নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

৪টি তারামাছ বনাম ৩০০ মিলিয়ন ডলার: আশিক চৌধুরীর প্রশাসনিক ব্যর্থতা  ।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪


একটি সমুদ্র সৈকতে ঝড়ের পর হাজার হাজার তারামাছ বালিতে পড়ে আছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে তারা মারা যেতে শুরু করবে। এমন সময় একটি ছেলে এসে একটি একটি করে তারামাছ তুলে সমুদ্রে ছুঁড়ে দিতে শুরু করে। একজন বয়স্ক লোক তাকে দেখে বলল, "পাগল ছেলে, এত হাজার তারামাছ! তুমি কী পার্থক্যই বা করতে পারবে?" ছেলেটি আরেকটি তারামাছ তুলে সমুদ্রে ছুঁড়ে দিয়ে শান্তভাবে বলল, "এই একটার জন্য তো পার্থক্য হলো।"

এই বিখ্যাত গল্পটি আজ বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়েছে BIDA এবং BEZA-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী-র প্রকাশিত "Our Performance Report"-এর কারণে। তাঁর রিপোর্টটি ঠিক সেই বয়স্ক লোকটির মতো। তিনি ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের দাবি, ১০,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং নানাবিধ সংস্কারের কথা বলছেন: হাজার হাজার "তারামাছের" বিশালতা নিয়ে ভাবছেন। কিন্তু এই বিশালতার আড়ালে তিনি তাঁর অফিসের সামনে পড়ে থাকা মাত্র ৪টি "তারামাছকে" বাঁচাতে পারছেন না।

আশিক চৌধুরী একজন অত্যন্ত মেধাবী এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তি। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা (IBA ঢাবি , লন্ডন বিজনেস স্কুল, CFA) নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তিনি ২০২৪ সালের জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলস্বরূপ দেশে ফিরে এসে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেছেন। যে আন্দোলনের মূল দাবিই ছিল মেধার ভিত্তিতে চাকরি এবং বেকারত্ব দূরীকরণ, সেই আন্দোলনের সুবিধাভোগী হয়েও তিনি চাকরির মূল দাবিটি পূরণের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলেন। BIDA-তে মাত্র ৪টি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর একবছর পেরিয়ে গেলেও তিনি সেই ৪টি পদে নিয়োগ দিতে পারেননি।

এই ৪ জনই হতে পারতো তাঁর "তারামাছ" যাদের জীবনে তিনি সরাসরি এবং দ্রুত পার্থক্য আনতে পারতেন। যদি তিনি এই ৪ জনকে চাকরি দিতেন, তবে ৪টি পরিবারে নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা আসত। সন্তানদের লেখাপড়া, বাবা-মায়ের চিকিৎসা এসবের মধ্য দিয়ে ৪টি পরিবারের মুখে হাসি ফিরত। আর এই ৪ জন হতেন আশিক চৌধুরীর সবচেয়ে শক্তিশালী ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। কিন্তু এখন কী হয়েছে? যখন কোনো সরকারি সংস্থা নিজের অফিসের মাত্র ৪টি শূন্য পদ পূরণ করতে একবছর সময় নেয়, তখন জাতীয় পর্যায়ে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আকর্ষণের দাবি জনগণের কাছে অর্থহীন মনে হয়। মানুষ বাস্তব পরিবর্তন দেখতে চায়, কথার ফুলঝুরি নয়।

আশিক চৌধুরীর এই ব্যর্থতা তাঁর ব্যক্তিগত দক্ষতার অভাব নয়, বরং বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার বৃহত্তর সমস্যার প্রতিফলন। আমরা প্রায়শই বড় বড় পরিকল্পনা এবং রিপোর্ট তৈরিতে যতটা গুরুত্ব দিই, দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ এবং ছোট ছোট সমস্যার সমাধানে ততটা গুরুত্ব দিই না। তাঁর মতো একজন আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি যখন একটি সহজ কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন না, তখন বুঝতে হবে সমস্যাটি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সিদ্ধান্তহীনতা এবং অগ্রাধিকার নির্ধারণে ভুলের জালে আটকে আছে।

তারামাছের গল্পের শিক্ষা হলো: একসাথে সবাইকে বাঁচাতে না পারলেও, যাকে পারো তাকে বাঁচাও। প্রতিটি জীবনেরই মূল্য আছে। জনগণের আস্থাই সবচেয়ে বড় পুঁজি এবং সেই আস্থা অর্জিত হয় ছোট ছোট সাফল্যের মধ্য দিয়ে। আশিক চৌধুরী হয়তো মনে করেছেন বড় বিনিয়োগ আনাই একমাত্র কাজ, কিন্তু তিনি ভুলে গেছেন যে প্রশাসনিক দক্ষতা ছাড়া বড় প্রকল্প পরিচালনা অসম্ভব। ৪ জন মানুষকে চাকরি দিতে না পারার ব্যর্থতা তাঁর ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সব অর্জনের ঔজ্জ্বল্য ম্লান করে দিল। এটিই প্রমাণ করে যে, ছোট কাজগুলো করতে পারাটাই প্রকৃত নেতৃত্বের পরীক্ষা।

তথ্যসূত্র: Bangla Mirror News. (2025, June 6). BIDA chief publishes 8-month performance report / /BIDA নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪, আবেদনের শেষ তারিখ: ৪ জুলাই ২০২৪ ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১০

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



বাংলাদেশেে ইনভেষ্টমেন্ট, ষ্টক মার্কেট, ফাইন্যান্স, ম্যানুফেকচারিং প্ল্যানিং, এনার্জি প্ল্যানিং, ইন্ডাষ্ট্রিয়েল জোনের জন্য বিদেশী সাদা চামড়ার লোক নিতে হবে। বাংগালী নবী দিয়েও হবে না।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সে না হয় আনা হলো। কিনতু নিজের ডিপারটমেনটের একটা সারকুলারের ৪ টা নিয়োগ দিতে পারছেন না এ কেমন কথা ? এটা তো তুলনামুলক সহজ কাজ ।

:-B

২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৬

আলামিন১০৪ বলেছেন: আগের লিঙ্ক কাজ করছে না,BIDA Notice

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ওকে ।

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



আশিক ইত্যাদিকে যারা আনছে, তারা দেশের ব্যুরোক্রেটদের কাছে আটকা আচে। ইউনুসকে টিকিয়ে রেখেছে ব্যুরোক্রটরা, উনি এমন কোন সুনামের লোক নন যে, ব্যুরোক্রেটরা উনার কথা মতো চলবে, উনাকে ব্যুরোক্রেটদের কথা মতো চলতে হবে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের সরকারি bank এর ৩৫০০ পদের সারকুলার একই সময়ে হয়েছিলো। সেটার মাঝে ৯৭৪ পদের এক্সাম হয়ে ভাইভা শেষ। সামনের মাসে result হবে । বাকি গুলোর ভাইভা কামিং । Petro Bangla ১২০ পদের সারকুলার ও সমসাময়িক ছিলো । সেটার এক্সাম এই সরকারের আমলে হয়ে ফাইনাল result হয়ে গেছে । সামনে জয়েনিং । সমসাময়িক Microcredit regulatory authority ৪ পদের সারকুলার হয়েছিলো । সেটার এক্সাম হয়ে গেছে । কেবল বিডা থেক চারজন নিয়োগ দিতে এক্সাম আশিক সাহেব এখনো পারছেন না ।

৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



ইনভেষ্টমেন্ট, ষ্টক-মার্কেট, ইন্ডাষ্ট্রিয়েল জোন, ফাইন্যান্সিয়াল থেকে জাতিকে লাভ করতে হয় ও এমপ্লয়মেন্ট ক্রিয়েট করতে হয়, ইহা বাংগালীর মগজের জন্য অসম্ভব কাজ।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার এসব বড়ো কাজের ভাবনা আপাতত বাদ দেন । গেস করেন আপনি বিডার চেয়ারমেন হলেন । আপনার চোখে কি নিয়োগ সারকুলার চোখে পড়বে না ? সেটার এক্সাম নিতে বলবেন না এক বছর হয়ে গেলেও ? আপনার কাজের গতি বাড়াতেই তো লোক দরকার । লোক না লাগলে সারকুলার কেনসেল করে দেন ।

৫| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮

বাকপ্রবাস বলেছেন: আমাদের আশিক বানায়া খালি হাতে কচু ধরায়া দিয়ে যাবে

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আজকাল এসব গান বেশি শুনেন মনে হয় । :P

৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:




আশিক অনুপযুক্ত মানুষ; সে নিজের কাজ সময় মতো কেন সেষ করতে পারছে না? কারণ, তার ভাবনাশক্তিতে সমস্যা আছে: এখন বাংলাদেশের রাজনৈ্তিক যেই অবস্হা, কেহ ১ টাকাও বিনিয়োগ করবে না।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৫০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মানুষের ছোট ছোট কাজের মাধ্যমেও অনেক সময় যোগ্যতা প্রমাণ হয়। ঊহার আসলে কে চাকুরি পেল না পেল তাতে কিছুই আসে যায় না। সে কারো বেদনা অনুভব করে না।

৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৬

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

আশিক যোগ্য ছেলে, সে এই পদের জন্যে ডক্টর ইউনুসের বেষ্ট চয়েস ছিল। আশিকের কোন সিদ্ধান্ত দেশের বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত করেছে, পক্ষপাতদুষ্ট অর হেলায় বসে সময় কাটাচ্ছে এমন কোন অভিযোগ ও নাই। বিনিয়োগ যদি না ও আশে সেটা দেশের সামগ্রিক অবস্থার পরিস্থিতি। ইনভেস্টমেন্ট সামিট, তার উপস্থাপনা সবকিছু ইং ছিলো দেখার মতো। সবচেয়ে ভালো লেগেছে আশিক মিডিয়ার আড়ালে লো প্রোফাইল মেইনটেইন করেছে কোন আর্থিক কেলেঙ্কারি অভিযোগ নাই তার বিরুদ্ধে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শুরুতে আশিকুর রহমানের ব্যাপক হাইপ ছিলো। উনার প্রেজেন্টেশন কোর্স বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ইন্টেরিম সরকারের সময় স্বভাবই কম বিনিয়োগ আসায় তিনি লো প্রোফাইলে চলে যান। এই সরকারের আমলে দরকার ছিলো পশ্চিমা বিনিয়োগ আনা। চায়নিজ রা শেখ হাসিনার সাথেও কাজ করেছে।

৮| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আমি ছোট মানুষ। বুঝি কম। তাই চুপ থাকি। এটাই ভালো।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পাক সার জমিন বাদ।

৯| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩

আমি নই বলেছেন: স্বল্প মেয়াদের সরকারের সাথে কি বড় বিনিয়োগের চুক্তি করতে চাইবে পশ্চিমারা? আমার মনে হয় না। আশিক সাহেবকে দির্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার দায়িত্ব দিলে হয়ত রেজাল্ট আসত। আশিক যতই যোগ্য, এক্সপার্ট হোন না কেন কিন্তু একবছরেই অনেক বড় বড় বিনিয়োগ আনতে পারবে মনে করাটা ভুল।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আশিক নিজের অফিসে চারজন লোক নিয়োগ দিতে পারছে না। সে সিরিয়াসলি দায়িত্ব পালন করছে কিনা খতিয়ে দেখা উচিত। এসব নিয়োগ মিয়োগ নিয়ে তার অফিসের লোকজন অবশ্যই কথা বলেছে।

আশিক বিনিয়োগ আনতে পারবে না এটা সবাই জানে।

১০| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: পাক সার জমিন বাদ।


পাকিস্তান চলে যান।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশ কে পুরবো পাকিস্তান বানিয়ে ছাড়বো । ভাই ভাইয়ের মিলন ঘটবে আপনার বসে বসে মাথার চুল ছিড়েন ।

১১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আশিক ব্যর্থ না বর্তমান প্রেক্ষাপট তাকে ব্যর্থ করেছে।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কি এমন প্রেক্ষাপট যে নিজের আপিসে চারজন কে নিয়োগ দিতে পারছে না । আসলে জুলাইয়ের কদর কম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.