![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার জন্ম ফরিদপুরের সালতা গ্রামে। বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। আমার বাবা একজন কৃষক। বাবার সাথে বহুদিন অন্যের জমিতে কাজ করেছি।
আমার বাবা ছিলেন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক। বাবা যখন শিক্ষক ছিলেন তখন আমার জন্ম হয়নি। আমার জন্মের আগেই বাবা চাকরী ছাড়তে বাধ্য হোন। আমাদের গ্রামের চেয়ারম্যান হান্নান তালুকদার বাবাকে স্কুল থেকে ছাটাই করেছেন। চেয়ারম্যান হান্নান তালুকদারের ছেলে বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করেছিলো। চেয়ারম্যান বলেছিলো- তার ছেলেকে পাশ করিয়ে দিতে। বিনিময়ে সে বাবাকে দশ হাজার টাকা দিবে। বাবা বলেছিলো সেটা সম্ভব না। আমি একজন শিক্ষক মানুষ। আমি অসৎ হতে পারবো না। স্কুলের সভাপতি ছিলো চেয়ারম্যান। নিজের ক্ষমতার জোরে বাবাকে স্কুল থেকে অব্যহতি দেয়।
চেয়ারম্যান সাহেব বাবার নামে মিথ্যা চারটা মামলা দিলো। সেই মামলা লড়তে গিয়ে আমাদের জমিজমা সব গেলো। অবশ্য চেয়ারম্যান সাহেব মৃত্যুর আগে আমার বাবার পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিলেন। গ্রামবাসী সেদিন বাবাকে বলেছিলো- ক্ষমা করে দিন চেয়ারম্যানকে। বেচারা মৃত্যুশয্যায়। আমার বাবা চেয়ারম্যানকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু আমাদের জমিজমা আর ফিরে আসে নি। আমার মা মারা যায় ভালো চিকিৎসার অভাবে। মাকে তো আর ফিরে পাওয়া সম্ভব না। আজ আমি অনেক টাকার মালিক। গ্রামে অনেক জমি আমি কিনে নিয়েছি। সেসব জমিতে অসহায় লোকজন চাষবাস করছে। তাঁরা খেয়েপরে বেঁচে আছে।
গ্রাম তো আর গ্রাম নেই। শহরের মতো হয়ে গেছে। আমাদের গ্রামে বিউটি পার্লার আছে। কমিউনিটি সেন্টার আছে। ইংলীশ মিডিয়াম স্কুল আছে। ফাস্ট ফুডের দোকান আছে। ব্যায়ামাগার আছে। ডিশের লাইন আছে। ইন্টারনেটের লাইন আছে। বাবা আমাকে প্রতি সপ্তাহে দুটা মেইল করেন। খুব বেশি দরকার হলো হোয়াটসঅ্যাপ করেন। বাবাকে বলেছি- আমেরিকা চলে আসো। আমার সাথে কিছু দিন থেকে যাও। বাবা বলেন, এই গ্রাম ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না। অন্য কোথাও গেলে আমার ঘুম হবে না। এই গ্রামের সমস্ত গাছ আমার পরিচিত। সমস্ত পথ আমার পরিচিত। মানুষজন, জমি, পুকুর, খাল, খেলার মাঠ, স্কুল ঘর আমার আত্মার সাথে মিশে আছে।
গ্রামের অন্তত দশজন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন আমার বাবা। নিয়মিত তাদের খোজ খবর নেন। প্রাইমারী স্কুলে পাকা টয়লেট করে দিয়েছেন বাবা। পাকা মসজিদ থেকে সালতা বাজার পর্যন্ত বাবা দুই শ' গাছ লাগিয়েছেন। সেসব গাছের যত্ন তিনি নিজে করেন। কবরস্থানের দেয়াল ভেঙ্গে পড়েছিলো বাবা সেটা মেরামত করে দিয়েছেন। মসজিদের জন্য আঠারটা ফ্যান দিয়েছেন। পূজোর সময় মন্দির কমিটিকে বড় অংকের টাকা দেন প্রতি বছর। আমি প্রচুর টাকা ইনকাম করি। তার সামান্য কিছু বাবাকে পাঠাই। তাতেই বাবা মহৎ কাজ করেন। আমি বাবাকে বলেছি, আরো টাকা লাগলে আমাকে বলবে।
আমি বাবাকে বলেছি ঢাকায় অন্তত একটা ফ্লাট কিনো। বাবা রাজি হননি। বলেছেন, গ্রামে আমাদের তিন তলা বাড়ি আছে। থাকার মানুষ নেই। বিশাল পুকুর। প্রতিমাসে একবার মাছ ধরে বিলিয়ে দেই। জমি থেকে যা ফসল আসে সেটাও নিই না। বহু বছর হয়ে গেলো গ্রামে যাই না আমি। বাবা খুব করে এবার আসতে বলছেন। আমারও গ্রামে যাওয়ার জন্য মনটা আকুপাকু করছে। অথচ এমন এক চাকরী করি হুট করে যাওয়া যায় না। অনেক বড় দায়িত্ব আমার হাতে। মাস গেলে অনেক গুলো ডলার আমার একাউন্টে ঢুকে যায়। বাবা যেমন গ্রামে অনেক কিছু করেছেন। আমিও আমেরিকাতে বাড়ি গাড়ি করেছি। ব্যাংকে প্রচুর টাকা জমেছে।
২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৫৯
কুশন বলেছেন: এরকম মানুষ অবশ্যই আছে প্রতিটা গ্রামে। থাকার কথা।
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:৪৯
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: বিদেশে যারা থাকে, তাদের সকলেরই এমন ইচ্ছা করে; কিন্তু পারে না।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০০
কুশন বলেছেন: আমি ৫ বছর পর একেবারে দেশে ফিরে আসবো।
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৫:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
প্রবাসে থাকলে গ্রামের প্রতি টান বাড়ে, দেশে থাকলে ঢাকার প্রতি টান বাড়ে।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০১
কুশন বলেছেন: কথা তো সত্য বলেছেন।
৪| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৭:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: যেতে যখন মন চাইছে - সব ছেড়ে ছুড়ে চলে যান গ্রামে।
বহু টাকাতো জমিয়েছেন আর সমস্যা কি
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০১
কুশন বলেছেন: হ্যাঁ যাবো। কিন্তু এখন না। আরো পাঁচ বছর পর।
৫| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:০৭
ইসিয়াক বলেছেন: গাল গল্প শুনতে ভালো। বাস্তবতা অন্য জিনিস। চালিয়ে যান। পাঠক মজা পাচ্ছে
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০২
কুশন বলেছেন: ইসিয়াক বেশি বাড়াবাড়ি করো না।
তোমার কিছু তথ্য আমার কাছে আছে।
৬| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:১৬
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া তোমার নাম কুশল নাকি কুশন?
কুশন মানে কি?
যাইহোক আমারও মন পাখিটা যায় রে উড়ে যায়।
ধান শালিকের গায় .....
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০৩
কুশন বলেছেন: নাম কোনো বিষয় না। আসল হলো মানুষের কর্ম।
৭| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৪২
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: এরকম সামাজিক শিক্ষকগণের বড়ই অভাব আমাদের সমাজে।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০৩
কুশন বলেছেন: হ্যাঁ অভাব।
৮| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:২৭
রানার ব্লগ বলেছেন: গ্রামে কিছুদিনের জন্য ঘুরে আসুন মন মেজাজ শরীর সব একসাথে ভালো হয়ে যাবে !!!!
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০৩
কুশন বলেছেন: হ্যাঁ জানুয়ারীতে আসবো।
৯| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার জন্ম এই ঢাকা শহরে। এখানেই আমার শিকড়-তবুও ঢাকা আমার কাছে এখন অসহ্য! গ্রামে যদি আয় রোজগারের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আমি গ্রামে যেয়ে বাস করতাম।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০৪
কুশন বলেছেন: গ্রামে গিয়ে বাচ্চাদের পড়াবেন। আপনি একজন ভালো শিক্ষক হতে পারবেন।
১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:০১
ইসিয়াক বলেছেন: কুশন আপনার প্রতি মন্তব্য পড়ে হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যথা হয়ে গেল।
০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৪
কুশন বলেছেন: যখন তথ্য প্রকাশ করবো তখন মাথা লুকাবেন। অথবা সামু ছেড়ে চলে যাবেন। অথবা অন্য নিক দিয়ে নতুন করে সামু চালাবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:৪৪
কামাল১৮ বলেছেন: এমন মানুষ প্রতি গ্রামে দরকার।তবেই সোনার বাংলার স্বপ্ন সত্যি হবে।