নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ হাসিনার নির্বাচন বয়কটের ডাক—এতে কাজ হবে ?

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৫



(এই লেখাটি বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন “একই দিনে হাসিনার তিন-তিনটি সাক্ষাৎকার: কীভাবে আর কেন?” থেকে অনুপ্রাণিত)

ভারতের অভ্যন্তরে আশ্রিত এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ তিনটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একযোগে হাজির হলেন, তাও আবার ই-মেইলে। পৃথিবী ঘুরে গেছে, কিন্তু ইন্টারভিউ এখনো ‘ইন্টারনেট কানেকশন’ নির্ভর। মুখ নেই, মাইক্রোফোন নেই, শুধু প্রশ্নমালা আর ই-মেইল। যেন রাজনীতি নয়, একটা পরীক্ষার খাতা—যেখানে শেখ হাসিনা লিখছেন, আর বিশ্বজগত দেখছে, তিনি এখনো লিখতে পারেন কিনা।

এই ই-মেইল সাক্ষাৎকারের আয়োজন যেন ভারতীয় গণতন্ত্রের এক নতুন শিল্পরীতি। দিল্লি থেকে অনুমোদন, নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স, তারপর ব্রিটেন, আমেরিকা আর ফ্রান্সের সাংবাদিকরা সবাই মিলে একটা অনলাইন প্রশ্নোত্তর উৎসব পালন করলেন। শেখ হাসিনা মুখ খুললেন না, কিন্তু তাঁর ই-মেইল খুলে গেল। এমন সাক্ষাৎকার পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল—যেখানে ইন্টারভিউয়ার জানেন, প্রতি প্রশ্ন করা যাবে না, আর ইন্টারভিউই জানেন, উত্তর পাঠালেই হবে, মুখোমুখি হতে হবে না।

কেন এই সময়, কেন এই তাড়াহুড়ো? উত্তরটা রাজনীতির চেয়ে নাটকীয়। নভেম্বরেই রায় ঘোষণার সম্ভাবনা, আর তাই রায়ের আগেই একধরনের আবেগীয় আত্মপক্ষ সমর্থন দরকার ছিল। আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি, তাই মাতৃহৃদয়ের বার্তা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় পাঠানোই হয়তো নিরাপদ মনে হলো। ভারতেরও এ নিয়ে আপত্তি ছিল না, কারণ দিল্লি এখন জানে" বাংলাদেশের রাজনীতি ব্যাখ্যা করতে শেখ হাসিনার লেখা চিঠি যতটা কার্যকর, তাঁর উপস্থিতি তার চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

যেভাবে এই সাক্ষাৎকারগুলো প্রকাশ পেল, তা অনেকটা গোয়েন্দা সংস্থার অপারেশনের মতো। তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শর্ত ছিল, সবাইকে একসঙ্গে প্রকাশ করতে হবে, না হলে ইমপ্যাক্ট কমে যাবে। রাজনীতি এখন মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের শিল্প, আর শেখ হাসিনা সেই শিল্পের পুরনো কারিগর। শুধু পার্থক্য এই যে এবার তাঁকে ফ্রেমে পাওয়া যায়নি, পাওয়া গেছে শুধু ইনবক্সে।

দিল্লির এক সাংবাদিক যখন বললেন, এসব কিছুই অমিত শাহের মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র ছাড়া সম্ভব নয়, তখন বোঝা গেল: ভারত সরকার এখন কূটনীতির পাশাপাশি স্ক্রিপ্ট এডিটিংও করছে। শেখ হাসিনা ভারতেই থাকবেন, এ কথাটিও সম্ভবত দিল্লির অনুমতিপত্রেই লেখা হয়েছিল। মোদি সরকার হয়তো এখন বুঝেছে, প্রতিবেশীর রাজনীতি সামলাতে সীমানা নয়, সার্ভারও লাগাম দিতে পারে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বারবার বলেছে, শেখ হাসিনাকে এমন কিছু বলার সুযোগ না দিতে, যাতে দেশ অস্থিতিশীল হয়। কিন্তু মোদি বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কারও মুখে লাগাম টানা সম্ভব নয়। কী চমৎকার ব্যঙ্গ : যে প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশে বাকস্বাধীনতা সীমিত করেছিলেন, তিনি এখন ভারতের অতিথি হয়ে বাকস্বাধীনতার প্রতীক!

তবু সবচেয়ে কৌতূহলজনক অংশ ছিল ভোট বয়কটের ডাক। শেখ হাসিনা হঠাৎ ঘোষণা দিলেন, আওয়ামী লীগ যেন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে না যায়। মনে হলো, নিজের রাজনৈতিক জীবনের প্রতিধ্বনি শুনছেন তিনি: যেমন একসময় অন্যদের বয়কটকে ‘গণতন্ত্রবিরোধী’ বলেছিলেন, আজ সেই শব্দটাই নিজের পক্ষ থেকে পাঠাচ্ছেন। এটি রাজনীতি নয়, আত্মসমর্পণের এক শৈল্পিক ঘোষণা।

ভারত যদিও এখনো বলে যাচ্ছে : নির্বাচন হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। কিন্তু শেখ হাসিনা বুঝে গেছেন, যে অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হচ্ছে, সেখানে তাঁর দল অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই বয়কট এখন তাঁর শেষ কূটনৈতিক অস্ত্র। যেন হারার আগেই হেরে যাওয়ার এক সাহসী ঘোষণা।

কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়, এতে কাজ হবে? বয়কটের ডাক কি আন্তর্জাতিক সহানুভূতি পাবে, নাকি এটাও ইতিহাসের পাতায় আরেকটি “লিখিত সাক্ষাৎকার” হয়ে হারিয়ে যাবে? রাজনীতিতে সময়ের চেয়ে শক্তিশালী কিছু নেই, আর সময় এখন শেখ হাসিনার বিপক্ষে। ভারত তাঁকে রেখেছে, কিন্তু তাঁকে চালাচ্ছে না; আর বাংলাদেশ তাঁকে বিচার করছে, কিন্তু ভুলছে না।



মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:২৬

মেঘনা বলেছেন: জামাত পন্থীরা যেহেতু হাসিনা বিরোধিতাকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধিতার পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তাই হাসিনা এখনো প্রাসঙ্গিক।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:০৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমাতি কিংবা জামাতি কাউকে বিলিভ করি না ।

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৬

ঢাবিয়ান বলেছেন: নির্বাচন / ভোট বয়কটের ডাক দেয়াটা খুব পছন্দ হইসে। ১৭ বছরের গুম, খুন গনহত্যার সমর্থকদের আসলেই ভোট দিতে যাওয়া উচিত না। গেলেতো খুজে খুজে সেই ধরনের প্রার্থীদেরই ভোট দিবে। তাই এদের ভোট বয়কটই দেশের জন্য উত্তম।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:০৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনা ইলেকশন বানচাল করতে চান । জামাত উনাকে হেলপ করছে ।

৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:১৭

নতুন বলেছেন: একটু অনুসুচনা যদি থাকতো তবেও চলতো।

আয়ামীলীগকে বাচাতে হলে নতুন নেত্রিত্বে দল শুরু করতে হবে। সন্ত্রাসী, দূনিতিবাজ দিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসতে চায় শেখ হাসিনা?

আসলেই তিনি বুঝতে পারছেন না তিন কি করেছেন? কি তার অপরাধ? /:)

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:২৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সামু থেকে ইমেইল করে জানিয়ে দিলে ভালো হয় । :)

৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৮

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



এসব গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে আপনি নিজে লিখতে পারেন না? কাদের বেকুবী ভাবনাচিন্তা ব্লগে নিয়ে আসেন কেন?

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: লিখতে আলসেমি লাগে । জুলাই সনদ নিয়ে লিখতে গিয়ে আলসেমিতে লিখা হলো না ।

৫| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫১

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:




দুতাবাসকে নির্বাচন করতেই হবে, দেশকে স্বাভাবিক বলে ঘোষণা করার জন্য; নির্বাচন হলে, ক্রমেই আওয়ামী লীগ বের হয়ে আসবে।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জুলাই সনদের নাটকের কারণে শেখ হাসিনার ইনটারভিউ ধামাচাপা পড়ে গেছে । আলজাজিরা বনাম রয়টারস, এএফপি এবং The Independent (UK) খেলা জমে উঠেছে ।

৬| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৭

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:




আগামী আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নাম নিবে না।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনা দেশে না আসলে রাজিব নুরের মন খারাপ হয়ে যাবে । উনাকে বুঝান । :P

৭| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৪

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



শেখ হাসিনা ব্যতিত যেই আওয়ামী লীগ হবে, সেটাই যদি জাতিকে রক্ষা করতে পারে; এর বাইরে কিছু নেই, সবই রাজাকার ও বেদুইন।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:৪২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দেখা যাক কি হয় ।

৮| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:৪১

আদিত্য ০১ বলেছেন: এই পোস্টটি দেওয়ার জন্য
ঢাবিয়ান, কাউঠাল, জটিল... ও জুল্ভার্নের পক্ষ থেকে আপনাকে পরিবেশ বান্ধব গাছ আর "আয়নাঘরের ৫০ বছরের গামছা ভিজা" নামক এক গাট্টি বই উপহার দেওয়া হল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.