নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন আইসক্রিম খেতে গিয়ে মনে যে উপলব্ধি এলো, তার গল্প। সাথে সাথে আমার একদার বহু আকাঙ্ক্ষিত খাদ্য নিয়ে স্মৃতিচারণ।
ছোটবেলায় আইসক্রিম মানে বেবী আর ইগলু আইসক্রিম, কালেভদ্রে কুলপী! দুয়েকবার নিউমার্কেটের নভেলটি নামের দোকানে আইসক্রিম খেয়েছি, বাসায় বেড়াতে আসা কোনো আত্মীয় হয়তো ট্রিট দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন। আইসক্রিম ছিল হালকা কমলা রঙের গোল বলের মতো, পরিবেশন করা হতো ককটেল গ্লাসের গড়ণের স্টিলের বাটিতে। চামচ দিয়ে অল্প অল্প করে সেই আইসক্রিম কেটে খাওয়ার তৃপ্তি মনে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। সম্ভবত ঢাকার প্রথম আইসক্রিমের দোকান ছিল নভেলটি।
আমার আইসক্রিম খাবার কথা ভাবতে গিয়ে মনে পড়লো সত্যজিৎ রায়ের প্রথম আইসক্রিম খাওয়ার কথা । শৈশবের স্মৃতি কথায় সত্যজিৎ রায় বলেছেন, কলকাতায় নতুন প্রতিষ্ঠিত এক আইসক্রিমের দোকানে বালক সত্যজিৎকে কোনো এক আত্মীয় নিয়ে গিয়েছিলেন। জীবনের প্রথম আইসক্রিম খেয়ে সত্যজিৎ বলেছিলেন, "এটা একটু গরম করে দিলে ভালো হতো"। (সূত্রঃ যখন ছোট ছিলাম, সত্যজিৎ রায়।)
এখন ঢাকায় অনেক আইসক্রিমের দোকান, এগুলোতে অনেক মানুষ যান। ঢাকার মানুষের মনে হয় আইসক্রিমের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ আছে, দাম লাখ টাকা হলেও সেই আইসক্রিম খাবার জন্য সকলে ছুটে যান। কিছুদিন আগে ঢাকার এক হোটেল যখন ৯৯,৯৯৯ টাকা দামের এই আইসক্রিমের বিজ্ঞাপন দিল, তখন এতো মানুষ এটা খেতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন যে কর্তৃপক্ষ সবাইকে সরবরাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারেন নি!! এই যে সেই লাখ টাকা দামের আইসক্রিম।
নতুন ধরণের আইসক্রিম খেতে ঢাকার মানুষ কীভাবে ভিড় করে সেটা দেখেছিলাম অনেক বছর আগে, সম্ভবত ১৯৮৪ সালে। সেটা ছিল ঢাকায় প্রথম cone আইসক্রিমের মেশিন দিয়ে আইসক্রিম তৈরি করে বিক্রি। আমার হলের রুমমেট একদিন বলল, নতুন একটা জিনিস খাওয়াতে নিয়ে যাবে, যা আগে কখনো দেখিনি বা খাইনি! কী হতে পারে সেই অজানা বস্তু তাই ভাবতে ভাবতে রিকশা করে গেলাম তোপখানা রোডে, প্রেসক্লাবের উল্টো দিকের এক দোকানে। ছোট একটা দোকান, কিন্তু দোকান ভর্তি ক্রেতা। লাইনে দাঁড়ালাম দুজন। অবশেষে দেখলাম একটা নতুন জিনিস, চোখের সামনে আইসক্রিম তৈরি! কল লাগানো একটা মেশিন, সেই কলের নিচে একটা কোনাকৃতি জিনিস ধরে বোতাম টিপে দিলেই মেশিন থেকে আইসক্রিম বেরিয়ে কোন ভরে যায়! দেখে মুগ্ধ হলাম যত না, খেতে গিয়ে মুগ্ধ হলাম তার চাইতেও বেশি ...
আজকাল সকলেরই হরেক দোকানে হরেক রকম আইসক্রিম খাবার অভিজ্ঞতা আছে। তাই যারা এই পর্যন্ত পড়ে আমার ক্ষেতত্বের মাত্রা মাপছেন তাদের বলি, সেখানে আমার চাইতে ক্ষেত মানুষও ছিল। একজন চটপটে তরুণী একসাথে পাঁচটা আইসক্রিম নিতে চাইলেন, বাড়ি নিয়ে যাবেন বলে। স্বল্পভাষী বিক্রেতা বললেন, "নিতে পারবেন না"! তরুণী বললেন, "অসুবিধা নাই, আপনার কৌটা আমি ফেরত দিয়ে যাব"! বিস্কুটের কোনকে তরুণী কৌটা বলে ভেবেছিলেন!!
সেই আইসক্রিম বিক্রেতার কথাও মনে আছে, সুদর্শন এবং স্বল্পভাষী তরুণ। শুনলাম বিক্রেতা ইসমাইলিয়া সম্প্রদায়ের। সেসময় ঢাকায় এই সম্প্রদায়ের বেশ কিছু মানুষ বাস করতেন, ব্যবসাই তাদের পেশা ছিল। এদের ব্যবসায়িক বুদ্ধি নিঃসন্দেহে খুব ভাল ছিল, কারণ cone আইসক্রিমের ব্যবসার সফলতা তাঁরা ঠিকঠাক আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। এই নতুন আইসক্রিমের ক্রেতা এত বেশি ছিল যে, ক্রেতা সামলাতে বিক্রেতা হিমসিম খাচ্ছিলেন।
এই ব্যবসার সাফল্য দেখে কিছু দিনের অনেকেই এমন কোন আইসক্রিমের দোকান খুলে ফেললেন, ফলে মেশিনের কোন আইসক্রিম জিনিসটা ডালভাতের মতো সাধারণ হয়ে গেল!
কোনদিন যদি এদেশের আইসক্রিমের ইতিহাস লেখা হয়, তবে সেখানে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে পোলার আইসক্রিমের নাম, কারণ পোলার আইসক্রিম প্রথম আইসক্রিম যা এদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল (আক্ষরিক অর্থে)। এর আগে পর্যন্ত আইসক্রিম বলতে ছিল প্রধানত ইগলু আইসক্রিম, (কারণ তার আগের প্রসিদ্ধ বেবী আইসক্রিম ততদিনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে) ইগলু আইসক্রিমের ভোক্তা ছিলেন প্রধানত উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্ত মানুষেরা। কিন্তু পোলার আসার পর নিম্নবিত্ত মানুষেরাও এর স্বাদ পেতে লাগলো।
পোলারের শুরু আশির দশকের শেষের দিকে। সম্ভবত ১৯৮৭ সালের শেষের দিকে, একসময় দৈনিক পত্রিকায় বেশ কয়েকদিন যাবত এই আইসক্রিমের রঙিন বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতে লাগলো। প্রথমে কয়েক দিন "শীঘ্রই আসিতেছে" বলে বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরের বিজ্ঞাপনে জানা গেল আসছে পোলার নামের আইসক্রিম, এর লোগো ছিল আইসক্রিম হাতে এক পেঙ্গুইন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের কয়েক দিনের মধ্যেই অনেক দোকানে, এমনকি পাড়ার মুদি দোকানগুলোতে পর্যন্ত নতুন সাইনবোর্ড দেখা যেতে লাগলো, সেই সাইনবোর্ডে পেঙ্গুইনের ছবির পাশে লেখা ছিল "এইখানে পোলার পাওয়া যায়"। দেখা গেল এইসব মুদি দোকানেও পোলার কোম্পানি ফ্রিজ দিয়েছে আইসক্রিম রাখার জন্য। ফ্রিজের গায়ে পেঙ্গুইনের লোগো, ভিতরে থরে থরে পোলারের নানা ধরনের আইসক্রিম রাখা! এই নানা ধরণের আইসক্রিম ইগলুরও ছিল, পার্থক্য এই যে ইগলুর অধিকাংশ আইসক্রিম বিক্রি হতো সাইকেল গাড়িতে ফেরি করে। শুধু বড় কিছু দোকান যেখানে ফ্রিজ ছিল, সেখানে ইগলু আইসক্রিম পাওয়া যেত কিন্তু পাড়ার মুদি দোকানে ইগলু পাওয়া যেত না। শুনেছি পোলারের ফ্রিজ দোকানে দেবার শর্ত ছিল যে সেই ফ্রিজে পোলার ছাড়া কোন আইসক্রিম রাখা যাবে না। এই ব্যবস্থার ফলে এরপর যখন তখন আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা করলেই ইচ্ছা পূরণ সহজ হয়ে গেল, দু'পা হেঁটে মুদি দোকানে গেলেই হলো, সেইখানে পোলার পাওয়া যায়। এভাবে আইসক্রিম খাওয়ার একটা নতুন চল শুরু হলো। কিন্তু পোলার বাজার দখল করেছিল প্রধানত বাক্সে ভরা এক এবং আধা লিটারের আইসক্রিম দিয়ে। এই আইসক্রিম ছিল প্লাস্টিকের চারকোনা পাত্রে ভরা, এই জিনিসটা নতুন কারণ তখন প্লাস্টিকের পাত্র এতো সহজলভ্য ছিল না। ইগলুর এক লিটার আইসক্রিম দেয়া হতো কার্ডবোর্ডের বাক্সে। তাই একই দামে পোলারের আইসক্রিম যখন প্লাস্টিকের পাত্রে পাওয়া যেতে লাগল, তখন মানুষ সেটাই কিনতে লাগলো কারণ এই পাত্র ফ্রিজে রাখা সুবিধাজনক, বহন করা সুবিধাজনক, এবং সর্বোপরি আইসক্রিম শেষ হবার পর পাত্র নানা কাজে ব্যবহার করা যায়। অল্পদিনের মধ্যেই দেখা গেল মানুষ কুটুমবাড়িতে যাবার সময় মিষ্টির বাক্সের বদলে পোলার আইসক্রিমের বাক্স নিয়ে যাচ্ছে...
ইগলুর লিটার আইসক্রিমের সাথে পোলারের আরেকটা পার্থক্য ছিল, ইগলু পাওয়া যেত শুধু ভ্যানিলা ফ্লেভারে কিন্তু পোলারের ফ্লেভার ছিল তিনটা, ভ্যানিলা চকলেট আর ম্যাংগো।
কে জানি তখন বলেছিল, কেবল মধ্যবিত্ত না, ঢাকার রিক্সাওয়ালারাও এখন আইসক্রিম খেতে পারে। কথাটা সত্যি। আমাদের মতো পরিবারে প্রায়ই এক লিটার আইসক্রিম আনা হতে লাগলো, বেশ একটা আইসক্রিম উৎসব যেন! সকলে মিলে খেয়ে বাকিটা ফ্রিজে তুলে রাখা হতো। মনে পড়ছে, একবার কোন্ পোলারের স্বাদ কেমন সেটা নিয়ে যখন বন্ধুদের আড্ডায় কথা হচ্ছিল, তখন আমি বলছিলাম আমার মায়ের পছন্দ চকলেট ফ্লেভার। শুনে আমার এক বন্ধু অবাক হয়ে বলেছিল, "তোমার আম্মাও আইসক্রিম খান!" শুনে মনে মনে ভেবেছিলাম, এই প্লাস্টিকের বাক্সে ভরা আইসক্রিম না আসলে হয়তো জানাতেও পারতাম না আমার মাও আইসক্রিম খেতে পছন্দ করেন!! মায়েরা কী খান, কী খেতে ইচ্ছা করে এটা কখনোই তো জানার দরকার মনে করিনি!!
অবশ্য আইসক্রিম বিক্রির কোয়ান্টিটি পোলারের বেশি হলেও, আইসক্রিমের কোয়ালিটির দিক থেকে ইগলু বেশি এগিয়ে ছিল, এখনও তাই। স্বাদে ভালো ইগলু আইসক্রিমই।
নব্বই দশকে ঢাকায় অনেক আইসক্রিমের দোকান চালু হয়েছিল, যেখানে বিভিন্ন রকম আইসক্রিম সাজানো থাকতো আর ক্রেতা তার ইচ্ছা মতো খেতে পারতো। একবার সেরকম একটা আইসক্রিমের দোকানে গেছি স্বামী সন্তানসহ, দোকানে ঢুকে গভীর মনোযোগ দিয়ে আইসক্রিম দেখছি, হঠাৎ আমার স্বামী জোরে হাত ধরে টেনে দোকান থেকে বের করে আনলেন। বের হতে হতে দেখলাম, তিনজন যুবক ক্যাশ কাউন্টারের লোকটিকে ঘিরে ধরেছে, তাদের একজনের হাতে পিস্তল...
আইসক্রিম খাবার এইসব দিন পেরিয়ে অনেক বছর কেটে গেছে। গত অক্টোবর মাসের এক দুপুরে উত্তরা সেন্টার মেট্রো স্টেশনে নেমেছি, দেখি একটা আইসক্রিমের গাড়ি! চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম আমাকে কেউ দেখছে না, সিমেন্ট দিয়ে বানানো একটা বসার মতো জায়গাও আছে, অতএব আইসক্রিম একটা খেতেই পারি। আমি একটা কাঠি আইসক্রিম কিনে সেই বসার জায়গায় বসলাম। আইসক্রিমে কামড় দিয়ে দেখতে লাগলাম সামনে অনেক খালি প্লট, তার মাঝে মাঝে পাতা ঝরা গাছ, ওপরে হেমন্তের নীল আকাশ, অনেকগুলো গরু চড়ে বেড়াচ্ছে, মাঝে মাঝে দুয়েকজন মানুষ হেঁটে যাচ্ছে... এই সব দেখতে দেখতে আনমনে ভাবলাম, আইসক্রিমের স্বাদ হারিয়ে গেছে। কেন হারালো... ভাবতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, জীবন থেকে একসময় অনেক কিছু এভাবে হারিয়ে যায়। এই যেমন, আমার সামনে পড়ে থাকা রাজউকের প্লটগুলো আগে যাদের বাড়ি, ক্ষেতখামার ছিল তারা তাদের জমি হারিয়ে ফেলেছে! আমাদের মনের জমিও বদলে যায় ক্রমশ, আমাদের মনের জমিতে বসত করে যে কয়জনা তারা অনেকে হারিয়ে যায়, হঠাৎ একদিন আমরা তা আবিষ্কার করি! আমার মাঝে যে পাঠক ছিল সেই পাঠক যেমন হারিয়ে গেছে, তেমনি ভাবে আমার ভেতরের যে আইসক্রিম খাদক ছিল, সেও কবে হারিয়ে গেছে...
পৃথিবীতে আজ আর যা হবার নয়,
একদিন হয়েছে যা– তারপর হাতছাড়া হয়ে
হারায়ে ফুরায়ে গেছে– আজও তুমি তার স্বাদ লয়ে
আর-একবার তবু দাঁড়ায়েছ এসে!
(কার্তিক মাঠের চাঁদ: জীবনানন্দ দাশ)
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৪
করুণাধারা বলেছেন: সময়ের স্রোতে সব হারিয়ে যায় ঠিক তাই। আমাদের রাগ, দুঃখ আনন্দ, বেদনা, সফলতা, ব্যর্থতা কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়, সবই হারিয়ে যায়। একদিন আমরাও হারিয়ে যাব আমাদের পরিচিত সবকিছু থেকে।
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৩
এম ডি মুসা বলেছেন: অনেক কিছু নিয়ম আছে বর্তমানকে আ গের সময় কখনো একনয় তবুও জানি না ৩০২৪ সাল কেমন হবে এই পৃথিবীর। তবে আমাদের এই সময়টাই পেয়েছি তার ভিতরে অসুখে ভরা অনেক জীবন। আমার দাঁতের ইনফেকশন জন্য ঠান্ডা আইসক্রিম আমার জন্য ছোট বেলা হারাম ছিল,
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫০
করুণাধারা বলেছেন: আমার দাঁতের ইনফেকশন জন্য ঠান্ডা আইসক্রিম আমার জন্য ছোট বেলা হারাম ছিল,
আশাকরি এখন ঠিক হয়েছে।
আইসক্রিম আমার জন্যও ছোটবেলায় হারাম ছিল, কারণ আমার হাঁপানি বেড়ে যেত আইসক্রিম খেলে। আমি আইসক্রিম ছোট বেলায় যতদিন খেয়েছি তার সংখ্যা আংগুলে গুনে বলা যাবে। কখনো পুরা আইসক্রিম পাইনি, দুই তিন কামড় খেতে পেয়েছি হয়তো।সেজন্যই আমার আইসক্রিম খাবার লোভ ছিল সবসময়। বড় হয়ে খেয়েছি, ঠান্ডা লেগেছে, এন্টিবায়োটিক খেয়েছি তার জন্য।
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩০
মিরোরডডল বলেছেন:
জীবনের প্রথম আইসক্রিম খেয়ে সত্যজিৎ বলেছিলেন, "এটা একটু গরম করে দিলে ভালো হতো"
৯৯,৯৯৯ টাকা দামের আইসক্রিম
এই আইসক্রিম গলা দিয়ে নামবে!!!
বিস্কুটের কোনকে তরুণী কৌটা বলে ভেবেছিলেন!!
এটা ফানি ছিলো
শেষ প্যারার কথাগুলো খুব সুন্দর ধারাপু। বিশেষ করে......
আমাদের মনের জমিও বদলে যায় ক্রমশ, আমাদের মনের জমিতে বসত করে যে কয়জনা তারা অনেকে হারিয়ে যায়
এই কথাটা বুকে গিয়ে লাগলো।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭
করুণাধারা বলেছেন: দিয়েই দিলাম পোস্ট, তুমি বললে বলে!
জীবন কখনোই স্থবির না। পছন্দ-অপছন্দ আশা বেদনা অগ্রাধিকার সব কেবলই বদলে যেতে থাকে, সাথে সাথে আমাদেরকেও বদলে দিতে থাকে। মাঝে মাঝে কিছু স্পেস পাওয়া যায়, জীবনের পাওয়া আর হারানোর হিসাব করার জন্য।
জানি পোস্টের শুরুর সাথে সমাপ্তির কোন মিল নেই, তবু মাঝে মাঝে খাপছাড়া লিখতে ভালো লাগে।
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫
ভুয়া মফিজ বলেছেন: নভেল না, ঢাকায় সাজানো গোছানো প্রথম আইসক্রিমের দোকান প্রতিষ্ঠা হয়েছিল গুলিস্তানে। করেছিল বেবি আইসক্রিম কোম্পানি। এটা পঞ্চাশের দশকের শেষ বা ষাটের দশকের শুরুর কথা। এই লিঙ্কে বিস্তারিত পাবেন। view this link
নভেল ছাড়াও ঢাকার পুরানো আইসক্রীম পারলারগুলোর মধ্যে তোপখানা রোডের 'ইগলু', নিউ এলিফ্যান্ট রোডে ''নাম মনে নাই'', ধানমন্ডি ৫ বা ৬ নাম্বার রোডে 'ডলসি ভিটা' ছিল অন্যতম। এরা এখন আছে কিনা জানিনা। তখন পারলারে গেলে মেয়েদের আইসক্রীম খাওয়া দেখে খুব আনন্দ পেতাম। একটু একটু করে কেটে সেইরকমের স্টাইল করে তারা আইসক্রীম খেতো। কাউকে এভাবে খেতে দেখলে আমার এক বন্ধু মজা করে বলতো, তাড়াতাড়ি খান। স্টাইল বেশী করলে শেষে শরবত খাওয়া লাগবে!!!
এখন এখানে এতো এতো বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডের আইসক্রীম খেতে পারি, যেটা দেশে সম্ভব না। তবে আমার প্রিয় হলো, পেস্তা স্বাদের কুলফি আইসক্রীম। এক বাক্স কিনি, বেশ কিছুদিন ধরে রসিয়ে রসিয়ে খাই। তবে চিনির কারনে সেটাও কমিয়ে দিতে হবে শীঘ্রই।
পোষ্ট পড়ে মজা পেলাম।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩২
করুণাধারা বলেছেন: নভেল না, ঢাকায় সাজানো গোছানো প্রথম আইসক্রিমের দোকান প্রতিষ্ঠা হয়েছিল গুলিস্তানে। করেছিল বেবি আইসক্রিম কোম্পানি।
এটা অবশ্য জানতাম না। আমাদের গণ্ডি ছিল নিউমার্কেট পর্যন্ত, তাই হয়তো আমার মা বলেছিলেন যে নভেল ঢাকার প্রথম আইসক্রিমের দোকান।
আইসক্রিম আমার পরম আরাধ্য ছিল, কিন্তু ছোটবেলায় কয়বার খেয়েছি তা আঙ্গুল গুণে বলতে পারবো। তাই আইসক্রিমের দোকান সম্পর্কে কম জানি। কিন্তু আপনি যে আইসক্রিম পার্লার গুলোর কথা বললেন, সেগুলো নভেলের মতো ষাটের দশকে শুরু হয়েছিল বলে আপনি নিশ্চিত কী!! ডলসি ভিটায় আমি গেছি, কিন্তু সে তো অনেক পরের কথা। আমি যে আইসক্রিমের দোকানে পিস্তলওয়ালা দেখেছিলাম, সেটা ছিল বাসকিন রবিন্স। একসময় ধানমন্ডিতে এমন অনেক দোকান চলতো।
কুলপী আমারও প্রিয়। কিন্তু এখন ফ্রিজে অনেক দিন ধরে পড়ে আছে...
৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১০
মিরোরডডল বলেছেন:
ভুম চিমটি।
কুলফি আমারও খুব প্রিয়
আইসক্রিম মানেই ইয়াম কিন্তু সুগারের কারণে আগের চেয়ে কমিয়ে দিয়েছি।
এখনও শীতের মধ্যরাতে আইসক্রিম ভালো লাগে।
ছোটবেলা থেকে আমার আইসক্রিম বারণ ছিলো টনসিলের কারণে কিন্তু যেদিন সার্জারি হয়ে গেলো, তখন সেন্স ব্যাক করতেই এক বক্স আইসক্রিম ধরিয়ে দিলো, বললো ওটা খেতে। সেই থেকে শুরু, তারপর নো ছাড়াছাড়ি
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫
করুণাধারা বলেছেন: আইসক্রিম ভালো লাগে বেশি ঠান্ডার সময় খেতে।
শুধু সুগার না, আইসক্রিমের ক্রিমটাও এলডিএল বাড়ায়। তবে অল্পস্বল্প খেলে তেমন অসুবিধা হয় না।
৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১০
খায়রুল আহসান বলেছেন: নিউ মার্কেটের সেই আইসক্রীমের দোকানটির নাম নভেল, নাকি নভেলটি? মনে পড়ে, বিয়ের পর পর গিন্নীকে নিয়ে বেশ ঘন ঘন সেখানে যেতাম আইসক্রীম খেতে আর আশে পাশে উইন্ডো শপিং করতে। উনি বিয়ের আগে প্রতিবছর নিয়ম করে অন্ততঃ একবার একিউট টন্সিলাইটিসে ভুগতেন। বিয়ের পর (হয়তো এই আইসক্রীম খেয়েই) সেই রোগটাকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করেছেন।
শেষের দার্শনিক বিশ্লেষণটি পড়ে অভিভূত! আমার মনেও মাঝে মাঝে নানা ওসিলায় এ ধরনের ভাবনা চলে আসে।
পোস্টে পঞ্চম প্লাস। + +
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
করুণাধারা বলেছেন: আপনার কি মনে হচ্ছে দোকানের নাম ছিল নভেলটি? তাহলে হয়তো এটাই ঠিক, আমি নিশ্চিত নই এটার নাম নভেল নাকি নভেলটি ছিল।
আমার পোস্ট দেখে পুরনো দিনের স্মৃতি মনে পড়ে গেল আপনার! আমারও ভালো লাগলো নববিবাহিত দম্পতির নির্ভাবনার দিনের কথা জানতে।
আমার মনে হয় আরেকটি খাবার দোকান আছে, যেটা আপনার এবং আমার পরিচিত। জানিনা ভুল করছি কিনা, কিন্তু আমার মনে হয় আপনার কোন এক পোস্টে আমি দারুল কাবাব নামের দোকানের উল্লেখ দেখেছিলাম। সেই দোকানে ছোটবেলায় আমার মামী আমাদের ভাই-বোনদের নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই প্রথম কোন দোকানে গিয়ে খাওয়া, তার বহুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আবার দোকানে গিয়ে খাবার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই দারুল কাবাবের স্মৃতি আমি কখনোই ভুলতে পারিনা।
মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হলাম। অশেষ ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্য লিখুন
৭| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
মিরোরডডল বলেছেন:
লেখক বলেছেন: দিয়েই দিলাম পোস্ট, তুমি বললে বলে!
বেশ করেছো, কত লক্ষ্মী আপুটা।
জীবন কখনোই স্থবির না। পছন্দ-অপছন্দ আশা বেদনা অগ্রাধিকার সব কেবলই বদলে যেতে থাকে, সাথে সাথে আমাদেরকেও বদলে দিতে থাকে। মাঝে মাঝে কিছু স্পেস পাওয়া যায়, জীবনের পাওয়া আর হারানোর হিসাব করার জন্য।
absolutely agree.
জানি পোস্টের শুরুর সাথে সমাপ্তির কোন মিল নেই, তবু মাঝে মাঝে খাপছাড়া লিখতে ভালো লাগে।
সেটাই! যা মনে আসে লিখবে, মনের সাথে নো জোরাজুরি।
পড়তে ভালো লেগেছে, এটাই ইম্পরট্যান্ট।
ভালো থাকবে ধারাপু।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫১
করুণাধারা বলেছেন: আমাকে আবার ফিরিয়ে আনার জন্য তোমার তো একটা ধন্যবাদ পাওনা! ধন্যবাদ মিড!
ইদানিং কেউ কেউ মনে হয় হারিয়ে যাবার পাঁয়তারা করছে। একে একে সবাইকে ফিরিয়ে আনো তুমি।
মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।
৮| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:১৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার মনে হচ্ছে দোকানটির নাম ছিল নভেলটি, যদিও আমিও শতভাগ নিশ্চিত নই, বিশেষ করে আপনার লেখাটি পড়ার পর থেকে। কারণ, আপনার স্মরণশক্তির বিস্ময়কর প্রখরতা সম্পর্কে আমি অবগত আছি (আপনার বিভিন্ন পোস্ট ও মন্তব্য পড়ে পড়ে)। নভেলটির 'ty' কথাটা একটা আইসক্রীমের ছবির প্রচ্ছন্ন আড়ালে থাকতো বলে হয়তো বা সেটা অনেকের চোখে পড়তো না বলে মনে হচ্ছে।
জী, দারুল কাবাব দোকানটির কথা আমি আগেও কয়েকবার আমার বিভিন্ন স্মৃতিচারণে উল্লেখ করেছি। এখনকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের উল্টো দিকে (এখন যেখানে সুন্দরবন হোটেল) কাঠের খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে থাকতো সেই কাবাবের দোকান টা। সন্ধ্যার পর থেকেই ভিড় লেগে থাকতো। তার নীচ দিয়ে বর্তমানের হাতিরঝিলের জলধারা প্রবাহিত হতো। বড় বড় মহাজনী (সুন্দরী কাঠের লাকড়ি বহনকারী) এবং ছোট ছোট বেদেনি'র নৌকা তীরে বাঁধা থাকতো।
"ইদানিং কেউ কেউ মনে হয় হারিয়ে যাবার পাঁয়তারা করছে। একে একে সবাইকে ফিরিয়ে আনো তুমি" - আপনার এই আহবানের প্রতি আমি পূর্ণ সমর্থন জানালাম। কার আহবানে স্বপ্নবাজ সৌরভ ফিরে এলো কে জানে, তবে তার প্রত্যাবর্তনে আমি প্রীত হয়েছি।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৩
করুণাধারা বলেছেন: আপনিই সঠিক, দোকানের নাম নভেলটিই ছিল। আসলে আমার স্মৃতিশক্তি ততটা ভালো নয়, আমারও প্রায়ই ভুল হয়। আপনাকে ধন্যবাদ ভুলটা শুধরে দেয়ার জন্য। ঠিক করে দিয়েছি নামটা।
অনেক ধন্যবাদ দারুল কাবাবের অবস্থান কোথায় ছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর জন্য। আমি আগেই বলেছি, একবারই আমি সেখানে যাবার সুযোগ পেয়েছিলাম। তারপর দীর্ঘদিন ঢাকায় ছিলাম না, আর প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে পর্যন্ত আর কখনোই কোন খাবার দোকানে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। সুতরাং এই স্মৃতি আমার মনে সব সময়ই সুখ স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছিল। যখন আবার ঢাকায় এলাম তখন আমি জায়গাটি খুঁজে বেড়িয়েছি, এবং আমার ধারণা ছিল যে জায়গাটি আপনার বলার সাথে সেটা মিলে গেল!!
মিরোরডডল ব্লগে অনুপস্থিত অনেকের পোস্টে গিয়ে অনুরোধ করে ফিরে আসার জন্য, ফলে অনেকেই ফিরে আসেন। ঠিক এই কাজটি আপনিও করেন। আপনি বিভিন্ন অনুপস্থিত ব্লগারকে পোস্টে গিয়ে ফিরে আসার অনুরোধ করেন, আমাকেও করেছিলেন এবং তখন আমি আবার ব্লগে নিয়মিত হই। আপনাদের এই কাজটা খুবই প্রশংসনীয়!! স্বপ্নবাজ সৌরভকে আপনিও আহ্বান করেছিলেন ফিরে আসার জন্য। সুতরাং মিরোরডডল এবং আপনার, দুজনের আহ্বানেই স্বপ্নবাজ সৌরভের ফিরে আসা। আশাকরি তাঁকেও নিয়মিত ভাবে পাবো।
৯| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:১৮
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: আইসক্রিমের ভেতর পয়সা পাওয়ার রীতি চালু হয়েছিলো আমাদের সময়। এই পয়সার লোভে কত শত আইসক্রিম খেয়ে যে পেট ভরাইছি। কত শত বার সর্দির স্বীকার হয়েছি...
আরও একটা ছিলো আমাদের সময়, লটারী সিস্টেম...
গোলাকার সার্কেলটাকে ঘুরিয়ে একটা নির্দিষ্ট দাগের মধ্যে যত পড়বে, ততটা আইসক্রিম পাবে। আমি একবার ১ টাকায় ৩টা আইসক্রিম পেয়েছিলাম। সেদিন আমার খুশি দেখে কে! সম্ভবত এই খুশি আমি ৭ দিন যাবত পালন করেছি। যাকে পেয়েছি, তাকেই এই গল্প বলে বেড়িয়েছি...
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪২
করুণাধারা বলেছেন: নয়ন বড়ুয়া, আপনাকে আমার ব্লগে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। প্রথমবার এলেন কি!! অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার এবং পোস্টে লাইক দেওয়ার জন্য।
আইসক্রিমের ভিতরে পয়সা পাওয়া কথা কখনো শুনিনি!! আবার গোলাকার সার্কেল ঘুরিয়ে দাগের মধ্যে ফেলে আইসক্রিম পাওয়া, এটাও জানতাম না! আপনার সেই খুশির গল্প গুলো লিখে ফেলুন না, আমরা একটু জানি।
১০| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৪২
মেঘবৃষ্টির গল্প বলেছেন: আইসক্রিমের দোকানের নাম ছিলো নভেলটি, নভেল না।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩২
করুণাধারা বলেছেন: ঠিক করে দিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
১১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৫৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: স্কুলে থাকতে খেতাম বরফের কাঠি আইসক্রিম। সবুজ রঙ এর । জিহবা সবুজ হয়ে যেত। কি যে অতুলনীয় ছিল স্বাদ। ইগলুর মধ্য প্রিয় ছিল চকবার। বক্স আইসক্রীম মনে হয় প্রথম বিক্রি করা শুরু করে পোলার। পোলারের কেক আইসক্রীম দারুন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আইসক্রীমের প্রতি আমার সব ভালবাসা উবে গেছে বিদেশে এসে। খুব বেশি সহজলভ্যতার কারনে কি না জানি না ঃ(
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯
করুণাধারা বলেছেন: আইসক্রীমের প্রতি আমার সব ভালবাসা উবে গেছে বিদেশে এসে। খুব বেশি সহজলভ্যতার কারনে কি না জানি না
আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে, আপনি ছোটবেলা থেকেই অনেক আইসক্রিম খেয়েছেন এবং এটা আপনার কাছে সহজলভ্য ছিল সবসময়ই। আমার কাছে কখনোই ছিল না, তাই উন্মুখ হয়ে থাকতাম এক চামচ আইসক্রিম খাওয়ার জন্য। এখন দেখছি সেই আকাঙ্ক্ষা আর নেই। তাই মনে যা আসলো লিখে ফেললাম।
১২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
বাংলা মুলুকের আইসক্রিম খাওয়া, তার ইতিহাস ও আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে নীজের স্মৃতি চারণসহ বরেন্য ব্যক্তিত্বদের
কথামালা নিয়ে বেশ উপভোগ্য একটি পোষ্ট ।
ছোটবেলায় আমরাও বেবী আর ইগলু আইসক্রিম ই বেশী খেতাম । ঢাকার প্রথম আইসক্রিমের দোকান যে নভেল তা
এখন জানতে পারলাম ।
আপনার আইসক্রিম খাবার কথা বলতে গিয়ে সত্যজিৎ রায়ের প্রথম আইসক্রিম খাওয়ার কথাটাও শুনলাম ।নতুন
ধরণের আইসক্রিম খেতে ঢাকার মানুষ কীভাবে ভিড় করে সেটাও জানা হল ।
আইসক্রিম বিক্রেতার কথাও শুনা হল, জানা হল ইসমাইলিয়া সম্প্রদায়ের কথামালা । আইক্রিম ব্যবসার সাফল্য
দেখে মেশিনের কোন আইসক্রিম জিনিসটা ডালভাতের মতো সাধারণ হয়ে যাওয়ার কথা জানা গেল।আইসক্রিমের
ইতিহাস বলতে গিয়ে এসব কথামালাতো স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়েই গেল এ পোষ্টের কল্যানে এখানে ।
ভালই বলেছেন কেবল মধ্যবিত্ত না, ঢাকার রিক্সাওয়ালারাও এখন আইসক্রিম খেতে পারে। কথাটা সত্যি।
লেখাটির শেষ দিকে এসে দেখতে পাই আপনার ভেতরের যে আইসক্রিম খাদক ছিল, সেও কবে হারিয়ে গেছে
তবে বলতে পারি প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশেরা হারিয়ে যায়না , তাঁরা বারে বারে ফিরে আসে ।
আইসক্রীম খাওয়া নিয়ে আমার কিছু টুকরা অভিজ্ঞতা শেয়ার করে গেলাম,সেখানকার কথা মালা হযতবা
আপনাকে আবার ফিরিয়ে আনবে আইসক্রিম খাদক হিসাবে।
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে হলে থেকে পড়াশুনার কালে এক সময় রমনা পার্কে গিয়ে আইসক্রিম থেতাম ফেরিওয়ার কাছ
থেকে কিনে । অনেক সময় রমনা পার্কে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুনি কেও কেও বলছে-
আমি তোমাকে আইসক্রিমের চেয়ে বেশি ভালোবাসি,তারা যে আইসক্রিম নিয়ে অনেক কিছুই বলছে তা কি আর বলতে!
আমি মাঝে মাঝে ফোড়ন কেটে বলতাম হ্যা বলেন বলেন, আইসক্রিমতো দেবতাদের কাছেও অমৃত।
অনেকে আবার আমার কথা শুনে রস করে বলত, আপনি সুখ কিনতে পারবেন না, কিন্তু আপনি আইসক্রিম কিনতে পারেন,
আর আইসক্রিমে এক চুষনীতেই শুনতে পারবেন ইস হিস একটি হাসি ।
আমিউ বলতে ছাড়তামনা, বলতাম আইসক্রিম আমার থেরাপি।শুধু কি থেরাপী, আইসক্রিম ভিতর থেকে আমাকে দেয় আলিঙ্গনের অনুভুতি । তাইতো আইসক্রিম ছাড়া একটি দিন আমার কাছে যেন হয়ে উঠে একটি দিন নষ্ট।
গরমের সময় আমি আইসক্রিমের ভক্ত, আর গরমের সময় আইসক্রিম হয়ে উঠে আমার জীবনের অনেক সমস্যার উত্তর।
আপনার মতই আইসক্রিম আমারো শৈশবের একটি মিষ্টি স্মৃতি অনুস্মারক।আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে এ পোষ্টে বলা আপনার
কথাগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আইসক্রিম শুধুমাত্র একটি ডেজার্ট নয়, এটি একটি সুখ, আরাম এবং আনন্দের
প্রতীক(অবশ্য ঠান্ডা সেবনে এলার্জি কিংবা দাতে ইনফেকশন থাকলে ভিন্ন কথা , তবে ঔষধ সেবনে দাতের এই অবস্থা
দুর করা হলে আইসক্রিম আনন্দ দায়ক বস্তুই বটে )। যাহোক , আইসক্রিম ভ্যানিলার একটি সাধারণ স্কুপ বা একটি
বিস্তৃত সানডেই হোক না কেন, আইসক্রিমের যাদুটি যে আনন্দ অনুভুতি আর সুখস্মৃতি নিয়ে আসে তার মধ্যে রয়েছে
কতই না বৈচিত্রতা । তাই আমরা সকলেই আইসক্রিমের মঙ্গল বন্দনায় লিপ্ততো হতেই পারি এবং জীবনের সহজ আনন্দ
সুখ উদযাপন করতে পারি আইসক্রিম সেবনে ।
উপভোগ্য আর তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ
শুভেচ্ছা রইল
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫১
করুণাধারা বলেছেন: বরাবরের মতই চমৎকার একটি মন্তব্য! অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য, এবং পোস্টটি লাইক করার জন্য।
ভালো লাগলো এটা দেখে যে এই পোস্ট আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, কিভাবে রমনা পার্কে আইসক্রিম খেতেন সেটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। টুকরো স্মৃতির এই কাহিনী পড়তে ভালো লাগলো, বিশেষভাবে ভালো লাগলো এই উক্তি:
আইসক্রিমতো দেবতাদের কাছেও অমৃত। দেবতা একহাতে কমন্ডলু আর গদা সামলে আরেক হাতে আইসক্রিম ধরে খাচ্ছেন, দৃশ্যটি কল্পনা করতে যেয়ে ভালোই লাগলো!!
আইসক্রিম শুধুমাত্র একটি ডেজার্ট নয়, এটি একটি সুখ, আরাম এবং আনন্দের
প্রতীক(অবশ্য ঠান্ডা সেবনে এলার্জি কিংবা দাতে ইনফেকশন থাকলে ভিন্ন কথা , তবে ঔষধ সেবনে দাতের এই অবস্থা
দুর করা হলে আইসক্রিম আনন্দ দায়ক বস্তুই বটে )
অবশ্যই। তবে আপনি বন্ধনীর ভেতরে যাদের কথা বলেছেন, আমি তাদের মধ্যে একজন। আমার ঠান্ডায় এলার্জি এবং দাঁতের সমস্যা, দুটিই আছে। সেজন্য খুব আইসক্রিম খেতে চাইতাম কিন্তু খেতে পেতাম না। এখন যখন সেই সমস্যা নেই, তখন খেতে গিয়ে দেখলাম খাবার ইচ্ছেটা চলে গেছে...
তাই এই স্মৃতিচারণ, আর আপনাদেরও স্মৃতিচারণে ডেকে আনা!
১৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আপনার পুর্বতম একটি পোষ্টে
আমার ছোট্ট একটি মন্তব্য রয়েছে ,ইচ্ছে হলে দেখতে
পারেন গিয়ে।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৩
করুণাধারা বলেছেন: সেই পোস্টে আপনার মন্তব্যটির উত্তর আমি দিয়েছি। আপনার মন্তব্যটি ছিল সুচিন্তিত ও বিষদ। এর উত্তর দেবার জন্য কিছুটা সময় নিয়ে বসতে হতো, সেই সময় পাচ্ছিলাম না দেখে উত্তর দিতে দেরি হয়েছে। আমি জানি যে আপনি শারীরিক নানা সমস্যা, নানা ব্যস্ততার মধ্যেও এই মন্তব্য করতে অনেক সময় ব্যয় করেছেন। তাই আপনার মন্তব্যের না দিয়ে আমি নতুন পোস্ট দিতে চাইনি। সেজন্য যখন মন্তব্যের উত্তর দিতে পেরেছি, তারপরে এই পোস্ট দিয়েছি।
জানিনা হয়তো আপনি আমার করা প্রতিমন্তব্যটি দেখতে পারছেন না। যদি তেমন হয়, অনুগ্রহ করে জানাবেন। আমি সেটি কপি করে আপনার পোস্টে মন্তব্যাকারে দিয়ে দিব।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য।
১৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: গুলিস্তার বিল্ডিং এর নিচে এহেতেশামের একটা রেস্টুরেন্ট ছিল নামটা মনে নেই।স্বাধীনতার পরেও দোকানটি ছিলো।ওখানে আইসক্রিম খেয়েছি স্বাধীনতার আগে ও পরে।ছোট বেলায় রঙিন আইসক্রিম খেয়েছি ৬০ এর দশকে।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
করুণাধারা বলেছেন: আমার জানা ছিল না গুলিস্তানের সেই আইসক্রিমের দোকানের কথা। প্রথমে ভুয়া মফিজ, তারপর আপনার থেকে জানলাম।
মনে হয় আমার পোস্ট দেখে আপনার এবং আরো অনেকের স্মৃতির ভান্ডারে নাড়াচাড়া পড়লো! ভালোই হলো, কিছু জানা হলো!
১৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:১৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,
এই শীতকালে আইসক্রীমের কথা বলে ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতি যেন জমিয়ে দিলেন!
ছেলে বেলায় ২ পয়সা, ১ আনা ও ২ আনা দামের আইসক্রীম খেয়েছি। আমাদের বাসার অনেকটা কাছেই ইসমাইলি সম্প্রদায়ের একটি বরফকল ছিলো। সেখানেই এই আইসক্রীম বানানো হতো। নাম ছিলো ডায়মন্ড আইসক্রীম। ফেরীওয়ালারা সেই আইসক্রীম হাতে ঝোলানো বড় বড় ফার্মোস ফ্লাস্কে ভরে পাড়ায় পাড়ায় ফেরী করতো। বেশিরভাগ সময়ে আমরা সরাসরি সেই বরফ কল থেকে আইসক্রীম কিনে আনতুম। বরফ কলে রাখা বিশালাকার ডীপফ্রীজ থেকে আমরা বেছে বেছে নিঁখুত আকৃতির আইসক্রীম তুলে নিতুম। এ নিয়ে প্রায়শঃই কর্মচারীদের সাথে ঝগড়া লাগতো, কেন আমরা ফ্রীজের ভেতরে এতো এতো হাতরাচ্ছি। গরম কালেই এটা ঘটতো বেশি। ২ পয়সার আইসক্রীম ছিলো ৩ সাড়ে ৩ ইঞ্চির মতো লম্বা ও গোলাকার। রং ফ্যাকাসে লাল। পানি আর স্যাকারিন দিয়ে বানানো। সেসব দিনে ২ পয়সার আইসক্রীম খাওয়াও সৌখিনতা ছিলো আমাদের কাছে। ১ আনার আইসক্রীম ছিলো দুধ মেশানো তাই পানসে সাদা রংয়ের। ২ আনার আইসক্রীম ছিলো এখনকার বার-আইসক্রীমের মতো চ্যাপ্টা তবে খানিকটা। দুধ বেশী আর ক্রীম মেশানো। ওটা খাওয়া ছিলো ভাগ্যের ব্যাপার। ২ পয়সার আইসক্রীম ছিলো আমজনতার। ১ আনা, ২ আনার আইসক্রীম ছিলো বিত্তশালীদের।
এছাড়াও ছিলো কুলফিমালাই। ১ আনা আর ২ আনা দামের। কোন আকৃতির টিনের চোঙ্গার ভেতরে থাকতো তা। বরফটুকরোয় ভরা মাটির গোল হাড়িতে তা নিয়ে মাথায় করে কুলফিওয়ালা গরমের দিনের রাতের বেলাতেই পাড়ায় পাড়ায় হাঁক পাড়তো- চাই কুলফি...... কুলফিমালাই.......!!!!!! বড় বোনদের জমানো পয়সায় হঠাৎ হঠাৎ তাদের চেখে দেখার সুযোগ হতো। ডায়মন্ড আইসক্রীমের চেয়ে এই কুলফি ছিলো শতগুনে ভালো।
সেই স্মৃতির সম্ভার এখন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে!
শেষের প্যারাটি খুব সুন্দর আবেগ আর অনুভুতি মাখানো।
শুভেচ্ছান্তে।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:০১
করুণাধারা বলেছেন: সেই স্মৃতির সম্ভার এখন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে!
স্মৃতির সম্ভার তো হারিয়ে যায় না, বরং অনাদরে পড়ে থাকে। হঠাৎ করে আমরা তাকে খুঁজে বের করি এবং ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানাভাবে দেখি, আনন্দিত হই। কারণ স্মৃতি সততই সুখের।
আমার ভালো লাগছে, এই পোস্ট পড়ে আপনি দূর অতীতের ঝাঁপি খুলে আইসক্রিম খাবার স্মৃতি শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ।
আইসক্রিমের যে বিভিন্ন দাম এবং ধরন বললেন, এখনো কিন্তু এগুলো বজায় আছে। দাম অবশ্য বদলে গেছে। আমি যে উল্লেখ করেছি গাড়ি থেকে আইসক্রিম কিনে খাবার কথা, তখন একটু ঝুঁকে গাড়ির ভিতর দেখতে গেলাম কি আইসক্রিম আছে। দেখলাম গাড়ির মধ্যে আপনার বর্ণিত শুধু রং আর চিনি গোলা আইসক্রিমও আছে! আমি নিয়েছিলাম শেল এন কোর নামের ৪০ টাকা দামের ভ্যানিলা আইসক্রিম আর চিনি পানির আইসক্রিমের দাম ছিল ৮ টাকা!
জেনে ভালো লাগলো যে আপনার শৈশবেও আইসক্রিম প্রস্তুতকারক হিসেবে ইসমাইলিয়ারা ছিলেন। মনে হয় এরা এমন ব্যবসা করতেন যা নতুন, ঠিক যেমনিভাবে প্রথম কোন আইসক্রিমের মেশিনটি এনেছিলেন। এখন মনে হয় এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা বাংলাদেশে থাকেন না।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
১৬| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:০৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আজকাল হরেক রকম আইসক্রিম পাওয়া যায়। আমার মেয়ে ও স্ত্রীর আইসক্রীম বেশ পছন্দ । আমের সিজনে আম দিয়ে আইসক্রিম বানিয়ে ফ্রিজে রেখে মজা করে খায়। ++++
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:০৪
করুণাধারা বলেছেন: মনে হয় আপনার কোন একটা পোস্টে আপনার কন্যার প্রিয় আমের আইসক্রিমের ছবি দিয়েছিলেন। চমৎকার দেখতে হয়েছিল আইসক্রিমটি। এই বছরৈ গরমে আরেকবার রেসিপি শেয়ার করতে পারেন।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার।
১৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২২
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন:
এই রকম ছিলো সেগুলো...
সেই এক মজার স্মৃতি ছিলো...
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১০
করুণাধারা বলেছেন: আবার ফিরে এসে এই ছবিগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ নয়ন বড়ুয়া। এমন টাকা ভরা আইসক্রিম হতে পারে, আমার জানাই ছিল না। কিন্তু বুঝতে পারছি না, এই সোনালী টাকা ভরা আইসক্রিম কে বিক্রি করতো। সোনালী টাকার চাহিদা অনেক বলে শুনেছি। শুনেছি এগুলো অনেক বেশি দামে কিনে ব্যবহার করা হয়। তো সেই টাকাই আইসক্রিমের ভরে রাখা!
চমৎকার স্মৃতি। আপনার জীবনের গল্পগুলো আকর্ষণীয় হয়, এটা নিয়েও একটা পোস্ট দিয়ে ফেলুন।
১৮| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:১৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শীতকালে আইসক্রিম না খাওয়াই তো উত্তম।
আমাদের বাল্যকালে আমাদের এলাকায় আইসক্রিমের বাক্স নিয়ে বিক্রেতারা ঘুরাঘুরি করতো।
চিৎকার করে বলত" মাইলাই আইসক্রিম!
বাক্সের উপর লটারীর কাটা ছিল। আমি একবার আট আনা দিয়ে লটারী ধরে ১০ টা মালাই আইসক্রিম পেয়েছিলাম।
জীবনে সেই প্রথম ও শেষ কোন লটারি জেতা ।
৫০ বছর পার হয়ে গেল।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৪
করুণাধারা বলেছেন: শীতকালে আইসক্রিম খাচ্ছি না, শুধু খাবার গল্প করলাম!
আইসক্রিম খাবার লটারিটা খুবই মজার ব্যাপার। এমন কিছু আছে বলে আমার জানা ছিল না। এই পোস্ট দিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।
আপনি যখন আট আনা দিয়ে একাই দশটি মালাই আইসক্রিম পেয়েছিলেন, তখন আপনার বয়সী আরো কিছু বালক নিশ্চয়ই লুব্ধ দৃষ্টিতে আইসক্রিমের দিকে তাকিয়ে ছিল। আহা!
১৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৯
জুন বলেছেন: গতকাল পড়েছি করুনাধারা কিন্ত ব্যস্ততার জন্য মন্তব্য করতে দেরি তো হলোই। তোমার ডেসক্রিপশন পড়ে জিভ দিয়ে পানি ঝরছিল কিন্ত গলা একটু খুস খুস তাই কষ্টে চেপে রাখলাম আরকি। প্রিয় জিনিস একটা পোলার বা ইগলুর বক্স আনলে দুজন মিলে দুজনকে উপদেশ 'আর খেও না একটু আগেই তো এক বাটি খেলা'। "কোথায় এক বাটি! বাটি নিলে কি হবে আইসক্রিম তো নিলাম দুই চামচ " তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ফ্রীজে ঠাই হলো বক্সের। তার আধাঘন্টা পরে আমি বসলাম বক্স নিয়ে রোষকষায়িত নয়নে চেয়ে রইলো ঘরের একমাত্র সদস্য এইভাবেই একদিনে শেষ হয় আইসক্রিম। তারপর প্রতিজ্ঞা নাহ এত আইসক্রিম খাওয়া উচিত না, আর আনবো না। তারপর পরদিনই হাতে করে আনা হলো। জিজ্ঞাসু নয়নে তাকাতেই উত্তর "আরে না না এটা একটা নতুন ফ্লেভার টেস্ট করা হয় নি তো তাই "।
তবে বরফের তৈরি কাঠি আইস্ক্রিম ছিল সেরা কিন্ত আপদ এমন যে তার জিভ রঙ করা লাল সবুজ লুকাতে না পেরে আম্মার কাছে বকুনি। আমাদের কাছের সেই বেহেশতী খাবার আম্মার মতে নোংরা পানি দিয়ে বানানো। তুমি বলো এইটা কিছু হইলো
অনেক স্মৃতি উসকে দেওয়া একটি লেখায় অনেক অনেক ভালোলাগা
+
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
করুণাধারা বলেছেন: আমিও উত্তর দিতে দেরি করে ফেললাম জুন! তেমন গুরুতর কোন কারণ নেই, মাঝে মাঝে কিছু করতে ইচ্ছা করে না, কালকেও তাই হয়েছিল।
প্রিয় জিনিস একটা পোলার বা ইগলুর বক্স আনলে দুজন মিলে দুজনকে উপদেশ 'আর খেও না একটু আগেই তো এক বাটি খেলা'।
বাহ্! দারুন গল্প! বোঝা গেল আইসক্রিম দুজনের খুব প্রিয়! কিন্তু ইগলু পোলারের গল্প আমার হতে পারে, ইবনে বতুতার গল্প হবে অন্যরকম! ইবনে বতুতার গল্প হবে পিরামিডের সামনে, সাগরে কিংবা পাহাড়ে আইসক্রিম খাবার গল্প, আর কিছু না হোক থাইল্যান্ডের আইসক্রিমের গল্প! আমরাও সেসব গল্প শুনে জান ঠান্ডা করি...
সিরিয়াসলি জুন, দেশ-বিদেশের আইসক্রিম না হোক, খাওয়া নিয়ে একটা পোস্ট দিতেই পারো।
স্মৃতি উস্কে দেয়া এই মন্তব্যেও অনেক ভালো লাগা!
২০| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপু আপনি যে সব নামের আইসক্রিম তুলে ধরেছেন এগুলো আমি আগে কখনো শুনিনি। পোস্টে একজায়গায় বলেছেন শহরের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের এগুলো পছন্দের। একদম সঠিক। আমরা ছোটবেলা রঙিন বরফের বা সাদা চিঁড়ের আইসক্রিম খেয়েছি। মাথায় করে ফেরি করে পাড়ার ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতো।বিয়ে বাড়ীতে কাগজে মোড়ানো বাই কালারের আইসক্রিম কখনো কখনো কপালে জুটতো।ওটাই ছিল আমাদের কাছে বিরাট পাওয়া। পোস্ট পড়ে পরিষ্কার আইসক্রিমের উপর আপনার মারাত্মক আসক্তি ছিল।
তবে আইসক্রিমের দোকানে লোভী ক্রেতা কি আইসক্রিমের লোভে পিস্তল নিয়ে ঢুকেছিল? আহারে এতো লোভ হয়েছে যে নিজেদের সামলাতে না পেরে পিস্তলসহ ধাওয়া করেছে।
আমাদের এখানে ক একমাস আগে মিষ্টির দোকানে রসগোল্লা খেয়ে টাকা চাওয়ায় সেলসবয় ছেলেটিকে রসগোল্লা লোভী সুট করে বাইক নিয়ে চম্পট দেয়।
আপনার সৌজন্যে পোলার ঈগলুর মতো নামী ব্রান্ডের সঙ্গে পরিচিত হতে পারলাম। সুন্দর স্মৃতিকথা++
পোস্টে লাইক।
শুভেচ্ছা আপু আপনাকে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭
করুণাধারা বলেছেন: উত্তর দিতে গিয়ে আমি একটু থমকে গেলাম পদাতিক! এই কাহিনী যেই সময়ের, সে সময় সম্ভবত আপনার জন্ম হয়নি অথবা আপনি নিতান্তই শিশু ছিলেন! আসলে আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম যে একসময় এদেশে শুধু একটা ব্র্যান্ডের আইসক্রিম ছিল, ইগলু। সেটা সবাই কিনতে পারতো না। বলেছি যে, ইগলু আইসক্রিমের ভোক্তা ছিলেন কেবল মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তরা, এটার কারণ ইগলুর সরবরাহ এবং পরিবেশনের ধরণ। এটা সরবরাহ হতো কেবল সাইকেল গাড়িতে এবং বড় দোকানে, সাধারণ মানুষেরা সেখানে কমই যেতো। পোলার এল পাড়ার মুদি দোকানে, পরিবেশিত হলো প্লাস্টিকের বাক্সে, ফলে সাধারণ মানুষেরাও এক বাক্স পোলার কিনে বাড়ি নিয়ে গিয়ে সপরিবারে খেতে পারতো।
আইসক্রিমের দোকানে ক্যাশের লোকের সামনে পিস্তল ধরে ছিল, সম্ভবত ক্যাশ খালি করে নেবার জন্য, আইসক্রিম নেবার জন্য না।
মন্তব্য আর লাইকের জন্য অনেক ধন্যবাদ পদাতিক, এবং শুভেচ্ছা।
২১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
একদম শেষে কবি জীবনানন্দের কবিতা থেকে উদ্ধৃতি করা অংশটি ভীষণ প্রাসঙ্গিক হয়েছে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮
করুণাধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!
২২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮
সোনালি কাবিন বলেছেন: আহা আইসক্রিম! ছোটবেলাতে প্রিয় ছিল, বড়বেলাতেও আবেদন এতটুকু হারায়নি।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯
করুণাধারা বলেছেন: ঠিক কথা। প্রাণ জুড়িয়ে দেয় একেবারে!
২৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:২৭
আরোগ্য বলেছেন: বেবি আইসক্রিম এই নামতো এই পোস্টে প্রথম জানলাম। আরো কত কিছু পুরান দিনের জানতে পারলাম। আমি তো পোলার আর ইগলু এই দুটি ব্রান্ড ছোট বেলা থেকেই চিনি। ছোটবেলায় আমার কাছে খুব সহজলভ্য মনে হত একটাকার পাইপ আইসক্রিম, আমরা ডিঙ্গা বলতাম। কোণ আইসক্রিম তো বড়রা কিনে দিলে । আর চকবারের উপরের চকলেটের প্রলেপ আমার ভাল লাগতো না, সেটা অনেক সময় ফেলে ভিতরের বার খেতাম। ঘরের সবাই আইসক্রিম বেশ পছন্দ করে, আমরা গরমকালে ডিনারের পর একসাথে আইসক্রিম খাই। আমার ৯৫+ নানুরও খুব পছন্দ। বর্তমানে ইগলুর কেক আইসক্রিমটা বেশ পছন্দ।
সুন্দর পোস্ট আপা। +++
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩
করুণাধারা বলেছেন: বেবী আইসক্রিম ঢাকার প্রথম আইসক্রিম, কেন এটা বিলুপ্ত হয়ে গেল জানিনা।
আমি যে কাহিনী বলেছি, সেগুলো আপনার জন্মের বহু আগের। কিভাবে ঘরে ঘরে আইসক্রিম ঢুকেছিল সেই গল্প। এর আগে কিন্তু বাড়ির মহিলারা তেমনভাবে আইসক্রিম খেতে পারতেন না, কখনো বাড়ির সামনে আইসক্রিমের ফেরিওয়ালা আসলে কিংবা সন্ধ্যাবেলায় কুলপী ওয়ালা আসলে কেবল তখনই খাওয়ার সুযোগ হতো। তখন তো আর দোকান থেকে আইসক্রিম কেনার সুযোগ এত ছিল না আর আইসক্রিম খাবার কোন দোকান ছিলই না।
আইসক্রিমের গল্প শোনানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ আরোগ্য। শুভকামনা রইল।
২৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমার বউ আর কন্যা খুব আইসক্রীম পছন্দ করে।
আমার পছন্দ ভাত। ধবধবে সাদা ভাত।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫
করুণাধারা বলেছেন: আমার বউ আর কন্যা খুব আইসক্রীম পছন্দ করে।
আমার পছন্দ ভাত। ধবধবে সাদা ভাত
আমার মনে হয় গরম সাদা ভাত আইসক্রিম দিয়ে মেখে খেতে খুব ভালো লাগবে। একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন। সাথে আম বা কলা মেখে নিলে আরও ভালো।
২৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০১
আরোগ্য বলেছেন: আপা আপনার প্রতিমন্তব্য পড়ে মনে পড়ে গেল। নানু আর বড় খালার মুখে এই ধরনের ফেরিওয়ালা আইসক্রিম আর কুলফিবরফের কথা শুনেছি। আইসক্রিমের পোস্ট পড়ে আরো কত আইসক্রিমের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আইসক্রিম খেয়ে শেষ কিন্তু স্মৃতিগুলো এখনো গলেনি।
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৭
করুণাধারা বলেছেন: দুঃখিত আরোগ্য, উত্তর দিতে খুব দেরি করে ফেললাম...
আমাদের স্মৃতি এমনই, হঠাৎ কোনো একটা কথা বা ছবি স্মৃতির ভান্ডারের দরজা খুলে দেয়। আমার এই পোস্টে অনেকেই স্মৃতি শেয়ার করেছেন, সেসব পড়ে এই কথা মনে হলো।
শুভকামনা রইল, আরোগ্য।
২৬| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:১১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালো লাগলো আপু আপনার আইসক্রিম আড্ডা।
পুরানো ঢাকায় সম্রাট আইসক্রিম নামে প্লাস্টিকের গ্লাসে এক মজার আইসক্রিম খেতাম, যা কিছুটা দুর্লভ ছিল। সহজলভ্য ছিল কাঠি আর মাঝেমাঝে বিশাল মটকায় কুলফি। প্লাস্টিকের রাবার ব্যান্ড খুলে একটা কাঠির মাথায় যখন কুলফি পেতাম মনে হত হাতের মুঠোয় অপার আনন্দ নিয়ে চলছি।
ডলসিভিটা আসলেই এই ইগলু পোলার যুগের অনেক পরের গল্প। ধানমন্ডি ৮ এ " লি " বিউটি পার্লারের নীচতলাতে ডলসিভিটা তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে ট্রিট পেয়েছিলাম।
আপনার শেষের কথাগুলো ভীষণ ভাবে মনে দাগ কেটে গেলো। আজকে একটু বাইরে গিয়েছিলাম রাস্তায় অল্প অল্প দূরত্বে ইটের ভাটা দেখে মনটা খচখচ করেই যাচ্ছে। রাজউকের প্লট যেমন অনেকের ক্ষেত খামার বাড়ি কেড়ে নিয়েছে তেমন ভাবে গ্রামঞ্চলে সমস্ত ফসলের মাঠ উজাড় করে ডিঙকে দিন বেড়েই চলছে এই ইটের ভাটা। আগে যেখানে শীতের সবজি আর ধানের আবাদ হত সেখানে ইটের ভাটা।
পোষ্টে ভালোলাগা।
০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১০
করুণাধারা বলেছেন: অনেকদিন পর মনিরাকে দেখে খুব ভালো লাগছে। উত্তর দিতে দেরি করে ফেললাম, খুব দুঃখিত।
এই পোস্ট দেবার পর আইসক্রিম নিয়ে যে নানা রঙের গল্প পেলাম তার স্বাদ কিন্তু আইসক্রিমের চাইতে কম নয়! আইসক্রিমের নাম সম্রাট! অভিনব বটে!
ইটের ভাটা দেখলে আমারও খুব মনখারাপ হয়। যেখানে প্রাণবন্ত সবুজ ফসলের মাঠ থাকার কথা, সেখানে বিবর্ণ প্রাণহীন ইটের ভাটা! আকাশ জুড়ে কালো ধোঁয়া উদগীরণ করে যায়। বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়েছে, তবু শতাব্দী প্রাচীন এই মাটির ইটের বিকল্প কিছু বের করা গেল না!!
২৭| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৪৮
মিরোরডডল বলেছেন:
ধারাপুর সাম্প্রতিক মন্তব্য দেখে এখানে এসে আমি পড়ছি,
লেখক বলেছেন: দুরারোগ্য, উত্তর দিতে খুব দেরি করে ফেললাম...
রাত প্রায় দুইটা বাজে, ঘুম ঘুম চোখে পড়ছি। ভাবলাম এ কি পড়লাম!!! ঠিক দেখছি???
আমি ঠিক করে পড়লাম,
লেখক বলেছেন: দুঃখিত আরোগ্য, উত্তর দিতে খুব দেরি করে ফেললাম...
০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৯
করুণাধারা বলেছেন: ঘুমের সময় না ঘুমিয়ে সামুতে পড়ে থাকলে এমন ভুল তো দেখবেই!
এত রাত পর্যন্ত জেগে থেকে পরদিন কীভাবে কাজ কর্ম করতে পারো আমি একেবারেই বুঝিনা! যাই হোক, রাত জেগেও যেন দিনের বেলা ঘুমে না ভুলে কাজ করতে পারো, শুভকামনা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১২
ডার্ক ম্যান বলেছেন: সময়ের স্রোতে সব হারিয়ে যায়। একদিন আমরা নিজেরাও হারিয়ে যাব।