নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাসিক মুকুল

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..

লুৎফুরমুকুল

আমি এক উদাসী পাখি নিঝুম রাতে নদীর তীরে করি ডাকাডাকি। আমি এক মুকুল সবুজ লালের বুকে আছি জুড়ে মায়ের দু'কূল। আমি এক স্বপ্নদেখা ছবি ভাল লাগে আকাশ বাতাস ভাল লাগে সবি।

লুৎফুরমুকুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মরুভূমে এক চিলতে অরণ্য

১১ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৪১

মরুভূমে এক চিলতে অরণ্য

লুৎফুর রহমান



আমাদের কাছে লাগছে আমরা যেন সিলেটের শ্রীমঙ্গলেই আছি। চারদিকে নানা প্রজাতির গাছ ও অরণ্যের হাতছানিতে পরবাসী পর্যটকদের দল অভিভুত। আমাদের বুঝতেই কষ্ট লাগছে এটা বাংলাদেশ নাকি আরব আমিরাতের দুবাই। জানুয়ারি মাসে এখানে গরম নাই বললেই চলে তাই আমরা স্বাচ্ছন্দে বাইরে ঘুরতে পারছি। উুঁচু-নিচু টিলার বুকে সারি সারি গাছ। নানা প্রজাতির বনজ উদ্ভিদ শুধু বিস্ময় নয় বিশ্বাসই বাড়িয়ে দেয় এই 'মুশরিফ পার্কে। আমরা গাড়ি পার্কের সামনে রেখে ৩ দেরহাম করে টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকলাম। আমাদের দলে রফিক ভাই, জাবেদ ভাই, রিমন ভাই, এহসান ভাই ও আমি। প্রবেশপথের চারদিকে সারি সারি গাছের অরণ্য জানান দেয় ডুব দিতে ভাবনার সাগরে। তবে কি যেন নেই এখানে। হ্যা। আমাদের দেশের মতো সবুজ নেই। আছে মরা পাতার গাছ। আছে কৃত্রিমভাবে কাজকরা অনেক কারুকাজের বাগান। দুবাই মিউনিসিপালিটির জরাত (গার্ডেনার) দ্বারা এসব বাগান খুব যত্ন করে গড়ে তুলা হয়। আর এসব বাগানকমৃীর বেশীরভাগই বাঙালি। পাকিস্তানী ও ভারতীয় লোক থাকলেও বাঙালির সংখ্যা সিংহভাগ।



মুশরিফ পার্ক আরব আমিরাতের ইকো ট্যুরিজমের প্রধান অংশ। এদেশের পরিবেশ সবুজের প্রতিকূল হলেও নানাভাবে আন্তরিক শ্রম আর পরিকল্পনা দিয়ে সাজানো হয়েছে পার্কটি। এটি দুবাই শহরতলীর খাওয়ানীজ এলাকায় অবস্থিত। দুবাই শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার পূর্ব দিকে এর অবস্থান। ১৯৮০ সালে দুবাই মিউনিসিপালিটি দ্বারা এর নির্মাণ হয়। অবশ্য পরে ১৯৮৯ সালে এর পরিমার্জন আনা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে সুইমিং পুল। বাচ্চা ও পরিবারের জন্যে বিনোদনের নানা উপকরণ। বিশাল বিস্তৃত জায়গা নিয়ে গড়া এ পার্কটি শুধু চিত্ত বিনোদনের জন্যে নয় বরং শিক্ষার জন্যেও গহীন অরণ্যে আসেন উচ্চ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। ১৩০০ একর পর্বত মরুর উপর নির্মিত এ পার্কে রয়েছে সুন্দর করে গোছানো পিরামিড। রয়েছে প্রায় হাজারের অধিক গাছ গাছালি। তাছাড়া মিনি চিড়িয়াখানার অদ্ভুদ প্রাণীও মন যোগায় আর জাগায়। চিড়িয়াখানার পাশে রয়েছে ইংলিশ ট্রেডিশনের নানা ঘর বাড়ি। ইন্দোনেশিয়া, ফিলোফিনসহ উন্নত দেশগুলোর গল স্থান পেয়েছে। তবে আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশের মতো ঘর দেখে চোখ জোড়া স্থির করলে অবশেষে দেখা যায় এটা অন্যদেশের। বাংলাদেশের কোনো ঘর স্থান পায়নি এখানে। ঘর গুলোর পেছেনে ঝর্ণা ধারা আপনার মনকে যেমন শান্ত করবে ঠিক সবুজ ঘাসের চাদর বিছানো বিশাল মাঠ আপনার শৈশবকে হাতছানি দেবে নি:সন্দেহে।



আমরা দুবাই মিউিনিসিপালিটির বাস করে পার্কের বুক চিরে যাচ্ছি। চারদিক ঘুরে দেখাচ্ছেন আমাদেরকে। মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেলাম আমরা। ট্যুর গাইড সাথে গাড়ি। ফেলপেল করে পার্কের ভেতরে যখন হাঁটছিলাম আমার পরিচিত পাকিস্তানী বাস ড্রাইভার ডাক দিয়ে আমাদের গাড়িতে তুলেন। আর নিজেই সব দিক দেখাতে থাকেন। পার্কের জায়গা এতো বিশাল পায়ে হেঁটে চারদিক দেখা সম্ভব হতোনা। পাকিস্তানী ড্রাইভারের কল্যাণে দেখা হলো নানা প্রজাতির পাম গাছ সহ নানা ধরণের বৈচিত্রময় বনজ উদ্ভিদ। গাড়ি থেকে নেমে এবার চললাম সুইমিং পুলের উদ্দেশ্যে। ৫ বছরের পরবাস জীবনে শাওয়ার ছাড়া হাত পা নাচিয়ে সাঁতার কাটা হয়নি। বাংলাদেশের গ্রামের ছেলে। হাত পে ছেড়ে সাঁতার না কাটলে কেমন যেন সাধ মেটেনা। আমি রফিক ভাই আর রিমন ভাই নামলাম সাঁতার কাটতে। ইচ্ছেমতো ডুব দিয়ে সাতার কাটছি। আমাদের সাথে আছে কিছু স্থানীয় আরবীয় ছেলে। আরবী ছেলেরা যে অনেক দুষ্টু হয় আগে শুনতাম তা এদিন টেরও পেলাম ঠিক। ওরা আমাদের সাথে ফাজলামি করতে আসে পানি গায়ে দেয়। আবার ওদেরকে ছবি তুলতে গেলে রেগে যায়। আমরা মন ভরে সাঁতার কাটলাম।



পড়ন্ত বিকেল। সূর্য যখন ডুবু ডুবু দিরচ্ছে মাথার উপর। ঠিক তখনি সূর্যিমামার সাথে আমাদেরও ঘর ফেরা। গহীন অরণ্যের ভেতর থেকে রফিক ভাইকে আনাই যায়নি। উনার যে না জানার প্রতি আকুল টান যে কথা সেদিন বুঝেছি।



সম্পাদক: মাসিক মুকুল, দুবাই। ইমেইল: [email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.