![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহের রাজনীতি এক অদ্ভুত ধরণের প্রহসন যেখানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই আর বাস্তবতার মধ্যে সম্পর্ক ঠিক ততটাই যতটা আয়ুর্বেদ পুস্তক আর হোটেলের মেন্যুকার্ডের মধ্যে। রাজনীতিবিদগণ এখানে নির্বাচনকে বিবেচনা করেন একটি পর্বতসম নাটকের উদ্বোধনী দৃশ্য হিসেবে, যার প্রত্যেকটি দৃশ্যে তিনি চরিত্র বদলান, কিন্তু কাহিনি একই থাকে "আমি এসেছি দেশ গড়তে, কিন্তু প্রথমে গড়বো নিজস্ব অ্যাকাউন্ট।"
এইসব দেশে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কেবল একটি জিনিসই প্রয়োজন : সাহসিক নির্লজ্জতা। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে যে মন্ত্রী পদত্যাগ করেন, তিনিই পরদিন জাতিকে নৈতিকতার ভাষণ দেন। দায়বদ্ধতা শব্দটি এখানে রাজনীতির অভিধানে আছে ঠিকই, তবে তার মানে হয়েছে “কাউকে দায়ী করো, দায় নিও না।” পূর্ববর্তী সরকারের অপকর্ম গুনে গুনে বলার মধ্যে একধরনের পরিশীলিত পেশাদারিত্ব রয়েছে; এমনকি মনে হয় যেন বিরোধী দলের সকল নেতা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অডিট অফিসার ছিলেন।
জনগণের প্রতি এই ব্যবস্থার সবচাইতে নির্মম ব্যঙ্গ হলো এই রাষ্ট্রের সব নেতারই কণ্ঠে থাকে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি, কিন্তু আচরণে থাকে ‘বংশতন্ত্র’, মননে থাকে ‘অজ্ঞতন্ত্র’ এবং ব্যবস্থায় থাকে ‘লোভতন্ত্র’। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এইসব দেশগুলোতে রাজনীতিবিদদের যে যত বেশি প্রতিশ্রুতি দিতে পারে, সে তত বেশি জনপ্রিয়। বাস্তবায়নের হিসাব কেউ চায় না কারণ সবাই জানে, এই প্রতিশ্রুতি আসলে বছরে একবারের মতন ঈদের সেমাই : মিষ্টি, অস্থায়ী, আর অদৃশ্য।
উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে সরকারের কাঠামো আসলে উদ্বোধন-কেন্দ্রিক। একটি রাস্তাকে তিনজন মন্ত্রী, দুইজন এমপি এবং একজন ওয়ার্ড কমিশনার আলাদাভাবে উদ্বোধন করেন কাজ কিন্তু একটাও হয় না। ফিতা কাটা আর ছবি তোলা যেন প্রকল্পের সারসংক্ষেপ। যদি কেউ প্রশ্ন তোলে “এত উদ্বোধন কেন?”,তখন বলা হয়: “গণতন্ত্রে অংশগ্রহণের অধিকার সবার আছে!”
এইসব রাষ্ট্রে তথাকথিত উন্নয়ন এক প্রকার রাষ্ট্রীয় বাজি: আজকের মেগা প্রজেক্ট আগামীকালের মেগা দুর্নীতি। এখানে পরিসংখ্যান দিয়ে সত্যকে ঢেকে ফেলা হয়, অর্থনীতির সংকটকে সাফল্য বলা হয়, এবং দরিদ্রের আর্তনাদকে নেতিবাচক পলিটিক্স বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়। একবার একজন নেতা বলেছিলেন, "আমরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে দেব না।” অথচ দেশের অর্থনীতি তখন ICU-তে ছিল। ভাবমূর্তিই যদি মুখ্য হয়, তাহলে রাষ্ট্র কেন হাসপাতাল না হয়ে বিলবোর্ড হয়ে উঠছে ?
এই ব্যবস্থার একটি অদ্ভুত দিক হলো, সব রাজনীতিবিদই নিজেকে জনগণের সন্তান দাবি করেন, কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর ঈশ্বর হয়ে ওঠেন। সমালোচনা করলে বলে “আপনিও তো ভোট দিয়েছেন”; যেন ভোটার একটা আজীবন চুক্তিপত্রে সই করে ফেলেছেন: “তুমি চুরি করো, আমি গালি খাবো!”
এমনকি ধর্মও এখানে রাজনীতির খেলার মোহর হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় ঈমান-আকিদা নিয়ে বক্তৃতা চলে, তারপর শপথ শেষে টাকার বান্ডিলে ওজু করা হয়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে বলা হয়, “আমরা প্রযুক্তিনির্ভর প্রজন্ম গড়ছি”; অথচ সেই প্রজন্ম শুধু কোচিং সেন্টারের শিকার আর ভবিষ্যতের মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে মিথ্যার জগতে বন্দি।
সবশেষে এই ব্যবস্থার সারাংশ যদি এক বাক্যে বলতে হয়, তা হবে: এই রাষ্ট্রে রাজনীতির ধর্ম হলো চুরি, নীতির উৎস হলো বিভ্রান্তি, আর গণতন্ত্রের প্রতীক হলো চেয়ারে থাকা মানুষের অদলবদল। এটা সেই ব্যবস্থার চূড়ান্ত রূপক যেখানে রাষ্ট্র চলে নীতিহীনতা আর স্মারক বক্তৃতার উপর। যেখানে জনগণ নিজের জীবনের চেয়ে নেতার ভাষণ বেশি মুখস্থ রাখে, আর ভোটের দিন নিজেরই প্রতারণা উৎসব করে।
উন্নয়নশীল দেশের রাজনীতিকে একটি কৌতুকের সাথে তুলনা করলে ভুল হবে না। এখানে সবাই অভিনয় করে। একজন অভিনেতা যায়, আরেকজন আসে। কিন্তু স্ক্রিপ্টটা একই থাকে। পার্থক্য কেবল অভিনেতাদের চেহারায়। এরকম পরিস্থিতি দেখে যখন কোনো পর্যটক জিজ্ঞেস করেন, "এই দেশটা কে চালাচ্ছে ?" তখন ধর্মচর্চা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। কারণ ঈশ্বরই আমাদের দেশের একমাত্র ভরসা।
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দেশের নেতারা এমন কথা বলেন যে কথার মান তারা নিজেরা রাখতে পারেন না। তাহলে এমন কথা বলার কি দরকার ? আজকে নাহিদ কি পরিমাণ খারাপ কথা শুনছে সেটা যদি দেখতেন । ফখরুল সাহেব নিজের দলের লাগাম দিতে হিমশিম খান বাট সরকারের সমালোচনা করছেন। ইউনুস সাহেব নিজেই ইলেকশান চান কিনা ডাউট আছে। আর জামায়াত এখন জংগিবাদের বিরুদ্ধে লড়বে যেখানে তাদের আমিরের ছেলে এর সাথে জড়িত হওয়ার আলামত আছে।
২| ২৭ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:১২
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: দেশের খবর বা* ছা* দেখি ও না পড়ি না। ফেসবুক, নিউজফিডে কিছু আসলে দেখি!! বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর খবরাখবর জানতে হইলে ব্রেইনের নিউরন আর হার্ট অনেক শক্তিশালী হওয়া লাগে। আপনি দেখি অনবরত রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন; তো আপনের ব্রেইনের উপর প্রেসার পড়ে না?
আর জামায়াত রে ভাবছিলাম কিছুটা নিয়ম-শৃঙ্খলা, অনুশাসন মেনে চলা একটি দল। এখন দেখি তারা আগাগোড়া একটা *দিয়া একটা পার্টি। আবরার ফাহাদ হত্যা কান্ডের আসামি পক্ষের আইনজীবী নাকি একজন জামাতি। চিন্তা করেন!!!! ইহা মিডিয়া আসার পর জামাতিদের যুক্তি "কিছু আসামি নাকি অপরাধ থেকে ও বেশি মাত্রায় শাস্তি পেয়েছে; এই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে জামাতি আইনজীবী"। দেশে মনে হয় আর কোথায় ও বেইনসাফি হয় না!!!! জামাত ক্ষমতায় আসার জন্য সব করতে পারে; স্বঘোষিত বাটপার নুরুর সাথে মনে হয় ঐক্য করছে।
২৭ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:১৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সবচেয়ে বেশি হতাশ এনসিপির পলিটিক্স নিয়ে । এরা এক বছরের মাথায় বখে গেলো।
৩| ২৭ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১:০৬
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ব্লগে তাও আপনি ছিলেন। কিছুটা নিরপেক্ষতা দেখায় যায়। বেশিরভাগ রাজনৈতিক পোস্ট পড়ে তো মনে হয় ব্লগটা আমার দেশ পত্রিকা।
২৭ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ভালো লেখাও আসে। বেশি বাজে লাগে যখন মীমাংসিত বিষয় নিয়ে নতুন নতুন কনসেনট মেনুফেকচারিং দেখা যায় ।
৪| ২৭ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:১৩
ইপিআর সৈনিক বলেছেন:
"২য় স্বাধীনতা"র ১ম বর্ষ পুর্তি হতে যাচ্ছে; শেখের কবর ভেংগে ইহার উদ্বোধনী হোক।
২৭ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আজকে আমার মন ভালো নেই।
৫| ২৭ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:১৫
কামাল১৮ বলেছেন: অস্থির সময়ের রাজনীতি অস্থির হতে বাধ্য।দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে বাস্তব অবস্থা।রাজনৈতিক বক্তব্য দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে সেই সাথে তাল মিলেয়ে জনগন চলতে পারছেনা।নেতারাও অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলছেন।একটা সুষ্ঠু নির্বাচন এখন প্রয়োজন।
২৭ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:২২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইউনুস সাহেব ইলেকশন চান কিনা আমার ডাউট আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪০
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: গরীব, উন্নয়নশীল দেশের গনতন্ত্র আর রাজনীতি হচ্ছে অনেকটা ছাগলের গায়ে সুট-টাই পড়ায়ে দেওয়ার মত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে যে সকল দরিদ্র দেশগুলো উন্নতি শিখরে উঠেছে; তারা সবাই কঠোর বিধিনিষেধ, জনগণের অধিকার নিয়ন্ত্রণ করেই।