![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন কে ভালবাসি
সরকারী primary স্কুলে পড়ার সময় দেখতাম, আমাদের স্যারএরা ভাঙ্গাচোরা বাইসাইকেল ঠেলে স্কুলে আসত । আসার পরে নিজের হাতে ঘণ্টা বাজিয়ে ক্লাস এ ঢুকত । অনেককে বিকালে দেখতাম বাড়ি লাগয়া তার পান বিড়ির দোকানে পার্টটাইম হাজিরা দিত অথবা খেত- খামার দেখত, সংসারে একটু সাছন্দের আসায় । হাই স্কুলের শিক্ষকদের অবস্থা সেই তুলনায় একটু ভালই দেখেছিলাম । বিশেষ করে যারা সকাল সন্ধ্যা প্রাইভেট পড়িয়ে গরুকে মানুষ বানানোর আপ্রান চেষ্টা করত । যদিও তাদের বেশির ভাগই ভাঙ্গা সাইকেলে একটা খাবারের ঝোলা ঝুলিয়ে স্কুলে ঢুকত । কলেজে পড়ার সময় শিক্ষকদের অবস্থা অনেক ভাল দেখেছিলাম । কারন, বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম, আর কলেজে বিজ্ঞানের শিক্ষকদের রমরমা টিউসনির ব্যবসা । ভাবলাম যাইহোক, স্কুলের কম শিক্ষিত স্যার এরা অনাহারে অধাহারে থাকিলেও উচ্চ-শিক্ষিত বড় স্যারএরা অনেকটা রাজার হালে থাকে । তাই একদিন আমার অতি বিচক্ষন বন্ধু নিয়নরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টারগো কথা জিগাইলাম । এর কারন, নিয়নের অনেকগুলো বড় ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে বা পড়ছে । যাইহোক, নিয়ন আমাকে এক অদ্ভুত গল্প শুনিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নাকি ইয়া বড় গাড়িতে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে আবার একখান ক্লাস নিয়ে ভোঁ করে চলে যায় । আর সপ্তাহে এই ঘটনা একদিনই ঘটে, কারন একজন শিক্ষক সপ্তাহে ১ টার বেশী ক্লাস নেয় না । ওর কথা শুনে আমার মনে হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দুনিয়াতেই জান্নাতের স্বাদ লাভ করে । আমার ভুল ভাঙল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পরে । যখন দেখালাম, আমার স্যার এরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে বড় গাড়িতেই, তবে টিচার বাসে । আর একদিন না, প্রতিদিনই আসে ।
আমার এত কিছু লেখার কারন গত ৭ তারিখে প্রথম আলোতে রউফুল আলম ভাইয়ের একটি সুপাঠ্য আর্টিকেলঃ লিঙ্ক Click This Link
যেখানে উনি ব্যাকভাল (Backvall) নামের একজন সুইডিস অধ্যাপক সম্পর্কে অনেক কিছু লিখেছেন । ক্লাস নেওয়ার প্রতি উনার দায়িত্ববোধ, উনার গবেষণা ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদি । পরিশেষে উনি আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করে লিখেছেন “দয়া করে ঠকাবেন না ।” Rauf ভাইয়ের কাছে আমার প্রশ্ন, অধ্যাপক ব্যাকভাল বছরে কয়টা ক্লাস নেয় ? দয়া করে জানাবেন । আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখি, জাপানে আমার গাইড (সুপারভাইজার) একজন সহযোগী অধ্যাপক । উনি বছরে একটা কোর্স নেন । আড়াই মাসের টার্ম, সর্বমোট ১৮ টা লেকচার । আর আমার মাস্টার্স এর সুপারভাইজার কে (উনিও তখন সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন) দেখতাম সপ্তাহে ৫ টা লেকচার সাথে ল্যাব ক্লাস ১ টা (৪ ঘণ্টা মেয়াদী)। অর্থাৎ একজন জাপানী সহযোগী অধ্যাপক সারা বছরে যে ক্লাস নেয়, আমাদের দেশের একজন সহযোগী অধ্যাপক তা নেই এক মাসেই । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের কাছে আমি শুনেছিলাম, “বাহিরে পড়তে এসে বেঁচে গিয়েছি, না হলে ক্লাস নিতে নিতে মরে যেতাম । একটা ক্লাস নিয়ে আসে সোফার একটু গা এলিয়ে দিয়ে আবার ছুটতাম ক্লাস নিতে।“Rauf ভাই গবেষণা নিয়ে বেশ কিছু কথা বলেছেন। আমার প্রশ্ন “ভাই একই গরুকে দিয়ে হাল চাষ করাবেন আবার দুধও দোয়াবেন তা কি হয় ?” এক সদ্য নিয়োগ পাপ্ত শিক্ষক তার প্রথম মাসের বেতন দিয়ে তার প্রথম ব্যাচের ছাত্রদের মিষ্টি খাওয়াতে চেয়েছিলেম, উনি মিষ্টি খায়িয়েছিলেন । তবে ৩ মাস পরে, কারন লাল ফিতার বাধন খুলে উনি ৩ মাস পরে তার প্রথম মাসের বেতন পায় । আমার মাস্টার্স এর সুপারভাইজার তার গবেষণার জন্য U. G. C. award পেলেন, উনি লন্ডন থাকায় তার পক্ষে আমি গেলাম পুরস্কার নিতে গেলাম । গিয়ে দেখি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় ঘোষণা করিতেছেন “যে সব শিক্ষক গবেষণার সাথে যুক্ত থাকবে তাদের পৃথক বেতন স্কেল দেয়া হবে!” এর মাঝে বোঝা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের জন্য গবেষণা বাধ্যতামুলক কিছু না । যাই হোক, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক বিভাগের আমার পরিচিত একজন অধ্যাপক আমার পাসে বসে ছিলে (পুরস্কার নেওয়ার জন্য)। স্যার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে বললেন তা হলেও আমি পাব না (পৃথক বেতন স্কেল), কারন আমি রাজনীতি করি না ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫২
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমাদের দেশের শিক্ষকেরা সবচেয়ে অবহেলিত| মাঝে মাঝে শুনি ছাত্ররাও নাকি শিক্ষককে পিটায়, বুঝিনা এরা কি ধরনের ছাত্র