নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুন দিনের স্বপন

আমি এই মুহুতে জাপানে ধাতব বিজ্ঞানের উপর পি এইচ ডি করছি । ভাল লাগে বই পরতে । অবসরে ফেসবুক বা ব্লগ এ লিখি । স্বপ্ন দেখি ভাল মানুষ হওয়ার ।

কুয়াসা

জীবন কে ভালবাসি

কুয়াসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাস্যকর বাংলাদেশী উচ্চশিক্ষার কারিগরেরা ।

২৩ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৫:৪৮

জাপানে, আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে PhD করি, সেখানে গত বছর এক বাংলাদেশী ভদ্রলোক মাস্টার্স করতে এসেছেন । একটু বলেনি, উনি বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক । ভদ্রলোক একদিন দুঃখ করে আমাকে বললেন, তার জাপানী প্রোফেসর খুব পাজী! উনাকে তার প্রোফেসর ডাকে প্রোফেসর ক... (নাম প্রকাশ করা হল না) বলে । যেমন, প্রোফেসর ক... তুমি কি এটা করেছ, প্রোফেসর ক... এই প্রবলেম টা সল্ভ কর ইত্যাদি । যাইহোক, তার ল্যাবের মধ্যে একমাত্র তাকেই নামের আগে প্রোফেসর বলে সম্বোধন কর হয় । যদিও তার ল্যাবে অনেক PhD বা Post-Doc থাকলেও তাদের এই সন্মান দেওয়া হয় না । কারন তারা বিদেশী হইলেও তাদের নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক না ।

আমার প্রোফেসর সময় সুযোগ পাইলেই, বিশেষ করে কোন ল্যাব পার্টিতে আমাকে আমার দেশ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে । উনার ল্যাবে বাংলাদেশী PhD ছাত্র (বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক না) থাকলেও উনার বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারনা খুব কম । হটাত, একদিন উনি আমার কাছে বাংলাদেশের শিক্ষা-বাবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলেন । উনার শুরুটা এই রকম, “কুয়াশা, আমি তোমার দেশ থেকে অনেক ই-মেল পাই । আমার ল্যাবে মাস্টার্স বা PhD করতে চাই, কিন্তু মজার ব্যাপার তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপক। একমাত্র বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে থেকেই আমি এই বিদঘুটে ই-মেল পাই । তোমাদের পাশের দেশ ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সাধারনত Post-Doc এর ব্যাপারে আমার কাছে লেখে । আমার প্রশ্ন তোমাদের দেশের শিক্ষা বাবস্থা কি রকম যেখানে মাস্টার্স না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হওয়া যায় ?পুরাই হাস্যকর !”

আমি তার প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারি নাই, বলতে পারি নাই পৃথিবীতে আমারাই একমাত্র জাতি যেখানে অনার্স পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যাই । আর বাংলাদেশী কোন বিশ্ববিদ্যালয় কেন এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জাইগা পেল না, সেই চিন্তাই আমরা বাংলাদেশিরা অস্থির হয়ে পড়ি !

আমার এক ছোট ভাই অনার্স শেষ করে রাজনৈতিক বিবেচনায়, এক নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসাবে ঢুকে ১০ মাসের মাথায় বিভাগীয় প্রধানের চেয়ারে বসে পড়েছে । এই আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষার স্থান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা। আর আমরা চিন্তা করি, কেন এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থাকলাম না । শুধু বিল্ডিং, চেয়ার-টেবল, ব্ল্যাকবোর্ড থাকলেই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় বলা যায় না । প্রাইমারি স্কুলেও এগুলো থাকে ।

হাস্যকর বাংলাদেশী উচ্চশিক্ষার কারিগরেরা ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৬:২৩

জাহাজ ব্যাপারী বলেছেন: আশা করি আপনিই হবেন বাংলাদেশের সিরিয়াস উচ্চশিক্ষার দিকপাল।
কুয়াসা নাকি কুয়াশা – আপনার নিজের নামের বানান দুই জায়গায় দুই রকম!

২| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৭:৩৩

কুয়াসা বলেছেন: জাহাজ ব্যাপারী নামে কি আসে যাই! আপনার নামটাও আশা করি আকিকা দেওয়া নাম না ? আমি ব্লগ এ রেগুলার না, তাই আকিকা না দেওয়া নাম মনে রাখা কষ্টকর । ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য ।

৩| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৭:৫৮

মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেছেন: পরিবর্তন হচ্ছে আস্তে আস্তে...... হয়তো আরও সময় লাগবে তবে এক সময় হয়ে যাবে...... "পৃথিবীতে আমারাই একমাত্র জাতি যেখানে অনার্স পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যাই ।" ভাই সব বিশ্ববিদ্যালয় চাই উচ্চশিক্ষিত শিক্ষক কিন্তু বাংলাদেশে সেইরকম উচ্চশিক্ষিত মানুষ কয়জন আছে?

৪| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৮:৫৩

আহম্মেদ রানা বলেছেন: ভোট ছাড়ায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে, শক্তিশালী সরকার হতে পারলে; মাস্টার্স ছাড়া শিক্ষক হওয়া যাবে না কেন !!!

৫| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৫৭

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: লেখকের সাথে একমত।
তবে অনার্স করে লেকচারার হওয়াতে আমি অন্যায় কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। সহকারী বা সহযোগী অধ্যাপক হতে হলে অবশ্যই নূন্যতম মাস্টার্স বা তদূর্ধ ডিগ্রী থাকাটা বাঞ্ছনীয়।

৬| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

আব্দুল্যাহ বলেছেন: আমাদের এক শিক্ষকতো পাশ করেই ঢুকে পড়লেন। বিভাগীয় চেয়ারম্যানের সহয়তায় তিনি নিজেই এখন শেষ বর্ষের ক্লাস নেন। ভাবুন একবার, আমাদের দষাটা কি?

৭| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০

কুয়াসা বলেছেন: আমি রসায়নের ছাত্র । বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স করা । আমার মাস্টার্স এ মেজর ছিল, ভৌত রসায়ন বা physical chemistry. Physical কেমিস্ট্রির একটি ইম্পরট্যান্ট আর কঠিন পার্ট সারফেস কেমিস্ত্রি । এর জন্য অনেক অত্যাধুনিক এবং দামী instrument লাগে । আমাদের মত গরিব দেশে এটা সাপোর্ট করা সম্ভব না । তাই আমরা থেওরিটিকাল সারফেস কেমিস্ত্রি পরতাম । যাইহোক, মাস্টার্স এ আমাদের এই কঠিন ক্লাস টা নিয়েছিল, সেই সময় সদ্য রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্ত একজন প্রভাষক । যদিও আমাদের ডিপার্টমেন্ট এ PhD করা এবং এই বিষয়ে অভিজ্ঞ (theoretical and practical) শিক্ষক ছিল । কিন্তু তাকে এই ক্লাস টা নিতে দেওয়া হয় । পরে শুনেছিলাম, উনি জোর করে ক্লাসটা নিয়েছিলেন। উনার শেখার দরকার তাই । দেশের বাহিরে আবার মাস্টার্স করতে যাবে! ক্লাস এ উনি উইকিপিডিয়া থেকে কপি করে এনে লেক্চার দিতেন। ফলাফল, সারফেস কেমিস্ত্রি আমার কাছে দুর্বোধ্য একটি বিষয়ে পরিনত হল । PhD করতে এসে আমার প্রোফেসর কে বুঝানোই দায় হল যে আমি সারফেস কেমিস্ত্রির কিছুই পারি না । কারন আমার ট্রান্সক্রিপ্ত এ দেখা যাই আমি এই বিষয়ে এ+ প্রাপ্ত ছাত্র । যাইহোক, পরে এখানে আবার এই ক্লাস টা করে সারফেস কেমিস্ত্রি শিখতে হল । মজার ব্যাপার, এখানে এই লেকচারটা দেই এই বিষয়ে সব চাইতে অভিজ্ঞ প্রোফেসর ।
So, আব্দুল্যাহ সাহেব হতাশ হবার কিছু নেই ।আপনার শিক্ষকের ক্লাস করেন এ+ অর্জন করেন ।পরেরটা পরে দেখা যাবে।

৮| ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৪৪

আশিক ইলাহি বলেছেন: স্যার আপনার লেখাটা অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ সুন্দর একটা লেখার জন্য।

৯| ২৪ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:১৪

কোলড বলেছেন: Physical chemistry is one of the most difficult subset of chemistry. One preliminary pass course graduate used to teach this course while I was in DU. I learned and paid a heavy price for that later in USA.

১০| ২২ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:২৪

অলস টিউনার বলেছেন: এ জন্যই আমাদের দেশের এই অবস্থা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.