![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন কে ভালবাসি
কোথায় যেন পড়েছিলাম, এডলফ হিটলার ছোটবেলাই নিজেকে জার্মানির শাসক হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন । পরবর্তী জীবনে এক সাধারন পরিবারের ছেলে হিটলার জার্মানির শাসক তো হয়েছিলেন, এমনকি বিশ্ব শাসনের স্বপ্ন দেখেছিলেন । ইতিহাস যেহেতু সবসময় বিজয়ীদের পক্ষে থাকে, তাই তার নাম ইতিহাসের আস্তাকুরে গিয়ে পড়েছে । অন্যথাই, হিটলারের নাম হইত ইতিহাসের পাতাই স্বর্ণাক্ষরে লেখা হত ।
যাইহোক, আমি আদার ব্যাপারী, জাহাজের খবর না রাখায় উত্তম ! তার চাইতে আমি আমার এক বন্ধু ও এক অল্প পরিচিত মানুষের কথা বলি। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় একদিন এক কৌতূহলী শিক্ষক ক্লাসে এসে জিজ্ঞাসা করেছিলেন “তোমাদের মধ্যে কে কে ভবিষ্যতে ছাত্র রাজনীতি করবে? (এখনকার কথা জানি না, আমাদের সময় স্কুলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল)”। সবাই বুঝে হোক না বুঝে হোক নিচ্চুপ থাকলেও আমার এক সাহসী বন্ধু বলেছিল “আমি করব” । আমার সেই বন্ধু তার কথা রেখেছে, পরবর্তী জীবনে সে ছাত্র রাজনীতি করেছে, এবং আমার জানা মতে এখনও করে । আমি গর্বিত আমার ওই বন্ধুর জন্য , যেখানে আমারা সবাই পপি গাইড, পাঞ্জেরি গাইড মুখুস্থ করে বা আমাদের বাব-মা বা পাড়াপড়শির কথা শুনে জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে, বুক চিতিয়ে বলতাম “ডাক্তার হমু !” গরুর ডাক্তার না মানুষের ডাক্তার না দাঁতের ডাক্তার তাও জানতাম না । সেখানে ওর ছোট্ট মাথা খাতিয়ে ও ঠিক করেছিল জীবনের লক্ষ্য । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমার বন্ধু রাজনিতির তৈলাক্ত বাশ বেঁয়ে বেশী দূর উঠতে পারেনি । অনেক বছর আগে যেখানে ছিল আমার জানা মতে আজও সেইখানেই । ওর ক্যারিয়ারের শুরুতেও ছিল কর্মী এখনও কর্মী । কারন, আমার বন্ধুর বড় কোন রাজনীতিবিদ মামা, খালু নাই।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে আমার একটি ছেলের সাথে স্বল্প পরিচিত হবার সৌভাগ্য হয়েছিল । এক কথাই তার বর্ণনা এইরকম “সেই সময় সে একটা বাংলা বাক্য ভালভাবে গুছিয়ে বলতে পারত না ।” বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার পরে একদিন পত্রিকাই তার ছবি দেখে চমকে উঠলাম । তৈলহীন বাঁশ বেঁয়ে তরতর করে উঠে, সে এখন বঙ্গদেশের অনেক বড় ছাত্রনেতা । পরে তার এক সহপাঠির কাছে শুনেছিলাম, ওই ছেলের বড় ভাই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক লেজুড়ে এক পেশাজীবী সংগঠনের গুরুতপূর্ণ নেতা ।
সাধারন পরিবারের ছেলেমেয়েদের বাংলাদেশে ভাল করা খুব কষ্টের, শুধু রাজনীতিতে না, সব কিছুতেই। তারপরেও আমি মনে করি সাধারন পরিবারে জন্ম নেওয়া অভাগাদের জীবনের লক্ষ্য চিন্তা করে নিজে নিজে ঠিক করা উচিত। আর নিজেকে সেই ভাবে গড়ে তোলা এবং লক্ষের দিকে অবিচল থাকা উচিত। সাফল্য একদিন আসবেই ।
©somewhere in net ltd.