল; তাই পৌঁছাতে বেশি সময় লাগল না। চাবি নিয়ে রুমে ঢুকে হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলো স্নিগ্ধা। আট বছরের বিবাহিত জীবনে এমন অপমানিত আগেও বহুবার হতে হয়েছে, বারবার মানিক তাকে বলেছে "চলে যাও", কিন্তু কোথায় যাবে! ছেলে দুটোকে হারিয়ে ফেলার ভয় সারাক্ষণ তাকে তাড়া করে বেড়ায়। স্নিগ্ধা শুনেছে, মা-বাবার ডিভোর্স হলে সাত বছর পর্যন্ত ছেলেরা মায়ের কাছে থাকতে পারে, তারপরই বাবা ছেলেদের নিয়ে নেয়। ও তো ভালো করেই জানে, মানিক কিছুতেই ছেলেদের ছাড়বে না! ছেলেদের না দেখে ও কি করে থাকবে...... মাঝে মাঝে মানিকের বকাবকি শুনে দম বন্ধ হয়ে আসে, ঘর থেকে বেরিয়ে কোথাও চলে যেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু জানে,রাগ করে ঘর থেকে একবার বেরিয়ে গেলেই মানিকের ঘরের দরজা তার জন্য চিরকালের মতো বন্ধ হয়ে যাবে।
কিছুক্ষণ পর দরজায় নক। চোখ মুছে দরজা খুলে দিল স্নিগ্ধা, ভয়ার্ত ছেলেদুটোকে হাসিমুখে জড়িয়ে ধরল। "নাটক, না! খালি নাটক করো! একা একা হোটেলে এসে কার জন্য বসে আছো! এসব করতে হলে অন্য জায়গায় গিয়ে কর, আমার ঘরে না।" একটানা কথা বলতে লাগলো মানিক। স্নিগ্ধা কোন কথা না বলে ছেলেদের জুতো খুলে দিল, ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে ভালো করে হাত- পা- মুখ ধুয়ে দিয়ে কাপড় বদলে দিল। "এইতো, আমার বাবুসোনারা রেডি!" হাসিমুখে দুজনের গালে চুমু খেলো স্নিগ্ধা- কান্না লুকিয়ে এভাবে হাসার অভিনয় অনেকদিন হলো রপ্ত করেছে সে; না হলে বাচ্চাগুলোর মনের ভার কাটে না..........
হান্ডি থেকে রাতের খাবার খেয়ে হেঁটে হোটেলে ফিরছিল, দুই হাতে দুই ছেলের হাত ধরা। অনবরত নানা প্রশ্ন করছিল দুজন, "আচ্ছা মা, এই সমুদ্রের পরে কি আছে" "ইন্দোনেশিয়ার আচেহ্ প্রদেশ, সমুদ্র দিয়ে সোজা গিয়ে একটুখানি বাঁয়ে গেলেই ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছে যাওয়া যায়।" সেই কোন কালে ভূগোল ক্লাসে স্যার বলেছিলেন; আজ মনে পড়ে গেল! "ইন্দোনেশিয়ায় কে থাকে মা?" "কে আবার থাকবে রে বোকারাম! ইন্দোনেশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ান থাকে", খিলখিল করে হেসে উঠলো স্নিগ্ধা। মা কে হাসতে দেখে দুই ছেলেও হাসতে লাগলো।
অনেক রাতে ঘুম ভেঙে গেল; স্নিগ্ধা দেখল দুই পাশে দুই আত্মজের মায়াময়, ঘুমন্ত মুখ। একটু দূরেই মানিক ঘুমাচ্ছে- দেখে মনেই হচ্ছে না এই মানুষ টাই সময় সময় অতটা হিংস্র হয়ে ওঠে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে বসল, সন্ধ্যা বেলার অসমাপ্ত কান্নাটা আবার কি পেয়ে বসল! কিন্তু এখন কাঁদা যাবে না, মানিকের যদি ঘুম ভেঙে যায় আর ওকে কাঁদতে দেখে তাহলে ক্ষেপে গিয়ে কি করবে কে জানে। খুব আস্তে দরজা খুলে বারান্দায় এল, দীর্ঘ সৈকত চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে। ভাটার টানে পানি অনেক নেমে গেছে, যখন ঢেউ এসে তীরে আছড়ে পড়ছে দেখে মনে হচ্ছে যেন রুপার মালা ভেঙে পড়ছে। বহুদূর থেকে কেবল ভেসে আসছে সমুদ্রের গর্জন, আর কোথাও কোন শব্দ নেই; মনে হচ্ছে কোথাও কেউ নেই, স্নিগ্ধা একাকী আদিম পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে আছে....
বারান্দা থেকে স্নিগ্ধা সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলো একতলায়, পায়ে পায়ে বেরিয়ে এল হোটেল থেকে। বিশাল আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হয়, বুকের দম ধরা ভাবটা আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে, হাঁটতে লাগলো নির্জন সৈকত ধরে। মনে পড়লো সন্ধ্যাবেলা ছেলেদের বলছিল, সমুদ্র দিয়ে গেলেই ইন্দোনেশিয়া। না জানি ইন্দোনেশিয়া দেশ টা কেমন! জীবনে কিছুই তো দেখা হলো না...... জীবন এখন শুধু ঘরের ভিতরে কেন্নোর মতো ভয়ে গুটিয়ে দিন কাটানো......
স্নিগ্ধার খুব ইচ্ছা করতে লাগলো ইন্দোনেশিয়া দেখার। সোজা দক্ষিণ দিকে গিয়ে একটু বাঁয়ে গেলেই তো ইন্দোনেশিয়া! লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার দিকে হাঁটতে শুরু করে দিল স্নিগ্ধা...........
দুই:
"এত বড় বাড়ি পরিষ্কার করতে তোমার খুব কষ্ট হয়, তাই না? একটা ছোট অ্যাপার্টমেন্টে থাকলে কষ্ট কম হইত তোমার।" ঘরগুলো ভ্যাকুয়াম করে হয়রান লাইজু একটু জিরানোর জন্য পাশে বসতেই মোশতাক বলে উঠলো, গলায় সহানুভূতি। "না, কি আর কষ্ট! এতকাল করতে করতে অভ্যাস হয়ে গেছে।" "কি কষ্ট মানে! আমি কি কিছু বুঝি না....... এজন্যই ভাবতেছি, একটা ছোট অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে উঠি, তাইলে তোমার কষ্ট একটু কমে।"
লাইজু ভেবেছিলো, এটা মোশতাকের কথার কথা। কিন্তু দেখা গেল, পরদিন থেকেই বাসায় ক্রেতার ভিড়। কেউ দেখছে ফার্নিচার, কেউ বাড়ি কেউ গাড়ি। তাজ্জব হয়ে শুধালো মোশতাককে, "কি করছ এসব! বলেছিলে তো শুধু ছোট বাড়িতে যাবে; তারজন্য সব কিছু কেনো বিক্রি করে দিচ্ছ? গাড়ি ছাড়া চলব কিভাবে?"
"আসলে কি হইছে লাইজু,আজকাল আমার গাড়ি চালাইতে খুব অসুবিধা হয়, চোখে ঠিকমতো দেখিনা, শরীরটা ঠিক নেই। তুমি আবার চিন্তায় পড়ে যাবা দেখে তোমাকে আগে বলি নাই; ভাইবা দেখলাম, সবকিছু বিক্রি করে টাকাটা ব্যাংকে রেখে দিলে, আমার কিছু হয়ে গেলেও তুমি নিশ্চিন্তে এর মুনাফা দিয়ে চলতে পারবা.........আর এত জিনিসপত্র ছোট অ্যাপার্টমেন্টে রাখবো কোথায়!"
এক সপ্তাহের মধ্যে সব বেচা শেষ। মোশতাক মহা খুশি, টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দিয়ে একদিন লাইজুকে নতুন ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্ট দেখাতে নিয়ে গেল। দেখে লাইজুর খুব মনখারাপ; এত ছোট অ্যাপার্টমেন্ট! এই অল্প কয়েকটা ফার্নিচার! আঠাশ বছর আগে বিয়ের পর প্রথম নিউ ইয়র্কেআমার এসে যে অ্যাপার্টমেন্টটি উঠেছিল, সেটা পর্যন্ত এর চেয়ে বড় ছিল। তখন মোশতাক অন্যের দোকানে চাকরি করত, আর এখন মোশতাকের নিজের দু-দুটো গ্রোসারি শপ। তাও কেন.........
নিউ ইয়র্কে আসার বছর দশেকের মধ্যেই বেশ বড় একটা বাড়ি হয়েছিল লাইজুর; আঠাশ বছরে কত জিনিস কিনে সেই বাড়ি সাজিয়ে ছিল; কত মায়া জড়িয়ে ছিল..........
সে বাড়ির সমস্ত কিছু মোশতাক বিক্রি করে দিল, এমনকি লাইজুর সাধের ঘর সাজানোর শো-পিস গুলোও। খালি বলে, "জীবনকে সহজ কর; বেশি জিনিস মানে এগুলোর যত্ন নিতে বাড়তি খাটনি! এখন আমাদের আরাম করার, জীবনকে উপভোগ করার সময়।"
নতুন অ্যাপার্টমেন্টে এসে লাইজুর সত্যি কাজ অনেক কমে গেল। কিন্তু এই অফুরন্ত সময় দিয়ে করবেটা কি! ছেলে মেয়ে দুজন চাকরি আর পড়াশোনার জন্য কতদূর চলে গেছে; একজন বস্টনে, আরেকজন মিশিগানে। মোশতাক তো চিরকালই সকালে বের হয় আর অনেক রাতে ফেরে। এখানে এসে লাইজুর মন খারাপ দেখে নানাভাবে চেষ্টা করে ওর মন ভালো করতে। একদিন একটা হীরের আংটি নিয়ে এলো। দেখে সত্যি লাইজুর মন ভাল হয়ে গেল; কতদিনের শখ ছিল একটা হীরের আংটি পরার....... মোশতাক সব সময় বলতো এটা বাজে খরচ........ "এত খরচ করে আবার হীরের আংটি কিনতে গেলে কেন?" "না তেমন খরচ হয়নি, এক দোকানে সেলে একটার দামে দুটো আংটি পাওয়া যাচ্ছিল, সস্তা দেখে কিনে ফেললাম।"
"সবকিছু গুছাতে হবে লাইজু, দেশে যে জমিজমা আছে তাও বিক্রি করে ফেলব; দেশে যাওয়া দরকার" কদিন পর এক সকালে নাস্তা খেতে খেতে মোশতাক বলল। "তোমার মাথায় বিক্রির ভূত চেপেছে! সত্যি দেশে যাবে?" "হ্যাঁ, কালকে রাতে ফ্লাইট!" "কাল!!! তুমি কালকে দেশে যাচ্ছ, কবে ঠিক করলে!!!!" বিমূঢ় লাইজুর মুখ দিয়ে আর কোন কথা বের হলো না। মোশতাকও আর কথা বলতে পারলো না, মুখ ভরা পরোটা- আলু ভাজি।
মোশতাক যাবার আগে ঘরের দরকারি সব কিছু কিনে রেখে গেছে, তাও কিছু টুকটাক জিনিস দরকার ছিল। সপ্তাহখানেক পরে এক সকালে লাইজু সেসব আনতে তাদের গ্রোসারী শপে গেল। আবারো তাজ্জব হবার পালা; গ্রোসারী শপের নাম বদলে গেছে, সেখানে অচেনা লোক জন, বাঙালি অবশ্য। দোকানের মধ্যে হতভম্ব হয়ে লাইজুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ম্যানেজার ধরনের একজন এগিয়ে এলেন, "আপনি কিছু খুঁজছেন?" "এটা মোশতাক আহমদের দোকান না?" অনেক কষ্টে লাইজু কটা শব্দ জোড়া লাগাতে পারলো। "হ্যাঁ, আগে ওনার ছিল, উনি আমার কাছে এটা বিক্রি করে দিয়েছেন। শুনেছি উনার দেশে খুব টাকার প্রয়োজন, তাই বাড়ি-গাড়ি -দোকান সব বিক্রি করে দেশে টাকা নিয়ে গিয়েছেন।"
নিউ ইয়র্কে দুপুর মানে দেশে গভীর রাত, তবু লাইজু ফোন করলো মোশতাককে, "শারমিনের আব্বু, তুমি নাকি বাড়ি- গাড়ি- দোকান সব বিক্রি করে সব টাকা নিয়ে চলে গেছো!!!!" "এই কথা জিগাতে তুমি আমার ঘুম ভাঙ্গালে!!! আরে এই টাকা কি তুমি কামাইছ!! চৌত্রিশ বছর আমেরিকায় কষ্ট করে এই টাকা আমি কামাইছি......... কত কষ্টই যে করলাম আমেরিকায়..... এখন একটু আরাম করি দেশে......... আর শুন, তুমি আর আমাকে ফোন করে বিরক্ত করবা না লাইজু। কালকে থেকে নতুন সংসার পাততেছি......... বড় ভালো একটা মেয়ে পাইছি।"
তিন:
নার্স যখন হুইল চেয়ার ঠেলে মেয়েটাকে রুমে নিয়ে এলো, তখন শায়লা দেখে ধন্ধে পড়ে গিয়েছিল; সদ্য- প্রসূতি কোন মা এমন তরতাজা থাকে কী করে! আর কী দারুন দেখতে মেয়েটা! দীর্ঘ পল্লব ঢাকা টানা টানা চোখ, গোলাপের পাপড়ির মত ঠোঁট, ঠাস বুনোনী কুচকুচে কালো দুই বেনী হাঁটু ছুঁয়েছে, হুইল চেয়ারের হাতলে রাখা হাতের আঙ্গুল যেন গোলাপি পদ্ম- কোরক । মেয়েটার বয়স ছাব্বিশ সাতাশ হবে। দামি সবুজ সিল্কের গাউন পরেছে। চকিতে শায়লা নিজের পরনের ম্যাক্সির দিকে তাকালো; হাসপাতালে পড়ার জন্য কেনা সস্তা ম্যাক্সি। মেয়েটার সাথে ৫/৬ জন মহিলা। ওরা ওদের খোপে ঢোকামাত্র নার্স পর্দা টেনে দিল।
আল আইনের জিমি হাসপাতালের এই বড় রুমটা পর্দা টেনে দিয়ে চারটা খোপে ভাগ করা যায়। গতরাতে ডেলিভারির পর শায়লাকে নার্স যখন রুমে পৌছে দিয়েছিল তখন অন্য বাসিন্দাদের পর্দা টানা থাকায় শায়লা দেখতে পায়নি । সকালে ক্লিনাররা কাজ শুরু করার সময় সবার পর্দা সরিয়ে দিয়েছিল, তখনই শায়লা দেখেছিল রুমের আর দুজনের একজন ভারতীয় একজন আরবি। ততক্ষণে ওর মেয়েকে ওর পাশের ক্রিবে দিয়ে গেছে- ঘুমন্ত মেয়েকে দেখতে দেখতে নানা অনুভূতি মনে খেলা করছিল ! এমন সময়ই এই মেয়েটাকে নিয়ে নার্সদের আগমন। কথা শুনে বোঝা যায় এরা আরবি- হয়তো স্থানীয়!
ঘণ্টাখানেক পর ঐ খোপের পর্দা সরে গেল- এবার প্রসূতি মাকে দেখে শায়লা চমৎকৃত!!! মনে হচ্ছে কোন পার্টিতে যাবে এমনভাবে সেজেছে ! গলায় দুই তিনটা নেকলেস, হাত ভরা সোনার চুড়ি, লিপ্সটিক-কাজল! একজন মহিলা মেয়েটার একঢাল চুল খুলে বিলি কেটে তেল মাখাচ্ছেন, একজন পায়ে মেন্দি পড়াচ্ছেন; আর মেয়েটা দিব্যি বসে আছে! শায়লা দেখলো ঘরের আর দুজন বাসিন্দাও তারমতই চোখ বড় করে এই দৃশ্য দেখছে!
ঘন্টা খানেক পর নার্স মেয়েটার বাচ্চা নিয়ে এলো; হাসপাতালে নার্সরা সদ্যজাত বাচ্চা কে একটা পাতলা কম্বল দিয়ে এমনভাবে মুড়ে রাখে, যেন বাচ্চা মায়ের পেটের ভিতরকার উষ্ণতা অনুভব করে, এই বাচ্চাটাও সেভাবে কম্বল মোড়া । বাচ্চা ক্রিবে শুইয়ে নার্সও একনজর মায়ের সাজসজ্জা দেখলো, তারপর হেসে কিছু একটা বলে চলে গেল। মায়ের পরিচর্যা শেষে এবার বয়স্ক মহিলা শুরু করলেন বাচ্চার পরিচর্যা। প্রথমেই ক্রিব থেকে মায়ের বিছানায় আনা হলো। হাসপাতালের কাপড় বদলে মায়ের মতই সিল্কের গাউন পড়ানো হলো, তাতে আবার জরি-সুতার নকশা করা! এরপর পরানো হল চোখে কাজল, দুই হাতে দুটো সোনার চুড়ি। এবার মায়ের কোলে মেয়েকে তুলে দেয়া হলো, মুগ্ধ চোখে মা মেয়েকে দেখতে লাগলেন; বাচ্চাটাও মায়ের মতই সুন্দর! শায়লাও মুগ্ধ চোখে দেখতে দেখতে ভাবল, "ম্যাডোনা।"
দুপুর বেলা নার্স পর্দা টেনে দিতেই টানা ঘুম; ঘুম ভাঙলো স্বামী নাসিমের ডাকে। ভিজিটিং আওয়ার শুরু হয়ে গেছে; একটু পরেই পরিচিত কয়েকজন বন্ধু বাচ্চা দেখতে এলেন; এই বিদেশে এরাই আত্মীয়। বেশ গল্পগুজবে দু'ঘণ্টা কাটলো। ভিজিটিং আওয়ার শেষ হতেই রূম খালি, কেবলমাত্র সুন্দরী রোগিনীর খোপ ভর্তি পুরুষ ও মহিলা ভিজিটর; সবাই কল কল করে কথা বলছে, বাচ্চাকে একজন থেকে আরেকজন কোলে নিচ্ছেন। সবার মাঝে রানীর মত বসে আছে বাচ্চার মা। খুব মনোযোগ দিয়ে দেখেও শায়লা বুঝতে পারল না, এই মহারানীর রাজা কোনজন!
রাত দশটার দিকে যখন সব বাতি নিভিয়ে খোপে খোপে পর্দা টেনে দেয়া হয়েছে ঘুমাবার জন্য, শায়লা ঘুমাবার চেষ্টা করছে, তখন শ্রীলঙ্কান ক্লিনার মায়া এল। ক্লিনার হলেও ইংরেজি বলে শায়লার চাইতে ভালোভাবে! মায়া তার পোশাকের পকেট থেকে কুরুশ কাঁটায় বোনা উলের পুতুল বের করে হেসে বলল, "তুমি পুতুল পছন্দ করো? মাত্র ১০ টাকা!" শায়লা ও হাসল, "খুব পছন্দ করি, কমলা পুতুলটা দাও।" পুতুল নিয়ে ফিসফিস করে বলল, "মায়া, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে, ঐ খোপে যে সুন্দর মেয়েটা সকালে আসলো, ওর আত্মীয়স্বজন সবাই খুব আনন্দ করলো, মনে হচ্ছে বাচ্চাটাকে পেয়ে সবাই খুব খুশী! কিন্তু এই খুশির দিনে বাচ্চাটার বাবা কি আসেনি? কাউকে দেখে আমার মনে হয় নি এই মেয়েটার স্বামী বলে!!!"
"ও, এই বাচ্চাটার কথা বলছ? ওর আত্মীয়-স্বজন খুব খুশি, কারন মা-বাবার বিয়ের আট বছর পর ও জন্মেছে! ওর বাবা অবশ্য আজ আসেনি, কারণ পাঁচ মাস আগে সে আরেকটি বিয়ে করেছে।"
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৭
করুণাধারা বলেছেন: আমার ব্লগে আপনাকে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো, মাহমুদুর রহমান। লেখাটা খুবই বড় হয়ে গেছে, কারন একসাথে তিনটা গল্প!! এখানে হয়তো আলাদা আলাদা করে পোস্ট করলেই ভালো হত!
মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১২
রাজীব নুর বলেছেন: একদম বাস্তব গল্প।
দশে আট দিলাম।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৮
করুণাধারা বলেছেন: দশে আট! এ প্লাস পেয়ে ধন্য হলাম।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৩
হাবিব বলেছেন: রাজীব ভাইয়া ১০ এ আট দিছে আমি ৯ দিলাম। অনেক অনেক ভালো লিখেছেন। প্রিয় পোস্টে রাখলাম।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৫
করুণাধারা বলেছেন: দশে নয় পেয়ে খুবই আনন্দিত হলাম হাবিব স্যার! অসংখ্য ধন্যবাদ। এই পোস্ট প্রিয়তে নিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।
আপনি লিখতে থাকুন। আমি আপনার কবিতার নিয়মিত পাঠক, যদিও সব সময় মন্তব্য করা হয় না।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: হুম!!!!!!!
হয়তো এগুলো সবই সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখিত। মুদ্রার ওপিঠেও হয়তো এমন কিছু ঘটনা থাকতে পারে, তবে যে পিঠেই ঘটুক, এসব ঘটনা বড়ই বেদনাদায়ক।
দাম্পত্যের স্তম্ভ বিশ্বাস আর ভালবাসা। এর ব্যত্যয় হলে দাম্পত্য সুখের হয় না- যে কোন একজনের দ্বারা হলেও; আর উভয়ের দ্বারা হলে তো কোন কথাই নেই। তবে ক্ষমা অমোঘ মহৌষধ!
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৭
করুণাধারা বলেছেন: মুদ্রার ওপিঠেও হয়তো এমন কিছু ঘটনা থাকতে পারে, তবে যে পিঠেই ঘটুক, এসব ঘটনা বড়ই বেদনাদায়ক। সহমত। মুদ্রার ওপিঠেও ঘটে যাওয়া এমন কিছু ঘটনা আমি জানি, কিন্তু সেগুলো এত বেশি বেদনাদায়ক যে লিখতে ইচ্ছা করলো না। হয়তো কখনো লিখবো।
দাম্পত্যের স্তম্ভ বিশ্বাস আর ভালবাসা। এর ব্যত্যয় হলে দাম্পত্য সুখের হয় না- যে কোন একজনের দ্বারা হলেও; আর উভয়ের দ্বারা হলে তো কোন কথাই নেই। তবে ক্ষমা অমোঘ মহৌষধ!
এই বাক্য ক'টি আমি কয়েকবার পড়লাম। খুব অল্প কথায় আপনি দাম্পত্যের মূল শক্তি বর্ণনা করেছেন। বিশ্বাস আর ভালোবাসা থাকলেই পরস্পরের সাথে মানিয়ে নেবার জন্য প্রয়োজনীয় ধৈর্য আসে। জানিনা কেন, বর্তমান যুগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস- ভালোবাসা, পরস্পরের প্রতি ক্ষমা- সহনশীলতা এভাবে কমে যাচ্ছে..........
মন্তব্য এবং প্লাস দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন, অসংখ্য ধন্যবাদ।
৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গল্পগুলো পড়ে মনটা বিষন্ন হল, মানুষের কখন যে কি ভাল লাগে সে নিজেই জানে না। সুন্দর হয়েছে গল্পগুলো। ণ
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৫
করুণাধারা বলেছেন: দাম্পত্যে একসাথে জীবনের দীর্ঘ পথ চলতে গেলে অনেক মানিয়ে গুছিয়ে চলতে হয়, স্বামী স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি থাকতে হয় বিশ্বাস- ভালোবাসা আর ক্ষমাশীলতা, যেমন ৪ নং মন্তব্যে বলা হয়েছে। দুঃখের বিষয়, এই গুণগুলো এখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কমই দেখা যায়, ফলস্বরূপ প্রতারণা, বিশ্বাসহীনতা, বিচ্ছেদ নেমে আসে। আমি তিনটি সত্যি ঘটনা গল্পাকারে বর্ণনা করেছি মাত্র, যেগুলো আমাকে দুঃখ দিয়েছে।
আপনার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।
৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বিয়ের পর স্বামীদের মেজাজ আরো নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিত। সেই সাথে স্ত্রীদেরও বুঝে শুনে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। দুই পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে...
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২২
করুণাধারা বলেছেন: সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য পারস্পরিক বোঝাপড়া খুবই প্রয়োজন। স্বামীদের মেজাজ আরো নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিত। সেই সাথে স্ত্রীদেরও বুঝে শুনে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। সহমত। মতবিরোধ হতেই পারে কিন্তু ধৈর্যের সাথে সেটা সমাধান করা প্রয়োজন।
আমি প্রথম গল্পটিতে যে স্বামীর কথা বলেছি, স্ত্রীর সাথে তিনি যে আচরণ করতেন তাকে বলে verbal abuse, এক ধরনের মানসিক বৈকল্য থেকে স্বামী এই ধরনের আচরণ করতেন। গল্পগুলো দুঃখের- তবু লিখলাম!
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, বিচার মানি তালগাছ আমার। পরিবারসহ শান্তিতে থাকুন- শুভকামনা।
৭| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বিয়ের পর স্বামীদের মেজাজ আরো নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিত। সেই সাথে স্ত্রীদেরও বুঝে শুনে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। দুই পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে...
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৩
করুণাধারা বলেছেন: ধন্যবাদ, বিচার মানি তালগাছ আমার।
৮| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: তিনটি সেপারেট গল্প। কমেন্ট 1 - প্রথমটা পড়লাম, একেবারে বিষাদে ভরে গেলাম। স্নিগ্ধার ইন্দোনেশিয়া দর্শন অন্তরটা করে হাহাকারে ভরে গেল।
শুভকামনা প্রিয় আপুকে ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৮
করুণাধারা বলেছেন: একসাথে তিনটা গল্প লিখতে গিয়ে পোস্টটা খুব বড় হয়ে গেল; কষ্ট করে পড়েছেন বলে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিটি সত্যিকারের ঘটনা, যদিও স্নিগ্ধার গল্প কিছুটা বদলেছি; স্নিগ্ধা শেষ পর্যন্ত ফিরে এসেছিল!
মন্তব্য এবং প্লাসে খুবই অনুপ্রাণিত হলাম, পদাতিক চৌধুরী। আশা করি ভবিষ্যতেও সাথে থাকবেন।
ভালো থাকুন সব সময়।
৯| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কমেন্ট 2, গল্প 2 : আহারে প্রবাসী জীবন। পৃথিবীর সবচেয়ে আপন জনটি যদি প্রতারক হয় তাহলে মানুষ আর বিশ্বাস করবে কাকে ? আপু সময় পেলে তৃতীয় গল্পটিও পড়ে কমেন্ট করব .....
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৩
করুণাধারা বলেছেন: আবারও ফিরে আসায় ধন্যবাদ, আপনি প্রতিটা গল্পের জন্য আলাদা কমেন্ট করছেন!!
হ্যাঁ, এই গল্পটা খুবই দুঃখজনক। একটা সরলমতি, মধ্যবয়সী মহিলাকে এভাবে নিরাশ্রয় করাটা চরম প্রতারণা, বিশেষ করে যে মহিলা শৈশবে তার বাবাকে হারিয়ে এতিম হয়েছিল।
শুভ রাত্রি, পদাতিক চৌধুরী।
১০| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৩০
আরোগ্য বলেছেন: নির্দিধায় তিনটি গল্পই খুব ভাল হয়েছে। একটাই আফসোস তিনটি গল্পই কষ্টের। একটি অন্তত আনন্দমুখর রাখতে পারতেন।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৯
করুণাধারা বলেছেন: আমার ব্লগে আপনার প্রথমবারের মতো আগমনে খুবই আনন্দিত হলাম, আরোগ্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনি আমি একটানা কষ্টের গল্প লিখে গিয়েছি। দাম্পত্য জীবনে অনেক আনন্দময় ঘটনাও ঘটে, সেগুলো কিছু লেখা উচিত ছিল। এরপর যখন লিখব, আশা করি এটা মনে থাকবে।
আপনার মন্তব্য এবং প্লাস আমাকে অনেকখানি অনুপ্রেরণা দিয়েছে, আশা করি ভবিষ্যতেও পাশে পাবো।
ভালো থাকুন আপনি, শুভকামনা রইল।
১১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০১
সোহানী বলেছেন: আপনাকে আগেও বলেছিলাম, আপনার ভাবনার সাথে আমার এতাে মিল যে মনে হয় আমার নিজের কোন লিখা পড়ছি......।
মেয়েদেরকে নিয়ে অনেক লিখাই আছে অঅমার, আজই ফেবুতে এটা শেয়ার করলাম। কখনো সময় হলে পড়ে দেখবেন ভাবনার মিল।
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/30010900
এর চাইতে বেশী বলতে পারলাম না কারন এ বাস্তব ঘটনাগুলোর অনুভব করার মতো অনুভূতি সবার থাকে না। তাই অনেকে মার্কিং করার চেস্টা করে। যদি তারা এ বাস্তবতাগুলো দেখতো তাহলে দশে একশো দিতো।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৮
করুণাধারা বলেছেন: সোহানী, মন্তব্য পড়ে মন ভালো হয়ে গেল।
এমন লেখা লিখতে আমারও ইচ্ছা করে না, কিন্তু মাথার মধ্যে থেকে এই মেয়েগুলোর অসহায় মুখ মুছেও তো ফেলতে পারি না! তাই আমার প্রিয় ব্লগে গল্প হিসেবে লিখলাম, জানি এই ধরনের গল্পের পাঠক খুব কম হয়.......
লিংক ধরে আপনার পোস্টটা পড়লাম আর আশ্চর্য হলাম ভাবনার মিল দেখে- আমিও যখন চাকরি করতাম, তখন আপনার মতই আমি সব সময় হাত বাড়িয়ে রাখতাম মেয়েদের জন্য, জানতাম মেয়েদের চাকরি করতে কতটা হয়রানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ধর্ষণ না করেও, চাকুরী ক্ষেত্রে মেয়েদের সূক্ষ্ম হয়রানি করা যায়, এই ব্যাপারটা অনেক পুরুষ ঠিক বোঝেন বলে মনে হয় না। অবশ্য তাই বা কি করে বলি, আপনার পোষ্টের ৩৩ এবং ৩৪ নম্বর মন্তব্যকারী বাঘ মামার দীর্ঘ মন্তব্য পড়লাম- তিনি যেভাবে মেয়েদের অসহায়ত্ব অনুভব করেছেন সবাই যদি তেমনি অনুভব করতেন, খুবই ভালো হতো। তার মত মানুষ থাকলে কর্ম ক্ষেত্রে মেয়েদের হয়রানি অনেকটাই কমে যেত........
কর্মক্ষেত্রে একটা অবিবাহিত মেয়েকে আমার সময় সবাই নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো। সেই ঘটনা নিয়ে এই গল্প লিখেছিলাম, এর পুরোটাই সত্যি যদিও ৩/৪ জনের ঘটনাকে আমি এক করেছি। শেষে জানতে চেয়েছিলাম এখন কর্ম ক্ষেত্রে অবিবাহিত মেয়েরা কোন চাপ ছাড়া কাজ করে যেতে পারে কিনা! সেটা অবশ্য জানা হয়নি। যদি সময় পান তাহলে পড়ে দেখবার অনুরোধ থাকলো। মেয়েছেলে.........
মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রেরণা দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, সোহানী।
১২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬
নজসু বলেছেন:
বারো রকম মানুষের বারো রকম চিন্তাচেতনা।
মানিকের মতো মানসিক রোগী যেমন আছেন
মোশতাকের মতো লোকও আছেন।
তৃতীয় অংশে এসে ধৈর্য্যহারা একজনকে পেলাম যে আট বছর অপেক্ষা করলো,
সে মাত্র ৫ টা মাস আর সহ্য করতে পারলো না।
হুট করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো।
আমরা মানুষ জাতটা এই রকমই।
গল্পে বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।
এরকম ঘটনা চোখ মেলে তাকালে আমাদের আশেপাশে দেখতে পাওয়া যায়।
গল্পের একটা অংশে এসেছে- বাকী জীবন সুদের টাকায় চলতে পারবে।
সুদ শব্দটা কেমন যেন লাগে। লাভ বা মুনাফা দিলে কেমন হতো? যদিও সুদ, লাভ, মুনাফা একই জিনিস। (আমার মতামত)
গল্পে কথোপকোথনগুলো লাইন বাই লাইন দিলে কেমন হতো?
: কি করছো? এসব কেন কিনছো?
: আমার ইচ্ছে। আমি কিনছি। চুপ থাকো।
একঢালার কারণে কোনটা কার সংলাপ অনেক সময় গুলিয়ে যেতে পারে।
এভাবে লিখতেই হবে তা কিন্তু বলছিনা। আপনি যেভাবে লিখেছে হয়তো সেভাবেও লেখা যায়।
আমার আসলে জানা নাই। আমি শুধু আমার মতামত জানালাম।
গল্পে পরিপূর্ণতা আছে।
শুভেচ্ছা জানবেন।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭
করুণাধারা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ নজসু। আপনি আমার গল্পটা মন দিয়ে পড়েছেন, এবং তারপর পরামর্শ দিয়েছেন কিভাবে লিখলে আরো ভালো হতে পারতো! আসলে প্রতিটা পোষ্টের শেষে আমি এমন পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করি কিন্তু পাই না। আমার পরিচিত একজন তার ইংরেজি লেখা উন্নত করার জন্য ইংরেজি ব্লগে লেখা শুরু করে, সেখানে বাক্য গঠন, যতি চিহ্ন প্রত্যেকটা ব্যাপারে ভুল থাকলে অন্যরা পরামর্শ দিত নিজেকে শুধরে নিত। পরে তার ইংরেজি লেখা খুবই ভালো হয়ে গেছে। আমি নিজের লেখা শোধরানোর জন্য এমন পরামর্শ খুবই চাই। আশা করি আপনি ভবিষ্যতেও এই ভাবে সাহায্য করবেন।
যেভাবে লিখতে বলেছেন, আসলে আমি সেভাবেই লেখা শুরু করেছিলাম, কিন্তু দেখি পোস্ট খুব বড় হচ্ছে। মনে হলো বড় পোস্ট দেখে কেউ আর পড়বে না। তাই পোস্ট ছোট দেখাবার জন্য এভাবে লিখেছি। সম্ভবত তিনটা গল্প আলাদা আলাদা ভাবে তিনটা পোস্টে দিলে ভালো হতো। আপনার পরামর্শ মতো সুদ বদলে মুনাফা করেছি কিন্তু উক্তিগুলো বদলাতে গিয়েও বদলালাম না; এতে পোষ্টের আয়তন আরো বাড়বে, সেটা দেখে ভবিষ্যতে হয়তো কেউ পড়তেই আসবে না
আরেকবার ধন্যবাদ জানাই নজসু, এমন সুচিন্তিত পরামর্শ দেবার জন্য। ভালো থাকুন সব সময়- শুভকামনা রইল।
১৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: তৃতীয় গল্পের তৃতীয় কমেন্টে আবার আসতে হল আপু । এটিও ভালো লিখেছেন । তবে শায়লা যে বাচ্চা ও তার মায়ের দিকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন সেখানে গল্পটি পড়ে আমার মনে হচ্ছিল ওই বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা মা ও তার বাচ্চা সম্ভবত সারোগেট মাদার ও শিশু হবে। এ কারণেই অভিজ্ঞতায় বাবাকে শায়লা খুঁজে পাইনি । যদিও পরে গিয়ে দেখলাম গল্পটি অন্য মাত্রা পেয়েছে। যাই হোক হৃদয় বিদারক ঘটনা , সবই সম্ভব আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়।
বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভকামনা প্রিয় আপুকে।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
করুণাধারা বলেছেন: ব্যস্ততার মধ্যেও তৃতীয় বার এসেছেন, ধন্যবাদ কি দেবো? থাক, ধরেই নিলাম এটা বোনের প্রতি ভাইয়ের কর্তব্য পালন।
তৃতীয় গল্পটা প্রথম পুরুষে লিখলে হয়তো ভালো হতো, কিন্তু আগের দুটোর সাথে মিল রাখতে আর প্রথম পুরুষে লিখলাম না। ঘটনাটা আমি যেভাবে দেখেছিলাম, ঠিক সেভাবেই লিখেছি। এতগুলো বছর পরও সেই সুন্দরী মেয়েটির মুখ আমি ভুলতে পারিনা। এভাবে বিয়ে করাটা আরবদের কাছে কিছুই না। কিন্তু মেয়েটির বহু আকাঙ্খিত সন্তান যখন এলো, তখন তাকে সঙ্গ দেওয়াটা স্বামীর কর্তব্য ছিল। ধারণা করি, সন্তান জন্মের সময় স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে কোথাও ভ্রমণে গেছিল- এটাও আরবদের ট্রেন্ড।
সেই "কালো আর ধলো বাহিরে কেবল ভিতরে সবার সমান রাঙ্গা" এর মত বলতে পারি, আরবি বা বাঙালি যাই হোক দাম্পত্য জীবনে নানা রকম টানাপোড়েন সবার মধ্যেই আছে!
ভালো থাকুন, শুভকামনা রইল।
১৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩
রাকু হাসান বলেছেন:
কোথাও কেউ নেই ,সিগ্ধা আদীম পৃথিবীতে একাকী দাঁড়িয়ে আছে প্রথম অংশে মানিকের প্রতি রাগ হচ্ছে ।এবং এই অংশটিই সবচেয়ে বেশি েভালো লেগেছে । তিন অংশে গল্পটি তিনটি ভিন্ন গল্প মনে হলো তবে একসূত্রে গাঁথা ,বিষয় দম্পত্য জীবন ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৯
করুণাধারা বলেছেন: রাকু হাসান, এই বিশাল গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আসলে দাম্পত্য জীবনের নানা দিক আছে, কিন্তু আমার গল্পগুলো সব হয়ে দাঁড়িয়েছে দাম্পত্য জীবনে অসুখী বা প্রতারিত নারীর গল্পে। ঘটনাগুলো বাস্তব, কিন্তু মনে হচ্ছে একই ধরনের গল্প না লিখে সুখী নারীর গল্পও লেখা দরকার ছিল।
আপনার ভাল লাগায় আমার আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা রইল, রাকু হাসান।
১৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: গল্প পড়লাম
অনেক কিছুই বলার, তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের হয়ে কিছু বলতে গেলে আপন হয়ে যাবেন স্ত্রীপূজক! কী অদ্ভুত সমাজ ব্যবস্থা!
একজন মেয়ে তার জন্মস্থান, জন্মদাতা, জন্মদাত্রী সব সবকিছু ফেলে একজন পরপুরুষের হাত ধরে বেরিয়ে পরে অজানা পথে, নিজের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করে পুরুষটাকে সন্তুষ্ট রাখতে কিন্তু যখন এই পুরুষই তার মূল্য তার কদর করতে পারে না, তখন সেই সম্পর্ক হয়ে যায় জাহান্নামের কীটের সাথে বসবাস তুল্য।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৪
করুণাধারা বলেছেন: যে স্বামী তার স্ত্রীকে মর্যাদা দেয় না, সে বুঝতে পারেনা তার সন্তানরা মানসিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেড়ে উঠতে পারে না। দাম্পত্য জীবন গড়ে ওঠা উচিত পারস্পরিক সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ, আত্মত্যাগ ও ক্ষমা নিয়ে। দুঃখের বিষয়, আজকাল এর বড় অভাব দেখা যায়, একটু সহনশীল হলেই সুন্দর পরিবার গড়ে উঠতে পারে........
বাঙালি স্বামীদের মধ্যে অনেকেই নিজে রোজগার করেন বলে স্ত্রীকে সামর্থ্য থাকা সত্বেও হাতে কোন অর্থ দেন না। এটাও নিজের অহম। অদ্ভুত ব্যাপার এই যে, আমি আরব দেশে দেখেছি, স্বামী তার স্ত্রীর জন্য সোফার চালিত মার্সিডিজ গাড়ি দিয়ে রেখেছেন কিন্তু স্ত্রীর হাতে কোন অর্থ দেন না। স্ত্রী ঘরে মুরগি পালন করে, মার্সিডিজ গাড়িতে চড়ে সেই মুরগি বাজারে এসে বিক্রি করে!
আমি আপনার এই সংক্রান্ত একটা পোস্টে লাইক দিয়েছিলাম মনে আছে। আশা করি ভবিষ্যতেও লিখবেন এমন।
আমার ব্লগে আপনার প্রথম আগমন। অসংখ্য ধন্যবাদ, ভালো থাকুন সৈয়দ তাজুল ইসলাম।
১৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৩
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: এই বিষয়ে তো আমি কোন লেখা এখনো পর্যন্ত লেখিনি! স্যারি! কেমনে কী?
আপনি ভাল আছেন তো?
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৯
করুণাধারা বলেছেন: স্যরি সৈয়দ তাজুল ইসলাম, আমি ভুল করেছি।
আপনার মন্তব্য পড়া মাত্রই বুঝতে পারলাম আমি ভালো নেই, স্মৃতিভ্রংশ রোগ আমাকে পেয়ে বসেছে। তাই আমি আপনার নাম আরেকজনের নামের সাথে গুলিয়ে ফেলেছি!! আসলে আমি এই পোস্টটার কথা বলেছিলাম। এই পোস্ট, ভেবেছিলাম এটা আপনার লেখা। এই ভুলের জন্য দুঃখিত আমি।
১৭| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৪
খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লেগেছে
১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৫
করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্য করে অনুপ্রেরণা দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ, খাঁজা বাবা । আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
১৮| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২১
আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা ,
জীবনের গল্পই বটে ! এরকম কতো শত গল্প যে জমে আছে পৃথিবীর ধুলোয় ধুলোয় , কে তার খোঁজ রাখে !!!!!!!!!!
কেন যে এমনটা হয় , তার পেছনে হাযারো কারন থাকে । তবে একটা মূল জিনিষ সব কারনেই থাকেনা --- পারষ্পারিক বিশ্বাস এর পাশাপাশি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ এর দেখা ।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১২
করুণাধারা বলেছেন: এরকম কতো শত গল্প যে জমে আছে পৃথিবীর ধুলোয় ধুলোয়.... , আর কত দুখিনী নারীর নয়নের নীর বাষ্প হয়ে মেশে বাতাসে............
দাম্পত্য- সম্পর্ক ভালো রাখতে সব সময় এর পরিচর্যা দরকার, পরিচর্যা করতে হয় দুজনকেই- ক্ষমা, সহনশীলতা, ও আস্থার মাধ্যমে। এর অভাব হলেই সম্পর্কৈর মৃত্যু ঘটে।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আহমেদ জী এস। ভালো থাকুন সব সময়, শুভকামনা রইল।
১৯| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৬
নীল আকাশ বলেছেন: আপু, দেরি তে আসলাম। তিনটাই দুর্দান্ত সামাজিক থীমের উপর লিখেছেন। লোভ সামলাতে পারছি না, আহ!
আপনি আমার খুবই পছন্দের একজন ব্লগার, সেজন্য তাই সাহস নিয়ে কয়েকটা লাইন বলে যেতে চাই, ভূল হলে আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃস্টিতে দেখবেন.......
১। শিখা আপু আমাকে একটা সাজেশন দিয়েছিল, কথোপকথনের সময় হাইফেন দিয়ে লেখার জন্য। আইডিয়া টা দারুন। কথোপকথন গুলি খুবই ভালো লাগে পড়তে....ট্রাই করে দেখবেন একবার........
২। লেখার ফিনিসই পাঠকের শেষ পর্যন্ত মনে থাকে, আপনার ফিনিস গুলি একটু বড় করে টাচিং লাইন দিতে হবে..। ৩ নাম্বারটাতে কোন ফিনিসই দেন নি.....। পাঠকের মনে প্রশ্ন রেখে যাবার একটা টাইপ আছে, ওটাও ট্রাই করে দেখতে পারেন....
৩। স্টার্টিং গুলি আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে......
৪। ১ নাম্বার টা অহরহ ঘটে.....সবাইকেই নিজেকে কন্ট্রোল করে চলা উচিৎ।
সব শেষে দারুন লেখার জন্য অভিনন্দন। আরো ভালো ভালো লেখা চাই,আপু।
শুভ কামনা রইল!
১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৮
করুণাধারা বলেছেন: দেরিতে আসলে কোন অসুবিধা নেই, কিন্তু একেবারেই না আসলে বড় অসুবিধা আছে...........
খুব খুশি হলাম সাজেশন গুলো পেয়ে; আমি নিজেও বুঝতে পারছিলাম, আমার লেখাতে কোথাও ভুল আছে কিন্তু ঠিক ধরতে পারছিলাম না! আশা করি কথোপকথন লেখার এই নিয়মটা এরপর থেকে ফলো করবো। এই পোস্টে বদল করলাম না, কারণ তাতে পোস্ট আরও বড় দেখাবে। এমনিতেই আমার মনে হচ্ছে খুব
বড় পোস্ট দিয়ে ফেলেছি।
লেখার ফিনিসই পাঠকের শেষ পর্যন্ত মনে থাকে, আপনার ফিনিস গুলি একটু বড় করে টাচিং লাইন দিতে হবে..। ৩ নাম্বারটাতে কোন ফিনিসই দেন নি.....।
ঠিকই বলেছেন, এরপর থেকে ফিনিশিং নিয়ে ভাবতে হবে। তবে এটাও ঠিক, গল্প লেখা আমার দ্বারা হবে না। এর জন্য যেভাবে শব্দচয়ন, দৃশ্যকল্প নির্মাণ করা দরকার আমি তা করতে পারিনা এবং আমার এই অপারগতা থেকে বেরোতেও পারবোনা। "জীবনের গল্প" নাম না দিয়ে আমি নাম দিতে পারতাম "যেভাবে জীবন দেখেছি"। কিন্তুক এই শিরোনাম আমার ভালো লাগেনি! আর তিন নাম্বারটার ফিনিশিং আসলে এটাই; এই বাক্যটাই শোনার পর বহু বছর ধরে আমি হুবহু মনে রেখে দিয়েছি আর নিজের মনে জেগে ওঠা অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি। এই বাক্যটাই তাই লিখে দিলাম, আমার পোষ্টের পাঠকদের জন্য, দেখি তারা মেয়েটিকে, তার স্বামীকে কিংবা মেয়েটির ভবিষ্যৎ নিয়ে কি ভাবেন..........
এমন অনুপ্রেরণা দেওয়া মন্তব্যের জন্য, প্লাসের জন্য, অসংখ্য ধন্যবাদ, নীল আকাশ। শুভকামনা রইল।
২০| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বিষাদ ছোঁয়া লেখা; অসম্ভব ভালো লিখেছেন আপু।
এসব গল্পে এর চেয়ে কিছু বেশি লেখার নেই।
ভালো লাগা।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪২
করুণাধারা বলেছেন: তিনটে জীবনের গল্প বলতে চেয়েছি, কিন্তু কতটা গল্প লেখা হয়েছে সে ব্যাপারে আমার নিজেরই সন্দেহ আছে.......
তাই এমন প্রশংসা বাক্যে খুবই খুশি হলাম। অনেক, অনেক ধন্যবাদ মনিরা। শুভকামনা রইল, সব সময়ের জন্য।
২১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭
রক বেনন বলেছেন: আপনার প্রতিটি গল্পই পড়ে মনে হচ্ছিল আমার চোখের সামনে ঘটছে আর আমি নিরব দর্শকের মতো দেখছি। খুব চমৎকার করে লিখেছেন আপনি। খুবই সুন্দর হয়েছে।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৭
করুণাধারা বলেছেন: আমার লেখার মান নিয়ে আমি খুব সন্দিহান, রক বেনন তারপরও আপনি আমার গল্প পড়ে এমন প্রশংসা করলেন, আমি খুবই খুশি হলাম!! অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য ও প্লাসের জন্য।
আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।
২২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫১
শায়মা বলেছেন: হায়রে সবগুলা হাসব্যান্ডই দেখি ......
১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০১
করুণাধারা বলেছেন: হায়রে! বেশিরভাগ হাজবেন্ডই...........
এই হলগে জীবনের আসল গল্প..........
তোমার জন্য থাকুক রাশি রাশি আলো হাসি ।
২৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১২
নীল আকাশ বলেছেন: প্রকাশিত গল্প পরিবর্তন করার কোন দরকার নেই। আমি জাস্ট একটা আইডিয়া দিয়েছি আপনাকে। মনে রাখলেই হবে.....গল্পের আকার কোন সমস্যা না, সমস্যা তখনই যখন পাঠক পড়তে যেয়ে বোর ফিল করবে। ব্লগে আপনাকে অনেক হিট হিট গল্প দেখাতে পারব যেগুলি সাইজ দেখলে ভয় পাবেন!
ঠিকই বলেছেন, এরপর থেকে ফিনিশিং নিয়ে ভাবতে হবে। তবে এটাও ঠিক, গল্প লেখা আমার দ্বারা হবে না। এর জন্য যেভাবে শব্দচয়ন, দৃশ্যকল্প নির্মাণ করা দরকার আমি তা করতে পারিনা এবং আমার এই অপারগতা থেকে বেরোতেও পারবোনা।- সম্পুর্ন ভুল ধারনা, ৩ টা গল্পই দারুন হয়েছে। এই ছোট গল্প গুচ্ছের আইডিয়া আমার কাছে দারুন লেগেছে....আরও কয়েকটা লিখুন, লেখার হাত চলে আসবে। আর কেউ না পড়লেও আমি এসে অন্তত পড়ে যাব, কথা দিলাম, তারপরও লিখুন। আপনার লেখার থীম খুব ভালো লেগেছে....
ভালো থাকবেন, আপু, শুভ কামনা রইল!
১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৮
করুণাধারা বলেছেন: এমন প্রশংসা!!!!!! এ মনিহার আমায় নাহি সাজে.......
যাইহোক, প্রশংসা বাণীতে আপ্লুত হলাম। কথাগুলো মনে রাখার চেষ্টা করব। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।
২৪| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৬
আখেনাটেন বলেছেন: সমাজে মানিকের মতো কুপুরুষের অভাব নেই। এই শ্রেণিটা নিরীহদের উপর পীড়ন করে মনে হয় অাত্নসুখ লাভ করে।
১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৬
করুণাধারা বলেছেন: এই শ্রেণিটা নিরীহদের উপর পীড়ন করে মনে হয় অাত্নসুখ লাভ করে।
১০০% সহমত! মানিক এর মত লোকদের আমাদের সমাজে সবখানে দেখা যায়- কখনো বাসা বাড়িতে স্বামী হিসেবে, কখনো কারখানার মালিক হিসেবে, কখনো অফিসের বস হিসেবে........... যেখানেই থাকুক না কেন, এদের কাজ একটাই- নিরীহদের উপর পীড়ন করে আত্মসুখ লাভ করা।
২৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৭
আখেনাটেন বলেছেন: মোশতাকের বুড়ো বয়সে ভীমরতি ধরল নাকি। মানুষের মন বড়ই বিচিত্র।
১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১২
করুণাধারা বলেছেন: মানুষের মন বড়ই বিচিত্র।
মোশতাকের মত মানুষের মন সত্যিই বড় বিচিত্র। আমার বাকি দুই গল্পের স্বামীদের আচরণ ব্যাখ্যা করতে পারি, কিন্তু মোশতাকের আচরণ কিছুতেই ব্যাখ্যা করতে পারি না.............
আপনি মনে হয় মানব চরিত্র পর্যবেক্ষণ- বিশারদ। মাত্র একটি বাক্য দিয়ে যেভাবে একেকজনের চরিত্র বর্ণনা করলেন- এটি করা খুব সহজ কাজ তো না!!!
২৬| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩০
আখেনাটেন বলেছেন: মধ্যপ্রাচ্যের মোল্লাদের মনে হয় এখনও তিন-চারটা করে বিবি রাখার চল আছে।
সবগুলো গল্পই দারুন হয়েছে আপা। সমাজের অানাচে কানাচে কত শত অসঙ্গতি।
১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২৬
করুণাধারা বলেছেন: সহানুভূতি, মায়া- মমতা এই ধরনের অনুভূতির সাথে আরবদের মনে হয় পরিচিতি খুব কমই আছে, যত পরিচিতি সব টাকার সাথে। তাই স্ত্রীর প্রতি আরব লোকের এই আচরণ ব্যাখ্যা করা যায়।
প্রশংসা বাক্যে খুব অনুপ্রাণিত হলাম, আখেনাটেন। তিনবার মন্তব্য আর প্লাস, সবকিছুর জন্য অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো।
২৭| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪১
ওমেরা বলেছেন: আপু খুব সুন্দর করে ইউরোপ আমেরিকার বাস্তব জীবনের গল্প গুলো তুলে ধরেছেন। আমি ঠিক তিনটা গল্পই লিখব আপু মেয়েদের নিয়ে আপনার বিপরীতে নয় শুধু ইউরোপে এসে ছেলেরাই নয় আমরা মেয়েরাও যে অতি আধুনিক হয়েছি সেটার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু।
১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩২
করুণাধারা বলেছেন: ওমেরা, আমার দ্বিতীয় গল্পটা এক আমেরিকাবাসী বাঙালি নারী কে নিয়ে। ইউরোপ-আমেরিকার জীবনের সাথে আমিতো পরিচিত না, তাই এসব নিয়ে গল্প লেখার সাধ্য আমার নেই। অপেক্ষা করে থাকলাম তোমার গল্পের, তাড়াতাড়ি লিখে ফেলো।
শুভেচ্ছা রইল, সব সময়। মন্তব্য আর প্লাসের জন্য ধন্যবাদ ওমেরা।
২৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮
মলাসইলমুইনা বলেছেন: কঠিন জীবনের গল্প ! একেবারে ভ্যান গগের আঁকার মতো করে জীবনের গল্প বললেন লেখায় । কঠিনেরে ভালবাসিলাম -এর মতো কষ্ট গল্পে ভালোলাগা ।
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১১
করুণাধারা বলেছেন: কঠিনেরে ভালবাসিলাম -এর মতো কষ্ট গল্পে ভালোলাগা ।
আসলেই এটা কঠিন জীবনের গল্প; কিন্তু কি করব; জীবনে ভালো- মন্দ, সহজ- কঠিন সব রকম দিকই আছে, তার তিনটা কঠিন ঘটনা নিয়ে এই গল্প লিখলাম।
আপনার ভালো লাগায় আপ্লুত হলাম। আপনি ভালো থাকুন, সব সময়।
২৯| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:২৯
মুক্তা নীল বলেছেন: এগুলো গল্প না, বাস্তব জীবনের প্রবহমান চিত্র। আমরা অনেক নারীরা সমাজ,সংসার লোক লজ্জার ভয়ে অনেক কিছুই প্রকাশ করি না, কিন্তু কেউ কি বলতে পারবে আর কতো অপমান সহ্য করবে এই নারীজাতি???? অসাধারণ লিখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২০
করুণাধারা বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ মুক্তা নীল, আমার ব্লগে এই প্রথম এলেন সেজন্য, আর মন্তব্য ও প্লাস দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য।
দাম্পত্য জীবনে মেয়েরা নানা রকম নিগ্রহের শিকার হয়, কিন্তু এগুলো সয়েই তাদের থাকতে হয় দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য। আবার কোনরকম অশান্তি ছাড়াও মেয়েদের দাম্পত্য জীবনের হঠাৎ অবসান হতে পারে, স্বামীর ইচ্ছায়। দুই নাম্বার গল্প যেমন বলা আছে।
আশা করি ভবিষ্যতেও সাথে থাকবেন। ভালো থাকুন আপনি সব সময়।
৩০| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৩
জুন বলেছেন: করুনাধারা এই সব দাম্পত্যের গল্প শুধু আশেপাশেই নয় আমাদের ভেতরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অত্যন্ত নিপুণ শিল্পীর মত আপনি শুধু তাদের চিত্রায়িত করেছেন কথার মালায়। মলাসইলমুনা যেমন বলেছে তেমনটি কঠিনেরে ভালোবাসিলাম।
অনেক ভালোলাগা রইলো।
+
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২৭
করুণাধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জুন, আপনার মন্তব্য পেয়ে অনুপ্রাণিত হলাম এমন জীবনের গল্প লেখার জন্য।
এই সব দাম্পত্যের গল্প শুধু আশেপাশেই নয় আমাদের ভেতরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এমন গল্প থেকে তিনটা গল্প তুলে আনলাম। প্রথম আর শেষটা অনেক দেখা যায়, তবে দ্বিতীয় ঘটনা আমার বিশ্বাসের ভিতকে অনেকটাই নাড়িয়ে দিয়েছে! বৈচিত্র সন্ধানী স্বামীর খেয়ালখুশিতে একজন নারীর ২৮ বছরের সংসার ভেঙে গেল! এটা আমার কাছে খুবই কষ্টকর লেগেছে।
শুভেচ্ছা রইল জুন.......
৩১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:০২
শামছুল ইসলাম বলেছেন: একটু আলসেমি লাগছিল। দুপুরে খাওয়ার পর অনেক সময়ই এমনটা হয়। তাই আপনার ব্লগ বাড়িতে প্রবেশ। বেশ কিছু লেখা পড়লাম। খুব ভালো লেখেন আপনি।
গল্প তিনটা পড়ে মনটা বাস্তবিকই খারাপ হয়ে গেল।
জীবনের গল্প বলে গেছেন চমৎকার সাবলীল ভাবে।
২০১৮ সালের নভেম্বরে লেখা আপনার গল্প আমি পড়ছি ২০১৯ সালের আগস্টে।
২০২৯ সালে পড়লেও গল্প গুলো একই রকম ভালো লাগা ছড়াবে মনে- যদি বেঁচে থাকি, সুস্থ থাকি।
শুভ কামনা।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৯
করুণাধারা বলেছেন: আমিও খুব দেরী করে ফেললাম মন্তব্যের উত্তর করতে। এমন চমৎকার মন্তব্য পেয়ে মন ভালো হয়ে গেল শামছুল ইসলাম।
জীবন বড় বিচিত্র! যে ঘটনাগুলো মনকে আলোড়িত করেছিল সেগুলো গল্পাকারে লিখলাম; আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো।
আপনার লেখা মিস করছি অনেকদিন, আশা করছি শিগগিরই লিখবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালো লিখেছেন,তবে লেখাটা খুব দীর্ঘ।