নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

করুণাধারা

করুণাধারা

জীবন যখন শুকাইয়া যায় করুণাধায় এসো

করুণাধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঝুঁকিপূর্ণ এইচএসসি পরীক্ষা আর অন্যান্য ভাবনা

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৬

আমার পরিচিত কয়েকজন এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মাঝে মাঝে তাদের কাছে খবর নিতাম পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হলো কিনা জানতে। শুনেছিলাম পরীক্ষা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেবার জন্য একটা কমিটি করা হয়েছে এবং কমিটির মতে বিশেষ ব্যবস্থায় নভেম্বর নাগাদ পরীক্ষা নেয়া সম্ভব। বিশেষ ব্যবস্থাগুলো এমন:

১)পরীক্ষা শেষ করা হবে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে, একই বিষয়ের দুই পত্র পরীক্ষা একদিনে  দুই ঘন্টা দুই ঘন্টা করে নেয়া হবে, ফলে সাত বিষয়ের পরীক্ষা এখনকার মত দুই মাস যাবত না নিয়ে তাত্বিক পরীক্ষা ৭ কার্যদিবসে, ১৫ দিনের মধ্যে নিয়ে ফেলে পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ করা হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে না, টেস্ট পরীক্ষার নম্বরকে প্রাপ্ত নম্বর ধরা হবে।

২) এইচএসসি পরীক্ষার অনুষ্ঠিত হয় কলেজগুলোতে, এবার সেই সাথে আশেপাশের স্কুলগুলোতেও পরীক্ষা নেয়া হবে (যেহেতু স্কুল বন্ধ) যাতে পরীক্ষার্থীদের মাঝে প্রয়োজনীয় ছয় ফিট দূরত্ব বজায় রাখা যায়।

৩) পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে করোনা টেস্ট করে কেবলমাত্র নেগেটিভ রেজাল্ট হলেই পরীক্ষা দিতে আসবে টেস্টের রিপোর্টসহ। পরীক্ষায় ব্যবহৃত ক্লিয়ার ব্যাগ, কলম, ক্যালকুলেটার স্যানিটাইজার দিয়ে বিশুদ্ধ করবে। সকলে মাস্ক পড়বে, হলে ঢোকার আগে হাত স্যানিটাইজ করবে।

৪) পরীক্ষার গার্ড এবং পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য সরকারি খরচে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী দেয়া হবে, যাতে পরীক্ষার্থীদের কাগজ পরীক্ষার সময় তারা ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারেন। একদিনে দুই পরীক্ষা হবার কারণে তাদের কাগজপত্র ধরার ঝুঁকিও কম হবে। তারপরও একই মানুষকে পুরো পরীক্ষা কালে ডিউটি না দেয়া হবে না। সরকারী খরচে তাদের করোনা টেস্ট হবে, নেগেটিভ হলে ডিউটি করতে পারবেন, পজিটিভ হলে পারবেন না।

৫) যদি দেখা যায় এরপরও পরীক্ষা নেবার অনুকূল পরিস্থিতি হয়নি, তবে প্রি টেস্ট আর টেস্টে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হবে।

শুনেছিলাম এইচএসসি নিয়ে পরিকল্পনা এমনই ছিল- ঝটপট পরীক্ষা নিয়ে ফেলা, ডিসেম্বর/ জানুয়ারি নাগাদ ফল প্রকাশ ইত্যাদি। এই ব্যবস্থায় ছাত্রদের ঝুঁকি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে। শিক্ষকদের ঝুঁকির ব্যাপারে বলা হয়েছে যে এখন যখন সর্বত্র সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত, অফিস ডিউটি, ট্যুর করতে পারছেন তবে শিক্ষকেরা মাত্র কটা দিন কেন তাদের ডিউটি করতে পারবেন না?

গতকাল শুনলাম এইচএসসি পরীক্ষা হবে না। জেএসসি আর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফলাফল নির্ধারিত হবে।  জানি না, কেন আগের পরিকল্পনা বদলে দিয়ে পরীক্ষা না নেবার এই বর্ণবাদী সিদ্ধান্ত নেয়া হলো!! বর্ণবাদী সিদ্ধান্ত বলছি, কারণ এই অক্টোবর মাসেই হতে যাচ্ছে দুটো পাবলিক পরীক্ষা, ও লেভেল আর এ লেভেল পরীক্ষা। এই দুই পরীক্ষা অনলাইনে নয়, স্কুলে বসেই দেবে শিক্ষার্থীরা কিছু নিয়ম মেনে। ও লেভেল এ লেভেল পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হলে এইচএসসি নেয়া কেন যাবে না? এর কারণ কী এটাই, আমাদের সমাজের উঁচু তলার মানুষেদের সন্তানেরা ও লেভেল/ এ লেভেল পড়ে তাই তাদের শিক্ষায় গলদ থাকা চলবে না, আর আমজনতার সন্তানদের শিক্ষায় গলদ সৃষ্টি করা দরকার!! আমাদের বিল্ডিঙের ক্লিনারের মেয়ে  এইচএসসি পরীক্ষা দেবে, গ্রামের কলেজে ফিস চৌদ্দ/ পনের হাজার টাকা। সে আমাদের সবার থেকে এই টাকা চেয়ে নিয়ে ফিস জমা দিয়েছে। আরো কয়েকজনকে আমি জানি যারা অনেক কষ্টে পরীক্ষার ফিস জমা দিয়েছে। জমাকৃত ফিসের এই কয়েকশ' কোটি টাকা এখন কিসে ব্যয়িত হবে?

কেউ বলতে পারেন একটানা বসে চার ঘণ্টা পরীক্ষা দেয়া অসম্ভব। আসলে এটা কঠিন কিছু নয়, আমিও দিয়েছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন পরীক্ষা এলেই একদল ছাত্র পরীক্ষা পেছানোর জন্য আন্দোলন করত, তাদের দাবি ছিল এত কঠিন বিষয়ে পরীক্ষা দেবার জন্য ১৫ দিনের পরীক্ষা- প্রস্তুতি ছুটি পর্যাপ্ত নয়। একবার শিক্ষকেরা ক্ষেপে গিয়ে পরীক্ষা পরের সেমিস্টার পর্যন্ত পিছিয়ে দিলেন, অর্থাৎ দুই সেমিস্টারের পরীক্ষা একদিনে হলো, নির্ধারিত তিন ঘণ্টার বদলে চার ঘণ্টায়। সেই পরীক্ষা আমরা দিয়েছিলাম আর কোন উপায় না থাকায়, দুদিনের গ্যাপে দুই সেমিস্টারের পড়া পড়ে... এবার এইচএসসির অনেক ছাত্র এই কয় মাস নিয়মিত পড়ে গেছে পরীক্ষা হবার আশায়, একদিনে দুই পরীক্ষা দিতে তাদের কোন অসুবিধা হবার কথা নয়।

হতাশ লাগছে এটা ভেবে, বড়লোকের বাচ্চাদের ও এ লেভেল পরীক্ষা দিতে দেয়া হচ্ছে, কারণ এরপর তাদের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে, অফলাইন বা অনলাইন ক্লাস যেটাই হোক। অথচ আমাদের মতো আমজনতার সন্তানদের লেখাপড়ার কোন গুরুত্ব নেই!! বরং আমজনতার শিক্ষাকে ধাপে ধাপে ধ্বংস করা  হয়েছে। ধ্বংসের প্রক্রিয়া বুঝতে গেলে কয়েক বছর পেছনে মেতে হবে, যখন শিক্ষা ব্যবস্থা এমন ছিল যে মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হতো। আগে এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হতো ১৫/২০ দিনে, ফলাফল বোঝানো হতো ডিভিশন দিয়ে, ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড ডিভিশন ইত্যাদি। গড়ে ৭৫% নম্বরকে বলা হতো স্টার মার্ক, এটা পাওয়া খুব সহজ ছিল না তাই কেউ স্টার নম্বর পেলে তাকে মেধাবী বলা যেত। কোন বিষয়ে ৮০% বা তদূর্ধ্বকে বলা হতো লেটার মার্ক। বোর্ডের এই দুই পরীক্ষায় ফল প্রকাশ হলে প্রথম বিশজনের নাম ছাপা হতো পত্রিকায়, আর সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে যে প্রথম স্থান অধিকার করতো মা-বাবা সহ তার ছবি ছাপা হত পত্রিকায়। এই দুই পরীক্ষায় মেধার ভিত্তিতে বৃত্তি দেয়া হতো। এইসব করা হতো শিক্ষায় ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করতে।

মেধাবীদের উৎসাহ দেবার জন্য বৃত্তি পরীক্ষা হতো পঞ্চম আর অষ্টম শ্রেণীতে। টাকার পরিমাণ অল্প, কিন্তু মেধার যাচাই হতো বলে শিক্ষার্থীরা খুব চেষ্টা করত এই বৃত্তি পেতে।

বলা হল মেধা যাচাইয়ের এই পদ্ধতি বৈষম্যমূলক। তাই বিদেশের শিক্ষা পদ্ধতি অনুযায়ী আমাদের দেশে গ্রেডিং পদ্ধতি আনা হলো এসএসসিতে প্রথম ২০০১ সালে, সব বোর্ড মিলে সে বছর সর্বোচ্চ জিপিএ ৫ পেলেন ১৯ জন (সম্ভবত), দ্বিতীয় বছরে ৭৬ জন। (কোন বিষয়ে ৮০ নম্বর পেলে সেটা গ্রেড ৫, সব বিষয়ের গড়কে বলা হলো জিপিএ)। এরপর আনা হল চতুর্থ বিষয়ের পদ্ধতি, যাতে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা বাড়ে, বাড়লোও। বলা হলো এটাই ছাত্রদের মেধা বিকাশের সর্বোত্তম পদ্ধতি; যারা চতুর্থ বিষয় ছাড়াই জিপিএ ৫ পেল তাদের নাম হলো গোল্ডেন ফাইভ। মা-বাবা, ছাত্র সবাই মিলে ছুটতে লাগলো জিপিএ ফাইভের এর পেছনে!! কোন বিষয়ে খুব ভালো করে শেখার দরকার আর রইলো না, কারণ কোনমতে ৮০ তোলা দরকার!!

২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পরীক্ষা তুলে দিয়ে পাবলিক পরীক্ষা শুরু হলো, নাম হলো পিইসি। কত সালে ঠিক মনে করতে পারছি না, অষ্টম শ্রেণীতে শুরু হলো জেএসসি নামক পরীক্ষা। এগুলো পাবলিক পরীক্ষা, জানা গেল পরবর্তী জীবনে এই পরীক্ষা গুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হবে। ফলে দেখা গেল চতুর্থ শ্রেণী শেষ করেই শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে নাম লেখাচ্ছে জিপিএ পাঁচ পাবার জন্য। শেখার আনন্দ, মেধার লড়াই এই সবকিছু বাদ হয়ে ছাত্রদের পরীক্ষাতংক শুরু হলো। পরীক্ষায় খারাপ করে অনেক ছাত্র আত্মহত্যা করতে লাগলো, পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রও!!

২০১০ সালে কোন রকম প্রস্তুতি/ প্রশিক্ষণ ছাড়াই সৃজনশীল পদ্ধতি নামে এক পদ্ধতি চালু হলো, যে পদ্ধতি সম্পর্কে ছাত্র  শিক্ষক কারোরই তেমন ধারণা ছিল না। তাই সৃজনশীলতা শিখতে ছাত্ররা কোচিং আর গাইড বইয়ের সাহায্য নিতে লাগলো... শিক্ষা ব্যবস্থায় এলো বানিজ্য। মেধার চর্চা আর মেধাবীদের কদর এভাবে ক্রমান্বয়ে কমতে লাগলো, ছাত্ররা সহজে জিপিএ ফাইভ পাবার পথ আবিষ্কার করে ফেলল!

২০১৪ সাল থেকে শুরু হলো প্রশ্ন ফাঁস পদ্ধতি, প্রথমে এইচএসসি থেকে শুরু হলেও পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যেই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্যও এই প্রশ্ন ফাঁস পদ্ধতি খুলে দেয়া হলো। জিপিএ ফাইভের হার বেড়ে হলো হাজার হাজার হাজার...

 সবশেষে ২০২০ এল অটোপাশ পদ্ধতি, এই পদ্ধতির সুফল এই যে গতবছর এইচএসসিতে ফেল করারাও এবার পাশ করে যাবে, সবাই সুখী হবে, ভালো ফল করতে না পেরে আত্মহত্যা কেউ করবে না!!

বড়লোকের ছেলেমেয়েরা গাড়ি চড়ে ও/এ লেভেল দিতে যাবে বলে হয়তো তাদের পরীক্ষা নেয়াতে কোন ঝুঁকি নেই... এইচএসসিতেই সব ঝূঁকি। কেন?

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: অসাধারন লিখেছেন আপু। লেখাটা কপি করে ফেসবুকে পোস্ট করতে চাই। ব্লগ কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ পোস্টটি স্টিকি করার জন্য।

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০৫

করুণাধারা বলেছেন: প্রথম মন্তব্য আর প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ ঢাবিয়ান। ক্ষোভ আর হতাশা থেকে লিখেছি। অবশ্যই এটা ফেসবুকে পোস্ট করতে পারেন। এমন বৈষম্য কেন হবে?

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে চরম একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইচ্ছে করলেই যার যার কলেজে বিধি মেনে পরীক্ষা নেয়া যেত। লাখ লাখ পরীক্ষার্থীর জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলার কোন অর্থই নাই। আমার পরিচিত এক আত্মীয়ার ছেলে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থী ছিল এবার। ছেলে পড়াশোনায় খুবই ভাল। এই খবর শোনার পর এত হতাশ হয়েছে যে, বারবার বলছে কেন ছেলেকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ায়নি!!

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১২

করুণাধারা বলেছেন: এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে চরম একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আবার এটাও শুনছি, এটা সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। এর ফলে আমার মতো কিছু মানুষ এইচএসসি নিয়ে ভাববে, আর অন্য আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাবে...

কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়, এজন্য অনেক ছাত্র এই পরীক্ষায় খুব পড়াশোনা করে। এদের অনেকের আশা ভঙ্গ হবে। অথচ পরীক্ষা নেয়া খুব কঠিন ছিল না।

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এখন আপনি বলেন,
দেশে বালিকা বিদ্যালয় থাকার পক্ষে যুক্তিটা কী?

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১৫

করুণাধারা বলেছেন: আমি আপনার কথা বুঝতে পারিনি মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। এখানে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ এলো কেন?

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১৯

শায়মা বলেছেন: আমার মনে হয় ও লেভেল এ লেভেলের সেন্টারগুলি যে সব জায়গায় হয় যেমন বসুন্ধরা কনভেনশন, ব্রিটিশ কাউন্সিল, ম্যারিওট বা বড় বড় স্কুলগুলোতে সেসব জায়গায় স্যানিটাইজিং সহ সব রকম ব্যাবস্থা নিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব হলেও সারা দেশের আনাচে কানাচে গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কলেজ বা সেন্টারগুলোতে সম্ভব হবে না। তাছাড়া অনেক মানুষই দেখেছি করোনা নিয়ে উদাসীনও কাজেই এতে গ্রামে গঞ্জেও করোনা বৃ্দ্ধি পেতে পারে। পরীক্ষার চাইতেও জীবনের মূল্য বেশি। তাই অনলাইনে হলেও হয়ত কিছুটা রক্ষা ছিলো কিন্তু অনলাইনই বা সকলে পাবে কোথায়?

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৩৫

করুণাধারা বলেছেন: ব্রিটিশ কাউন্সিলের যে এই পরীক্ষাগুলোর আয়োজন করে, তার কাছ থেকেই শুনেছি এবার পরীক্ষাগুলো স্কুলে স্কুলে হবে, সাস্থ্যবিধি মেনে। এটা ঠিক এই ছাত্র সংখ্যা অনেক কম, তাই ম্যানেজেবল, আমাদের ১৩/ ১৪ লাখ ছাত্রের পরীক্ষা নেয়া কঠিন। কিন্তু এখন গ্রামে শুনছি করোনার প্রকোপ নেই।

বিজ্ঞজনেরা একটা পথ বের করতে পারতেন বলে আমার বিশ্বাস, কিন্তু সদিচ্ছাটাই যে নেই! :(

৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৩৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: কি ধরনের সার্টিফিকেট ও মার্কশীট তৈরী হবে সেটাও চিন্তার বিষয়। দেশে হোক বা বিদেশে মেট্রিক ও ইন্টারমিডীয়েট পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশীট সারাজীবন প্রয়োজন হয়। জেএসসি এবং এসএসসির সাবজেক্টতো পুরোপুরিই ভিন্ন এইচএসসি থেকে। তাহলে মার্কসীট কিভাবে তৈরী করবে? এর থেকে প্রি টেস্ট ও টেস্ট এর রেজাল্ট বিবেচনা করলেও সেটা অনেকখানি ভ্যলিড হত।

একটু আগে আমার আত্মীয়ার সাথে কথা বললাম। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আগামীবছর আবার পরীক্ষা দেবে। এক বছর নষ্ট হোক সেটা তারা মেনে নেবে।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:০৩

করুণাধারা বলেছেন: কি ধরনের সার্টিফিকেট ও মার্কশীট তৈরী হবে সেটাও চিন্তার বিষয়। সেটাই কথা। জেএসসি আর এইচএসসির মধ্যে বাংলা, ইংরেজি আর গণিত ছাড়া কোন সাধারণ বিষয় নেই, তাহলে মার্ক সিট হবে কিসের ভিত্তিতে?

এইচএসসির টেস্ট আর প্রি টেস্টের ফলের ভিত্তিতে ফলপ্রকাশ করাটা সহজতর এবং যুক্তিযুক্ত হত কারণ প্রথমত এই দুই পরীক্ষা একজন পরীক্ষার্থী একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে দিয়েছে, এগুলোর ফলও বোর্ডে আছে, পাঁচ বছর আগে দেয়া জেএসসি আর দু'বছর আগে দেয়া এসএসসির ফল ব্যবহারের চাইতে সেটা যুক্তিযুক্ত হত। দ্বিতীয়ত, শুনেছি অষ্টম শ্রেণীতে এখন ১৩টা বিষয়, আমি ১১টা মনে করতে পারছি: বাংলা (২), ইংরেজি (২), গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি/ গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, চারু কারুকলা, শারীরিক বিজ্ঞান, আইসিটি। এসএসসিতে বাংলা (২), ইংরেজি (২), সাধারন গনিত, আইসিটি ও সামাজিক বিজ্ঞান আবশ্যিক, এর সাথে বিভাগ অনুযায়ী আরো চারটি বিষয় বেছে নেয়। এসএসসির বিভাগ অনেকেই এইচএসসিতে বদল করে, বলল না করলেও এ দুই পরীক্ষার বিষয় এইচএসসিতে না থাকতে পারে। এজন্য এসএসসি আর জেএসসির বিষয়গুলোতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে কীভাবে এইচএসসির ফল হবে সেটা বুঝতে পারছি না, কিন্তু নিশ্চিত জানি অনেক ছাত্র হতাশায় ডুবে যাবে, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করবে।

আগামী বছর পরীক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্তই সঠিক হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

৬| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৪৭

শায়মা বলেছেন: আমার মনে হয় আপু বিজ্ঞজনেরা পথ বাতলালেও অজ্ঞজনেরা সেই পথে চলবেনা। কারণ আমাদের সুফিয়া কখনও মানেই না করোনা বলে কিছু আছে সে বলে মরণের সময় হলে এমনিই মানুষ মরে এসব উসিলা। আমাদের আসমার বোন গ্রামে এইচ এস সি দেবার কথা ছিলো। সেও দিতে পারবেনা। এটা শুনে সে বলে পরীক্ষা না দিতে পারলে বেঁচে থেকে কি লাভ?

আমিও শুনেছি গ্রামে করোনার কোনো নাম গন্ধই নেই নাকি। হয়ত সত্যি হয়ত ভুল জানিনা সেসব। কিন্তু গ্রামের লোকের করোনা হলেও কি তারা টেস্ট করাতে পারবে? বা বুঝবে ? নাকি অলরেডি হচ্ছে আমরা জানিনা। আর যদি হয়েও থাকে তাহলে তো গ্রাম উজাড় হয়ে যাবার কথা কারণ করনা মারাত্মক ছোঁয়াচে। তার মানে গ্রামে নেই। অথবা আছে। আসলে এই করোনা ভীতির কাছে অনেক কিছুই পরাজিত বা বিসর্জিত হচ্ছে।

আমার স্কুলের প্যারেন্টসরাও বলছে আগামী দু বছরেও তারা ছোটদেরকে স্কুলে পাঠাতে চায় না। সব কিছুই একটা অনিশ্চয়তার চক্রে ঘুরছে।

সরকার এইচ এস সি হবে বললেও কিন্তু এখন অনেকেই বলতো সরকারের কি আক্কেল নেই এই কোরোনার মাঝে পরীক্ষা?

জীবন আগে নাকি পড়ালেখা আগে? আরে জীবন বাঁচলে না পড়ালেখা।

আমিও সেই দলে আগে জীবন তারপর পড়ালেখা। মাঝে মাঝে ভাগ্যের ফের বা নিয়তির কবলে আমাদেরকে পড়েই যেতে হয়। তবুও আমি আশাবাদী মানুষ। আমি ভাবী জীবন থামে না আর যা হয় ভালোর জন্যই হয় আসলে।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:১৩

করুণাধারা বলেছেন: জীবন আগে নাকি পড়ালেখা আগে? আরে জীবন বাঁচলে না পড়ালেখা।

আমিও সেই দলে আগে জীবন তারপর পড়ালেখা। মাঝে মাঝে ভাগ্যের ফের বা নিয়তির কবলে আমাদেরকে পড়েই যেতে হয়। তবুও আমি আশাবাদী মানুষ। আমি ভাবী জীবন থামে না আর যা হয় ভালোর জন্যই হয় আসলে।


একেবারে ঠিক কথা।
Safety first- জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে আমিও এটা মেনে চলি। করোনার মধ্যে পরীক্ষা নিলে যে ঝুঁকি কতটা সেটা আমি জানি, আমি বলিনি যে পরীক্ষা নেয়া উচিত। কিন্তু পরীক্ষা একভাবে নেবার একটা পরিকল্পনা ছিল, করোনা  পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা না নেয়া গেলে এইচএসসির টেস্ট/ প্রি টেস্টের ফল অনুযায়ী এইচএসসির ফল ঘোষিত হবে। এখন শুনছি অন্যভাবে ফল বানানো হবে। এটাই আমার ক্ষোভের কারণ, এই গোঁজামিল দেবার ফলে অনেক ভালো ছাত্র আর উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবে না।

এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রায় চৌদ্দ লাখ, বিপরীতে এ লেভেলের পরীক্ষার্থী মাত্র কয়েক হাজার। তাই এ লেভেলের তুলনায় এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া খুবই কঠিন জানি,  কিন্তু এ লেভেল পরীক্ষা নেবার পরিকল্পনা করতে পারল একটা মাত্র প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ কাউন্সিলের কয়েকজন মানুষ, অথচ আমাদের শিক্ষা বিভাগের হরেক প্রতিষ্ঠান মিলেও কোন বিকল্প বের করতে পারল না!!

গ্রামে করোনার প্রকোপ কম এটা জানি, তারা করোনার কথা বিশ্বাসও করে না। মুশকিল হলো ইদানিং ঢাকার মানুষও নিজেদের করোনা প্রুফ মনে করছে, আর না ডাকতেই আমার বাড়ি বেড়াতে আসছে!! কি যে করি... :(

তোমার পিচ্চিদের মায়েরা তো বাচ্চাদের স্কুলে দিতে চাইবেই না। বাচ্চাদের সাথে তো আর তারা  স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে পারতো না, এখনতো বেশ ফ্রিতে ফ্রিতে তোমার ক্লাস করে নিচ্ছে... :D

৭| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভারতে পরীক্ষা হয়েছে।
আমাদের হলে সমস্যা কি ছিলো?
তাছাড়া দেশের কেউ তো এখন করোনা নিয়ে চিন্তিত না।
আপনার সাথে আমি একমত।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:১৭

করুণাধারা বলেছেন: দুই বছর ধরে যেসব ছাত্র নিয়মিত পড়াশোনা করে গেছে, এমন সিদ্ধান্ত তাদের অনেকেই পছন্দ করছে না।

ভারতে পরীক্ষা হয়েছে।
আমাদের হলে সমস্যা কি ছিলো?
এই কথা আমিও ভাবছি রাজীব নুর।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রাজীব নুর।

৮| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:০০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাচ্চারা খুব অলস হয়ে গিয়েছে। পড়াশোনা একদম ছেড়ে দিয়েছে। পরীক্ষা হলে ভালো হতো

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২০

করুণাধারা বলেছেন: স্কুলের বাচ্চাদের অটো প্রমোশন দেয়াই যায়, আপনি মাঝে মাঝে পরীক্ষা নিয়ে পড়াশোনা করার অভ্যাস বজায় রাখতে পারেন। এমনিতে তো ছুটি পায়না, এখন একটু এনজয় করুক!!

৯| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:৫৪

রামিসা রোজা বলেছেন:

সরকারের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকেই মনঃক্ষুণ্ণ ।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত বদল আসতে পারে গতকাল এমনটাই আবার নিউজে দেখলাম । মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন খুবই জরুরী তা না হলে অবমূল্যায়নের একদম
নিচের স্তরে পড়ে যাবে আমাদের শিক্ষার্থীরা ও প্রজন্ম ।
এই দুঃসময়ে মাঝেও এখনই এদেরকে নিয়ে খুব ভালো
একটি পোষ্ট লিখেছেন , ধন্যবাদ।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

করুণাধারা বলেছেন: মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন খুবই জরুরী তা না হলে অবমূল্যায়নের একদম
নিচের স্তরে পড়ে যাবে আমাদের শিক্ষার্থীরা ও প্রজন্ম ।


দেশে এত এত শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান, তারা গবেষনা করে একটা ভালো পথ বার করতে পারলো না। :( এই দুঃখ থেকেই লেখা। আপনার মন্তব্য আর প্লাসে অনুপ্রাণিত হলাম, অনেক ধন্যবাদ রামিসা রোজা।

১০| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:১৩

মা.হাসান বলেছেন: এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক মিলিয়নের উপরে। সরকারি হিসেবে বলছে ১৩ লাখ। এত সংখ্যক পরীক্ষার্থীর কোভিড টেস্ট করা সম্ভব হতো বলে মনে হয় না।

এক দিনে দুই পরিক্ষা নেয়া সম্ভব। আমরা এসএসসিতে দিয়েছি- তিন + তিন ছয় ঘন্টা পরীক্ষা হতো- ১০টা থেকে ১টা, ২টা থেকে পাঁচটা। তবে শুধু বাংলা আর ইংরেজিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিলো চার ঘন্টার ।

তবে এইচএসসিতে সাবজেক্ট সংখ্যা একশতের মতো হবে। পনেরো দিনে পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব হতো না বলে মনে হয়। আর প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা সাত দিনে নেয়ার মতো লোক বল মনে হয় না আমাদের আছে। এক্সটারনাল এক্সামিনার দরকার। সবার কোয়ালিফিকেশন নেই। একজন একজামিনার যখন পরীক্ষা নিতে বাইরে যান, তখন তার কলেজে অন্য কেউ এসে পরীক্ষা নেয়া মুশকিল- ইন্টারনাল কোথায় পাবে? কিছু ভালো কলেজে একাধিক বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক আছেন। অনেক কলেজেই এসব বিষয়ে একজন করে শিক্ষক।

GCE 0 level এবং A level এর সাথে এইচএসসির পরীক্ষার্থী সংখ্যার যেরকম পার্থক্য, মানেরও পার্থক্য আছে (মানের কথায় পরে আসছি)। A level এর সামান্য কিছু শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া হয়তো সম্ভব, অঘটন কিছু ঘটলে দায় সরকারের না। কিন্তু এইচএসসির বিষয়ে কিছু ঘটে গেলে দায় তো সরকারকেই নিতে হবে। মাস্ক পরে পরীক্ষা দেবার সময়ে কিছু অসদুপায়ের ঘটনা না ঘটাই অস্বাভাবিক হবে। ঢাকা আর ঢাকার বাইরের পরীক্ষার মানের (অসদুপায়ের কথা বলছি) অভিন্নতা রক্ষা করা কঠিন হতো।

বিকল্প? কেউ কেউ বলেছেন দু বছর এক করে দেয়ার কথা। একটু চিন্তা করুন। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আসন সীমিত। দুই ব্যাচ এক করা হলে, স্বাভাবিক সময়ে যারা উচ্চ শিক্ষা পেতে পারতো তাদের পথ রুদ্ধ হতো। প্যারালাল দুটো সেশন চালানো? আমাদের যা লোক বল তাতে এমনটা করা সম্ভব হতো না। কলা অনুষদের সাবজেক্ট গুলোতে জোর করে নাহয় দুটো ব্যাচ চালালেন, বিজ্ঞান অনুষদে ল্যাব ফ্যাসিলিটি দিতে হয়। ওখানে এমন করা মুশকিল।

পরীক্ষা কি আরো পেছানো যেতো? হয়তো যেতো। তবে বিশেষজ্ঞদের হিসেবে করোনা কমপক্ষে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকবে। আরো বেশি ও হতে পারে। এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার বিষয় আছে (বাংলাদেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এসএসসি-এইচএসসি দুটোই আছে। বোর্ডও একটাই- একই বোর্ড দুটো পরীক্ষাই আয়োজন করে)। এর পরে দেখা যায় ঐ একই কথা, দু ব্যাচ এক হয়ে যায়।

পরীক্ষার মানঃ এটা নিয়ে কথা বলতে কষ্ট হয়। আমরা ছাত্রাবস্থায় পাশের হার ৩০%এর নীচে দেখেছি। এখন জিপিএ ৫ পায় ৩০% এর বেশি। আমার এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বন্ধু বললো তার সাবজেক্টে মাস্টার্সে ২৫ জনের মধ্যে ১৬ জন জিপিএ ৪ পেয়েছে। সব জায়গায় এক। আইনস্টাইনের বিস্ফোরন। বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে, কিন্তু নিজের দেখা- যারা এইচএসসি পাশ করে আসছে, জিপিএ চারের উপরে পেয়েছে, এদের মাঝের অনেকেই নিজের নাম শুদ্ধ করে ইংরেজিতে লিখতে পারে না।

শ্রিমঙ্গলে কর্মরত আমার এক বন্ধু জানালো তাদের এনজিওতে বয়স্ক শিক্ষার জন্য কিছু শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা কমানোর জন্য যোগ্যতা দেয়া হলো এইচএসসি পাস। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ছিলো দুটা। ১) তোমার নাম-ঠিকানা ইংরেজিতে লিখো। ২) কত হবেঃ ০.১ x ০.১ । আবেদনকারিদের কেউই একটাও ঠিক মতো বলতে পারেন নি।

আমার বাবার সবচেয়ে বড় ভাই ছিলেন এইট পাস। প্রাইমারি শিক্ষক ছিলেন। (ব্রিটিশ পিরিয়ডে সম্ভবত এটা পারমিটেড ছিলো)। এই জামানার অনেক গ্র্যাজুয়েটের চেয়ে জ্ঞানী ছিলেন।

বিলাতে এ লেভেল শেষ করার পর এই রেজাল্টের উপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায়, আলাদা পরীক্ষা দেয়া লাগে না। মান এত ভালো। আমাদর এইচএসসির মান এত পড়ে গেছে যে কয়েক বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তির জন্য নূন্যতম মার্ক পেয়েছিলো মাত্র ২ জন। মন্ত্রীরা অনুযোগ করে বলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় গুলো ঠিক করছে না। সাদা বাংলায় - এইচএসসির মান কমিয়ে দিয়েছি, তোমরাও তোমাদের মান নামিয়ে দাও।

ও এবং এ লেভেলে গোটা বই পড়তে হয়, চ্যাপ্টার বাদ দিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। এসএসসি- এইচএসসিতে বেছে পড়ে এ প্লাস পাওয়া যায়। ছয়টা প্রশ্নের মধ্যে তিনটার জবাব দিতে হবে। আমি তিন চ্যাপ্টার বাদ দিয়েই ১০০ মার্কের অ্যান্সার করতে পারবো। লিবারেল মার্কিং হয়, কোনো রকম কিছু লিখলেই মার্ক দিতে হবে। তিন চ্যাপ্টারের মধ্যে দুই চ্যাপ্টার পড়লেই এ পাওয়া যায়। একটা ছেলে বইয়ের ৪০% পড়ে এ পাচ্ছে। কেমন শিক্ষা ব্যবস্থা? পশ্চিমাদের থেকে জিপিএ সিস্টেম ধার করলাম, আবার বললাম বেছে পড়ো। মার্ক দেবার সময় হাত উজাড় করা। বাবা-মা ভাবে আমার ছেলে জিপিএ ফাইভ। ছেলে খুশি, বাবা খুশি। কিন্তু দেশ ? চালাবে কে? অসুবিধা নেই। শশুর বাড়ি আছে। শশুরের দেশ থেকে শিক্ষক আনা হবে ঘোষনা দেয়া আছে।

আরো অনেক কিছু বলা যায়, তবে দীর্ঘ করবো না।

একটা বিষয় কেউ বলছে না। তা হলো সরকারের অসাধারণ সেন্স অফ টাইমিং। যখন দেশে একটা বড় ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ চলছে তখন এমন ভাবে সরকার এই ঘোষনা দিলো যে সবার দৃষ্টি এখন অন্য দিকে। সরকার চীরজীবি হোক।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪০

করুণাধারা বলেছেন: প্রথমেই বলে নেই, সংক্ষেপে এইচএসসি নেবার জন্য এই পরিকল্পনা আমার নয়, কিছু বিজ্ঞ মানুষের সমন্বয়ে করা একটা কমিটির সুপারিশ, আমি শেয়ার করেছি মাত্র।

 পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গতবছর ছিল তের লক্ষ ষাট হাজার, তার মধ্যে সাড়ে তিন লক্ষ ফেল। এদেরকেও এবার পাশ ঘোষণা করা হবে। এবছরের পরিক্ষার্থী আগের বছরের সমান ধরলেও প্রায় চৌদ্দ লক্ষ, আমাদের দেশে আজকাল বোধহয় প্রতিদিন ৪/৫ হাজার কোভিড টেস্ট হয়, তাই এত সংখ্যক টেস্ট করা অসম্ভব!!

এইচএসসিতে একশটা বিষয়ের কথা জানা ছিল না, আপনার থেকে জানলাম। সেই পরীক্ষা ১৫ দিনে কীভাবে নেয়া সম্ভব জানিনা, কিন্তু তাড়াতাড়ি পরীক্ষা শেষ করার পরিকল্পনার খবর কয়েকবার দেখেছি। বিষয় একশটা হলেও একজন ছাত্রকে কিন্তু সাতদিন পরীক্ষা দিতে যেতে হবে। প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা নেবার সমস্যা বিবেচনা করে টেস্টে প্রাপ্ত নম্বর ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা নেবার পরিকল্পনা ছিল না।

না, আমি এ লেভেলের সাথে এইচএসসির তুলনা  করছি না, দুটোর মানের পার্থক্য আমার জানা আছে। যেহেতু আগে বলা হয়েছিল এইচএসসি পরীক্ষা হবে আর এখন গোঁজামিল দিয়ে ফলপ্রকাশের কথা বলা হচ্ছে, তাই এ লেভেল পরীক্ষা হচ্ছে এই খবরের প্রসঙ্গ আনলাম। ধরে নেন খুব দুঃখ আর ক্ষোভ থেকে লিখেছি... পরীক্ষা নিতে পারার মতো পরিস্থিতি নেই বুঝলাম, সেক্ষেত্রে এইচএসসির টেস্ট আর প্রি টেস্টের ফলের ভিত্তিতে ফলপ্রকাশ করাটা সহজতর এবং যুক্তিযুক্ত হত কারণ প্রথমত এই দুই পরীক্ষা একজন পরীক্ষার্থী একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে দিয়েছে, এগুলোর ফলও বোর্ডে আছে, পাঁচ বছর আগে দেয়া জেএসসি আর দু'বছর আগে দেয়া এসএসসির ফল ব্যবহারের চাইতে সেটা যুক্তিযুক্ত হত। দ্বিতীয়ত, শুনেছি অষ্টম শ্রেণীতে এখন ১৩টা বিষয়, আমি ১১টা মনে করতে পারছি: বাংলা (২), ইংরেজি (২), গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি/ গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, চারু কারুকলা, শারীরিক বিজ্ঞান, আইসিটি। এসএসসিতে বাংলা (২), ইংরেজি (২), সাধারন গনিত, আইসিটি ও সামাজিক বিজ্ঞান আবশ্যিক, এর সাথে বিভাগ অনুযায়ী আরো চারটি বিষয় বেছে নেয়। এসএসসির বিভাগ অনেকেই এইচএসসিতে বদল করে, বদল না করলেও এই দুই পরীক্ষার বিষয়ের মধ্যে এইচএসসিতে কমন থাকে শুধু বাংলা ও ইংরেজি (জেএসসি এসএসসিতে গনিত আবশ্যিক হলেও এইচএসসি তে বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিভাগে আবশ্যিক নয়)। এজন্য এসএসসি আর জেএসসির বিষয়গুলোতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে কীভাবে এইচএসসির ফল হবে সেটা বুঝতে পারছি না, কিন্তু নিশ্চিত জানি অনেক ছাত্র হতাশায় ডুবে যাবে, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করবে।

১৯৭৬ আর ১৯৭৭ সালে পাশ করা দুই ব্যাচকে এক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হয়েছিল। তখন সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল মোটে ৬ টি!!  আমি দুই ব্যাচ এক করার কথা বলছি না, কিন্তু অতীতে এমন হয়েছিল এই তথ্যটা আপনাকে জানাবার জন্যে উল্লেখ করলাম। ১৯৮৫ সালে এরশাদ ভেকেশন নামক ছুটির কারণে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ পাশ করে বের হয়নি, তখন দীর্ঘ সেশনজট হয়েছিল।

আমি পরীক্ষা পেছানোর কথা বলিনি, বলতে চেয়েছি:
১) পরীক্ষা নেবার সম্ভাব্যতা আরেকটু যাচাই করা যেত, ভারত এইচএসসি, জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নিয়েছে। তাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা আরো বেশি।
২) পরীক্ষা না নিলে এইচএসসির ফল এইচএসসির মান অনুযায়ী প্রকাশ করা।
৩) মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে ক্রমান্বয়ে। এটাই এই পোস্টের মূল বক্তব্য।

মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে যা যা বললেন, সব ঠিক বলেছেন। সমস্যা হলো, এসব ভাবলে খুব হতাশ লাগে। আজকাল সবাই চেষ্টা করে সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতে, এগুলোর খরচ এত বেশি যে শেষ পর্যন্ত আয় বাড়াতে অসৎ পথে যেতে হয়, জাতি ক্রমে অসততা আর মূর্খতার পথে যাচ্ছে...শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, এই মেরুদন্ড আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ছে।

একটা বিষয় কেউ বলছে না। তা হলো সরকারের অসাধারণ সেন্স অফ টাইমিং। যখন দেশে একটা বড় ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ চলছে তখন এমন ভাবে সরকার এই ঘোষনা দিলো যে সবার দৃষ্টি এখন অন্য দিকে। সরকার চীরজীবি হোক। এটা নতুন কোন কৌশল তো নয়। :|

দীর্ঘ সুচিন্তিত মন্তব্য, এবং সাথে প্লাস দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।


১১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কেবলই দীর্ঘশ্বাস!!!!!!!!!!!!!


:((


১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০১

করুণাধারা বলেছেন: কেবলই দীর্ঘশ্বাস!!!!!!!!!!!!!ঠিক তাই।

আমি যে দেখেছি তরুণ বালক উন্মাদ হয়ে ছুটে
কি যন্ত্রনায় মরেছে পাথরে নিষ্ফল মাথা কুটে।

এই হঠকারী সিদ্ধান্ত অনেকের জীবনে হতাশা হয়ে আনবে।

১২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৩

শায়মা বলেছেন: এ বছর পরীক্ষা স্থগিত রাখা উচিৎ ছিলো।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৫

করুণাধারা বলেছেন: আমারও তাই মনে হয়। শিক্ষা বর্ষ থেকে ২০২০ পুরো বাদ দিতে হবে। যারা এসএসসি দেবে তারা টেস্ট দেয়নি, একবছর কোন ক্লাস করেনি। এরা কী শিখেছে যে পরীক্ষা দিতে বসবে?

১৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৩৫

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: অনেক সুন্দর ভাবনা শেয়ার করেছেন।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৭

করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া)। দীর্ঘ দিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগলো।

১৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




চমৎকার লেখা।

শিক্ষা নিয়ে গবেষণার ফলন কেমন করে কেমন হলো, অর্থাৎ চাল থেকে কি করে গম হলো তার ফিরিস্তি। এসব হলো শিক্ষাব্যবস্থার সাথে জড়িতদের সৃজনশীলতা

এসব ঠিক আছে তবে লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার দিকটিও ভেবে দেখা উচিৎ। তাই বলে অটো পাশ বা গোঁজামিল দিয়ে পাশ করানোর চিন্তাটা মোটেও ঠিক হয়নি। একটু পিছিয়ে নিলে কি ক্ষতি হতো ? শিক্ষাবর্ষকে পিছিয়ে নিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। মার্চ টু মার্চ।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:১৭

করুণাধারা বলেছেন: এসব হলো শিক্ষাব্যবস্থার সাথে জড়িতদের সৃজনশীলতা।

একমত ১০০%। অবশ্য এই সৃজনশীলতা শিখতে তাদের বিভিন্ন দেশে যেতে হয়েছে। সৃজনশীলতা শিক্ষার বাজেট ছিল সম্ভবত ১১০০ কোটি টাকা।

এসব ঠিক আছে তবে লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার দিকটিও ভেবে দেখা উচিৎ। আমার মনে হয় এই শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে ২০২০ সালকে বাদ দেয়াটাই সবচেয়ে ভালো। এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সারাবছর ক্লাস করেনি, এদের যদি জেএসসি পরীক্ষার ফল ধরিয়ে দিয়ে অটো পাশ দেয়া হয়, তবে আরো হযবরল হবে।

১৫| ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: শিক্ষা তো বড়লোকদের জন্যই, গরীবের আবার শিক্ষা কি? কোন রকমে নাম দস্তখত করতে পারলেই তো শিক্ষিত হয়ো গেল। এর থেকেই যা বের হবে, তাদেরকে সরকারী চাকুরীর যোগ্য করে তোলা হবে।
আসল কথা হলো, একটা গাধা জেনারেশান তৈরীর জন্য যা যা করা দরকার, করা হবে। আপনের পছন্দ হইলে দেশে থাকেন, নয়তো আম্রিকা চইলা যান। কথা কি মিছা কইলাম!! মিছা কইলে আওয়াজ দিয়েন। :P

আপনার লেখাটা মোবাইল থেকে দেখেছিলাম। মোবাইলে ঠিকমতো পড়তে পারি না। আর বাংলা তো লিখতেই পারি না। মানুষ বেকুব হলে যা হয়......আমাকে দেখেই বুঝতে পারা যায়, কি বলেন!!! ;)

১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

করুণাধারা বলেছেন: শিক্ষা তো বড়লোকদের জন্যই, গরীবের আবার শিক্ষা কি? কোন রকমে নাম দস্তখত করতে পারলেই তো শিক্ষিত হয়ো গেল। এর থেকেই যা বের হবে, তাদেরকে সরকারী চাকুরীর যোগ্য করে তোলা হবে। ঠাট্টাটা ঠিক জমল না, একেবারে সত্যি কথা বলে ফেলেছেন। তবে একটা ভুল আছে, এই গরীবরা সরকারী চাকুরীর যোগ্য হলেও চাকরি তারা পায়না শেষ পর্যন্ত। সেদিন খবর দেখলাম বিসিএসের সব পরীক্ষা পার হবার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনে সন্তোষজনক রিপোর্ট না আসায় কয়েকশ' বিসিএস উত্তীর্ণ চাকরি করতে পারেননি। তারা দরিদ্র পরিবারের সন্তান, খুঁটির জোর না থাকায় জানতে পারেননি তাদের অপরাধ কী!!

আসল কথা হলো, একটা গাধা জেনারেশান তৈরীর জন্য যা যা করা দরকার, করা হবে। আপনের পছন্দ হইলে দেশে থাকেন, নয়তো আম্রিকা চইলা যান। কথা কি মিছা কইলাম!! মিছা কইলে আওয়াজ দিয়েন। না কথা মিছা না, কিন্তু একটা ভুল আছে- গাধা জেনারেশন অলরেডি তৈরি হয়ে গেছে। :|

কিন্তু চোর ডাকাতের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাব না। দেখি যদি দিন ফেরে...

১৬| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:৩১

জাফরুল মবীন বলেছেন: সময়পোযোগী লেখা।করোনার শীতকালীন রূপ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে।এরই মধ্যে ইউরোপে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে।নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি সময়টা অত্যন্ত বিপদসঙ্কুল পুরো বিশ্বের জন্যই।এসময় এতবড় একটা পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।কিন্তু যে পদ্ধতিতে এইচএসসি'র মূল্যায়নের কথা সরকার ভাবছে সেটা আরও বেশি অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়।শিক্ষাবিদদের এ বিষয়ে আরও কার্যকরী বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতির কথা ভাবা উচিৎ ছিলো এবং সরকারও বিশ্বের অন্যন্য দেশ কীভাবে শিক্ষা মূল্যায়ন করছে তা বিবেচনা করতে পারতেন।সিদ্ধান্তটা কেন জানি মনে হয় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে নেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩

করুণাধারা বলেছেন: করোনার শীতকালীন রূপ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে। এই কথাটা দেশের নীতিনির্ধারকরা নিশ্চয়ই জানতেন, তারা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন কি!! শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে তৈরি একটা কমিটি যাচাই-বাছাই করছিলেন বলে শুনেছিলাম কীভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যায়। পরীক্ষার বিকল্প উপায় তারা খুঁজছিলেন, কিন্তু পাঁচ বছর আগের পরীক্ষার ফল দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল তৈরি করা কি ভালো বিকল্প!! যে পদ্ধতিতে এইচএসসি'র মূল্যায়নের কথা সরকার ভাবছে সেটা আরও বেশি অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। সঠিক কথা। এরা আমাদেরই সন্তান, তাই আরেকটু গুরুত্ব দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা দরকার ছিল। অনেকেরই উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে...

আমারও ধারণা সিদ্ধান্তটা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নেয়া হয়েছে।

মন্তব্য ও প্লাসের জন্য ধন্যবাদ জানবেন জাফরুল মবীন।

১৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: গত বছর ফেল করে যারা ভয় না পেয়ে এবারেও পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছিল, তাদের মত সৌভাগ্যবান আর কেউ নেই- বিনা পরীক্ষায় পাশ!
এইচ এস সি আমাদের দেশে ছাত্রদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, কারণ এ পরীক্ষার ফলের উপরেই নির্ভর করে কে কে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তাই এ পরীক্ষায় অটোপাশ ব্যবস্থা মেনে নেয়া অনেক ছাত্রের জন্য কঠিন হবে, বিশেষ করে মেধাবী ছাত্রদের জন্য।
আমার ভাতিজা এসএসসিতে গোল্ডেন-৫ পায় নাই দেখে মন খারাপ করেছিল। এবারে সে আদা জল খেয়ে প্রস্তুতি নিয়েছিল যেন এইচএসসি তে গোল্ডেন-৫ থাকেই থাকে। অটোপাশের কথা শুনে সে ভেঙে পড়েছে। তার লক্ষ্য, বুয়েটে পড়বে। আমি তাকে বলেছি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাকে কী করতে হবে।
আপনি লিখেছেন, "সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে যে প্রথম স্থান অধিকার করতো, মা-বাবাসহ তাদের ছবি ছাপা হতো পত্রিকায়"। আমার বড় ছেলে এবং বড় বৌমা যথাক্রমে এসএসসি এবং এইচএসসি তে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। উল্লেখ্য, তারা উভয়েই পাঁচ বোর্ড মিলিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ওদুটো পরীক্ষায় আলাদা আলাদা করে প্রথম হয়েছিল। পত্রিকায় শুধু তাদের ছবিই উঠেছিল, মা বাবার নয়। অবশ্য প্রথম আলো সম্পাদক সাহেব মা-বাবাসহ ছেলেকে পত্রিকা অফিসে ডেকে নিয়ে সম্মান জানিয়েছিলেন।

১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৪

করুণাধারা বলেছেন: এইচ এস সি আমাদের দেশে ছাত্রদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, কারণ এ পরীক্ষার ফলের উপরেই নির্ভর করে কে কে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তাই এ পরীক্ষায় অটোপাশ ব্যবস্থা মেনে নেয়া অনেক ছাত্রের জন্য কঠিন হবে, বিশেষ করে মেধাবী ছাত্রদের জন্য।

অনেকেই এসএসসিতে ভাল করতে না পারলেও এইচএসসির সময় কিছুটা ম্যাচুরিটি অর্জন করে দেখে সেই পরীক্ষায় ভালো করার খুব চেষ্টা করে এবং করেও। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফল বিবেচনা করা হয়, সেটা থেকে কিছু নম্বর পরীক্ষাতে যোগ হয়, কিন্তু বুয়েটে শুধুমাত্র এইচএসসির ফল দেখে পরীক্ষা দেবার উপযুক্ততা ঘোষণা করা হয়। সুতরাং আপনার ভাতিজার মতো তারা বুয়েটে পড়তে চায় তাদের পরীক্ষা দেবার উপযুক্ততা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়বে।

আমার বড় ছেলে এবং বড় বৌমা যথাক্রমে এসএসসি এবং এইচএসসি তে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। এই পোস্ট লেখার সময় সেকথা আমার মনে পড়েছিল। আপনার সেই পোস্টের কথা আমার মনে আছে, ছেলের সাথে ক্রিকেট খেলা দেখছিলেন রেজাল্ট নিয়ে কিছুমাত্র চিন্তিত না হয়ে, তারপর দেখলেন আপনার ছেলে প্রথম স্থান অধিকার করেছে!! পোস্ট পড়ার পর আমি ধারনা করেছিলাম কৃতী ছেলের সাথে তার মা-বাবার ছবিও পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। এটা হয়নি শুনে অবাক হলাম, আমাদের সময় এমন দেখে এসেছি, এর ফলে মা-বাবাও অনুপ্রাণিত হতেন। লক্ষ্ লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করাটা এক অসাধারণ অর্জন! আপনার পোস্টে আমি আপনাকে এবং আপনার স্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম, আমার পোস্টে আরেকবার অভিনন্দন জানাচ্ছি।

১৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: সবগুলো মন্তব্য পড়লাম। তার মধ্যে প্রথমেই দু'টি শব্দের একটি বাক্য আপন স্বকীয়তায় ভাস্বর- "আইনস্টাইনের বিস্ফোরন"! (মা.হাসান)
আপনি বলেছেন, "এইচএসসির টেস্ট আর প্রি টেস্টের ফলের ভিত্তিতে ফলপ্রকাশ করাটা সহজতর এবং যুক্তিযুক্ত হত কারণ প্রথমত এই দুই পরীক্ষা একজন পরীক্ষার্থী একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে দিয়েছে, এগুলোর ফলও বোর্ডে আছে, পাঁচ বছর আগে দেয়া জেএসসি আর দু'বছর আগে দেয়া এসএসসির ফল ব্যবহারের চাইতে সেটা যুক্তিযুক্ত হত" (১০ নং প্রতিমন্তব্য) - সেক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা প্রবল থাকতো, কেননা টেস্ট, প্রিটেস্টের খাতা তো নিজ কলেজের শিক্ষকরাই দেখে থাকেন এবং তারা অনেক সময় চাপে পড়ে নম্বর বেশি দিয়ে ফেল্টুশ ছাত্রদেরকে পাশ করাতে বাধ্য হন। আর তা'ছাড়া টেস্ট পরীক্ষার ফল বোর্ডে সংরক্ষিত থাকে বলে জানি। কিন্তু প্রিটেস্টের ফলও থাকে কি? আমি নিশ্চিত নই।
আপনি একজন সচেতন নাগরিক, যথেষ্ট সাহসী এবং প্রতিবাদীও বটে। সমাজের একটি বার্নিং ইস্যু নিয়ে ভেবেছেন, নিজের ভাবনাগুলো আলচনার জন্য যুক্তির সাথে উপস্থাপন করেছেন, এজন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। প্রথমে প্রশ্নফাঁস, এবারে অটো পাশ, শিক্ষা ব্যবস্থার বারটা বাজানোর জন্য সামনে আরো যে কী আসবে, কে জানে!


১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৮

করুণাধারা বলেছেন: শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড- একসময় একথা শুনতাম। মেরুদণ্ড ভেঙে গেলে জাতি কতটা আগাতে পারবে জানিনা। এই লেখাটা লেখার কয়েকদিন পর আমার আত্মীয় এক শিক্ষকের থেকে জানতে পারলাম, এভাবে এইচএসসির ফল প্রকাশের বিষয়ে লেখা নিষিদ্ধ হয়েছে। তাই আপনার মন্তব্যে বলা বিষয়ে আমার কিছু বলার ইচ্ছা থাকলেও বলার সাহস হচ্ছে না!

আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য এবং প্লাস আমার অনুপ্রেরণা। অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

১৯| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০১

খায়রুল আহসান বলেছেন: ১৭ নং প্রতিমন্তব্যের শেষ অনুচ্ছেদটি পড়ে আপনার সুতীক্ষ্ণ স্মরণ শক্তির প্রতি আমার আবারো নতুন করে সমীহ জাগলো।
"আপনার পোস্টে আমি আপনাকে এবং আপনার স্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম, আমার পোস্টে আরেকবার অভিনন্দন জানাচ্ছি।" - আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, একুশ বছরের ভূতপূর্ব একটি ঘটনাকে উপলক্ষ করে আমাদের উভয়ের প্যারেন্টিং কে স্বীকৃতি দিয়ে অনুপ্রাণিত করার জন্য।

২১ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৭

করুণাধারা বলেছেন: ধন্যবাদ জানাবার জন্য আবার ফিরে এসেছেন- আপনার অসাধারণ সৌজন্য বোধের পরিচয় পেয়ে ভালো লাগলো।

আসলে যারা প্রথম স্থান অধিকার করতো তাদের আমি বরাবরই বিশেষ সম্মান আর বিস্ময়ের সাথে দেখেছি। তাই যখন আপনার পোস্ট পড়ে জানলাম আপনার ছেলে এবং বৌমা দুজনেই প্রথম স্থান অধিকার করেছিল, তখন থেকে পিতা মাতা হিসেবে আপনাদের দুজনকেই সমীহ করেছি এবং আপনার ছেলে- বৌমার এই কৃতিত্ব আমার মনে থেকেই গেছে। তাদের জন্য শুভকামনা রইল।

অবশ্যই আপনারা গুড প্যারেন্টস, আপনি প্যারেন্টিং বিষয়ে লিখলে অনেকেই উপকৃত হতাম। শুভকামনা আপনার পুরো পরিবারের প্রতি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.