নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

করুণাধারা

করুণাধারা

জীবন যখন শুকাইয়া যায় করুণাধায় এসো

করুণাধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাগরে শয়ন যার, শিশিরে কী ভয় তার!

১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৪৩



বাংলাদেশের ডাটা বেইজ থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে; লাখ লাখ...তাই কি আপনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন!! আমি তো বেশ কিছুদিন ধরেই জানি আমার এনআইডির তথ্য ফাঁস হয়েই আছে... বিপদের সম্ভাবনা আছে সেটাও জানি। কিন্তু এত আতঙ্ক দেখে মনে হচ্ছে, অনেকেই জানেন না আমাদের তথ্য কিভাবে অন্যের হাতে চলে যায় বা গেছে... আমার কিছু অভিজ্ঞতা বর্ণনা করি...

১) একজনের এনআইডি সংশোধন করতে হবে, খুব ছোট ভুল। নামের ইংরেজি বানান ঠিক আছে, কিন্তু বাংলা বানানের একটা শব্দে র- এর জায়গায় ল হয়ে গেছে, আতাউরের জায়গায় আতাউল হলে যেমন হয় তেমন আর কি! এটা নিয়ে অসুবিধা হয় নি কখনো, পাসপোর্ট - ভিসা- ব্যাংক সব এই এনআইডি দিয়েই চলেছে। ‌কিন্তু একটা সরকারী দপ্তর এটা গ্রহণ করতে চাইলো না, বলল নাম ঠিক না হলে তারা কাজ করবে না। শুনলাম ঘরে বসে অনলাইনে এন আইডি সংশোধন করা খুব সহজ, নিজেই করা যায়। ফোন নিয়ে সার্চ দিতেই চলে এল অনেক লেখা, যাতে নিজে নিজে এন আই ডি র তথ্য পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হয়েছে। শুরু করলাম; প্রথম দুতিনটা ধাপ পার হবার পর বলা হলো যে, একটা অ্যাপের সাহায্য নিতে হবে, সেই অ্যাপটা শুধু প্লে স্টোরে আছে, আর আমার ফোনে শুধু অ্যাপ স্টোর আছে! কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পর বুঝলাম পন্ডশ্রম হবে। তাই পরদিন গেলাম এক মার্কেটে, যেখানে সারি সারি কম্পিউটারের দোকান আছে আর অনেক মানুষ অনলাইনে তাদের নানা রকম কাজ করাচ্ছে । আমার দরকারটা এক দোকানের ছেলেকে জানালাম, সে বলল, করে দিতে পারবে, কিন্তু নিয়ম হচ্ছে যার কার্ড সংশোধন হবে তাকে নিজে আসতে হবে কারণ সংশোধনের একপর্যায়ে ছবি তুলে দিতে হবে তাৎক্ষণিকভাবে। আমি জানালাম, তিনি কিছুতেই দোকানে আসবেন না! বলল সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হচ্ছে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার ছবি তোলা হবে, তবে এইসব বাড়তি কাজের জন্য টাকা বেশি দিতে হবে। তথাস্তু! কিন্তু দেখা গেল ভিডিও কলের ছবি তুললে ঠিকমতো হচ্ছে না, তাই এই দোকান বাদ দিতে হলো। হতাশ হয়ে ফিরে আসার পথে আরেক দোকানে জিজ্ঞেস করলাম কোনো ভাবে তারা একাজ করতে পারবে কিনা! দোকানের ছেলে বলল, তারা পারবে, তারা এই কাজে বিশেষ সুনামধারী, কারণ এই মার্কেটে একমাত্র তারাই পারে এনআইডিধারীর সশরীরে উপস্থিতি ছাড়া কাজ করে দিতে; শুধু একটা ছবি দিয়েই তারা কাজটা করে দিতে পারবে! অবশ্য সেজন্য টাকার পরিমাণ বেশি লাগবে। রাজি হয়ে দোকানে বসলাম, একটা ছবি আর এসএসসির সার্টিফিকেট (যেখানে বাংলা নাম ঠিকমতো দেয়া আছে) সেটা দিলাম। কিছুক্ষণ কি কি কাজ করলো ছেলেটা, আমার থেকে টাকা নিয়ে সংশোধন ফি বিকাশে পাঠিয়ে দিল, তারপর বলল কাজ হয়ে গেছে।‌ এরপর নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আমার ফোনে যখন মেসেজ যাবে, তখন তাদের কাছে গেলেই আমাকে তারা সংশোধিত এনআইডি বানিয়ে দিবে! টাকা দিয়ে বাসায় আসলাম, কাজটা গবেট সুলভ হয়ে গেল কিনা তাই ভাবতে ভাবতে...

পরদিন দেখি নির্বাচিত কমিশন থেকে মেসেজ এসেছে, "- - - - আপনার আবেদনটি অনুমোদন করা হয়েছে অনলাইন সিস্টেম হতে কার্ডটি ডাউনলোড অথবা আবেদন জমাকৃত অফিস হতে কার্ডটি গ্রহণ করতে পারবেন।" সাথে সাথে দোকানে গেলাম মেসেজটা দেখানোর পর তারা নামের ঠিক বানান সম্বলিত সংশোধিত কার্ডটি প্রিন্ট করে লেমিনেট করে দিল। বলল এটা স্মার্ট কার্ড নয়, কিছুদিন পর গিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সংশোধিত স্মার্ট কার্ডটি নিয়ে আসতে হবে। এত সহজে কার্ড সংশোধন হয়ে গেল দেখে আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম, একই সাথে কেন যেন মনে অস্বস্তি হচ্ছিল, কারণটা বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ করে বিকালে অস্বস্তির কারণটা বুঝতে পারলাম। তৎক্ষণাৎ দোকানে গেলাম, গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

- আচ্ছা, যে ছবি আর কাগজ দিয়ে আপনি এনআইডি সংশোধন করলেন সেগুলো তো আপনার কম্পিউটারে রয়ে গেছে। তাহলে ইচ্ছে করলেই আপনি আরেকবার এনআইডির অন্য তথ্য বদলে দিতে পারেন, তাই না?

দোকান মালিক সহাস্যে উত্তর দিলেন:

- অবশ্যই আপা! এটা কোন সমস্যাই না। নাম বদলাতে হলে সেই অনুযায়ী একটা কাগজ, আর অন্য তথ্য বদলাতে হলে শুধু সেই অনুযায়ী একটা কাগজ বানাতে হবে, ব্যস।"

সেই থেকে ভাবনায় আছি; ফরম ফিলাপের একপর্যায়ে আমি আমার ফোন নাম্বারও দিয়েছি। কোনদিন হয়তো এই ফোন নাম্বারে কেউ ফোন করে বলবে, যদি আমাদের এত টাকা না দেন তবে আপনার এনআইডির তথ্য বদলে দিব... অথবা যদি কোন কিছু না জানিয়েই আমার অজান্তে তথ্য বদলে দেয়, তাহলে আমার এনআইডি অচল হয়ে যাবে!! সেই এনআইডির নাম কিন্তু সত্যিই সংশোধিত হয়েছে।

আমার মতো কোটি খানেক মানুষ দোকানে বা থানা/উপজেলা অফিসে গিয়ে এন আই ডির ভুল সংশোধন করেছেন, এখনও করছেন। সংখ্যাটা কোটি খানেকই হবে, কারণ একেবারে নির্ভুল এন আই ডি খুব কমই পাওয়া যায়, একথা তাদের ওয়েবসাইটেই বলা আছে!! এদের সকলের এন আইডির তথ্য অন্যের হাতে আছে, সেটা বদলে দেয়া কঠিন কোন কাজ না!!

আরেকটা অভিজ্ঞতার কাহিনী। ফ্ল্যাটের জমির খাজনা দিতে গিয়ে শুনলাম অনলাইনে দিতে হবে। এটাও সহজ ডিজিটাল পদ্ধতি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের নাগরিক কর্নারে গিয়ে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে মোবাইল নাম্বার দিয়ে, দিলাম। মোবাইলে ওটিপি মেসেজ আসলে সেই ওটিপি নাম্বার দিলে পরবর্তী ধাপে যাওয়া যাবে, যেখানে এন আই ডি নাম্বার দিতে হবে, তাহলে নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। সেটাও দিলাম। ভাবলাম নিবন্ধন হয়ে গেছে, এখন লগইন করে আমার জমি তথ্য দিতে পারব। কিন্তু লগইন করতে পারলাম না; মেসেজ আসলো, "এই এনআইডি নম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত আছে", কথাগুলো ঠিক এরকম না হলেও বক্তব্য এটাই ছিল।অথচ আমি কোন নিবন্ধন করিনি!! আরেক বার চেষ্টা করতে গেলাম, এবার ফোন নম্বর দেবার পর মেসেজ দেখালো, "আপনার মোবাইল নাম্বার ইতিমধ্যে নিবন্ধিত"! (উপরে যে ছবি দিলাম সেরকম মেসেজ। আমি আমার মোবাইল নাম্বার মুছে স্ক্রিনশট নিয়েছি)। কিছুতেই সমাধান না করতে পেরে ওয়েবসাইটে দেওয়া হটলাইন নাম্বার ১৬১২২তে ফোন করে একজনকে আমার সমস্যার কথা জানালাম, তিনি বললেন যে তিনি দেখবেন কী হয়েছে। কিছুক্ষণ পরে আবার ফোন করে জানলাম, আমার এনআইডিটি নিবন্ধিত, কিন্তু অন্য একটি ফোন নাম্বার দিয়ে নিবন্ধন করা হয়েছে। আমি জানালাম যে, আমি আগে কোন নিবন্ধন করিনি, এটা অন্য কেউ করেছে। তিনি তখন জানালেন, যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে নিবন্ধন করা হয়েছে, সেটা তিনি আমাকে জানাবেন, সেই নাম্বার দিয়ে লগইন করে তারপর আমি মোবাইল নাম্বার হিসেবে নিজের নাম্বারটা দিয়ে দিতে পারব, তাহলে আর আমার লগইনে সমস্যা থাকবে না। তাই করলাম, এবার লগইন করতে পারলাম... কিন্তু অনলাইন পেমেন্ট করতে ভূমি অফিসেই যেতে হয়েছিল, বেশি পেমেন্টও করতে হয়েছিল!!

সে যাক ! কিন্তু একটা প্রশ্ন মাথায় থেকেই গেছে, আমি যখন ১৬১২২তে ফোন করে আমার সমস্যার কথা বললাম, তখন তাঁরা কোনরকম ভেরিফিকেশন করেনি যে সত্যিই এটা আমার এনআইডি কিনা। এখন আরেকজন যদি আমার পরিচয়ে ফোন করে বলে যে সে আমি, সে লগইন করতে পারছে না, তখন তাঁকেও আমার নাম্বার বলে দিলে সে সেই নাম্বার দিয়ে লগইন করে আমার নাম্বারটা বদলে ফেলতে পারবে। কিন্তু আমি আর লগইন করতে পারবো না! অথবা আরেক বিপদ হতে পারে, কেউ যদি আমার ফোন নম্বর আর এনআইডি নাম্বার জানে, (যেটা অনেক জায়গায় আছে, উদাহরণ ব্যাংক!) সে এই নাম্বার দিয়ে নাগরিক কর্ণারে লগইন করে সহজেই জেনে যেতে পারে আমার জমি জমার পরিমাণ, চাইলে বিপদে ফেলতেও পারে...

এই হলো অবস্থা!!

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫২

এইযেদুনিয়া বলেছেন: :((

১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: :(
আমার ব্লগে স্বাগতম এইযে দুনিয়া!

২| ১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:১১

শায়মা বলেছেন: এইসব কিছু নিয়ে তাই ভেবে লাভ নেই।

উত্তর একটাই যেটা আমার মামাত বোন বলে- আল্লাহ ভরষা। আল্লাহর উপর ভরষা ছাড়া আর কোনো ওয়ে নেই। :(

আমার মন্তব্য- রাখে আল্লাহ মারে কে? কাজেই আল্লাহ চাইলেই একমাত্র এই সব বিপদ থেকে দূরে থাকবে আপুনি।

আর বিপদে পড়লে ভাববে মারে আল্লাহ রাখে কে?


আল্লাহ নিয়ে নির্দোষ প্রবাদ প্রবচন করলাম কেউ যেন আবার রাগ করো না।

১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:২৫

করুণাধারা বলেছেন: না, ভয় পাচ্ছি না। আমি শুধু বলতে চাচ্ছি আমাদের সিস্টেম এমন যে, সর্বত্র এনআইডি দিতে হয়। অথচ এনআইডির তথ্য সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নেই।

কিন্তু এনআইডি সংশোধন যে পদ্ধতিতে করা হচ্ছে, তাতে অনেকেই অন্য কারো এনআইডি বদলে দিতে পারে।

আল্লাহ নিয়ে নির্দোষ প্রবাদ প্রবচন... অবশ্যই নির্দোষ আর ভালো কথা। অথচ এই নির্দোষ কথা নিয়েও ক্যাচাল বাঁধাতে পারে, ক্যাচাল প্রিয় ভাইয়েরা! ;)

৩| ১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৪৪

বিষাদ সময় বলেছেন: এখন ব্যাংক থেকে এ্যাকউন্ট হোল্ডার ব্যাতিত অন্য কেউ টাকা তুলতে চাইলেও এনআইডির কপি জমা দিতে হয়। তারপর এই হাজার হাজার এনআইডির কপি তারা কি করে আল্লাহ জানেন।

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২৪

করুণাধারা বলেছেন: আমি হয়তো গুছিয়ে লিখতে পারিনি, কিন্তু বলতে চেয়েছিলাম যে এনআইডির নাম্বার আর মোবাইল নাম্বার কারো হাতে গেলে সে এই দুইটা ব্যবহার করে বিপদে ফেলতে পারে। আমি একটা ঘটনা উল্লেখ করেছিলাম উদাহরণ হিসেবে। আপনি যে ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলেও এনআইডি দেবার কথা বললেন এটা জানা ছিল না। যত্রতত্র যেভাবে এনআইডি কপি দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তাতে নানা রকম বিপদের সম্ভাবনা আছেই। ‌ ডাটাবেইজ থেকে তথ্য ফাঁস না হলেও এই বিপদ হতে পারে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, বিষাদ সময়।

৪| ১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৪৪

শায়মা বলেছেন: নো চিন্তা আপুনি........ কেচাল প্রিয় ভায়েদের জানে এতটুকু ভুই থাকলে দূরেই থাকিবেন...... নয়ত কেচাল করে কি জান নিয়ে ফিরতে দেবো!!! ;)

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২৬

করুণাধারা বলেছেন: যাক বাঁচা গেল! তোমার নির্দোষ মন্তব্যের দোষ ধরতে কোন ক্যাচাল- প্রিয় ভাই এসে হাজির হননি! B-)

৫| ১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:০৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




অপদার্থ লোকজনদের দিয়ে ডাটাবেজ বানালে যা হবার তাই-ই হয় ! দেশের যেকোন সরকারী ওয়েব সাইট বা ডিজিটালাইজড কিছুই ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়। মানুষকে অহেতুক হয়রানিতে ফেলাই এসবের কাজ । এসব ওয়েব ডেভেলপমন্টের সাথে যারা জড়িত তারা কি ইচ্ছে করেই এসব ভজঘট তৈরী করে রেখেছে নাকি এই ভজঘট তাদের অজ্ঞতা- অক্ষমতা থেকে তৈরী হয়েছে।
কদিন আগে ৯ই জুলাই সহ ব্লগার ইফতেখার ভূইয়া দেশের ওয়েব সাইটের এসব দূর্বলতার কথা ব্লগে লিখেছেন। আর অতি সম্প্রতি ব্লগের " দৃষ্টি আকর্ষণ" পোস্টে তার একটা লেখা তো দেখেই থাকবেন।
হায়রে অভাগা দেশ !!!!!!!!!!!!!!!!

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩১

করুণাধারা বলেছেন: অপদার্থ লোকজনদের দিয়ে ডাটাবেজ বানালে যা হবার তাই হয়! দেশের যেকোনো সরকারি ওয়েবসাইট বা ডিজিটালাইজড কিছুই ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়। মানুষকে হয়রানিতে ফেলাই এসবের কাজ।

আমি এই কথাটাই উদাহরণ দিয়ে বলতে চেয়েছি। যেমন সাড়ম্বরে প্রচার করা হচ্ছে, আজকাল ভূমির নাম জারি করতে কোন ঝামেলা হয় না, অনলাইনে ৭০ টাকা খরচ করেই করা যায়। বাস্তবে এটা করা এতটাই ঝামেলার যে, শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ কারো সহায়তা নিতে হয় এবং তার খাটুনি বাড়তি খরচ করতে হয়। এরপর শেষ পর্যায়ে গিয়ে আট দশ হাজার টাকা খরচ করতে হয় ভূমি অফিসের লোকজনদের মজুরি বাবদ। অর্থাৎ প্রচার হচ্ছে ঝামেলা বিহীন ডিজিটালাইজড বলে, অথচ কাজে-কর্মের আগের চাইতেও ঝামেলা আর খরচ বেড়েছে। আরেকটা উদাহরণ পাসপোর্ট; বলা হয় অনলাইনে আবেদন করা যায়, অথচ তারপর সেই আবেদনের প্রিন্টেড কপি আর একগাদা কাগজপত্র নিয়ে গিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্ট করতে হয়। এই আমাদের ডিজিটাল দেশের নমুনা!!

ইউজার ফ্রেন্ডলি তো নয়ই, বরং বরং এইসব অ্যাপ আমাদের বিপদ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইট নিয়ে ব্লগার ইফতেখার ভূঁইয়ার পোস্ট আমি পড়েছি। ‌ তার আগে তিনি আরেকটি পোস্ট দিয়েছিলেন, "বাংলাদেশের ডাটাবেইজ থেকে লাখ লাখ মানুষের তথ্য ফাঁস আপনারা কি ভাবছেন?" সেই পোস্ট পড়ার পর নিজের ভাবনা শেয়ার করার জন্য এই পোস্ট দিলাম... আমার মনে হয় এই তথ্য ফাঁস হয়ে নতুন করে বিপদের সম্ভাবনা বাড়ায়নি, আমাদের বিপদ ঘাড়ের উপর আগে থেকেই আছে।

৬| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

তথ্য চুরি হওয়াতে এত উতলা হওয়ার কিছু নেই।
আমেরিকার প্রায় ৯৯% ব্যক্তিগত তথ্য পাবেন কালোবাজারিদের কাছে।
বিলিয়ন নয় ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কেট।
কিনতেও পারবেন। যে কোন ব্যাক্তির সোশাল সিকুরিটি নাম্বার কিনতে পারবেন ডার্কওয়েব থেকে ১০ ডলারে, পাইকারি দামে এক দেড়শো কিনলে পার নাম্বার ৪ ডলারেও পাবেন।
আইডি ফোন বাসার ঠিকানাসহ সহ কম্পিট ইনফরমেশনও পাবেন একশো পাচশো থেকে এক হাজার ডলারে। ব্যাক্তি/কম্পানী বুঝে দাম নির্ধারন।
আমেরিকায়ও হাজার হাজার কপি পার্সোনাল তথ্য পাবেন ব্রোকারদের কাছে দালালদের কাছে রিয়েল স্টেট এজেন্ট এর কাছে। এরাই মুলত ক্রেতা।
হ্যাকার ছাড়াও পারসোনাল তথ্য এমনিতেই বাইরে চলে যায়।
আমি বিভিন্ন ইসশুরেন্স ব্রোকারদের কতবার যে এসেসেন নাম্বার এনাইডির ছবি পাঠাইছি, বাড়ীভাড়া খুজতেও এনাইডির ছবি দিতে হইছে। পুরাতন গাড়ি কিনতেও লেগেছিল।
এসব তথ্য কিনে বা চুরি করে কাউকে ক্ষতি করতে নয়, ব্যাবসা প্রসার মার্কেটিং এর জন্য।

আর কারো ক্ষতি করাটা এত সহজও নয়। ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলো অনেক অনেক সতর্ক। মাল্টি স্টেপ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে কাজ করে।
বাংলাদেশেও সেটা করতে হবে।

হ্যাকিং ছাড়াও বাংলাদেশে বাংলাদেশে এনআইডি, বার্তসার্টিফিকেট আর পাসপোর্ট হাজার হাজার লাখ লাখ কপি পাবেন পাড়ার যে কোন ফটোকপি দোকানে, আগে সব ফেলে দিত এখন দেখি সব জমিয়ে রাখে। আপনি চাইলে আপনার প্রতিবেশীর আইডি ফটোকপি পাবেন কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে।

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬

করুণাধারা বলেছেন: আপনি আমেরিকার উদাহরণ দিয়েছেন। বলেছেন,... "কতবার যে এনআইডির ছবি পাঠাইছি!"

এটাতো ঠিক কথা বললেন না! আমেরিকাতে এনআইডি বলে কিছু নাই!

বলেছেন, "আর কারো ক্ষতি করাটা এত সহজ নয়!" অবশ্য এটা আমেরিকার জন্য সত্যি, কারণ সেখানে আইনের শাসন আছে! আমাদের দেশে একেতো আইনের শাসন বলে কিছু নেই, তারপর অযোগ্য অপদার্থ লোকজন দিয়ে যেসব ডাটাবেইজ বা অ্যাপ বানানো হচ্ছে, তা ব্যবহারকারীদের জন্য কেবল বিপদই ডেকে আনছে। ন্যাশনাল আইডি সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় একটি পত্র, অথচ তা যে কেউ সংশোধনের নামে বদলে দিতে পারে, এমনভাবে অ্যাপ বানানো হয়েছে!! ভূমি মন্ত্রণালয়ের এ্যাপটি এমন যে, সহজেই বিপদে ফেলা যায়। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, কেউ আমার নামে মিথ্যা নিবন্ধন করেছিল আমাকে বিপদে ফেলতে!

আমার পোষ্টের উদ্দেশ্য এটা বলা যে, ডেটাবেইজ থেকে তথ্য ফাঁস হওয়ায় নতুন কোন বিপদ আর কী আসবে; বিভিন্ন সরকারি অফিসগুলো যে অ্যাপ বানিয়ে রেখেছে, তাতে আমরা অলরেডি বিপদের সাগরে ডুবেই আছি!

৭| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:৫৯

অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের বৈশাখী ভাই যখন বলেছে আমেরিকাতেও এই সব হয় তখন আর কোন চিন্তা নেই । :D
এই সব উন্নত দেশের সমস্যা । এতেই প্রমান হয় আমরা কত উন্নত ! ;)

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৮

করুণাধারা বলেছেন: এইসব উন্নত দেশের সমস্যা এতেই প্রমাণ হয় আমরা কত উন্নত।

চমৎকার কথা বলেছেন!! তাহলে এখন কেবল কানাডা আর সিঙ্গাপুরের মতো নয়, আমরা আমেরিকার মতো উন্নত হয়ে গেছি। ;)

৮| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮

কাছের-মানুষ বলেছেন: বাংলাদেশের জন্য এই তথ্য ফাস সত্যিই ক্ষতির কারন হতে পারে। কারন দেশে যেখানে কোন কারনে ফেসে গেলে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতেই জায়গায় জায়গায় ধর্না দিতে দিতে কাহিল হয়ে যেতে হবে, দেশের বেশীর ভাগ অফিসেই ফাইল টাকা ছাড়া নরে না, কেউ ফেসে গেলে সত্যিই বিপদ, এটা আমেরিকা না যে সব সমস্যা মুহুত্যেই সমাধান হয়ে যাবে!

কাল বৈশাখি সাহেবের মন্তব্য পড়ে একটি সংবাদের কথা মনে পরল, দেশের কোন মন্ত্রি নাকি বলেছিল "কোথায় ঢাকায় যানজট, কই আমি গাড়ি দিয়ে এলাম, আমিতো যানজট দেখলাম না!" এই মন্ত্রি কে বুঝাবে, জনাব আপনি যেই রাস্তা দিয়ে এসেছেন, আপনি প্রটোকল পেয়ে এসেছেন, আপনি রাস্তা দিয়ে যাবার কয়েক ঘন্টা আগে পুরো রাস্তা ব্লক করে আপনাকে যাবার জায়গা করে দেয়া হয়েছে, তাই আপনি যানজট দেখেননি!

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৩০

করুণাধারা বলেছেন: তথ্য ফাঁস হলে মহাবিপদ হতেই পারে, কারণ মিথ্যা দায়ে কেউ ফাঁসিয়ে দিলে সত্য প্রমাণ করতে গিয়ে জীবন পার হয়ে যাবে! ঠিকই বলেছেন, এটা আমেরিকা না যে সব সমস্যা মুহূর্তেই সমাধান হয়ে যাবে।

তবে আরো বড় বিপদ হচ্ছে, এন আইডি সংশোধন করার পদ্ধতি। যে কম্পিউটারে কাজ করতে পারে, সে ইচ্ছে করলেই অন্যের nid বদলে দিতে পারে। এই সংশোধন পদ্ধতি নতুন চালু হয়েছে, তাই এখনো এর বিপদ সম্পর্কে সম্যক জানাজানি হয়নি।

মন্ত্রী সাহেবের গল্পটি ভালো লাগলো। আমাদের দেশের এক শ্রেণীর মানুষ দেশে কোন সমস্যাই দেখতে পান না, কারণ তারা বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত মানুষ। আর সকল বিপদ কাটিয়ে দেবার ক্ষমতাও এদের আছে।

৯| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৩১

করুণাধারা বলেছেন: সাবধানে থাকবেন এনআইডি আর ফোন নাম্বার নিয়ে।

১০| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: অবস্থা ভয়াবহ!! আপনি কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবেন? যাহোক নতুন দুটো রোগের কথা জানলাম- জানিনা কিভাবে সহসা সমস্যার সমাধান হবে! হয়তোবা কোনদিনও সমস্যার সমাধান হবে না। দিন দিন আরও জটিল হবে নতুন নতুন সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। আমরা ভয়ংকর এক বিপদজনক পথে হাঁটছি।

১৩ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৫

করুণাধারা বলেছেন: অবস্থা সত্যিই ভয়াবহ। অনলাইনে কাজ করার জন্য যে সব অ্যাপ বা ওয়েবসাইট বানানো হয়েছে, সেগুলো বানানোর সময় কেবল কার্য উদ্ধারের কথা ভাবা হয়েছে, তথ্যের নিরাপত্তার ব্যাপারটি একেবারে উপেক্ষিত থাকে। আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম যখন দেখলাম, কেউ আমার এনআইডি হাতে পেয়ে নিছকই আমাকে ঝামেলায় ফেলার জন্য ভূমি অফিসে নিবন্ধন করে রেখেছিল। এমন বিপদ আরো হতে পারে।

১১| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯

অক্পটে বলেছেন: আমেরিকায় তথ্য ফাস আর বাংলাদেশের তথ্য ফাস এক জিনিস নয়। বাংলাদেশে পদে পদে বিপদ। আইন শৃঙ্খলার সাথে যারা জড়িত আমি তাদেরই খুব ভয় পাই। তাছাড়া যেখানে যাবেন সেখানেই বাটপার জোচ্চোর আর অসৎ লোকের ছড়াছড়ি। খুবই নিদারুণ অবস্থা।

সময়োপযোগী লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।

১৪ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: আমেরিকায় তথ্য ফাস আর বাংলাদেশের তথ্য ফাস এক জিনিস নয়। বাংলাদেশে পদে পদে বিপদ। আইন শৃঙ্খলার সাথে যারা জড়িত আমি তাদেরই খুব ভয় পাই। তাছাড়া যেখানে যাবেন সেখানেই বাটপার জোচ্চোর আর অসৎ লোকের ছড়াছড়ি। খুবই নিদারুণ অবস্থা।
একমত পুরোপুরি। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের বিষয়ে যা বলেছেন!
মন্তব্যে প্লাস।

১২| ১৪ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১:০৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

আমেরিকাতে এনআইডি বলে কিছু নাই?
অবস্যই আছে। আইডি বাদে আমেরিকায় কেউ চলতে পারে না। যেহেতু আমেরিকার দাফতরিক কাজকর্ম চলে চলে স্থানিয় সরকারের মাধ্যমে সেই হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র ইশু করে স্টেট কতৃপক্ষ। স্টেট আইডি। সেটাই আমেরিকার মুল জাতীয় পরিচয়পত্র।
কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিলে লাইসেন্সে স্টেট আইডি সমন্নিত করে দেয়া হয়।

আমেরিকায় তথ্য ফাস আর বাংলাদেশের তথ্য ফাস এক জিনিস নয়। বাংলাদেশে পদে পদে বিপদ।
হ্যা সেজন্যই তথ্য ফাস নিয়ে রাজনীতি না করে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলো ও সাধারন সবাইকে অনেক অনেক সতর্ক হতে হবে।
আমি সেটাই বলতে চেয়েছি

১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০১

করুণাধারা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

১৩| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:৫৪

সোহানী বলেছেন: ভয়ংকর অবস্থা। দেশে আইডি চুরির ব্যবসা শুরু হলো বলে :P

১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০০

করুণাধারা বলেছেন: আসলেই ভয়ংকর অবস্থা! আমার আইডি চুরি করে আমাকে কিছুটা ঝামেলায় ফেলেছিল! সামনে এরকম ঘটনা আর ঘটবে।

১৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: কি মারাত্মক, কি সাংঘাতিক অবস্থা! এসব বিপদের কথা চিন্তা করলে গা শিউরে ওঠে।
জনস্বার্থে লেখা এই জনসচেতনতামূলক পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
শিরোনামটা সুন্দর হয়েছে।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২০

করুণাধারা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্ট পোস্ট খুঁজে নিয়ে মন্তব্য এবং লাইক দিয়ে অনুপ্রেরণা দেবার জন্য।

যেভাবে বলা হচ্ছে যে সবকিছু ডিজিটাল হয়ে গেছে, অনলাইনে সব করা সম্ভব, আসলে তা হয়নি। অনেক সংস্থার ওয়েব সাইটে পর্যাপ্ত তথ্য থাকে না। আমাদের সকলের নিজস্ব কম্পিউটার নেই বা থাকলেও যথেষ্ট জ্ঞান নেই অনলাইনে কাজ করার মতো। তাই কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে কাজ করতে হয়। আমাদের তথ্য, ছবি সব রয়ে যায় তাদের কাছে। উন্নত দেশের সাথে আমাদের পার্থক্য এটাই, তারা নিজেদের কাজ নিজে করার সামর্থ্য রাখেন ফলে তাদের তথ্য বেহাত হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.