নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
গত সোমবার (২৫ শে নভেম্বর) আন্তর্জাতিক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ইসকনের বহিস্কৃত নেতা চিন্ময় দাস কে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে রাস্ট্রদোহিতার অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা করা হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু চিন্ময় দাস বাংলাদেশের হিন্দুদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হওয়ায় তিনি মামলার থোড়াই কেয়ার করে সারাদেশে সভা সমাবেশ করে বেড়ান। অবশেষে তাকে দুইমাস পরে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। শেখ হাসিনার ভারতে নির্বাসন নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এমনিতেই ভালো যাচ্ছে না তারমধ্যে চিন্ময় দাসের গ্রেফতার যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো অবস্থা হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ঘটে আরো জঘন্য ঘটনা। চট্টগ্রাম আদালত চিন্ময় দাসকে জামিন না দেওয়ায় তার ভক্ত ও অনুসারীদের সাথে সংঘর্ষ হয় জামাত-বিএনপির আইনজীবীদের! এই সংঘর্ষ সমাপ্ত হয় সাইফুল ইসলাম নামে একজন জ আইনজীবীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হতে শুরু করে। সেই সাথে শুরু হয় ঘরে ও বাইরে রাজনীতি! ঘরের রাজনীতিতে সামিল হয় শেখ হাসিনার পতন ঘটানো শক্তি ও ঘরের বাইরে রাজনীতিতে সামিল হয় ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল বিজেপি। তাদের সাথে যুক্ত হয় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ।।
শেখ হাসিনার পতন ঘটানো শক্তির রাজনীতি : বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন সহ সকল ডান ও বাম সমর্থক ও সোশ্যাল ইনফুয়েঞ্জারা এই দলের অন্তর্ভুক্ত। শেখ হাসিনার পতনের পর দেশ যাতে গৃহযুদ্ধের অবস্থায় না যায় তার জন্য এই পক্ষ বিদেশি শক্তির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলো যা মোটামুটি দায়িত্ব সহকারে তারা পালন করেছে। কিন্তু চট্টগ্রামে ইসকনের সমাবেশ দেখে এই তারা বেশ আতঙ্কিত অনুভব করে। ইসকনের সাথে ভারত ও আওয়ামী লীগ কানেকশান আছে বলে মনে করা হয়। সাম্প্রদায়িক কোন দাঙ্গা বাঁধে কিনা শুরু থেকেই তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ছিলো এই দলটির ! তাই কালক্ষেপন না করে রাস্ট্রদোহিতার মামলা ঠুকে দেয়া হয়। দেশের পরিস্থিতি যখন অস্থিতিশীল ও বর্তমান সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ঠিক তখনই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আগাম নাশকতা ঠেকানোর জন্য চিন্ময় দাস কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরপর চিন্ময় দাসের আশেকানরা বিক্ষোভ শুরু করে! শাহবাগে বিক্ষোভ চলাকালে হালকা করে শিক্ষা দিতে তাদের উপর চড়াও হয় জাতীয়তাবাদী যুবদলের সদস্যরা।
মঙ্গলবার যখন চিন্ময় দাসের জামিন দেয়াকে কেন্দ্র করে ভক্তদের সাথে পুলিশ-আওয়ামী বিরোধী জোটের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় আইনজীবী সাইফুল মারা যান তখন ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন আদালতের বিএনপি-জামাত সমর্থিত আইনজীবীরা; তারা বাংলাদেশে ইসকনের নিষিদ্ধ করার দাবী জানান। তাদের সাথে যুক্ত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন, শিবির ও বিভিন্ন ইসলামিক রাজনৈতিক দলের কর্মী! ইসকন কে নিষিদ্ধ করা তখন একটি বড়ো রাজনৈতিক ইস্যু হিসাবে সামনে আসে। ইসকনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ফিরে আসছে এমন আতঙ্ক আওয়ামী বিরোধীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র সংগঠনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ ইসকন কে জঙ্গী সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানায়।
ইসকনকে নিষিদ্ধ করার জন্য আদালতে মামলা করা হলেও সরকারের উপর দায় চাপিয়ে আদালত পাশ কাটিয়ে যায়। এর মধ্যে হাসনাত-সারজিস কে বহনকারী গাড়িকে ট্রাক চাপা দেওয়ার অভিযোগে ড্রাইভার ও হেল্পারকে আটক করা হয় যদিও সে গাড়িতে হাসনাত-সারজিস কেউই ছিলো না। জুলাই অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে হাসিনার পতনে গড়া জোটের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্তি শুরু হয়। বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত এবং আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলমান রয়েছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী জোট গুলো চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের পর চলমান সংঘর্ষকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করার সুযোগকে কাজে লাগায়। হারানো জনসমর্থন ফিরে পাওয়ার জন্য এর থেকে ভালো সুযোগ আর আসবে না মনে করে বিএনপি আওয়ামী বিরোধী সকল পক্ষকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়।
আওয়ামী লীগ ও ভারতের রাজনীতি : বাংলাদেশে চিন্ময় দাস কে গ্রেফতারের পরপর উত্তপ্ত হয়ে উঠে ভারতের রাজনীতি। পশ্চিম বাংলার ভারতীয় জাতীয় পার্টির নেতা শুভেন্দু অধিকারী চিন্ময় দাস কে গ্রেফতারে ক্ষোভ জানিয়ে উত্তপ্ত ভাষণ দেন। শেখ হাসিনার পতনের পর তিনি বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চান। ভারতীয় জনতা পার্টি মূলত একটি ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং নরেন্দ্র মোদিকে সারা বিশ্বের হিন্দুদের অভিভাবক হিসাবে বিজেপি প্রচার করে থাকে। তাই হিন্দুরা চায় বাংলাদেশ কে বিজেপি যাতে কড়া বার্তা দেয়। ভারতের রাজনীতিতে বাংলাদেশ ইস্যু সাম্প্রতিক সময়ে খুব আলোচিত হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ ভোটের প্রচারণায় বাংলাদেশি ট্রাম্প কার্ড ব্যবহার করে জনসমর্থন আদায় করতে মরিয়া। তাই শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারত কড়া বিবৃতি দেয় বাংলাদেশকে। এতে করে ভারতে বসবাসরত হিন্দু, টিভি মিডিয়া ও ভারতীয় সোশ্যাল ইনফ্লুয়েঞ্জারা বেশ প্রাউড ফিল করে মনে মনে ভেবে নেয়, পুঁচকে বাংলাদেশ বেশ ভয় পেয়েছে। অন্যদিকে মোদি জী তাদের কাছে সমগ্র বিশ্বের হিন্দুদের অবতার হিসাবে আরো একবার প্রশংসিত হন।
বাংলাদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আছেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা পলাতক এবং যারা দেশে আছেন তারা আত্নগোপনে রয়েছেন । আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা চায় পুরাতন মিত্র হিসাবে ভারত তাদের পুনরায় বাংলাদেশের ক্ষমতায় যেতে সাহায্য করবে। চিন্ময় দাসের গ্রেফতার নিয়ে তাই আওয়ামী লীগ রাজনীতি শুরু করে। তারা সাইফুলের মৃত্যুকে জামাত শিবিরের সাজানো নাটক হিসাবে জনগণের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে । হিন্দুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে এই অভিযোগ করে তারা বর্তমান ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে প্রচারণা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশে হিন্দুরা নিরাপদ নয় এমন প্রোপাগাণ্ডা আওয়ামী লীগের রাজনীতির অন্যতম ট্রাম্পকার্ড হিসাবে সবসময় ব্যবহার হয়ে আসলেও বাস্তবতা ভিন্ন। লীগের সময় বহু হিন্দু তাদের ঘরবাড়ি ও জায়গা-জমি থেকে উচ্ছেদ হয়। গোপালগঞ্জে সাবেক আইজিপি আওয়ামী দলদাস বেনজীর আহমেদ হিন্দুদের বহু জায়গা জোর করে কম দামে বিক্রয়ে বাধ্য করলেও বাংলাদেশের হিন্দুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন গুলো তখন নিরব ছিলো।
শেখ হাসিনার পতনের পর হিন্দু সংগঠন গুলোকে বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছে । এই সংগঠন গুলোর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ এসব সংগঠন কে কাজে লাগিয়ে নিজের রাজনৈতিক ফায়দা নিতে বিশ্বব্যাপী প্রচার চালাচ্ছে। দেশ এখন উগ্রবাদীদের দখলে এই অভিযোগ করে বর্তমান সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে।
২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ওয়েলকাম ব্যাক! আইনজীবীরা ধাওয়া দেয় ভক্ত-অভক্ত দের; ঘটনা চক্রে সাইফুল মাটিতে পড়ে যায়। সাইফুল কে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা মেরেছে তারা সাইফুলের ফেইসবুক পোস্ট রেগুলার ফলো করতো।
২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৯
জেনারেশন৭১ বলেছেন:
আইনবিদ হয়ে যদি মবকে ( বিশৃংখল উত্তেজিত জনতা ) ধাওয়া দেয়, উহা আসলে কি বস্তু?
২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: রাজনৈতিক আইনজীবী ! আজকে জিয়াউর রহমান কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা বিচারকের গায়ে ডিম ছুড়ে মারে। বাংলাদেশে একপিস ডিমের দাম ১২ টাকা।
৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪১
এসো চিন্তা করি বলেছেন: ভালো লিখেছেন ভাই ❤️
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:০৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পাম দিয়েন না। আজকের লেখা বড়ো হওয়ার কারণে কেউ পড়ছে না। হা হা!
৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৬
ডার্ক ম্যান বলেছেন: বদরুদ্দীন উমর এক জায়গায় মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগ কি জিনিস তা ভারত জানে। সেজন্য জাসদ সৃষ্টি করেছিলো।
হিন্দুরা একসময় ভীত হলেও এখন নয়। হাজারী গলির ঘটনা নিপীড়ন তাদের রুখে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছে। তাদের সব ভয় চুরমার করে দিয়েছে।
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৩৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আওয়ামী লীগ যা সুনাম ছিলো তা শেষ! ভবিষ্যত রাজনীতি পূর্বের ৩৪ বছরের মতো থাকবে না।
৫| ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:৫১
নান্দাইলের ইউনুছ বলেছেন:
কৃষ্ণ ও কৃষ্ণের ভক্ত আশেকানরাই ইসকনের সাথে জড়িত।
তাদের সহিংস হবার কোন কারণ দেখি না ।
তারা ভাবের কথা বলে।
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৭
কামাল১৮ বলেছেন: নিজেরাই নিজেদের লোককে হত্যা করে এখন ইসকনের নাম দিচ্ছে।জুলাইয়ের আন্দোলনে এটাই করেছে তারা।
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:০৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৭| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪৭
আদিত্য ০১ বলেছেন: আচ্ছা আইনজীবীদের কাজ কি ডিম খেলা বা ধাওয়া করা? তারা এগুলা করে কেন? এই দেশে যার যেটা কাজ সে সেটা করতে পছন্দ করে না কেন?
ভারত ও আমেরিকাকে পাশ কাটিয়ে কোন দল বা রাজনীতিবিদ কিছুই করতে পারবে না, এইটা মুইজ্জু বা ইমরান খান জ্বলন্ত প্রমান, ফাকা বুলি দেওয়া দুইদিনের রাজনীতিক লোকেরা আর ইনফ্লুয়েঞ্জারা যতই চিংড়ীর মত লাফাক
আমাদের উচিত ভারতের পররাষ্ট্র সম্পর্ক এমনভাবে ভালো করা যাতে আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সবকিছুই ঠিক থাকে, কিন্তু সম্পূর্ন ভারতবিরোধী মনোভাব রাখা একটা মাথামোটা আর বেকুবি বা অন্যকোন স্বার্থ আছে তারই লক্ষন, আমরা চীনের মত এখনও অর্থনৈতিক, বানিজ্যিক বা প্রযুক্তিগত উন্নত হয় নি
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়েছি।
৮| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫২
আদিত্য ০১ বলেছেন: আমার তো সন্দেহ জাগে, আইনজীবীকে যারা মারছে তারা জামাত বা শিবির বা সমন্বয়কদের মধ্যে কেউ, যাতে ইসকনকে থামানোর কোন একটা শক্ত ক্লু লাগে, এখনও কোন পরিষ্কারভাবে কিছুই প্রকাশ করেনি, দুইএকজন ধরা এই পর্যন্তই
সোনাগাজীর মত বলতে হয়, ভেড়ার চামড়া পড়ে নেকড়েরা ভীড়ে ঢুকে হত্যাযজ্ঞ চালায়
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪১
জেনারেশন৭১ বলেছেন:
আইনবিদ কি সনাতনী লোকজনকে ধাওয়া করার জন্য কোর্ট বিল্ডিং থেকে বের হয়েছিলো?