নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

করুণাধারা

করুণাধারা

জীবন যখন শুকাইয়া যায় করুণাধায় এসো

করুণাধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চার প্রজন্ম -১

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:০৬




আমার নানী থেকে আমার কন্যা- চার প্রজন্ম। আমি মাঝে মাঝেই ভাবতে বসি এই চার প্রজন্ম নিয়ে, গত একশো বছরে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত নারী জীবনে যেসব পরিবর্তন এসেছে সেসব নিয়ে। পরিবর্তন অনেক এসেছে... নারীর নাম, পোষাক, শিক্ষা, জীবনযাত্রা সবই অনেক বদলে গেছে!

গত একশো বছর বলছি, কারণ আমার নানীর জন্ম সাল হিসাব নিকাশ করে স্থির করা হয়েছিল ১৯১৭ সাল, সত্যিকার জন্ম তারিখ কত কে জানে! নানীর যুগে মেয়েদের জন্ম কবে হলো কেউ মনে রাখতো না। মেয়েরা জন্মাতো, তারপর বড় হতো পরের ঘরে যাবার জন্য, তারপর এক সময় চলেও যেত বাপের বাড়ি ছেড়ে, তারপর তার ঠিকানা হতো স্বামীর কিংবা ছেলের বাড়ি। কিন্তু গত একশো বছরে বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতিতে পৃথিবী বদলে গেছে, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে, তাতে আমার মত মুসলিম মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের জীবনও বদলে গেছে। কতটুকু বদলেছে তার হিসাব করার জন্য এ লেখা; মূলতঃ স্মৃতিচারণমূলক কিন্তু কখনো জীবন দর্শন। আমার মা আর নানীর মতো রান্না, ঘরকন্না আর বছর বছর বাচ্চা বিয়ানোর জীবন আমি যাপন করিনি, আসলে আমার প্রজন্মে আমরা ক্রমান্বয়ে ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে এসেছি, শিক্ষিত, স্বাবলম্বী হয়েছি। কিন্তু এই পরিবর্তনের ফলে আমরা কতটুকু এগোলাম!!

আমার নানী নিজের গ্রাম থেকে প্রায় দেড়শ মাইল দূরের এক শহরে স্থায়ী হয়েছিলেন, আমার মা সেখান থেকে আরো দূরে ঢাকা শহরে সংসার পেতেছিলেন, আমি দেশ ছেড়ে আড়াই হাজার মাইল দূরে গিয়েছিলাম, আমার মেয়ে গিয়েছে আট হাজার মাইল দূরে। আমাদের পরিবারের নারীরা ঘর ছেড়ে পৃথিবীর পথে কেবলই এগিয়ে গেছে। আসলে সামগ্রিকভাবে বাঙালি মেয়েরাই এগিয়ে গেছে, আমি স্কুলের পাঠ্য বইয়ে হিলারির এভারেস্ট জয়ের কাহিনী পড়ে বিস্ময়ে অভিভূত হয়েছিলাম, অথচ আজ আমাদের দেশের মেয়েই এভারেস্ট জয়ী হয়েছে। কিন্তু এসব দেখেও এগিয়ে যাবার হিসাব আমি কিছুতেই মিলাতে পারি না। আমার শুধু মনে হতে থাকে, ছোটবেলায় আমার নানী কোথাও গেলে আমাকে সাথে নিয়ে যেতেন, (কারণ একাকী মহিলার যাতায়াত ভালো চোখে দেখা হতো না), আর এই একবিংশ শতাব্দীতেও আমি আমার মেয়েকে স্কুল কলেজে নিয়ে গিয়েছি... মেয়েদের একাকী চলাচল করার মতো পরিবেশ যদি আজও সৃষ্টি না হয়ে থাকে, তবে আমরা কতটুকু এগোলাম!!

অবশ্য আগের দুই প্রজন্ম থেকে আমি মানসিকভাবে অনেকটা এগিয়ে গেছি অন্তর্জালের অবদানে। এই অন্তর্জাল আমার হাতের মুঠোয় অনেক তথ্য এনে দিয়েছে, ফলে আগের প্রজন্মের অনেক কুসংস্কার আর ভুল ধারণা থেকে মুক্তি পেয়েছি। জানিনা কত প্রজন্ম ধরে এই ভুল ধারণা গুলো নারীরা মনে লালন করতেন, কিন্তু আমার মনেও এমন অনেক ধারণা গেঁথে গেছিল, যেগুলোর মূলকথা হচ্ছে পুরুষের সন্তুষ্টি অর্জন করাই নারী জনমের সার্থকতা, ইহকালে এবং পরকালে!! কিন্তু এখন অন্তর্জালের কল্যাণে সত্য মিথ্যা যাচাই করা খুব সহজ হয়ে গেছে, তাই নারীদের দমিয়ে রাখার জন্য রচিত যেসব কাহিনী শুনে আমার মা নানী বিশ্বাস করেছেন, আমি আর করি না। এমন একটা কাহিনী টেডি বেগমের ঘটনা।

টেডি বেগমের গল্প আমার মা যখন প্রথম শুনেছিলেন তারপর প্রায় পঁয়ষট্টি বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই, ক'মাস আগে আমিও এই গল্প আবার শুনলাম, শুধু স্থান আর নাম বদলে গেছে। ঘটনাটা এরকম:

তখন আমার মায়ের বিয়ের পর নতুন সংসার আজিমপুর কলোনির ছোট একটা ফ্ল্যাটে। কলোনির কাছাকাছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ আর পুরানো ঢাকার অনেক দর্শনীয় স্থান। তাই বাসায় সবসময় মেহমান লেগেই থাকে, এরা আমার দাদাবাড়ির গ্রামের মানুষ, কখনো রোগী আর কখনো ঢাকা- দর্শনার্থী হিসেবে আসতেন। একজন যদি রোগী হয় তবে তার সাথে চারজন এ্যাটেনডেন্ট, তারা ঢাকা শহর দেখবে বলে আসেন। আমার আব্বা চাকরিতে নতুন, তাই বেতন কম আর বাসা ছোট, তারমধ্যে আমার মা ছোট সন্তান নিয়ে মেহমানদারি করতে গিয়ে হিমশিম খেতেন। প্রায়ই রান্নার সময় মা দেখতেন কিছু না কিছু ফুরিয়ে গেছে, অতএব বাচ্চা কোলে নিয়ে কাছাকাছি নিউমার্কেটে গিয়ে কিনে আনতে হতো। একদিন এভাবে কিছু কিনতে নিউমার্কেটে যাচ্ছেন, একজন মেহমান জিজ্ঞেস করলেন মা কোথায় যাচ্ছেন। মা যখন বললেন নিউমার্কেটে যাচ্ছেন, তখন তিনি খুব রেগে বললেন,

- তুমি কি টেডি বেগম হতে চাও নাকি? খবরদার!
স্বামী ছাড়া কখনও ঘর থেকে এক পাও বাড়াবে না।

তারপর মা টেডি বেগমের গল্প শুনেছিলেন। একজন মহিলা ছিলেন যিনি স্বামী ছাড়া একা একা বাজার হাটে যেতেন, তাই তাঁকে লোকে 'টেডি বেগম' বলে ডাকতো। একদিন অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান, তাকে আজিমপুর কবরস্থানে কবর দেয়া হয়। কবর দেবার পর যখন সবাই ফিরে যাচ্ছে তখন একজন দেখলেন তার হাতের ঘড়ি হাতে নাই। তিনি অনুমান করলেন, যখন লাশ কবরে রাখছিলেন, তখন হাত থেকে ঘড়ি খুলে কবরে পড়ে থাকতে পারে। তাই ঘড়ি উদ্ধারের জন্য তিনি কবরের পাশে গিয়ে কবরের উপরের মাটি কিছুটা সরালেন; দেখলেন কবরের ভিতর গিজগিজ করছে অসংখ্য ভয়ংকর সাপ, সেগুলো টেডি বেগমকে অনবরত ছোবল দিচ্ছে। এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে তিনি ঘড়ির কথা ভুলে তাড়াতাড়ি পালিয়ে এলেন, সকলকে জানালেন তিনি কী দেখেছেন! শুনে তার সঙ্গীরা সবাই বুঝতে পারলেন, টেডি বেগমের এই শাস্তি হয়েছে কারণ তিনি স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাজার হাটে যেতেন!

এই গল্প আমি পরেও শুনেছি, একবার শুনেছি বছর পাঁচেক আগে মিশরের এক নারীকে নিয়ে, মাস দুয়েক আগে শুনলাম করাচির এক নারীকে নিয়ে; তারা বেপর্দা চলাফেরা করতেন, তাদের মৃত্যুর পর তাদের কবরের শাস্তির প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা হুবহু টেডি বেগমের শাস্তির মতো। দেশ, সময় আর মানুষ বদলে গেছে, কিন্তু এই গল্প প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চালু আছে। এই গল্পের মূলকথা, ঘর ছেড়ে বাইরে পা রাখা নারীর জন্য মৃত্যুর পর ভয়াবহ আজাব অপেক্ষা করছে।

আমার মায়ের সাথে আমার তফাৎ এই, আমার মা গল্প বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু আমি বিশ্বাস করিনি!

মন্তব্য ৫১ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৫১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২৩

কামাল১৮ বলেছেন: আগের থেকে আমরা অনেক বেশি ধার্মীক হয়েছি।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৩২

করুণাধারা বলেছেন: ঠিক ধরেছেন। আগের যুগে এত তথ্য প্রবাহ ছিল না, এখন সেটা আমার নাগালের মধ্যে, সুতরাং ধর্ম সম্পর্কে অনেক জানতে পারছি এবং আত্মসমর্পণ করছি।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:১৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সূর্যদীঘল বাড়ি উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র হয়েছে। একটা দৃশ্য এমন দু'জন মহিলা শহরে ধান বিক্রি করতে গেছেন। কয়েকজন পুরুষ সমালোচনা করছেন। পুরুষগুলো একবারও ভাবলেন না এ মহিলারা তো শখ করে ধান বেচছেন না। পেটের দায়েই তো। আপনি যে সময়ের কথা বললেন, আর উপন্যাসে বর্ণীত সময়ও কাছাকাছি মনে হয়। পরিস্থিতি কিন্তু এখনও বদলায়নি। কোনো নারী বাইরে কাজে গেলেও দোষ ধরা হয়। এ দোষ ধরা ব্যক্তিরা কিন্তু ঘরে না খেয়ে মরে থাকলেও সাহায্য করতে আসবে না। এরা পারে শুধু বিধিনিষেধ দিতে।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৩৯

করুণাধারা বলেছেন: সূর্য দীঘল বাড়ি আমার প্রিয় উপন্যাস, এই ঘটনাটার কথা মনে ছিল না। মনে করিয়ে দেওয়ায় ধন্যবাদ রূপক বিধৌত সাধু।

আপনি যে সময়ের কথা বললেন, আর উপন্যাসে বর্ণীত সময়ও কাছাকাছি মনে হয়। ঠিক বলেছেন। আমার বর্ণিত ঘটনাটি পঞ্চাশের দশকের। উপন্যাসের ঘটনাটি কাছাকাছি সময়ে সম্ভবত ৪০ এর দশকের।

প্রয়োজনের তাগিদে ঘরের বাইরে বের হলেও নারীদের দোষারোপ করা হয় এই কথাটি আমি বলতে চেয়েছি। আপনি বুঝতে পেরেছেন। অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৫৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্রতি প্রজন্মের দুরত্বের হিসাবটা কি বাংলাদেশ থেকে? আপনার মেয়ে আট হাজার মাইল দুরে কোথায় আছে? বাংলাদেশ থেকে সবচাইতে দূরে (যেখানে বাংলাদেশীররা সাধারনতঃ মাইগ্রেট করে আর কি!!) হলো নিউজিল্যান্ড, সেটাও আনুমানিক সাত হাজার মাইল দুরে!!! :(

দূরত্ব যেই হারে বাড়ছে, পন্চম প্রজন্মের মহাশুন্যে যাত্রা করা ছাড়া উপায় দেখছি না!! :P

ছোটখাটো কেনাকাটার জন্য কলোনীর ভিতরে বা আশেপাশেই তো কতো দোকান ছিল, নিউমার্কেটে যেতে হবে কেন বুঝলাম না।

আগেকার মানুষদের জানার সুযোগ কম ছিল, ফলে অনেক কু-সংস্কার মানুষের মনে ঢুকে গিয়েছিল। সে যাক গে, যা একখানা পোষ্ট দিলেন, আপনার এখানে এখন ইসলামবিদ্বেষীদের আনাগোনা বেড়ে যাবে। তৈরী থাকেন। :-B

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৫১

করুণাধারা বলেছেন: হ্যাঁ, দূরত্বের হিসাব বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশ থেকে ৮ হাজার মাইল দূরে কোন দেশ জানেন না? বড় ভাই আপনাকে এটা শেখাননি?

প্রথম প্রজন্ম ঘরেই থাকতেন, কখনো বাইরে গেলে সাথে সঙ্গী নিয়ে ঘর থেকে বের হতে হয়েছে। চতুর্থ প্রজন্ম কেও তাই করতে হয়েছে। তাই পঞ্চম প্রজন্ম মহাশূন্যে যাবে নাকি নিরাপত্তাহীনতার কারণে ঘরে বসে থাকবে সেটা সময়ই বলে দেবে।

তবে এখন মেয়েদের চলাফেরা সীমিত হয়েছে ধর্মীয় কারণে নয়, নিরাপত্তাহীনতার কারণে।

আমি আমার ধর্ম সম্পর্কে ভালোভাবেই জানি, তাই পোস্টে ইসলাম বিদ্বেষী দের নিয়ে আমার ভাবনার কিছু নেই।

আমার মা কি কিনতে নিউমার্কেটে যাচ্ছিলেন সেটা আমি জিজ্ঞেস করিনি আর। হয়তো এমন কিছু যা আশপাশের দোকানে পাওয়া যেত না... ঘটনাটা কিন্তু এখনকার নয়, পঞ্চাশের দশকের।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৫৬

করুণাধারা বলেছেন:



৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:০৯

রানার ব্লগ বলেছেন: আজ থেকে তেত্রিশ বছর আগে এই দেশে নারীরা যথেষ্ট স্বাধীন ছিলেন । নব্বই পরবর্তি সময়ে জেনো এই দেশে কিছু শকুনের চোখ লাগলো যা এখনো চলছে ।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০৩

করুণাধারা বলেছেন: তেত্রিশ বছর নয় আরো আগেও মহিলারা স্বচ্ছন্দে বাইরে ঘোরাফেরা করতেন। আমি নিজে মত স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করেছি সেটা আমার মেয়ে করতে পারে নি। এর কারণ কেবল ধর্মীয় নয়, বরং সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা বেশি।

৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:১১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: নারীদের দমিয়ে রাখার কত রকম চেষ্টা দেখে যাচ্ছি জন্মের পর থেকে। কেউ নারীর মন বুঝলো না। অথচ পর্দা করেও অনেক কিছু করা যায় । শালীন থেকেও মেয়েরা অনেক কিছু করতে পারে। যারা মেয়েদের দমিয়ে রাখার চেষ্টায় রত আছেন বা ছিলেন তাদেরকেও দেখি তাদের মেয়েদের টপস জিনস পরায়ে রাস্তায় হাঁটতে আর পাশে তার বউ বোরকা পরিহিত। আমার কোনো কিছুই বুঝে আসে না। এত জগাখিচুরী মার্কা ইসলাম বাংলাদেশে কেন।

এমন টেডি বেগমের গল্প যুগ যুগ ধরেই শুনতে হবে। এসব বানোয়াট গল্প কেবল মেয়েদেরকে পুরুষের হুকুমের গোলাম করে রাখার জন্য বানানো হয়।

খুব সুন্দর লেখা আপু
জাজাকিল্লাহ খইর

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১০

করুণাধারা বলেছেন: অথচ পর্দা করেও অনেক কিছু করা যায় । শালীন থেকেও মেয়েরা অনেক কিছু করতে পারে।

ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মেয়েদের দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করা হয়; আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে। তবে আশার কথা এখন মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে, কিন্তু একই সাথে পুরুষদের পাশবিকতা বেড়ে চলেছে...

মেয়েদের টপস জিনস পরায়ে রাস্তায় হাঁটতে আর পাশে তার বউ বোরকা পরিহিত।

এই অদ্ভুত ব্যাপার ইদানিং শুরু হয়েছে। আমি এমন কয়েকজন মানুষকে চিনি। খুব ইচ্ছে করে তাদের জিজ্ঞেস করি, এমন ডবল স্ট্যান্ডার্ড কেন তাদের!!

৬| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২৩

অপু তানভীর বলেছেন: নারীদের সেই আদিম যুগ থেকেই এভাবে বানোয়াট গল্প দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়েছে । এখনও সেই চেষ্টা করা হচ্ছে । তাদেরকে শেখানো হচ্ছে হচ্ছে স্বামীর উপরে একজন পুরুষের উপরে তোমাকে নির্ভর করতেই হবে । বর্তমানে যে মেয়ে গুলো বুঝে গেছে যে স্বামী বা পুরুষের উপর নির্ভর করে নয় বরং পাশাপাশি অবস্থা কর এবং যারা সেই মোটাবেগ চলার চেষ্টা করছে সমাজ তাদেরকে নানান রূপে এই টেডি বেগমের গল্প শোনাচ্ছে । এভাবে চলে আসছে ।


পোস্টের প্রথম মন্তব্যকারী পোস্ট না পড়ে ধর্মকে টেনে এনেছে তার চিরায়িত স্বভাবের মত । ধর্ম নিয়ে চুলকানী তার অনেক দিন থেকেই । এই চুলকানী তার এখনও শেষ হয় নি ।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১১

করুণাধারা বলেছেন: বর্তমানে যে মেয়েগুলো বুঝে গেছে যে স্বামী বা পুরুষের উপর নির্ভর করে নয় বরং পাশাপাশি অবস্থা কর এবং যারা সেই মোতাবেক চলার চেষ্টা করছে সমাজ তাদেরকে এই টেডি বেগমের গল্প শোনাচ্ছে। এভাবে চলে আসছে।

একেবারে ঠিক কথা! শুধু এটা বুঝি না, মেয়েদের দমিয়ে রাখতে পারবে কি সুবিধা হয়!! যারা শক্তিমান অথবা ক্ষমতাবান তারা সবসময়ই দুর্বলের উপর উৎপীড়ন করাটাকে তাদের ন্যায্য অধিকার বলে ধরে নেয়। তাই সাদা মানুষ কালো মানুষের উপর, ধনী গরীবের উপর আর পুরুষ নারীর উপর উৎপীড়ন করাটা জায়েজ করতে নানা রকম অজুহাত আর গল্প বানায়।

প্রথম মন্তব্যকারী সব পোস্টে ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করেন, এখানেও তাই করেছেন। তিনি যদি পোস্ট পড়তেন, তাহলে বুঝতে পারতেন যে আমি এখানে ধর্ম নিয়ে কোনো কথা বলিনি। আমি দায়ী করেছি সেই সব পুরুষদের, যারা মহিলাদের দমিয়ে রাখার জন্য ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করেন।

৭| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭

শায়মা বলেছেন: টেডি বেগমের গল্প শুনে তো আমি অবাক!
এমন গাজাখুরি গল্প অবশ্য অনেক শুনেছি গ্রামের লোকজন বানায় এমনকি শহরের মানুষেরাও ইচ্ছা করে হলেও সে সব বিশ্বাসের ভান করে। বেশি ভাগ সময় মেয়েরাই মেয়েদেরকে টেডি মেডি ব্যাঙ্গ করে আটকাতে চায়।

তবে সে দিন হয়েছে অনেকটাই বাসী.......

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৮

করুণাধারা বলেছেন: তুমি এত কিছু জানো, আর টেডি বেগমের গল্প জানো না দেখে অবাক হলাম। এই গল্প সবসময় চালু আছে, অন্তত মুখে মুখে। ইন্টারনেট না আসলে হয়তো আমি জানতাম না!! তোমার জন্য দুটো ছায়াছবি দিচ্ছি, প্রথমটা করাচির দ্বিতীয় টা ইরাকের। কাহিনী কিন্তু একই।

করাচী

ইরাক





৮| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৪২

কাছের-মানুষ বলেছেন: টেডি বেগমের গল্প আমি এই প্রথম শুনলাম। যুগ যুগ ধরে নারীদের ধমিয়ে রাখার জন্য মানুষ মিথ্যার আশ্রয় নিতেও পিছ পা হয়নি।

আপনার লেখায় নারীদের আগের এবং বর্তমান অবস্থা ফুটে উঠেছে। চমৎকার লিখেছেন।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:১১

করুণাধারা বলেছেন: টেডি বেগমের গল্প বহু কাল থেকে প্রচলিত, নানা দেশে নানা নামে! আগে এগুলো মুখে মুখে প্রচারিত হতো, আজকাল ইউটিউবের কল্যাণে ইউটিউবে এগুলো দেখা যায়। দুটো নমুনা আমি উপরের মন্তব্যে দিয়েছি। এই মিথ্যা প্রচারণা করা হতো মেয়েদের ম্যানিপুলেট করতে।

আমার ইচ্ছা আছে কালের বিবর্তনে কীভাবে নারীদের নাম, পোশাক ইত্যাদিতে পরিবর্তন এসেছে সেটা তুলে ধরতে। পোস্ট ডকের ব্যস্ততার মাঝেও মাঝে মাঝে আসবেন আশাকরি।

৯| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১৯

রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার এখানে এখন ইসলামবিদ্বেষীদের আনাগোনা বেড়ে যাবে। তৈরী থাকেন।

যা ছিলো স্বাভাবিক এবং সহজ সেই বিষয়ে আলচনার ফলে যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে জ্বর আসে আর সেই সব বক্তাকে যদি কেউ বিদ্বেষী বলে তাহলে জ্বরাগ্রস্থদের কাথামুরি দিয়ে থাকাই উত্তম ।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:১৬

করুণাধারা বলেছেন: আমি বলতে চেয়েছি যে যারা নারীদের দমিয়ে রাখতে চায় তারা এ কাজ করে ধর্মকে ব্যবহার করে। এইটুকুতেই যদি কারো ইসলাম বিদ্বেষ জেগে ওঠে, তবে আলোচনা করতেই পারি, যদি তা যুক্তিযুক্ত হয়।

১০| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমি ইসলামবিদ্বেষীদের কথা বলেছি রানার ব্লগ। আপনার জ্বললো কেন বুঝলাম না। আপনি কি ইসলামবিদ্বেষী, নাকি তাদের মুখপাত্র? একটা সহজ স্বাভাবিক বিষয়কে ব্লগের ইসলামবিদ্বেষীরা কোথায় নিয়ে যায়, আপনি বুঝি জানেন না!! B:-)

সহজ স্বাভাবিক আলোচনা আর ত্যানা প্যাচানোর মধ্যে তফা্ৎ আছে। ইউ গট টু নো দ্যাট!!!

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:১৯

করুণাধারা বলেছেন: কেউ যুক্তি দিয়ে আলোচনা করতে চাইলে আলোচনার দরজা খোলা আছে। তবে অযৌক্তিকভাবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিষোদগার করার জন্য কাউকে সুযোগ দেয়া হবে না।

১১| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ৪টি প্রজন্ম সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছু বদলে গেছে।++++

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:২০

করুণাধারা বলেছেন: ঠিক বলেছেন চার প্রজন্মের ১০০ বছরে অনেক কিছুই বদলে গেছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার।

আপনার ++++ কিন্তু অদৃশ্য হয়ে গেছে। B-)

১২| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: খুব ভাল লাগল লেখাটা পড়ে। দেশ থেকে কত কিলোমিটার দুরত্বে আছি জানি না। তবে ফ্লাইটে সময় লাগে মোটে চার ঘন্টা। মাত্র চার ঘন্টা ব্যবধানে দুই দেশের পার্থক্য আকাশ আর পাতাল। এদেশে প্রথম পাড়া দিয়ে যে জিনিষটা বুঝতে পেরেছি তা হল সভ্যতা ও অসভ্যতার সীমারেখা নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনে। মেয়েরা এখানে স্বল্প পোষাকে চলাফেরা করে, একটু তাকিয়ে থাকলেও সেই দৃষ্টি যদি অশোভন বলে মনে হয় মেয়েটির তবে পুলিশে কল করলে , ধরে নিয়ে যাবে সেই পুরুষকে। এতটাই কঠোর এখানের আইন। অথচ আমাদের দেশে মেয়েদের নিরাপত্তা , সম্মান প্রদর্শন , এই জিনিষগুলো একেবারেই অনুপস্থিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কমেন্ট বক্সে , যে ধরনের নোংরা ভাষায় নারীদের আক্রমন করা হয় শিউরে উঠতে হয় দেখে। এই ব্লগেও কিছু পুরুষ ডিভোর্সের কারন হিসেবে মহিলাদের যেভাবে নোংরাভাবে উপস্থাপন করে , তা পড়লেও অবাক হয়ে যাই।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৩৪

করুণাধারা বলেছেন: আপনি চার ঘন্টা ফ্লাইটের দূরত্বে একটা সভ্য দেশে থাকেন, উগান্ডায় না!!!

সেখানে আইনের শাসন আছে, তাই নারীর প্রতি অসদাচরণ করে কেউ রেহাই পাবে না জানে, তাই সেখানে নারী নির্যাতন কম হয়, যেটা যে কোন সভ্য দেশেরই নিয়ম। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক যদি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকে, তবে তাকে সভ্য বা উন্নত দেশ বলা যায় না।

নিরাপত্তাহীনতায় কেবল শারীরিক ভাবে নয় মানসিকভাবেও নারীরা ভোগে।এই ব্লগেও কিছু পুরুষ ডিভোর্সের কারন হিসেবে মহিলাদের যেভাবে নোংরাভাবে উপস্থাপন করে , তা পড়লেও অবাক হয়ে যাই। ব্লগের শিক্ষিত মানুষের আচরণ যদি এমন হয়, তবে বাকি মানুষের আচরণ ভালো হবে কি করে!!

আমি মাঝে মাঝে বসে ভাবি, ধর্ষণের পর হত্যা করা হলো কত মেয়েকে। আমার জীবদ্দশায় কোন ধর্ষক ও খুনির শাস্তি কি দেখতে পাবো!!

আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন এই পোস্টে আমি ধর্মের শাসনের বিরুদ্ধে বলিনি, মানুষের শাসন সম্পর্কে বলেছি।

১৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার নানী গ্রামে থাকলেও ওনাকে সিগারেট খেতে দেখেছি। ওনার জন্ম সম্ভবত ১৯১৫ থেকে ১৯২০ এর মধ্যে হবে। আমার মা ১৯৫৬ সালের দিকে ঢাকায় আসেন পড়তে। হোস্টেলে ছিলেন। তার পরে বাকি সময় ঢাকা কেন্দ্রিক ছিলেন। তখন ঢাকা ছিল গুলিস্তান আর সদরঘাট কেন্দ্রিক। ওনারা বান্ধবীরা মিলে উর্দু আর হিন্দি ছবি দেখতেন সিনেমা হলে গিয়ে আর বুড়িগঙ্গার পাশে বেড়াতে যেতেন। আমার বাবার সাথে প্রেম করে বিয়ে হয়। ওনারা একই বয়সী ছিলেন। আমার নানা নানী রাজী ছিলেন না বিয়েতে তাই আমার বড় খালু অভিভাবক হয়ে ওনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। আমার মা সারা জীবন চাকরী করেছেন ১৯৯০ সালে অবসরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০২

করুণাধারা বলেছেন: তাহলে আপনার নানী আর আমার নানী সমসাময়িক ছিলেন, যদিও আপনার মা আমার মায়ের চাইতে অনেক কম বয়সের।

সেই সময়ে ছেলে মেয়েদের দেখা করায় অনেক কড়াকড়ি ছিল, তারপরও তারা কি করে প্রেম করতেন সেটা আমার কাছে খুব অবাক লাগে। আমার খালারা পঞ্চাশের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন তাদের কেউ কেউ প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন যদিও সেই প্রেম আজকের দিনের প্রেমের মতো না। সেই সময়ের প্রেম আর বিয়ে নিয়ে একটা পর্ব লেখবার ইচ্ছা আছে। যেমন আপনার মা-বাবার ক্ষেত্রে হয়েছে সেই সময় কোন মা-বাবাই মেয়ের প্রেমের বিয়ে মেনে নিতেন না। আমার একটা পোস্ট আছে আমাদের "ডোরা আপা" শিরোনামে, ডোরা আপাও আপনার মায়ের সমসাময়িক হবেন, তিনিও প্রেম করেছিলেন, তার বাবা মেনে নেননি। তখন তার বড় ভগ্নিপতি উদ্যোগী হয়ে তার বিয়ে দিয়েছিলেন। একেবারে আপনার বাবা মার মত ঘটনা। সে যুগে যা মহা অন্যায় ছিল, আজ তা অতি স্বাভাবিক।

১৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমি শুধু বুঝি- নারীরা হচ্ছেন ধরনী। তাদের সম্মান করতে হবে। শ্রদ্ধা করতে হবে।

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৪

করুণাধারা বলেছেন: আমি শুধু বুঝি- নারীরা হচ্ছেন ধরনী। তাদের সম্মান করতে হবে। শ্রদ্ধা করতে হবে।

প্রার্থনা করি আজীবন যেন এই মনোভাব বজায় থাকে।

এত দেরি করে মন্তব্য করতে আসলেন... এতক্ষনে তো সবার মন্তব্য করা শেষ! কে কি মন্তব্য করল সেটা দেখতে তাহলে কি আর আসবেন না!! :(

১৫| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:২৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




চারটি প্রজন্মের ভৌত পরিবর্তন হয়েছে সত্য কিন্তু তা সময়ের তাগিদেই। সময় বদলালে তার সাথে অটল-নিরেট দাঁড়িয়ে থাকা গাছটিকেও বদলে যেতে হয়ই । কেউ বাড়ে শনৈঃ শনৈঃ, কেউ বাড়ে বছরে সেন্টিমিটার হারে। তবুও বদলায় তো ! এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু মানুষের বেলাতে এই পরিবর্তন আসা উচিত শিক্ষা- মানসিকতা- দৃষ্টিভঙ্গী- সামাজিকতা সব মিলিয়ে মন ও মননে। মানুষ বৃক্ষ নয় বলেই সভ্যতার বিকাশে এর হার হওয়া উচিত সময়ের সমানুপাতে। এই উপ-মহাদেশে ব্যতিক্রম বাদে তা কিন্তু হয়নি। যেখানে মানুষের মানবিকতা- ধ্যান-ধারনা বাড়বে দ্রুততার সাথে সেখানে পুরোনো অচলায়তনের শেকড়টাই তাকে বেড়ে উঠতে দেয়নি। টেনে রেখেছে পিছে। যেটা আপনার এই লেখাতে কিছুটা বলতে চেয়েছেন।
অচলায়তন ভেঙ্গে নতুনকে বরণ করে নেয়ার সাহস পুরোনো প্রজন্মের হয়নি, নয়তো স্বাচ্ছন্দবোধ করেননি নতুন ধ্যান-ধারনাকে আবাহনে। সেই বন্ধ্যা মাটিতে দু'একটা ফুল কুঁড়ির দেখা মিলেছে বটে কিন্তু আগাছাতে ভরে যেতেও দেরী হয়নি। তাই এই চতুর্থ প্রজন্ম একটা শংকরায়নের বৃত্তে ঘুরে ঘুরে শুধু দিশা হারিয়ে ফেলতে বসেছে। না পারছে সে প্রাগৈতিহাসিক ধ্যানধারণাকে গলায় ঝোলাতে, না পারছে একেবারেই উগরে দিতে। যেটুকুও বা উগরে দিতে পেরেছে তাতে নিষ্ঠা ও আত্মবিশ্বাসের পোঁচ কতোটুকু, সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে চতুর্থ প্রজন্মের বাড়ন্ত গাছে দ্রুততার সাথে পরিবর্তনের ফল হচ্ছে বটে তবে তাতে না থাকছে স্বাদ, না গন্ধ। শুধু দৃষ্টি-নন্দনতাতেই তাদের আটকে থাকতে হচ্ছে।

বুঝতে পারছিনে, আমার এই মন্তব্য আপনার এই লেখার বক্তব্যের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব করতে পারলো কিনা!

অনেকদিন পরে অনেকটা স্মৃতিচারণমূলক লেখা নিয়ে এলেন যা সুন্দর তো বটেই বোধ জাগানিয়াও।
শিরোনামে বোঝা যাচ্ছে এটা আপনার লেখার ১ম পর্ব । বাকী ২য়, ৩য়, ৪র্থ ........ পর্বে আরও বিশদ করে আমরা হয়তো পাবো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে উত্তরণের গল্পগুলো। তখন না হয় আরও কথা বলা যাবে।

০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৪০

করুণাধারা বলেছেন: আপনার গভীর চিন্তা প্রসূত মন্তব্যটি ভালো লেগেছে আহমেদ জী এস! আপনি সমস্যা ধরতে পেরেছেন, একেবারে ঠিকভাবে!

একটা গাছও সময়ের সাথে সাথে বদলে যেতে থাকে, নিজের জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে থেকেও।
এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু মানুষের বেলাতে এই পরিবর্তন আসা উচিত শিক্ষা- মানসিকতা- দৃষ্টিভঙ্গি- সামাজিকতা সবমিলিয়ে মন ও মননে। মানুষ বৃক্ষ নয় বলেই সভ্যতার বিকাশে এর হার হওয়া উচিত সময়ে সমানুপাতে। - - - - -
অচলায়তন ভেঙে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার সাহস পুরনো প্রজন্মের হয়নি, নয়তো স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেননি নতুন ধ্যান-ধারণাকে আবাহনে। সেই বন্ধ্যা মাটিতে দু-একটা ফুলকুঁড়ির দেখা মিলেছে বটে কিন্তু আগাছাতে ভরে যেতেও দেরি হয়নি। তাই এই চতুর্থ প্রজন্ম একটা শংকরায়নের বৃত্তে ঘুরে ঘুরে শুধু দিশা হারিয়ে ফেলতে বসেছে। না পারছে সে প্রাগৈতিহাসিক ধ্যান ধারণাকে গলায় ঝোলাতে, না পারছে একেবারেই উগরে দিতে। যেটুকু বা উগরে দিতে পেরেছে তাতে নিষ্ঠা ও আত্মবিশ্বাসের পোঁচ কতটুকু, সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে চতুর্থ প্রজন্মের বাড়ন্ত গাছে দ্রুততার সাথে পরিবর্তনের ফল হচ্ছে বটে তবে তাতে না থাকছে স্বাদ, না গন্ধ। শুধু দৃষ্টি- নন্দনতাতেই তাদের আটকে থাকতে হচ্ছে।

আপনার মন্তব্যের এই অংশটুকু পড়ে আমি কিছুটা ধাঁধায় পড়ে গেলাম, আপনি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে চতুর্থ প্রজন্মের কথা বলছেন তো, নাকি কেবল নারীদের কথা!! আসলে চতুর্থ প্রজন্ম সম্পর্কে আপনার এই কথাটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সত্যি!! তবে মনে হচ্ছে আপনি কেবল নারীদের কথাই বলছেন, যেহেতু আমার লেখাটি নারীদের নিয়ে। এটা ঠিক, অচলায়তন ভেঙে বহিরঙ্গে পরিবর্তিত হলেও অধিকাংশ নারীই আজও ভেতরে ভেতরে পুরোনো ধ্যান ধারণা বয়ে চলেছে। কিন্তু এর দায় কি তার একার? ১০০ বছরে নারী বহিরঙ্গে হলেও যতটুকু বদলেছে, পুরুষ তার সিকিভাগও বদলায়নি, তার আধিপত্যবাদী আর সুবিধাবাদী মনোভাব খুব কমই বদলেছে। ধর্ম আর সমাজের দোহাই দিয়ে নারীকে দমিয়ে রাখতে চায় অধিকাংশ পুরুষ। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স আগে ছিল না, এখন দিন দিন বাড়ছে। এই সব কারণেই হয়তো, চতুর্থ প্রজন্মের বাড়ন্ত গাছে দ্রুততার সাথে পরিবর্তনের ফল হচ্ছে বটে তবে তাতে না থাকছে স্বাদ, না গন্ধ।

আপনার চমৎকার মন্তব্যের যথাযথ প্রতি উত্তর দিতে পারলাম কিনা জানিনা!!

ইচ্ছা আছে আরো কয়েক পর্ব লেখার, পিছনে ফিরে দেখার জন্য এ লেখা, কতটা কন্টকাকীর্ণ পথ পেরোতে হয়েছে তার হিসাব করা। মাঝে মাঝে হতাশা ঘিরে ধরে, যেমন আজকেই খবরে দেখলাম যে দূতাবাসে আশ্রয় নেয়া নির্যাতিত নারী ধর্ষিতা হয়েছেন দূতাবাসের কর্মকর্তা দ্বারা, মনে হয় নারী কেবলই একখন্ড মাংসপিণ্ড... সকল যুগেই!

আগামী পর্বেও পাশে থাকবেন আশাকরি।

১৬| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৭:২২

সোহানী বলেছেন: দেশের অবস্থায় যদি সত্য বলি তাহলে বলবো, মেয়েদের অবস্থান আরো খারাপ হয়েছে।

মেয়েরা শিক্ষিত হয়েছে, সচেতন হয়েছে, নিজের অধিকার বুঝতে শিখেছে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে।

কিন্তু পাশাপাশি ধর্মীয় উন্মাদনা বেড়েছে যা প্রভাব পড়েছে মেয়েদের উপর। মেয়েদের প্রতি সহিংসতা বেড়েছে হাজারগুন।

স্যোশাল মিডিয়ার কারনে মেয়েরা অনেক বেশী ওপেন হয়েছে যার সুযোগটা নিচ্ছে ছেলেরা। সাজগোজ, সেল্ফি, হ্যাংআউট নিয়ে এতো বেশী উন্মাদ হচ্ছে যে অন্য কিছু গৈাণ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। বা বলবো, তারা লোভী ভোগী হচ্ছে দিন দিন। আর তার প্রভাব পড়ছে প্রায় সবার উপর।

খুব দরকার একটা স্যোশাল বিপ্লব, একটা ঝাঁকুনি। তাদেরকে বুঝতে হবে বেনিয়ারা তাদেরকে পুতুল বানাচ্ছে, তাদেরকে দিয়ে ব্যবসা করছে, তাদের মেধাকে ধ্বংস করছে।.............

কেউ কি বুঝবে?? কবে??

০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৪৫

করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্যে অল্প কথায় মেয়েদের অবস্থার চমৎকার বর্ণনা, সোহানীর!

আমার প্রজন্মের নারীরা যখন "মেয়েমানুষ" তকমা মুছে মানুষ হবার জন্য শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবার জন্য লড়াই করেছে, ধর্মের নামে প্রচলিত অনেক মিথ্যা বিধির অসারতা প্রমাণ করতে পর্বত প্রমাণ বাঁধা ঠেলেছে, তখন আজকের নারীরা প্রাণপনে চেষ্টা করে চলেছে নিজেকে "মেয়েমানুষ" প্রমাণ করবার!!

সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মেয়েরা অনেক বেশি ওপেন হয়েছে যার সুযোগটা নিচ্ছে ছেলেরা। সাজগোজ, সেলফি, হ্যাংআউট নিয়ে এত বেশি উন্মাদ হচ্ছে যে অন্য কিছু গৌণ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। বা বলবো, তারা লোভী ভোগই হচ্ছে দিন দিন আর তার প্রভাব করছে সবার উপর।

এই ব্যাপারটা নিয়ে আপনার যতটা উদ্বেগ, আমারও ঠিক ততটাই। আপনি বিভিন্ন সময়ে এই নিয়ে পোস্ট দিয়ে মেয়েদের সাবধান করেছেন, সেগুলো আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়েছি, কিন্তু যাদের জন্য লিখেছেন তাদের এসব পড়ার সময় কোথায়!! আমার খুব খারাপ লাগে, যখন দেখি স্কুল পড়ুয়া মেয়েগুলো পর্যন্ত পড়াশোনা বাদ দিয়ে সেই আপনার উল্লেখিত লোভী আর ভোগী জীবন বেছে নিয়েছে। এদের পরের প্রজন্ম তাহলে কী হবে!!

আপনার কাঙ্খিত সোশ্যাল বিপ্লব বা ঝাঁকুনি কিভাবে আসবে সোহানী!! মেধার চর্চা তো ইতিমধ্যেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে!!

১৭| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:২৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বিগত ১০০ বছরে সমাজ-দেশ অনেক এগিয়ে গেছে।
তার সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়েছে চার প্রজন্মের মানুষ (নর-নারী) গুলোও।

তবে কিছু জিনিষ এখনো আছে একই , যার কোন পরিবর্তন একই আছে এবং যেগুলি ১০০ কেন ১০০০ কোটি বছরেও কোন পরিবর্তন হবেনা। যেমন - নর-নারীর দৈহিক গঠনগত কাঠামো।

তা যা আছে তাই থাকবে তবে মানষিক কাঠামোতে স্থান-কাল ভেদে পরিবর্তন আসবে অভিযোজনের তাগিদে শিক্ষা-পরিপাপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে।

আর তার ফলে নারীদের মাঝে কেউ হয়ত হবে টেডি বেগম ,কেউ ঘসেটি বেগম কিংবা তসলিমা নাসরিন । আবার হতে পারেন কেউ কেউ বেগম রোকেয়া কিংবা হযরত আয়েশা (রাঃ)

তেমনি পুরুষের মাঝেও কেউ হতে পারেন সেঞ্চুরিয়ান মানিক কিংবা এপিজে আবুল কালাম কিংবা মুহাম্মদ (সাঃ) এর মত।

আর এতসবের মাঝে কেউ তার স্বকীয়তা(নর-নারীর জন্য অবশ্য করনীয়-পালনীয় বিষয়গুলি) হারাবে আবার কেউ তা বহন করে চলবে যুগ থেকে যুগে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

আর তাইতো কোথাও কোরআনের মেলা ত কোথাও হয় ন্যাংটা মেলা । কোথাও নর-নারী উভয়েই সামাল (শালীন) ত কোথাও উভয়েই বেসামাল।

শুরু হয়েছে ‘ন্যুডফেস্ট’ - লিংক -https://mybangla24.com/newspapers/manabzamin-online

এ জীবনেরই অংশ বোন। জীবনকে যে যেভাবে উপভোগ করতে চায় জীবন সেভাবেই তার কাছে ধরা দিবে।

০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৪৭

করুণাধারা বলেছেন: আপনার মন্তব্যের প্রথম অংশের সাথে একমত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। সময়ের সাথে সাথে নরনারীর মানসিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসবে যদিও তাদের দৈহিক কাঠামো একই রকম রয়ে যাবে।

তার ফলে নারীদের মাঝে কেউ হয়তো হবে টেডি বেগম কেউ হয়তো ঘসেটি বেগম কিংবা তসলিমা নাসরিন। আবার হতে পারেন কেউ কেউ বেগম রোকেয়া কিংবা হযরত আয়েশা (রাঃ)

তেমনি পুরুষের মাঝেও কেউ হতে পারেন সেঞ্চুরিয়ান মানিক কিম্বা এপিজে আব্দুল কালাম কিম্বা মোহাম্মদ (সাঃ) এর মত।


সাথে আপনার এই কথার সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। আগামী দিনের কোনো পুরুষ বিশ্বজগতের মহামানব, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মতো হতে পারেন বলে আপনি কীভাবে ভাবতে পারলেন জানি না!! তেমনি হযরত আয়েশা (রাঃ), যাকে মুসলমানদের মায়ের মর্যাদা দিয়েছেন আল্লাহ, তার সমকক্ষ কোন নারী কীভাবে হতে পারে!!

মোটের উপর, পুরুষ এবং নারীর পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ থাকলে, শান্তিময় সহবস্থান তাদের উভয়ের জন্য কল্যাণ নিয়ে আসবে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, এবং শুভকামনা রইল।

১৮| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪৭

বিজন রয় বলেছেন: যে বিষয় লিখেছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মনে পড়ে গেল আমাদের একজন বেগম রোকেয়া ছিলেন। যুগ যুগ ধরে আমদের সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে, আরো এগোবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

সৃষ্টির উৎসমূলে আমরা কি গ্রহণ করবো কি বর্জন করবো তার উপরে অনেকাংশ নির্ভর কনে তার জীবন কেমন হবে।

পোস্টে ভাললাগা।
শুভকামনা।

০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৫১

করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বিজন রয়। অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগলো!

জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে আমাদের জীবনও এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে উন্নত হবার কথা, নানা রকম কূপমন্ডুকতা থেকে বের হয়ে আসবার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। এখনও আমাদের নারীরা বেশিরভাগ মেয়েমানুষ হয়ে রয়েছেন, অল্পই মানুষ হতে পারছেন। এসব দেখে মনে হলো কিছু লিখি, যা দেখলাম আর যা যা মনে আসে...

আশাকরি ব্লগে আবার নিয়মিত হবেন, শুভকামনা রইল।

১৯| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:১৬

রানার ব্লগ বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমি বলতে চেয়েছি যে যারা নারীদের দমিয়ে রাখতে চায় তারা এ কাজ করে ধর্মকে ব্যবহার করে। এইটুকুতেই যদি কারো ইসলাম বিদ্বেষ জেগে ওঠে, তবে আলোচনা করতেই পারি, যদি তা যুক্তিযুক্ত হয়।

এখনকার ধর্মের ব্যবহার কেবলি নারী ভিত্তিক । কিছু মানুষের আচরন দেখলে বা কথা শুনলে এটাই মনে হয় নারীর উপর ধর্মের একটা বোঝা চাপিয়ে দিলেই সমাজ সুধরে যাবে । আর এই নারী এবং ধর্মের অপব্যবহার বিষয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে যদি ধর্ম বিদ্বেষীরা আলোচনা করে এতে ধর্ম প্রেমীদের অস্বস্তি না প্রকাশ করলেও চলবে । আমি এটাই বুঝিয়েছি । হয়তো আমার প্রকাশ জগাখিচুড়ি হয়ে গেছে তাই কেউ বুঝতে পারে নাই ।

একটা ব্যপার আমার কাছে খানিকটা অবাক লাগে। ধর্ম বিদ্বেষীরা যখন ধর্মের কোন বিষয় নিয়ে ব্যখ্যা দাবি করে ধর্ম প্রেমীরা ব্যখ্যার থেকে হইচই করতে বেশি পছন্দ করে নতুবা সরাসরি নাস্তিক বলে ঝাপিয়ে পরে । বিষয় টা কি ?

ব্যখ্যা নাই ব্যখ্যা আবিষ্কার করো । পড়াশুনা না থাকলে সেইটা কইরা আসো । পৃথিবীর কোন শব্দ ব্যখ্যার অতীত না ।

০৯ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:১৬

করুণাধারা বলেছেন: দুর্বলের উপর সবল নিপীড়ন করার জন্য দমিয়ে রাখার জন্য কোনো একটা অজুহাত দরকার হয়, নারীদের উপর পুরুষ দমননীতি চালাতে এক্ষেত্রে ধর্মের অজুহাত সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। এটা শুধু ইসলাম ধর্মে নয়, সকল ধর্মেই হয়ে থাকে।

আমি টেডি বেগমের গল্প এনেছি, তার মানে এই নয় যে আমি বলছি যে ইসলাম নারীকে ঘরে থাকতে আদেশ দেয়। সেটা বলতে চাইলে আমি সোজাসুজি ইসলামের নির্দেশ উদ্ধৃত করতাম। আমি বলতে চেয়েছি পাপের আর সাপের ভয় নারীদের বহুকাল ধরে দেখানো হচ্ছে, আমাদের দেশেও আর অন্য দেশেও। কিন্তু আমাদের আগের প্রজন্মের নারীরা এতে বিশ্বাস করলেও এখনকার তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আজকের নারীরা বুঝতে পারে যে এগুলো নিছকই গল্প, দমনের হাতিয়ার। তাঁরা এটা অগ্রাহ্য করে ঘর থেকে বেরিয়ে কর্ম ক্ষেত্রে বিচরণ করছে।

এই ঘটনাতে কারো ইসলাম ফোবিয়া উদ্বেলিত হবার যেমন কারণ নেই, তেমনি তাঁদের কথায় ইসলাম প্রেমে কারো আবেগান্বিত হবারও কোনো কারণ নেই। সহজ জিনিসকে সহজভাবে দেখাই ভালো।

আবার ফিরে এসে আপনার ভাবনা জানানোর জন্য জন্য ধন্যবাদ রানার ব্লগ।

২০| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

জুন বলেছেন: টেডি বেগমের মত গল্প শুনে এই পর্যন্ত এসেছি করুনাধারা। ছোট বেলায় আমাদের বাসায় এক ছুটা বুয়া ছিল দীর্ঘদিন ধরে। বয়স যে তার কত বোঝার উপায় নেই। মাথার সব চুল বেশির ভাগই শ্বেতশুভ্র। গায়ের চামড়া কুচকে গেছে। তবে যতটা বয়স্কা দেখাতো ততটা বয়স তার হয়েছিল কি না আল্লাহ জানেন। অত্যাচারী নিস্কর্মা স্বামী আর ছয় সন্তান নিয়ে যুদ্ধরতা আবদুলের মায়ের পরণে থাকতো একটা ছেড়া সুতির শাড়ি। কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত এক প্যাচ দেয়া সেই শাড়ির বাকি অংশটুকু দিয়ে মাথার এক কোনা ঢাকতো। আর আমাদের উপদেশ দিত "এই যে চুল বাইর কইরা ঘুরতাছো মরলে কবরে আজদাহা সাপে কামড় দিবো তহন বুঝবা "

০৯ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:১৮

করুণাধারা বলেছেন: টেডি বেগমের কাহিনী আরেকটা ভার্সন পেলাম জুন! চমৎকার গল্প! স্পষ্ট দেখতে পেলাম আব্দুলের মাকে, ছেঁড়া সুতি শাড়ি পরা, কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত এক প্যাচ দিয়ে পরা, সেই শাড়ির বাকি অংশটুকু দিয়ে মাথার এক কোনা ঢাকা! অত্যাচারী নিষ্কর্মা স্বামীর সেবা করে, মাথায় কাপড় দিয়ে কবরে আজদাহার আক্রমণ ঠেকিয়ে দিবে মনে করছে...

একই সাথে আমি বালিকা জুনকেও দেখতে পাচ্ছি, বড় বড় চোখ করে আব্দুলের মার গল্প শুনছে... বেচারি আবদুলের মা! যদি জানতো এত ভয় দেখানোর পরেও আপনি খালি "ঘুরতাছো" না, পাহাড় - সাগর- বন- জঙ্গল সমস্ত চষে বেড়াবেন সারা জীবন ধরে!!!

চমৎকার গল্প বলে মন ভালো করে দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ জুন।

২১| ০৮ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১:২৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




নিটোল একটি প্রতিমন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
জ্বী; আমি শুধু নারী নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব প্রজন্মের কথাই বলেছি। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই মানুষের নিজেকে পরিবর্তন করতে হয়েছে নিজ প্রয়োজনেই নতুবা সমাজকে দেখে তার সাথে তাল মেলাতে তাকে বদলে যেতে হয়েছে। শেষের দলের এই পরিবর্তন "আরোপিত", স্বয়ংকৃত ভাবে নয়।
পরিবর্তনের ধারাটি শুরু করেছে পুরুষেরাই। নারীর গর্ভে সন্তানের বীজ বপনের ভেতর দিয়েই এর শুরু (আদম-হাওয়া পর্ব)। প্রজন্মের অস্তিত্ব না থাকলে কোনও পরিবর্তনের প্রয়োজনই হয়তো ছিলোনা। একেবারে প্রথম প্রজন্মের পুরুষেরাই এই পরিবর্তনের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে একই ভাবে এবং সেখানেই সে তার কর্তৃত্ব ফলিয়েছে। নারীকে অবদমনের সেই-ই মনে হয় শুরু। প্রজন্মের পর প্রজন্মে পুরুষের এই আধিপত্য তাকে এমন এক জায়গায় বসিয়েছে যে, এখন পুরুষেরা এই আধিপত্যবাদকে "গ্রান্টেড" বলে ধরেই নিয়েছে। ইদানীং আমাদের সমাজে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এই "গ্রান্টেড" ধারণাটিকে গ্যারান্টি দেয়ার প্রবনতা বেড়েই চলেছে।
তবুও সভ্যতা এগিয়ে যায় বলেই সময়ের প্রয়োজনে পুরুষকে তার আধিপত্যবাদের মুঠোকে শিথিল করতে হয়েছে কিন্তু মুঠোকে খুল্লাম খুল্লা করে দেয়নি একেবারেই। আর নারীরা কালে কালে শিথিল মৃঠো থেকে বেরিয়ে যতোটা না স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছে ততোটা পুরোপুরি স্বাধীন হয়ে ওঠার মতো সাহসী হয়ে উঠতে পারেনি। সামাজিক, গোত্রিক, অর্থনৈতিক কাঠামো এমন করেই পুরুষেরা তৈরী করে রেখেছে যে সেখানে নারীর পায়ে অদৃশ্য একটা শেকল থেকেই যাচ্ছে কিন্তু এই শেকলটা যে আসলেই ভঙ্গুর, অন্তত নারীরা তা বুঝতে পারছেন না। নারীদের মনেই হচ্ছে, শেকল দিয়ে তারা অনেকটা বন্দি। , দীর্ঘদিন হাতঘড়ি পড়ে থাকলে যেমন হাতে একটি দাগ পড়ে যায় এবং ঘড়ি খুলে ফেললেও মনে হয় ঘড়িটি হাতেই আছে, তেমনি অনস্তিত্বের একটি শেকল যেন পায়ে জড়ানো আছেই এমন একটা অনুভূতি থেকে নারীরা কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছেন না মনে হয়।

আমার মনে হয়, এ কারণেই নারীরা পেছিয়ে আছেন। এ দায় যতোটা না পুরুষের ততোটাই বেশি নারীদের। এটা স্বীকার্য্য যে, পুরুষের শিথিল করা মুঠো থেকে বেরিয়ে আসতে নারীদের অনেক কন্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে, অনেক গঞ্জনা সইতে হয়েছে! তবুও আশার কথা বিগত প্রজন্মের "করুনাধারা"র মতো মানবীরাও যে এসব নিয়ে ভাবছেন, আগামী প্রজন্মের জন্যে পথের খোঁজ করছেন!

সামনের পর্বগুলোতে হয়তো আরও পথের দিশা পাবো।
শুভেচ্ছান্তে।

০৯ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২৮

করুণাধারা বলেছেন: প্রজন্মের পর প্রজন্মে পুরুষের এই আধিপত্য তাকে এমন এক জায়গায় বসিয়েছে যে, এখন পুরুষেরা এই আধিপত্যবাদকে গ্রান্টেড বলেই ধরে নিয়েছে। ইদানিং আমাদের সমাজে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এই "গ্রান্টেড" ধারণাটিকে গ্যারান্টি দেওয়ার প্রবণতা বেড়েই চলেছে।

"ইদানিং... বেড়ে চলেছে " এই শব্দগুলো ব্যবহার করে বর্তমান অবস্থাকে সঠিক বর্ণনা করেছেন। আমার মা- নানীর সময় তথ্য প্রবাহ এত সহজলভ্য ছিল না, তাই সেসময় ধর্মের অপব্যাখ্যা এত সহজে "মেয়েমানুষের" কাছে পৌঁছাতো না। আজ এটা সহজলভ্য, তাই হয়তো এখনকার মেয়েরা ধর্ম মেনে চলার নামে যা করে তা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়। আজকাল ধর্মীয় পোশাকের নামে মেয়েরা এমন পোশাক পরে যা আমি আরব দেশের মেয়েদেরও পরতে দেখিনি!! আমার মা- নানীরা ধর্ম পালন করেছেন, কিন্তু এমন পোশাক পরা অত্যাবশ্যক মনে করেননি, যদিও তারা সকল সময়ই শাড়ি দিয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে থাকতেন। আপনার কথাই ঠিক, এখনকার সবকিছুই আরোপিত বলে মনে হয়, মনে হয় এক ঘোরের মধ্যে ছুটে চলেছে... কেন করছে, কী করছে তা জানেনা।

দীর্ঘদিন হাত ঘড়ি পড়ে থাকলে যেমন হাতে একটি দাগ পড়ে যায় এবং ঘড়ি খুলে ফেললেও মনে হয় ঘড়িটি হাতেই আছে, তেমনি অনস্তিত্বের একটি শিকল যেন পায়ে জড়ানো আছেই এমন একটা অনুভূতি থেকে নারীরা কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছেন না মনে হয়... আমার মনে হয় এ কারণেই নারীরা পিছিয়ে আছেন। এ দায় যতটা না পুরুষের ততটাই বেশি নারীদের।

শেষ বাক্যটি আমার উপলব্ধিকে পুরোপুরি বর্ণনা করছে। কী করে সেটা বলি... আমার আগের প্রজন্মের মতোই জেনেছিলাম, "সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে"। জানতাম না, এই অনুভূতি পায়ের অদৃশ্য শিকলের মতই আমাকে জড়িয়ে ছিল, আমাকে শিকলের দৈর্ঘ্য বেড়েছে বলে আমার সীমানা বিস্তৃত হলেও আমি খুঁটিতে বাঁধা আছি... তাই আমি নিজে নারীর পক্ষে মানানসই নানা গুণ অর্জন করার জন্য চেষ্টা করে গেছি, কন্যাকেও শিক্ষা দেবার চেষ্টা করেছি সেসব শিক্ষা দেবার।

অথচ আমিই আত্মতুষ্টিতে ভেসেছি এই ভেবে যে, আমি আমার ছেলে আর মেয়ের জন্য খাদ্য- বস্ত্র- শিক্ষার সমান সুযোগ দিয়েছি... এটা ভেবে দেখিনি যে, দুজন মাত্র সন্তানের জন্য এই সমান সুযোগ দেয়া কঠিন কিছু নয়! ফলে একই বিভাগের শিক্ষার্থী আমার ছেলেকে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে যখন দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে দিয়েছি, তখন মেয়েকে ঘরের কাজ শিখিয়েছি!! কারন আমার মনে বদ্ধমূল ধারনা ছিল, যত লেখাপড়াই করুক মেয়েদের ঘরের কাজ করতেই হবে। নিজে যে অদৃশ্য শিকল বয়ে বেড়িয়েছি, তা চাপিয়ে দিয়েছি মেয়ের উপর!!

ঠিকই বলেছেন আপনি, এই চাপানোর দায় পুরুষের চাইতে মেয়েদের বেশি। পরবর্তীতে এ নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে।

আবার ফিরে এসে আমার উপলব্ধিকে জাগিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ আহমেদ জী এস।

২২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫১

মিরোরডডল বলেছেন:




ধারাপু এক কথায় লেখাটা অনবদ্য লাগলো অনেক কিছু জানলাম।
আমাদের নানী মায়েদের জীবনের চেয়ে আমাদের সময়ে ক্রমে অনেক পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষা ক্যারিয়ার লাইফস্টাইল, আমাদের পরের জেনারেশনে আরো চেন্জ আসবে, সেটা আমি মনে করি পজিটিভভাবে এগিয়ে যাওয়া।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন না হওয়াটাই সঠিক সেটাও আমার ভালো লাগে।
সেগুলো হচ্ছে আমাদের কালচার সংস্কৃতি, পারিবারিক জীবনের কিছু ধারা, নর্মস মূল্যবোধ।

সময় মানেই পরিবর্তন, যেকোন পরিবর্তনকে ওয়েলকাম করতে হবে যতক্ষণ সেটা জীবনে এক্সট্রা ভ্যালু এড করছে।
সেটা আমাদেরকেই বুঝে নিতে হবে what to accept & what not.
নেগেটিভ অনেক কিছুই আছে বা থাকবে, সেগুলো হয়তো ঠিক হবে একদিন কিন্তু সময় লাগবে।

টেডি বেগমের গল্প আগে শুনিনি কখনো।
স্বামী ছাড়া একা একা বাজার হাটে গেলে যদি এই অবস্থা হয়,
আমাদের যে জীবনযাপন, তাহলে আমাদের কি হবে তাই ভাবছি :)


০৯ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৪২

করুণাধারা বলেছেন: পরিবর্তনকে ওয়েলকাম করতে হবে, ঠিক আছে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে কিভাবে যেন মানবিকতা, মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে...

আবার এটাও ঠিক, আমরা বাহ্যিকভাবে বদলে গেলেও, প্রগতিশীলতার ভান ধরলেও ভেতরে ভেতরে নানা বিধিনিষেধের বেড়াজালে নিজেদের আটকে ফেলেছি। সামাজিক নিরাপত্তা না থাকায় ধর্মীয় বিধিনিষেধ জাঁকিয়ে বসেছে। এ থেকে উত্তরণের পথ নারীকে নিজেকেই খুঁজতে হবে। বাতি হয়ে পথ দেখাতে পারতো শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত স্বনির্ভরতা। অথচ সস্তা ভোগের মোহে পড়ে নারী পথ হারাতে বসেছে। :(

টেডি বেগমের গল্পের আরেকটা ভার্সন পেলাম জুনের কাছ থেকে। পড়ে দেখো।

আমাদের যে জীবনযাপন, তাহলে আমাদের কি হবে তাই ভাবছি

এই নিয়ে যদি ভাবতে বসো, তাহলে তুমি আমার নানী। ;)

২৩| ১০ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৫০

মিরোরডডল বলেছেন:



কিন্তু এটা করতে গিয়ে কিভাবে যেন মানবিকতা, মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে...

একারণেই বলেছি আপু, পরিবর্তনের কতটা গ্রহণ করবো আর করবো না সেটাও আমাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এখানে ভুল সিদ্ধান্ত মানেই সঠিক পথ ছেড়ে ডিরেইল হয়ে মূল্যবোধের অবক্ষয়।
মানুষ হিসেবে অবশ্যই মানবিক হতে হবে।

প্রগতিশীলতার ভান ধরলেও ভেতরে ভেতরে নানা বিধিনিষেধের বেড়াজালে নিজেদের আটকে ফেলেছি।

শত বছরের অভ্যাস বংশ পরম্পরায় চলে আসছে, তাই হয়তো পুরোপুরি ছাড়িয়ে যেতে সময় লাগবে কিন্তু আমার মনে হয় অনেক পরিবর্তন এসেছে যেটা পজিটিভ। নানাবিধ কুসংস্কার ঘরে বাইরে, পারিবারিক সামাজিক, নানাবিধ অনিয়মের শৃঙ্খল আর বেড়াজাল থেকে আমরা অনেকখানি বের হয়ে আসছি।

নানী দাদিকে সেইভাবে পাইনি তাদের জীবন কেমন প্র্যাকটিক্যালি দেখা হয়নি।
কিন্তু মা খালাদের জীবন দেখেছি।
উইদ ফুল রেস্পেক্ট টু দেম, তারা হয়তো তাদের সেই জীবনে হ্যাপি কিন্তু আমি নিজেকে ওই জায়গায় চিন্তাও করতে পারিনা। আমাদের জীবন তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
I feel lucky and privileged having this life.
I can breathe, I can cherish the taste of freedom.
Living the life, the way I want.
Independently with self-respect which is my topmost priority.

সামাজিক নিরাপত্তা না থাকায় ধর্মীয় বিধিনিষেধ জাঁকিয়ে বসেছে।

হ্যাঁ, এই বিষয়ে আমাদের আরও সংস্কারের প্রয়োজন প্রয়োজন।

এ থেকে উত্তরণের পথ নারীকে নিজেকেই খুঁজতে হবে।

Absolutely, মেয়েদের নিজেদের ইনিশিয়েটিভ নিয়ে আরো পরিবর্তন আনতে হবে।

বাতি হয়ে পথ দেখাতে পারতো শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত স্বনির্ভরতা।

শিক্ষা আর আত্ম-স্বনির্ভরতার কোন বিকল্প নেই।
This is a must for all women.

অথচ সস্তা ভোগের মোহে পড়ে নারী পথ হারাতে বসেছে।

আগের মন্তব্যে যা বলেছি, যে পরিবর্তন জীবনে পজিটিভ ভ্যালু আনবে সেটাকে গ্রহণ করতে হবে।
পরিবর্তন মানেই অনিয়ম আর উচ্ছৃঙ্খলতা না, যারা সেটা করে তারাই পথ হারায়।

টেডি বেগমের গল্পের আরেকটা ভার্সন পেলাম জুনের কাছ থেকে। পড়ে দেখো।

পড়েছি।

এই নিয়ে যদি ভাবতে বসো, তাহলে তুমি আমার নানী।

ভালো বলেছো আমি নানী :)
যারা এগুলো বলে বা বলেছে এই করলে ওই হবে, এটা সেটা, সেরকম মানুষ এখনো আছে আমাদের আশেপাশে।
তাই বলছি ওরা যদি টেডি বেগমকে নিয়ে এগুলো বলে, আমি বা আমাদের মতো মানুষকে নিয়ে না যেনো কি বলবে।
অনেকে অনেক কিছু বলেও, হয়তো শেয়ার করবো কখনও।

ভালো থাকবে ধারাপু।

১৪ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

করুণাধারা বলেছেন: আমি আমার দাদিকে পাইনি কোনো গল্পও শুনিনি। কারণ আমার বাবার অতি শৈশবেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। তবে নানীকে পেয়েছি, খুব কাছে থেকে দেখেছি কারণ আমার বাবা মারা যান আর দশ বছর হবার আগে। নাবালক সন্তানদের নিয়ে আমার ৩৭ বছর বয়স্কা মায়ের বাবার বাড়ি ছাড়া যাবার আর কোন জায়গা ছিল না। অতএব আমরা সেখানেই আশ্রয় নিয়ে থাকতে থাকি যতদিন না বড় ভাই বোনেরা বিশ্ববিদ্যালয় যাবার উপযোগী হয়।

এখন অবসর সময়ে যখন নিজের জীবন নিয়ে ভাবি, তখন আমার আগের প্রজন্মের মানুষদের কথাও মনে হয়। অনেক কিছুই বদলে গেছে আবার অনেক কিছুই আগের মত আছে। দেখি কতটা লিখতে পারি...

২৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৫৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: চার প্রজন্মের স্মৃতিচারণমূলক কথা, আর তার আলোকে আপনার কিছু জীবন দর্শন- খুব ভালো লাগল।
আমার নানীর বয়সও সেরকমই হবে। হয়তো সামান্য বড়ই হবে। ছোটবেলায় নানী একবার আমাকে নিয়ে রিক্সায় করে ৩/৪ মাইল দূরের এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রিক্সায় ওঠার পর তার একটা পুরনো শাড়ি দিয়ে রিক্সার সম্মুুখভাগ ঘিরে ফেলা হয়েছিল পর্দার কারণে। সেটা দেখে বালক আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম।

এই নিয়ে যদি ভাবতে বসো, তাহলে তুমি আমার নানী;) - হাসি আটকাতে পারলাম না! :) :)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৩৬

করুণাধারা বলেছেন: লেখাটা শুরু করেছিলাম আমার আগের প্রজন্মের নারীদের জীবনের নানা সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য নিয়ে ভাবতে গিয়ে। আমাদের চার প্রজন্মের যেমন নাম, পোশাক ইত্যাদি বদলে গেছে তেমনি আরও নানা পরিবর্তন এসেছে। হারিয়ে যাবার আগেই এইসব কথা স্মৃতির পাতা উল্টে লিখে রাখার ইচ্ছা হয়েছিল।

নানীর সাথে আপনার রিকশা চড়ে যাবার ঘটনা শুনে মনে পড়লো, আমার ছোট বেলায় ঢাকাতেও এভাবে রিকশা আবৃত করে মহিলারা চলাফেরা করতেন। আমার খালাতো বোন বলেছিল, লন্ডনগামী প্লেনে দেখেছে (আশির দশকে) পরিবার নিয়ে প্লেনে উঠে কর্তা তাদের সিটের সামনে পর্দা টানিয়ে দিলেন, তার স্ত্রী ও কন্যা প্লেনে দীর্ঘ সময় পর্দার ভিতরে থাকলেন...

মন্তব্যের এবং লাইক দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

২৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ক্রমিক নং ২৫ এ আপনার মন্তব্যটি বোধকরি আমার ২৪ নং মন্তব্যের উত্তরেই লিখেছেন, কিন্তু সেট সঠিক জায়গায় উল্লেখিত হয়নি। একটু সম্পাদনা করে "নীডফুল"টুকু করা যায় কি? সেটি করার পর আমার এ মন্তব্যটিসহ আপনার ২৫ নং মন্তব্যটি মুছে দিতে পারেন।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪১

করুণাধারা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আবার ফিরে এসে আমার ভুল ভাবে উত্তর দেয়াটা ধরিয়ে দেবার জন্য। এই ভুলটা আজকাল আমার খুব হচ্ছে। ঠিক করে দিয়েছি।

আপনার এ মন্তব্যটিও রেখে দিলাম, ভবিষ্যতের জন্য রিমাইন্ডার হিসেবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.