নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

করুণাধারা

করুণাধারা

জীবন যখন শুকাইয়া যায় করুণাধায় এসো

করুণাধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাকরি নাই

১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৭

আমার পরিচিত এক হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ের কথা। গত তিন বছর যাবত মেয়েটি একটি চাকরি পাবার চেষ্টা করছে আর ব্যর্থ হচ্ছে। ঢাকার বাইরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করেছে, ফলাফলের দিক দিয়ে তার ক্লাসের সেরাদের একজন হিসেবে। এ পর্যন্ত আসতে তাকে দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে। শৈশবে পিতৃহীন হবার পর তার বড় ভাইবোনেরা সবাই নানা ধরনের কাজে লেগে পড়ার ফলে একজনও স্কুলে যেতে পারেনি। ভাই-বোনদের সবার ছোট মেয়েটি নিজের চেষ্টায় স্কুলে পড়তে পেরেছে এবং একসময় কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াও শেষ করেছে। এতদূর আসতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, কিন্তু স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি করতে পারবে, সেই স্বপ্ন তাকে উদ্দীপনা যুগিয়েছে লড়াই করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে।

তার সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। আমিও স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমার ধারনা ছিল, যেহেতু ও একটা ভালো বিষয়ে পড়েছে আর যেহেতু ও ক্লাসের টপার তাই চাকরি পেতে অসুবিধা হবে না। কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রভাষক হিসেবে না হোক, অন্ততপক্ষে কোন ল্যাবের পরিদর্শক হিসেবে চাকরি নিশ্চয়ই পাবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল তা হয়নি। বিসিএস দিয়েছে কিন্তু দুয়েক ধাপ যাবার পর আর পাশ করতে পারেনি। অন্য অনেক জায়গায় ও ৩-৪ ধাপের পরীক্ষা দিয়ে ভালো করেছে, ভাইভা শেষে ভাইভা গ্রহনকারীরা তাকে অভিনন্দন জানাবার পরও দেখা গেছে তার চাকরি হয়নি, সেটা অন্য কেউ পেয়ে গেছে। প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে বেসরকারি স্কুল, ব্যাংক আরও নানা জায়গায় চাকরির চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোথাও চাকরি হয়নি। ‌ হতাশ হয়ে বলেছিল, শক্ত খুঁটির জোর অথবা টাকা ছাড়া এখন কোন চাকরি হয় না, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও। খুঁটির জোর বা চাকরি কেনার মতো টাকার জোর তার নেই।

এখন সে যে চাকরির জন্য আবেদন করছে সেটা একটা বেসরকারি স্কুলে, "স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা" বিষয়ে (এই পদে উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণিবিদ্যার স্নাতকোত্তরদের আবেদন করতে বলা হয়েছে) ১১তম গ্রেডের চাকরি।


এর মোট বেতন হয় আঠার হাজার টাকা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ২৫ হাজার করার দাবি শোনার পর আমার ধারণা ছিল একজন স্কুল শিক্ষকের বেতন অন্তত ত্রিশ হাজার টাকা হয়। তাই মাত্র আঠার হাজার টাকা দেখে আমি অবাক হলাম, মেয়েটিকে বললাম এত কম বেতনে চাকরি করবে কেন!! মেয়েটা তখন বলল চাকরির এই কঠিন বাজারে তার অনেক সহপাঠী ১৬ এবং ১৭ গ্রেডের চাকরি করে, যার মোট বেতন ১২ হাজার টাকা!! তাই আঠার হাজার টাকা বেতনের চাকরি পেলে সে বর্তে যায়।

কিন্তু আমি একটা হিসাব কিছুতেই মেলাতে পারছি না বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২৭৮৪ মার্কিন ডলার, টাকার হিসাবে যা দাঁড়ায় ৩,২৫,৭২৮ টাকা।‌ (বর্তমান সরকারী বিনিময় হার ১ ডলার= ১১৭ টাকা হিসেবে।)

১৮০০০ টাকা মাসিক হিসেবে বাৎসরিক বেতন হয় ২,১৬,০০০ টাকা। গড় মাথা পিছু আয়ের চেয়ে ১,০৯,৭২৮ টাকা কম!!!!

অবশ্য এর চেয়ে কম বেতনেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা চাকরি করেন। কয়েকদিন আগে এক খবরে দেখলাম, সম্প্রতি রেলওয়েতে যে ২১৭২ পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ পেয়েছেন (পদের নাম ওয়েম্যান) তারা সবাই স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। এদের বেতন গ্রেড ১৯তম, শুরুর বেতন ৮৫০০ টাকা। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী একজনের মাসিক বেতন ৮৫০০ টাকা ডলারে দাঁড়ায় ৭২.৬৫ ডলার, একবছরে ৮৭১.৮ ডলার!!

আমার পরিচিত একটা ছেলে বিবিএ পাশকরে সুপরিচিত এক কোম্পানিতে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজার পদে চাকরি করছে সর্বসাকুল্যে মাসিক ১৮০০০ টাকা বেতনে।

আরেকজন মধ্যবয়সী মানুষকে চাকরি খুঁজতে দেখেছি, যার এমবিএ ডিগ্রি এবং বায়িং হাউসে পনের বছর চাকরির অভিজ্ঞতা আছে। বায়িং হাউসের মালিক শীর্ষ পদে ভারতীয় কর্মী আনলেন, যিনি অফিসে যোগ দিয়েই ১৫/২০ বছর ধরে চাকরি করা অনেককে ছাঁটাই করে দিলেন। আমার দেখা এই চাকরি খোঁজা মানুষটিও এই সময় চাকরি হারালেন এবং তারপর থেকে আর চাকরি পাচ্ছেন না, দুঃশ্চিন্তায় হার্টের রোগ বাঁধিয়ে ফেলেছেন।

ক'দিন আগেই খবর দেখলাম, (এমন খবর প্রায়ই দেখি) মাওয়াতে ধরা তের কেজির একটা পাঙ্গাস মাছ ১৮০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাইশ হাজার টাকাতেও মাছ বিক্রির খবর আছে। একটা মাছের দাম বাইশ হাজার টাকা

সৈয়দ মুজতবা আলীর গল্পে সাহেবের কুকুরের একটি পা পন্ডিত মশাইয়ের পরিবারের পাঁচজনের সমান ছিল। আমি চাইনা, তবু আমার মাথায় এরকম নানা হিসাব নিকাশ ঘুরতেই থাকে, একটি মাছ সমান স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষকের পরিবারের কজন... বিশেষ করে এইবার কোরবানির সময় গরু ছাগলের দাম দেখার পর হিসাব মাথা থেকে বের করতে পারিনা।

আমার পরিচিত মেয়েটিকে নিয়ে আরেকটা ভাবনা আছে, যদি অন্য প্রার্থীদের পেছনে ফেলে সে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষকতার এই চাকরি পায়, তবে সে কি নেচে গেয়ে ছাত্রদের আনন্দের মাধ্যমে পড়াতে পারবে!! (এখনকার নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের নেচে গেয়ে আনন্দের সাথে ছাত্রদের শিক্ষা দিতে হয়।) ১৮০০০ টাকা (এটা ঢাকার একটা নামী বেসরকারি স্কুলের বেতন, অনেক স্কুলে বেতন এরচেয়ে কম) বেতন প্রাপ্ত শিক্ষকের মনে কতটুকু স্বস্তি আর আনন্দ থাকে যে অন্যকে আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষা দান করতে পারে!!

অবশ্য অনেকে ভালো চাকরি পায়। আমার প্রতিবেশীর মেয়ে, যে লেখাপড়ায় একদমই ভালো ছিল না, এইচএসসির পর সে ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়েছে। এখন সে ৫৫ হাজার টাকার বেতনে চাকরি করে কোন একটি ফ্যাশন হাউসে। উপরে উল্লেখিত আমার পরিচিত মেয়েটি এবং প্রতিবেশীর মেয়েটি একই বছরে এইচএসসি পাশ করেছে। আমার পরিচিত এক ছেলে দু'বছর আগে এক সরকারি সংস্থায় চাকরিতে যোগ দিয়েছে।‌ সে এখন মাসে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে, আয় কত করে জানা নেই।

কেউ হয়তো বলবেন চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসা করে না কেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের কি ব্যবসা করার মতো পুঁজি থাকে নাকি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অনুমতি নেবার সামর্থ্য থাকে? চাকরি বা ব্যবসা ছাড়াও অন্য কিছু করা যায়, যেমন উম্মে কুলসুম পপি করছে। কিন্তু এমন সাফল্য সবার কাছে আসে না।

স্বল্প শিক্ষিতদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো আয় করেন ড্রাইভাররা। এখন নতুন ড্রাইভারদের বেতনও অন্ততপক্ষে ২২ হাজার টাকা। এই ড্রাইভারদের বেশিরভাগই কোনরকম লেখাপড়া জানেনা।

এই সব দেখে আমার মনে হয়, তারুণ্যের ছয়/ সাত বছরে সময় এবং শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে তেমন লাভ হয় না। বরং ড্রাইভিং শিখে ড্রাইভারের চাকরি করা ভালো, এটাতে বেতনও বেশি আবার শত কোটি টাকার মালিক হবার সম্ভাবনাও থাকে। কিন্তু মেয়েরা কী করবে... তাদের জন্য ড্রাইভারের চাকরি উপযুক্ত না নিরাপত্তা ইস্যুতে।‌ ভালো হয়, মেয়েরা লেবানন, সৌদি আরব, আর মধ্যপ্রাচ্যের অন্য সব দেশে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে চলে গেলে। এর ফলে আমাদের রিজার্ভের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে সহজে...

আসলে গৃহকর্মী হিসেবে কাজের কথাটা বলছি ক্ষুব্ধ হয়ে, কিন্তু বাস্তবে এমনটা হচ্ছে। এখন চাকরি না পেয়ে মাস্টার্স পাশ অনেক মেয়ে কেয়ার গিভিং ট্রেনিং নিচ্ছে এবং তারপর সহজেই কেয়ার গিভার হিসেবে চাকরি করছে এখানে। দেশে এখন বিত্তশালী একাকী থাকা মানুষ বেড়েছে যাদের কেয়ার গিভারের সহায়তার প্রয়োজন হয়। কেয়ার গিভার শব্দটা নতুন, ইংরেজি শব্দ বলে শুনতে ভালো লাগে কিন্তু আদতে এই কাজ গৃহকর্মীর কাজের চাইতে তেমন স্বস্তিদায়ক কিছু না...

কী ভীষণ দুরবস্থায় আছে চাকরি প্রার্থী আমাদের শিক্ষিত তরুণরা..

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৪

আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: খুব মনযোগ দিয়ে পড়লা আপনার লেখাটি।
এটাই দেশের বাস্তব চিত্র।

বিস্তারিত পরে লেখবো. . .

১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

করুণাধারা বলেছেন: অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগছে আফলাতুন হায়দার চৌধুরী। আপনার সিগনেচার পোস্টগুলো মিস করি। আশা করি শিগগিরি নতুন পোস্ট নিয়ে আসবেন।

আমাদের দেশে চাকরি ক্ষেত্রে খুবই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে। তার অল্প কিছু লিখলাম। ‌

আমাদের দেশের পুলিশের চাকরি করে এখন শত কোটি টাকা অসংখ্য বাড়ি জমি অর্জন করা যায়। এ সম্পর্কে ব্রিটিশ পুলিশ কি ভাবছেন? B-)

২| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৯

শায়মা বলেছেন: এই সব খবর জেনে ইদানিং অবাকের পর অনেক হচ্ছি। যদিও এসব বহুদিন ধরেই চলছে। :(

১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫

করুণাধারা বলেছেন: শায়মা, আমার খুব খারাপ লাগে কোন তরুণের হতাশ চেহারা দেখতে। অথচ দেখতেই হয়। তখন কবিগুরুর কবিতার লাইন মনে পড়ে:
আমি যে দেখেছি তরুণ বালক উন্মাদ হয়ে ছুটে
কি যন্ত্রনায় মরেছে পাথরে নিষ্ফল মাথা কুটে।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: মেধাবীদের মুল্যায়ন হলে তো দেশে সহমতভাই সেটআপ মুশকিল। সব চাকরির নাকি রেট আছে আজকাল। যেদিন বনিবনা না হয় কিছু খবর আমাদের মত এম জনতা জানতে পারি। আমি তো আজকাল গ্রামে গেলে পরামর্শ দেই সাধারণ শিক্ষা বাদ দিয়ে কারিগরি কিছু ডিপ্লোমা অর্জনের তাতে করে কিছু একটা করে খেতে পারে।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮

করুণাধারা বলেছেন: আমিও সবাইকে কারিগরি শিক্ষা নেবার পরামর্শ দেই। মেয়েদেরকে বলি ফিজিওথেরাপি, নার্সিং এগুলো পড়তে। কিন্তু একটা অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, সবাই মনে করে আমি তাদেরকে উচ্চ শিক্ষা থেকে ফেরাতে চাইছি, বেশিরভাগই যেভাবেই হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। এই উচ্চ শিক্ষা যে কোন কাজে আসে না সেটা তারা ডিগ্রী অর্জনের পর বোঝে। খুবই দুঃখজনক পরিস্থিতি।

৪| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমার পরিচিত মেয়েটিকে নিয়ে আরেকটা ভাবনা আছে, যদি অন্য প্রার্থীদের পেছনে ফেলে সে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষকতার এই চাকরি পায়, তবে সে কি নেচে গেয়ে ছাত্রদের আনন্দের মাধ্যমে পড়াতে পারবে!! (এখনকার নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের নেচে গেয়ে আনন্দের সাথে ছাত্রদের শিক্ষা দিতে হয়।) পারবে, যদি সে শায়মার কাছ থেকে কয়েকদিনের একটা ট্রেইনিং নেয়। এই ব্যাপারে আপনি তাকে অনুরোধ করে দেখতে পারেন!!! :P

তবে আমার ভাবনা অন্য জায়গায়। দেশের সব সমস্যা চিরতরে সমাধান করার কিছু উপায় আমার মাথায় ঘুরছে। সময় করতে পারছি না, তবে খুব শীঘ্রই আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাতে পারবো আশা করছি। অল্প কিছুদিন অপেক্ষা করেন।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:১১

করুণাধারা বলেছেন: না, শায়মাকে অনুরোধ করব না কারণ শায়মা এর সমস্যা বুঝতে পারবেনা।

জানিনা একটা সংখ্যা দেখেই কেন আমার একই সংখ্যাকে অন্য জায়গায় মনে পড়ে যায়। যেমন এই চাকরির বেতন ১৮০০০ শুনেই আমার মনে পড়ল কয়েকদিন আগে দেখেছি মাওয়া ঘাটে ধরা এক পাঙ্গাস মাছ আঠার হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই মেয়েটি একদিন আমাকে দুঃখ করে বলছিল, হলে থাকলে একবার অন্তত মিল নিতে হয়, তাতে খরচ বেশি পরে। নিজে রেঁধে খেলে খরচ কম পড়তো। জিজ্ঞেস করেছিলাম কত খরচ হয়। বলল দুপুর বেলা একটা মিল নেয়, যেখানে প্লেট ভরে ভাত নেওয়া যায় আর অল্প ডাল আর তরকারি। এটা রুমে নিয়ে আসে আর দুপুরের রাতে খায়। সকালে কিছু খায় না। এই খাবারের দাম ৩৫ টাকা, অর্থাৎ মাসিক খাওয়া খরচ ১০৫০ টাকা। এই সংখ্যাটা শুনেই আমার মনে পড়ছিল, ঢাকায় ওর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যে স্টেক খায় তার দাম ৪ হাজার টাকা। ব্রিটেনে বসে এগুলো বুঝবেন না, কিন্তু এই সংখ্যাগুলো আমার মাথায় ঘুরঘুর করে ঘুরতে থাকে।

আপনার উপায় গুলো তাড়াতাড়ি বলেন, অপেক্ষায় থাকলাম।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:০৮

দি এমপেরর বলেছেন: দুঃখ লাগল। এতো শ্রম আর এতো কষ্টের পর সামান্য এই ক'টা টাকার চাকরিরও নিশ্চয়তা নেই!

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৪৫

করুণাধারা বলেছেন: সত্যিই দুঃখজনক। এই যে মাস্টার্স ডিগ্রীধারীরা এমন চাকরি করেন যাতে তাদের শিক্ষা জীবনে অর্জিত জ্ঞান কোন কাজে লাগে না, আবার যে চাকরি করে তারা পরিবারসহ স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন যাপন করতে পারেন না, তেমন চাকরি করে তারা কেমন বোধ করেন জানতে ইচ্ছে হয়।

৬| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:১০

ঢাবিয়ান বলেছেন: আমাদের দেশে প্রশ্ন ফাশ, দুর্নীতির মাধ্যমে চাকুরি পাওয়া একটা সমস্যা। অন্য আরেকটা সমস্যা হচ্ছে গাদা গাদা গ্র্যজুয়েট উৎপাদন। সিঙ্গাপুরে মাত্র চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। চারটি ইউনিই বিশ্বসেরা। প্রাইভেট ইউনি আছে অল্প কয়েকটা। তবে প্রাইভেট ডিগ্রীর তেমন মূল্য নেই চাকুরির বাজারে। সারা দেশজুরে রয়েছে কারিগরী শিক্ষার ইন্সটিউট পলিটেকনিক যেখানে দেশের সংখ্যাাগরিষ্ঠ স্টূডেন্টরা পড়াশোনা করে। একটা দেশের আসলে এক গাদা গ্রাজুয়েটের দরকার নাই। গ্রাজুয়েটদের চাকুরি সীমিত।

আর আমাদের দেশে পাবলিক ইউনি , প্রাইভেট ইউনি , কলেজ থেকে প্রতি বছর হাজারে হাজারে গ্র্যজুয়েট তৈরী হচ্ছে। এই যে আপনি বললেন যে কোন চাকুরি না পেয়ে কেয়ার গিভারের চাকুরি করছে। ভেবে দেখুন যে , মাস্টার্স ডিগ্রী নিয়ে তার এই কাজ করতে ভাল লাগছে না মোটেই , কিন্ত সে যদি ইউনিতে চান্স না পেয়ে পলিটেকনিকে এই লাইনে পড়াসোনা করত তাহলে এই কাজটাই সে ডেডিকেশনের সাথে করত। শুনেছি আজকাল পিয়নের চাকুরিতেও মাস্টার্স ডিগ্রীধারী ঢুকছে কিন্ত চাকুরি পাবার পর তারা পিয়নের কাজ করতে দ্বিধাবোধ করছে ! আসলে ডিগ্রীর সার্টিফিকেটগুলো এদের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে বিধায় এই দ্বিধা। না থাকলে এই দ্বিধা থাকতো না।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০২

করুণাধারা বলেছেন:
খবরের লিংক দেবার চেষ্টা করেও দিতে পারলাম না কোন ভাবে। তাই এই ছবিটি দিলাম।
শুনেছি আজকাল পিয়নের চাকুরিতেও মাস্টার্স ডিগ্রীধারী ঢুকছে কিন্ত চাকুরি পাবার পর তারা পিয়নের কাজ করতে দ্বিধাবোধ করছে !
আপনার বাক্যের প্রথম অংশের সাথে একমত কিন্তু শেষের অংশের সাথে পুরোপুরি একমত না। কারণ সরকারি চাকরিতে পিয়নের পদে কাজ করেও অনেকে অনেক আয় করেন। তাই তারা খুশি মনে পিয়নের চাকরি করেন। আমি রাজউক অফিসে একজন ভূমি জরিপকারীকে দেখেছি যিনি প্রকৌশলে ব্যাচেলার ডিগ্রিধারী। আসলে এখন টাকা-পয়সাই জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে গেছে, তাই উচ্চশিক্ষিত মানুষেরাও এমন চাকরি করেন।

আমি মনেপ্রাণে চাই, দরিদ্র পরিবারের শিক্ষিত ছেলেটি বা মেয়েটি যেন চাকরি পায়, যেন পরিবারে স্বাচ্ছন্দ ফিরে আসে।

৭| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: শায়মা এর সমস্যা বুঝতে পারবে না মানলাম, সে অল্প পানির মৎস্যকন্যা; কিন্তু বৃটেনে বসে আমি এগুলো বুঝবো না........এইটা মানতে পারলাম না। আমার গেয়ান সম্পর্কে আপনার কোন ধারনাই নাই আপা। আমি তো বৃটেনে বসে বায়নোকুলার দিয়ে দেশের সমস্যা দেখি না। খুব রিয়েলিস্টিক উপায়ে দেখি আর বিচার-বিশ্লেষণ করি। :)

আপনার উপায় গুলো তাড়াতাড়ি বলেন, অপেক্ষায় থাকলাম। তাড়াতাড়িই বলতে চাই, কিন্তু সময় স্বল্পতা আমাকে বহুকিছু করতে দেয় না। :(

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৬

করুণাধারা বলেছেন: আমি জানি, আপনি খুব রিয়েলিস্টিক উপায়ে দেশের সমস্যাগুলো দেখেন আর বিচার বিশ্লেষণ করেন। B-) আমিও আপনার মতই দেখি, ইউটিউবে। তারপর বিচার বিশ্লেষণ করি।

জানি আপনার সময় স্বল্পতা আছে, তবে ভরসা আছে যে সময় স্বল্পতা সত্ত্বেও উপায়গুলো লেখার সময় বের করতে পারবেন। শুভকামনা রইল। :)

৮| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৩০

কামাল১৮ বলেছেন: চাকরির খোঁজ না করে কাজের খোঁজ করা দরকার।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৪১

করুণাধারা বলেছেন: কাজ তো অনেক আছে, কিন্তু সেগুলো করে অর্থ আয় করা সম্ভব হয় না।

আমি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একজনের কথা বলেছি, তার জীবনধরণের জন্য অর্থের প্রয়োজন। কেবলমাত্র চাকরি করেই তার পক্ষে এই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

৯| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:২৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,




একটি দেশ যখন লুটের সামগ্রী বলে বিবেচিত হয় তখন সেই লুটের সামগ্রীর না থাকে ছাদ, না থাকে শ্রী। হিসাব কিতাব ছাড়াই সে সামগ্রীকে যথেচ্ছ ব্যবহার করা যায়। সে লুটের সামগ্রী দিয়ে লুটেরাদের অন্দর মহল, বহির মহল সাজে বটে কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশীদের তাতে এক ছটাকও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি হয়না।
আমাদেরও হয়েছে তেমনি! দেশটা লুট হয়ে গিয়েছে তাই এর সকল কলকব্জাও অচল হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে সকল কারণ-কার্যকরণ, কেচ্ছা -কাহিনী, আদ্যপান্ত সবাই জানেন । তাই ওদিকে না গিয়ে এক লাইনেই বোঝাই----সোনার ডিম পারা হাসটিকে মরে ফেলা হয়েছে।। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরুনোর সকল পথই আজ রুদ্ধ।
তাই যা হওয়ার তাই-ই হচ্ছে। কামানোর ধান্ধায় গ্যারেজের উপরে, বাথরুমের পাশে, ডাষ্টবীনের গোড়ায় অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। তাতে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে কিন্তু কাজের সুযোগ সৃষ্টির পথ - এক লেন থেকে চার লেন কেন, দুই লেনেও উত্তীর্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছেনা।
তাই দিন দিন আপনার তুলে ধরা চিত্রের করুনতা আর সংখ্যাই শুধু বাড়বে, উল্টোটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই .....................

১২ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৫১

করুণাধারা বলেছেন: দেশটা লুট হয়ে গেছে, কিন্তু লুট করেছে অল্প কিছু মানুষ যারা অসৎ স্বার্থপর এবং লোভী। কিন্তু দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এমন নয়, এরা আমাদের দেশটাকে বদলে দিতে পারতো যদি ঠিকমতো নির্দেশনা পেত...

শুধু সুন্দর সুন্দর রাস্তা ঘাট থাকলেই তো দেশ বদলে যায় না। যদি দেশের মানুষগুলোর জীবন বদলে যেত, তবে সবকিছু সুন্দর হয়ে উঠতো। একটা কথা মনে পড়লো, আবর্জনাকেও কিন্তু কাজে লাগানো যায়, এর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। আমাদের শহরের বিপুল আবর্জনা কেবল পরিবেশ দূষণ করছে, এটা যে আমাদের উপকার করতে পারে এটা জানা সত্ত্বেও কেউ তা কাজে লাগাতে চাইছেন না। এমন আরও অনেক কিছু করার আছে। কিছু করা হয় না।

করা হয় কেবল বানিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আরো অনেক কিছু নিয়ে। ফলাফল গ্যারেজের উপরে, বাথরুমের পাশে, ডাষ্টবীনের গোড়ায় অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। তাতে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে কিন্তু কাজের সুযোগ সৃষ্টির পথ - এক লেন থেকে চার লেন কেন, দুই লেনেও উত্তীর্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছেনা।

সহমত। জানিনা এ থেকে কবে উত্তরণ হবে!!

(আপনার মন্তব্যের উত্তর আগে একটা লিখেছিলাম বেশ ভালো ভাবে। এখন দেখি সবাইকে দেয়া উত্তর আছে শুধু আপনাকে করা উত্তরটা গায়েব হয়ে গেছে। :( আবার লিখলাম যদিও প্রথমবারের মতো হলো না।)

১০| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৩৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমার সোনার বাংলা। বলার কিছু নাই।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: সত্যিই বলার কিছু নেই। কারণ হাজার বার বললেও অবস্থার এক শতাংশ পরিবর্তন হবে না। :(

১১| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:২১

শেরজা তপন বলেছেন: @ ভুয়া মফিজের সব সমস্যার সমাধান গুলো ভয়ংকর কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে!! স্তালিন কিংবা কিম জং উন স্টাইলের হতে পারে।

আপনি নিঃসন্দেহে দেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন।

আমাদের ছেলেরা একটু মাথা খাটালে একটু চেষ্টা করলে চাকরির বাইরে অন্য কোন উপায়ে আয় রোজগার করতে পারে। মেয়েদের জন্য গার্মেন্টসের বাইরে একটু সমস্যাই।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:১২

করুণাধারা বলেছেন: ভুয়া মফিজের সব সমস্যার সমাধান গুলো ভয়ংকর কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে!! স্তালিন কিংবা কিম জং উন স্টাইলের হতে পারে।

হলেও অসুবিধা নাই। ভুয়া মফিজ কেবল আইডিয়াই দিতে পারলেও এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে মনে হয় না.... :|

আমাদের ছেলেরা একটু মাথা খাটালে একটু চেষ্টা করলে চাকরির বাইরে অন্য কোন উপায়ে আয় রোজগার করতে পারে।

আমি অনেক ভেবেও কোন উপায় বের করতে পারিনি যাতে এই মানুষগুলোর জীবন যাপন সহজ হয়। কারণ আমি যাদের দেখেছি এদের গ্রামের বাড়ি, অর্থ কিংবা কোনরকম খুঁটির জোর নেই। আপনাকে অনুরোধ করব এই ব্যাপারে একটি পোস্ট দিতে, এতে অনেকেই উপকৃত হবে। যতদূর জানি, এমন অনেক ব্লগার আছেন যারা জীবন জীবিকা নিয়ে সংগ্রাম করছেন।

১২| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:২৪

জটিল ভাই বলেছেন:
আল্লাহ্ মানুষ বানাইয়া পেট যদি না দিতো তবে হয়তো এতো সমস্যা হতো না! :(

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:১৭

করুণাধারা বলেছেন: আল্লাহ্ মানুষ বানাইয়া পেট যদি না দিতো তবে হয়তো এতো সমস্যা হতো না

এইটা একটা ভালো সমাধান বলেছেন। তবে আল্লাহ পেট যখন দিয়েই দিয়েছেন, তখন সেটা ফেলে না দিয়ে কেটে ছোট করে ফেলা যায়। হয়তো শিগগিরই দেখা যাবে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো স্টমাক কেটে ছোট করার প্যাকেজ নিয়ে আসবে। বেকারদের জন্য হয়তো বিশেষ ছাড় দিবে। নতুন আরেকটা ধান্দা বের হবে পয়সা কামাবার।

১৩| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:৩৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: লেখাটা পড়ে মনটি ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ল! দেশের রন্দ্রে রন্দ্রে এত দুর্নীতি, প্রতিটি সেক্টর করাপ্টেড, একটি ন্যায়পরায়ণ প্রশাসন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, এবং একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা কি এতটাই কঠিন! মানুষের মৌলিক অধিকারের জন্যও এখানে যুদ্ধ করতে হয়!

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:২১

করুণাধারা বলেছেন: মানুষের মৌলিক অধিকারের জন্যও এখানে যুদ্ধ করতে হয়!

যে বয়সে ছেলে মেয়েদের স্বপ্ন দেখার কথা, মনে উদ্দীপনা থাকার কথা, সেই সময় তারা হতাশ এবং ক্লান্ত। জীবনযুদ্ধে পরাজিত প্রায়। এটা দেখতে আমার খুব হতাশ লাগে। আমাদের দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ বেকার, শিক্ষা যদি কর্মমুখী হত তাহলে এরা আজ দেশের সম্পদ হতে পারতো। জানিনা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটবে কিনা।

১৪| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ২:৪০

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই লেখাটিতে দেশের খুব করুণ একটা বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।

দেশে সরকারি চাকরি পাওয়া যে কত কঠিন একটি বিষয় এটা আপনার এই লেখা পড়ে নতুন করে অনুভব করলাম।

এখন ঠিক এই মেয়েটোর জন্য আরেকটি যে বাস্তবতা আছে সেটি নিয়ে বলি, সেটা হলো দেশে আসলে জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং পাশ করা ছেলে মেয়েদের কোন চাকরির বাজার নেই। জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং পড়ে "স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা" বিষয়ে স্কুলে চাকুরি করার অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পঠিত বিষয়টিকে কোন কাজেই না লাগানো। অতএব সেই মেয়ে টিকে অবশ্য অবশ্যই বিদেশে পড়তে যেতে হবে এবং বায়োটেক লাইনে স্কিলড হয়ে ওঠতে হবে।

ব্লগার কলাবাগান নিশ্চয়ই এ বিষয়ে অনেক ভালো বলতে পারবেন। তবে আমার ধারণা সামনের সময়টি এ, আই বা মেশিন লার্নিং এর জন্য যেমন ঠিক তেমনি জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং য়ের। সেই মেয়েটিকে সফল হতেই হবে। বেসরকারি স্কুলের চাকরি খোঁজা তার জীবনের বাস্তবতায় নিদারুন সত্য একথা মানি, কিন্তু তার সামনের বড় রাস্তাটি সে চিনতে শিখুক এই দোয়া করি।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

করুণাধারা বলেছেন: দেশে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ ছেলে মেয়েদের কোন চাকরি নেই, এই কথাটি মেয়েটি যখন ভর্তি হয়েছিল তখনই জানতো। যাকে আমি তখন বলেছিলাম চার বছর মেয়াদী ফিজিওথেরাপির ডিগ্রি নিতে। কিন্তু মেয়েটি সেটা পড়তে চায়নি। বলেছিল, সে খুব চেষ্টা করবে সেরা রেজাল্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে, তা না হলে বিদেশে চলে যাবে। সে আমাকে বলেছিল সুইডেন জার্মানি এইসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্কলারশিপ দেয়া হয়, অনেকেই গেছে সেও চেষ্টা করবে। আমি ওকে বলেছিলাম আমেরিকার বিদ্যালয়গুলোতেও চেষ্টা করতে, অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আমি তাকে আর্থিক সহায়তা করব সাধ্যমত। সে খুব উৎসাহিত ছিল। জিআরই আর টোফেল দেবার প্রস্তুতি নেবার পর সে কেন থেমে গেল জানিনা। তবে এর মাঝখানে সে বিয়ে করেছে। বিয়ে করার পর অনেক মেয়েই নিজের জীবন সম্পর্কে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। হয়তো তার জীবনেও তাই হয়েছে।

এই মেয়েটি বিস্ময়কর ভাবে ইংরেজিতে খুব ভালো। এটা ওর জন্য অনেক সহায়ক হতো। জীবনের অসংখ্য প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল যে, সে যেন কোন ক্ষুদ্র গণ্ডিতে বাঁধা না পড়ে যায় সেটা ওকে বোঝাতে সাধ্যমত চেষ্টা করছি।

১৫| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ৭:১৩

সামরিন হক বলেছেন: আমার ধারণা আমরা সবাই লোভী। অন্যকে ভালো থাকতে দেখে আমরা সবাই তার মতই ভাল থাকতে চাই। যদিও এটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু সবাই যদি রাজা হবে তবে রাজত্ব চলবে কিভাবে প্রজা ছাড়া! সবাই বড় অফিসার হতে চায় কেউ চাষী, শ্রমিক হতে চায় না কারন মেধার সম্মান আছে কায়িক শ্রমের কোন সম্মান নেই। অথচ পেটে খাবার না থাকলে যে মেধার কোন কাজ নেই সেটা মেনে নেওয়ার মানুষ নেই।
খুবই বাস্তবিক চিত্র তুলে ধরেছেন আপনার লেখায়।
শুভেচ্ছা রইলো।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪

করুণাধারা বলেছেন: সবাই বড় অফিসার হতে চায় কেউ চাষী, শ্রমিক হতে চায় না কারন মেধার সম্মান আছে কায়িক শ্রমের কোন সম্মান নেই

এটাই আসল কথা। আমার পরিচিত নিম্নবিত্ত কারো, যেমন গৃহকর্মী বা বিল্ডিংয়ের ক্লিনারের ছেলে বা মেয়ের এসএসসি পাস করার খবর শুনে যখন আমি বলি পলিটেকনিকে ভর্তি করতে কলেজে ভর্তি না করে, তখন তারা খুবই বিরক্ত হয় আমার পরামর্শে এবং সেটা না শুনে কলেজেই পড়ায়। দুঃখজনক যে ফলাফল দাঁড়ায় সেটাই উপরে বলেছি।

১৬| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১২

জুন বলেছেন: আহমেদ জী এস এর মন্তব্যের সাথে সহমত। দেশ এখন লুন্ঠিত কতিপয় বর্গীদের হাতে। তারা নিজ দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে অন্য দেশে টাকা পাচার করে বেহেশতে আছে বলে ভাবে। নিজের দেশে তারা কল কারখানা গড়ে চাকরির বাজার সৃষ্টি করতে চায় না।চায় আরও কিভাবে লুট করবে সেই ব্যবস্থা। তবে যেখানে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে সেই দেশও যে এক সময় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে না তা কে বলতে পারে? যেমন কানাডা, যা এক সময় ইমিগ্রেন্টদের স্বর্গ রাজ্য ছিল। এখন টয়লেট ক্লিনারের একটা পোস্টের জন্য ২৫০ মানুষ লাইন দেয়। এগুলো পেপার পত্রিকা থেকে দেখা জানা। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়।
আর সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা একটা নুন্যতম কাজের খোজে হন্যে হয়ে ঘোরে আমাদের দেশেও করুনাধারা। আপনার গুরুত্বপূর্ণ পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। + ।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪

করুণাধারা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ জুন। পুরোপুরি সহমত।

বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা পাচার না করে দেশে কিছু কল কারখানা গড়লে অনেকের কর্মসংস্থান হত। চীনের মতো ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের মতো কারখানা করলেও বেকার সমস্যা কমে যেত। চীন আজ অনেক উপরে উঠে গেছে, অথচ দশ বারো বছর আগেও ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় অদ্ভুত চীনা প্রোডাক্ট দেখা যেত, যেগুলো দেদারসে বিক্রি হত বাচ্চা-কাচ্চার খেলনা হিসেবে। একটা ছিল ছোট ছোট পুঁতির প্যাকেট। পুঁতিগুলো পানিতে ভেজালেই বড়সড়ো বলের আকার ধারণ করত। এছাড়া নানা ধরনের চীনা লন্ঠন পাওয়া যেত রাস্তার ফেরিওয়ালার কাছে। সস্তা দেখে মানুষ এগুলো প্রচুর কিনতো, এভাবে চীন কত শত কোটি টাকা নিয়ে গেল...

কিন্তু আমাদের দেশের এই শিক্ষিত বেকারদের সমস্যা নিয়ে ভাববে কে!! তুলনাটা হয়তো ঠিক হলো না, তবুও আমার মনে হয় এক সময় সাদা চামড়ার মানুষেরা যেমন কালো মানুষদের মানুষ বলে ভাবতো না, আমাদের দেশের ক্ষমতাশালী বিত্তশালীরা তেমনি সাধারণ মানুষদের মানুষ বলেই ভাবে না...

১৭| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৫৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সারা গায়ে ব্যাথা। ঔষধ দিব কোথা। --হতাশ হয়েই এই কথাটা বলতে হলো।
এখন কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নাই-সেটা কৃষি হতে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই। অন্তত বেকার থাকতে হবে না। কিছু একটা করে খেতে পারবে। আমি এই বুদ্ধি দিলে অনেকেই বলে যে আপনি আমাদেরকে পিছনের দিকে ঠিলে দিতে চান।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০০

করুণাধারা বলেছেন: এখন কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নাই-সেটা কৃষি হতে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই।

অবশ্যই। কিন্তু এই কথাটা অনেকেই মানতে চায় না। আমারও এমন হয়েছে বুদ্ধি দিলে অনেকেই বলে, আপনি আমাদেরকে পিছনের দিকে ঠেলে দিতে চান। আমার পরিচিত কয়েকজন গৃহকর্মী, দারোয়ান, ক্লিনার যাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে তাদের প্রত্যেককে আমি এই কথাটা বলি কিন্তু এতে তারা খুবই অসন্তুষ্ট হয়।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ লাইলী আরজুমান খানম লায়লা।

১৮| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এটাই আমাদের দেশের বাস্তবতা। উপরে জুন আপু ঠিক বলেছেন যে এই দেশে ব্যবসায়িক শিল্প, প্রতিষ্ঠান, কল কারখানা বাড়ছে না। ফলে নতুন চাকরী হচ্ছে না। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বিষয় আছে যেগুলির সাথে সংশ্লিষ্ট চাকরী আমাদের দেশে কম। যদিও বিষয়গুলি ভালো। চাকরীর বাজারের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যার বড় ব্যবধান আছে। এই ব্যাপারে আমাদের নীতি নির্ধারকদের কোন মাথা ব্যথা নেই বা জ্ঞান নেই। বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি সুলভ হওয়া আরেকটা সমস্যা। লাখে লাখে বিবিএ, এম বি এ, ইঞ্জিনিয়ার আছে। অনেকের উচিত ছিল কারিগরি শিক্ষার দিকে যাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে হোয়াইট কলার জব ছাড়া অন্য কোন চাকরীর কথা কেউ চিন্তা করতে পারে না।

আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা এখন রাজনীতিবিদ হয়ে যাচ্ছে। তারা দেখছেন যে ব্যবসা করার অনেক ঝুকি। তার চেয়ে অনেক কম ঝুকিতে টাকা আয় করা যায় রাজনৈতিক লেবাস থাকলে। ভুমি ব্যবসা, ব্যাংক ঋণ ফেরত না দেয়া, রাষ্ট্রীয় ক্রয়, বিক্রয় টেন্ডার পাওয়া, শেয়ার বাজার লুট করা, ব্যবসায়ীক সিন্ডিকেট তৈরি করে অতি মুনাফা করা, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবসায়ীক প্লট পাওয়া, ব্যাংকের পরিচালক হয়ে ব্যাংক ডুবিয়ে দেয়া এই সব কাজ করে ব্যবসায়ীরা বেশী টাকা কামাচ্ছে। মিল, কারখানার ঝামেলাতে অনেক পুরানো ব্যবসায়ীই আর যাচ্ছে না। আমাদের দেশে গার্মেন্টস আর ফার্মা ছাড়া তেমন কোন বলার মত ব্যবসা সেক্টর নাই। গার্মেন্টসর অবস্থাও আগের মত নাই।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫

করুণাধারা বলেছেন: আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বিষয় আছে যেগুলির সাথে সংশ্লিষ্ট চাকরী আমাদের দেশে কম। যদিও বিষয়গুলি ভালো।
ঠিক। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এমন একটি বিষয়। এটা একটা গবেষণা নির্ভর বিষয় যে গবেষণা আমাদের দেশে করতে অনেক সমস্যা হয়। সুতরাং এই বিষয়টা বাদ দিয়ে যদি ফ্যাশন ডিজাইনিং এর মতো বিষয়ে পড়াশোনা হতো, তাহলে সেটা কাজে আসতো। যেমন আমার পোস্টে উল্লেখ করেছি, এই মেয়েটি তিন বছর ধরে চাকরি পায় না অথচ ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ে আরেকটি মেয়ে ভালো বেতনে কাজ করে, ফ্রিল্যান্সিংও করতে পারে।

আমাদের দেশে গার্মেন্টস আর ফার্মা ছাড়া তেমন কোন বলার মত ব্যবসা সেক্টর নাই। গার্মেন্টসর অবস্থাও আগের মত নাই।

দেশে অন্য কোন ব্যবসায় কেউ ইনভেস্ট করতে চায় না, করলে বেকার সমস্যা অনেকটাই কমে আসতো। অবশ্য ইনভেস্ট করতে চায় না এটাও ঠিক না, আমি অনেককে দেখেছি ইনভেস্ট করতে চেয়েছে কিন্তু লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে কিছু করতে পারে নাই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ করতে পারে এমন কাউকে আপাতত দেখছি না। :(

১৯| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮

মিরোরডডল বলেছেন:





৫৩ বছর পরও যদি একটা দেশের এই অবস্থা হয়, কি আর বলবো!!
সত্যি কষ্ট লাগে খুব।
টেকনিক্যাল স্কিল ডেভেলপ করতে হবে, যেনো চাকরির জন্য ওয়েট না করে ফ্রিলেন্সার হিসেবে কাজ করতে পারে।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:২২

করুণাধারা বলেছেন: ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতেও অনেক বাধা আছে কিন্তু। মোটকথা তরুণদের সহায়ক কোন প্রকল্প নেই। এটা ঠিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা হাজারে হাজারে তরুণ বেকার থেকে যাওয়া খুবই হতাশা যেন। চাকরি না হোক, এদেরকে অন্য কোন ভাবে কাজে লাগানো দরকার।

ভালো কথা মনে পড়লো তোমাকে দেখে। ঠিক করেছিলাম অপু তানভীর কে বলবো তার ইন্টারভিউ পোস্ট আরো আগে দিতে। গতটা দিয়েছে তোমায় রাত সাড়ে তিনটায়, ফলাফল তুমি আড্ডাটা মিস করলে... 8-|

২০| ১৪ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:০৪

সোহানী বলেছেন: ভয়ংকর একটা সত্য তুলে ধরেছেন। এক সময় এ নিয়ে অনেক লিখেছি। খুব খুব খারাপ লাগে এসব শিক্ষিত বেকারদের নিয়ে। কিন্তু সত্যটা হলো কেউই এদের নিয়ে ভাবে না।

বছরের পর বছর যাচ্ছে কোন জব মার্কেট তৈরী করতে পারছে না। ছেলে-মেয়েগুলো হতাশ থেকে হতাশ হচ্ছে। ভয়ংকরভাবে দেশে জীবন কাটাচ্ছে তারা। হয় দেশ ছাড়ার জন্য মরিয়া, নয়তো মাস্তানী খাতে সামিল হচ্ছে।

কিছু একটা করা দরকার তাদের জন্য কিন্তু কেউ কি আছে একটু শুনবে?

১৬ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৯

করুণাধারা বলেছেন: সত্যটা হলো কেউই এদের নিয়ে ভাবে না।

দুঃখজনক হলেও, এটাই বাস্তবতা। আমাদের যুব উন্নয়ন নামের গোটা একটা মন্ত্রণালয় আছে, এর কাজ হচ্ছে তরুণদের জন্য বিভিন্ন বস্তা পচা কোর্স অফার করা। এগুলো দিয়ে কোন কর্মসংস্থান হয় না, ফলে কেউ যাতে আগ্রহী হয় না। তরুণদের বেকার সমস্যার কোন সমাধান হয় না।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এইসময় বেতন বৃদ্ধির কথা হয় কেবল সরকারি চাকুরেদের এবং গার্মেন্টসে কর্মরতদের। শিক্ষকদের বেতন এত কম হতে পারে, এটা আমার ধারণায় ছিল না। মাধ্যমিক স্কুলে এই বেতন হলে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন অনুমান করতে পারি, মাসিক ১০/১১ হাজার টাকা। অর্থাৎ মাসে একশো ডলারের কম। ফিনল্যান্ডের মতো শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়েছে দেশে, ফিনল্যান্ডের কি শিক্ষকের বেতন মাসিক ১০০ ডলারের কম!!

আমি তরুণদের চোখে যখন হতাশা দেখি, আমার খুব হতাশ লাগে। এই তরুণ কখনো মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিক, কখনো উচ্চ শিক্ষিত বেকার, কখনো আমার পরিচিত এই মেয়েটি। জানিনা, কখনো এরা স্বস্তি
এবং সম্মানের সাথে জীবন যাপন করতে পারবে কিনা।

২১| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:৩৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: যে স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে মেয়েটা এতদূর পথ পাড়ি দিল, শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নটা পূরণ হলো না দেখে খুব খারাপ লাগছে।
এসব বৈষম্য দূর করতে হলে সবার আগে একটা ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আমরা সবাই জানতে পারছি, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের সম্পদ কোথায় কিভাবে চলে যাচ্ছে, কিন্তু এ নিয়ে সবাই নির্বিকার। ড্রেইন আউটের ফুটোগুলোকে বন্ধ করতে না পারলে বৈষম্য দিন দিন বাড়তেই থাকবে। সেইসাথে অনৈতিকতা ও দুর্নীতিকে সামাজিকভাবে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করতে হবে। বিচার ব্যবস্থাকে সংস্কার করে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে।
আরেকটা কথা, উচ্চডিগ্রীধারীরা চাকুরি পাচ্ছে না, একথা আমরা সবাই বলছি, কিন্তু কেউ এটা বলছি না যে অনেক ভূঁইফোড় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি ব্যাঙের ছাতার মত যত্রতত্র গজিয়ে ওঠার ফলে তথাকথিত উচ্চডিগ্রীধারীদের শিক্ষার মান আজ কোথায় নেমে গেছে। যিনি চাকুরী দিবেন, তিনি নিজে তেমন শিক্ষিত না হলেও ঠিকই বুঝতে পারেন কাকে দিয়ে কোন কাজ হবে। মামু খালুর জোর তো থাকেই, তবুও প্রশ্ন মুখস্থ করে পাশ কিংবা ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র পেয়ে পাশ করার আশা বাদ দিয়ে ছাত্রদেরকে প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের প্রতি মনযোগী হতে হবে। প্রকৃত শিক্ষা ভারে না কাটলেও (অর্থাৎ একটু কম শিক্ষিত হলেও) ধারে কাটবে।

১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:০৭

করুণাধারা বলেছেন: যে স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে মেয়েটা এতদূর পথ পাড়ি দিল, শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নটা পূরণ হলো না দেখে খুব খারাপ লাগছে।

আমারও খুব খারাপ লাগে, একটা সতেজ চারাগাছ বেড়ে ওঠার বদলে হঠাৎ যেন শুকিয়ে গেলো। এই মেয়েটির সহনশীলতা, সম্ভাবনা এবং আত্মমর্যাদাবোধ তীব্র ছিল‌। যে কারণে বারবার বলা সত্ত্বেও খুব কমই ও আমার থেকে সাহায্য নিয়েছে এবং খুবই কষ্ট করে পড়াশোনা শেষ করেছে। ও একবার আমার ইংরেজি লেখায় ভুল খুঁজে পেয়েছিল! আমি অবাক হয়েছিলাম এই কারণে যে, ও যে পরিবেশ থেকে উঠে এসেছে সেখানে পাঠ্যবইয়ের বাইরে ইংরেজি জানাটা অবাক হবার মতই।

কিন্তু তবুও মেয়েটি এখনও কর্মজীবন শুরু করতে পারলো না। জানিনা কবে থেকে আমাদের সমাজ এমন ভাবে বদলে গেল। এখন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কেউ সহজে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না, সমস্ত রকম সুবিধা কেবল সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা মানুষদের জন্য। অথচ আগে আমি দেখেছি দরিদ্র- মেধাবী অনেক ছাত্র কর্মক্ষেত্রে ভালো করেছে। আপনার কথা ঠিক, এসব বৈষম্য দূর করতে হলে সবার আগে একটা ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এমন সমাজ কবে হবে জানিনা!!

ভুঁইফোড়ের মত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে, শিক্ষা যখন বাণিজ্য হয়ে যায় তখন সেই শিক্ষার কোন উপযোগিতা থাকে না। গতকালও দেখলাম একটা নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমাদের এই ছোট দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৬ টি!!

আমরা সব কিছুতে ভারতকে অনুসরণ করি, অথচ শিক্ষার বেলায় করছি না। ভারতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হয় সবচেয়ে বেশি এর ফলে সারা পৃথিবীতে ভারতীয়রা তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ পাচ্ছে। আমাদের দেশে অনেক মেধাবী আছে, কিন্তু তাদের মেধাকে কাজে না লাগিয়ে তা দেখে মেধাহীন করার কাজ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি খুবই দুঃখজনক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.