নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথাগুলো বলে ফেলার জন্যে এসেছি

লিসানুল হাঁসান

নিতান্তই সাধারণ মানুষ

লিসানুল হাঁসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গেঁটেবাত এবং বোস্টনে চা-সমাবেশ

১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৫৮


সতেরশো ষাটের দশক। ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ উইলিয়াম পিট দা সিনিয়র গেঁটেবাতের আক্রমণে ধরাশায়ী। পার্লামেন্ট এ যেতে পারছেন না বেশ কিছুদিন। এই ফাঁকে একটা বিল পাশ হয়ে গেল। ব্রিটেন তখন অনেক ঋণের বোঝায় জর্জরিত। এই আইনের ফলে আমেরিকায় ব্রিটিশ কলোনিতে অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায় করা যেত। আমেরিকার অধিবাসীদের এই ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দেয়া তারা কিছুতেই ভালভাবে নিলেন না। উইলিয়াম পিট দা সিনিয়র পার্লামেন্ট এ আসার পর এই আইন বাতিল করালেন।
গেঁটেবাতের আরেক আক্রমণে তিনি আবার বেশ কিছুদিনের জন্য পার্লামেন্ট এ আসতে পারলেন না। এই ফাঁকে লর্ড টাউনসেন্ড নামের একজন রাজনীতিবিদ আরেকটা নতুন বিল পাশ করিয়ে ফেললেন। যেটার মাধ্যমে আমেরিকায় আমদানিকৃত চায়ের উপর বেশ বড়সড় কর আরোপ করা হল। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এ আমেরিকানদের কোন প্রতিনিধিত্ব ছিল না। ব্রিটিশরা আমেরিকানদের সাথে কোন আলোচনা না করেই বারবার তাদের উপর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছিল যেটা আমেরিকানরা মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছিল না। অসন্তোষ আর আন্দোলন দানা বাঁধছিল ধীরে ধীরে।
আমেরিকানরা তখন বছরে প্রায় ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডের মত চা পান করত। চায়ের ওপর এমন অন্যায় ট্যাক্স তাদের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিল। বোস্টন বন্দরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তিনটা চায়ের জাহাজ নোঙ্গর করা ছিল। এতে ছিল প্রায় ৩৪২ টা চায়ের পেটি। আন্দোলনকারীরা রাতের আঁধারে স্থানীয় আমেরিকানদের ছদ্মবেশে জাহাজে উঠে চায়ের পেটিগুলো ফেলে দিল পোতাশ্রয়ের নোনাজলে। চায়ের ব্যবসায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্য আর আরোপিত করের প্রতিবাদে , সামগ্রিকভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এই ঘটনা প্রতিবাদের উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে আছে । ইতিহাসে এটা বোস্টন টি পার্টি নামে পরিচিত। ১৭৭৩ সালের এই ঘটনা পরে আমেরিকার স্বাধীনতা অর্জনের আন্দোলনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
পুরো ঘটনাপ্রবাহের সরলীকরণ করলে এটা বলা যায়, উইলিয়াম পিট দা সিনিয়রের গেঁটেবাতের আক্রমণ না হলে তিনি বারবার পার্লামেন্ট এ অনুপস্থিত থাকতেন না। আর অনুপস্থিত না থাকলে এই বিলগুলো পাশ হত না। আর এমন অন্যায় বিল পাশ না হলে মানুষের ক্ষোভ বোস্টন টি পার্টির রূপ নিত না। আর তাহলে আমেরিকার স্বাধীনতা আন্দোলন হয়ত অন্যরূপ নিত। সেজন্য বলা হয়ে থাকে , আমেরিকার স্বাধীনতায় গেঁটেবাতের ভূমিকা আছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমার নিজেরই বাতের সমস্যা আছে।

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৪৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদ জিয়ারও বাতের সমস্যা আছে। এটা ওনাকে অনেক কাবু করে দিয়েছে। এই বাত রোগ না থাকলে উনি রাজনীতিতে আরও সক্রিয় থাকতে পারতেন। পরিনামে দেশের মানুষ উপকৃত হতো। কারণ তখন বিরোধী দল শক্তিশালী হতো এবং এখনকার মত একচেটিয়া ও এক দলীয় তথাকথিত গণতন্ত্রের স্টিম রোলারের নীচে জনগণ পড়ত না। তাই বাতের ব্যথা আমাদের দেশের রাজনিতিতেও ভূমিকা রেখেছে বলা যায়।

বঙ্গবুন্ধ মিশরে চা পাঠিয়ে ছিলেন তাদের দুর্যোগের সময়। এতে খুশি হয়ে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ৩০ টি ট্যাঙ্ক মিশর বাংলাদেশকে দেয় বন্ধুত্ব জোড়াল করার জন্য। এই ট্যাঙ্কগুলি নিয়ে ফারুক, রশিদরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সপরিবারে। এখানে উল্লেখ্য যে ঐ ট্যাঙ্কগুলিতে গোলা ছিল না । গোলা রাখা ছিল সম্ভবত গাজিপুরে বা অন্য কোথাও (এখন মনে আসছে না)। তাই আমাদের দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে চায়ের ভূমিকা আছে বলা যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.