নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথাগুলো বলে ফেলার জন্যে এসেছি

লিসানুল হাঁসান

নিতান্তই সাধারণ মানুষ

লিসানুল হাঁসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছেলেবেলার রোজা

১২ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:২২

আমি ধর্মীয় রিচুয়ালগুলো যতটা না ধর্মভীরুতার জন্য পালন করি তারচেয়ে বোধহয় বেশি পালন করি ট্র্যাডিশন হিসেবে। এর পেছনে আমার বেড়ে ওঠার একটা বড় ভূমিকা আছে। এত চমৎকার একটা পারিবারিক আবহের মাঝে আমরা বড় হয়েছিলাম । ক্লাস ফোর থেকে শুরু করে পুরো স্কুল লাইফ এবং কলেজ লাইফের প্রথম দিকটা আমি কাটিয়েছি নানুবাড়িতে। কি চমৎকার ছিল সে দিনগুলো! প্রত্যেক বেলায় মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া , শুক্রবারে পাঞ্জাবি পড়ে মসজিদে যাওয়া এসব ছিল ভাত খাওয়া , ঘুমুতে যাওয়া টাইপের নৈমিত্তিক কাজ। যেদিন রোজার চাঁদ দেখা যেত সেদিন মাগরিবের নামাজ পড়ে আমরা কালারপোল ব্রিজে যেতাম চাঁদ দেখতে। চাঁদ দেখতে পেলে বাসায় এসে সবাই কে বলতাম সে কথা। রোজায় ইফতারি সবাই এক থালায় করতাম। বিশাল একটা থালায় নানুর ঘরের সবাই মিলে ইফতার খাচ্ছি, বড় মামা ছোলা,মুড়ি ,বেগুনি ,পেয়াজু , আলুচপ ,সালাদ সব একসাথে মেখে নিচ্ছে , আমরা সবাই পাটিতে বসে আজানের অপেক্ষায় আছি এসব স্মৃতি এখন প্রতি রমজানেই আমার মাথায় উকি দেয়।প্রতি রাতে আমরা তারাবি পড়তে যেতাম বাড়ির মসজিদে।পিচ্চি ছিলাম বলে শেষের দিকের সারিতে দাঁড়াতাম।দশ বারো রাকাত যাওয়ার পরেই পা ব্যথা হয়ে যেত। তারপর আমরা কিছু চোরাই টেকনিক ফলো করতাম ।যেমন প্রথম রাকাতে ইমাম সাহেব নিয়ত বাঁধার কিছুক্ষন পর পর্যন্ত বসে থাকতাম। তারপর যেই উনি রুকু তে যাবেন তখন নিয়ত বেধে নিতাম। তবে যতকষ্টই হোক খতম মিস দেবার ভয়ে তারাবি কখনো বাদ দিতে চাইতাম না। তারপরে আসে ভোর রাতের সেহেরি। নানুভাই উঠত আগেভাগে। উনি আমাদের ডেকে দিত। ঘুমঘুম চোখে আমরা ব্রাশ করতাম। একবার দেখা গেল আমি ভোর রাতে উঠে টয়লেটে গিয়েছি ফ্রেশ হতে এবং ওখানেই ঘুমিয়ে পড়েছি। পরে বড় মামা দরজায় ধাক্কা দিয়ে আমাকে ডেকে দিয়েছে। এর পরে আমরা যেতাম আশেপাশের ঘরের মামী- মামার উঠল কিনা সেটা দেখার জন্যে-যাতে কারো সেহেরি মিস না হয়। সেহেরি শেষে সবাই চা খেত। যদিও একটু পরেই আবার ঘুমাবো তবুও চিটাগাং এর মানুষ চা খেতেই হবে। সেহেরিতে সবচেয়ে ভাল্লাগতো ভাতের সাথে পেয়াজু খেতে । ইফতারির সময় বেঁচে যাওয়া পেয়াজু মুরগির মাংসের ঝোলে দিয়ে দেয়া হত। ভোর রাতে সেই রসালো পেয়াজু দিয়ে ভাত খাওয়ার স্বাদ আমার মুখে বোধহয় সারাজীবন লেগে থাকবে।রোজা ৮-১০ টা যাওয়ার পর থেকে শুরু হত ঈদের শপিং । রাতে তারাবি মিস যাবে তাই দিনের বেলা শপিং । আমি নিজে দুইবার রোজা রেখে মার্কেটে জুতার দোকানে ঘুরতে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিক হয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। আমরা যেমন ছেলেবেলা পেয়েছি আমি নিশ্চিত আমাদের পরের পিচ্চিগুলা তেমন ছেলেবেলা পাচ্ছে না। আচ্ছা ওদের ছেলেবেলার গল্পগুলো কেমন হবে!!!!!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



ছেলেবেলায় সবকিছুই আনন্দ দেয়; নিজেদের গোলপোষ্টে বল মারলেও কেহ শাসায় না।

২| ১২ ই মে, ২০১৯ রাত ৯:০৪

নজসু বলেছেন:



স্মৃতিগুলো সুখের অনুভূতিতে ভাসায়।

৩| ১২ ই মে, ২০১৯ রাত ৯:২৬

জুন বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়ে মনে পরলো দুদিন আগেই ভাবছিলাম বেশ ছোটটি থাকতে কাটানো শবেবরাতের সময়ের কথা। সেই মেহেদী দেয়ার ধুম বিকাল থেকে। এর মধ্যেই গৃহকর্মীকে নিয়ে ট্রেতে করে হালুয়া রুটি বিলি বাসায় বাসায়। তারপর মাগরেবের নামাজের আগে আশে পাশের বাসার বান্ধবীরা দল বেধে গোসল করা। যার চুল বেয়ে যত পানি পরবে তার তত সোয়াব। নামাজের সময় পার হয়ে যাচ্ছে আর আমরা ভেজা চুল না শুকিয়ে দেখছি কার চুল বেয়ে কত পানির ফোটা পড়ছে। নামাজে দাঁড়িয়ে একটু পর পর ভুল করা। আবার আম্মাকে জিজ্ঞেস করে আবার দাঁড়ানো। কি অবস্থা। এখনকার ছেলে মেয়েরা এসব কল্পনা করতেও পারে না।

৪| ১২ ই মে, ২০১৯ রাত ৯:৩৩

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ভাল বলেছেন, ছোট বেলা সব সময় আনন্দ দেয়।

৫| ১২ ই মে, ২০১৯ রাত ১০:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমার নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।

৬| ১৪ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ছেলেবেলা.... এক টুকরো রঙিন জীবন...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.