নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

করুণাধারা

করুণাধারা

জীবন যখন শুকাইয়া যায় করুণাধায় এসো

করুণাধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিরোনামহীন অনুগল্প

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪৭

পড়তে খুব ভালোবাসেন উনি। যেকোনো কিছুর উপর বই হলেই হল- আদ্যোপান্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে ফেলেন! ইদানিং কিছুদিন হলো পড়তে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, মনে হচ্ছে চশমার পাওয়ার ঠিক নেই! কিন্তু চোখ দেখাবার কথাটা কাউকে বলছেন না, ইচ্ছেই করেনা। চিরদিনের স্বাবলম্বী তিনি, কিন্তু হাঁটুর অপারেশনের পর থেকে ধীরে ধীরে তার চলার শক্তি কমে গেছে। প্রথমে ঘরের ভিতরে ওয়াকার নিয়ে হাঁটতেন, তারপর হুইল চেয়ার, আর এখন পুরোপুরি ঘরে বন্দী বিছানাটাকে  আশ্রয় করে। চোখ দেখাতে হলে তাকে  তিন তালার ঘর থেকে নামাতে হবে সিঁড়ি বেয়ে, সেই ঝঞ্ঝাটে কাউকে ফেলতে তার বড় সংকোচ হয়, অতএব ছানি পড়া চোখ দিয়ে কষ্ট করে দেখা!

 এমনিতে দুজন গৃহকর্মী নিয়ে তার দিন দিব্যি চলে যায়। বিছানাতে বসেই তিনি তাদের দিয়ে সমস্ত বাড়ি পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখেন, নানা রকম খাবার তৈরি করে রাখেন যেগুলো আজকাল আর কেউ তৈরি করে না। কারণ তার ঘরে আত্মীয়-স্বজন চেনা পরিচিত জনের আনাগোনা লেগেই থাকে, তারা সেসব খাবার খেয়ে খুব তৃপ্তি পায়, তাদের তৃপ্তিতে তিনি আনন্দ পান।

 দেশে বিদেশে থাকা কাছের- দূরের সমস্ত আত্মীয় স্বজন তার সাথে ফোনে যোগাযোগ রাখে; তিনি ও নিয়মিত তাদের খবরাখবর রাখেন। টিভির সমস্ত খবর দেখেন, আবার সেগুলো বিশ্লেষণ করেন। এইসব আত্মীয়-স্বজনদের নানা খবর, দেশের নানা খবর, ফোন করে তিনি অন্যদের সাথে আলোচনা করেন। সময় কাটাতে হবে তো!! ভাই বোনেরা তার নাম দিয়েছে রয়টার্স!! মাত্র ৩৭ বছরে নাবালক কয়েকজন সন্তান নিয়ে বিধবা হয়েছিলেন, তাদের প্রত্যেককে উচ্চশিক্ষিত করে তুলেছেন। কখনো সন্তানদের গায়ে কষ্টের আঁচ লাগতে দেননি, সমস্ত কষ্ট নিজে পিঠ পেতে নিয়েছেন।

 এক সময় তার সন্তানেরা দূরে দূরে চলে গেল; তারও বয়স বাড়তে লাগলো, সেইসাথে বাড়তে লাগলো সন্তানদের দেখার আকাঙ্ক্ষা।  চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলার পর তিনি আর বিদেশে ছুটে যেতে পারতেন না, তাই ছানি পড়া চোখ নিয়ে বসে বসে সন্তানদের মুখ কল্পনায় দেখতেন, প্রতীক্ষা করতেন তাদের আসার। রত্নগর্ভা মা উপাধি দেবার জন্য যখন তাকে প্রস্তাব দেয়া হল, তিনি শুনে প্রচন্ড রেগে গেলেন, "কিসের রত্নগর্ভা!! আমি কোন উপাধি চাই না।"

সন্তানদের সামনাসামনি দেখতে না পেলেও তাদের দেখার একটা ব্যবস্থা হল; ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট করে। তাদের দেখার আকাঙ্ক্ষা এত তীব্র ছিল যে, আশি বছর বয়সেও তিনি শিখে নিতে পারলেন কিভাবে ফেসবুক ব্যবহার করতে হয়। তারপর থেকে সব সময় তার প্রিয় মুখগুলোকে দেখতে থাকেন ফেসবুকে। মাঝে মাঝে ছবি দেখতে না পেলে খুবই বিরক্ত হন, " এতো লেখে কেন এরা... বেশি করে ছবি দিতে পারে না!!"

একদিন কিন্তু সবাই ফেসবুকে অনেক ছবি দিল, সব ছবিতেই তিনি আছেন। আরো অবাক কান্ড!! বাড়ি ভর্তি লোকজনের মধ্যে তার সব কজন সন্তান আছে!! বহুদিন পর তারা একত্রিত হয়েছে এ বাড়িতে।

 এমন আনন্দের দিন, তবু তিনি কিছু জানতে পারলেন না। শুয়ে রইলেন চুপচাপ- কর্পূর আর লোবানের গন্ধে মাখামাখি হয়ে!!

মন্তব্য ৫২ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৫২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:১০

রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব বড় কঠিন।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৯

করুণাধারা বলেছেন: খুব কঠিন রাজীব নুর। It's a one way ticket...

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:১০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: বৃদ্ধ বয়সের একাকীত্ব সকলকেই বইতে হবে একদিন। অত্যন্ত কঠিন বাস্তবতা এটা। এড়ানোর কোন উপায় নাই।

এই দুনিয়া কিছুই না......সব পেছনে ফেলে রেখে যেতে হবে। তারপরও কেউ এটা মানতে চায় না।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৮

করুণাধারা বলেছেন: বৃদ্ধ বয়সের একাকীত্ব সকলকেই বইতে হবে একদিন। কেন, ভুয়া মফিজ? মায়ের জন্য একটু সময় বের করা সন্তানদের জন্য কেন কঠিন হবে এত?

একটা মেসেজ দিতে চেয়ে গল্প লিখতে গিয়েছিলাম। পারলাম না। :(

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮

মিথী_মারজান বলেছেন: গল্পটা পড়া শেষ করেও যেন গল্পটা থেকে বের হতে পারছিনা।
এত সুন্দর, এত নিখুঁত একটা গল্প।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩২

করুণাধারা বলেছেন: এত সুন্দর, এত নিখুঁত একটা গল্প।

আমাদের জীবনের গল্প গুলো খুব দুঃখের মিথী। মন্তব্য আর প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:৩০

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: জীবনকে শুধুমাত্র শব্দ বললে অন্যায় হবে। এই জীবন নামক শব্দেই মানুষের আনাগোনা, পথচলা। নাটকের বিহাইন্ড দ্যা সিনের মতো জীবনের সব ঘটনারই প্রেক্ষিত আছে। যা হতে পারে অনাবিল আনন্দের কিংবা শ্মশানের নিস্তব্ধ নিরবতার। তবুও জীবন বয়ে চলে শৈশব থেকে বার্ধক্যে। মৃত্যুর মিছিলে যোগদান করাই বোধহয় তার অন্তিম কর্তব্য !

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:১৫

করুণাধারা বলেছেন: এমন জ্ঞানগর্ভ ভারী মন্তব্য পেয়ে আমার ভারী মনটা হালকা হয়ে গেল আর্কিওপটেরিক্স!

মন্তব্য আর প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:১০

মা.হাসান বলেছেন: অসুস্থ রোগির সাথে ডিউটি হিসাবে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। কাছ থেকে অনেক মৃত্যু দেখেছি। সবাই চলে যাবে। হয়তো কে কিভাবে গেল এতে পার্থক্য খুব কম। তবু বড় ভয়। নিজে যখন যাব তখন পাশে যেন পরিচিত কেউ থাকে মনে সব সময়ই এই আকাঙ্খা জাগে, যেন কেউ হাতটা ধরে থাকে, প্রিয় কোন মুখের দিকে তাকিয়ে চলে যেতে পারি।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫১

করুণাধারা বলেছেন: যেন কেউ হাতটা ধরে থাকে, প্রিয় কোন মুখের দিকে তাকিয়ে চলে যেতে পারি। প্রার্থনা করি, তাই যেন হয়।

আজকাল এমন সময় এসেছে, গুরুতর অসুস্থ প্রিয়জনকে লাইফ সাপোর্টে না দিলেও আই সি ইউ তে দিতেই হয়। শেষ মুহূর্তে একাকী আই সি ইউতে তিনি হয়ত চোখ খুলে প্রিয়মুখ খুঁজেছিলেন... জানতে পারি না...

মন্তব্য আর প্লাসের জন্য ধন্যবাদ, মা. হাসান।

৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:২৬

অন্তরা রহমান বলেছেন: এখনকার ছেলে-মেয়েরা আর যাই হোক পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্বশীল নয়। নিজের ছেলেকে নিয়ে তাই কোন আশাই করি না। আর শুধু চেষ্টা করি ভালো মেয়ে হওয়ার যাতে মা-র যত্ন নিতে পারি।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫৪

করুণাধারা বলেছেন: আর শুধু চেষ্টা করি ভালো মেয়ে হওয়ার যাতে মা-র যত্ন নিতে পারি।

আমার আন্তরিক দোয়া থাকলো অন্তরা রহমান, আপনি যেন আপনার মায়ের শেষ মুহূর্তে মায়ের ভরসা ও আনন্দ হয়ে থাকতে পারেন।

৭| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এটাই বাস্তবতা আপি
ভাল্লাগে না এমন জীবন

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: নিদারুণ বাস্তবতা, ছবি। এমনও দেখেছি, মায়ের অনেকগুলো কৃতি সন্তান বিদেশ থেকে এসেছে, কিন্তু চাকুরীর মায়ায় মাকে মৃত্যুশয্যায় রেখে সকলে চলে গেছে। সত্যিই ভালো লাগে না এসব ভাবলে।

মন্তব্য আর প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৮| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


গল্প হয়নি, একজন লোকের জীবনের একাংশের কাহিনী; এই রকম কাহিনী হাজার হাজার, সেগুলো গল্প নয়।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:০২

করুণাধারা বলেছেন: জানি গল্প হয়নি। তবু লিখলাম, পড়ে যদি কেউ অসুস্থ মা বাবার কথা মনে করে একটু উতলা হয়...

৯| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:২০

তারেক ফাহিম বলেছেন: শেষ বয়সে এসে জীবনটা যেন নিষ্ঠুর হয়ে উঠে :((


সহজ ভাষার সরল কিন্তু ভবিষ্য বেদনাসক্ত গল্প, পাঠে মুগ্ধতা।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:০৬

করুণাধারা বলেছেন: শেষ বয়সে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে, অথচ সে সময় সন্তানদের কাছেও তার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়... এটা বাস্তবতা, বড় নিষ্ঠুর!!!

রূপের জন্য ধন্যবাদ তারেক ফাহিম।

১০| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:২৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কঠোর বাস্তব জীবনালেখ্য আপু। যৌবনের ভরাট সংসারই বার্ধক্যের প্রতিটি মুহূর্তকে আবেশে ভরিয়ে তোলে। ফেসবুক সেই রোমন্থনের নবতম সংযোজন।
কর্পূর লোবাণের গন্ধ আমাদের জীবনের শেষ পরিনতি।

শুভেচ্ছা নিয়েন।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:১৪

করুণাধারা বলেছেন: ইদানিং মনে হচ্ছে, আগের কালের একান্নবর্তী পরিবারই ভালো ছিল; মৃত্যুকালে প্রিয়জনের মুখ দেখে চোখ বোজার সুযোগ ছিল তখন। এখন আই সি ইউতে যে মানুষটা ব্যাকুল হয়ে প্রিয়জনদের দেখতে চেয়ে না পেয়ে চোখ বুঝলেন, তার শেষ মুহূর্তের আকুলতা ভেবে খুব কষ্ট হয়!

মন্তব্য আর প্লাসের জন্য ধন্যবাদ পদাতিক চৌধুরী। আপনার পোস্ট পড়েছি, কেন মন্তব্য করিনি সেটা মন্তব্য করে বলব আশা করি।

১১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৬

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: প্রথমে পড়ে খুব মন খারাপ হয়েছিলো। পরে মনে পড়ে গেলো- মৃতরা সব কিছু দেখতে পায়। তাঁরা জীবিতদের সাথে কথা বলে। সত্যি।

কিন্তু, হায়! জীবিতরা তা শুনতে পায় না।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:২২

করুণাধারা বলেছেন: আপনার এই মন্তব্য পেয়ে খুব ভালো লাগলো সত্যপথিক শাইয়্যান। আমি গুগলে অনেক খুঁজেছিলাম, মৃত মানুষ জীবিতদের দেখতে শুনতে পায় কিনা সেটা সম্পর্কে কোন তথ্য জানতে, কিন্তু কোথাও পেলাম না। তাই আপনার কথা শুনে ভালো লাগলো।

১২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: মায়ের জন্য একটু সময় বের করা সন্তানদের জন্য কেন কঠিন হবে এত? কঠিন হওয়া উচিত না, তারপরেও হয়, এটাই বাস্তবতা; সেটাই বলেছি আপা। আমরা তো চাই সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলুক.....কিন্তু তা তো হয় না। যদি হতোই, তাহলে পৃথিবীটাতো অনেক সুন্দর হতো।

সেজন্যেই আমার মত হলো, সবচেয়ে খারাপটার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকা। তাহলে আর না পাওয়ার বেদনা কাউকে বইতে হবে না।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:২৮

করুণাধারা বলেছেন: মায়ের জন্য একটু সময় বের করা সন্তানদের জন্য কেন কঠিন হবে এত? এই প্রশ্ন আসলে আমি নিজেকেই করেছি, :( উত্তরটাও জানি... ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভুল হয়ে যায়, সময় বের করার কথা মনে থাকে না...

আবার ফিরে এসে মন্তব্য করায় এবং আমার এই অতি সাধারণ পোস্টে প্লাস দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ ভুয়া মফিজ।

১৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




মানুষের জীবনে যে কতো সহস্র জটিলতা! জীবনের কাছে পৃথিবী যখন সীমিত হয়ে যায় তখন শেষ আকাশে ডানা মেলে পাখির মতো ওড়ার জায়গা কই ? শেষ সীমানায় পা পড়ার পরে মানুষ আর যাবেই বা কোথায় ? এইসব জটিলতা পেড়িয়ে শেষতক মৃত্যুই সে জীবনের অমোঘ নিয়তি। একে এড়ানোর উপায় নেই।
কঠিন এই সত্যটিকে অনুগল্পে যতোটা না ধরে রাখলেন তারও চেয়ে বেশী অবারিত করে দিলেন নিঠুর বাস্তবতাটাকে।

চমৎকার লেখা হয়েছে। শেষ দুটো লাইন সবটাকে ছাপিয়ে কষ্টের লোবান গন্ধে মাখামাখি।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩৩

করুণাধারা বলেছেন: এইসব জটিলতা পেড়িয়ে শেষতক মৃত্যুই সে জীবনের অমোঘ নিয়তি। একে এড়ানোর উপায় নেই।

চমৎকার কথা বলেছেন, তবে সন্তানের কাছে মায়ের মৃত্যু সবসময়ই কষ্ট বয়ে আনে।

চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আহমেদ জী এস।

১৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৩৮

জুন বলেছেন: আমার ইদানীং এই ব্যপারটি নিয়ে বড় ভয় হয় করুনাধারা । পেপার খুললে দেখি অচল, অথর্ব স্বামীর পাশে তিন দিনের মৃত স্ত্রীর লাশ । কিম্বা তার উলটো । বড় ভয়ের গল্প লিখেছেন করুনাধারা ।
+

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৪৩

করুণাধারা বলেছেন: গল্পটা গল্প নয় জুন, বড় বাস্তব। একজন মা বছরের পর বছর প্রতীক্ষার করে গেছেন তার সব সন্তানদের একসাথে দেখবার জন্য, কিন্তু তার কৃতি সন্তানদের সময় হয়নি একসাথে হবার! অবশ্য তারা অন্তত মায়ের মৃত্যুতে এক হয়েছিল। আবার আমাদের দেশে অনেক কৃতি সন্তান দেখা যায়, কাজের চাপে যারা কখনোই মা বাবাকে দেখতে আসতে পারে না, মৃত্যুকালেও না। কদিন আগে এক বৃদ্ধাশ্রমে গিয়েছিলাম, সেখানে একেক জন মানুষের মুখ যেন একেকটি দুঃখের গল্প... খুব কষ্ট হয়েছে দেখে।

মন্তব্য আর প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ জুন।

১৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:১৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেল। বৃদ্ধ মা বাবার কথা মনে পড়ছে ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৪৯

করুণাধারা বলেছেন: একটা কথা বলি ঢাবিয়ান, মা বাবারা সন্তানদের সুখী দেখা ছাড়া আর কিছুই চান না। এমন নয় যে, সন্তানদের সব সময় মা বাবার সাথে থাকতে হবে, জীবনের প্রয়োজনে তারা দূরে চলে যাবে, কিন্তু মাঝে মাঝে ফোন করা, সম্ভব হলে দেখতে আসা কখনো সখনো- মা বাবারা অনেক খুশি থাকেন।

১৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩২

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: আমি যা বলেছি তা মুসলমানদের একজন বড় আলেম আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওযিয়্যাহ (রহঃ)-এর একটি বই 'কিতাবুর রুহ'-তে পাবেন।

রুহ সম্পর্কিত কোরআনের বাণী এবং হাদিস তিনি একত্রিত করেছেন এই বইতে।

আমি বইটি সিলেট থেকে কিনেছিলাম। ঢাকায় বায়তুল মুকাররমে পেতে পারেন।

ধন্যবাদ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫০

করুণাধারা বলেছেন: বায়তুল মোকাররমের চেয়ে জিন্দাবাজারে খোঁজা আমার জন্য সহজতর। ধন্যবাদ তথ্য দেবার জন্য।

১৭| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫১

রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আমরা ভাই বোনেরা দেশ বিদেশে স্যাটল হয়েছি। আমার আম্মা বাংলাদেশে তার বড় ছেলের কাছেই রয়ে গেছেন । অনেকবার আম্মাকে আমার কাছে আনতে চেয়েছি । আম্মা কিছুতেই আসবেন না। আমার আম্মা এখন অসুস্থ হয়ে বিছানায়। আমি একবার যেয়ে যথা সম্ভব সেবা করে এসেছি। ঘর সংসার ফেলে আমিও বেশী দিন থাকতে পারিনা। আবারও যাবো কয়েক মাসের জন্য। আম্মাকে ম্যাসেঞ্জারে কল ধরা শিখিয়ে দিয়ে এসেছি। ৭৮ বছর বয়সে আম্মা ম্যাসেঞ্জারে কল দিতে শিখে গেছেন । ঘুম থেকে উঠে আম্মা যখন কম দেয় খু আনন্দ হয়। বৃদ্ধ বয়সের একাকীত্ব কিছুটা দূর হয়। তাই বলে আমরা পাচ ভাই বোনের কেউ আম্মমাকে কোনরকম অবেহালা বা অজত্ন হতে দেইনা । বাস্তবতা মেনে নিতেই হয়। আসলে মানুষ মাত্রই একা।
সন্তান কে দোষ দেওয়া ঠিক না

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪২

করুণাধারা বলেছেন: না, আমি সন্তানদের দোষ দেই নি। আমি যেমন একজনের সন্তান, তেমনি আমি একজন মা। জীবনের প্রয়োজনেই সন্তানেরা ছুটে যাবে দূরে। খলিল জিবরানের "এবাউট চিলড্রেন" কবিতার লাইন কয়টি  মনে করি, যখনই সন্তান কাছে নেই বলে মন খারাপ হয়।

"জীবন্ত তীর  তোমার সন্তানেরা, ছুটে যাবে ধনুক তোমাকে ছেড়ে
অসীমের পথে তারা ছুটে যাবে, এক তীরন্দাজ স্থিরলক্ষ্যে তোমায় নত করবে, সবলে ছুঁড়ে দেবে তার তীর
অতএব  আনত হও সানন্দে, সেই তীরন্দাজের হাতে
কারন তীরন্দাজ  দেখতে ভালবাসেন দূরগামী তীর,
আর সুস্থির ধনুক।"

আমি সুস্থির ধনুক হতে চাই।

 আমি আসলে বলতে চেয়েছি মা যখন বেঁচে থাকেন, আমরা ধরেই নেই যে তিনি সবসময়ই থাকবেন। তাকে ভুলে নানা কাজে ব্যস্ত থাকি অধিকাংশ সময়। কেবল মৃত্যুর পর বুঝতে পারি, মাকে আরেকটু সময় দেওয়া উচিত ছিল!! আপনি মায়ের জন্য সর্বোচ্চ যতটুকু করা সম্ভব তাই করছেন, দেখে ভালো লাগলো। মেসেঞ্জারে আপনার মা যদি নিয়মিত আপনাকে দেখতে পান, তবে তিনি অনেক শান্তি পাচ্ছেন। দোয়া করি, তিনি সর্বদা শান্তিতেই থাকুন।

 মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ রাবেয়া রহিম।

১৮| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: একদিন কিন্তু সবাই ফেসবুকে অনেক ছবি দিল, সব ছবিতেই তিনি আছেন। আরো অবাক কান্ড!! বাড়ি ভর্তি লোকজনের মধ্যে তার সব কজন সন্তান আছে!! বহুদিন পর তারা একত্রিত হয়েছে এ বাড়িতে। ভয়ংকর সময় চলছে এখন। আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগেও হয়তো পৃথিবীতে মানুষ এতো নির্দয় ছিলো না। - যা হয়েছে সব গত দুই হাজার বছরে হয়েছে।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫

করুণাধারা বলেছেন: কী জানি!! আমরা যে দিনে দিনে দয়ামায়াহীন হচ্ছি এতে কোন সন্দেহ নেই...

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ঠাকুর মাহমুদ।

১৯| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:০৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: !!!
শুনে খুব খুশি হলাম।

রাজা ম্যানশনে এই বইটি নেই। বন্দরের মেয়র অফিসের পাশের বই-এর দোকানগুলোতে আছে।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪৬

করুণাধারা বলেছেন: ধন্যবাদ আবারো। ভালো থাকুন।

২০| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫৪

মুক্তা নীল বলেছেন:
আপা
অনেকদিন পর আপনাকে পেয়ে অন্যরকম ভালোলাগা ।
এতদিন আসেন নাই কেন ?
যে স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন , বেশিরভাগ মানুষের জীবনের শেষ ধাপ কাটে নিদারুণ কষ্টে একাকিত্বে। তার মধ্যে কমসংখ্যক মানুষের হয়তো ভাগ্য ভালো থাকে।
খুব ভালো লাগলো আপা আপনার লেখাটি পড়ে এবং সেই সাথে আপনাকে পেয়ে ।
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানবেন ।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৫০

করুণাধারা বলেছেন: মুক্তা নীল, এই মন্তব্য পড়ে মনটা কতখানি ভালো হলো বলে বোঝাতে পারছি না। অসংখ্য ধন্যবাদ।

উত্তর দিতে দেরি হয়ে গেল। শরীর মন কোনোটাই ভালো নেই, চেষ্টা করছি ভালো করার। আপনার আরেকটি মন্তব্য অনেক দিন থেকে উত্তর দেয়া হয়নি, দেবো শিগগিরই।

এই পোস্টে প্লাস দেয়ায় অনেক ধন্যবাদ । শুভকামনা।

২১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:২১

আনমোনা বলেছেন: মন খারাপ করা গল্প আপু। এটাই জীবন।
রাবেয়া রাহীম আপুর কথাও খুব বাস্তব। মানুষ মাত্রই একা।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৫২

করুণাধারা বলেছেন: হ্যাঁ আনমোনা, এটাই জীবন। সব মানুষই বড় একা!! তবে শেষ বয়সে মানুষ তীব্রভাবে চায় প্রিয় মুখগুলোকে দেখতে, তাদের ছোঁয়া পেতে। সেই সাধ অনেকেরই পূরণ হয় না...

২২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:১৪

বলেছেন: একেই বলে--" প্রযুক্তি আমাদেরকে দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ" -




০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৫৬

করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ল। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি, আমাদের ভিতর থেকে দয়া মায়া উধাও' হয়ে যাচ্ছে। আমাদের আগের প্রজন্মের মানুষ যেভাবে ভালোবাসতেন অন্যদের, আমরা সেভাবে ভালোবাসতে পারি না। আমাদের পরের প্রজন্মের মানুষের মনে ভালোবাসা আরো কমে গেছে।

আপনার চমৎকার পোস্ট পড়েছি, কিন্তু মন্তব্য করতে গিয়ে কিছুই লিখতে পারছি না।

২৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: খুব কঠিন রাজীব নুর। It's a one way ticket...

ধন্যবাদ আপনাকে অন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য।
ভালো থাকুন।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৫৭

করুণাধারা বলেছেন: সব সময় ভালো থাকুন রাজীব নুর। শুভকামনা সবসময়ের।

২৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৭

সুমন কর বলেছেন: গল্পের উপস্থাপন বা লেখনী ভালো লেগেছে। +।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০৬

করুণাধারা বলেছেন: আপনার মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হলাম, অনেক ধন্যবাদ সুমন কর।

ভালো থাকুন সবসময়।

২৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: খলিল জিবরানের "এবাউট চিলড্রেন" কবিতাটা ইদানীং আমারও খুব বেশী বেশী মনে আসে। সুস্থির ধনুক হয়ে থাকতে পারাটা বেশ কষ্টসাধ্য বৈকি!
পোস্টের বক্তব্য পরিষ্কার, ভাষা পরিমিত এবং প্রকাশভঙ্গী সহজে মন স্পর্শ করে। পোস্টে প্লাস + +

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২১

করুণাধারা বলেছেন: জীবনের প্রয়োজনে সুস্থির ধনুক হয়ে থাকাটা খুব জরুরী। তবে ইদানিং আশেপাশে অনেককেই দেখতে পাই, যারা বৃদ্ধ বয়সে একাকী জীবন যাপন করেন, সন্তানেরা সকলেই প্রবাসী। এদের শূন্য ঘর, যথেষ্ট অর্থ-বিত্ত থাকা সত্ত্বেও শেষ বয়সে এসে বেশ কষ্টে দিন কাটাতে হয়। কারণ দেশে ইদানিং নির্ভরযোগ্য কাজের লোক পাওয়া যায় না, অসুখ বিসুখে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবার মতো লোকও থাকে না। এদের অনেককেই দেখেছি সন্তানদের অভিশাপ দিতে। কিন্তু আমি কখনোই চাইবো না আমার দেখাশোনার জন্য আমার সন্তানেরা আমার কাছে থাকুক, বরং এই সমস্যার সমাধান করতে আমি আধুনিক বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করার কথা ভাবছি, যেখানে নিয়মিত অন্যের সাহচর্য, চিকিৎসা এবং পরিচর্যার ব্যবস্থা থাকবে। যদি কিছু জমি থাকতো আমি সত্যিই বৃদ্ধাবাস বানাতাম!! সন্তানেরা যখন আসবে, তখন কিছুদিন এয়ার বিএনবির ঘর নিয়ে থাকা যাবে... নানা রকম ভাবনা মাথায় আসতেই থাকে...

ভালো থাকুন, শুভকামনা রইল।

২৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্পটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে বার্ধক্যের একাকীত্ব থেকে রক্ষা ক্রুন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩৩

করুণাধারা বলেছেন: আল্লাহ পাক আমাদের সকলকেই বার্ধক্যের একাকীত্ব থেকে রক্ষা করুন তাই যেন হয়। শৈশব এবং বার্ধক্য- দুটোই মানুষের দুর্বলতার সময়, এই সময় সাহায্য এবং সাহচর্যের প্রয়োজন হয়। অর্থবিত্ত এর বিকল্প হতে পারে না।

গল্পটা মন খারাপ করা সন্দেহ নেই, কিন্তু সকল মা চান তার সন্তানের সাফল্য বা সুখ। সেজন্য সন্তান কাছে নাও থাকতে পারে মা সেটা খুশি মনেই মেনে নেন... অচল শিখর ছোট নদীটিরে চিরদিন রাখে স্মরণে, যত দূরে যায় স্নেহধারা তার সাথে যায় দ্রুত চরণে...

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, আমি তুমি আমরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.