![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি হল নীরবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
জামাত শিবির এখন সারা দেশে যে তাণ্ডব চালাচ্ছে তার প্রধান শিকার হল দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষরা। জামাত-শিবিরের এই তাণ্ডবের শুরু হয় যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাইদির ফাঁসির রায়ের পর থেকে। যদিও এই তাণ্ডবের সূচনা হয় ফাঁসির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কিন্তু পরে তা পরিবর্তিত হয় ‘নাস্তিক’-এর ফাঁসির দাবি এবং ‘ইসলামের অবমাননা’-এর দাবিতে। যে ইসলামের নাম নিয়ে তারা আন্দলনে নেমেছে সেই ‘ইসলাম ধর্মের অবমাননা’-এর দোহাই দিয়ে যখন জামাত-শিবির হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগায়, মন্দির ভাংচুর করে, প্রতিমা ভেঙ্গে দেয়, নিরপরাধ হিন্দুরের মেরে ফেলে তখন কি হিন্দু ধর্মের অবমাননা হয়না? নাকি হিন্দুদের ধর্মটাকে ধর্ম বলে মনে হয়না? তবুও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর এই আক্রমনের কারনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এখন কি করা উচিত? তারাও কি এখন চাচ্ছে না ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হক?
আমাদের ধর্মে অন্য ধর্মের প্রতি ও অন্য ধর্ম পালনকারী লোকদের প্রতি সম্মান দেখাতে বলা হয়েছে। যে যার ধর্ম নিয়ে থাকুক, পালন করুক, তাতে আমাদের নাক গলানোর কি আছে? আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে তাদের উপর আমাদের নির্যাতনের অধিকার তো নেই। তাদের ধর্মের প্রতি আমাদের সম্মান দেখানোর কথা, আমরা আমাদের মত সম্মান দেখাব। কিন্তু আন্দোলনের নামে এই নির্যাতন কেন? অন্য দৃষ্টিকোণ দেখলে এটা কি আমাদের নিজেদের ধর্মের অবমাননা না? জামাত শিবির কি আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে ভাংচুর, হরতাল, পুলিশ হত্যার মত সহিংস কাজ করে আমাদের ধর্মের মর্যাদা নষ্ট করছে না? বাহিরের রাষ্ট্রের কাছে, অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে কি আমাদের ধর্মের ব্যাপারে ভুল তথ্য যাচ্ছেনা। এটা কে কি অবমাননার মধ্যে ধরা যায়না? তাহলে কি এর জন্য জামায়াতে ইসলামের সদস্যদের বিচার হওয়া উচিৎ না? এদের কারনেই এখন টুপি দাড়ি সহ মানুষ দেখলে আড়চোখে তাকায়। যাদেরকে টুপি দাড়ির থাকার কারনে আগে মানুষ সম্মান দেখাত সেই টুপি দাড়ির কারনেই এখন তারা সবার কাছে সন্দেহের পাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারা টুপি দাড়ির এই সম্মান নষ্ট করেছে? এর কারনে কি ইসলামের দুইটা সুন্নতের মর্যাদা নষ্ট হয়নি? হয়েছে। তাহলে এর জন্য যারা দায়ি তাদের কি বিচার হওয়া উচিৎ না? ‘ইসলাম অবমাননা’-র জন্য যে ফাঁসির দাবিতে তারা মাঠে নেমে সহিংস কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে সেই ফাঁশি কি এখন তাদেরই হওয়া উচিৎ না?
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা, যারা এখন জামাত-শিবিরের সাথে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়ে তাদের হয়ে গাড়ি ভাংচুর করছে, দোকান পাটে আগুন দিচ্ছে, লুট করছে, গাছ কেটে রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে, রেলের লাইন উপড়ে ফেলার মত সহিংস কাজ করছে, তাদের মধ্যে কয়জন সময়মত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ঠিকমত অথবা আদৌ ১ ওয়াক্তও পড়ে? আমার সন্দেহ আছে পড়ে কিনা। এইসব পোলাপানেরা ৫ কালেমার কয়টা এখনও মনে রাখছে এরা কে জানে! আর শেষ কবে যে কোরআন শরীফ পড়ছে তা হয়ত নিজেই ভুলে গেছে। হয়ত কোরআন শরীফ পড়াও ভুলে গেছে। এইসব ‘মুসলমান’ গুলা যে কি বুঝে আর কততুকু কি জেনে জামাতের সাপোর্টে কথা বলে তা আমার মাথায় আসে না। জামাত শিবির কি বুঝায় বা না বুঝায় তা খুব ভাল করে বলতে পারবে যারা আগে মাদ্রাসায় পড়েছে। তাই অনেকেই জামাতের ব্রেইনওয়াশের শুরুতে বুঝতে পেরে সরে যায়। আর যারা সরে না তারাই শেষ পর্যন্ত জামাতের সাথে টিকে থাকে। এদেরকেই টুপি দাড়ি সহ আন্দোলনে দেখা যায়। আরও কিছু পোলাপানকে দেখা যায় যারা টুপি দাড়ি ছাড়া, তারা হল জামাতের ‘হুজুর’-এর কথায় ভুলে সদ্য যোগ দেয়া বেনামাজি পোলাপান। আর এইসব বেনামাজি পোলাপানের ধর্মের ব্যাপারে জ্ঞান খুবই কম, প্রায় শূন্যর কোঠায়। তাই তাদেরকে যে যখন ধর্মের বিষয়ে যা-ই বলে বিশ্বাস করে আর এরপর এইসব তথাকথিত বেনামাজি ‘মুসলমান’ গুলাই সবচেয়ে বেশি লাফালাফি করে এদের সব সমাবেশ, মিটিং, মিছিল, আন্দোলন যা যা হয় সবকিছুতে। এইসব পোলাপানেরাই হল জামায়াতে ইসলামের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার কারন এদেরকে যা বুঝান হচ্ছে, এরা তা-ই বুঝতেছে, বিচার বিবেচনা করে কিছু বের করার মত ন্যুনতম জ্ঞান পর্যন্ত নেই এদের। তাই নিজেদের প্রয়োজন মত ব্যাবহার করে চলছে জামায়াতে ইসলামি নামক সংগঠনটি। তাই জামায়াতের সব মিটিং মিছিলে দাড়ি টুপি ছাড়াও কিছু পোলাপানকে লক্ষ্য করা যায়।
©somewhere in net ltd.