নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

করুণাধারা

করুণাধারা

জীবন যখন শুকাইয়া যায় করুণাধায় এসো

করুণাধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক শহরের দুই পরিবার- দুজন ম নামের মানুষ।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১২:১৬

যে দুই পরিবারের কথা বলব তারা দেশের উত্তরের এক শহরে বহুদিন ধরে বাস করছেন, ধরা যাক তারা ক পরিবার আর খ পরিবার। দুই পরিবারে একটা মিল আছে, দু্ই পরিবারেই  ভাইবোন অনেকজন করে আর তাদের প্রত্যেকেই  মেধাবী।

 ক পরিবারে বড় ভাই শুধু বুয়েটে পড়েছেন, তারপর ছয় ভাইবোন ডাক্তারী পড়েছেন, পড়া শেষ করে তারা প্রায় সবাই ডাক্তার বিয়ে করেছেন। তাদের পরের প্রজন্ম, তাদের ছেলেমেয়েরাও বড় হয়ে বেশিরভাগই ডাক্তার হয়েছেন, তারাও বিয়ে করেছেন ডাক্তার। অর্থাৎ বলা যায় ক পরিবারে অনেক ডাক্তার, কারণ এরা মনে করেন ডাক্তারি পেশায় মানুষের সেবা করা যায়। অনেক অর্থ উপার্জন? সেটা তারা অন্য পেশায় গিয়েও করতে পারতেন, আগেই বলেছি এরা সবাই মেধাবী। চাইলে এঁরা আমলা হতে পারতেন। ডাক্তারী বিসিএস না করে যদি  আমলা হবার বিসিএস করতেন, তাহলে নূন্যতম সুবিধা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পড়ে না থেকে এরা উপজেলার সর্বোচ্চ নির্বাহী ইউ এন ও হিসাবে কোটি টাকার গাড়িসহ অন্য অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারতেন। তারা তা হননি।

খ পরিবারের মেধাবী ভাইবোনেরা খুবই চৌকস,এরা বেশিরভাগই আমলা হয়েছেন, শুধু আমলাই না, এদের দুভাই পরবর্তীতে ভি আই পিও হয়েছেন। জ্যেষ্ঠ ভিআইপির অভ্যাস বিরক্ত হলে "রাবিশ" বলে বিরক্তি প্রকাশ করা, তিনি রিটায়ার্ড। কনিষ্ঠ ভিআইপি কর্মরত, তার নামের  আদ্যাক্ষর অনুযায়ী তাকে বলি  ভিআইপি ম। ভিওআইপি ম, আর ডাক্তার ম- এই দুজনকে নিয়েই আমার কাহিনী।

ক পরিবারের জামাই ডাক্তার ম, তিনি এই পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্মের একজন ডাক্তারকে বিয়ে করে এই পরিবারের সদস্য হন। বিসিএস করে উপজেলায় চাকরি করেছেন, দীর্ঘদিন পড়াশোনা করে আরো ডিগ্রী ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে  সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন। তার স্ত্রী, শ্যালিকা, ভায়রা, শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই ডাক্তার, তারা একই বাড়িতে বাস করেন। ডাক্তার ম গরীবের ডাক্তার বলে পরিচিত। ছুটির দিনে তিনি ছুটে যান নিজ গ্রামে, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে। এছাড়াও দরিদ্র রোগীদের তিনি ফিস না নিয়ে উল্টো অর্থ সাহায্য করেন।

করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে অন্যান্য ডাক্তারদের মতো তিনিও পিপিই পাননি, ফলে মার্চের শেষ সপ্তাহে তিনি করোনা আক্রান্ত হন। নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে তিনি সুস্থ্যও হয়ে উঠছিলেন কিন্তু হঠাৎ এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, পরিবারে যেহেতু অনেকজন ডাক্তার, তারা ডাক্তার ম- এর ফুসফুসের এক্স রে দেখে বুঝতে পারলেন যে উনার আইসিইউর সাপোর্ট দরকার, যেটা উনার নিজের হাসপাতালেই আছে, কিন্তু উনারর হাসপাতাল তাকে এই সুবিধা দিতে অস্বীকৃতি জানালো। তার ফুসফুসের অবস্থা দ্রুত খারাপ হচ্ছিল দেখে পরিবার এয়ার এমবুলেন্স চাইলেন ঢাকায় করোনা হাসপাতালে নেবার জন্য। সহকারী অধ্যাপক পদাধিকারী কাউকে এয়ার এমবুলেন্স দেবার নিয়ম নেই বলে তাকে তা দেয়া হলো না। সাধারণ এমবুলেন্সে করে যখন তাকে ঢাকায় আনা হল, ততক্ষণে ফুসফুসের সংক্রমণ এতটা বেড়ে গেছে যে করোনা হাসপাতালে আইসিইউর ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও সাত দিন পর তিনি মারা যান।

তার মৃত্যুর কদিন আগে একজন ইউ এন ও সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন, পেটে আঘাত পান এবং পা ভেঙ্গে যায়, তাকে চিকিৎসার জন্য এয়ার এমবুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয়।

ডাক্তার ম এর এমন মৃত্যুর খবরে সকলেই দুঃখ পান, কারণ ডাক্তারের জন্য অতি প্রয়োজনীয় পিপিই ডাক্তার ম পাননি বলে কোভিড আক্রান্ত হলেন, অথচ একই সময়ে দেখা গেছে অন্য অনেক দপ্তরের কর্মকর্তারা পিপিই পড়ে ফেসবুকে ছবি আপলোড দিচ্ছেন!! এই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে, টিভিতে এই মৃত্যু নিয়ে আলোচনা হতে লাগলো।

জেলার সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর মানুষ ভিআইপি ম- এর বাড়িও যেহেতু একই শহরে, তাই ডাক্তার ম- এর এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু নিয়ে ভিআইপি ম-এর অভিমত জানতে চাইলেন একজন টিভি সাংবাদিক; ডাক্তার ম-কে আইসিইউ, এয়ার এমবুলেন্স, পিপিই ইত্যাদি না দেয়া নিয়ে। ভিআইপি ম এককথায় উত্তর দিলেন, ডাক্তার ম-এর জন্য অন্য হাসপাতালে দুটো ভেন্টিলেটর আনা হয়েছিল, সেসব ব্যবহার না করে তাকে তার স্বজনেরা ঢাকায় নিয়ে গেছেন, অতএব এই মৃত্যুর দায় স্বজনদের। সেই অন্য হাসপাতালে আইসিইউ নেই, তাই ভেন্টিলেটর এনেও যে লাভ নেই, ভিআইপি ম-দের সম্ভবত এসব জানার দরকার হয়না। তিনি আরেকটি তথ্য দিলেন, ডাক্তার ম তার কোন রোগী দ্বারা সংক্রমিত হননি, বরং তিনি জেনেছেন ডাক্তার ম-এর বাড়ির পাশের বাড়িতে একজন ইতালি ফেরত মানুষ এসেছেন, তাই ডাক্তার ম-কে পিপিই না দেয়াতে দোষ কিছু হয়নি!

টিভিতে ভিআইপি ম-এর এই সাক্ষাৎকার শুনে মনে হলো, ইতালি ফেরত প্রতিবেশীর থেকে  সংক্রমিত হয়েছেন, এটা ডাক্তার ম-এর দোষ।  অথচ সেই ইতালি ফেরত যেন কাউকে  সংক্রমিত করতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করাটা যাদের দায়িত্ব ছিল তারা যে দায়িত্ব পালন করেন নি, তাদের কোন দোষ নেই!!

এদেশে কোভিড- ১৯ প্রথম শনাক্তের পর আড়াই মাস কেটে গেছে, এই দীর্ঘ সময় পরেও মনে হচ্ছে কোভিড রোগ সামলানোর সব দায় ডাক্তারদের দেয়া হয়েছে। ডাক্তারদের কাজ চিকিৎসা করা, কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা তাদের কাজ নয়। অথচ কোন সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিকল্পনা বা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ছাড়াই তাদের রোগী তথা জনসাধারণের মুখোমুখি করা হচ্ছে। এখন যদি দশটা আইসিইউ বেড সম্পন্ন হাসপাতালে বিশজন আইসিইউ চাহিদা নিয়ে রোগী আসেন, তবে চিকিৎসা দিতে না পারার দায় কি হবে ডাক্তারের? কিংবা হঠাৎ যদি রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়, ফলে ডাক্তার হিমসিম খান চিকিৎসা দিতে গিয়ে, তবে সেটা কি ডাক্তারের অপারগতা নাকি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার?

 জানতে ইচ্ছা করছে, ক পরিবারের নবীন সদস্যরা, কি এরপরও ডাক্তার হতে চাইবেন, নাকি আমলা হতে চাইবেন!

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১২:২৮

ডার্ক ম্যান বলেছেন: ডাক্তার চাইলে আমলা হতে পারেন

২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ৯:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: হ্যা, তা পারেন। কিন্তু কেউ কেউ আবার চিকিৎসা করতে ভালবাসেন।

আশাকরি ভালো আছেন। ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

২| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১২:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের দুঃখ কষ্ট আমাকে খুব যন্ত্রনা দেয়।

২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ১০:০১

করুণাধারা বলেছেন: আমাকেও দুঃখ দেয়, যখন অসহায়ের মতো মানুষের দুঃখ দেখে যেতে হয়, কিছু করার থাকে না।

ভালো থাকুন সপরিবারে, ঈদের শুভেচ্ছা।

৩| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১:১৩

কল্পদ্রুম বলেছেন: স্বাস্থ্য খাতের প্রশাসনিক ক্ষমতা হেলথ এডমিনিস্ট্রেশনে বিশেষ ট্রেইনিং/ডিগ্রী প্রাপ্ত ডাক্তারদের দেওয়া উচিত।সাথে ডাক্তারদের হাবি জাবি রাজনৈতিক সংগঠন বন্ধ করে কেবল বিএমডিসি কে একচ্ছত্র ক্ষমতাবান করতে হবে।তা না হলে এরকম চলবেই।এসব না করে কেবল আমলাদের দোষ দিয়ে লাভ নাই।ডাক্তার প ফ ব ভ ম মরতেই থাকবেন।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৪

করুণাধারা বলেছেন: স্বাস্থ্য খাতের প্রশাসনিক ক্ষমতা হেলথ এডমিনিস্ট্রেশনে বিশেষ ট্রেইনিং/ডিগ্রী প্রাপ্ত ডাক্তারদের দেওয়া উচিত।সাথে ডাক্তারদের হাবি জাবি রাজনৈতিক সংগঠন বন্ধ করে কেবল বিএমডিসি কে একচ্ছত্র ক্ষমতাবান করতে হবে।তা না হলে এরকম চলবেই।

শতভাগ সহমত। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? স্বাস্থ্য খাত খুবই লাভজনক জায়গা, এখানে দরকার না থাকলেও শতকোটি টাকার মেশিন কেনা যায়, লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আইসিইউর পর্দা কেনা যায়।

ডাক্তার মঈনকে আইসিইউ বা এয়ার এমবুলেন্স দেয়া হয়নি- এ সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিয়েছে।

আমার ব্লগে আসায় এবং প্লাস দিয়ে অনুপ্রেরণা দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ কল্পদ্রুম। ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।

৪| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: প্রবাসী দ্বারা যাতে অন্য লোক সংক্রমিত না হতে পারে যারা দেখবে তারা অবহেলা করছে।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৭

করুণাধারা বলেছেন: প্রবাসী দ্বারা যাতে অন্য লোক সংক্রমিত না হতে পারে যারা দেখবে তারা অবহেলা করছে।

অবশ্যই। শুরুতেই প্রবাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা দরকার ছিল।
ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন নেওয়াজ আলি।

৫| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১:৩৩

রুদ্র নাহিদ বলেছেন: কিছুই বলার নেই। এইভাবেই চলছে, চলবে।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:১০

করুণাধারা বলেছেন: :(( এছাড়া আমাদের কিইবা করার আছে!!

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রুদ্র নাহিদ। ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।

৬| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১:৪৯

আখেনাটেন বলেছেন: আমাদের আমলারা জাতীয় এই দুর্যোগে কী ভূমিকা রাখছেন? --- উনারা কষ্টে আছেন। এই কয়মাসে বেশ কয়টা বিদেশ ট্যুর মিস হয়ে গেল। সাথে ডলার।

এ কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা উনাদের দিক।

(তবে কিছু উদ্যোমী নিচের দিকের কর্মকর্তা খাটছে এই ভয়ঙ্কর মুহূর্তেও। তাদের জন্য শ্রদ্ধা।)

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৬

করুণাধারা বলেছেন: আমাদের আমলারা জাতীয় এই দুর্যোগে কী ভূমিকা রাখছেন? --- উনারা কষ্টে আছেন। এই কয়মাসে বেশ কয়টা বিদেশ ট্যুর মিস হয়ে গেল। সাথে ডলার। আমিও এমনটাই ভাবি। অবশ্য এরমাঝে আমি পুলিশদের ভূমিকা দেখে অবাক হই- করোনা কালীন সময়ে তাদের বাড়তি আয় কমে গেছে, তবু কোন লাভের আশা ছাড়াই তারা ষোল আনার জায়গায় আঠারো আনা কাজ করছেন। কোভিড আক্রান্ত রোগীকে তার আত্মীয়স্বজন ফেলে গেছেন, কিন্তু জানের ঝুঁকি নিয়ে এক পুলিশ তাকে ভ্যানে তুলে নিজে চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন, এমন ঘটনাও দেখা গেছে। কোন পুলিশ গরীবের চাল তেল চুরি করেছেন বলেও শুনিনি। এই পুলিশদের জন্যও শ্রদ্ধা।

মন্তব্য ও প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ আখেনাটেন। সারাদিন সময় পাইনি, তাই এই রাতে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাখছি।

৭| ২৫ শে মে, ২০২০ ভোর ৬:২৯

ইসিয়াক বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইলো আপু।
নিরন্তর শুভকামনা।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৭

করুণাধারা বলেছেন: সারাদিন নানা ঝামেলায় থাকায় উত্তর দিতে খুব দেরি করে ফেললাম ইসিয়াক!! দেরি করেই নাহয় আমিও ঈদের শুভেচ্ছা জানালাম।

৮| ২৫ শে মে, ২০২০ ভোর ৬:৪৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পড়ার পরে বিস্তারিত মন্তব্য হবে। B-)

এখন ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা দিয়ে গেলাম। ঈদ মোবারক! :)

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৪৪

করুণাধারা বলেছেন: ঈদের দিনে পোস্ট দেবার অসুবিধা হলো যে, উত্তর দিতে আসার সময় পাওয়া যায় না, তাই এত দেরি!

ঈদের শুভেচ্ছা জানানোয় অনেক ধন্যবাদ, আমিও ফিরতি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আপনার তো আজ বাসি ঈদ। :)

৯| ২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ৭:০৮

আমি সাজিদ বলেছেন: মনের কথাগুলো বলেছেন। জানেন তো আজকাল কোনটাকে প্রোমোট করা হয় সব জায়গায় - আমলা হওয়ার বিসিএসটাকে৷স্কুল কলেজ লাইফে ভালো করে চান্স পাওয়া মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি , ইউনিভার্সিটির ফাস্ট ক্লাস সাবজেক্ট পড়া ছেলেমেয়েদের আজকাল ওরাকলের গাইড নিয়ে দেড় দুই বছর জীবনের সময় নষ্ট করে আরেকটা কম্পিটিশনে নামতে হয় , কার বিসিএস হলো, এই কম্পিটিশনে। সে যাই হোক, প্রশাসন ক্যাডারের লোক পেছনের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডে যেমনই থাকুক না কেন, নিজেদের এক ধরনের ব্রাহ্মণ্ ভাবেন। হেলথ ক্যাডার বা অন্য টেকনিক্যাল ক্যাডারের উপর মাতবরি করেন। আমার এক স্যার সিভিল সার্জন হলেন, উনার ব্যাকগ্রাউন্ড বরিশাল মেডিকেল কলেজ, ক্যাডেট কলেজ। উনার ডিসি মহোদয় ঢাবি থেকে বাংলায় মাস্টার্স করা। ভাবেন, কি একটা অবস্থা। আপনি অতীতে সারাজীবন কম মেধার স্বাক্ষর রাখা মানুষজনের কাছ থেকে প্রশাসনে অনেক কিছু আশা করতে পারেন না। স্বাভাবিক।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১০:২৭

করুণাধারা বলেছেন: অতীতে সারাজীবন কম মেধার স্বাক্ষর রাখা মানুষজনের কাছ থেকে প্রশাসনে অনেক কিছু আশা করতে পারেন না। স্বাভাবিক
ডাক্তার মঈনকে এয়ার এমবুলেন্স দেয়া হয়নি তিনি যথেষ্ঠ সিনিয়র পদাধিকারী নন বলে, অথচ একজন ইউ এন ও সেই সুবিধা পেলেন! এই নিয়ম কে বানিয়েছে? প্রশাসনের কর্তারা। ব্রিটিশরা তাদের তাঁবেদারির জন্য একধরনের চাকুরে সৃষ্টি করেছিল, এখন তাদের প্রশাসন ক্যাডার বলা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বারে বারে যে বিপরীত সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, তাও এদের অবদান। আপনি ঠিকই বলেছেন, এরা নিজেদের ব্রাহ্মণ ভাবেন।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আমি সাজিদ। ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।

১০| ২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ৭:১০

আমি সাজিদ বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা। এই ধরনের লেখাগুলো বড় পরিসরে আলোচনার দাবীদার।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৩৪

করুণাধারা বলেছেন: আবার ফিরে আসায় ধন্যবাদ আমি সাজিদ। এই ধরনের লেখায় কেউ আলোচনা করতে চাইবেন না, তাতে ডান্ডার ভয় আছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কোন ডাক্তার বানান নি।

শুভেচ্ছা রইল।

১১| ২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ৭:৫৭

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সেই ইতালি ফেরত যেন কাউকে সংক্রমিত করতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করাটা যাদের দায়িত্ব ছিল
তারা যে দায়িত্ব পালন করেন নি, তাদের কোন দোষ নেই!!

....................................................................................................................................
বিড়ালের গলায় ঘন্টা কে বাধঁবে ???
ঠিক সময়ে সঠিক কাজটি না করলে জীবন কতটা দুর্বিষহ হয় আমরা তা প্রতক্ষ্যদর্শী ।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪১

করুণাধারা বলেছেন: ঠিক সময়ে সঠিক কাজটি না করলে জীবন কতটা দুর্বিষহ হয় আমরা তা প্রতক্ষ্যদর্শী । ঠিক!! ঠিক সময়ে পাঁচশ বা বড়জোর হাজার খানেক মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে আজকে হয়ত কোটি কোটি মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এত কসরত করতে হতো না!!

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ স্বপ্নের শঙ্খচিল। ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।

১২| ২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:৩৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাস্তবের আলোকে রচিত মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প। হাইরে! একজন ডাক্তারের এভাবে চলে যাওয়া কিছুতেই যেন মানতে পারছিনা।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা নিয়েন আপু।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪৫

করুণাধারা বলেছেন: গল্প না পদাতিক চৌধুরী, দুই শিশুকে এতিম করে পিতার চলে যাবার সত্যি ঘটনা। আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম, তাই এই পোস্ট।

আপনার দেয়া ঈদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম, আপনিও শুভেচ্ছা জানবেন।

১৩| ২৫ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:২৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ভাল কিছু বিষয় লেখাটিতে তুলে ধরেছেন ।
এখনকার অনেক ডাক্তারই আমলা হতে ইচ্ছুক মর্মে দেখা যায়,
কারণ আমলা হলে অনেকেই স্বাস্থ বিভাগের অনেক গুরুত্বপুর্ণ পোষ্টে থেকে দেশের ডাক্তারদের উপরে চেপে বসতে পারেন ।
যাহোক, আমার নীজ পরিবারে দুজন ডাক্তারী পেশাতেই আছেন ,এবং ফ্রন্টলাইন স্বাস্থকর্মী হিসাবে করোনার শিকারো হয়েছে।
এর মধ্যে পরিবারের একান্ত কাছের সদস্য হিসাবে করোনা আক্রান্ত আমি ও গিন্নীকে হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসাও
নিতে হয়েছে । এখন অবশ্য সকলেই আল্লার রহমতে সুস্থ আছি ।
আপনি ও পরিবারের সকলের জন্য রইল মঙ্গল কামনা।

ঈদের শুভেচ্ছা রইল

২৫ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

করুণাধারা বলেছেন: যে কাজটা আমি কখনও করি না, এখন তাই করলাম, সিরিয়াল ভেঙে আপনার মন্তব্যের উত্তর দিলাম। আসলে আপনার মন্তব্যের শেষ অংশ পড়ে আমি চমকে গিয়েছি, মনে হল এখনই উত্তর করি।

আপনার কথার অর্থ দাঁড়াচ্ছে আপনি আর ভাবী কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন!! আল্লাহকে অনেক শুকরিয়া, আপনারা সুস্থ্য হয়েছেন।এটা আল্লাহর অশেষ রহমত। মনে পড়ছে কোভিডের প্রথম দিকে সোহানী একটা পোস্ট দিয়েছিলেন, কয়েকজন বর্ষিয়ান ব্লগার যেন এই দুর্দিনে সুস্থ্য থাকেন সেই কামনা করে। আপনার নামও তার পোস্টে উল্লিখিত ছিল... আপনার মেয়ে সম্ভবত ডাক্তার, দোয়া করি সে যেন সুস্থ্য থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারে।

এই পোস্টটা অনেক দিন আগে লিখেছিলাম, ডাক্তার মঈনের মৃত্যুর পরপরই। আমাদের দেশে ডাক্তারদের নানা অসুবিধার মধ্যে কাজ করতে হয়, কেউ পিপিই পান না আবার কারো বাড়িওয়ালা বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেন... নানা অসুবিধার মধ্যে যে ডাক্তাররা কাজ করছেন সেটা অনেকেই জানে না।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন সপরিবারে, আর যদি সম্ভব হয়, তবে সুস্থ্য হবার জন্য কি পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন সেটা নিয়ে একটা পোস্ট দেবেন।

ঈদ মুবারক।

১৪| ২৫ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: দেশের হাজারো যুক্তিহীন নিয়ম-কানুনের মাঝে আরেকটা। একটা দেশ একদিনে রসাতলে যায় না। যুগ যুগ ধরে অনিয়ম আর অরাজকতাই এক সময়ে নিয়মে পরিনত হয়, আর এভাবেই দেশ ও সমাজে পচন ধরে। যেহেতু এমন সমাজে ভালো লোকেরা সাফার করে, তাদের পরবর্তী জেনারেশানের অনেকেই আর সৎ আর সঠিক পথে থাকতে চায় না, টাকা আর ক্ষমতার পেছনে ছোটে। এভাবেই চলে আসছে।

তবে, এর মধ্যেও ব্যাতিক্রম থাকে। এই জীবনের পরে আরেক জীবনে উনারা নিশ্চয়ই এর প্রতিদান পান। এটাই উনাদের আসল প্রাপ্তি। বলাই হয়ে থাকে যে, দুনিয়াতে ভালো মানুষেরা বেশী ভুগবে......বিশেষ করে আমাদের দেশের জন্য তো এটা আরো বেশী সত্যি।

পরিবারের শিক্ষা এ'ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দু'একটা ব্যত্যয় ছাড়া সাধারনতঃ পরিবারের ভ্যালুজগুলোকেই পরবর্তী জেনারেশান ধরে রাখে।

২৬ শে মে, ২০২০ সকাল ১০:১১

করুণাধারা বলেছেন: দেশের হাজারো যুক্তিহীন নিয়ম-কানুনের মাঝে আরেকটা। একটা মানুষ মারা যখন মারা যাচ্ছে, তখন তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করাটাকেই প্রাধান্য দেয়া উচিত, ফাইল খুলে কোন পদে কতটুকু পাবার নিয়ম আছে তা যাচাই করা নয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের আমলাতন্ত্রের প্রধান কাজ কেবল মিটিং করে নানা রকম আইন বানানো, মানুষের উপকার করা না। :(

পরিবারের শিক্ষা এ'ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দু'একটা ব্যত্যয় ছাড়া সাধারনতঃ পরিবারের ভ্যালুজগুলোকেই পরবর্তী জেনারেশান ধরে রাখে। সেটা ঠিক। কিন্তু আমার মনে হয় ক্ষমতার দাপটে মানুষ সহমর্মিতার কথা একেবারেই ভুলে যায়, পারিবারিক শিক্ষা কিছু পেয়ে থাকলেও তা ভুলে যায়।

দ্বিতীয়বার আসায় দ্বিগুন ধন্যবাদ ভুয়া মফিজ।

১৫| ২৫ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

জুন বলেছেন: ঢাকায় থাকা আমাদের ঘনিষ্ঠ চার জন ডাক্তার আত্মীয়র মাঝে দুজন সরাসরি করোনা হসপিটালে চিকিৎসক হিসেবে আছেন। তাদের মা বৌরা সারাক্ষণ আতংকের মাঝে দিনরাত কাটাচ্ছে। সেখানে আমলারাই তো নিরাপদে আছে বলতে হয়। আমলাদের ব্যাপারে আখেনাটেনের মন্তব্যে সহমত। আহারে কত বিদেশ ট্যুর, ফাউ কিছু ডলার ইনকাম আর শপিং বন্ধ হয়ে গেল। তাও আপনারা তাদের দুঃখ বুঝতে পারছেন না /:)
লেখায় প্লাস করুনাধারা।

২৬ শে মে, ২০২০ সকাল ১০:২২

করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্য আর প্লাসের জন্য ধন্যবাদ জুন।

আমি এই কথাটাই বলতে চেয়েছি। আমলারা কেবল কিছু সংখ্যা নিয়ে হাজির হন (অবশ্য হাজির হতেও তো দেখি না) তারপর আমাদের লকডাউন, লকডাউন শিথিল ইত্যাদি শব্দের সাথে পরিচিত করান। এর ফল ভোগ করতে হয় ডাক্তারদের। :(

আপনার আত্মীয় ডাক্তার সহ সকল ডাক্তার যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবা করছেন তাদের জন্য দোয়া রইল।

ঈদ পার হয়ে গেছে, তবু শুভেচ্ছা রইল।

১৬| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:১৯

শের শায়রী বলেছেন: প্রথমেই ঈদ মোবারক বোন। আপনার পোষ্ট টা দুবার পড়লাম। প্রথমবার ভুল কমেন্ট দিয়ে ফেলছিলাম, যা আমার অনুরোধ সাপেক্ষে আপনি ডিলিট দেয়ায় আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

পোষ্টের ব্যাপারে, অনেক কিছুই বলার ছিল, কিন্তু যাদের নিয়ে কথা বলছেন, তাদের নিয়ে আলোচনায় যেতে উৎসাহী না। কেন না? সে উত্তরও দেয়া সম্ভব না। আপনি সমঝদার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আমরা শুধু পড়ে যাই আর দেখে যাইদের দলে। ভীতু শ্রেনীর মানুষদের এই এক সমস্যা। বলার কিছু নেই বোন।

নিজে সুস্থ্য থাকুন। পরিবারের সদস্যদের সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করুন। আল্লাহ আপনার হেফাযত করুক।

২৬ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৪৬

করুণাধারা বলেছেন: ঈদ মুবারকের প্রত্যুত্তরে ঈদ মুবারক বলতে হয়, অনেক চেষ্টা করেও ঈদের দিনে তা আপনাকে বলতে পারলাম না শের শায়রী। ঈদের দিনের ব্যস্ততার মাঝে ব্লগে বেশি সময় থাকতে পারিনি। তাই, দেরি করেই নাহয় আপনাকেও ঈদ মুবারক জানালাম।

মনের ক্ষোভ জমা হয়েছিল, তাই এই লেখা। আপনার ভাবনা ঠিক আছে, সবসময় সব কথা বলা যায়না! তবে মন্তব্য আর প্লাস দিয়ে অনুপ্রাণিত করেছেন, সেজন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনিও সপরিবারে সুস্থ্য থাকুন, দোয়া রইল।

১৭| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




ঘটে যাওয়া বাস্তবের গল্প।
মেধাবী হওয়া এক জিনিষ আর মানবিক মন-মানসিকতা আরেক জিনিষ। গল্পে সেটাই প্রমানিত।

যে দেশে আমলারা প্রজাতন্ত্রের রাজা হন আর প্রজারা কামলা, সে দেশে এর চেয়ে বেশী কিছু আশা করাই বোকামী। অবশ্য এ জন্যে আমরা আহাম্মক জনগণই দায়ী। আমরাই আমাদের বেতনভুক কর্মচারীদের " স্যার... স্যার..." বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলে তাদের জাতে উঠিয়ে দিয়েছি। ফলে এই সব আমলারা ভেবেই বসেন তারাই দন্ডমুন্ডের কর্তা আর জনগণ তাদের সামনে করজোরে দন্ডায়মান আসামী।
আমরা যুগের পর যুগ ধরে মানসিকতার পরিবর্তন, সচেতন হবার কথা বলে আসছি, দেশটাকে বাঁচাতে। শুধু এই পরিবর্তনটা করুন--- আমলাদের "স্যার" না বলে 'ডিসি সাহেব", "ওসি সাহেব", "সেক্রেটারী সাহেব" এমন ভা্বে সম্বোধন করতে শুরু করুন। এই মানসিকতা জীবন্ত রাখুন - " আমি এই দেশের একজন মালিক, আমার ট্যাক্সের দেয়া টাকায় বেতনভোগী সব সরকারী কর্মচারীই আমার সেবায় নিয়োজিত" । তৃনমূল থেকে শুরু করে সর্বস্তরে শুধু এটাই প্রতিষ্ঠিত করুন, প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিনত করুন, দেখবেন সবাই সোজা হয়ে গেছে।

এই পোস্টে বিভিন্ন মন্তব্যে যে মনবেদনা, যে অক্ষমতার ক্রোধ ফুটে উঠেছে তার আলোকেই এই কথা বলা।

৬ নম্বর মন্তব্য আর তার প্রতিমন্তব্য সুন্দর আর তাতে সহমত।

ঈদের শুভেচ্ছা।

২৬ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪১

করুণাধারা বলেছেন: মেধাবী হওয়া এক জিনিষ আর মানবিক মন-মানসিকতা আরেক জিনিষ। মেট্রিকে প্রথম স্থান অধিকারী, মাস্টার্সে প্রথম হওয়া জ্যেষ্ঠ মেধাবীর উদ্ধত কথাবার্তা আর সংবেদনীলতা দেখে আমি মাঝে মাঝেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে এই কথাই ভাবতাম...

আপনার মন্তব্যের বাকি অংশেও সহমত পোষণ করছি, কিন্তু স্যার বলার স্বভাব আমাদের মজ্জাগত হয়ে গেছে, এখন চেষ্টা করলেও আর বদলানো সম্ভব না। আমাদের করের টাকায় উচ্চ বেতনে যারা আমাদের সেবক হিসেবে নিয়োজিত হন, তারা আমাদের প্রাপ্য সেবাটুকু কখনোই কি কোন কিছুর বিনিময় ছাড়া দিয়েছেন? প্রাপ্য সেবা পেতে অন্তত "স্যার" সম্বোধন করে জনগণের সেবকদের মন ভালো রাখতে হয়। এই সিস্টেমের বদল হতে পারে যদি আমরা, সাধারণ জনগণ আমলাদের কাজের জন্য জবাবদিহিতা চাইতে পারি। তেমন কিছুর সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতে দেখছি না, কারণ সব সিস্টেমের স্রষ্টা আমলারাই। আমলারা সব নিয়ম তৈরি করেন। এমনকি কোন পদাধিকারীর প্রাপ্য সুবিধা কতটুকু; ইমার্জেন্সি অনুযায়ী কিছু নিয়মের ব্যত্যয় করার সুযোগ তারা রাখেন না।

সম্ভবত এই কারণেই চিকিৎসক এবং প্রকৌশলীরা নিজেদের অর্জিত জ্ঞান কাজে না লাগিয়ে সাধারণ জ্ঞান মুখস্থ করে বিসিএস পাশ করতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। এটা মস্ত বড় অপচয়; কিন্তু এসবের কোনো পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা দেখছি না।

এই লিখাটা লিখেছিলাম ক্ষোভ আর দুশ্চিন্তা থেকে। কোভিডের এই সময়ে বারে বারে গেট খোলা আর বন্ধ করার অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের ফলের ভুক্তভোগী হবেন ডাক্তারেরা, ফলে ভুগতে হবে আমাদেরো...

ঈদ শেষ হয়ে গেছে, তবু আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই আহমেদ জী এস।

১৮| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৪২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: ছোটকালে পড়েছি মানুষের মৌলিক অধিকার পাঁচটিঃ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব তার নাগরিকদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের ব্যবস্থা করা।

কয়েকদিন আগে এস আলম গ্রুপের জনাব মোরশেদুল আলম মারা যাওয়ার পর থেকে একটা স্ট্যাটাস অনেককেই শেয়ার করতে দেখলাম যার সারমর্ম হলঃ সামর্থ্য থাকা সত্বেও কেন তারা চট্টগ্রামে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত কোন হাসপাতাল স্থাপন করেননি? কোন শিল্পগোষ্ঠী হাসপাতাল স্থাপন করলে সেটা হবে তাদের CSR এর অংশ, এর জন্য তারা আইনত বাধ্য নয়। কিন্তু যে রাষ্ট্র, যে সরকার তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পূরণের জন্য আইনত বাধ্য, স্বাস্থ্যখাতের এই দূর্দিনে তাদের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্তি কি?

ডাক্তার ম'কে চিনতে পেরেছি, তবে আমলা ম'কে চিনতে পারিনি।পোস্টে ভাললাগা রইল।

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৮:১১

করুণাধারা বলেছেন: কিন্তু যে রাষ্ট্র, যে সরকার তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পূরণের জন্য আইনত বাধ্য, স্বাস্থ্যখাতের এই দূর্দিনে তাদের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্তি কি?

আমি তুমি আমরা, করোনার এই দুর্দিনে আমাদের প্রাপ্তি এটুকুই, স্বাস্থ্ খাতের বেহাল দশা আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে। বাচ্চাদের হাতে যেমন সুন্দর খেলনা দিয়ে ভোলানো হয়, আমাদের জন্য তেমনি অসংখ্য প্রাইভেট হাসপাতাল দিয়ে বোঝানো হয়েছে নাগরিকদের সুন্দর চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, আসলে এগুলো কেবল ব্যবসার উদ্দেশ্যে তৈরি। ঢাকা শহরের কোন রাস্তায় আমি এক কিলোমিটার চলেছি আর কোন হাসপাতাল দেখিনি এমন কখনো হয়নি, এত অজস্র হাসপাতাল এখানে। অথচ এই শহরেই মানুষ ছয় সাতটা হাসপাতালে ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে এমবুলেন্সে মারা গেছেন এমন অনেকগুলো খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে, অথচ কোন হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এস আলম গ্রুপের একজন মারা যাবার পর মানুষের কথা শুনে মনে হচ্ছে তারা হাসপাতাল স্থাপন করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত!! স্কয়ার গ্রুপ কি হাসপাতাল বানায় নি? সেই হাসপাতালে কোভিডের পরীক্ষা হবে বলে সরকার নির্ধারিত করেছেন ৩৫০০টাকা। স্কয়ার একজন জুনিয়র ডাক্তার বসিয়ে রেখেছে, এক হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থাপত্র দেন, অর্থাৎ ৪৫০০ টাকা লাগছে পরীক্ষা করতে। এস আলম গ্রুপ হাসপাতাল বানালে কি বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিত? দরিদ্র জনগনের চিকিৎসার জন্য তেমন ভালো কোন ব্যবস্থা নেই।

ভিআইপি ম কে সেই ধাঁধা আপনি একটু ভাবলেই সমাধান করতে পারবেন। একটা ক্লু দেই, ভিআইপি বলতে আমি আমলাদের বস বলে বুঝিয়েছি। ২০ নাম্বার মন্তব্য পড়লেই বুঝতে পারবেন।

১৯| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



আহমেদ জী এস ভাইয়ের মূল্যবান কমেন্টটি ভাববার মত। শের শায়রী ভাইও সুন্দর লিখেছেন।

আরও অনেকের কমেন্ট ভালো লেগেছে।

অনিয়মের যে ঘেরাটোপে আমরা আটকে আছি পোস্টটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন তার কিয়দংশ।

আপনার মর্মযাতনায় সমব্যথী।

ঈদ মুবারক। +++

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৭

করুণাধারা বলেছেন: অনিয়মের ঘেরাটোপে আমরা আটকে আছি, কিন্তু এমন কেন হবে!! এই পোস্টে একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করেছি, অথচ প্রতিদিন নতুন নতুন অনিয়মের কথা শুনছি। সরকারি হাসপাতালের উপর থেকে চাপ কমাতে সরকার কিছু বেসরকারি হাসপাতাল নির্ধারিত করে যাদের ৩৫০০ টাকার বিনিময়ে কোভিড পরীক্ষা করার কথা, অথচ এরা নিচ্ছে ৪৫০০টাকা, এজন্য তারা সিন্ডিকেট করে নিয়েছে। এতদিন শুনে এসেছি তেল চিনির দাম বাড়াতে সিন্ডিকেট হয়, এখন দেখি কোভিড পরীক্ষার ফিস বাড়াতেও সিন্ডিকেট হয়। এসব দেখেশুনে ভাবনা বেড়েই যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগলো নতুন নকিব। ভালো থাকুন, শুভকামনা রইল।

২০| ২৬ শে মে, ২০২০ সকাল ১০:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: এই একটিমাত্র ট্রেডমার্ক শব্দ "রাবিশ"ই আপনার দেয়া অক্ষরের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কিছু চরিত্রকে যেন লাইমলাইটে নিয়ে এলো! সাহস করে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, এজন্য সাধুবাদ। আলোচনা যে পাঠকদের ভাবনাকে নাড়া দিয়েছে, তা মন্তব্যগুলো থেকে বোঝা যায়।
প্রথম ভিআইপি ম থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। দ্বিতীয় ভিআইপি ম কে ভেবেছিলাম, উনি দেশের কূটনীতিকদের বর্তমান অভিভাবক। ওনার মুখের ভাষায় ভব্যতা ও শিষ্টাচার প্রকাশ পাবে। কিন্তু করোনা সমস্যা শুরু হবার পর উনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রবাসী বাঙালিদেরকে নিয়ে যে অভব্য ও অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করেছিলেন, একজন টপ ডিপ্লোম্যাট এর মুখে ওরকম ভাষা শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম।
যে দেশে সরকারের পরিসর যত কম, সে দেশের জনগণ তত বেশী স্বস্তিতে থাকে। ছোট্ট দেশ হিসেবে আমাদের দেশে ব্যুরোক্রেসীর পরিসর অনাবশ্যকভাবে দীর্ঘায়িত হয়েছে, অনেকটাই রাজনৈতিক বিবেচনায়। নতুন কমিটী করে সেটা কাট ছাঁট করা এখন সময়ের দাবী। কাজ করতে ও করাতে জানলে অনেক কম লোক দিয়েই বেশী এবং উৎকৃষ্ট মানের কাজ করা ও করানো যায়। করোনা সামলানো নিয়ে শুরু থেকে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন বেসামাল এবং দিশেহারা অবস্থার পরেও এ মন্ত্রণালয়ে কেন উপযুক্ত লোক বসিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে না, এ প্রশ্নের উত্তর কে কার কাছে চাইবে? কোন চ্যানেলে?

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ৯:২২

করুণাধারা বলেছেন: বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট... B-)

আজ লকডাউনের দুইমাস পূর্ণ হল, ৬১ দিন। দিন দিন আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এতটা অনিশ্চিত দিন জীবনে আগে কখনো আসেনি। আজকে আমার এক আত্মীয় করোনার লক্ষণ নিয়ে পরীক্ষা করতে সরকার নির্ধারিত এক বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিল। বলল লাইনে দাঁড়ানো প্রায় দেড়শ মানুষ, পরীক্ষা করা যাবে সত্তর জনের, বাকিদের ফিরে যেতে হবে শুনে সবাই হৈচৈ শুরু করেছে। এই হাসপাতাল সরকার নির্ধারিত ৩৫০০ টাকা না নিয়ে নিচ্ছে ৪৫০০ টাকা। সব হাসপাতাল সরকার নির্ধারিত টাকার বেশি নিচ্ছে। আমার আত্মীয় পরীক্ষা না করে ফিরে এসেছে। একটা বিশৃঙ্খলা চলছে চিকিৎসা খাতে, শিগগিরই যেন সব ঠিক হয়ে যায় সবসময় এই প্রার্থনা করছি।

মন্তব্য আর প্লাস দিয়ে অনুপ্রাণিত করায় অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.