নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কামাল আতাতুর্ক: ইতিহাসের মহান সংস্কারক, যার মতো নেতা আজ বাংলাদেশে দরকার !

১২ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৩৪


কিছু মানুষ থাকেন, যারা কেবল ইতিহাসের অংশ নন—বরং ইতিহাস গড়ে দেন। কামাল আতাতুর্ক তেমনই একজন নেতা, যিনি শুধু তুরস্ককে নয়, গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, কীভাবে একটি পশ্চাৎপদ, ধর্মান্ধ রাষ্ট্রকে আধুনিক, প্রগতিশীল ও শক্তিশালী দেশে পরিণত করা যায়। উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর যখন তুরস্ক দিশেহারা, যখন খিলাফতের নামে ধর্মীয় কূপমণ্ডূকতা পুরো সমাজকে পেছনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন এই মানুষটি একাই সামনে দাঁড়িয়ে দেশকে বদলে দিয়েছিলেন।

১৮৮১ সালের ১২ই মার্চ জন্ম নেওয়া কামাল আতাতুর্ক ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের এক সামরিক কর্মকর্তা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি গ্যালিপোলির যুদ্ধে অসাধারণ নেতৃত্ব দেখান, কিন্তু পরে উপলব্ধি করেন—উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন আসন্ন এবং এটি বাঁচানোর কোনো উপায় নেই। তিনি নতুন করে ভাবতে শুরু করেন, কীভাবে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা যায়।

কীভাবে কামাল আতার্তুক তুরস্ককে বদলে দিলেন ?

খিলাফত ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা: উসমানীয় সাম্রাজ্যের শাসন ছিল পুরোপুরি ইসলামি শরিয়াহ ও খলিফার নির্দেশ অনুযায়ী পরিচালিত। কিন্তু আতাতুর্ক বুঝতে পারলেন, ধর্ম যখন রাষ্ট্রের সঙ্গে মিশে যায়, তখন জনগণের চিন্তাভাবনার স্বাধীনতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই ১৯২৪ সালে তিনি খিলাফত ব্যবস্থা বাতিল করলেন এবং ঘোষণা করলেন—তুরস্ক আর ধর্মীয় রাষ্ট্র থাকবে না, এটি হবে একটি আধুনিক, ধর্মনিরপেক্ষ জাতি-রাষ্ট্র।

ধর্মীয় শাসনের অবসান ও আইন সংস্কার: তুরস্কের বিচারব্যবস্থা তখন ছিল পুরোপুরি ইসলামি শরিয়াহ আইনের উপর ভিত্তি করে। আতাতুর্ক এটি পুরোপুরি পরিবর্তন করে পশ্চিমা আইন চালু করলেন , যাতে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার পায় এবং আইন বিজ্ঞানভিত্তিক হয়। ধর্মীয় আদালতগুলো তুলে দিয়ে তিনি সিভিল কোর্ট চালু করলেন।

ধর্মীয় গোঁড়াদের কঠোর হাতে দমন: আতাতুর্ক জানতেন, ধর্মীয় গোঁড়ারা কখনোই সংস্কার মেনে নেবে না। তারা সমাজকে ধর্মের নামে পিছিয়ে রাখতে চায়। তাই তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিলেন—যে সমস্ত ধর্মীয় সংগঠন রাজনীতি ও আইন ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছিল, তাদের নিষিদ্ধ করলেন। যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তাদের নির্মূল করলেন। এভাবে তিনি তুরস্ককে "ধর্মীয় গোঁড়ামির হাত থেকে মুক্ত করলেন" ।

শিক্ষা ও ভাষার আধুনিকীকরণ: শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনলেন। তুরস্কের ভাষা তখন আরবি হরফে লেখা হতো, যা সাধারণ মানুষের জন্য শেখা কঠিন ছিল। আতাতুর্ক "আরবি হরফ বাদ দিয়ে ল্যাটিন হরফ চালু করলেন" এবং শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ধর্মীয় শিক্ষাকে সরিয়ে দিলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, "একটি জাতির সবচেয়ে বড় শত্রু হলো অজ্ঞতা।" তাই ধর্মভিত্তিক শিক্ষার বদলে তিনি বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করলেন।

নারীর স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ: তুরস্কের নারীরা তখন অবরুদ্ধ ছিল। আতাতুর্ক ঘোষণা করলেন—নারীরাও পুরুষের সমান। তিনি তাদের ভোটাধিকার দিলেন, শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করলেন, এবং বিয়ের ক্ষেত্রে শরিয়াহ আইন তুলে দিয়ে "একটি আধুনিক পারিবারিক আইন চালু করলেন" , যাতে নারীরা বিয়ে, তালাক ও সম্পত্তির বিষয়ে সমান অধিকার পায়।

ধর্মীয় পোশাক সংস্কার : তুরস্কে ধর্মীয় পোশাক বাধ্যতামূলক ছিল—পুরুষদের ফেজ টুপি পরতে হতো, নারীদের পর্দার আড়ালে থাকতে হতো। আতাতুর্ক এসব তুলে দিলেন। তিনি ইউরোপীয় পোশাক পরা বাধ্যতামূলক করলেন, যাতে মানুষ নিজেদের আধুনিক মনে করে এবং সমাজ থেকে ধর্মীয় পরিচয়কে সরিয়ে ফেলে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আতাতুর্কের শিক্ষা কেন জরুরি ?

ধর্মনিরপেক্ষতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা : বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে কিছু রাজনৈতিক দল এটিকে দুর্বল করে দেয়। আজ দেখা যাচ্ছে, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা দলগুলো সমাজে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে, যা আতাতুর্কের যুগের তুরস্কের মতোই বিপজ্জনক।

ধর্মীয় গোঁড়াদের দমন : সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ধর্মীয় গোঁড়াদের উত্থান বাড়ছে । ধর্মীয় উগ্রপন্থার প্রচার, নারীদের স্বাধীনতার ওপর হুমকি, ভিন্নমত দমন—এসব আতাতুর্কের যুগের তুরস্কের মতোই সংকট সৃষ্টি করছে। আতাতুর্কের মতো একজন দৃঢ় নেতা দরকার, যিনি ধর্মীয় গোঁড়ামিকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবেন না।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এখনও অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীয় কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। এখানে শিক্ষাব্যবস্থায় বিজ্ঞান, গণিত ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি একক, আধুনিক ব্যবস্থা চালু করা দরকার।

নারীর ক্ষমতায়ন: আতাতুর্ক যেমন নারীদের সমান অধিকারের সুযোগ দিয়েছিলেন, বাংলাদেশেও নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য, নির্যাতন ও গোঁড়াদের রক্তচক্ষু বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ।

কেন কামাল আতাতুর্কের মতো নেতা আজ বাংলাদেশে দরকার ?

বাংলাদেশ আজ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা কি মুক্তচিন্তার একটি আধুনিক দেশ গড়ব, নাকি গোঁড়ামির কাছে হার মানব ? ইতিহাস বলে, মুক্তির একটাই পথ— আতাতুর্কের মতো সংস্কারক ও দূরদর্শী নেতা প্রয়োজন, যিনি ভয় পাবেন না, আপস করবেন না, এবং দেশকে সত্যিকারের প্রগতির পথে নিয়ে যাবেন। আজ আতাতুর্ক নেই, কিন্তু তার শিক্ষা আছে। ইতিহাস আমাদের সামনে একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—যদি আমরা কুসংস্কার এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারি, তবে আমরা পিছিয়ে যাব। কিন্তু যদি আতাতুর্কের পথ অনুসরণ করতে পারি, তবে বাংলাদেশ হতে পারে একটি আধুনিক, মুক্তচিন্তার দেশ, যেখানে প্রতিটি মানুষ সমান, প্রতিটি কণ্ঠ স্বাধীন।

মহান সংস্কারবাদী কামাল আতার্তুকের আজ জন্মদিন। তুরস্ক সহ বিশ্বের সকল গণতন্ত্রমনা মানুষ এই মহান নেতাকে আজকের এইদিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪৬

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ব্লগাররা কামাল পাশা ২য়-কেই সহ্য করতে পারেন না, আর কামাল আতার্তুক এদেশে জন্ম নিলে মোল্লারা তো কল্লা কর্তন করবে।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:০৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কামাল পাশা ২য় সবাইকে মুখের উপর অপমান করেন। ব্লগে সবাই আসে বিনোদনের জন্য কিন্তু তিনি মানুষ কে শিক্ষা দিতে যান। এরকম গায়ে পড়ে কারো শিক্ষাদানের বিষয়টি কেউ ভালো চোখে দেখে না।

কামাল আতার্তুক সব ধরণের মানুষের সাথে ডিল করতে জানেন। মোল্লারা কেবল কল্লা কাটে না তারা মৃতদের জানাযার নামায ও পড়ায়।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:১১

কামাল১৮ বলেছেন: মরা মানুষের জানাজা পড়লে তার কি লাভ হবে।আর জানাজা না পরলে তার কি ক্ষতি হবে।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:২৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সমাজে সবাইকে যার যার স্পেসমতো সম্মান দিতে হবে। আপনি মোল্লাতন্ত্র পছন্দ করেন না কিন্তু অন্য একজন করে। এখন সে কেন করে সেটা নিয়ে তাকে সারাদিন হ্যারেস করলে সমাধান মিলবে?

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:১৩

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: কামাল আতার্তুক সম্পর্কে আপনার আর একটু পড়ালেখা করতে হবে। উনি যে সে মাল ছিলেন না। আর উনাকে মোল্লাশ্রেণি অপছন্দ করে।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৩২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমি জাস্ট এআই দিয়ে কাম চালিয়ে দিয়েছি। হাতে লিখলে আরো অনেক বিষয় নিয়ে লেখা যেত।

৪| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:৪৮

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: বাংলাদেশে এরকম করতে গেলে তৌহিদি জনতার গালাগালি শুনে বিপ্লবের শখ মিটে যাবে।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:৫৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কামাল আতার্তুক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য থেকে তুরস্ককে বের করে এনেছেন। বাংলাদেশের অবস্থা সে তুলনায় ভালো। আপনারা খালি সব কিছুতে তৌহিদি জনতার দোষ দেখেন।

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:২৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


মুল্লা মৌলোভীরা থাকলেই হবে।
এই দেশে কামাল আতাতুর্কের মতো কেউ আসবে না।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৩১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দেখা যাক !

৬| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:০০

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: " তাই ধর্মভিত্তিক শিক্ষার বদলে তিনি বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করলেন।
ওনারা ভিশনারি নেতা ছিলেন। বিশ্ব, রাজনীতি, ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছেন, তা বুঝতে পারতেন। এই জন্য তুরস্কে সামাজিক সংস্কার করেছেন। তুরস্ক এখন অর্থনীতি,‌শিক্ষ্যা, বিজ্ঞান, মিলিটারিতে বিশ্বের অন্যান্য, নেটোর মত জোটের সদস্য।
বাংলাদেশের কিছু হুজুর তো উনারে ইহুদিদের দালাল, ইসলামী খেলাফত ধ্বংসকারী কাফের ঘোষণা করে দিছে। এদিকে অটোম্যান সাম্রাজ্যের সুলতানেরা যে "হেরেম, মদ, জুয়া দুর্নীতিগ্রস্ত" হয়ে ইসলামী খেলাফতের আগেই বারোটা বাজাই দিছে এইগুলো নিয়ে কোন গালগপ্প নেই।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:০৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সবাই নিজ নিজ দোষ চোখে দেখেন না।

৭| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

কামাল১৮ বলেছেন: কিসে সমাধান হবে বলে আপনার ধারণা।মোল্লাদের প্রশংসা করলে।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার কিছুই করা লাগবে না। আপনি রেস্ট করেন !

৮| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৪৭

কাঁউটাল বলেছেন: ইসলামের বিষয়ে চুলকানি আছে এবং মুসলমানদের দেশকে নাস্তিক্যবাদি বা ইসলাম বিদ্বেষীদের হাতে তুলে দিয়ে যারা চর্মসুখ পেতে চায়, সৈয়দ কুতুব তাদের একজন। বাংলাদেশ ও এইদেশের মানুষের উন্নতি এইধরণের চুলকানি রোগে আক্রান্তদের উদ্দেশ্য না। উন্নতির লোভ দেখিয়ে এইসব চুলকানি রোগে আক্রান্তরা বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাস্ট্রে পরিণত করতে চায়। যেমন করেছিল কামাল আতাতুর্ক।

কামাল আতাতুর্কের আসল আমলনামা নীচে দেওয়া হল:

কামাল আতাতুর্কের শাসনব্যবস্থা ছিল একনায়কতান্ত্রিক, যেখানে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা চর্চার মাধ্যমে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করা হয়েছিল। তাঁর শাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল গণতন্ত্রকে নির্মূল করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা, যা তুরস্ককে দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করে তোলে। আতাতুর্কের নীতি তুরস্ককে একটি গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিবর্তে, এককেন্দ্রিক শাসনের অধীন একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, যা সামরিক অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ভিত্তি তৈরি করে।

তাঁর প্রশাসনিক নীতিগুলো ছিল অকার্যকর ও অগণতান্ত্রিক। তুরস্কের অর্থনীতি তাঁর শাসনকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ তিনি তুরস্ককে জোরপূর্বক পশ্চিমা কাঠামোতে রূপান্তর করতে চেয়েছিলেন, যা বাস্তবিক অর্থে তুর্কি জনগণের জীবনযাত্রার সঙ্গে খাপ খায়নি। তাঁর নেতৃত্বে চালু করা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত শিল্পনীতি ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ এটি স্থানীয় ব্যবসা ও কৃষিকে উপেক্ষা করে মাত্র কয়েকটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল করে তোলে। ফলস্বরূপ, দীর্ঘমেয়াদে তুরস্কের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং জনগণের জীবনমানের উন্নতি তেমন হয়নি।

আতাতুর্ক সামরিক শক্তির ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল ছিলেন, যা তুরস্কে ভবিষ্যতে সামরিক অভ্যুত্থানের সংস্কৃতি তৈরি করে। তিনি সামরিক বাহিনীকে সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত করেন এবং তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। এর ফলে, তাঁর মৃত্যুর পর তুরস্কে বারবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটতে থাকে, যা দেশটির গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে। এই ধারাবাহিক সামরিক হস্তক্ষেপ তুরস্কের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে এবং দেশটিকে দীর্ঘমেয়াদে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করে।

বিদেশনীতি পরিচালনায়ও আতাতুর্ক ব্যর্থ ছিলেন। তাঁর শাসনকালে তুরস্ক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। তিনি যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তুরস্ককে একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নিতে ব্যর্থ হন। তাঁর কৌশলগত ভুলগুলোর কারণে তুরস্ক আন্তর্জাতিক মঞ্চে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পশ্চিমা বিশ্বের কৃপায় টিকে থাকার মানসিকতা তৈরি হয়।

আতাতুর্কের নীতি সামগ্রিকভাবে তুরস্ককে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, যেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক দুর্বলতা, সামরিক অভ্যুত্থানের সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুর্বল অবস্থান দীর্ঘকাল ধরে বিদ্যমান ছিল। তাঁর শাসনব্যবস্থা তুরস্কের জনগণকে প্রকৃত গণতন্ত্র বা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি, বরং রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আরও বেশি দুর্বল করেছে।কামাল আতাতুর্কের শাসনব্যবস্থা ছিল একনায়কতান্ত্রিক, যেখানে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা চর্চার মাধ্যমে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করা হয়েছিল। তাঁর শাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল গণতন্ত্রকে নির্মূল করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা, যা তুরস্ককে দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করে তোলে। আতাতুর্কের নীতি তুরস্ককে একটি গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিবর্তে, এককেন্দ্রিক শাসনের অধীন একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, যা সামরিক অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ভিত্তি তৈরি করে।

তাঁর প্রশাসনিক নীতিগুলো ছিল অকার্যকর ও অগণতান্ত্রিক। তুরস্কের অর্থনীতি তাঁর শাসনকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ তিনি তুরস্ককে জোরপূর্বক পশ্চিমা কাঠামোতে রূপান্তর করতে চেয়েছিলেন, যা বাস্তবিক অর্থে তুর্কি জনগণের জীবনযাত্রার সঙ্গে খাপ খায়নি। তাঁর নেতৃত্বে চালু করা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত শিল্পনীতি ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ এটি স্থানীয় ব্যবসা ও কৃষিকে উপেক্ষা করে মাত্র কয়েকটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল করে তোলে। ফলস্বরূপ, দীর্ঘমেয়াদে তুরস্কের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং জনগণের জীবনমানের উন্নতি তেমন হয়নি।

আতাতুর্ক সামরিক শক্তির ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল ছিলেন, যা তুরস্কে ভবিষ্যতে সামরিক অভ্যুত্থানের সংস্কৃতি তৈরি করে। তিনি সামরিক বাহিনীকে সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত করেন এবং তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। এর ফলে, তাঁর মৃত্যুর পর তুরস্কে বারবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটতে থাকে, যা দেশটির গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে। এই ধারাবাহিক সামরিক হস্তক্ষেপ তুরস্কের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে এবং দেশটিকে দীর্ঘমেয়াদে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করে।

বিদেশনীতি পরিচালনায়ও আতাতুর্ক ব্যর্থ ছিলেন। তাঁর শাসনকালে তুরস্ক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। তিনি যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তুরস্ককে একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নিতে ব্যর্থ হন। তাঁর কৌশলগত ভুলগুলোর কারণে তুরস্ক আন্তর্জাতিক মঞ্চে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পশ্চিমা বিশ্বের কৃপায় টিকে থাকার মানসিকতা তৈরি হয়।

আতাতুর্কের নীতি সামগ্রিকভাবে তুরস্ককে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, যেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক দুর্বলতা, সামরিক অভ্যুত্থানের সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুর্বল অবস্থান দীর্ঘকাল ধরে বিদ্যমান ছিল। তাঁর শাসনব্যবস্থা তুরস্কের জনগণকে প্রকৃত গণতন্ত্র বা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি, বরং রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আরও বেশি দুর্বল করেছে।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এত বড়ো মন্তব্য পড়া সম্ভব নয়।

৯| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ইতিহাসের আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তি।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আধুনিক তুরস্কের নির্মাতা । মানুষ যেহেতু সমালোচনা থাকবেই৷

১০| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ইসলামী তাহযিব তামাদ্দুন ধ্বংসকারী ইতিহাসের বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। কোনো একটা প্রেক্ষিতে ৮/ ৯ বছর পূর্বে তাকে নিয়ে আমার মোটামুটি বেশ স্টাডি করতে হয়েছিল। সেই থেকে তার সম্মন্ধে জানি। তিনি একজন দক্ষ তেলবাজ। তাকে বৃটিশ এবং পশ্চিমা এজেন্ট না বলে উপায় নেই।

যা হোক, তাকে নিয়ে আজকে একটি পোস্ট দিয়েছি। সময় করে দেখে আসার অনুরোধ থাকলো। ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:১৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.