নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ মরে গেলে পঁচে যায় আর বেঁচে থাকলে বদলায়

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/ নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর! আম্মার মিয়ার মধ্যে ওসমান হাদির ছায়া দেখতে পেয়ে কী যে ইমোশনাল হয়ে গেলাম। অবশ্য এর আগেও কতিপয় বিপ্লবী নারী এই ধরনের বাণী উচ্চারণ করেছেন, কিন্তু পাবলিকলি শোনার মানসিক প্রস্তুতি ছিল না। মেয়ে মানুষ শা* উয়া স্লোগান দিচ্ছে আর আমি ওপেন প্লাটফর্মে কেবলা কান্তের মতো দাঁড়িয়ে শুনছি -এমন বেয়াদব কোনো কালেই ছিলাম না ।

গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে যারা অংশ নিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই একেকজন হাদি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্লোগান হিসাবে গালাগালির প্রচলন করেছেন প্রয়াত ওসমান হাদি; নিন্দুকেরা এই কথা যতই বলুক না কেন, তারা ভুলে গিয়েছেন সব জায়গায় সুশীল হলে চলে না। ইউনুস সাহেব সুশীল বলেই তো সবাই উনার মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাচ্ছে। ওসমান হাদি সেই সুশীলদের চুদলিং পং (চায়নিজ গালি) করে দেয়ার জন্য গালির আশ্রয় নিয়েছেন। এটা আসলে এক মহান স্ল্যাং রেভলিউশন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। হাদি ভাই জেন-জি এবং আলফা জেনারেশনের কাছে বিপ্লবী হিসাবে পূজিত হবেন, সন্দেহ নেই।

ইশ্বর থাকেন যে ভদ্রপল্লীতে সেখানে আমার জন্ম হলেও জীবনের বেশ কিছুটা সময় কেটেছে নিম্নবিত্ত এলাকায়। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা ছিলাম সেখানকার বাড়িওয়ালা। নানা কিসিমের গালাগালি শুনে বড়ো হয়েছি। সমবয়সীদের তুলনায় যৌনতা বিষয়ক জ্ঞান আমার ঢের বেশি ছিলো; এর কারণ সেখানে দারিদ্র্যের নির্মম বাস্তবতা। একটি মাত্র রুমে স্বামী-স্ত্রী-সন্তান একসাথে বাস করতো, ফলে শিশুদের সেক্স এডুকেশনের প্রাথমিক হাতেখড়ি হতো নিজের জন্মদাতা পিতা-মাতার কাছ থেকেই। মদ, গাঁজা, নারী—সব কিছুই ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ছোটবেলায় শিশুদের মধ্যে বড়োদের অনুকরণের যে প্রবণতা থাকে, সেটা সেখানে প্রতিদিন দেখতাম।

আমাদের এক রুমে ভাড়া থাকতো জাকির এবং তার মা। জাকির আমার সমবয়সী ছিল, তাই একসাথে ক্রিকেট খেলতাম। আমাদের বাসায় ডিশ ছিলো না, বিটিভি দেখতাম। জাকির তার মায়ের সাথে যেত যেখানে তার মা ব্যাচেলরদের জন্য রান্না করতো—সেখানে ডিশ ছিল। জাকির আমাকে নানা ছবির কাহিনী শোনাতো। মাঝেমধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের কিছু দৃশ্যের কথা বলতে চাইলেও আমি শুনতাম না, শুধু রেসলিং এর গল্প শুনতে চাইতাম। একদিন জাকির আমাকে গালির দর্শনশাস্ত্র শেখাচ্ছিল। তার মতে, কুত্তার বাচ্চা বা শুয়োরের বাচ্চা—এসব আদৌ গালির পর্যায়ে পড়ে না। আসল গালি হতে হলে 'চ' শব্দ থাকা বাধ্যতামূলক। 'চ' ছাড়া গালি মানে শুধু সময়ের অপচয়। এই গভীর জ্ঞান আমার মাথায় গেঁথে গিয়েছিল।

বহু বছর পর এই স্মৃতি মনে পড়লো ইন্ডিয়ান কমেডি ওয়েব সিরিজ "মামলা লিগ্যাল হায়" দেখার সময়। একজন লোক তার পোষা তোতাকে নানা রকম গালি শেখায় শুধুমাত্র স্থুলকায় চাচীকে শোনানোর জন্য। চাচী রেগে গিয়ে তোতার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন। তোতার মালিক যখন এক মহিলা উকিলের কাছে যায়, উকিল অভয় দেন: চিন্তার কিছু নেই, তোতা খালাস পাবে। কারণ লোকটি যেসব শব্দ শিখিয়েছে, সেগুলো আদৌ গালি নয়। যেখানে 'চ' যুক্ত শব্দ নেই, সেখানে গালির কোনো আইনি ভিত্তি নেই। মাদার চো*, বেহেন চো* এগুলোই আসল গালি। তাই তোতার জামিন পেতে কোনো বাধা নেই। সেই মুহূর্তে জাকিরের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল, ভাবলাম দেখো তো, জাকিরের দর্শন ভারতের আদালত পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই গালিময় স্লোগানকে অনেকে ডানপন্থীদের আন্তর্জাতিক ভাষার সাথে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছেন। তাদের যুক্তি: ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সমর্থকরা তো 'চ' শব্দ যুক্ত গালি দিয়েই কথা বলেন। আমেরিকানরা সারাদিন 'ফা*ক ইউ' বলে বেড়ায়, আর দোষ হয় শুধু আমাদের হাদি ভাই আর আম্মার ভাইয়ের। পুরো জেন-জি প্রজন্ম গালিতে পিএইচডি সম্পন্ন করে ফেলেছে, অথচ সুশীলেরা হাউকাউ লাগিয়ে বসে আছেন—কেন গালিকে রাজনৈতিক স্লোগান বানানো হচ্ছে। জেন-জির মুখের ভাষাই এমন—এটা যদি মেনে নিতে না পারেন, তাহলে মুড়ি খেয়ে ঘরে বসে থাকুন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০১

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: স্ল্যং কোণ অবস্থাতেই গ্রহনযোগ্য্য না। এমনকি জীবিত হাদীর স্ল্যংও নয়। মির্জা ফখরুলের জামাতা ফাহামের অশ্রাব্য ভাষা নিয়া আর কি বলব! এত উচ্চশিক্ষিত লোকের কি ভাষা! ইউটিউবারদের অশ্রাব্য ভাষার কথা বাদই দিলাম। এদিক দিয়ে সাদিক কাইউম , নাহিদ , আসিফেরা খুবই সংযত। এনসিপির বেশিরভাগ নেতা নেত্রীই অবস্য একরকম। টকশোগুলোতে গিয়ে এরা ফাটিয়ে দেয় বিতার্কিকের মত স্পীচ দিয়ে। ্মনেপ্রানে এদের সংসদে দেখিতে চাই ৫৪ বছরের বানরদের সার্কাস পার্টিতে ( সংসদ) পরিবর্তন আনতে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কিসের সাথে কি মেলালেন ? ফাহাম আবার কোন কালে রেভলিউশন করেছে ? এসব চুনোপুটির সাথে হাদি ভাইয়ের তুলনা টানবেন না ।

আপনার এনসিপি জামাতের পেটের ভিতর ঢুকে ৮০ বছরের ঘানি টানবে । নুরল হক নুর এবং রাশেদ খান ঠিক কাজ করেছে।

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৬

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

এদিক দিয়ে সাদিক কাইউম , নাহিদ , আসিফেরা খুবই সংযত। আহা! আহা! গো সোনা আমার! চুম্মা শফির মুরিদের কথা শুনো! ছুপা রাজাকার কি মানুষে স্বাদে কয়?

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৬

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যার কাছে যাকে ভালো লাগে ; তাসনিম জারাকেও লাইক করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.